
প্রসূন গুপ্তঃ অবশেষে তৃণমূল কংগ্রেসের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন তাঁদের 'ইন্ডিয়া' জোটের অন্যতম সঙ্গী কংগ্রেসকে লোকসভা নির্বাচনে সঙ্গী হিসাবে চান। পরিষ্কার বার্তা এটাই যে, জোট ফর্মুলা মেনে তৃণমূল কংগ্রেসকে সাথী হিসাবে চান কিন্তু কোনও ভাবেই সিপিএমকে নয়। এবারে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতেই পারে যে সিপিএমও তো জোটের বিভিন্ন বৈঠকে গিয়েছে তবে কেন ছুৎমার্গ? অভিষেক এই বিষয়ে একটি কথায় জোর দিয়েছেন যে কংগ্রেসকে নিয়ে তাঁদের কোনও ছুৎমার্গ নেই, কিন্তু সিপিএমের সঙ্গেও জোট করার প্রশ্ন নেই।
অভিষেক এখন মোটামুটি তৃণমূল দলের দায়িত্বে আছেন। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁর কথাই চূড়ান্ত হিসাবে গ্রহণীয় তা দলের কর্মী নেতাদের কাছে পরিষ্কার। পাঠকদের নিশ্চই মনে আছে মুম্বই বৈঠকের আগে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে একেবারে ভোরে তাঁর দিল্লিতে বৈঠক হয়েছিল ১০ নম্বর জনপথে। বৈঠকের সারাংশ নানান মিডিয়া নানান ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। অতি সক্রিয় কিছু পোর্টাল বা কংগ্রেসের কিছু বামঘেঁষা নেতা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিল যে, নেহাতই অভিষেকের আবেদনে রাহুল সারা দিয়েছেন। আদত ঘটনা তা মোটেই ছিল না। রাহুল এবং অভিষেক গোপন বৈঠকে জোট পদ্ধতি বা কেন্দ্রীয় এজেন্সির চাপ ইত্যাদি নিয়েই কথা বলেছিলেন। পরে তা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খার্গের প্রেস বৈঠকে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।
এটা আমাদের আগের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল যে, সিপিএম তৃণমূলের জোট হওয়া অসম্ভব এবং ক্ষেত্র বিশেষে কংগ্রেসের সঙ্গেও জোট সম্ভব নয়। এরপরেই ঝোলা থেকে বিড়াল বের করে সিপিএম জানালো যে, তারা জোটের সমন্বয় কমিটিতে থাকছে না। শেষ বক্তব্যে বাকি শরিকরা যে বিরক্ত তা বলাই বাহুল্য। কংগ্রেসের একটা অংশ মনে করে সিপিএমের বর্তমান রাজনৈতিক শক্তি একেবারেই নামমাত্র। যতটুকু যা অবশিষ্ট তা রয়েছে কেরালায়। কাজেই পশ্চিমবঙ্গে খামোকা তাদের সাথে থেকে লাভ কি বরং তৃণমূলের সঙ্গে জোট করলে বিজেপির আসন কমবে এবং কংগ্রেসের আসন আসতে পারে অতএব সিপিএমের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াও। অবিশ্যি রাজ্য কংগ্রেসে কৌস্তভ বাগচীর মতো কেউ কেউ আছেন যাঁরা মোটেই তৃণমূলের জোট চান না। কার্যক্ষেত্রে কৌস্তভেরই ডানা ছাটা পড়েছে। বার্তা অবশ্যই দিল্লির হাইকমান্ডের।