
দুয়ারের সরকার (Duare Sarkar) ক্যাম্পে ভাঙচুর চালালেন খোদ তৃণমূলের (Tmc) অঞ্চল সভাপতি! খবর পেয়ে বিকেলে ওই নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিস (Police)। বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর ব্লকের খুন্তি অঞ্চলের দিঘলবস্তি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ওই অঞ্চলে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগ সকাল ১০টা থেকে দীর্ঘক্ষণ স্থানীয়রা দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে হাজির হয়েছিলেন। ঘন্টা দুয়েক অপেক্ষা করেও যখন ক্যাম্প শুরু হয়নি, তখন ওই ক্যাম্প সংলগ্ন তৃণমূল নেতা আকবর আলির বাড়ি যান সাধারণ মানুষ। মানুষের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ওই তৃণমূল নেতা। ওই ক্যাম্পে সমস্ত বেঞ্চ টেনে বাইরে ফেলে দেন তিনি।
সূত্রের খবর, তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতির নেতৃত্বে দুয়ারে সরকারে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়া স্থানীয়রা ক্যাম্পের আসবাবপত্রে ভাঙচুর চালান। খবর পেয়ে বিশাল পুলিসবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এবিষয়ে ওই ব্লকের সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, 'পর্যাপ্ত ফর্ম রয়েছে। কিছু বিভাগের নাম পরিষ্কার না থাকায় সামান্য উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল।'
বৃহস্পতিবার ওই তৃণমূল নেতা আকবর আলী বলেন, 'সকাল থেকেই অনেক দূর থেকে মানুষ এসে রোদে দাঁড়িয়ে আছে, তখন ফর্ম ছিল না। সে জন্যই মানুষ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।'
মোদী সরকারের (Modi Government) অন্দরে প্রশংসিত মমতা সরকারের 'দুয়ারে সরকার' প্রকল্প (Duare Sarkar)। কেন্দ্রের তরফে প্লাটিনাম পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে এই সামাজিক প্রকল্পকে। শনিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে (Rashtrapati Bhawan) মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের হাতে পুরস্কার তুলে দেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ডিজিটাল ইন্ডিয়া পুরস্কার ২০২২-র মঞ্চ থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস তাদের ট্যুইটার পেজে এই সাফল্য তুলে ধরেছে। রাজ্যের শাসক দল লিখেছে, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যতিক্রমী নেতৃত্বে বাংলা আবার দিশা দেখিয়েছে। পশ্চিম বাংলার সরকারের সামাজিক প্রকল্প দুয়ারে সরকার ডিজিটাল পুরস্কার ২০২২-র মঞ্চে পুরস্কৃত হয়েছে। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।'
'বিচারের বাণী যাতে নীরবে নিভৃতে না কাঁদে' দুয়ারে রেশন (Duare Ration) প্রকল্প নিয়ে এই মন্তব্য করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এবার নবান্নকে স্বস্তি দিয়ে দুয়ারে রেশন প্রকল্পে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) স্থগিতাদেশ। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ (Stay Order) দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। মমতা সরকারের এই প্রকল্প বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস ও অনিরুদ্ধ রায়ের সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।
এই স্থগিতাদেশের ফলে রাজ্যে চলবে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প। সোমবার শীর্ষ আদালতের এই স্থগিতাদেশের ফলে রাজ্য সরকারের এই প্রকল্প চালাতে আর কোনও আইনি বাধা আপাতত রইলো না।
রাজ্যের এই প্রকল্প খাদ্য অধিকার আইনের পরিপন্থী, এই যুক্তি দেখিয়ে দুয়ারে রেশন প্রকল্প বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। অবশেষে 'সুপ্রিম' স্বস্তি রাজ্যর।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্য এই প্রকল্প চালু রাখতে 'কারও গায়ের জোরের কাছে মাথা নত করব না' বলে সম্প্রতি বিধানসভার অধিবেশনে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, 'মানুষের জন্য দুয়ারে রেশন প্রকল্প চালু হয়েছিল। মানুষের স্বার্থেই দুয়ারে এই প্রকল্প চলবে।' তিনি এ-ও বলেছিলেন, 'দরকারে বিধানসভার মাধ্যমে কোর্টকে আবেদন করব। যাতে বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে না কাঁদে।'
ধোপ দূরস্ত পোশাক, হাতে ব্যাগ আর গাদা-গুচ্ছেক কাগজ নিয়ে প্রায় বছর চল্লিশের এক ব্যক্তি সরকারি এক আধিকারিকের গাড়ির দরজায় মুখ রেখে সমানে ঘেউ ঘেউ (Dog Bark) করে যাচ্ছেন! বাঁকুড়ার দু'নম্বর ব্লকের বিকনা গ্রাম পঞ্চায়েতের দুয়ারে সরকার (Duare Sarkar Camp) ক্যাম্পে এই দৃশ্য দেখে বিস্মিত অনেকেই। রীতিমতো ক্যামেরার সামনে সেই ব্যক্তির এই কাণ্ড দেখে প্রায় 'ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি' অবস্থা যুগ্ম বিডিওর (Joint BDO)। যেন কোনওভাবে ওই জায়গা ছাড়লেই হাঁফ ছাড়তে পারেন তিনি।
