
পার্থ ভৌমিক (সেচমন্ত্রী: প.ব.সরকার ): রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ এবং ১০০ দিনের কাজের পাওনার জন্যই আমাদের দিল্লি যাত্রা। দীর্ঘদিন ধরে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কাছে দরবার করেছেন, নিজে ব্যক্তিগত ভাবে গিয়েছেন। অনুরোধের পরেও রাজ্যের গরিব ১০০ দিনের কর্মীরা যখন তাদের প্রাপ্ত টাকা পায়নি তখনই আমাদের দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করেছিলেন একেবারে সদলে দিল্লিতে গিয়ে অবস্থান আন্দোলন করবেন। সেই মোতাবেক তিনি বেশ কয়েক মাস আগে জানিয়ে দিয়েছিলেন আমরা তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতা কর্মীরা ২ অক্টোবর, মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে দিল্লিতে প্রতিবাদ আন্দোলন করবো এবং শুরুটাই হবে গান্ধীঘাট থেকে।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় দেখুন, হঠাৎ শেষ মুহূর্তে ৩ তারিখেই কোর্টের নির্দেশে ডেকে পাঠালো কেন্দ্রীয় এজেন্সি। অভিষেক পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি অপারগ। এরপর আমাদের ভাড়া করা ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হলো। বাধ্য হয়েই আমরা বাসের ব্যবস্থা করলাম। আমরা তো ঠিকই করেছিলাম সবাই একসাথে যাবো কিন্তু সিকিউরিটি থেকে এবারে নিষেধ করা হলো। কাজেই অসহায় মানুষগুলিকে বাসে করে দিল্লিতে পাঠাতে হলো। ৪২ ঘণ্টার বাস জার্নি যে অতি কঠিন বিষয় তা আর বলার অবকাশ রাখে না। এর মধ্যে ঝাড়খন্ড এবং বিহারের প্রশাসন যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন, কিন্তু বাধা এলো যোগীর রাজ্যে। শেষ পর্যন্ত ২ অক্টোবর ভোররাতে যখন সবাই দিল্লিতে গিয়ে পৌছালো তখন তাঁদের শরীরে আর কিছুই নেই কিন্তু কেউ তাতে দমে যায়নি।
২ অক্টোবর দুপুরে আমরা গান্ধী স্মৃতিতে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে প্রতিবাদ শুরু করলে দিল্লি পুলিস এসে প্রবল বাধা দেওয়া শুরু করলো। এই পুলিস কিন্তু অমিত শাহের অধীনস্ত। এই বাধা শেষ পর্যন্ত ধাক্কাধাক্কিতে পরিণত হয়। আহত হয় আমাদের কর্মী নেতারা। মোবাইল হারায় কয়েকজন, সুজিত বোসতো যতটাই হারিয়ে ফেললেন ধাক্কায় এবং চোটে। অভিষেকের দিকেও ধেয়ে আসছিলো প্রশাসন। প্রতিবাদের প্রাথমিক কাজ সেরে আমরা ফিরে আসি।
মঙ্গলবার আমাদের সাধারণ সম্পাদক ঠিক করেন যে, এই আহত এবং বিধ্বস্ত মানুষদের আর কষ্ট না দিয়ে তাদের ফেরত পাঠাতে হবে। সেই মোতাবেক যন্তরমন্তরে জমায়েতের পরে তাদের আমরা কলকাতাগামী বাসে তুলে দিয়ে আমরা বিভিন্ন পদে থাকা নেতামন্ত্রীরা মিছিল করে কৃষি ভবনের দিকে যাবো, তাতে আমাদের উপর হামলা হলে হবে। আন্দোলন তো শুরু, এর শেষ দেখতে চাই, জানিয়েছেন অভিষেক। এখন অভিষেক দেশের সমস্ত মিডিয়ার কাছে 'জাতীয় নেতার' উপাধিটা পেয়ে গেলেন, সরকার ও বিরোধী ঐক্যও তাই বলছে।