হোয়াটসঅ্য়াপ কল এবং মেসেজের ভয়েস রেকর্ডের সঙ্গে মিলে গেল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠস্বর। কাকুর সেই ভয়েজ স্য়াম্পল রিপোর্ট এখন ইডির হাতে। সূত্রের খবর, ২২ তারিখ অর্থাৎ সোমবার হাইকোর্টে সেই রিপোর্ট জমা দিতে পারে ইডি। সাড়ে তিন মাস পর কালীঘাটের কাকুর ভয়েজ স্য়াম্পল টেস্টের রিপোর্ট এখন ইডির হাতে। যা নিয়ে ইতিমধ্য়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক সমালোচনা। লোকসভা নির্বাচনের আবহে এই রিপোর্ট খানিকটা অস্বস্তিতে ফেলতে পারে শাসকদলকে, এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের।
প্রসঙ্গত, রাজ্যবাসীর সকলেরই জানা, কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে কম বেগ পেতে হয়নি তদন্তকারী আধিকারিকদের। নমুনা সংগ্রহ আটকাতে অতীতে একাধিকবার কাকু দেখিয়েছেন তাঁর শারীরিক অসুস্থতার দোহাই। কাঠগড়ায় উঠেছিল এসএসকেএম-এর ভূমিকাও। কখনও আবার সেই দোহাই নিশ্চিত করতে একেবারে শিশুদের জন্য সংরক্ষিত বেড দখল করে ভর্তি হয়ে দিনের পর দিন কাটিয়েছেন তিনি। তারপর অবশেষে গত জানুয়ারি মাসের ৩ তারিখ মধ্যরাতে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে জোকা ইএসই হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে করানো হয়েছিল কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা। খানিক আশ্বস্ত হয়েছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
কেন, কারণ, তদন্তকারী আধিকারিকরা মনে করছেন, এই কণ্ঠস্বরের নমুনার ওপর নির্ভর করেছে শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতির গোপন রহস্যভেদ। ২ বছর হয়ে গেল এই দুর্নীতিতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর গ্রেফতারি। একে একে জট খুলতে খুলতে গ্রেফতার হয়েছেন কালীঘাটের কাকুও। যে চ্যাট এবং কলের হদিশ চাইছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা, সেই কণ্ঠস্বর সুজয়কৃষ্ণেরই, এমনটাই সূত্রের খবর। এখন আদালতে রিপোর্ট পেশ করা হলেই বোঝা যাবে, কার সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কথোপকথন হয়েছিল কাকুর? তিনি কোন মধ্যস্থতাকারী প্রভাবশালী, যিনি ২ বছরেও তদন্ত ধরা পড়লেন না একবারের জন্যেও? ঠিক কত গুলো বেআইনি নিয়োগ হয়েছিল? গোটা প্রক্রিয়া কার নির্দেশে চলত?
আজ থেকে লোকসভা ভোটের প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষ্ণনগরে প্রথম সভা করেন তিনি। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে প্রচার শুরু করলেন তিনি। মহুয়াকে কেন লোকসভা থেকে ‘তাড়িয়েছে’ বিজেপি, সেই ব্যাখা দেওয়ার পাশাপাশি বিজেপি প্রার্থী ‘রাজমাতা’ অমৃতা রায়ের পরিবারকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে খোঁচা দিলেন মমতা।
জনসভায় উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মহুয়াকে জেতাবেন। আপনারা জেতানোর পরেও ওকে তাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ মহুয়া জোরে জোরে কথা বলত। বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলত। ওকে জেতালে ও যোগ্য জবাব দিতে পারবে। বিজেপির মুখোশ টেনে ছিঁড়ে দিতে পারবে।’ পাশাপাশি ধুবুলিয়ার সুকান্ত স্পোর্টিং ক্লাবের মাঠ থেকে বিজেপির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন মমতা। বলেন, জেতার বিষয়ে নিশ্চিত হলে কেন রাজ্যে ইডি? কেন সিবিআই? কেনই বা ইনকাম ট্যাক্স অফিসাররা?