কিন্তু ঘটনাটা আদতে কী? জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া-২ নম্বর ব্লকের বিকনা গ্রাম পঞ্চায়েতের কেশিয়াকোল গ্রামের শ্রীকান্তি দত্ত রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ দফতর থেকে যে আরকেএসওয়াই রেশন কার্ড পেয়েছেন, এটা প্রথম থেকেই ভুলে ভরা। প্রথমে তাঁর পদবি দত্তের জায়গায় হয়েছে মণ্ডল। তারপর ত্রুটি সংশোধনে শ্রীকান্তি হয়েছে শ্রীকান্ত। এবং সবশেষে সেই ত্রুটি সংশোধনে দত্ত পদবী হয়ে গিয়েছে 'কুত্তা'। আর এই ঘটনায় যথেষ্ট বিব্রত ও অসম্মানিত শ্রীকান্তি বাবু। তাই বুধবার বিকনা গ্রামে 'দুয়ারে সরকার' ক্যাম্প জয়েন্ট বিডিও পরিদর্শনে এলে কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করে 'প্রতিবাদ' জানান শ্রীকান্তি দত্ত।
শ্রীকান্তি দত্ত জানান, 'রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলাম, প্রথম পর্যায়ে রেশন কার্ড হাতে পেলে দেখি আমি শ্রীকান্তি দত্ত হয়ে গিয়েছি শ্রীকান্ত মণ্ডল। সংশোধনের পর আমি হলাম শ্রীকান্ত কুমার দত্ত। ফের দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে গিয়ে সংশোধনের আবেদন করলাম। এরপর আর মানুষ নয়, হয়ে গেলাম কুকুর! শ্রীকান্তি দত্তের জায়গায় শ্রীকান্তি কুমার কুত্তা এলো আমার নাম।'
তাঁর মন্তব্য, এই ঘটনার পর আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে গিয়ে জয়েন্ট বিডিও কে হাতের কাছে পেয়েও দত্ত কী করে কুত্তা হয় এই প্রশ্ন তাঁর কাছে রাখি। তিনি কোন উত্তর না দিয়ে এলাকা ছাড়তে চান। এই ঘটনায় যথেষ্ট ক্ষুব্ধ শ্রীকান্তি দত্তর মা হীরা দত্ত। তাঁদের 'সামাজিক সম্মানহানি' হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, 'গুরুত্বপূর্ণ কাজে চুক্তিভিত্তিক আর অশিক্ষিত কর্মী নিয়োগের ফলেই এই ঘটনা ঘটছে। আর যার ফল ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। আমার ছেলের আমি একটা নাম রেখেছি। দোকান করে ছেলে সংসার চালায়, আর এই ঘটনায় শতগুণ সম্মাণহানি হয়েছে।'
এদিকে, সিএন-এ এই খবর প্রচারিত হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। নিজের পদবি ফিরে পান শ্রীকান্তি কুমার দত্ত। অবশেষে রাহুমুক্তি যুবকের। বাবা-মায়ের দেওয়া নাম-সহ রেশন কার্ড হাতে পান তিনি।
হাইকোর্টে বাতিল হয়ে গেল মমতা সরকারের দুয়ারে রেশন প্রকল্প (Duare Ration Scheme)। রাজ্য সরকার গৃহীত এই প্রকল্প জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা (National Food Security Law) আইনের পরিপন্থী। এই যুক্তিতে দুয়ারে রেশন প্রকল্পের নির্দেশিকা খারিজ করল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ (Calcutta High Court)। আইনের চোখে এই প্রকল্পের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। বুধবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন। আদালতের এই রায়ে রেশন ডিলার্সদের বহুদিনের আইনি লড়াই সাফল্যের মুখ দেখল। এমনটাই দাবি বেঙ্গল ফেয়ার প্রাইস শপ ফেডারেশনের।
একুশের ভোটে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বার সরকার গড়ে দুয়ারে রেশন প্রকল্পের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পের অনুকরণে দিল্লিবাসীর দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প নিয়েছেন কেজরিওয়াল সরকারও। কিন্তু এই প্রকল্পের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করে রেশন ডিলার্সদের সংগঠন। যদিও সেই মামলায় তাঁদের বিপক্ষে রায় দেয় হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চ। কিন্তু সেই রায়ের বিরোধিতা করে ডিভিশন বেঞ্চে দরবার করেন বেঙ্গল ফেয়ার প্রাইস শপ ফেডারেশন, রেশন ডিলার জয়েন্ট ফোরামের সদস্যরা। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েই দুয়ারে রেশন প্রকল্প বাতিল করে দিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
দুয়ারে রেশন প্রকল্পকে বাস্তব রূপ দিতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছিল রেশন ডিলারদের। ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছিলেন তাঁরা। এই অভিযোগ তুলে প্রথম একটি মামলা দায়ের হয়েছিল মৌসুমি ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চে। কিন্তু আদালত সেই মামলা খারিজ করে দেয়। পরে ডিভিশন বেঞ্চে আইনি লড়াইয়ে সাফল্যের মুখ দেখেন রেশন ডিলাররা।