
মারণ ব্যাধি করোনার আরটিপিসিআর টেস্ট নিয়ে চরম বিভ্রান্তি দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। কারা এই পরীক্ষা করতে পারবেন, আর কারা পারবেন না তা নিয়ে চলছে ব্যাপক বিভ্রান্তি। আর যার জেরে প্রতিদিন লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না সরকারি পরিষেবা। দু টাকা দিয়ে সরকারি হাসপাতালের টিকিট কেটেও প্রতিদিন সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। প্রশ্ন উঠেছে কেন সরকারি হাসপাতালে কোভিড ব্যাধির আর্টিফিশিয়াল টেস্ট সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা থাকবে না হাসপাতালের হেল্প ডেস্কে।
অনেককে কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে যেতে হচ্ছে। আর সেই ক্ষেত্রে কোভিডের আরটিপিসিআর টেস্টের মোবাইল ম্যাসেজ নচেৎ স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া বিশেষ শংসাপত্র। দুটোর কোনোটাই না হওয়ায় এখন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে কোভিড আর্টিফিশিয়াল টেস্ট করতে আসা সাধারণ মানুষ বেশ সমস্যায় পড়ে গেছেন। সমস্যাটা দ্বিগুন বেড়েছে যখন সরকারি হাসপাতালের বিনা পয়সায় এই পরিষেবা মিলছে। ঠিক তখন বাইরে ক্লিনিকের এই খরচ পড়ছে ১৬০০ থেকে ১৭০০টাকা। কখনো কখনো অঙ্কটা ২০০০এও পৌঁছে যাচ্ছে।
দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের হেল্প ডেস্ককে সময়মতো কেউ আসছেন না। আবার হেল্প ডেসকের কাচের ওপর কোভিড আর্টিফিশিয়াল পরীক্ষার যে টাইম টেবিল রয়েছে তাতেও রয়েছে ব্যাপক বিভ্রান্তি। দুটো ভিন্ন সময়ের পরীক্ষার তালিকা থাকায় পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়েছে। এতে করে যাঁরা সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না করোনার আর্টিফিশিয়াল টেস্ট আদপে সেই দিন হবে কি হবে না। অথবা তাঁরা সরকারি হাসপাতালে এই ধরণের টেস্ট করাতে পারবেন কিনা।
ফলস্বরূপ সারা দিন নষ্ট হওয়ার পর মিলছে না সরকারি পরিষেবা। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ১০০জনের মতো মানুষের কোভিডের আরটিপিসিআর টেস্ট হয়। গত তিনদিনে সেই পরিষেবাও মেলেনি সাধারণ মানুষের। কারণ হিসেবে আর্টিফিশিয়াল টেস্টের কিট নেই বলে জানানো হচ্ছে হাসপাতালের তরফ থেকে। এক একজন রোগী প্রতি কোভিডের আরটিপিসিআর টেস্টের জন্য কিট বাবদ খরচ হয় প্রায় তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো টাকার মতো। পরীক্ষা বাবদ খরচ আরো তিনশো টাকা, সব মিলিয়ে সরকারের কমবেশি ৬৫০টাকার মতো খরচ পড়ে।
দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডক্টর ধীমান মণ্ডল জানান, সরকারি গাইড লাইন মাফিক সবার জন্য কোভিডের আরটিপিসিআর টেস্টের কোনও জায়গা নেই। সরকারি হাসপাতালের কোনও চিকিৎসককে দেখানোর পর যদি চিকিৎসক মনে করেন এই বিশেষ টেস্টের প্রয়োজন রয়েছে তবেই সেই কাগজের ওপর পরীক্ষা শুরু হয়। কিন্তু জ্বর সর্দি কাশি হলেই সবাই হাসপাতালে চলে আসছেন এই আরটিপিসিআর টেস্টের জন্য। আর এতেই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তাঁরা।
এই বিষয়ে সুর চড়িয়েছেন বিরোধী নেতৃত্ব। সিপিআইএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের অভিযোগ,করোনা নিয়ে দুর্গাপুরের মানুষকে এক ভয়ঙ্কর অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার। তাঁর দাবি, সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সরকারি স্তরে র্যান্ডম টেস্টের কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হোক। নচেৎ আরো কঠিন অবস্থার দিকে যাবে পরিস্থিতি।
