
টাকা নিয়ে প্রশ্ন করার অভিযোগে মহুয়া মৈত্রকে লোকসভা থেকে বহিস্কারের সুপারিশ করল এথিক্স কমিটি। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে এই সংক্রান্ত রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, মহুয়াকে বহিস্কারের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৬ জন সদস্য এবং বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৪ জন। ডিসেম্বরের বসবে লোকসভার শীতকালীন অধিবেশন। সেখানেই ওই রিপোর্ট পেশ করা হবে।
হীরানন্দানি গ্রুপের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রশ্ন করার অভিযোগ উঠেছে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এথিক্স কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে হাজির হয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র। মহুয়ার অভিযোগ, ওই প্যানেলে তাঁকে ব্যক্তিগত একাধিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। যদিও বৈঠকের মাঝেই বেরিয়ে আসেন তৃণমূল সাংসদ। বৃহস্পতিবার ওই কমিটি সরকারিভাবে তাদের রিপোর্ট পেশ করতে চলেছে।
এদিকে এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান তথা বিজেপি সাংসদ বিনোদ সোনকরের বিরুদ্ধে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে অভিযোগ করেন মহুয়া। তিন পাতার একটি চিঠি লিখে তাঁর অভিযোগ, বৈঠকের সময় তাঁকে মৌখিকভাবে তাঁর 'বস্ত্রহরণ' করা হয়েছে । তাঁর সঙ্গে অনৈতিক, নোংরা আচরণ করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন সাংসদ ।
শিল্পপতি হিরানান্দনিকে (Hiranandani) সংসদের (Parliament) লগ ইন আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra), এমনটা অবশেষে স্বীকার করলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, টাকা নেওয়ার বিনিময়ে মহুয়ার সংসদের প্রশ্ন ঠিক করে দিয়েছেন শিল্পপতি হিরানান্দনি। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে সংসদের লগ ইন আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু এবারে এই নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন খোদ মহুয়া মৈত্র। তিনি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি হিরানান্দনিকে সংসদের লগ ইন আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছেন কিন্তু টাকার বিনিময়ে নয়।
শুক্রবার এক সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে মহুয়া মৈত্র জানিয়েছেন, 'হ্যাঁ আমি সংসদের লগ ইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড শিল্পপতি এবং আমার বন্ধু দর্শন হিরানন্দানিকে দিয়েছিলাম। যাতে ও কাউকে একটা দায়িত্ব দিতে পারে আমার প্রশ্নগুলো টাইপ করে দেওয়ার জন্য।' এরপর তৃণমূল সাংসদ আরও বলেন, 'দর্শনের অফিসের একজন কর্মী লোকসভায় আমার প্রশ্নগুলো টাইপ করে দিয়েছিলেন। টাইপ করার পর সেই ব্যক্তি আমায় ফোন করেন এবং আমি প্রশ্নগুলো এক নজরে পড়ে নিই। কারণ আমি নিজের সংসদ এলাকায় সবসময়ই ব্যস্ত থাকি। প্রশ্নগুলি সংসদের ওয়েবসাইটে টাইপ হওয়ার পর আমার ফোনে একটি ওটিপি আসে। সেটি ওয়েবসাইটে দিলে তবেই প্রশ্নগুলি সেখানে সেভ হয় এবং সাবমিট করা যায়। ফলে দর্শন নিজে থেকে আমার লগ ইন আইডি নিয়ে প্রশ্ন টাইপ করে দিয়েছিল, এই তথ্য স্রেফ হাস্যকর।'
নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধনের প্রথম দিনেই সমস্যায় পড়লেন অনেক সাংসদ। মূলত নতুন সংসদ ভবনে অধিকাংশ কাজই ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন হবে। সেকারণেই প্রথম দিনেই সমস্যায় পড়েন অনেকে।
