সৌমেন সুর: প্রায় সারা পৃথিবী ঘুরেছেন রবীন্দ্রনাথ (Rabindranath Tagore)। পৃথিবীর যেখানেই গেছেন সেখানেই কবিকে উষ্ণ অভ্যর্থনায় ভরিয়ে দিয়েছে। অবশ্য ভ্রমণের কারণ ছিল, বিশ্বভারতী (Visva Bharati) গড়ে তোলবার জন্য অর্থ সংগ্রহ করা, আর একটা কারণ- বিশ্বের নীতি, মতবাদ নিজের অন্তরে গ্রহন কোরে তাকে নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা। এবং স্বদেশের আদর্শ, দর্শন পৌছে দিতেন বর্হি বিশ্বের কাছে। কবি বিশ্বাস করতেন, 'আপন হতে বাহির হয়ে বাইরে দাঁড়া, বুকের মাঝে বিশ্বলোকের পাবি সাড়া।' এইভাবেই কবি বিশ্বের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেছিলেন এবং নামজাদা ব্যক্তিত্বের সাথে গড়ে উঠেছিল বন্ধুত্ব। রম্যাঁ রলাঁ, বানার্ড শ, আইনস্টাইন অন্যদিকে স্বদেশের মহাত্মা গান্ধী, চিত্তরঞ্জন, নেতাজী সুভাষ, ত্রিপুরার রাজা রাধাকিশোর মানিক্য সব বন্ধুস্থানীয় ছিলেন। কবি অসংখ্য কাজে দেশের মানুষের কাজে ছড়িয়ে যাচ্ছিলেন।
কাজের ভিড়ে বাচ্চারা তার কলম থেকে বাদ যাইনি। অসংখ্য কবিতা, ছড়া এবং শিশুপাঠ্য বই 'সহজ পাঠ' লিখেছেন। ১৯৩০ সালে কবি তখন অসুস্থ, ঠিক হলো স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্য দার্জিলিং যাবেন। ১৯৩১ সালে হিজলী কান্ডে দার্জিলিং যাওয়া বন্ধ করলেন। হিজলী ডিটেনশন ক্যাম্পে দুজন বন্দি মারা যায়। সেই প্রতিবাদে ময়দানে এক বিরাট জনসভায় বক্তৃতা করেন রবীন্দ্রনাথ। পরাধীন দেশের অত্যাচারিত বঞ্চিত মানুষদের জন্য তার ভাষা গর্জে উঠেছে কবিতায়, প্রবন্ধে ও নানাবিধ রচনায়। রবীন্দ্রনাথ কবি, মহাকবি। রবীন্দ্রমালার মধ্যে আছে নানা রঙের নিখুঁত ফুল। সেগুলি হল নানা রবীন্দ্রনাথ স্বদেশী রবীন্দ্রনাথ, জমিদার রবীন্দ্রনাথ, শিক্ষাবিদ রবীন্দ্রনাথ, গায়ক রবীন্দ্রনাথ, শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ইত্যাদি। অন্যদিকে তিনি সংগঠক, শিক্ষক, সমাজসেবী, বক্তা, মানুষের নেতা। রবীন্দ্রনাথ আমাদেরই লোক হলেও বিশ্বমানবতা জুড়ে আছে তার কর্মে, তার সৃষ্টিতে।