বাংলার বকেয়া টাকা দিয়ে দিলে রাজনীতি (Politics) ছেড়ে দিতে রাজি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। শুক্রবার বীরভূমে সিউড়ির সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। তারই জবাবে শুক্রবার সন্ধ্যায় টুইট করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, 'বাংলার বকেয়া ১ লক্ষ ৮ হাজার কোটি টাকা দিয়ে দিন, তবে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া তো দূর, আমি রাজনীতিও ছেড়ে দিতে রাজি।' শুক্রবার দু'দিনের সফরে রাজ্যে পা রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
শুক্রবার রাজ্যে পা রেখে অনুব্রত মণ্ডলের গড় বীরভূমে, তিনি একটি সভা করেন। সেখানেই রাজ্যের দুর্নীতি, অশান্তি-হিংসা-সহ বিভিন্ন ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টার্গেট করেন। ওই সভা থেকেই স্পষ্টতই বলেন, 'ভাইপো যতই চাক না কেন, ভাইপো মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবে না।' এরপর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন টুইটে হৈ-চৈ ছড়িয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে।
ইতিমধ্যেই ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা ইত্যাদি নিয়ে বাংলার বকেয়ার দাবিতে বিভিন্ন জায়গায় সরব হয়েছেন মমতা এবং অভিষেক। সম্প্রতি রেড রোডে বকেয়া টাকার দাবিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ধারনায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বিভিন্ন সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও একই বিষয়ে সুর চড়িয়েছেন। হুংকার দিয়েছেন দিল্লি অচল করে দেওয়ার। সামনেই পঞ্চায়েত, বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। যদিও শুক্রবার ৩৫টি আসন নিয়ে ২৪ সালে, মোদিকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর দাবী জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
এ অবস্থায় বাংলাকে বঞ্চনা করার দাবিতে বকেয়া অর্থ চেয়ে অভিষেকের টুইট, সেটা যে কেন্দ্রকে তোপ সেটা স্পষ্ট করলেন ওই টুইটেই।
বীরভূমের সভায় (Birbhum Meet) রাজ্য সরকার-সহ শাসক দলকে একাধিক ইস্যু তুলে আক্রমণ করেছেন অমিত শাহ। এবার তাঁকে পাল্টা দিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। শুক্রবার রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে শাসক দলের মুখপাত্র জানান, '২৫ সালে রাজ্যে সরকার পড়ে যাবে বলছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (Amit Shah)। এটা অগণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক, স্বৈরাচারী মনোভাব। ঝুলি থেকে বিড়াল বেড়িয়ে পড়েছে। একুশের ভোটে ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করে হেরেছেন লজ্জা করে না। লোকসভার সঙ্গে বিধানসভার সম্পর্ক কী? মানুষের রায়ে রাজ্যে নির্বাচিত সরকার। সেই সরকার ফেলে দেওয়ার কথা কে বলছেন, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অর্থাৎ একটা চক্রান্ত চলছে, আর সেটা হচ্ছে দিল্লি থেকে।'
এদিন কুণাল বলেন, 'উনি (পড়ুন অমিত শাহ) বলেছেন লোকসভায় ৩৫টি আসন, আমরা বলছি শূন্য থেকে গোনা শুরু করুন। এক পর্যন্ত পৌঁছতে ঘাম বেড়িয়ে যাবে। বিজেপি লোকসভায় শূন্যে দাঁড়িয়ে থাকবে। বিধানসভা ভোটের আগে বলেছিলেন আব কি বার ২০০ পার। অমিত শাহজি ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করেছিলেন।' এদিন কুণাল ঘোষ দাবি করেন, আগামি লোকসভা এবং বিধানসভায় বিজেপির পরাজয়ের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করলেন অমিত শাহজি।
