শনিবার সন্ধায় আইসিপি পেট্রাপোল (ICP Petrapole), ১৪৫ ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা (Army) আন্তর্জাতিক সীমান্তে ৪ কেজি ৬৬৭ গ্রাম ওজনের ৪০ টি সোনার বিস্কুট সহ এক চোরাকারবারীকে গ্রেফতার করেছে। বাজেয়াপ্ত সোনার মোট মূল্য প্রায় ২ লক্ষ ৮০ কোটি টাকা।
সেনা সূত্রে খবর, কর্তব্যরত জওয়ানরা গোপন সূত্রে খবর পান এক চোরাকারবারী ট্রাক ড্রাইভারের ছদ্দবেশে আইসিপি পেট্রাপোল হয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে সোনা পাচার করতে চলেছে। অবিলম্বে, বিএসএফ আধিকারিকদের নির্দেশ অনুসারে জওয়ানরা একটি অনুসন্ধান দল গঠন করে। এর কিছুক্ষণ পরই খবর মোতাবেক এক সন্দেহভাজন বাংলাদেশি ট্রাক আইসিপি পেট্রাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। বিএসএফ অনুসন্ধান দল তল্লাশির জন্য ওই ট্রাকটিকে থামায়। ওই ট্রাকে করে বাংলাদেশ থেকে ভারতে মাছ আনা হচ্ছিল। জওয়ানরা পুরো ট্রাকটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তল্লাশি করে। তল্লাশিকালে মাছের বাক্সের নিচে থেকে ৪০টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করা হয়। জওয়ানরা অবিলম্বে ট্রাক এবং সোনা সহ ট্রাক চালককে আটক করে এবং আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিএসএফ ক্যাম্পে নিয়ে আসে। গ্রেফতারকৃত পাচারকারীর পরিচয় সুশংকর দাস। তিনি বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় ট্রাক চালক জানান, সে ১৫ বছর ধরে ট্রাক চালাচ্ছেন। সে আরও জানান, রবিবার ট্রাকের মালিক সফিকুল ইসলাম সে সাতক্ষীরা থেকে এই ট্রাকে মাছ বোঝাই করেছিলেন। এরপর ভারতে আসার পর এসব মাছ কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থার কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু আইসিপি পেট্রাপোলে বিএসএফ অনুসন্ধান দল তল্লাশির সময় তাঁকে সোনার বিস্কুট সহ আটক করে নেয়। আটক পাচারকারীকে সোনার বিস্কুট ও ট্রাকসহ কাস্টম অফিস, পেট্রাপোল পুলিসের হাতে তুলে দিয়েছে।
ইতিমধ্যেই পেট্রাপোলে (Petrapole Border) চালু হয়েছে 'সুবিধা অ্যাপ' (Suvidha App) । সোমবার থেকে মালদহের (Maldaha) মহদীপুর সীমান্তে (Mahaidpur Border) এই অ্যাপ চালু করতে চলেছে মালদহ জেলা প্রশাসন। ১০ হাজার টাকা দিয়ে অ্যাপের মাধ্যমে স্লট বুকিং করতে হবে রপ্তানিকারকদের। এই অ্যাপ থেকে নির্দিষ্ট দিন এবং সময় জানিয়ে দেওয়া হবে রপ্তানি কারককে। সেই দিনেই পণ্য নিয়ে বাংলাদেশের যেতে পারবে নির্দিষ্ট নম্বরের লরি। এখন থেকে এইভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে সীমান্ত বাণিজ্য (Business)।
আর এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী এবং রপ্তানি কারকরা। মহদীপুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, এক গাড়ি পাথর বাংলাদেশের রপ্তানি করে তিন হাজার টাকা লাভ হয়। সরকারকে যদি ১০ হাজার টাকা করে দিতে হয় তাহলে ৭০০০ টাকা করে ক্ষতির সম্মুখীন হবেন ব্যবসায়ীরা। ক্ষতি করে ব্যবসা করা সম্ভব নয়। মালদহ জেলায় বহু মানুষ মহদীপুর সীমান্তে ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। সমস্যায় পড়বেন তাঁরাও।
