উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে ২৯ ফেব্রুয়ারি। পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার পর বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছিল গত সোমবার। বাড়ি না ফেরায় শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। অবশেষে রেল কলোনির বন্ধ কোয়াটার থেকে উদ্ধার হয় ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে বেহালায়। ইতিমধ্যে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে বেহালা থানার পুলিস।
পুলিস সূত্রে খবর, মৃত ছাত্রের নাম অংশুমান সিং(১৭)। এমপি বিলাস স্কুলের এবছরের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র। বাড়ি বেহালা পাঠকপাড়ায়। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে গত সোমবার বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছিল অংশুমান। মঙ্গলবারও অংশুমান বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন অংশুমানের ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। কিন্তু কোনওরকম ভাবে ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি যে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিল সেই বন্ধুরাও কেউ ফোনে পাচ্ছিল না অংশুমানকে।
এরপরই পরিবারের লোকজন এলাকার বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। বেহালা গোলশাপুর রেল কলোনির বদ্ধ বিল্ডিং গুলিতে খোঁজ করতে গিয়ে ৩৫ নম্বর বিল্ডিং-এর চার তলায় অংশুমানকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান এলাকার মানুষজন। তড়িঘড়ি অংশুমানকে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া বিদ্যাসাগর হাসপাতালে। সেখানে ডাক্তাররা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
কীভাবে কী কারণে এই মৃত্যু পরিবারের লোকজন তা বুঝে উঠতে পারছেন না। তবে পরিবারের লোকজনের বক্তব্য, অংশুমান অনলাইন গেম খেলায় আসক্ত ছিল। বেশ কয়েক মাস ধরে তার কয়েক লক্ষ টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিল বন্ধু দের কাছে। পরিবারকে কিছুই জানায়নি। সোমবার অংশুমান-এর বন্ধু মারফত তাঁরা তা জানতে পারেন।
সন্দেহের বশে স্ত্রীকে খুন করল স্বামী। খুনের পর ঠাণ্ডা মাথায় ১০০-তে ফোন করে নিজেই পুলিসকে ডাকল অভিযুক্ত। বৃহস্পতিবার ঘটনায় চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে বেহালার রাজা রামমোহন রায় রোডের নেতাজি সড়কে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বেহালা থানার পুলিস গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তবে কী কারণে এই খুন তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
জানা গিয়েছে, মৃত স্ত্রীর নাম কৃষ্ণা দাস এবং অভিযুক্ত স্বামীর নাম কার্তিক দাস। একটা ১২ বছরের মেয়ে ও ৫ বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে তাঁদের। গত এক বছর ধরে বেহালার রাজা রামমোহন রায় রোডের নেতাজি সড়কে ভাড়া থাকতেন ওই দম্পতি। স্থানীয় সূত্রে খবর, স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে প্রায়শই স্বামী-স্ত্রীর মধ্য়ে ঝামেলা অশান্তি হত।
এরপর গতকাল অর্থাৎ বুধবার রাতের বেলা নিজের স্ত্রীকে খুন করে অভিযুক্ত স্বামী। তারপর আজ, বৃহস্পতিবার ১০০ তে ফোন করে পুলিস ডেকে নিজেই আত্মসমর্পণ করে। এরপর একেক করে পরিবারের সবাইকে ফোন করে জানায় যে, তাঁর স্ত্রীকে সে চাঁদে পাঠিয়ে দিয়েছে। এমনকি মৃতার বাড়িতেও ফোন করে জানায় সে কথা। ঘটনায় মৃতার জেঠিমার বক্তব্য, কোনও এক সময় টাকার বিনিময়ে নিজের স্ত্রীকে বিক্রি করতে চেয়েছিল অভিযুক্ত কার্তিক দাস।
পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। পারিবারিক বিবাদ নাকি অন্য় কোনও কারণ রয়েছে এর পিছনে? ইতিমধ্য়ে গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে বেহালা থানার পুলিস।
ফের প্রকাশ্যে পুলিসের নিষ্ক্রিয়তা। ফের প্রকাশ্যে পুলিসের ইচ্ছামত কাজ। ফের প্রকাশ্যে পুলিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ। ঘটনা বেহালা থানা কেন্দ্র করে। গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে বেহালা বিএল সাহা রোড এবং টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের সংযোগস্থলে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় অজয় সিং রাজপুত নাম এক যুবক। তবে যে বাইক এসে ধাক্কা মারে, সেই চালক পলাতক। অভিযোগ, পুলিস ছেড়ে দেয় ওই চালককে। বেহালা থানার সামনে বিশাল বিক্ষোভে সামিল মৃতের পরিবার পরিজন।
জানা গিয়েছে, গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে বেহালা বিএল সাহা রোড এবং টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের সংযোগস্থল দিয়ে অজয় সিং রাজপুত নামে এক যুবক বাইক চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ঠিক সেই সময় উল্টোদিক থেকে দ্রুত গতিতে আরেক বাইক এসে অজয়ের বাইককে ধাক্কা মারে। অজয়কে ভর্তি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। তবে মঙ্গলবার অবশেষে তাঁর মৃত্যু হয়। আর এরপরেই বেহালা থানার উপর চড়াও হয় অজয়ের পরিবার পরিজন।
প্রসঙ্গত, এই দুর্ঘটনা ঘটার পর বেহালা থানার পুলিস অভিযুক্তকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয়, এমনটাই অভিযোগ মৃতের পরিবারের। আর এই নিয়েই বেহালা থানার পুলিসের উপর ক্ষুব্ধ মৃতের পরিবার পরিজন। যে অভিযুক্ত, সে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত, ঘটনার এক সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত কীভাবে অভিযুক্তকে ছেড়ে দিল পুলিস, প্রশ্ন তুলছেন মৃতের পরিবার।
তবে কি এটাই এখন পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসন? পুলিস মন্ত্রী জানেন? তিনি কি অবগত নন পুলিসের এমন অপ্রত্যাশিত ভূমিকা নিয়ে? নাকি সবটা জেনেও মানুষকে বিচার না পাওয়ার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন খোদ পুলিসমন্ত্রী? উঠছে প্রশ্ন। এই দুর্ঘটনায় মৃতের পরিবার, বন্ধুরা পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালে পুলিসের বক্তব্য ১০ মিনিটের মধ্যে তাঁরা অভিযুক্তকে খুঁজে আনবেন। জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই দুজন অভিযুক্তকে থানায় নিয়ে আসাও হয়েছে। তাহলে কি পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ না দেখালে এ রাজ্যে ন্যায়বিচার হবে না? প্রশ্ন উঠলেও উত্তর অধরা।
ফের শহরে উদ্ধার যুবকের মৃতদেহ। শনিবার ভোরবেলায় বেহালার সখেরবাজারে ডায়মন্ড হারবার রোডের উপর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ। আর পাশেই উল্টে পড়ে ছিল তাঁর বাইক। বেহালার ঠাকুরপুকুর থানা এলাকার এই ঘটনাটি কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে তদন্তে পুলিস। বেপরোয়া গতির বলি নাকি অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিস।
পুলিস সূত্রে খবর, মৃত যুবকের নাম শুভদীপ বিজলী (৩০)। জানা গিয়েছে, শুভদীপ এদিন ঠাকুরপুকুরের দিক থেকে বাইক নিয়ে বেহালায় আসার পথে সখেরবাজারে ঘটে ঘটনাটি। আজ অর্থাৎ শনিবার ভোরবেলা ঠাকুরপুকুর থানার পুলিসের টহল চলাকালীন পুলিসের নজরে আসে সখেরবাজারে ডায়মন্ড হারবার রোডের উপর এক যুবক রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পুলিস রক্তাক্ত অবস্থায় যুবককে উদ্ধার করে বেহালার বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