প্রসূন গুপ্ত: বেশ কিছুদিন ধরে বাংলায় বিরোধীদের মধ্যে কোথাও একটা একতা বা পরোক্ষ জোটের বাতাবরণ দেখা যাচ্ছে। রাজ্যের বিরোধী নেতা একপ্রকার এতে সিলমোহর দিয়েছিলেন। সাম্প্রতিক রাজ্যের বেশ কিছু সমবায় ভোটে সিপিএম ও বিজেপির জোট প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছে। দু-তিনটি সমবায় দখলও করেছে এই জোট, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরাজিত হতেও হয়েছে। এই জোটের ফায়দা সব থেকে ভালো তুলেছে সিপিএম। কারণ কমিউনিস্ট পার্টি চিরকাল এই পদ্ধতিতে বিশ্বের নানা দেশে ক্ষমতায় এসেছে।
যদিও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জানিয়েছিলেন, কোনও ফ্যাসিস্ট শক্তির সঙ্গে বামপন্থীরা জোট করবে না। অন্যদিকে বিজেপির তরফে সম্প্রতি 'নো ভোট টু মমতা' স্লোগান উঠেছে। প্রাথমিকভাবে দলের অনেকের এই স্লোগানে সম্মতি থাকলেও শেষ পর্যন্ত দিল্লির নেতৃত্বের কাছে ভর্ৎসনা শুনতে হয়েছে বলেই খবর।
বৃহস্পতিবার বিধাননগরের এক সাংস্কৃতিক মঞ্চে আসন্ন পঞ্চায়েত বিষয়ে এক আলোচনার আয়োজন করা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, প্রধান পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল, সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) আমিতাভ চক্রবর্তী। এছাড়া সাংসদ ও নির্বাচন বিষয়ক প্রস্তুতি কমিটির কনভেনর দেবশ্রী চৌধুরী। এছাড়াও অগ্নিমিত্রা পল ইত্যাদি নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। সংঘ ঘনিষ্ঠ দেবশ্রী পরিষ্কার বার্তা দেন যে, বিজেপি বিরোধী দল। বিধানসভায় সিপিএম বা কংগ্রেসের অস্তিত্ব বলে কিছু নেই। কাজেই কারও সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ জোট করবে না দল। কেউ যদি তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে চান তবে তাঁকে বিজেপির সিম্বল নিয়েই লড়তে হবে। কংগ্রেস বা বামেদের সঙ্গে জোটের প্রশ্নই নেই। তাঁর বার্তায় চূড়ান্ত সম্মতি।
একইসঙ্গে দিল্লিতে নাকি এমন প্রশ্ন উঠেছে যে সাগরদিঘিতে কোন গড়াপেটায় কংগ্রেস একটি আসন পেয়ে গেল। কেনই বা বিজেপির ওই কেন্দ্রে ১৯ হাজার ভোট কমে দল তৃতীয় স্থানে চলে গেলো। অন্দরের কথা দলের ভিতরে উভয়পন্থী নেতাদের কথা মানা হবে না। বিজেপির সর্বভারতীয় দল তাঁরা কোনওভাবেই কংগ্রেস বা কমিউনিস্টদের সঙ্গে হাত মেলাতে পারে না।
প্রসূন গুপ্ত: একেকটি ভোট মানে একেক রকম প্রস্তুতি। লোকসভায় প্রচার মানে জাতীয় রাজনীতি। থাকে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, চিন-পাকিস্তান কিংবা গত ৫ বছরের সার্বিক প্রতিশ্রুতি পূরণ নিয়ে তরজা। তেমনই বিধানসভায় থাকে রাজ্যের উন্নয়ন, আইন-শৃঙ্খলা, নারী নিরাপত্তা বা কর্মসংস্থান। পুরো বা পৌরসভা মানে এলাকার জল, রাস্তা ইত্যাদি নিয়ে প্রচার। সেরকম পঞ্চায়েত ভোটের সিংহভাগে থাকবে গ্রামের কথা, জমির বা ফসলের কথা এবং অবশ্যই ভূমিহীনদের জন্য অন্য কাজে রোজগারের কথা। তবে ভারত মূলত কৃষি প্রধান এবং শ্রমনির্ভর দেশ। তাই কৃষক এবং শ্রমিক যেদিকে, জয় সেদিকেই হয়ে থাকে। এই হিসাব দেখে সরকারি দল বা বিরোধীরা চেষ্টা করে যেভাবেই হোক বিভিন্ন পঞ্চায়েত দখল করা। দখল করা বললেও কাজটি কঠিন।
প্রতিদিনের লড়াই থেকে এ দেশের কৃষকরা বেঁচে থাকার তাগিদ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করে। ব্যতিক্রম নয় এ বাংলাও। সামনে পঞ্চায়েত ভোট কাজেই উচিত প্রচার অভিযানে সমস্ত দলের নেমে যাওয়া, মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের। তৃণমূল বেশ কিছুদিন হলো প্রচার অভিযানে নেমেছে পক্ষান্তরে। এদিকে এখনও প্রস্তুতিতেই রয়েছে প্রধান বিরোধী বিজেপি। অন্যদিকে কংগ্রেসের প্রচার এখনও শুরুই হয়নি এবং সিপিএম অতি গোপনে তাদের আস্তিনের তাস বের করছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন প্রসারের দায়িত্বে যুব নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সপ্তাহ থেকেই প্রচারে নেমেছেন। খোঁজ নিচ্ছেন সেই অঞ্চলগুলি, যেখানে গত লোকসভা এবং বিধানসভায় তাঁদের দল খুব খারাপ ফল করেছে। যথা ডুয়ার্স বা বাঁকুড়া-পুরুলিয়া। বাঁকুড়ায় লোকসভার দুটি আসনই বিজেপির দখলে, সাথে বিধানসভার অধিকাংশ আসনও। যদিও গত পৌরসভা নির্বাচনে বাঁকুড়ার সবকটি পুর ভবন তৃণমূলের হাতে। কিন্তু পঞ্চায়েতে জয় না আসলে লোকসভায় তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। কাজেই কাল বিলম্ব না করে অভিষেক দুর্বল কেন্দ্রগুলিকে বেছে নিচ্ছেন।
বুধবার বাঁকুড়ার ওন্দাতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিষেক তুরুপের তাস হিসাবে তুলে ধরলেন ১০০ দিনের কাজের কথা। তিনি জানেন, এই বাঁকুড়া জেলা প্রবল গরমে খরার কবলে পরে। তিনি বক্তব্যে জানালেন যে , ধর্ম নয় বাঁচতে গেলে দরকার অর্থ। এই ১০০ দিনের কাজে শ্রমিকরা টাকা পাচ্ছেন না এবং তাই দিল্লিতে দরবার করতে হবে এবং কোটি প্রতিবাদ পত্র নিয়ে তিনি দিল্লিতে যাবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নানা প্রকল্পে যে বাঁকুড়া অধিবাসী সুবিধা পাচ্ছেন তাও জানালেন অভিষেক যদিও ট্রাম্প কার্ড ওই ১০০ দিনের কাজ।
ডিএ (DA) আন্দোলনকারীরা এবার অভিযোগ (Complaint) জানালেন নারী-শিশু কল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে (Smriti Iriani)। অভিযোগ শুনে কেন্দ্রের পরিসরের মধ্যে থেকে এবিষয়ে কেন্দ্র, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার ডিএ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মন্ত্রীর সাক্ষাতে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। বুধবার সিএন-ডিজিটালকে শঙ্কুদেব জানিয়েছেন, 'ডিএ-র বিষয়রটা নিতান্ত রাজ্যের হলেও, সেখানে কেন্দ্রীয় অর্থ দফতরের একটি কথা বলার অধিকার থাকে। সেদিক থেকে কেন্দ্র, রাজ্যের এই ডিএ বিষয়ের সমাধান করার চেষ্টা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।'
এছাড়া এবিষয়ে স্বপন দাশগুপ্তের টুইট করা একটা পোস্টকে উল্লেখ করে স্মৃতি ইরানি টুইট করেন। মন্ত্রী লেখেন, 'ডিএ আন্দোলনকারীদের লড়াই ও বিক্ষোভের কারণ নোট করা হয়েছে এবং তাঁরা এই বিষয় নিয়ে সীতারমনজির সঙ্গেও দেখা করতে চান। বিষয়টা জানাতে চান।'
Have taken note of their anguish and struggles . Their desire to communicate the same to the office of @nsitharaman ji has been met with alacrity. https://t.co/D9gDCfNuXz
— Smriti Z Irani (@smritiirani) April 11, 2023
কলকাতায় শহীদ মিনারে ডিএ অর্থাৎ মহার্ঘ্য ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন তো চলছেই, গত ১০ ও ১১ এপ্রিল ওই আন্দোলনকারী অর্থাৎ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সদস্যরা দিল্লির যন্তর-মন্তরে অবস্থান বিক্ষোভ ও আন্দোলন করেছেন। তাঁরা রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি,কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছিলেন। পরে সংশ্লিষ্ট কারোর সময় না থাকার জন্য তাঁরা কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির সঙ্গে দেখা করেন। সূত্রের খবর, তাঁরা ডিএ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষে কিঙ্কর অধিকারী বলেন, 'আমরা বাংলায় নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়েছি ওনাকে, উনি বিষয়টা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।'