মঙ্গলবার অধিবেশন শুরু হওয়ার পর মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে ভাষণ দিতে শুরু করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল। সেসময় বিরোধীরা জানান, তাঁদের কাছে বিলের কপি পৌঁছয়নি। শুরু হয় হইহট্টগোল। পরে অবশ্য স্পিকার জানান, ইতিমধ্যে ডিজিটাল মাধ্যমে ওই বিল আপলোড করা হয়েছে। যা সাংসদদের সঙ্গে থাকা ট্যাবলেটে দেখা যাবে।
সংসদের পুরনো ভবনকে বিদায় জানিয়ে মঙ্গলবারই নয়া সংসদ ভবনে শুরু হয়ে গিয়েছে বিশেষ অধিবেশন। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর নয়া সংসদ ভবনে পা রেখেছেন সাংসদরা। এই সংসদ ভবনের নাম দেওয়া হয়েছে পার্লামেন্ট হাউজ অফ ইন্ডিয়া। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, এই নয়া সংসদ ভবনের নাম 'সংবিধান সদন' রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন।
মঙ্গলবার অধিবেশন শুরুর আগে সেন্ট্রাল হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "নতুন সংসদ ভবনের হাত ধরে নতুন ভবিষ্যতের সূচনা হল। ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দক্ষতা বৃদ্ধিতে জোর দেওয়া হবে। 'রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় বলেছেন, "সংসদের নয়া ভবন আত্মনির্ভরতার প্রতীক।'
এদিন সেন্ট্রাল হলের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "ভারত বিশ্বের পঞ্চম অর্থব্যবস্থায় পৌঁছে গিয়েছে। বিশ্বের তৃতীয় অর্থব্যবস্থায় পরিণত হবে দ্রুত। আত্মনির্ভর ভারতের সংকল্প পূরণ করতে হবে। কৃষিপ্রধান দেশ ভারত, কৃষিতে আত্মনির্ভরতা আনতে হবে। যুবশক্তির উপর অগাধ বিশ্বাস আছে।"
প্রসূন গুপ্তঃ মঙ্গলবার একটি বিশেষ দিন বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই দিনেই নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন হলো। সুবিশাল লোকসভার কক্ষ, একই রকম রাজ্যসভাও। স্বাধীনতার পরে যতগুলি আসন ছিল দুই ভবনে তা ক্রমশই বর্ধিত হয়েছে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। সাংসদের সংখ্যাও বেড়েছে। ব্রিটিশদের কালে তৈরি সংসদ ভবন এখন 'হেরিটেজ'। সকালে পদব্রজে সমস্ত সাংসদ নতুন ভবনে উপস্থিত হলেন। মোদী জমানায় অভিনব তো নিশ্চিত। একই সাথে বলতে দ্বিধা নেই পরিবেশ যথেষ্ট ভালো ছিল, সব সাংসদের কাছে পাওয়া এই নতুন ভবন আনন্দের ছিল। মামুলি বক্তব্য ছাড়া তেমন কোনও বিশেষ ভাষণ ছিল না।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে সকলকে নিয়ে চলার কথা বললেন। অবিশ্যি তাঁর ভাষণের গোড়ায় বারবার এদিনের গনেশ চতুর্থীর কথা উল্লেখ করেছেন। এমন একটি হিন্দু পূজার মহোৎসবে পার্লামেন্টের উদ্বোধন কতটা সুখের তা উল্লেখ করলেন। একই সাথে সোমবারের মতো ভাষণের বেশ কিছুটা স্থান নিলো প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরুর প্রশস্তিতে। পরপর চারবার প্রধানমন্ত্রী থাকার রেকর্ড রয়েছে পন্ডিত নেহেরুর। মোদীর পক্ষে হয়তো তা ভাঙা সম্ভব নয় কিন্তু তাঁর চেষ্টা থাকবে তৃতীয়বারের জন্য জিতে আসার। তবুও বলতেই হয় যে, কংগ্রেস মুক্ত ভারতের স্লোগান তোলা মোদীর মুখে নেহেরুর প্রশংসা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। একেবারে বক্তব্যের শেষ প্রান্তে এসে মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে একেবারে বলেই দিলেন যে, ঈশ্বর তাঁকে শক্তি দিয়েছেন এই মহিলা বিল পাশ করানোর।
এরপরেই বক্তব্য রাখেন কংগ্রেসের বিরোধী নেতা অধীর চৌধুরী। অধীর প্রথমে নতুন দিনের সূচনাকে জনগণের হাতেই ছেড়ে দিলেন। গণতান্ত্রিক দেশে সর্বধর্মের প্রয়োজন নিয়ে কথা বললেন। কিন্তু জানাতে ভুললেন না যে এই মহিলা বিল প্রথম এনেছিলেন প্রয়াত রাজীব গান্ধী। এরপরেই হৈচৈ শুরু হলে অধীর বলেন যে , মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনে এই হট্টগোল তাঁকেই অপমান করা। পরে ভারতীয় সংবিধানের বেশ কিছু অংশ পরে শোনান। তখনও বাধার চেষ্টা হয়। অবশেষে স্পিকার ওম বিড়লা বুধবার বেলা ১১ অবধি সভা মুলতুবি করে দেন।