সূত্রের খবর, ভিন রাজ্যেও প্রচারে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। অসমে দুটি সভা করবেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী। আগামী ১৭ এবং ১৮ এপ্রিল অসমে দুটি জায়গায় সভা করবেন তিনি।
লোকসভা ভোটের আগে নিজের বাড়িতে পড়ে গিয়েই মাথায় চোট পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কপালে চারটে সেলাই পড়েছিল। তারপরে বিশ্রামেই ছিলেন তিনি। আজ অর্থাৎ রবিবার থেকে লোকসভা ভোটের প্রচারে নেমেছেন তিনি। প্রথমেই বেছে নিয়েছেন কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রকে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও কৃষ্ণনগরে সভা করে গিয়েছেন।
বাংলার উন্নতি মানে দেশের উন্নতি। আর বাংলাকে আত্মনির্ভর করতেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। শনিবার কৃষ্ণনগর থেকে এমনটাই মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার সাত হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের পরে এদিনও ১৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের কথা জানান। বাংলার উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী সর্বদা রয়েছেন। এমনটাই কৃষ্ণনগরের সভা থেকে আশ্বাস দিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ফারাক্কা থেকে রায়গঞ্জ পর্যন্ত হাইওয়ে তৈরি করা হয়েছে। মোদী জমানায় পশ্চিমবঙ্গে উন্নয়নের দরজা খুলে গিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। রাজ্যের একাধিক সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন। এর মধ্যে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের উদ্বোধন করেন। ফরাকা থেকে রায়গঞ্জ পর্যন্ত চার লেনের জাতীয় সড়কের উদ্বোধনও করেন। আজিমগঞ্জ-মুর্শিদাবাদ রেল প্রকল্পের উদ্বোধনও করেন তিনি। তিনি বলেছেন, রঘুনাথপুরে তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে এগারো হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার ও শনিবার মিলিয়ে রাজ্যের জন্য বাইশ হাজার কোটি টাকার সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন। শুক্রবার বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের পরে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন, বাংলায় রেলের উন্নয়ন এমন হওয়া দরকার যেমনটা অন্য রাজ্যে রয়েছে। তিনি বলেছিলেন, বিকশিত ভারত গড়ার যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, সেখানে গরিব, মহিলা ও যুবদের সব থেকে বড় ভূমিকা থাকবে।
কৃষ্ণনগরের সভায় জনগণের ঢল দেখা যায় এদিন। তিনি বলেন, বাংলার বিকাশ হলেই দেশের বিকাশ। এই রাজ্য থেকে বিজেপিকে ৪২ টি আসনের সবকটিই দখল করতে হবে। প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসও ৪২ টির মধ্যে ৪২টি দখলের স্লোগান রেখেছিল। তারপর তারা গিয়ে থামে ২২ টিতে।
লোকসভা ভোটের প্রচারের দ্বিতীয় দিনে কৃষ্ণনগরে জনসমুদ্র প্রধানমন্ত্রীর সভায়। যা দেখে উচ্ছ্বসিত নরেন্দ্র মোদী সহ বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। ভাষণের শুরুতেই মোদী সভায় উপস্থিত সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। কারণ, শনিবার কৃষ্ণনগরের যে গভর্নমেন্ট কলেজের ময়দানে মোদীর সভার আয়োজন করা হয়েছিল, তা ছোটো হয়ে গিয়েছে। তিনি সবাইকে যে যেখানে রয়েছেন, সেখানেই উপস্থিত থেকে ভাষণ শুনতে অনুরোধ করেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী কৃষ্ণ নাম নিয়ে শুরু করেন বক্তৃতা। তৃণমূলকে তীব্র কটাক্ষ করেন তিনি। নরেন্দ্র মোদী বলেন, 'তৃণমূল মানে দুর্নীতিবাজ, পরিবারতন্ত্র, বিশ্বাসঘাতক'। বাংলাকে গরিব করে রাখতে চায়। সেই কারণেই তৃণমূল সরকার দরিদ্রদের জন্য় প্রকল্প চালু করতে দিচ্ছে না। এই তৃণমূলকে ভোটের মাধ্য়মে শিক্ষা দিতে হবে। এমনকি তৃণমূল বাংলার মানুষকে নিরাশ করছে। এতদিন রাজ্য় সরকার চায়নি সন্দেশখালির দোষী গ্রেফতার হোক। তৃণমূল সন্দেশখালির মায়েদের আর্তি শোনেনি। কিন্তু সন্দেশখালির পাশে দাঁড়িয়েছে বিজেপি। তাই তৃণমূল অপরাধীকে ধরতে বাধ্য় হয়েছে। সন্দেশখালি প্রসঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে এমনটাই বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এমনকি মোদীর গলায় শোনা যায় বাংলাও। তিনি বাংলায় বলেন, মোদীর গ্যারান্টি মানে, সেই গ্যারান্টি পূর্ণ হওয়ার গ্যারান্টি। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গকে প্রথম এইমসের গ্যারান্টি দিয়েছিলাম। তা হয়েছে। কল্যাণীতে এইমস তৈরি হওয়ায় তৃণমূল সরকার মুশকিলে পড়েছে। তৃণমূল সরকার এই বড় হাসপাতাল পরিবেশগত অনুমতি দিতে বাধা দিচ্ছে। তিনি আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গে চালু করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
আরামবাগের পর কৃষ্ণনগরে প্রধাুনমন্ত্রী। শনিবার সকাল ১০ টা নাগাদ নদিয়ার কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজ ময়দানে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সিসিটিভি ক্য়ামেরায় মোড়া রয়েছে গোটা সভা। এদিন সভার পাশাপাশি পাশের মাঠে একটি প্রশাসনিক সভার আয়োজন রয়েছে সেখান থেকে বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর সভা ঘিরে উদ্দীপনা তুঙ্গে কর্মী-সমর্থকদের। সভাস্থল ঘিরে কড়া নিরাপত্তা।
রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে ফের 'অ্যাকশন মোডে' ইডি। শহরের একাধিক জায়গায় সকাল থেকে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছেন তদন্তকারী অফিসাররা। বাগুইআটিতে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ইডি ঢুকতেই একেবারে বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের মতো মোবাইল ছুঁড়ে দিলেন পাশের ফ্ল্যাটের ছাদে। পাঁচিল টপকে মোবাইল উদ্ধার করলেন ইডি আধিকারিকরা।
কয়েকমাস আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মুর্শিদাবাদের বড়ঞায় বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়েছিল ইডি। সেসময় বিধায়ক প্রমাণ লোপাট করতে তাঁর মোবাইলটি বাড়ির পুকুরে জলে ফেলে দিয়েছিলেন। ইডিও নাছোড়, সেই মোবাইলটি পুকুর থেকে খুঁজে বের করে আনে। প্রমাণ লোপাট করতেই বিধায়ক মোবাইলটি জলে ছুঁড়ে ফেলেছিলেন বলে দাবি করেছিল ইডি।
যদিও মোবাইল জলে ফেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ইডির হতে গ্রেফতার হতে জয়েছিল বিধায়ককে। এবার রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে মঙ্গলবার সকাল থেকে শহরের একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। কৈখালির এক অভিজাত আবাসনে তল্লাশি অভিযানে যান ইডি আধিকারিকরা। জানা যাচ্ছে, বাকিবুরের নামে ওই ফ্ল্যাট। কিন্তু বাকিবুর নয়, এই ফ্ল্যাটে থাকেন ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হানিস তোসিবাল। ইডি ফ্ল্যাটে ঢুকতেই ব্যবসায়ী তাঁর মোবাইল ফোনটি ছুঁড়ে ফেলে দেন। সেই মোবাইলদুটিই উদ্ধার করেছে ইডি। তার একটির ব্যাক কভারে ৫০০ টাকা নোট ছিল বলে জানা গিয়েছে। মোবাইলটি উঁচু থেকে ছুঁড়ে ফেলতেই ব্যাক কভারটি খুলে ৫০০ টাকার নোটটি বেরিয়ে এসেছিল। সেটিও উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। ব্যবসায়ীর কীর্তি দেখে ইডি দাবি করেছে তথ্য লোপাট করতেই তিনি মোবাইলটি ফেলে দিয়েছেন। কলকাতা শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায়ও একযোগে চলছে তল্লাশি।
বাগুইআটি ছাড়াও নিউআলিপুরের একটি বহুতলে এবং সল্টলেকের আইবি ব্লকে চলছে ইডি অভিযান। ইডির ৮ থেকে ১০টি টিম এখন শহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে। ৮ নম্বর সদরস্ট্রিটের একটি বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের অফিসেও তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ইডি। এছাড়া পার্কস্ট্রিটেও একটি বাড়িতে চলছে ইডি অভিযান।
আর্থিক তছরুপের অভিযোগে গ্রেফতার সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণা দামানি। আরিফ মুখার্জি রোডের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিস। আজ অর্থাৎ শুক্রবার তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হয়।
সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ২০ কোটি টাকার দুর্নীতি সামনে এসেছে কৃষ্ণা দামানির বিরুদ্ধে। কৃষ্ণা দামানিকে সঙ্গে করে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিস। তল্লাশিতে প্রচুর নথি উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, স্কুলে নির্মীয়মাণ দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরির টাকা নয় ছয় করেছে কৃষ্ণা দামানি। এছাড়াও আর্থিক দুর্নীতিতে কৃষ্ণা দামানির সঙ্গে যুক্ত আছেন স্কুলের প্রভাবশালী এক অংশের। এমনি অভিযোগ উঠে এসেছে তার বিরুদ্ধে।
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে শুনানি ছিল নিয়োগ মামলার দুই মূল অভিযুক্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ এবং ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের। সেই মামলায় পার্থ এবং সুজয় দু’জনের জামিন চেয়ে আদালতে সওয়াল করছিলেন রাজ্যের এজি। রাজ্যের এজির সওয়ালে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি। রাজ্যের প্রতিনিধি কেন নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্তদের হয়ে সওয়াল করছেন রাজ্যের এজি কিশোর দত্তের কাছে জানতে চান বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। প্রশ্ন করেন, আপনার কাছে অনুমতি আছে? তারপরেই বিচারপতি স্পষ্ট করে দেন রাজ্যের অনুমতি পত্র ছাড়া সওয়াল শোনা সম্ভব নয়। যার জেরে পিছিয়ে গেল পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের জামিন মামলার শুনানি।
উল্লেখ্য, রাজ্যের এজি পদে স্থলাভিষিক্ত হওয়ার আগে থেকেই পার্থ এবং সুজয়ের জামিনের মামলা হাইকোর্টে লড়ছেন কিশোর দত্ত। সেই মামলা চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। এই আবহেই রাজ্যের নতুন এজি পদে দায়িত্ব নেন কিশোর। তারপরে বুধবার পার্থ এবং সুজয়ের জামিনের শুনানি পড়ে। নিজের হাতে থাকা পুরোনো মামলা নিজেই লড়তে এসেছিলেন বর্ষীয়ান এই আইনজীবী। কিন্তু সওয়াল করতে এসেই বিচারপতির প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি। এর পরেই সময় চান রাজ্যের এজি কিশোর দত্ত। রাজ্যের অনুমতি নিয়ে সওয়ালে অংশ নেওয়ার কথা জানান তিনি। বিচারপতি জানান, রাজ্য যদি অনুমতি দেয়, তবে আদালতের কোনও অসুবিধা নেই।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পার্থের জামিনের মামলার শুনানি হবে। সুজয়ের মামলাটির পরবর্তী শুনানি ৬ ফেব্রুয়ারি।
কলকাতা হাইকোর্টে জোর ধাক্কা 'কালীঘাটে কাকু' ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের! তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ নিয়ে বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশের উপরে কোনওরকমের হস্তক্ষেপ করল না বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। কণ্ঠস্বরের নমুনার পরবর্তী প্রক্রিয়ার উপরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। সাফ জানিয়ে দিল ডিভিশন বেঞ্চ। কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ নিয়ে বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই মামলার প্রেক্ষিতেই ডিভিশন বেঞ্চ হস্তক্ষেপ না করে এমনটাই নির্দেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে এখনও আর ফ্যাসাদে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র।
নিয়োগ দুর্নীতিতে কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের জন্য কম জলঘোলা হয়নি। এদিন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের আইনজীবী বলেন, 'সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র-এর জোর করে ভয়েস টেস্ট এর জন্য নিয়ে গিয়েছে ইডি।বিচারপতি অমৃতা সিনহা মামলার শুনানি করলেন রুদ্ধদ্বার। যার ভয়েস টেস্ট হবে তিনি এই মামলায় যুক্ত ছিলেন না। রাত ৮টার পর ইডি অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে গিয়ে কণ্ঠস্বর পরীক্ষা করতে নিয়ে গেলো এসএসকেএম থেকে ইএসআই জোকায়। এটা ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ।'