তবে কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, পথ দুর্ঘটনায় নাকি অন্য কোনও কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিস। পুলিস প্রাথমিক ভাবে অনুমান করছে, গাড়ির ধাক্কাতেই এই দুর্ঘটনা। ইতিমধ্যেই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে পুলিস।
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি লাক্সারি বাস ধাক্কা মারে ২৩৫ নং রুটের একটি বাসে। ধাক্কার জেরে বাসটি ডিভাইডারে উঠে যায়। সোমবার সকাল ৯.১০ নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বেহালার ঠাকুরপুকুর ৩এ বাস স্ট্যান্ডের নিকট। ঘটনায় প্রায় ২১ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিসের তৎপরতায় আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
জানা গিয়েছে, ২৩৫ নং বাসটি একটি প্রাইভেট গাড়ির উপর উঠে যায়। বাস দুটি ও চার চাকা গাড়িটি একেবারে দুমড়ে মুচড়ে যায়। এছাড়াও সাতসকালের এই দুর্ঘটনায় রাস্তার ধারে ফল নিয়ে বসা এক ব্যবসায়ীও গুরুতর আহত হয়েছেন। ব্যবসায়ীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেই হাসপাতাল সূত্রে খবর।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগেই বেহালার চৌরাস্তায় ঘটেছিল ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এরপর আবার ঠাকুরপুকুরে। স্থানীয়দের দাবি, ট্রাফিক পুলিসদের আরও কড়া হতে হবে। প্রশাসনকে দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন।
একদিকে যখন গোটা দেশে মহিলাদের সন্মান জানিয়ে পাশ করা হচ্ছে মহিলা সংরক্ষণ বিল, তখন অন্যদিকে বাংলার নারী সুরক্ষার চিত্রটা ঠিক অন্যরকম। মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে গোটা দেশে মহিলাদের উচ্ছাস ঠিক তখনই রাতের কলকাতায় মহিলাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ। অভিযোগ গতকাল অর্থাৎ বুধবার রাতে অটোর লাইনে দাঁড়িয়ে শ্লীলতাহানির স্বীকার এক মহিলা।
যদিও স্থানীয় থানা শ্লীলতাহানির অভিযোগ গ্রহণ করেননি বলেই অভিযোগ নির্যাতিতার। অভিযোগ বুধবার রাট আটটার সময় কাজ থেকে বাড়ি ফেরার মুখে বেহালা চৌরাস্তায় লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন মহিলা, অভিযোগ সেই সময় এক মদ্যপ ব্যক্তি হঠাৎই তার সামনে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ে, নির্যাতিতা মহিলা তখন তাঁকে লাইনে অপিচনে গিয়ে দাঁড়াতে বলে। অভিযোগ এরপরেই ওই ব্যক্তি মহিলার সঙ্গে দুরব্যবহার শুরু করে। অভিযোগ মহিলাকে গালিগালাজ, হুমকি এমনকি গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
অভিযোগ ওই অটোর লাইনে অন্যরা থাকলেও কেউ কোনও প্রতিবাদ করেননি। তারপর অপর এক মহিলা এ ঘটনায় প্রতিবাদ করতে গেলে তাকেও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরবর্তীকালে ওই ব্যক্তি হুমকি দিয়ে থাকে আমার মা ভবানী ভবনের সেকেন্ড অফিসার, আমার কেউ কিছু করতে পারবে না। থানা থেকেও ছেড়ে দেবে। তারপর ওই মহিলা চৌরাস্তায় উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশদের সাহায্য নেয় এবং পুলিশকে পুরো ঘটনা বলে খবর দেওয়া হয় বেহালা থানা তে। বেহালা থানা ইতিমধ্যেই ওই ব্যক্তিকে আটক করে গতকাল রাত্রিবেলায় নিয়ে গেছে যদিও ওই মহিলার বক্তব্য আমি বারংবার শ্লীলতাহানি অভিযোগ করতে চাইলে থানা থেকে বলা হয় গায়ে হাত না দিলে শ্লীলতাহানির অভিযোগ হয় না। এ ঘতমনায় রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