ঠিকানা বদলাচ্ছে পার্লামেন্টের। আজই নতুন পার্লামেন্ট ভবনে অধিবেশন। তার আগে পুরোনো সংসদ ভবনকে বিদায় জানাতে সংসদ ভবনে উপস্থিত হয়েছিলেন সাংসদরা। লোকসভা রাজ্যসভা মিলিয়ে মোট ৭৫০ জনের বেশি সংসদ পুরোনো পার্লামেন্ট হাউজে তুললেন গ্ৰুপ ফটো।
এদিকে আজ থেকেই নতুন সংসদ ভবনে শুরু হবে অধিবেশন। পুরোনো সংসদ ভবনে আর চলবে না তর্ক বিতর্ক। এদিন অধিবেশনে আসা প্রত্যেক সাংসদদের জন্য থাকবে একটি বিশেষ উপহারের ব্যাগ।
উল্লেখ্য, নতুন সংসদ ভবন থেকে ৭৫ টাকার কয়েন আর স্মারক ডাকটিকিটের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ, সোমবার থেকে শুরু হল সংসদের ৫ দিনের বিশেষ অধিবেশন। ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর আয়োজিত এই অধিবেশন মঙ্গলবার থেকে নতুন সংসদ (Parliament) ভবনে বসবে। সোমবার অর্থাৎ ১৮ সেপ্টেম্বর ছিল পুরনো সংসদ ভবনে বসা শেষ অধিবেশন। তাই এদিন বিবৃতি দিতে গিয়ে বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)।
বিশেষ অধিবেশনে পুরনো সংসদ ভবনে শেষবার বিবৃতি দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, কোনও পরিবার পুরনো ঘর ছেড়ে নতুন ঘরে গেলে অনেক স্মৃতি সঙ্গে করে নিয়ে যায়। তবে, পুরনো এই ভবন দেশের যুব সমাজের কাছে পথিকৃৎ হয়ে থাকবে। এছাড়াও তাঁর কথায় উঠে এসেছে জি-২০-এর সাফল্যের কথা। তিনি বলেন, কোনও এক দল বা ব্যক্তির কৃতিত্ব নয়। ১৪০ কোটি মানুষের জন্য জি-২০ সফল হয়েছে।
এর পর বিশেষ অধিবেশনে বিবৃতি দিতে গিয়ে তাঁর পূর্বসূরি হিসেবে জওহরলাল নেহেরু, লালবাহাদুর শাস্ত্রী, মনমোহন সিং, অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বদানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মুখে ঘুরেফিরে এসেছে জওহরলাল নেহেরু এবং ইন্দিরা গান্ধীর নাম। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল থেকে লালকৃষ্ণ আডবানীর নেতৃত্বকেও কুর্নিশ জানান নরেন্দ্র মোদী। তাঁর মুখে উঠে আসে পণ্ডিত নেহেরুর দেওয়া মধ্যরাতের ভাষণ অর্থাৎ Tryst with Destiny প্রসঙ্গ। সেই ভাষণ আমাদের এখানও অনুপ্রাণিত করে, দাবি মোদীর। একইভাবে অটলবিহারী বাজপেয়ীর বিখ্যাত 'উক্তি, সরকার আসবে, যাবে, দল আসবে, দল যাবে কিন্তু দেশ যাতে অটুট থাকে', এই প্রসঙ্গও নরেন্দ্র মোদীর গলায় শোনা যায়।
আবার নিজের আমলের ৩৭০ ধারা বিলোপ ও এক দেশ, এক করব্যবস্থা অর্থাৎ GST চালুর প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। ভারতীয় সংসদীয় গণতন্ত্র এক ভোটে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের আস্থা ভোটে হারা যেমন দেখেছে, তেমন বহুত্ববাদ, সব কা সাথ, সব কা বিকাশ দেখেছে, দাবি প্রধানমন্ত্রীর। এভাবেই সংসদের বিশেষ অধিবেশনে বিবৃতি দিতে গিয়ে ১৯৪৭-২০২৩ পর্যন্ত সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাস, সমৃদ্ধি, বৃদ্ধি, জি-২০ থেকে চন্দ্রযানের প্রসঙ্গ ঘুরে ফিরে এসেছে প্রধানমন্ত্রীর গলায়। এছাড়াও তিনি তাঁর শৈশবের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছে, 'একটি গরিব শিশু সংসদে আসতে পারবে, তা কখনও কল্পনা করতে পারিনি।' এমনটা বলতে গিয়েও তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন।
৭৫ বছরের সফর নতুন করে শুরু হচ্ছে। ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশ নতুন রূপে সেজে উঠবে। গণেশ চতুর্থীর দিনই সংসদ ভবনে প্রবেশ। বিশেষ অধিবেশনের আগে জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এদিন প্রধানমন্ত্রী সংসদের বাইরে বলেন, '৭৫ বছরের সফর, নতুন জায়গা থেকে শুরু হচ্ছে। নতুন স্থানে এই সফর নতুন করে শুরু হবে। নয়া সংকল্প, নতুন বিশ্বাস। ২০৪৭ সালে এই দেশকে উন্নত দেশ তৈরি করতে হবে। তাই আগামী যা সিদ্ধান্ত হবে, তা নতুন সংসদ ভবনেই হবে।"