মণি ভট্টাচার্য: সর্বভারতীয় তকমা হারানোর পর বাঁকুড়ায় (Bankura) প্রথম সভা করছে তৃণমূল (TMC), আর ওই সভার পোস্টারকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক (Controversy)। সূত্রের খবর, বাঁকুড়ার ওন্দায় তৃণমূলের সভার পোস্টার অনুযায়ী তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় বুধবার সভা করবেন। যা নিয়েই বিতর্ক। বিজেপির দাবি (BJP), সম্প্রতি সর্বভারতীয় দলের তকমা হারিয়েছে তৃণমূল। অথচ তারপরেও বাঁকুড়ায় অভিষেক বন্দোপাধ্যায় সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সভা করবেন কীভাবে? যার উত্তরে তৃণমূলের দাবি, সর্বভারতীয় তকমা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও দলের নাম পরিবর্তন করার নির্দেশ কমিশন দেননি।
কমিশনের নির্দেশে সর্বভারতীয় তকমা হারিয়েছে তৃণমূল-সহ আরও দুটি দল। যে দল আর সর্বভারতীয় নয়, সেই দলের সর্বভারতীয় সভাপতি হয় কী করে? এই প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও এর পাল্টা তৃণমূলের একাংশের দাবি, তৃণমূল দলের আসল নাম অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। এই নাম পরিবর্তনের নির্দেশ এখনও দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে সিএন-ডিজিটালকে বাঁকুড়ার তৃণমূলের জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্র বলেন, 'কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক আছে, এ বিষয়ে এখনও আইনি সাহায্যের পথ খোলা আছে। ফলে আমরা এখনই কমিশনের সিদ্ধান্ত মানছি না।'
তৃণমূলের জেলা সভাপতির এই বক্তব্যের পর তৃণমূলকে 'দু'কান কাটা' বলে কটাক্ষ করেন বাঁকুড়া বিষ্ণুপুরের বিজেপি সভাপতি বিলেশ্বর সিংহ। বুধবার বিলেশ্বর সিংহ সিএন-ডিজিটালকে বলেন, 'তৃণমূলের দু'কান কাটা, নইলে এরকম করত না। যদিও ওরা এর আগে কখনও নির্বাচন কমিশনকে মেনেছে নাকি! এবার মানবে না সেটাই তো স্বাভাবিক।'
সাত দফার দাবিতে বামেদের (CPIM) জেলা পরিষদ (Zila Parishad) অভিযানে ধুন্ধুমার বারাসতে (Barasat)। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বিকেলে গুরুত্বপূর্ণ ৭টি দাবি নিয়ে বারাসত হেলাবটতলা মোড় থেকে মিছিল করে জেলা পরিষদ অবধি যাওয়ার কথা ছিল তাদের। বাম ছাত্র-যুবদের এই মিছিল আটকানোর অভিযোগ ওঠে পুলিসের বিরুদ্ধে, তখনই পরিস্থিতি চরমে উঠে যায়। এসএফআই-র তরফে ভাঙচুর চালানো হয় জেলা পরিষদ গেটে। পরিস্থিতি এতটা চরমে উঠে যায় যে, লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হয় পুলিসকে। পুলিস জানিয়েছে, বাম ছাত্র-যুবর তাণ্ডবে ভেঙেছে ওই গেট। এ ঘটনায় বামেদের ১০ জন সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিস।
বাম ছাত্র-যুব নেতৃত্ব সূত্রে খবর, আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার ৭ দফার দাবিতে জেলা পরিষদ অভিযান ছিল। তাঁদের অভিযোগ অকারণে ওই মিছিলের পথ আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিস। বাম সূত্রের খবর, দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ, একশো দিনের কাজের বকেয়া মেটানো, লুটেরা মুক্ত পঞ্চায়েত গড়ে তোলা, আবাস যোজনায় গৃহহীনদের ঘর দেওয়া, ছাড়াও একাধিক দাবি নিয়ে মঙ্গলবারের এই জেলা পরিষদ অভিযান চালিয়েছিল তাঁরা। এ ঘটনায় স্থানীয় বাম নেতৃত্ব সুদীপ্ত দাশ বলেন, 'আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিলাম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ৭ দফার দাবিতে এই মিছিলকে অযথা রুখে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিস।'