সুর চড়িয়ে দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক তথা দলের রাজ্য কমিটির অন্যতম সম্পাদক লক্ষণ ঘোড়ুইয়ের অভিযোগ, এই সরকারের কোনও মাথা-মুণ্ডু নেই। ডক্টর ভাইপোর জন্য এক নিয়ম আর সাধারণ মানুষের বেলায় নিয়ম আলাদা।
যদিও বিরোধীদের অভিযোগকে পাল্টা কটাক্ষ করে দুর্গাপুর নগর নিগমের দুই নম্বর বোরো চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা রমাপ্রসাদ হালদার বলেন, সরকারি গাইড লাইন মেনেই দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে কোভিড আরটিপিসিআর টেস্ট হচ্ছে। যদি সাধারণ মানুষের কোনও কারণে বিভ্রান্তি হয় সেটা তাঁরা দেখবেন বলে জানান।
সব মিলিয়ে একদিকে অনিয়মিতভাবে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে কোভিড টেস্টের অভিযোগ। অন্যদিকে এর জেরে সরকারি হাসপাতালে এসে চরম দুর্ভোগ বাড়ছে বিভ্রান্তির বেড়াজালে। হাজারো সাফাই আর বিরোধিতা পাল্টা বিরোধিতার কৌশলী চাল। দিনের শেষে ভোগান্তি আর দুর্ভোগের মুখে পড়তে হচ্ছে সেই সাধারণ মানুষকে।
একদিকে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরে গোটা রাজ্যজুড়ে বৃষ্টির ভ্রূকুটি। অন্যদিকে ফসল কীভাবে বাঁচবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা। আরও একটি দুশ্চিন্তা মাথাচাড়া দিচ্ছে। তা হল, বৃষ্টির অজুহাতে ফের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, বিশেষ করে সবজির দাম বেড়ে যাবে না তো?
কারণ ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ডরায়। অতীতে বৃষ্টির পর পর এমনই তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে মধ্যবিত্তের। আলুর দাম সেই যে চড়েছে, নামার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বাজারে তো নতুন আলু আসা শুরু হয়ে গেছে ভালোরকম। তারপরেও আলুর দাম ২০ টাকার নিচে নামেনি। একটু নামি বাজার হলে তো আরও বেশি। অথচ সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা হল, এই সময় আলুর দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকার আশেপাশে থাকার কথা। বিভিন্ন সবজির তো কেজিপ্রতি দর পৌঁছে গেছে ৪০ টাকার ওপরে। কোনও সবজিতেই যেন হাত দেওয়ার জো নেই। একটু বড় পরিবার হলে বাজার করতে গিয়ে তাদের নাজেহাল অবস্থা হচ্ছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, যারা রক্তজল ঝরিয়ে ফসল ফলাচ্ছে, তারা কি দাম আদৌ বেশি পাচ্ছে? বিগত দিনের অভিজ্ঞতা বলছে, না, ঠিক উল্টোটাই হচ্ছে। বৃষ্টির জন্য তাঁরা আগেভাগে ফসল তুলে জলের দরে বেচে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। মাঝখান থেকে ফড়েরা দাঁও মেরে বেরিয়ে যাচ্ছে।
বাজারে নিত্যপণ্যের দামে নজরদারি চালানোর জন্য রয়েছে টাস্ক ফোর্স, রয়েছে এনফোর্সমেন্ট। কিন্তু ভুক্তভোগী ক্রেতাদের অভিযোগ, এরা সবই কাগুজে বাঘ বা ডুমুরের ফুল। দরদাম নিয়ে খুব হইচই হলে বাজারে খাতা-পেন হাতে নিয়ে বের হতে দেখা যায়। তারপর যে কে সেই।
মাঝখান থেকে চাষিদের অবস্থা একদিকে যেমন অারও সঙ্গীন হচ্ছে, অন্যদিকে মধ্যবিত্তও মূল্যবৃদ্ধির যাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে।
শীতসুখ আর বেশিদিন নয়। ঠান্ডার আমেজে বাধা সেই পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। পূর্বাভাস আগেই দেওয়া হয়েছিল। সামগ্রিক পরিস্থিতিও সেদিকেই এগোচ্ছে। বৃষ্টির ভ্রূকুটি গোটা রাজ্যজুড়ে। ধাপে ধাপে হবে বৃষ্টিপাত। শুরু হয়ে যেতে পারে কাল শুক্রবার থেকেই, তবে মূলত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলায়। কিন্তু শনিবারের পর পরিস্থিতি একটু একটু করে খারাপের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা। উত্তরবঙ্গে তো বটেই, দক্ষিণবঙ্গের কলকাতা সহ বাকি জেলাগুলির জন্যও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সতর্কবার্তা রয়েছে। যা শনি থেকে শুরু হয়ে সোমবার পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন জায়গায় চলতে পারে।