মণি ভট্টাচার্য: কেউ বলছে আমার ভালো বন্ধু ছিল, কিংবা কারও মতে সৌরনীল 'বেস্ট ফ্রেন্ড।' অনেকেই 'বেস্ট ফ্রেন্ড' শব্দটি বলল ভাঙা গলায়, কিংবা ঠিক মত উচ্চারণই করতে পারল না। কিন্তু সৌরনীলের কথায় চোখ ছলছল হয়ে এল বড়িশা হাইস্কুলের অনেক ছাত্র ও সৌরনীলের সহপাঠীদের। আজ অর্থাৎ রবিবার বন্ধুত্ব দিবসে সৌরনীলের স্মৃতি অনেকটাই মসৃণ হয়ে রইল ওর সহপাঠীদের মধ্যে। রবিবার স্কুল বন্ধ থাকায় বন্ধুত্ব দিবস ও শ্রদ্ধার্ঘ্য শনিবারই জানিয়েছিল বড়িশা হাইস্কুল ও সৌরনীলের সহপাঠিরা। ওদিকে সৌরনীলের গৃহশিক্ষক ও পাড়ার বন্ধুরা সৌরনীলকে বন্ধুত্ব দিবসের শ্রদ্ধার্ঘ্য দিল সৌরনীলের ধোপ-ধুরস্থ একটা ছবি এঁকে।
শুক্রবার ভোরে বেহালায় বাবার সঙ্গে স্কুলে যাওয়ার পথে একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় ৭ বছরের শিশু সৌরনীলের। বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে ফেরার পথে সৌরনীল তাঁর আঁকার খাতাটা ভুল করেই ফেলে আসে তাঁর বন্ধু অংশুর কাছে। কিন্তু তারপর থেকে সৌরনীল স্কুল না আসায়, এবং স্কুলে এত ঝামেলা, বিক্ষোভ, কাঁদানে গ্যাস হজম করেও অংশু বুঝে উঠতে পারেনি, আসলে কি হয়েছে! ছোট্ট অংশু তারপর থেকেই তাঁর মা কে বলছে সৌরনীল কেন স্কুলে আসছে না? জবাবে তাঁর মায়ের ছোট্ট উত্তর, 'সৌরনীল ওর আঁকা খাতার একটি আকাশের তাঁরা হয়ে গেছে।' এরপরেই অংশু সৌরনীলের আঁকা আকাশের ক্যানভাসে হাত বোলায়।
শনিবার সৌরনীলের কিছু বন্ধুকে সৌরনীলের বিষয়ে জানতে চাইলে কমবেশি অনেকেরই চোখ ছলছল করে ওঠে। কারোর দাবি সৌর আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। কিংবা কারও দাবি, 'কাকু সৌরনীলের কি হয়েছে?' ওই ছোট্ট মন হয়ত বোঝে না এই সমাজ ওদের মত একরত্তিদের আগলে রাখতে জানে না। রবিবার বন্ধুত্ব দিবস। সৌরনীলের জন্য ওর সমস্ত বন্ধুদের ক্যানভাসে যেন একটাই ছবি, 'অনেক আদরে যেখানেই থাকিস, ভালো থাকিস বন্ধু।'
বেহালার ঘটনায় নিহত পড়ুয়া সৌরনীল সরকারের বাড়িতে ফোন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার একথা জানিয়েছেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। মূলত মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই হরিদেবপুরের বাসিন্দা সৌরনীলের বাড়িতে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী। সৌরনীলের পরিবারের লোকের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি গোটা পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন মমতা।
পথ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বেহালা চৌরাস্তা। মাটি বোঝাই একটি গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় দ্বিতীয় শ্রেণির এক পড়ুয়ার। গুরুতর আহত অবস্থায় পি জি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে তার বাবা। ঘটনার পরেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এলাকার বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে থাকা একটি পুলিশ ভ্যানে আগুন লাগিয়ে দেয় তারা।