এর পরই কেন্দ্রের আইনজীবী বিল্লোদল ভট্টাচার্য্য বলেন, 'বিচারপতি সিনহার আগে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের কাছে জামিনের আবেদনের মামলায় ভয়েস টেস্টের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি ঘোষ। এই কণ্ঠস্বর পরীক্ষার নির্দেশ বিচারপতি সিনহা নতুন দেননি। বিচারপতি ঘোষের নির্দেশ-এ দেরি হচ্ছিল, তদন্ত শ্লথ হচ্ছিল। তাই তিনি ইডিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তদন্তের স্বার্থে।'
ইডির আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী বলেন, 'বিচারপতি সিনহার নির্দেশের পর আমরা এসএসকেএম যাই। ওনাকে সাবধানে নিয়ে গিয়ে টেস্ট করাই ও তারপর আবার এসএসকেএম-এ ফেরত দি। এসএসকেএম-এ তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভর্তি আছেন। এসএসকেএম বলছে তিনি সুস্থ না। অথচ অন্য হাসপাতাল ইএসআই জোকা বলেছে তিনি সুস্থ। ওনার কণ্ঠস্বর পরীক্ষা না করলে তদন্ত দেরি হচ্ছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে তদন্ত শেষ করতে হবে।' এছাড়াও ইডির আইনজীবীর অভিযোগ, 'আমরা তদন্ত কিভাবে করবো? গোটা রাজ্য আমাদের বিরুদ্ধে। রাজ্য অসহযোগিতা করছে।'
এর পরই বুধবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, এই মামলায় হস্তক্ষেপ করবে না ডিভিশন বেঞ্চ। মামলার পুরো সিদ্ধান্ত নেবে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের সিঙ্গল বেঞ্চ। তবে তিনি প্রশ্ন করেন, 'ইডি হেফাজতে আছে ওই অভিযুক্ত। তাহলে ইডি ওই হাসপাতালেই কণ্ঠস্বর পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পারতো। সেটা না করে একজন অসুস্থ মানুষকে নিয়ে গেলো জোকা ইএসআই। আর কণ্ঠস্বর পরীক্ষার রিপোর্ট কখনও কোনও প্রমাণ হিসাবে গণ্য করা হয় না। তবে এই কণ্ঠস্বর পরীক্ষা নিয়ে কিসের তৎপরতা ইডির? কী উদ্দেশে?'
রাজ্যের একাধিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত প্রভাবশালী ব্যক্তিরা মাসের পর মাস এসএসকেএম-এ কাটাচ্ছেন, 'সুস্থ' হওয়া সত্ত্বেও বেড দখল করে রাখছেন তাঁরা, এমনটাই অভিযোগ উঠছে। গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই কলকাতা হাইকোর্টও এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ও এসএসকেএম ডিরেক্টরকে রিপোর্ট পেশ করতে বলেছেন। এর পরই আজ অর্থাৎ শুক্রবার তৎপর মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা। জানা গিয়েছে, আজ মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা 'কালীঘাটের কাকু' সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে দেখতে যাবেন। তাঁদের শারীরিক অবস্থা কেমন আছে, তা দেখতে যাবেন। ফলে আর কতদিন তাঁদের এসএসকেএম-এ রাখা হবে বা আজই তাঁদের জেলে পাঠানো হবে কিনা, তা সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
জানা গিয়েছে, 'কালীঘাটের কাকু' সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র সুস্থ রয়েছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। হাসপাতালে ভর্তির সময় সিওপিডি ছিল, সুগার ছিল, বাইপাস সার্জারিও হয়েছিল। তবে এখন সুস্থই আছেন তিনি এমনটাই সূত্রের খবর। এছাড়াও জোকা ইএসআই হাসপাতালের তরফে তাঁকে ফিট সার্টিফিকেটও দেওয়া হয়। ফলে নতুন করে তাঁর আর কোনও সমস্যা নেই। তাহলে কেন হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। অন্যদিকে রেশন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও এসএসকেএম-এই রয়েছেন। তিনিও স্থিতিশীল আছেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু এখন হাসপাতালে কেন ভর্তি তাঁরা। এই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। ফলে জানা গিয়েছে, আর কতদিন হাসপাতালে রাখা হবে কালীঘাটের কাকু সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কে, নাকি ছেড়ে দেওয়া হবে হাসপাতাল থেকে, আজই মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা জানিয়ে দিতে পারেন, এমনটাই খবর এসএসকেএম সূত্রে।