জাতীয় দলের (National Party) তকমা হারানোর পরদিনই পদত্যাগ সাংসদ(Mp) লুইজিনহোর। তৃণমূল (Tmc) সূত্রে খবর, মঙ্গলবার তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ লুইজিনহো ফেলেইরো রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দিলেন। সূত্রের খবর, জাতীয় দলের মর্যাদা হারানোর পরদিনই, তিনি উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারপার্সন জগদীপ ধনখড়ের দফতরে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে আসেন। ইস্তফা দেওয়ার খবর স্বীকারও করে নিয়েছেন ফেলেইরো।
সূত্রের খবর, ২০২১ সালের কংগ্রেস ছেড়ে ফেলেইরো নাম লেখান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে। ২৯ সেপ্টেম্বর কলকাতায় এসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে সদবদলে তৃণমূলে যোগদান করেন ফেলেইরো। নভেম্বর মাসেই তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন তিনি। পাশাপাশি সর্বভারতীয় সংগঠনে তাঁকে সহ-সভাপতির পদ দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় জানানো হয়েছিল, রাজ্যসভার সাংসদ হলেও, গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফেলেইরো ভোটে লড়েননি। তৃণমূল সূত্রে খবর, ফেলেইরোর ইস্তফা প্রসঙ্গে কোনও খবর ছিল না তৃণমূলের কাছেও।
২০২৪-র লোকসভা ভোটের আগে জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি-বিরোধী ফ্রন্টে বড়সড় ধাক্কা। জাতীয় দলের মর্যাদা হারালো তৃণমূল কংগ্রেস। ফলে জাতীয় ফ্রন্টে মোদী বিরোধিতার নিরিখে কিছুটা ব্যাকফুটে তৃণমূলের নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা। তবে শুধু তৃণমূল নয়, জাতীয় দলের মর্যাদা হারিয়েছে সিপিআই, এনসিপির মতো দলগুলো। পাশাপাশি দিল্লির পর পঞ্জাবে ক্ষমতায় এসে এবং গুজরাতে ভোট শতাংশ বাড়িয়ে জাতীয় দলের মর্যাদা পেয়েছে আম আদমি পার্টি বা আপ।
তৃণমূল বিরোধী শিবিরের প্রশ্ন, এবার তাহলে অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস নামের গ্রহণযোগ্যতা কী? মূলত গোয়া, ত্রিপুরা, মেঘালয়-সহ একাধিক রাজ্যের বিধানসভা ভোটে লড়েও ফল আশানুরূপ নয় ঘাসফুল শিবিরের। সেই ফলের প্রতিফলন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তে। এমনটাই জানাচ্ছেন ভোট বিশেষজ্ঞরা। জাতীয় দলের মর্যাদা হারানো প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার জানান, 'তৃণমূল কংগ্রেস যেখানে শক্তিশালী সেখানে জিতবে। বাংলায় ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৪০টি জিতবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কিছু মাপকাঠি রয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। এমন পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। কমিশন কি কেন্দ্রের শাসক দলের অঙ্গুলিহেলনে কাজ করছে?'
যদিও বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, 'তৃণমূলের এখন শ্যাম রাখি না, কূল রাখি অবস্থা। গোয়া, ত্রিপুরায় ভোট লড়তে গিয়েছিল, তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এখন শুধু তৃণমূল কংগ্রেস।'
সাম্প্রতিক হিংসার কারণ অনুসন্ধানে তিন দিনের রাজ্য সফরে এসেছিল কেন্দ্রীয় ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি (Fact Finding Committee)। তারা শিবপুর এবং রিষড়া যাওয়ার চেষ্টা করলেও ১৪৪ ধারার দোহাই দিয়ে এই দলকে আটকায় পুলিস। গোটা ঘটনার জন্য রাজ্য প্রশাসন তথা পুলিসকে কাঠগড়ায় তোলে এই অনুসন্ধান দল। এবার ফ্যাক্ট কমিটির এই বঙ্গ সফরকে কটাক্ষের সুরে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। এদিন তিনি প্রশ্ন করেন, 'এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি কে গড়েছে? সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, কোনও সরকার, না কোনও দল? যদি কোনও দল এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গড়ে, তবে তার কোনও মূল্য নেই। ফেসলেস, ভ্যালুলেস কমিটি।'