এদিকে ঘটনার পরেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদিকে ফোন করেন তিনি। পুরো ঘটনা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। পাশাপাশি পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের সঙ্গেও কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মণি ভট্টাচার্য: 'সোনাই দুষ্টুমি করিস না,' সংজ্ঞা ফেরার পর থেকে বেঘোরে সোনাইকে কখনও শাসন করছেন, কিংবা কখনও নিজের মনেই সোনাইয়ের সঙ্গে খুনসুটি করছেন সৌরনীলের বাবা। সৌরনীলের পরিবার সূত্রে খবর, 'সোনাই' সৌরনীলের আদুরে ডাকনাম ছিল। পড়াশুনায় অবগত হলেও, মাঝেমাঝে খুনসুটি ও দুষ্টুমি দুই-য়েই পটু ছিল তাঁদের আদরের সোনাই। সৌরনীলের দুষ্টুমিগুলিতে শাসন-বারণ, আদরে ভালই কাটছিল বেহালার সরকার পরিবারের। কিন্তু এক সকালেই যেন উল্টে পাল্টে গেল সরকার পরিবারের জীবন। একদিকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় নিজের স্মৃতিতে তাঁর আদরের 'সোনাই'কে খুঁজছেন সৌরনীলের বাবা সরোজ। অন্যদিকে শুক্রবার বিদ্যাসাগর হাসপাতালের শবকক্ষের বাইরে বসে, এমনকি সৌরনীলের শেষকৃত্যেও নিজের ছেলের ব্যাগ আঁকড়ে ছিলেন তাঁর মা।
শুক্রবার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে বছর পাঁচেকের একরত্তি সৌরনীল সরকার। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত সৌরনীলের বাবা সরোজ সরকার। গুরুতর আহত অবস্থায় বড়িশা স্কুলের কিছু শিক্ষক ও স্থানীয়রাই তাঁকে প্রথমে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যায়, এরপর সেখান থেকে এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করা হয়। সূত্রের খবর, বর্তমানে এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার বিভাগে চিকিৎসারত অবস্থায় আছেন তিনি। প্রাথমিক পর্যায়ে খবর, তিনি পায়ে, কোমরে, মাথায় ও বুকে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সরোজ বাবুর বা পায়ের হাঁটুর নিচে হাড় ভেঙেছে। আজ অর্থাৎ শনিবার তাঁর পায়ের অস্ত্রোপচার হবে বলেই সূত্রের খবর। পাশাপাশি শুক্রবার রাতেই সরোজ বাবুর সিটিস্ক্যান ও এক্স-রে করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী আপাতত তাঁর চিকিৎসা চলবে বলেই সূত্রের খবর।
ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও নবান্ন কর্তৃক ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন লালবাজারের কাছে। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী নিজে সৌরনীলের পরিবারের সঙ্গে ফোন মাধ্যমে যোগাযোগ করেন। সৌরনীলের পরিবারকে সমবেদনা দেন বলেও সূত্রের খবর। তাছাড়া ট্রাফিক ও পুলিস কর্তৃক ইতিমধ্যেই কড়া নিরাপত্তা ও নজরদারিতে মুড়ে ফেলা হয়েছে বেহালা চৌরাস্তা এলাকাটিকে। সৌরনীলের মৃত্যুতে শুক্রবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বেহালার স্থানীয়রা। পুলিসের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন সৌরনীলের স্কুল অর্থাৎ বড়িশা হাইস্কুল কর্তৃপক্ষও। শুক্রবারের দুর্ঘটনায় কেবল সৌরনীলের মৃত্যু হয়নি। মৃত্যু হয়েছে একটা পরিবারের জলজ্যান্ত স্বপ্নের। খালি হয়েছে একটা মায়ের কোল। কোনও গার্ডরেল, কোনও পুলিস, সর্ববৃহৎ কোনও রাষ্ট্র কি পারবে সৌরনীলকে ফিরিয়ে দিতে। পারবে তাঁর মায়ের চোখের জল মোছাতে, কিংবা তাঁর বাবার শোক পূরণ করতে। হয়ত না।
মণি ভট্টাচার্য: কখনও মুষড়ে পড়ছেন, কখনও গুমরে কাঁদছেন। কখনও বা একরত্তি ছেলের গন্ধ জড়ানো স্কুল ব্যাগে নিজের ছেলেকে খোঁজার চেষ্টা করছেন। তিনি আসলে মা। দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন ৫ বছরের সন্তানকে, স্বামী মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। শুক্রবার বিদ্যাসাগর হাসপাতালের শব কক্ষের বাইরে সৌরনীলের মায়ের কান্না দেখে কাঁদলেন অন্যান্যরাও। ভারসাম্য রাখার চেষ্টাও করলেন অনেকে। কিংবা কেউ কেউ সান্ত্বনাও দিলেন। কিন্তু ফুটফুটে এই সন্তান হারা মায়ের কাছে কি কোনও সান্ত্বনা যথেষ্ট! যতই সান্ত্বনা তিনি পান না কেন, এক লহমায় বদলে যাওয়া মায়ের জীবনে কি আর কখনও শান্তির ঘুম আসবে?