এবারে বড় ফ্যাসাদে এসএসকেএম। রাজ্যের সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম। বহুদিন ধরেই এই হাসপাতালে একে একে ভর্তি হয়েছে দুর্নীতিতে গ্রেফতার অভিযুক্তরা। আর সেখানেই মাসের পর মাস কেটে যাচ্ছে তাঁদের। ফলে এবারে এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন প্রভাবশালীদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রিপোর্ট হলফনামা দিয়ে জানাতে বলল কলকাতা হাইকোর্ট। এসএসকেএম হাসপাতাল নিয়ে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। আর সেই মামলার শুনানিতেই এসএসকেএম-এর ডিরেক্টরের কাছে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলায় হাইকোর্টে এসএসকেএমের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছে ইডি। পরে এই এসএসকেএম হাসপাতাল নিয়ে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। বিভিন্ন দুর্নীতিতে যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের আশ্রয়স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে এসএসকেএম বলে অভিযোগ মামলায়। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে প্রশ্নের মুখে এসএসকেএম। তিনি প্রশ্ন করেন, 'একজন দিনের পর দিন কীভাবে ভর্তি থাকতে পারে?' এদিন প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, 'বেড দখল করে রাখাটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। অভিযোগ যদি সত্যি হয় তাহলে এটা সিরিয়াস কেস।'
'কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যখনই কোনও প্রভাবশালী বা মন্ত্রীকে গ্রেফতার করে তখনই দেখা যায় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ তাঁদের স্বাস্থ্যের অবনতির কথা বলে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করায়। তারা দিনের পর দিন বেড দখল করে রাখেন। সাধারণ মানুষ চিকিৎসা করাতে গেলে বেড পায় না,' এই অভিযোগ তুলে মামলা করেন সুস্মিতা সাহা নামে এক আইনজীবী।
এর পর এই মামলায় প্রধান বিচারপতি বলেন, 'সংশোধনাগারের নিজেদের একটি হাসপাতাল থাকে। যখন সেই হাসপাতাল চিকিৎসা করতে ব্যর্থ হয় তখনই তাকে সেই সংশোধনাগারের অধীনে কোন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তার মানে এই নয়, সেই ব্যক্তিকে পাঁচ মাস ছয় মাস সেই হাসপাতালে ভর্তি করে রাখা হবে। তবে সেটা অবশ্য নির্ভর করবে চিকিৎসকদের উপরে। এক্ষেত্রে আদালত কি করবে? তবে আপনাদের অভিযোগ যুক্তিযুক্ত। দিনের পর দিন বেড দখল করা ঠিক নয়।' এরপরেই এই বিষয়ে এসএসকেএম হাসপাতালের ডিরেক্টরকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। বর্তমানে কতজন ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে, তাঁদের বর্তমান শারীরিক অবস্থা কেমন, আর কতদিন ভর্তি থাকবেন, তা হলফনামা আকারে জানানোর নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৪ জানুয়ারি।
বুধবার রাত থেকে 'কালীঘাটের কাকু'-এর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ নিয়ে নাটকীয় পরিস্থিতি এসএসকেএম-এ। অবশেষে গভীর রাতে সম্পন্ন হল 'কালীঘাটের কাকু' সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ প্রক্রিয়া। বুধবার রাত ৯টা ১২ মিনিট নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর সেখানে ১২ টা ৫২ মিনিট নাগাদ তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা নেওয়ার পর জোকা ইএসআই হাসপাতাল থেকে বার করা হয় কালীঘাটের কাকুকে। বিভিন্ন স্কেলে তার কন্ঠস্বর নেওয়া হয়েছে ও ইতিমধ্যে পাঠানো হয়েছে ফরেনসিক ল্যাবেও। তবে এখন প্রশ্ন উঠছে, এর আগে কাকুর শারীরিক অসুস্থতা কথা বলে কণ্ঠস্বর নমুনা সংগ্রহ করতে দেয়নি এসএসকেএম। সেই কাজ জোকা হাসপাতালে ৩০ মিনিটে সম্পন্ন হল কী করে? এছাড়াও জোকা ইএসআই হাসপাতালে ফিট সার্টিফিকেট পাওয়া সেই কাকু আবার এসএসকেএম হাসপাতালের কেবিনে ভর্তি কেন?