পশ্চিমী ঝঞ্ঝা মানেই একদিকে যেমন বৃষ্টির ঘনঘটা, অন্যদিকে শীতেরও দফারফা। গত কদিন পর্যায়ক্রমে তাপমান অনেকটাই নেমে এসেছে। চার-পাঁচদিনের হিসেব নিলে দেখা যাবে, একসময় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যেখানে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে উঠে গিয়েছিল, তা ধাপে ধাপে নেমে এসেছে কলকাতায় ১৩ ডিগ্রির নিচে। জেলায় জেলায় তো সন্ধ্যার পরই হাড়কাঁপানো ঠান্ডার পরিস্থিতি। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম প্রভৃতি জায়গায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির আশেপাশে চলে এসেছে। ফলে মাঘের শুরু থেকেই শীতের এই দাপুটে ব্যাটিংয়ে কিছু মানুষের কষ্ট হলেও অনেকেই বিষয়টি উপভোগ করছিলেন।
কিন্তু পশ্চিমী ঝঞ্ঝার ফলে প্রথমত বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ উষ্ণ বাতাস দক্ষিণবঙ্গে ঢুকতে শুরু করবে। যার জেরে শুরু হবে মেঘের আনাগোনা, শুরু হবে বৃষ্টি। একইসঙ্গে তা উত্তুরে হাওয়ার গতিপথেও কিছুটা বাধার সৃষ্টি করবে। ফলে গত কদিন ধরে কনকনে হাওয়ায় যে হাড়কাঁপানো শীতের অনুভূতি ছিল, সেটা আর থাকবে না। অর্থাৎ সাময়িক শীত ফের উধাও হয়ে যাবে।
কিন্তু এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বা অকাল বৃষ্টির হাত থেকে রেহাই মিলবে কবে?? আবহাওয়া অফিসের যা পূর্বাভাস, তাতে সেই সুদিন ফিরতে অন্তত ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। জানুয়ারির শেষে হয়তো শীত এই মরশুমে দ্বিতীয়বার ঝোড়ো ব্যাটিং করতে পারে। তবে আগামি দিনে তাপমান যে খুব নিচে নামবে, তেমন সম্ভাবনা ক্ষীণ।
বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। মহামারী করোনা ধ্বংস করেছে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন। করোনা প্রতিরোধে বন্ধ হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যোগাযোগ ব্যবস্থা, ক্ষতি হয়েছে বিভিন্ন ব্যবসার। কাজ হারিয়েছেন বহু পরিযায়ী শ্রমিক, বন্ধ হয়েছে বিভিন্ন দোকানপাট থেকে ফ্যাক্টরি। ব্যতিক্রম নয় মুর্শিদাবাদও। একই চিত্র ধরা পড়ল মুর্শিদাবাদের ডোমকল ফতেপুরেও।
কাজ স্থায়ী নয়, তবে মাস গেলে যা টাকা মিলত, তাতেই দিব্যি কেটে যেত সংসার। কিন্তু করোনাকালে দিনের পর দিন সুতোর দাম বাড়লেও বাড়েনি এই ফ্যাক্টরির তৈরি গামছার দাম।
অন্যদিকে করোনা প্রতিরোধে রাজ্যজুড়ে চলছে সরকারি কড়া বিধিনিষেধ। তার জন্য ফ্যাক্টরি চালাতে বেড়েছে খরচ। এই পরিস্থিতিকে সামাল দিতে না পারায় বন্ধ হতে চলছে মুর্শিদাবাদের ডোমকল ফতেপুর তাঁত ফ্যাক্টরি। বর্তমানে পঞ্চাশজন শ্রমিক এখানে কর্মরত- এমনটাই জানা গেছে ফ্যাক্টরির মালিক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।
বিগত চার বছর আগে প্রায় দশটি মেশিন ও পঞ্চাশজন শ্রমিক নিয়ে পথ চলা শুরু করেন ফতেপুরের তাঁত শিল্পী মাকসুদাল ইসলাম। এই ফ্যাক্টরি থেকে যা আয়ব্যয় ছিল, তাতে ঠিকঠাকই চলছিল মাকসুদাল ইসলামের সংসার থেকে শ্রমিকদের সংসার। তবে গত দু'বছর আগে করোনার ফলে সেই চিত্র পাল্টে যায়। তাঁত শিল্প চালাতে গেলে প্রধান দরকার সুতো। আর সেই সুতোর দাম বেড়ে চলেছে হু হু করে। অথচ গামছার দাম একই রয়ে গেছে কয়েক বছর ধরে। যার জন্য ফ্যাক্টরি চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা।
ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষের থেকে জানা যায়, সরকারিভাবে সুতোর দাম কমালে কিছু সুরাহা হবে। নয়তো বা গামছার দাম বাড়ালেই চালানো যাবে এই তাঁত শিল্প। আর যদি তা না হয়, তাহলে হয়ত হারিয়েই যাবে একদিন এই গামছা কারখানা। করোনাকালে দেশের বিভিন্ন শ্রমিকদের মতো এই ফ্যাক্টরি শ্রমিকদেরও চলে যাবে কাজ। এই কথা শুনে ভেঙে পড়েছে শ্রমিকদের একাংশ। কারণ করোনাকালে নুন আনতে পান্তা ফুরাচ্ছে এই শ্রমিকদের। এই সময় আবারও কড়া বিধিনিষেধে সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। সরকারি সাহায্যের আর্তনাদ তাঁদের মুখে।
২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের খুন আসানসোলে। এবার কুলটি থানার সাঁকতোরিয়া ফাঁড়ির অন্তর্গত শীতলপুর তুলসীহিড় এলাকায় পরেশ মারান্ডি নামে এক ব্যক্তিকে খুন করার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পরপর তিনটি গুলি চালিয়ে খুন করে দুষ্কৃতী, এমনটাই খবর।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসানসোলের কুলটি থানার অন্তর্গত শীতলপুর তুলসীহিড় এলাকায় একটি ঝুপড়িতে এক ব্যক্তিকে গুলি করার ঘটনায় চাঞ্চল্য এলাকায়। বুধবার সকাল ন'টা নাগাদ ওই এলাকায় একটি বাড়িতে বসে থাকা অবস্থায় গুলি চালায় দুষ্কৃতী। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কুলটি থানার পুলিস। পুলিস আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠায়। অন্যদিকে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে আসানসোল জেলা হাসপাতালে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আহত ব্যক্তির নাম পরেশ মাঝি। কিছু বছর আগে তিনি ইসিএলে কর্মরত ছিলেন। তবে বর্তমানে তিনি কর্মহীন ছিলেন। শ্বশুর বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। তবে পরিবারের সঙ্গে ভালো ছিল না তাঁর সম্পর্ক।
কয়েকদিন আগে ডিসেরগর নদী থেকে গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল কুলটি থানার সাকতরিয়া ফাঁড়ির ডিসেরগর এলাকায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আসানসোলের ডিসেরগরের কিলবার্ন শ্যামপুর এলাকার ৫১ বছর বয়সী দাদি মারান্ডি গত ১২ তারিখ থেকে নিখোঁজ থাকেন। সেই নিয়ে কুলটি থানায় নিখোঁজের অভিযোগ করে পরিবার। তবে কিছুদিন পরই ডিসেরগর নদী থেকে ওই ব্যক্তির গলাকাটা মৃত দেহ উদ্ধার হয়। কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটছে? কেনই বা হুঁশ ফিরছে না প্রশাসনের। প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
ঘটনার অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে পুরুলিয়া-বরাকর রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় এলাকার মানুষ। ঘটনাস্থলে আসেন ডিসিপি অভিষেক মোদী। ঘটনার সঠিক তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
গত এক ডজন বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গ তথা নিকটবর্তী অঞ্চলে একই নাটক, শীত এসেই চলে যায়। কেন প্রতি বছর এইরকম আবহাওয়ার বহর, প্রশ্নের উত্তরে এক সময় বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এত পলিউশন বাংলায়, বিশেষ করে কলকাতা ও নিকটবর্তী স্থানে যে বারবার শীত বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এই যুক্তি কি সত্যি মানা যায়? ভারতের সব থেকে দূষণের অন্যতম স্থান দিল্লি, সেখানে তো ভীষণ শীত তিন মাস ধরে থাকে। উত্তর নেই। একসময় এই বাংলায় গরম পড়ত, কিন্তু সহনীয় ছিল। আজকাল সেই গরমই সহ্য করা যায় না। দু বছর ধরে প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়া বলে, বেশি বৃষ্টি মানেই বেশি শীত।