সোমবার সকাল ১১টায় বিশেষ অধিবেশন শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন সংসদের ৭৫ বছরের যাত্রার ইতিহাস নিয়ে আলোচনা হবে। বিরোধী দলের সাংসদদের এই অধিবেশনে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছে কেন্দ্র।
সংসদের বিশেষ অধিবেশনে বক্তব্য রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। "এই পুরনো সংসদ ভবন প্রেরণা দেবে। চন্দ্রযান ৩-এর সাফল্যে দেশ অভিভূত।" G20- সম্মেলনের সাফল্য দেশের সবার সাফল্য, জানালেন প্রধানমন্ত্রী।
বিশেষ অধিবেশনের আগে নতুন সংসদ ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হল। আজ অর্থাৎ রবিবার রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন। সূত্রের খবর, সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে বসছে সংসদের বিশেষ অধিবেশন। এদিন এই অনুষ্ঠানে মোদির উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি থাকতে পারেননি। তবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারবেন না কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে না পারার জন্য দুঃখ প্রকাশও করেছেন কংগ্রেস সভাপতি। আজকের এই অনুষ্ঠানের পর রীতি মেনে সর্বদলীয় বৈঠকও রয়েছে।
কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকালেই নতুন সংসদ ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের অনুষ্ঠান হবে। সমস্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। আমন্ত্রিত বিরোধী দলের নেতারাও। এই অনুষ্ঠানের পর আজ বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ সর্বদলীয় বৈঠক হবে। আগামী ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর সংসদে বিশেষ অধিবেশন বসছে। তার আগেই সমস্ত দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কেন্দ্রের ডাকা এই বিশেষ অধিবেশন ঘিরে জল্পনার শেষ নেই। কেন হঠাৎ বিশেষ অধিবেশন ডাকা হল, তা নিয়ে বিরোধীরা নানা রকমের প্রশ্ন তুলেছেন। পরে কেন্দ্রের তরফে এই অধিবেশনে আলোচ্যসূচি প্রকাশ করা হয়, যেখানে ৪টি বিলের উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্য়তম হল মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সহ অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ সংক্রান্ত বিল। এছাড়াও অ্যাডভোকেট (সংশোধনী) বিল, ২০২৩, প্রেস অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশন অব পিরিওডিক্য়াল বিল ২০২৩, পোস্ট অফিস বিল পেশ করা হবে।
এই বিলগুলির মধ্যে বিরোধীরা নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত বিলের বিরোধিতা করবে বিরোধীরা। কোন ইস্যুতে অধিবেশন, সেই নিয়েও কেন্দ্র ধোঁয়াশা রেখেছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, সংসদের বিশেষ অধিবেশনের প্রথম দিন সংসদের দুই কক্ষে স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষ ও পুরনো সংসদ ভবনের ইতিহাস, ঐতিহ্য় নিয়ে আলোচনা করা হবে। এরপর ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন সংসদ ভবনে অধিবেশন বসতে পারে।
চলতি মাসের ১৯ তারিখ নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন। তার জন্য সংসদের কর্মীদের জন্য পদ্ম ফুলের নকশা দেওয়া বিশেষ পোশাক তৈরি করা হয়েছে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক বিতর্ক। কংগ্রেসের অভিযোগ, সংসদ ভবনের পোশাক তৈরির ক্ষেত্রেও নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করেছে বিজেপি।