তিনি জানান, 'একটা নন-ইস্যুকে ধর্মীয় ইস্যু বানানোর চেষ্টা করছে। এটা ধর্মীয় বিষয় নয়, দুষ্কৃতীমূলক কর্মকাণ্ড। কেউ মারা যায়নি, কেউ আহত হয়নি। পুলিস মিছিলের অনুমতি দেয়নি। নমাজের সময়ে মিছিল বের করে ইন্ধন জুগিয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র, বুলডোজার, ট্রাক্টর নিয়ে কেন ধর্মীয় মিছিল করবে? উন্মত্তের মতো নৃত্য করেছে। মুঙ্গের থেকে লোক এনেছে, বাইরের লোক এনে এসব করেছে। আমাদের এখানকার লোকেরা সবাই একসঙ্গে থাকে।'
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে কটাক্ষের সুরে বিঁধেছে বিজেপি। দলের সাংসদ দিলীপ ঘোষ জানান, 'সারা রাজ্যজুড়ে উৎপাত চলছে। আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা, মহিলা-শিশুদের উপর অত্যাচার চলছে। দেশে বাংলার বদনাম হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব আছে খোঁজ-খবর নেওয়ার এবং জানার কেন এরকম হচ্ছে।'
খুন হতে পারেন লতিফ (Latif)! এমন আশঙ্কা প্রকাশ করলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ (MP) অর্জুন সিং। কিন্তু কেন? শুক্রবার অর্জুন সিং দুর্গাপুরে আসেন মৃত রাজু ঝা-য়ের বাড়িতে। সূত্রের খবর রাজু ঝা এবং অর্জুন সিং পূর্ব পরিচিত। সে কথা স্বীকারও করেন সাংসদ। শুক্রবার মৃত রাজুর বাড়িতে এসে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি। অর্জুন সিং শুক্রবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, 'লতিফও খুন হতে পারে।' শুধু তাই নয় তিনি শুক্রবার আরও বলেন, 'লতিফ এই খুনের অন্যতম লিংক।'
শক্তিগড়ে জাতীয় সড়কে গুলি করে খুন করা হয়েছে কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা-কে। পুলিস তদন্ত করে জানতে পেরেছে, লতিফের গাড়িতে ছিলেন রাজু। তদন্তে নেমে পুলিসের দাবি, ঘটনার দিন ওই গাড়িতে উপস্থিত ছিলেন লতিফ। লতিফ হলেন কয়লা পাচার কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত। যিনি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের চোখে ফেরারও বটে। ফেরার থেকেও কীভাবে তিনি রাজু ঝা-য়ের গাড়িতে ছিলেন তা নিয়েই পুলিসের তদন্তে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। যদিও রাজু ঝা খুনের ৭ দিন হয়ে গেলেও এখনও কোনও দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিস।
এদিকে শুক্রবার রাজু ঝা খুনে লতিফকে লিঙ্কম্যান বলেই দাবি করলেন তৃণমূল সাংসদ অর্জুনও। তিনি দুর্গাপুরে সাংবাদিকদের বলেন, 'রাজুকে খুন করা সহজ নয়। কিন্তু সহজেই ওকে যারা খুন করে ভাবছে বাড়ি বসে তামাশা দেখবে, সেটা হবে না।' তিনি আরও বলেন, 'এই খুনের পিছনে বড় কোনও মাথা রয়েছে।' কিন্তু তিনি কেন বললেন, যে লতিফও খুন হতে পারে! সেই বিষয়ে কোনও উত্তর না দিয়ে ধোঁয়াশা আরও বাড়িয়েই দিলেন।
প্রসূন গুপ্ত: তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বে পরিবর্তন হয়েছে, না হয়নি, তা নিয়ে জল্পনার স্থান নেই। সম্প্রতি কালীঘাটে তৃণমূল সুপ্রিমো বিভিন্ন জেলায় কিছু রদবদল করেছিলেন। মূলত দায়িত্বে থাকা নেতাদের মাথার উপর ফের অঘোষিত পর্যবেক্ষক বসিয়েছেন দলের সুপ্রিমো। এই পর্যবেক্ষকদের অধিকাংশই আদি তৃণমূল নেতা অর্থাৎ অরূপ বিশ্বাস, ববি হাকিম, মলয় ঘটক প্রমুখ। এই পরিবর্তনে দলের একটি অংশের কাছে প্রশ্ন এসেছিল, তবে কি যুব মহল অর্থাৎ যা কিনা অভিষেকের পছন্দের, তারা বাতিল হবে? পরে অবশ্য মমতা জানিয়েছিলেন, যুবরাই ভবিষ্যৎ কিন্তু এখনই সময় হয়নি ভোট দাঁড়ানোর। জল্পনা এমন হয়েছিল যে, মমতাই কি দলের রাশ নিজের হাতে নিলেন? তিনিই কি প্রচারের মুখ আসন্ন পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে?