মহদীপুর এক্সপোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক তপন দাস বলেন, মহদীপুরে পরিকাঠামো নেই। সরকারি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। এই অবস্থায় অ্যাপ চালু হলে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হবেন ব্যবসায়ীরা। পরিকাঠামো তৈরি করে অ্যাপ চালু করা হোক।
আর এই অ্যাপ চালু ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ইংরেজ বাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরুপা মিত্র চৌধুরী বলেন, মহদীপুর একটা প্রতারণার জায়গায় পরিণত হয়েছে। এই অ্যাপ ভুয়ো।
এই বিষয়ে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, রাজ্য সরকার যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সবাইকে মানতে হবে। রাজ্য সরকার ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা নিজেদের স্বার্থে এসব বলছেন।
মালদহ জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে পার্কিংয়ের জন্য জায়গা চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। সরকারের অনুমতি পেলেই শুরু হবে পার্কিং তৈরির কাজ। পার্কিং হলে আর সমস্যায় পড়তে হবে না ব্যবসায়ীদের।
সিলেট থেকে বেনাপোল(benapole) - পেট্রাপোল(petrapole) হয়ে কলকাতা। কলকাতা থেকে দিল্লি। সেখান থেকে যাওয়ার কথা ছিল তুর্কি (turkey)। কিন্তু প্রতারকের খপ্পরে পড়ে সব খুইয়ে ফিরতে হয় কলকাতায়। সেখান থেকে নিঃস্ব(destitute) হয়ে বহুকষ্টে ঘরের ছেলে ফিরল ঘরে।
বাংলাদেশের সিলেটের(sylhet) বাসিন্দা তোফায়েল আহমেদ। নিজের পায়ে দাঁড়াতে প্রস্তাব আসে তুর্কিতে একটি ভালো চাকরির। তার জন্য খসাতে হবে গ্যাটের কড়ি। তা সে যাই হোক না কেন? ভবিষ্যত্ তো সুরক্ষিত হবে। আগুপিছু ভাবেননি তোফায়েল। টাকা পয়সা যোগার করে রওনা দেন তুর্কির উদ্দেশে। প্রথমে তাকে কলকাতা আনা হয়, সেখান থেকে দিল্লিতে। দিল্লিতে যুবকের সব টাকা আত্মসাত্ করে প্রতারকরা (cheater)। এমনটাই অভিযোগ করেন তোফায়েল ।
প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে আর দেরি করেননি তোফায়েল। প্রতারকদের খপ্পর থেকে কোনওভাবে পালিয়ে কলকাতা ফেরেন বাংলাদেশের ওই যুবক। তাতেও শেষরক্ষা হয় না। ঢাকা নিয়ে যাওয়ার নাম করে যুবকের শেষ সম্বল মোবাইল ও ৩০০০ টাকা নিয়ে চম্পট দেয় এক দুষ্কৃতী। সঙ্গে টাকা নেই, মোবাইলটাও হাতছাড়া। পাসপোর্টও খোয়া গিয়েছে। অসহায় অবস্থায় শিয়ালদা স্টেশনে বসে কাঁদতে থাকে ওই যুবক। যুবকের পরিস্থিতি বুঝে কয়েকজন পথচারি তাকে ময়দান থানায় (moidan police station) যাবার পরামর্শ দেয়।
পাসপোর্ট খোয়া যাওয়ায় বেশ খানিকটা কাঠখড় পোড়াতে হয় কলকাতা পুলিসকে।তারপর সব পরিস্থিতি সামাল দিয়ে ময়দান থানার কর্তব্যরত অফিসার নিজের উদ্যোগে যুবককে কলকাতা-ঢাকা একটি বাসে তুলে দেন। সঙ্গে দিয়ে দেন পথের খাবার, জল ও কিছু টাকা। শেষপর্যন্ত কলকাতা পুলিসের সহায়তায় যুবক পৌঁছতে পেরেছে বাংলাদেশে তার নিজের গ্রামে। বাসে ওঠার আগে ভেজা চোখে কলকাতাকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি ওই যুবক।