শুক্রবার সকালে একটি পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় মাত্র ৫ বছরের শিশু সৌরনীলের। না বিখ্যাত কোনও কিংবদন্তি পরিবারের সন্তান হলেও, মধ্যবিত্ত পরিবারে সৌরনীল বড় আদরের সন্তান ছিলেন, চলতি মাসের ২৫ তারিখ তাঁর জন্মদিন। জন্মদিনে সৌরনীলের ছোট্ট মনের, ছোট্ট আবদার ছিল পার্কে ঘুরতে যাবে। সে আশা তাঁর পূরণ হল না। দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন সৌরনীলের বাবাও। সংকট জনক অবস্থায় এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে চিকিৎসা চলছে তাঁর। আফসোস ছাড়া মধ্যবিত্ত পরিবারের আর কী বা করার থাকে? শুক্রবার দুপুরে বিদ্যাসাগর হাসপাতালের শবকক্ষের সামনে বসে কাঁদতে কাঁদতে আফসোস করতে থাকলেন সৌরনীলের মা। গুমরে গুমরে কেঁদে উঠলেন, আর আবছা গলায় বললেন, 'আমার ছেলেটাকে ওরা শেষ করে দিল, স্কুলের সামনে তো ওদের গাড়িটা আস্তে চালানো উচিত ছিল।'
শুক্রবার সকালে সৌরনীলের মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি স্থানীয়রাও। মুহূর্তে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। বেহালা চৌমাথায় জড়ো হয়ে সৌরনীলের মৃতদেহ রাস্তায় রেখে, পুলিসের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয়রাই। সে সঙ্গে উত্তেজিত জনতা পুলিসের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় ও বাস ভাঙচুর করে। সেই অবরোধ ওঠাতে এলে পুলিসের সঙ্গে খন্ডযুদ্ধ বাধে। রণক্ষেত্রের আকার নেয় বেহালা। কিছুক্ষন পর কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিস, ছত্রভঙ্গ হয় আন্দোলন। পরে সৌরনীলের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিস। এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১১ জন আন্দোলনকারীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিস।
গোটা ঘটনা পরিদর্শনে আসেন কলকাতা পুলিস কমিশনার বিনীত গোয়েল। এই দুর্ঘটনার জন্য শোক প্রকাশ করে তিনি সৌরনীলের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেন। পাশাপাশি প্রথম থেকেই যথেষ্ট দায়িত্ব পালন করেছেন সৌরনীলের স্কুল অর্থাৎ বড়িশা হাইস্কুল কতৃপক্ষ। সৌরনীলের বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন তারাই। ঘটনার তীব্রতা বুঝে লালবাজারের কাছে এই ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় নবান্ন। ইতিমধ্যেই দোষীদের কড়া শাস্তির বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। বিদ্যাসাগর হাসপাতালে শবকক্ষের বাইরে অন্যদের থেকেও সান্ত্বনা পেয়েছেন সৌরনীলের মা। সব কিছু শুনে কেবলই কেঁদেছেন সৌরনীলের মা। আর প্রিয় ছেলের স্কুল ব্যাগ আঁকড়ে মুষড়ে পড়ছেন মাঝে মাঝে। এ অবস্থায় কোনও সান্ত্বনা সন্তান হারা মায়ের জন্য যথেষ্ট! এ উত্তর জানা নেই আমাদের।
বেহালার দুর্ঘটনায় পড়ুয়া মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অশান্তির ঘটনায় এবার সক্রিয় নবান্ন। সূত্রের খবর, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই মুখ্যসচিবের সঙ্গে কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, গোটা ঘটনায় লালাবাজারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে নবান্ন।
শুক্রবার সকালে বেহালা-চৌরাস্তায় লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয় বড়িশা হাইস্কুলের প্রাথমিকের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রের। তারপর থেকেই দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন কলকাতা পুলিসের সিপি বিনীত গোয়েল। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার সময় ট্রাফিক পুলিস ঘটনাস্থলে ছিলেন। তা সত্ত্বেও কেন এই ঘটনা, তা খতিয়ে দেখা হবে। কোনও গাফিলতি ছিল কি না, সেটাও দেখা হবে। পরবর্তীতে আর এরকম হবে না বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
উল্লেখ্য, স্কুলে যাওয়ার পথে রাস্তা পার করার সময় লরির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বড়িষা হাইস্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া সৌরনীল সরকারের (৭)। বেহালার নবপল্লীতে বাড়ি। দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন তাঁর বাবা সরোজ কুমার সরকার। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁরও মৃত্যু হয়।