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে কণ্ঠস্বর দিতে অসহযোগিতা করছিলেন 'কাকু'। এরপর কাউন্সিলিং করা হয় চিকিৎসকদের তরফে। তারপর তিনটি বাক্য বলতে বলা হয় তাকে। পরপর দুবার তিনটি বাক্য বলতে বলা হয়। ইডি সূত্রে খবর, ইডি তরফে পরিকল্পনা ছিল, কালীঘাটের কাকুকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি রেখে দেবে। যার ফলে ইডির তরফে জানতে চাওয়া হয়েছে, জোকা ইএসআই হাসপাতালে কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে রাখা যেতে পারে কি? এর উত্তরে ইডিকে সোজাসুজি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কালীঘাটের কাকুর উপর সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র একজন কার্ডিওলজির পেশেন্ট, তার বাইপাস সার্জারি হয়েছে। তাকে রাখার মত পরিকাঠামো নেই জোকা ইএসআই হাসপাতালে। এর পাশাপাশি সিকিউরিটির বিষয় থাকে। জোকা ইএসআই রাখতে পারবেনা সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে। ইডিকে সাফ জানিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যার ফলে ইডি আধিকারিকদের কার্যত বাধ্য হয়ে এসএসকেএম হাসপাতালকে ফিরিয়ে দিতে হয় কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে। গভীর রাত প্রায় ৩টে ৩২ মিনিট নাগাদ এসএসকেএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের ১ নম্বর কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
তবে এই ইএসআই হাসপাতালের ফিট সার্টিফিকেট দেওয়া 'কালীঘাটের কাকু'র ভয়েস স্যাম্পেল নেওয়ার জন্য এত বেগ পেতে হল কেন ও এসএসকেএম হাসপাতাল কেন তাকে অসুস্থ প্রমাণ করতে মরিয়া, তা নিয়েই উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
১) কণ্ঠস্বর নমুনা দেওয়ার জন্য সুস্থ কালীঘাটের কাকু। জোকা ইএসআই বোর্ডের এই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই কাকুর নমুনা সংগ্রহ করে ইডি। তাহলে এত দিন অসুস্থতার কথা বলে কাকুর কণ্ঠস্বর নমুনা সংগ্রহে বাধা ছিল এসএসকেএম?
২) ইএসআই হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ড যাকে ফিট সার্টিফিকেট দিচ্ছে, সেই ব্যাক্তি এসএসকেএম হাসপাতালে আনফিট কি করে?
৩) ইএসআই মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী একজন সুস্থ ব্যক্তিকে এসএসকেএম কেবিনে ভর্তি করা হল কেন?
৪) কাউকে আড়াল করতেই কি এসএসকেএম-এ আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে কাকুকে। সেটা হলে কার নির্দেশ মেনে এই কাজ করছে এসএসকেএম?
৫) ৩০ মিনিটেই যেখানে কণ্ঠস্বর নমুনা সংগ্রহ সম্পন্ন হলো, সেখানে ইডিকে সহযোগিতা না করে কার নির্দেশে কাকুর কণ্ঠস্বর নমুনা সংগ্রহ বাধা হয়েছিল এসএসকেএম?