নয়া সংসদ ভবনের কর্মীদের জন্য পোশাক তৈরি করেছে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজি। নেহেরু জ্যাকেট এবং খাকি রঙের প্যান্ট তৈরি করা হয়েছে। গোলাপি রঙের পোশাকে রয়েছে পদ্মফুলের নকশা। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। পাশাপাশি বদল করা হয়েছে মর্শালদের পোশাকও।
পোশাক বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেছে কংগ্রেস। কংগ্রেস সাংসদ মানিকম ঠাকুরের বক্তব্য, সংসদের পোশাকে বাঘ বা ময়ূরের বদলে পদ্মফুলকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। বিজেপির প্রতীকের জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
'ভারতমাতা অসংসদীয় শব্দ', এই নিয়ে ফের বিতর্ক তুঙ্গে। কারণ আবারও একই কথা বলতে শোনা গেল কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীকে। রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর 'ভারতমাতা' নিয়ে একই বিতর্কিত মন্তব্য করে বিতর্কে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তবে এদিন লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীর পাশে দাঁড়িয়েই এই মন্তব্য করেন রাহুল।
কিছুদিন আগেই মণিপুর ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল বিরোধীরা। যা নিয়ে সরগরম হয়ে ওঠে লোকসভা। লোকসভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে তোপ দেগে 'ভারতমাতা' প্রসঙ্গে কড়া আক্রমণ করেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তাঁর সেই মন্তব্য বিবৃতি থেকে ছেঁটে দেওয়া হয়। তার এক দিন পর ফের বর্তমানে দেশে ভারতমাতা 'অসংসদীয় শব্দ' বলে কটাক্ষ করেন তিনি।
আর সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের একই মন্তব্য করতে দেখা গেল কংগ্রেস সাংসদ রাহুলের গলায়। এই বক্তব্যের পরেই দেশজুড়ে উঠেছে নিন্দার ঝড়। কড়া আক্রমণ জানিয়েছে গেরুয়া শিবির।
প্রসূন গুপ্তঃ আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে বিশেষ অধিবেশন ডেকেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু কি বিষয়ে অথবা হঠাৎ কেন জরুরি অধিবেশন তার হদিশ না পাচ্ছে সমস্ত সাংসদরা বা দেশের মিডিয়া মহল। অথচ এই অধিবেশনকে কেন্দ্র করে তৈরী হয়েছে নানান জল্পনা। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন যে, বাজারে এই জল্পনা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাতেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। প্রথমত জল্পনা দেশের নাম ইন্ডিয়া এবং ভারত থেকে শুধুই ভারত রাখা হতে পারে, চেষ্টা মোদী সরকারের। যদিও এমন কোনও ইঙ্গিত সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় নি।
তবে সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির একটি পত্রে 'প্রেসিডেন্ট অফ ভারত' দেখে বিরোধী এবং মিডিয়া মহলে একটি ধারণা হয়েছে যে, যেহেতু বিরোধী জোট তাদের জোটের নাম 'ইন্ডিয়া' রেখেছে সুতরাং দেশের নাম ভারত রাখা হোক। কিন্তু আমাদের সংবিধান প্রণেতা বি আর আম্বেদকর তো পরিষ্কার সংবিধানে লিখেছেন যে, ইন্ডিয়া মানেই ভারত। এ ছাড়া নাম বদল নিয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে কেউ কেউ, কিন্তু মাননীয় বিচারপতি এই বিষয়টিকেই খারিজ করে দিয়েছিলেন এক সময়ে।
দ্বিতীয় বিষয় "এক দেশ এক ভোট"। এটিতেও নানান সমস্যা আছে, যথা এই ধরণের কোনও বিল আনলে দুই কক্ষে দুই তৃতীয়াংশ ভোট পেতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন রাজ্যে ৫০ শতাংশ বিধায়কদের সম্মতি দরকার। এই মুহূর্তে দুটির কোনওটিই পাশ করানো কঠিন। তবে কি এমন প্রশাসনিক বিষয়ের জন্য লোকসভা ডাকা হলো?