এত প্রশ্নের উত্তর একটাই, কোনও সন্দেহ নেই তিনিই মুখ। শেষ পর্যন্ত সব প্রার্থী ঠিক করার লিস্টে তিনিই টিক চিহ্ন বসাবেন। তবে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ভূমিকা কি? সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি সফর করলেন এবং সব সাংসদের নিয়ে বিভিন্ন আবেদন-নিবেদন বা প্রতিবাদের কাজটি সারলেন। দেখা গেল দুই হাউসের সদস্যরা অভিষেককেই এগিয়ে দিলেন পরিষদীয় নেতা থাকা সত্ত্বেও।
একদিকে প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক কাজে মমতা যেমন পূর্ব মেদিনীপুর গেলেন তেমনই শনিবার থেকে অভিষেক শুরু করছেন বিভিন্ন জেলা সফর। ২০২১-এ বিশাল জয় এলেও বর্তমানে শিক্ষা থেকে নানা বিষয়ে রাজ্য সরকার বিব্রত। সমাপ্ত সাগরদিঘি উপনির্বাচন, যা কিনা মুসলিম অধুষ্যিত, পরাজিত হয়েছে তৃণমূল। সংখ্যালঘু ভোট কিন্তু মমতার সবথেকে বড় ভরসার জায়গা।
কাজেই সাগরদিঘির মন কি সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছে, প্রশ্ন তৃণমূল হাইকমান্ডে। সুতরাং কাল বিলম্ব না করে দুই প্রধান নেতাই বেড়িয়ে পড়ছেন ভোটের খোঁজে। অভিষেক ইদানিং বারবার ডুয়ার্স অঞ্চলে যাচ্ছেন। যাওয়ার কারণ এই অঞ্চলে সব থেকে খারাপ ফল করেছিল তৃণমূল গত বিধানসভা নির্বাচনে। আলিপুরদুয়ারে একটিও আসন পায়নি তাঁরা। কাজেই অভিষেক আলিপুরদুয়ার থেকেই তাঁর প্রচার শুরু করছেন।
অন্যদিকে রাজ্যের বিরোধী নেতা বারবার চেষ্টা করেছেন পঞ্চায়েত ভোট এখুনি না করার। কিন্তু বাদ সেধেছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে ভোট হচ্ছে আপাতত ঠিক। মে মাসেই ভোট বলেই অন্দরের খবর এবং ভোট পরিচালনা করবে রাজ্য প্রশাসন। তাই সাংগঠনিক প্রস্তুতির দায় অভিষেকেরই।
মেয়াদের আগেই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা রাজনীতিবিদ নভজ্যোত সিং সিধু (Navjyot Singh Sidhu)। তিন দশকের পুরনো মামলায় এক বছরের জেল হয়েছিল পঞ্জাব কংগ্রেসের (Punjab Congress) প্রাক্তন সভাপতির। কিন্তু শনিবার জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন সিধু। এবার ফের জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হতে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন নভজ্যোত সিং সিধু।
Met my Mentor Rahul ji and Friend, Philosopher, Guide Priyanka ji in New Delhi Today.
— Navjot Singh Sidhu (@sherryontopp) April 6, 2023
You can Jail me , Intimidate me, Block all my financial accounts but My commitment for Punjab and My Leaders will neither flinch nor back an inch !! pic.twitter.com/9EiRwE5AnP
বৈঠক শেষে প্রাক্তন ক্রিকেটার জানান, "রাহুল তাঁর ‘মেন্টর’ আর প্রিয়াঙ্কা ‘ফ্রেন্ড, ফিলোজ়ফার, গাইড’।" কংগ্রেস নেতা বলেন, 'পঞ্জাব এবং প্রদেশ নেতাদের প্রতি তার দায়বদ্ধতার হেরফের হবে না।'
১৯৮৮-র এক মামলায় জেল খাটছিলেন তিনি। কিন্তু কয়েদি হিসেবে ভাল আচরণের জন্য দশ মাসের মাথায় মুক্তি পান প্রাক্তন ক্রিকেটার। বৃহস্পতিবার রাহুলের সঙ্গে দেখা করার পর সিধু একটি ছবি টুইটা করেন। তিনি লেখেন, 'আমার মেন্টর রাহুলজি এবং বন্ধু, দার্শনিক, পথপ্রদর্শক প্রিয়াঙ্কাজির সঙ্গে দেখা করলাম। আমায় জেলে পাঠাতে পারেন, ভয় দেখাতে পারেন, আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিতে পারেন, কিন্তু পঞ্জাব এবং প্রদেশ নেতাদের প্রতি দায়বদ্ধতা এক ইঞ্চিও হেরফের হবে না।'
প্রসূন গুপ্ত: তিনি প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি, তিনি বিজেপি সাংসদ। কঠিন সময়ে প্রথমে ২০১৬-তে খড়গপুর বিধানসভা থেকে জিতে বিধায়ক হন। আবার ২০১৯-এ মেদিনীপুর লোকসভা থেকে সাংসদও হয়েছেন দিলীপ ঘোষ। এটা বাস্তব তাঁর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছিল না ২০১৪ পর্যন্ত। কিন্তু তারপর তাঁকে সংঘ পরিবার থেকে নিয়ে এসে দল সভাপতি করে। এক সময়ে মজা করে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বিয়ে করেননি কেন? উত্তর এসেছিলো, সারাটা জীবন তো সংঘের প্রচারক হিসাবে কাজ করলাম, ফলে বিয়ের ভাবনাটাই আসেনি। এটাও বাস্তব তাঁর আমলে রাজ্য বিজেপি শক্তি বৃদ্ধি করেছিল। বঙ্গ বিধানসভায় ৩ থেকে ৭৭ আসন পাওয়া কম কথা নয়। কিন্তু সেই কাজটি করতে পেরেছিলেন দিলীপবাবু।
