প্রসূন গুপ্ত: তরুণ প্রেমের তো বটেই তার সঙ্গে ভিন্ন ধর্মে প্রেম ও সংকট নিয়েই প্রথম ছবি রাজ্ কাপুরের 'ববি' এবার ৫০ বছর পূর্ণ করলো। হিন্দি সিনেমায় ববি একেবারেই নতুন আঙ্গিকে একটা চ্যালেঞ্জ ছিল রাজ্ কাপুরের। এই ছবি যদি না চলতো তবে তাঁদের পরিবারকে আরকে ষ্টুডিও বিক্রি করে দিতে হতো। সময়টা ১৯৭০, রমরমিয়ে চলছে ভারতীয় সিনেমা। হিন্দি কিংবা বাংলা যখন যে ছবি রিলিজ করেছে, একেবারে পাতে ফেলার মতো না হলেও হিট করে যেত। সে সময়ের প্রথম সুপারস্টার রাজেশ খান্নার আবির্ভাব হয়েছিল। কাজেই শুধু রাজেশ নয় ধর্মেন্দ্র, জীতেন্দ্র এমনকি প্রবীণ দেব আনন্দের ছবিও হিট।
তখন হিন্দি ছবি মানেই ফর্মুলা চিত্র অর্থাৎ প্রেম, গান, নাচ, অ্যাকশন ইত্যাদি। সিনেমা প্রেমীদের তাই পছন্দের ছিলও বটে। রাজ কাপুর বোম্বাই ফিল্মের চিরকালের ব্যতিক্রমী চরিত্র। তিনি ঘোরতর বামপন্থী ছিলেন তাই তাঁর ছবিতে একটা বার্তা থাকতো। যা কিনা পরে ডাব করে কমিউনিস্ট রাশিয়ায় দেখানো যায়। সঙ্গে অবশ্যই শঙ্কর জয়কিষানের সুর ও পিয়ানো একর্ডিয়ান। রাজ্ দেখলেন তাঁর বয়স হয়ে যাচ্ছে, কাজেই এমন একটি ছবি করা যাক যেখানে নানা বয়সে তাঁকে দেখবে জনতা। তৈরি হলো 'মেরা নাম জোকার'।
নিঃসন্দেহে আজকের দিনেও অসাধারণ ছবি। কিন্তু ৪ কোটি টাকার ছবি মুখ থুবড়ে পড়লো। প্রায় দেউলিয়া হয়ে গেলেন রাজ্ কাপুর। তিনি ধরেই নিলেন আর ছবি করবেন না। ১৯৭২-এ ফের একবার একেবারে স্বল্প বাজেটে ছবি করবেন ঠিক করলেন। ববিতে প্রথমেই সুরকার বদলে প্রথমবার নিলেন লক্ষীকান্ত প্যারেলালকে। অভিনয়ে নিলেন পুত্র ঋষি কাপুরকে, আর নতুন মুখ ডিম্পল কাপাডিয়া। সঙ্গে নিলেন শ্যালক প্রেমনাথ, ভায়রাভাই প্রেম চোপড়া, বান্ধবী সোনিয়া সাহানি এবং প্রাণের বন্ধু প্রাণকে। প্রত্যেককে আর্থিক অবস্থা জানানোয় কেউই পয়সা নিলেন না। সব মিলিয়ে খরচ হলো মেরেকেটে ৩৫-৪০ লক্ষ টাকা।
ছবি রিলিজ করলো, মানুষ রাজেশ খান্নার সিনেমা দেখে চলচিত্রে প্রেমের নানান রূপ চাইছিলো কাজেই ছবি সুপার হিট। কলকাতার মেট্রো সিনেমা হলে ৫০ সপ্তাহ চলেছিল ববি। আজকেও একই ভাবে সমাদৃত এই ছবি ববি।