এসএসকেএম-এ বুধবার সন্ধ্যায় আচমকা নজরে আসে ইডির তৎপরতা। এসএসকেএমে পৌঁছয় জোকা ইএসআই হাসপাতালের 5G অ্যাম্বুলেন্স। CRPF-এর কমান্ডেন্ট ঢুকলেন হাসপাতালে। কার্ডিওলজি বিভাগের সামনে মোতায়েন রয়েছেন CRPF জওয়ান। আজই কি তবে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠ পরীক্ষা? যদিও এ বিষয়ে এখনও অবধি কোনও কিছু জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে নাম জড়ায় 'কালীঘাটের কাকু' ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর। একাধিকবার তাঁকে জিজ্ঞাসবাদ করে ইডি-সিবিআইয়ের মতো তদন্তকারী সংস্থা। পরবর্তীকালে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। গ্রেফতারির পর কিছুদিন প্রেসিডেন্সি জেলে থাকলেও কালীঘাটের কাকুর বর্তমান ঠিকানা এসএসকেএম হাসপাতাল। একাধিকবার হাসপাতালে গিয়ে তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে ইডি। এবার দেখার আজ, বুধবার ইডি আধিকারিকরা এসএসকেএম থেকে বের করতে পারেন কিনা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে।
গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে জেলে প্রায় থাকেননি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। অসুস্থ থাকার নাম করে হাসপাতালেই কাটছে দিন। ইডি মরিয়া হয়ে উঠেছে কাকুর ভয়েস স্যাম্পেল টেস্ট করার জন্য। কিন্তু এসএসকেএম কোনও অজানা কারণে কাকুর ফিট সার্টিফিকেট দিতেই চাইছে না। এই পরিস্থিতিতে 'কালীঘাটের কাকু' এখনও এসএসকেএম হাসপাতালেই। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের বিরুদ্ধে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করল বিজেপি। অভিযোগ, গুরুতর অসুস্থ না হয়েও অপ্রয়োজনে এসএসকেএম হাসপাতালে শয্যা দখল করে রয়েছেন তিনি। এরফলে রোগী ভর্তি হতে পারছেন না।
অভিযোগের আরও বলা হয়, হাসপাতালে থাকার জন্য নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে দেরি হচ্ছে ইডির। ইডি হেফাজতের দাবি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা করা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। মঙ্গলবার এই বিষয়ে বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করা হয়। প্রধান বিচারপতি জানান, বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হবে।
উল্লেখ্য, এসএসকেএম হাসপাতালের তরফ থেকে একটার পর একটা স্বাস্থ্য পরীক্ষা সুজয় কৃষ্ণের ক্ষেত্রে করানোর কথা বলা হয়েছে। কখনও মায়োকার্ডিয়াল স্পেস পারফিউশন টেস্ট, আবার কখনও মেন্টাল টাফনেস টেস্ট-স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্যেই আবদ্ধ কালীঘাটের কাকু। শুধু কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে না। অন্যদিকে, আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে এসএসকেএম হাসপাতালের কাছ থেকে কাকুর সমস্ত শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট।
'কালীঘাটের কাকু' এখনও এসএসকেএম হাসপাতালেই। তাঁকে দেখতে রীতিমত মানুষ ভিড়ও করছেন হাসপাতালের সামনে। এরকম চিত্রই দেখা যাচ্ছে হাসপাতাল চত্বরে। এসএসকেএম হাসপাতালে কার্ডিওলজি বিভাগের ১ নম্বর কেবিনে রয়েছেন কালীঘাটের কাকু। তাঁর কণ্ঠস্বর নমুনা পরীক্ষা আটকাচ্ছে কোনও না কোনওভাবে।
এসএসকেএম হাসপাতালের তরফ থেকে একটার পর একটা স্বাস্থ্য পরীক্ষা সুজয় কৃষ্ণের ক্ষেত্রে করানোর কথা বলা হচ্ছে। কখনও মায়োকার্ডিয়াল স্পেস পারফিউশন টেস্ট, আবার কখনও মেন্টাল টাফনেস টেস্ট-স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্যেই আবদ্ধ কালীঘাটের কাকু। শুধু কণ্ঠস্বর নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে না। এমন আবহেই আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে এসএসকেএম হাসপাতালের কাছ থেকে কাকুর সমস্ত শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট।