
কুন্তলই (Kuntal Ghosh) ব্রিজ অর্থাৎ মিডিলম্যান, বাংলায় যাকে আমরা দালাল বলে থাকি। এ দাবি আমাদের নয়, এমন দাবি করছে ইডি (Ed)। মঙ্গলবার বিচার ভবনের বিশেষ আদালতে যে চার্জশিট ইডি পেশ করেছে, সেখানেই সদ্য তৃণমূল (Tmc) থেকে বহিস্কৃত নেতা কুন্তলকে মূল দালাল বলে দাবি করেছে ইডি। মঙ্গলবার ১০৪ পাতার চার্জশিট দেয় ইডি, সঙ্গে ৫০০ পাতার নথিও দেয়। কুন্তলকে গ্রেফতারির পর ৬০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিল ইডি। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে আর্থিক লেনদেনে সংক্রান্ত মামলায়, তদন্তে অসহযোগিতার কারণে কুন্তল ঘোষ চলতি বছর ২১ শে জানুয়ারি ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। তারপর নিয়োগ দুর্নীতিতে, ইডি সূত্রের খবর ২১শে মার্চ অর্থাৎ মঙ্গলবার ইডির বিশেষ আদালতে কুন্তল ঘোষের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ হয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দিল ইডি। যে চার্জশিটে কুন্তলকে, শান্তনু ঘনিষ্ঠ হিসেবে উল্লেখ করেছে ইডি। ১৮ জনের সাক্ষী-সহ ওই চার্জশিটে উল্লেখ, যে ২ কোটি টাকার সম্পত্তি আছে কুন্তলের। কুন্তলের জমি-জমা সংক্রান্ত তথ্য, নগদ সম্পত্তি-সহ বেনামে থাকা সব সম্পত্তির কথা উল্লেখ করেছে ইডি। এছাড়া ইডির তরফে খবর, চার্জশিটে ইডি দাবি করেছে, কুন্তলের সঙ্গে পার্থ-মানিকের যোগসূত্র রয়েছে। গোটা নিয়োগ দুর্নীতিতে কুন্তল মিডিলম্যান হিসেবে কাজ করতো। অর্থাৎ দালাল হিসেবে কাজ করত। কুন্তলের বস হিসেবে কাজ করতো শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়।
২ কোটি টাকার সম্পত্তির যে হদিশ পাওয়া গিয়েছে, তার মধ্যে প্রায় ১ কোটি টাকা জমি সংক্রান্ত বলে জানিয়েছে ইডি। শুধু দালাল নয়, পাচারকারী হিসেবেও কাজ করত কুন্তল এমন দাবি করেছে ইডি। কুন্তলের ব্যাঙ্কের নথি ঘেটে জানা গেছে, কুন্তলের একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৬ কোটির বেশি টাকা ছিল। বনি সেনগুপ্ত ও সোমা চক্রবর্তী দুজনেই টাকা ফেরত দেওয়ার পর প্রায় ১ কোটি টাকা ওঠে, সেটা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে ইডির সূত্রে খবর। ইডি আরও জানিয়েছে, বাকি টাকা একটা অন্য অ্যাকাউন্ট মারফত সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কুন্তলের অ্যাকাউন্ট ঘেটে অনেক প্রভাবশালীর যোগ পেয়েছে বলে চার্জশিটে জানিয়েছে ইডি আধিকারিকরা।
১৮ দিন পর মঙ্গলবার কলকাতা (Kolkata police) লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার বামনঘাটা ব্রিজের নিচের খাল থেকে উদ্ধার ট্যাংরার যুবক ঝুন্নু রানার দেহ। নীল ড্রামে ভরা পচা-গলা অবস্থায় উদ্ধার হয় দেহটি। মঙ্গলবার সকাল ৯টা ১৫ নাগাদ দেহ উদ্ধার করে পুলিস। দেহ উদ্ধারের পর শনাক্তকরণের জন্য দেহটিকে নীলরতন সরকার (Nrs) মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। এরপর দেহটির ময়না তদন্ত হলে পুলিস মারফত জানা যায়, ঝুন্নুর মাথায় বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন আছে, ভারী কোনো অস্ত্র দিয়ে তাকে বারবার আঘাত করা হয়েছে বলে খবর।
মার্চ মাসের ৩ তারিখ থেকে নিখোঁজ ছিল ট্যাংরার যুবক ঝুন্নু রানা, ঝুন্নুর পরিবারের তরফে তদন্ত করে জানতে পারে ঝুন্নুকে সিসিটিভি ফুটেজে শেষ মার্চ মাসের ৫ তারিখ তার নব্য বন্ধু তিলজলার গোলাম রব্বানীর সঙ্গে বাইকে দেখা গিয়েছে। এরপর পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে থানা ঘেরাও করেন স্থানীয়রা। সেই সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিসের কাছে গোলামের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলে ঝুন্নুর পরিবার। ঝুন্নুর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গোলামের খোঁজ শুরু করে পুলিস। পরে ১৬ তারিখ দিল্লি থেকে গোলাম রব্বানী, তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী, ভাই-সহ আরও এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিস।
অভিযুক্তদের জেরা করে জানা যায়, গোলামের পরিবারই ঝুন্নুকে খুন করেছে। এরপর থেকে লাগাতারভাবে ঝুন্নুর দেহ খুঁজতে থাকে পুলিস। মঙ্গলবার বামনঘাটা ব্রিজের নিচের খাল থেকে উদ্ধার হয়েছে ট্যাংরার যুবক ঝুন্নু রানার দেহ।
ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে (Fire) পুড়ে ছাই শোভাবাজারের একটি বিউটি পার্লার (Parlour)। হঠাত্ করেই পার্লারের ভিতর থেকে কালো ধোঁয়া দেখতে পায় এলাকাবাসীরা। আগুন লাগায় নিমেষেই কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় গোটা এলাকা। বুধবার সকালে শোভাবাজারের ৪১ শ্রী অরবিন্দ সরণিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। দমকলে খবর দেওয়া হলে সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিন-সহ দমকল এসে পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। দমকলের দুটি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ চালায়।
জানা গিয়েছে, বাড়ির একতলায় অবস্থিত এই পার্লারটি। মূলত পার্লারের ভিতরে থাকা এসির কারণেই কোনওভাবে আগুন লেগে যায়। যার ফলে এই আগুনের কারণেই কার্যত কালো ধোঁয়া নির্গত হতে থাকে। সূত্রের খবর, দুটি দমকলের ইঞ্জিন কাজ করায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
একই রাতে কোথাও দেড় কোটি টাকার গাঁজা পাচার (Smuggling) রুখলেন। আবার কোথাও পুরোনো ঘটনার অভিযুক্তদের জেরা করে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করলেন বিলাসবহুল গাড়ির সঙ্গে বিপুল টাকার নিষিদ্ধ মাদক (Drug)। কোথাও কলকাতা পুলিসের এসটিএফ, আবার কোথাও বিধাননগর কমিশনারেটের এসটিএফ।
পুলিস জানিয়েছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে সার্ভে পার্ক থানা এলাকার বাইপাসের অজয়নগর মোড়ে অভিযানে যায় পুলিস। একটি এসইউভি গাড়ি থামিয়ে তার ভিতর থেকে ১২৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন কলকাতা পুলিসের এসটিএফ। মঙ্গলবার রাতেই, ওই গাড়ির চালক বরকত খান ওরফে ইমরানকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দারা। প্রাথমিকভাবে পুলিসের অনুমান, ওড়িশা থেকে ওই গাঁজা পাচার করা হচ্ছিল দক্ষিণ শহরতলীতে। গাড়ির সিটের ভিতরে ওই মাদক ১০টি ব্যাগে ভরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে জানায় পুলিস।
পাশাপাশি গত ১৬ই মার্চ বিধাননগরের নাওভাঙা নামক জায়গায় গোপন খবরের ভিত্তিতে তল্লাশি চালিয়ে বেঙ্গল এস টি এফ-র হাতে ধরা পড়েছিল মেহতাব বিবি এবং মোমিন খান নামক দুই ড্রাগ ব্যবসায়ী। সঙ্গে মিলেছিল বহুমূল্যের নিষিদ্ধ মাদক হিরোইন। এই ঘটনার তদন্ত চলাকালীন, মঙ্গলবার গভীর রাতে বেঙ্গল এস টি এফ-র তদন্তকারী অফিসারদের কাছে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রাতেই ওই এলাকায় আবার তল্লাশি চালিয়ে মেলে দুইটি বিলাসবহুল গাড়ির হদিশ। দুইটি গাড়িতেই পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণ নিষিদ্ধ মাদক (হেরোইন )। হাফ কিলো ওজনের মাদকের একটি ব্যাগ ছাড়াও, তিরিশ হাজারের উপর ক্ষুদ্র পুরিয়া পাওয়া যায় গাড়িতে। যার মোট ওজন দেড় কিলোগ্রাম।
উল্লেখ্য, ড্রাগচেইন-এর একদম শেষে বিভিন্ন মাধ্যমে নেশাড়ুদের কাছে এই পুরিয়া-ই পৌঁছে যেত। উপরোক্ত দুই ধৃতকে নিয়ে বেঙ্গল এস টি এফ-র তদন্তকারী টিম আরও তল্লাশি চালাবে বলেই আপাতত খবর।
রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হল এক থিম শিল্পীর। বাগুইআটিতে (Baguihati) দাদার বাড়ি থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিস। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে বাগুইহাটি থানার জগৎপুর আদর্শপল্লিতে। পুলিস (Police) জানিয়েছে, মৃত ওই শিল্পীর নাম বন্দন রাহা। বাগুইআটি থানার পুলিস জানিয়েছে, শিল্পীকে গলায় গামছা দিয়ে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ঝুলন্ত দেহ (Hanging Body) উদ্ধারের পর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে খবর।
পুলিস সূত্রে খবর, বাগুইআটি আদর্শপল্লিতে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন থিম শিল্পী বন্দন রাহার দাদা। কিছুদিন আগে অসুস্থ অবস্থায় বন্দনবাবু দাদার বাড়িতে আসেন। মঙ্গলবার বেলা ১২টা নাগাদ সেই বাড়িতে একাই ছিলেন শিল্পী বন্দন রাহা। দাদা সপরিবার বাইরে ছিলেন সেই সময়। পরে দাদা ফিরে এসে দেখেন ঘর ভিতর থেকে বন্ধ। ভাইকে ডাকলেও ঘরের ভিতর থেকে কোনও উত্তর দিচ্ছিলেন না বন্দন বাবু। সেই সময় স্থানীয়দের ডেকে, ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখতে পান গলায় গামছার ফাঁস লাগানো অবস্থায় ফ্যান থেকে ঝুলছেন শিল্পীর দেহ। ঘটনাস্থলে পুলিস এসে দেহটিকে উদ্ধার করে আর জি কর হাসপাতালে পাঠায়। প্রাথমিক পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহটিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিসের তরফে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
পুলিস সূত্রে খবর, মৃত বন্দন বাবুর কয়েকবছর আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পুলিসের প্রাথমিক অনুমান বিবাহ বিচ্ছেদের অবসাদ এবং শারীরিক অসুস্থতার কারণে এই ঘটনা ঘটাতে পারেন এই ব্যক্তি। তবে আদতে কী কারণে এই ঘটনা ঘটল, সেই বিষয় তদন্ত করে দেখছে বাগুইআটি থানার পুলিস।
মামা-ভাগ্নি পরিচয়ে একই আবাসনে থাকতেন অয়ন-শ্বেতা (Ayan-Shweta)। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক অবাক করা তথ্য খুঁজে পেয়েছে ইডি (ED Radar)। এক অয়নকে পাকড়াও করে বিতর্কে, টলিউড (Tollywood) পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে শুরু করে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রভাবশালী দুই মন্ত্রীর নাম। নিয়োগ দুর্নীতিতে (Education Scam) সম্প্রতি অয়ন শীলকে গ্রেফতার করেছে ইডি। তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালত ১৩ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। জানা গিয়েছে, কামারহাটি পুরসভা এলাকায় এক আবাসনে থাকতেন অয়ন-শ্বেতা। মামা-ভাগ্নি সম্পর্কে তাঁরা থাকতেন বলে দাবি আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীর। তবে আগে একসঙ্গে থাকলেও বছর দুয়েক দু'জন একসঙ্গে থাকছিল না বলে জানান ফ্ল্যাটের এক আবাসিক।
অয়নের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া সমস্ত নথি, ওএমআর শিট যাচাই করে ইডি জানতে পেরেছে উদ্ধার হওয়া ওএমআর শিট, আসল উত্তরপত্র। পুরসভা এবং শিক্ষা দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অয়ন শীলের বাড়ি থেকে শুধুমাত্র স্কুল নয়, একইসঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু পুরসভারও ওএমআর শিট মিলেছে। সেই সব ওএমআর শিট থেকে মিলেছে প্রভাবশালীদের সুপারিশ সংক্রান্ত তথ্য।
স্কুল সার্ভিসের গুরগাঁওয়ের সংস্থার মতো অয়নের সংস্থা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করত গোটা পদ্ধতি, তা জানতে চাইছেন ইডি কর্তারা। পাশাপাশি ইডির আধিকারিকরা জানিয়েছেন, অয়নের কালো টাকা খেটেছে টলিউডে। তৈরি হয়েছে একাধিক সিনেমা! অয়নের দুর্নীতির জাল কত দূর অবধি? তা জানতে ইডির নজরে শ্বেতা চক্রবর্তীও।
ইডির সূত্র মারফত খবর, কবাডি কবাডি ছবির প্রযোজনা করেছিলেন অয়ন শীল। অয়নের সংস্থার ব্যানারে ওই ছবির প্রযোজনা হয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, সেই ছবির পরিচালনা করেছিলেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। অয়নের বাড়ি থেকে ওই ছবি প্রযোজনার নথি উদ্ধার। চুক্তিপত্র থেকে ছবির খরচের হিসেব মিলেছে তল্লাশিতে। ২০২১ সালে তৈরি হয় ওই ছবি।
অর্জুন চক্রবর্তী, সোহিনী সরকারের মতো নামজাদা অভিনেতা-অভিনেত্রীরা ছিলেন ওই ছবিতে। অয়ন শীলের, প্রোডাকশন হাউজের, যে প্রথম সিনেমাটি কাবাডি কাবাডি, সেই সিনেমার ট্রেলার লঞ্চয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল শ্বেতা চক্রবর্তী।
ইডি সূত্রে খবর, শ্বেতা চক্রবর্তী এতটাই প্রভাবশালী ছিল যে, গত ১৮ তারিখ যখন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটরেট আধিকারিকরা সল্টলেকের এফডি ব্লকে যায়, তার আগে থেকে অয়ন শীলকে সতর্ক করেন মেসেজ পাঠিয়েছিলেন শ্বেতা। ইডির দাবি, 'শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রমোটিং ব্যবসা মূল দায়ভার ছিল অয়ন শীলের কাঁধে। আর এই প্রোমোটিংয়ের যে প্রজেক্টগুলি হতো, সেই প্রজেক্টের প্ল্যান পাশ করতো কামারহাটি পৌরসভার সিভিল ইঞ্জিনিয়ার শ্বেতা চক্রবর্তী। এই শ্বেতা চক্রবর্তীর সঙ্গে অয়ন শীলের স্ত্রী, কাকলি শীলের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল।'
এছাড়া ইডির চাঞ্চল্যকর তথ্য, অয়নের বাড়িতে মিলেছে ইম্পার অডিট সংক্রান্ত নথিও। অয়নের অফিসে মিলেছে ইম্পার ব্যালান্স শিটও। পাশাপাশি অয়ন শীলের ছেলে অভিষেক শীলের পেট্রোল পাম্পের হদিস মিললো। সেখানে বড় আর্থিক লেনদেন হয়েছে। যার পার্টনার ইমন গঙ্গোপাধ্যায়, কে এই ইমন গঙ্গোপাধ্যায়। কী যোগসূত্র রয়েছে খতিয়ে দেখছে ইডি।
অয়নের অফিসে উদ্ধার হয়েছিল বহু তথ্য, নথি, যা হাতড়ে এজেন্ট, পুরসভার চেয়ারম্যান, মেয়র, রহস্যময়ী নারী, আরও কত কী। সেই নথি ঘেটে ইডির অধিকারিকরা জানতে পারেন অয়নের অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া নথির ২০১২ সালের প্রাইমারির তালিকা ও ওএমআর শিট আছে। সেই মোতাবেক মঙ্গলবারই তড়িঘড়ি ডেকে পাঠানো হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সচিবকে।
ইডি সূত্রে দাবি, তাঁকে ২০১২ সালের নিয়োগের তথ্য নিয়ে আসতে বলা হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল যে অয়নের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া তথ্যের সমন্ধে আরও জানার জন্য তাঁকে নথি-সহ ডাকা হয়েছে। ইডির নির্দেশ মোতাবেক, মঙ্গলবার সমস্ত তথ্য সহ ইডির কলকাতা দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রতিনিধিরা, কিন্তু এদিন প্রাথমিকের সচিব এলেন না। ইডি সূত্রে খবর, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে যে নথি পাঠানো হয়েছে সে সমস্ত খুঁটিয়ে দেখা হবে, এরপরে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ২০১২ টেটের নথি উদ্ধার নিয়ে, সোমবার ফেসবুক পোস্ট করে বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর দিকে আঙ্গুল তোলেন। তিনি মঙ্গলবারের ফেসবুক পোস্টে বলেন, '২০১২ টেট খাতা খুলছে, মনে হচ্ছে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীও বেশিদিন বাইরে থাকতে পারবে না। যারা চাকরির জন্য সুপারিশ করেছিল তাদের বিষ্ণুমাতাও উদ্ধার করতে পারবে না।'
শান্তনু ঘনিষ্ঠ অয়নের গ্রেফতারির পর ইডির (Ed) হাতে এলো অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইডির সূত্রে দাবি করা হয়েছে যে, অয়নের (Ayan) অফিসের নথি ঘেটে জানা গিয়েছে, কলকাতা (Kolkata) কর্পোরেশনের মেয়রকে উদ্দেশ্য করে ড্রাফট লেটার যেত অয়নের মারফত। এবার স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, সেই মেয়র কে ছিলেন? সিএন-এ আগেই প্রকাশ করা হয়েছিল যে, অয়নের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল এ রাজ্যের কম বেশি ৭০টি পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে।
পাশাপাশি জানানো হয়েছিল কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন ও দমকল বিভাগে নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। এবার অয়নের বাড়ি থেকে ইডির উদ্ধার করা ড্রাফটের ভিত্তিতে প্রশ্ন উঠছে কলকাতার কোন মেয়রের কাছে ওই ড্রাফট পৌছতো? কেনই বা পৌছতো? সমস্ত নথি উদ্ধার করে এদিন ট্রাকে করে আদালতে হাজির হয় ইডি। সোমবারই ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অয়ন শীল। তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। সোমবার অয়নের পক্ষের আইনজীবী ও ইডির পক্ষের আইনজীবীর জোর সওয়াল জবাবের পর বিচারক অয়নকে ১৩ দিনের ইডির হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
অয়নের বাড়ি থেকে মেয়রের উদ্দেশ্যে ড্রাফট উদ্ধারের ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে কলকাতার প্রাক্তন ও বর্তমান মেয়রের দিকে। এবার প্রশ্ন হচ্ছে, যার কাছে ড্রাফট পৌছতো, সেই মেয়র কে ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় না ফিরহাদ হাকিম? অয়নের বাড়ি ও অফিস থেকে ৩২টি ব্যাঙ্কের নথি, অয়নের নিজের ব্যাঙ্ক নথি এবং তাঁর স্ত্রী কাকলি শীলের যৌথ অ্যাকাউন্ট ছাড়াও একটি প্রাইভেট লিমিটেড, একটি সার্ভিস স্টেশন সংস্থা ইডির আতস কাঁচের তলায়। সোমবার ইডি সূত্রে দাবি, এ রাজ্যের কম বেশি ৭০টি পুরসভায় ৫০০০ বেনিয়মে নিয়োগ হয়েছে। মজদুর ও টাইপিস্ট নিয়োগে ৪-৭ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিক্রি হত। চাকরি সেই চাকরির রেটও উদ্ধার করেছে ইডির গোয়েন্দারা। ইডি সূত্রেই খবর, নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পুরসভাগুলিতে।
দক্ষিণমুখী জেলার পুরসভাগুলিতে হয়েছে বেলাগাম দুর্নীতি। উত্তর দমদম, দমদম, দক্ষিণ দমদম, কামারহাটি, বরাহনগর, পানিহাটি, ডায়মন্ডহারবারসহ আরও পুরসভায় চাকরি বিক্রি হয়েছে বলে দাবি ইডি কর্তাদের। আগে থেকেই এ রাজ্যের একাধিক নেতা, মন্ত্রী জেলে রয়েছেন বিভিন্ন দুর্নীতিতে। আবার অয়নের নথি ঘেটে বিস্ফোরক দাবি করেছে ইডি। ইডির দাবি নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে রাজ্যের সবকটি দফতর গুলিতে। এবং নাম উঠেছে বহু চেয়ারম্যান সহ মন্ত্রী, মেয়রদের। অয়নের নথি ঘেটে, ইডি নিয়োগ দুর্নীতির আরও গভীরে যেতেই কার ডাক আগে আসবে সেটাই এখন দেখার?
অয়নের নথি হাতড়ে এবং ধৃত অয়নকে জেরা করে এজেন্টদের তথ্য বার করে ফেললো ইডি। এই তালিকায় রয়েছে একাধিক এজেন্ট দের নাম। যাদের মাধ্যম দিয়ে দুর্নীতি চালাত অয়ন। ইডির সূত্র অনুযায়ী, কানুদা, এমডি, তপনদা, লাল, কানুদা এসব নাম উদ্ধার করেছে ইডি। যদিও এদেরপরিচয় এখনও জানা যায়নি বলেই খবর, সেসব তথ্য, নথি, ইডি খুঁটিয়ে পরীক্ষার পর আরও নাম, এবং তথ্য উঠে আসবে বলেই দাবি করেছে ইডি। ইডির তালিকা থেকে আরও জানা যায় যে, এদের মধ্যে কেউ ৯৬ জন প্রার্থীর তালিকা পাঠিয়েছিল অয়নের কাছে। ওই চাকরিপ্রার্থীদের রোল নম্বর, পদ, পুরসভা, বিভাগ-সহ বিস্তারিত বিবরণও রয়েছে। এছাড়া জানা যায় ৬৮ জন প্রার্থীর নামের তালিকা পাঠিয়েছে লাল। ৪৩ জন প্রার্থীর নামের তালিকা পাঠিয়েছে এমডি, ১৫ জন ক্যান্ডিটেড নামের লিস্ট পাঠিয়েছেন তপনদা। এ সমস্ত লিস্ট আদালতেকে জানিয়েছে বলে দাবি ইডির।
সে সঙ্গেই উদ্ধার অয়নের সঙ্গে এক রহস্যময়ী নারীর যোগ। যে নারীই নাকি অয়নকে সমস্ত নথি সরিয়ে ফেলতে বলে মেসেজ করেছিল। সে মেসেজও ইডি উদ্ধার করেছে অয়নের ফোন থেকে। ইডি সূত্রেই খবর, অয়ন শীলের এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবী আছেন, যার নাম শ্বেতা চক্রবর্তী, যিনি নৈহাটি জেলাপাড়াতে থাকেন। তথ্য যাচাই করে ইডি জানতে পেরেছে যে, কামারহাটি পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি করতো শ্বেতা। বাবা প্রাক্তন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী। সূত্রের খবর, শ্বেতা কে অয়ন শীল দামি গাড়ি উপহার দিয়েছিলো। সেই গাড়ির রিসিভ, অর্থাৎ স্বেতা চক্রবর্তীর নামে যে গাড়ি কেনা হয়েছিল তার বিল উদ্ধার করেছে ইডির কর্তারা। এছাড়া আরও খবর , অয়নের বাড়ি থেকে শ্বেতার ব্যাঙ্কে টাকা পাঠানোর রশিদ উদ্ধার হয়েছে। শ্বেতা-অয়ন শীলের প্রমোটারির ব্যাবসায় মদত দিত বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি সোমবার ইডি তল্লাশির পর জানিয়েছে, অয়নের ঘর থেকে মিলেছে বেশ কয়েকটি ডিপোজিট স্লিপও। এছাড়াও উদ্ধার হয়েছে আরও কয়েকটি মানি রিসিপ্ট, ধনেখালি, কেএলসি, ভাঙড় থানা এলাকায় বেশ কয়েকটি জমি এবং দিল্লি এনসিআর এলাকায় কাকলি শীলের নামে কেনা সম্পত্তির নথি। পাশাপাশি সই করা চেকের পাতা, কয়েকটি ল্যাপটপ, কম্পিউটার, হার্ড ডিস্কও পেয়েছে ইডি।
দু বছরের শিশুকন্যাকে খুনের (Child Murder) অভিযোগে ধৃত বাবা। সোমবার এন্টালি থানা (Entally PS) এলাকার ঘটনায় শিশুর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে বাবাকে গ্রেফতার করে পুলিস (Kolkata Police)। পুলিস জানিয়েছে, মায়ের অভিযোগ, এ মাসের ১৮ তারিখে তাঁর স্বামী শিশুকন্যাকে খুন করে। তারপরেই এন্টালি থানায় অভিযোগ করেন শিশুকন্যার মা।
ওই মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিস। এরপরেই ওই ব্যক্তির খোঁজে তল্লাশি চালায় পুলিস। সোমবার ওই অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেফতার করে কোর্টে পাঠানো হয়েছে।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় নিহত অভিজিৎ (Avijit) সরকারের মায়ের সাক্ষ্যদান চলাকালীন বিপত্তি। কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিজিতের মা মাধবী (Maadhabi) সরকার। তাঁকে নিয়ে এনআরএস হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা পুলিসের। মাধবী দেবী অসুস্থ হওয়ার পরেই স্থগিত হয়ে যায় শুনানির কাজ। সিবিআইয়ের (Cbi) আইনজীবী সূত্রে খবর, সব ঠিক থাকলে আগামীকাল আবার শুরু হতে পারে এই মামলার শুনানি এবং সাক্ষ্যদান। রবিবার রাতেই নারকেলডাঙা থানার পুলিসের তরফে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে অভিজিতের পরিবারকে। ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে, বাড়ি থেকে শিয়ালদহ আদালত পর্যন্ত পর্যাপ্ত পুলিসি নিরাপত্তা দেওয়া হবে তাঁদের। সেইমতোই সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কলকাতা পুলিসের বিশেষ ভ্যানে আদালতের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন, অভিজিৎ সরকারের মা মাধবী সরকার।
ওদিকে এই মামলা নাটকীয় মোড় নেয়, সিবিআই সূত্রে খবর এই মামলায় সিবিআইয়ের তরফে আইনজীবী পরিবর্তন করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিবর্তন করা হয় এই মামলার দুই তদন্তকারী অফিসারকে। সিবিআই আইনজীবী সূত্রে খবর, এই মামলায় বিচারক অনির্বাণ দাস নিহত অভিজিতের মা মাধবী দেবীকে ঘটনার দিনে ঠিক কী কী ঘটেছিলো সেই বিষয়ে জানতে চান। অভিজিতের মা বলেন,
'সেদিন বিজেপির পার্টি অফিসে বসে খবর দেখছিলেন অভিজিৎ ও বিশ্বজিৎ দুই ভাই, অর্থাৎ তাঁর দুই ছেলে। সেই সময় বোমার আওয়াজ শুনে বাইরে এসে দেখি, তৃণমূলের কিছু দুষ্কৃতী এসে আমার ছোট ছেলে অভিজিতের কলার ধরে। পাশাপাশি একটি দল আমার বাড়ি-ঘর, বাইরের চারটে সিসিটিভি ভাঙচুর করে।'
সোমবার তিনি কোর্টকে জানান, 'আমি এবং আমার বড় ছেলে অভিজিৎকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। সেই সময় মাধবী দেবী, এক দুষ্কৃতীকে বলতে শোনেন দাদা বলেছে প্রাণে বাঁচিয়ে লাভ কী? মেরে দাও।' এরপরে এজলাসেই অজ্ঞান হয়ে যান তিনি।
হাজিরা এড়ালেন কালীঘাটের (Kalighat) কাকু, কিন্তু সিবিআইয়ের (Cbi) চেয়ে পাঠানো নথি আইনজীবী মারফত পাঠালেন নিজাম প্যালেসে (Nizam palace)। কয়েকদিন আগেই তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল সিবিআইয়ের তরফে। আজ অর্থাৎ সোমবার তাঁকে সম্পত্তির নথি-সহ দেখা করতে বলা হয়েছিল বলেই সূত্রের খবর, কিন্তু সুজয় ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু, তিনি আজকে হাজিরা দিতে এলেন না। তার সমস্ত নথি তার আইনজীবী মারফত নিজাম প্যালেসের সিবিআই দফতর পাঠালেন। আইনজীবী নাজমুল আলম সরকার ১০টা বেজে ৩৩ মিনিটে নিজাম প্যালেসের সিবিআই দফতরে এলেন।
সূত্রের খবর, গোপাল দলপতি এবং তাপস মণ্ডলের মুখে উঠে আসে এই ‘কাকুর’ কথা। তিনি বেহালার সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। তিনিই সংবাদমাধ্যমের সামনে জানিয়েছিলেন তাঁর বসের নাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার ফের সিবিআই অফিসে যাওয়ার কথা প্রসঙ্গে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, 'সিবিআই ডাকেনি। শুধুমাত্র নথি চেয়েছে। তাই প্রতিনিধি যাচ্ছেন তা জমা দিতে।'
দীর্ঘ ৩৭ ঘন্টা তল্লাশির পর গ্রেফতার শান্তনু (SHANTANU) ঘনিষ্ঠ অয়ন শীল (AYAN Seal)। আজ স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর, তাঁকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তুলবে ইডি। কেন্দ্রীয় সংস্থা (Ed) নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত শুরু করতেই, একে একে সামনে এসেছে রথী-মহারথীদের নাম। ইডির হেফাজতের আছে অনেকে, এবার অয়নকে হেফাজতে নিলো ইডি। শনিবার শান্তনু যোগ পেয়ে, শান্তনু ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীলের বাড়িতে হানা দেয় ইডির একটি দল। শনিবার দুপুরের পর থেকেই অয়নের বাড়িতে, সল্টলেকের অফিসে তল্লাশি শুরু হয়। তল্লাশি করে প্রায় ৪০০ ওএমআর সিট-সহ প্রার্থীদের তালিকা, অ্যাডমিট কার্ড উদ্ধার করে ইডি। সেই সঙ্গেই তাঁকে জেরা করতে থাকে ইডির আরও একটি দল।
শনিবারের পাশাপাশি গোটা রবিবারজুড়ে চলে অয়নের বাড়ি, ফ্ল্যাট, অফিসে তল্লাশি। তল্লাশি চলাকালীন রবিবারই ইডির তরফে জানানো জন্য হয় যে, অয়নের সল্টলেকের অফিসই ছিল কুন্তলের কন্ট্রোল রুম। রবিবার তল্লাশির পর ইডির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে প্রায় ৫০-৬০ কোটি টাকার লেনদেনের হিসেব খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি এও জানানো হয়েছিল যে, ওই টাকার যে তালিকা সেই তালিকা টুকরো টুকরো করে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। সেই তালিকা খুঁজে পেয়েছে ইডি। সেগুলোকেই পরীক্ষা করে দেখছেন বলে জানিয়েছিল ইডির আধিকারিকেরা। দীর্ঘ ৩৭ ঘন্টা চলে তল্লাশি।
এরপরে সোমবার সকালে গ্রেফতার করা হয় অয়ন শীলকে। অয়নের সঙ্গে বিভিন্ন পুরসভার চেয়ারম্যানের যোগাযোগের কথা আগেই প্রকাশ করেছিল সিএন। সেই সঙ্গে রবিবার তল্লাশি চলাকালীন ইডির তরফে জানানো হয় শুধু শিক্ষা দফতরে নয়, বিভিন্ন পুরসভা-সহ আরও বেআইনি নিয়োগে যুক্ত ছিল অয়ন ও শান্তনু। গোটা রাজ্যজুড়ে ছড়িয়েছিল তাঁদের এজেন্ট। সেই এজেন্টদের তথ্য ইডির হাতে এসেছে বলে দাবি ইডি সূত্রে। সে সমস্ত নথি ও তথ্য খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে খবর।
শান্তনু ঘনিষ্ঠ অয়নের (Ayan) সল্টলেকের অফিস থেকে উদ্ধার ৪০০ ওএমআর শিট (OMR Sheet)। উদ্ধার প্রার্থীর তালিকা সহ অ্যাডমিট কার্ড ও নিয়োগ সংক্রান্ত নথি। অয়নের অফিস হাতড়ে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া গিয়েছে। যা আগামী দিনে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্ত প্রক্রিয়ায় গতি আনতে পারে বলে সূত্রের খবর।
শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত থাকায় নাম জড়িয়েছে শান্তনু ঘনিষ্ঠ অয়ন শীলের। ইডির তল্লাশিতে জানা গিয়েছে, শান্তনুর যাবতীয় তথ্য সরিয়ে রাখা হয়েছিল অয়নের অফিসে। পাশাপাশি ইডির তল্লাশিতে আর উঠে এসেছে, চাকরির প্রস্তুতির প্রতিষ্ঠান খুলে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হত বিভিন্ন পুরসভা গুলিতেও। অর্থাৎ শুধু শিক্ষা নয় এবার চাকরি দুর্নীতির অভিযোগ উঠল পুরসভার চাকরিতেও। অভিযোগের তীর শান্তনু ঘনিষ্ঠ অয়ন শীলের দিকে।
শনিবার দিনভর শান্তনু ঘনিষ্ঠ অয়নের অফিস ও প্রতিষ্ঠানের নথি যাচাই করে এই তথ্য জানতে পারে ইডি। ইডি সূত্রে দাবি, 'একাধিক পুরসভার চেয়ারম্যান-এর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন অয়ন। একটি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক থেকে উদ্ধার হয়েছে পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত নথি।' শিক্ষাক্ষেত্রের নিয়োগ দুর্নীতির বাইরে পুরসভার নিয়োগে কি এবার দুর্নীতি হয়েছে, তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন চিহ্ন। কারণ একাধিক চাকরির নোটিফিকেশন এবং প্রার্থী তালিকা পাওয়া গিয়েছে অয়নের হার্ডডিক্সে।
শনিবার ইডি অয়ন শীলের অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া কম্পিউটার, ল্যাপটপ সহ কিছু ইলেকট্রনিক্স গেজেটে পাসওয়ার্ড থাকার দরুন সেগুলি ব্যাবহার করতে পারছিলেন না তদন্তকারী আধিকারিকরা। শনিবার রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ অয়ন শীলকে তাঁর সল্টলেকের অফিসে আনা হলে আধিকারিকরা সেই ইলেকট্রনিক্স গেজেটের পাসওয়ার্ড জানতে পারে।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সেখান থেকে ব্যাঙ্কের নথি এবং কিছু লেনদেনের তথ্য হাতে এসেছে তদন্তকারী আধিকারিকদের। এই লেনদেন গুলি কবে করা হয়েছিল এবং অয়ন শীল কাদের মাধ্যমে ওই লেনদেন করেছিলেন তা নজরে রয়েছে ইডি আধিকারিকদের। এছাড়া জেরার পর ইডি সূত্রের দাবি, শান্তনু-কুন্তলের মিডল ম্যানরা ছড়িয়ে পড়েছিল বাঁকুড়া-পুরুলিয়া সহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায়। এ যাবতীয় সমস্ত নথি অয়নের অফিস হাতড়ে খুঁজে পেয়েছে বলে দাবি ইডির।
ট্যাংরায়(tangra) খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের জেরা করে পুলিসের হাতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিস (kolkata police) সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে ধৃতদের জেরা করে পাওয়া গিয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। জানা গিয়েছে ঝুন্নুকে হাতুড়ি দিয়ে খুন করা হয়েছিল। পুলিস শনিবার তদন্তের জন্য যায় গোলাম রব্বানীর বাড়ি। শুক্রবার রব্বানীর বাড়িতে তল্লাশি করে জানা যায়, খুন করার পর রক্তের দাগ মুছতে দেওয়াল রঙ করলেও সিলিংয়ে পাওয়া গিয়েছে রক্তের দাগ। এমনই পুলিস সূত্রে খবর।
শনিবার জেরার পর পুলিস জানিয়েছে, অভিযুক্ত গোলাম রব্বানীর স্ত্রী আয়েশা নুর অন্তঃসত্ত্বা। নিজের স্ত্রীর সঙ্গে অশ্লীল আচরণের জন্য গোলাম, ঝুন্নুকে খুন করেন। শনিবার পুলিসের এক কর্তা বলেন, 'অভিযুক্ত গোলাম রব্বানী পুলিসকে জানিয়েছেন ঝুনু রানাকে খুন করে খালের জলে ফেলে দিয়েছে।' যদিও শনিবার ঝুন্নুর মৃতদেহের জন্য সায়েন্স সিটির কাছে একটি ঝিলে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিস। এখনও ঝুন্নুর মৃতদেহ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিস।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের দাবি মৃতদেহ পচন ধরে হালকা হয়ে ড্রাম থেকে বেরিয়ে যেতে পারে, শনিবারও ট্যাংরা এলাকা এক প্রকার থমথমে ছিল। পুলিস জানিয়েছে এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই গোলামের ভাই ইমরান রব্বানীকে গ্রেফতার করে পুলিস। মোট চার অভিযুক্তকে জেরা করে এই খুন সম্বন্ধে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করবে পুলিস। শুক্রবার সকালে বাকি তিন অভিযুক্তকে কোর্টে তোলা হলে বিচারক তাঁদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।