পরে রাজ্য বিজেপির সভাপতির পদ থেকে কেন্দ্রীয় বিজেপির সহ-সভাপতির পদ পান। শোনা গিয়েছে দ্বিতীয় মোদী সরকারে তাঁকে ক্যাবিনেটের দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধ করলে তিনি নম্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেন। দিলীপ ঘোষ চিরকাল ভোরে উঠে নানা জায়গায় চায়ের আড্ডা জমান, তিনি বলেন জনমত বোঝার এটা একটা মোক্ষম কাজ। একইসঙ্গে মাঝে মধ্যে বিতর্কিত মন্তব্য করে খবরে থাকেন দিলীপ ঘোষ। যদিও লালু যাদব, অনুব্রত মন্ডল থেকে দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ বিরোধীদের উদ্দেশে ক্রোধের থেকে মজাদায়ক বেশি।
এহেন দিলীপ ঘোষ ফের মুখ খুললেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের হয়ে। সম্প্রতি রাজ্যের বিরোধী নেতা রাজ্যপালের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সেই মন্তব্যের উত্তরও দিয়েছেন কম কথা বলা উচ্চশিক্ষিত বোস। এবার দিলীপ ঘোষ রাজ্যপালের প্রভূত প্রশংসা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সিভি আনন্দ বোস উপযুক্ত মানুষ। পথে নেমে কাজ করেন রাজ্যপাল। দিলীপবাবু বলেন, 'রাজভবন রাজনীতির জায়গা নয়।'
প্রসূন গুপ্ত: রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে পেয়ে বঙ্গের মানুষ অখুশি এমন দাবি কেউই করবেন না। বরং যত দিন যাচ্ছে ততই দেখা যাচ্ছে, বোস যথেষ্ট নিয়মানুবর্তিতা মেনে চলার মানুষ। এই রাজ্যপালের গুণ, তিনি সমস্ত দলের কথা শোনেন এবং সেই প্রেক্ষিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেন। সাধারণত পশ্চিমবঙ্গে বাম আমল থেকে যত রাজ্যপাল এসেছেন, বোস কিন্তু তাঁদের থেকে একটি বিষয়ে ব্যতিক্রম। সংবিধান মেনে প্রশাসনকে নিয়ে চলা। তিনি দীর্ঘদিন প্রশাসনে ছিলেন ফলে অভিজ্ঞতা তাঁর টাটকা। তাঁকে চাপ দিয়ে কাজ হাসিল করা কঠিন, তা তৃণমূল বাম কিংবা বিজেপি হোক না কেন।
সম্প্রতি হাওড়া এবং রিষড়াতে রামনবমী মিছিলকে কেন্দ্র করে যে যে অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে তা নিজে উপস্থিত থেকে সরেজমিন তদন্ত করছেন আনন্দ বোস। যদিও বাম দলগুলি এই কাণ্ডকে ধর্মীয় মেরুকরণের বলে দাগিয়েছে। কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে তৃণমূল-বিজেপিকে। তারা বলেছে যে, ধমীয় মেরুকরণ করে আসন্ন ভোটগুলিতে ফায়দা তুলতে চাইছে এই দুই দল। সে যাই হোক না কেন সম্পূর্ণ বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে গিয়েছে এবং তারপর বিষয়টি দেখতে গিয়েছেন রাজ্যপাল নিজেই।
এটি নিয়ে কোনও রকম রাজনীতি হোক সে বিষয়ে রাজ্যপাল সজাগ ছিলেন। খবর, তিনি বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে রিষড়া না যেতে অনুরোধ করেন। সুকান্তবাবু রাজ্যপালকে সম্মান জানিয়ে অকুস্থলে যাননি। কিন্তু গিয়েছেন রাজ্যপাল এবং দেখে এসেছেন সবই। তিনি পরিবেশ শান্ত রাখতে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু সুকান্ত মজুমদার রাজ্যপালের অনুরোধ রাখলেও, কিছুটা আক্রমণাত্মক রাজ্যের বিরোধী নেতা। যদিও তাঁর এই সমালোচনা শুনে রাজ্যপাল মিষ্টি হেসে জানান, 'কেউ সমালোচনা করতে পারেন, অতি সমালোচনা করতে পারেন কিন্তু দ্বিচারিতা করবেন না।' তাঁর এই প্রতিক্রিয়ার ওপারে কে? কিছুটা আন্দাজ করতে পারছে রাজনৈতিক মহল। রাজ্যপাল আরও বলেন, 'তাঁর কাজ বন্ধু ও পথপ্রদর্শক হিসাবে দায়িত্ব পালন করা। একইসাথে রাজ্য প্রশাসক যেন সংবিধান মেনে কাজ করেন সেটাই দেখা।'