
'সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছি না। আমি মরে গেলে বিচার করবেন কি করে?' আদালতে এসে জেলের চিকিৎসা নিয়ে এমনিই দাবি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ পেয়ে বিষয়টা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন বিচারপতি।
মঙ্গলবার আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলছিল। সেখানেই সশরীরে হাজির করানো হয় পার্থকে। এজলাসে তাঁর আইনজীবী বিচারককে নিজের মক্কেলের অসুস্থতার কথা যখন বলছিলেন, তখনই নিজের জায়গায় উঠে দাঁড়ান পার্থ। হাত জোড় করে বিচারককে জানান নিজের শরীর খারাপের কথা। বিচারকের উদ্দেশে পার্থ বলেন, ‘স্যার একটা কথা বলতে চাই। আমার অসুস্থতার কথা জেল সুপার লিখে দিচ্ছেন হাসপাতালক কর্তৃপক্ষকে। হাসপাতাল ১০ দিন পর রিপোর্ট ব্যাক করছে (ফেরত পাঠাচ্ছে)। এক জন আক্রান্ত হবেন, তার ১০ দিন পর এসে চিকিৎসক দেখবেন! দেখুন একটু।’
জবাবে বিচারক জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানতেন না। তাঁর কথায়, ‘আপনি প্রথম জানালেন। দেখছি ব্যাপারটা।’ পার্থ এর পরে আরও জোরালো ভাবে আর্জি জানান। তিনি বিচারকের সামনে হাত জোড় করে বলেন, ‘‘দেখুন স্যর! মরে গেলে আর বিচার করবেন কী করে? স্যর, ৩০০ দিনের উপর হয়ে গিয়েছে।’’ এর পরে বিচারক বলেন, 'ঠিক আছে।'
বৃহস্পতিবার আলিপুর সিবিআই (CBI) আদালতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chaterjee) পেশ করা হয়েছে। প্রথম পক্ষের সওয়াল জবাবের পর, পার্থ বিচারককে বলেন, 'আপনি আগের দিন বলেছিলেন ৫ মিনিট সময় দেবেন।' এরপর বৃহস্পতিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বিচারক কথা বলার অনুমতি দেন। অনুমতি পেয়েই আদালতে পার্থ বলেন, '৮ মাস অন্ধকারে আছি। বিচারব্যবস্থার প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে। আমার বিশ্বাস যাই ঘটুক না কেন সত্য একদিন প্রকাশিত হবে। কিন্তু সেটা কতদিন? আমি মন্ত্রী তাই আমার অপরাধ? স্যার প্রাইমাফেসি মানে কি?' বিচারককে প্রশ্ন করেন পার্থ।
তিনি বিচারকে আরও বলেন, ' যা প্রাথমিক ভাবে দেখা গিয়েছে। আমার ৭০ বছর বয়স। আমার বিরুদ্ধে থানায় কোনো ডাইরি নেই। বিরোধী নেতা থাকাকালীন আমার বিরুদ্ধে শাসককুল কিছু বলতে পারেনি। আমি কোথায় পালিয়ে যাবো স্যার? আমার মামা সাহিত্যিক। বংশপরম্পরা আছে। আমি আমার জীবদশায় এই বিচার দেখে যেতে পারবো কিনা জানিনা।' এরপর বিচারক বলেন, 'প্রাইমাফেসি মানে আপাত গ্রাহ্য।'
এরপরে পার্থ বলেন, 'আপাত গ্রাহ্য ভাবে কতদিন চলবে? আমার আপনার উপর আস্থা আছে। আমি অন্ধকারে বসে আছি। আমি নিয়োগকর্তা নই। বোর্ড দ্বারা পরিচালিত সবাই। এটাই আমার বিনীত নিবেদন।' পাশাপাশি পার্থ চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার আদালত থেকে বেরিয়ে, সাংবাদিকদের বলেন, 'যাঁরা নিজেরা কালিমালিপ্ত, তাঁরা আমায় কী কালিমালিপ্ত করবে? আমি দলের সঙ্গে আছি আছি।'