কিন্তু বৃষ্টি থামার লক্ষণ কোথায়? শীতের সময় নিম্নচাপের জন্য কখনও একবেলা বৃষ্টি হতেই পারে। কিন্তু তাই বলে শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত! কিন্তু এই করোনা আবহে তাও এই বছর দেখল মানুষ।
কয়েকদিন ধরে চলে যাওয়া ঠান্ডা ফিরে এসেছে। বাঙালি শীতকাতুরে হলেও উপভোগ করছিল এ বছরের দেরিতে আসা শীত। এরই মধ্যে আবহাওয়া দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ফের নাকি পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে বৃষ্টি আসছে। যত দোষ 'পশ্চিমি ঝঞ্ঝা'। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে আকাশ মেঘলা হওয়ার কথা উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে। বৃহস্পতিবারই বৃষ্টি হবে না। বৃষ্টি শুরু হবে শনিবার উত্তরবঙ্গ এবং রবিবার থেকে আবহাওয়া খারাপ হয়ে বৃষ্টি নামবে দক্ষিণেও। এতে শীতের তাপমান বাড়বে।
কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রয়েছে ১৩ ডিগ্রির আশেপাশে, তা বেড়ে ১৬ বা ১৭ ডিগ্রি হবে। আবহাওয়া স্যাঁতস্যাঁতে থাকবে। এ ছাড়া শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে ঝড় থাকবে না বা সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে ক্ষেতের ফসলের ক্ষতি হবে যদি শিলাবৃষ্টি নামে। ঘন ঘন আবহাওয়ার এই পরিবর্তনে মানুষের শরীর খারাপও হতে পারে।
কয়েক বছর আগেই পজেশন সার্টিফিকেট পেয়েছিলেন প্রৌঢ় অনুপকুমার প্রধান। এমনটাই দাবি তাঁর। দীর্ঘদিন পরিবার নিয়ে বসবাস ওই এলাকায়। কিন্তু সেই জায়গা জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। যদিও তিনিও তৃণমূল সমর্থক।
অনুপকুমার প্রধান অভিযোগ জানিয়ে বলেন, বিগত কুড়ি থেকে বাইশ বছর ধরে নামখানার দ্বারিগনগর মৌজায় বসবাস করছেন। তেত্রিশ শতক জায়গার পজেশন সাটিফিকেটের জন্য সুপারিশ করেছিলেন তৎকালীন নামখানা পঞ্চায়েত প্রধান ওরফে বর্তমান জিবিডির চেয়ারম্যান শ্রীমন্তকুমার মালির কাছে। তিনি পজেশন সার্টিফিকেট পেয়েও যান। পরবর্তীকালে সরকারিভাবে পাট্টার জন্য আবেদন করেন। অভিযোগ, ২০১০ সাল থেকে সমস্যার আজও সমাধান হয়নি। সমস্যা বাড়ে ইয়াসের পর থেকে।
অনুপকুমার প্রধানের অভিযোগ, জায়গা দখল করতে এসে হামলা চালানো হয় তাঁর উপর। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা মহাদেব পালের নেতৃত্বে এই হামলা চালায় তাঁর ছেলে বিষু পাল। লুটপাটও চালায় হামলাকারীরা। বেধড়ক মারধর, এমনকি জায়গা না ছাড়লে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ।
বাবা অনুপকুমার প্রধানকে বাঁচাতে যায় মেয়ে। তখন মেয়েকেও কটূক্তি করে ওই দলবল এবং মারধর করা হয় বাবার সামনে, দাবি আক্রান্ত পরিবারের। মেয়ের গায়ে হাত দিয়ে অসম্মান করা হয় বলেও অভিযোগ অনুপবাবুর।
তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু নামখানা থানায় গিয়েও মেলেনি সমাধান। অনুপকুমার প্রধান পেশায় দিনমজুর। দুই ছেলেমেয়ে, স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন অ্যাসবেস্টস দেওয়া মাটির ঘরে।
যদিও বিষয়টি শুনতেই নারাজ জিবিডির চেয়ারম্যান শ্রীমন্ত কুমার মালি। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, ফিসারি ঘেরা নিয়ে দুই পক্ষের ঠান্ডা লড়াই। দুই পক্ষকে একসঙ্গে বসিয়ে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে প্রধান-এর পরিবার। মেয়েকে মারধরের বিচার চেয়েছেন পরিবার-পরিজনেরা।