আরও একটি জল্পনা বাজারে এসেছে যদিও এই তৃতীয় জল্পনার সামান্য যুক্তি আছে। এই হচ্ছে 'মহিলা সংরক্ষণ বিল'। বহুবার এই বিলটি পাশ করানোর চেষ্টা হয়েছে। কংগ্রেস তো চেষ্টা করেছে কিন্তু তাদের জোট সঙ্গীরা কোনও না কোনও ভাবে ব্যাগড়া দিয়ে আটকে দিয়েছে বিলটি। সম্প্রতি উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকর কোথাও জানিয়েছেন যে, এই বিশেষ অধিবেশনের পরে নাকি মহিলারা বিশেষ উপকৃত হবেন। ৩৩% মহিলা অধিকার এলে যে মহিলারা যৎপরোনাস্তি খুশি হবে তা বলাই বাহুল্য। এখন দেখার উপরাষ্ট্রপতির জল্পনা মেলে কি না।
'গদর'- এর (Gadar) পর, এর সিক্যুয়াল 'গদর ২' (Gadar 2) বক্সঅফিসে সুপারহিট। মুক্তির পর থেকে সারা বিশ্বে প্রায় ৫০০ কোটির ব্যবসা করে ফেলেছে ছবিটি। গড়ে তুলছে একের পর এক রেকর্ড। এবারে আরও একটা ইতিহাস লিখতে চলেছে 'গদর ২'। সূত্রের খবর, এই ছবিই প্রথম, যেটি পার্লামেন্টেও দেখানো হবে। সূত্রের খবর, ৩ দিন ধরে সংসদভবনে সাংসদদের জন্য দেখানো হবে আমিশা পটেল (Ameesha Patel) ও সানি দেওল (Sunny Deol) অভিনীত 'গদর' ছবির এই সিক্যুয়াল।
গুরদাসপুরের বিজেপি সাংসদ সানি দেওলের ছবি 'গদর ২' বক্সঅফিসে ইতিমধ্যেই সাফল্য পেয়েছে। আর এবার এই ছবির মুকুটে জুড়ল আরও এক সম্মানের পালক। নতুন সংসদ ভবনের বালযোগী অডিটোরিয়ামে দেখানো হচ্ছে এই ছবি। মোট ৫টি শোয়ের আয়োজন করা হয়েছে। ২৫ অগাস্ট থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে এই ছবি দেখানো। শোনা যাচ্ছে সানি দেওল সহ বেশ কিছু সাংসদের অনুরোধেই নাকি সংসদভবনে দেখানো হচ্ছে এই ছবি। এই প্রথম কোনও হিন্দি ছবি যা সংসদভবনে বিশেষ করে সাংসদদের জন্য দেখানো হবে।
প্রায় চার মাস পর সোমবার সংসদে রি-এন্ট্রি করেছেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। এরপর আজ, বুধবারও সংসদে (Parliament) যাওয়ার জন্যই রওনা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সংসদে পৌঁছনোর আগেই ফের একবার জনগণের নজর কাড়লেন। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী সংসদে বক্তৃতা দিতে যাবেন। কিন্তু রাস্তায় ঘটে যায় এক ঘটনা। স্কুটি চালিয়ে এক ব্যক্তি যাচ্ছিলেন, সেসময় তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যান। এই দেখেই দৌড়ে যান রাহুল। এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে কংগ্রেসের তরফে টুইট করে তাঁকে 'জননায়ক' বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংসদ সূত্রে খবর, আজ সংসদে গিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে সায় দেন। সেখানে মোদীকে আক্রমণও করেন। কিন্তু সংসদে সেসব কিছু ঘটার আগেই তিনি খবরের শিরোনামে। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, গাড়ি করে সংসদে যাচ্ছিলেন রাহুল। কিন্তু তাঁর গাড়ির পিছনেই এক ব্যক্তি স্কুটার নিয়ে বেসামাল হলে রাস্তায় পড়ে যান। এই দেখা মাত্রই তাঁর গাড়ি থামান ও তিনি ছুটে যান সেই ব্যক্তির কাছে। ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করেন, 'আপনার আঘাত লাগেনি তো?' আর এই দৃশ্যই ক্যামেরাবন্দি করে কংগ্রেসের তরফে টুইট করা হয়েছে। তাঁকে 'জননায়ক' বলে উল্লেখ করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে। এই ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল। তবে নেটিজেনদের অনেকাংশই এটিকে 'পাবলিসিটি স্টান্ট' বলেছেন। কিন্তু রাহুলের অনুরাগীরা তাঁর এই ব্যবহারে মুগ্ধ।
প্রসূন গুপ্তঃ ৪ মাসের জন্য যেন বনবাস হয়েছিল রাহুল গান্ধীর। সেই বাধা উতরে সোমবার জিরো আওয়ারে লোকসভায় প্রবেশ করলেন রাহুল। অবিশ্যি এমনটিই হওয়ার কথা ছিল। প্রসঙ্গত চার মাস আগে রাহুলের লোকসভার সাংসদ পদ চলে গিয়েছিলো। বহু বছর আগে ভোটের প্রচার করতে গিয়ে রাহুল দক্ষিণ ভারতের এক সভায় প্রধানমন্ত্রীকে ব্যঙ্গ করে প্রশ্ন তুলেছিলেন যে, দেশের সব মোদীরাই কি এক রকম। তখন এই বিষয়ে বিজেপি আর উচ্চবাচ্য না করলেও সম্প্রতি কোনও এক গুজরাতে বসবাস করা মোদী, একটি নিম্ন আদালতে রাহুলের বিরুদ্ধে মামলা করে।
বিচারক আদেশ দেন যে, রাহুল জাতি বা গোষ্ঠীগত ভাবে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। কাজেই তাঁর লোকসভার সদস্য পদ থাকবে না এবং তাঁর দু'বছর জেল হবে। অবিশ্যি রাহুল এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যেতে পারবেন এমন বিকল্পের কথাও বলা হয়েছিল। সেই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয় এবং গত শুক্রবার উচ্চ আদালত সেই আদেশের উপর স্থগিতাদেশ দেন। কাজেই রাহুলের আর আইনসভায় আস্তে বাধা রইলো না। কিন্তু ভাবনা একটিই ছিল কংগ্রেস তথা 'ইন্ডিয়া' ফ্রন্ট্রের যে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা কি রাহুলকে সভায় অনুমতি দেবেন? সেই ভাবনার কাঁটাতেও সমস্যা থাকলো না যেহেতু ইতিমধ্যে স্পিকারের দফতর থেকে রাহুল গান্ধীর কাছে লোকসভায় আসতে অনুরোধ করা হয়েছে বলেই খবর।
সোমবার সকল থেকেই উৎসবের মেজাজে চলে যায় কংগ্রেস দল। রাহুলকে লোকসভায় এক প্রকার ধরে নিয়েই আসা হয়। রাহুলের আগমনকে টেবিল বাজিয়ে স্বাগতম জানায় বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা। উঠে এসে রাহুলের পাশে দেখা যায় তৃণমূলের সদস্যদের। এরপর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মিষ্টি মুখ করানো হয় জোটের বিভিন্ন দলকে। এনডিএর বিজেপি ব্যাতিত অন্য দলের প্রতিনিধিদেরও শুভেচ্ছা বার্তা দিতে দেখা যায়। মোটের উপর বর্ষাকালীন অধিবেশনে রাহুল গান্ধী যে সরকার বিরোধী ভাষণ দেবেন তা নিঃসংকোচে বলে দেওয়া যায়।