এদিকে, শিশুমৃত্যুকে কেন্দ্র করে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে দফায় দফায় উত্তাল হয় বেহালা চৌরাস্তা। বিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। বড়িশা হাই স্কুলের সামনে পুলিস ও স্থানীয় বাসিন্দাদের রীতিমত খণ্ডযুদ্ধ হয়। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে স্কুল গেটের সামনে টিয়ার গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিস। স্কুল ক্যাম্পাস ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। অসুস্থ হয়ে পড়ে একাধিক খুদে। আহত হন পুলিশ এবং আমজনতা। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা।
মণি ভট্টাচার্য: 'আমাদের স্কুলে যারা আসে, তাদের মধ্যে কেউই চার চাকা কিংবা বড় বাড়িতে স্কুলে আসেন না। হয় সাইকেলে আসেন, খুব বড় জোর হলে অটোতে আসেন। সে কারণেই ব্যস্ততম রাস্তার পাশের স্কুলে কোন পুলিসি পাহারা নেই। কিন্তু আশেপাশের বেসরকারি স্কুলগুলোতে কিংবা স্কুলের বাইরে রাস্তায় পুলিসি পাহারা আছে।' লরির ধাক্কায় বেহালার শিশু মৃত্যুর ঘটনায় পুলিসকেই দুষলেন বরিশা হাইস্কুলের স্কুলের প্রধান শিক্ষক। কিছুতেই যেন এই দুঃখ থেকে বেরোতে পারছে না তিনি। পারবেনই বা কি করে? সকালবেলা স্কুলে ঢুকেই তাদের স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র সৌরনীলের মৃত্যুর খবর পান। ছুটে গিয়ে সৌরনীলের বাবাকে আহত অবস্থায় বিদ্যাসাগর হাসপাতালে ভর্তি করেন তারাই।
সূত্রের খবর, ছোট্ট ক্ষুদে সৌরনীলের স্কুল অর্থাৎ বরিশা হাই স্কুলের পড়ুয়া সংখ্যা প্রায় ১০০০ জন। প্রায়সই স্কুল শুরুর সময় যানজট লেগে যায় ওই রাস্তায়। স্কুলের তরফ থেকে অভিযোগ সেই সময়ও যানজট নিয়ন্ত্রণে কোন পুলিশকে দেখা যায় না। এমন কি? বহুবার স্কুলের সাইকেলে চুরি হয়েছে অথচ সেই সাইকেল চোর কে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেই অভিযোগ স্কুলের তরফে। পাশাপাশি স্কুলের অভিযোগ পুলিসের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসে এখনও অবধি বেশ কয়েকজন পড়ুয়া সামান্য অসুস্থ হয়েছে, স্কুলের তরফে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসাও করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
শুক্রবার ভোর বেলায় বাবার হাত ধরে স্কুলের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিলেন বরিশা হাই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র সৌরনীল। অভিযোগ সে সময় বেপরোয়া গতিতে উল্টো দিক থেকে আসা একটি মাটির লরির ধাক্কায় প্রাণ যায় সৌরনীলের। গুরুতর অবস্থায় তার বাবা এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এরপরই সৌরনীলের মৃতদেহ রাস্তায় রেখে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। এই বিক্ষোভ একসময় রণক্ষেত্রের আকার নেয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের খন্ডযুদ্ধ বাঁধে। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয় পুলিসকে। ঘটনার প্রায় দু ঘণ্টা পর মৃতদেহ কে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিস।
অন্যদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত কুমার গোয়েল। এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এখন এই এলাকা গুলিতে দুর্ঘটনা অনেক কমেছে। তাছাড়া লরি চালক ও লরিটিকে আটক করা হয়েছে। দোষীদের উপযুক্ত সাজার ব্যবস্থা করা হবে। যদিও এসব কিছু শুনতে নারাজ স্থানীয়রা, এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা এ ঘটনার পিছনে পুলিসকেই দায়ী করছেন।
ভোরে বাবার হাত ধরে স্কুলে বেরিয়েছিলেন ক্ষুদে শিশুটি। হঠাৎ মাটি বোঝাই একটি লরি প্রচণ্ড গতিতে এসে ধাক্কা মারে বড়িশা হাইস্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ওই পড়ুয়া এবং তার বাবাকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শিশুটির। তাঁর বাবাকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করেন। এবার এ ঘটনার জেরেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল ঘটনাস্থল বেহালা। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাস্তা অবরোধ, এরপর পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি, লাঠিচার্জ। অবশেষে ঘাতক লরিটি ও লরিচালক কে হাওড়া থেকে গ্রেফতার করে পুলিস।
সূত্রের খবর, ভোর বেলায় এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় পাঁচ বছরের খুদে পড়ুয়ার, এরপরেই মৃতদেহ রাস্তায় ফেলে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয়রা। বিক্ষোভের জেরেই আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় পুলিসের ভ্যানে। বেশ কয়েকটি সরকারি বাসও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে পুলিস সূত্রে খবর। স্থানীয়দের বিক্ষোভে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ডায়মন্ড হারবার রোড। পুলিসের বিরুদ্ধে গাফিলতি ও প্রাথমিক পর্যায়ে ঘুষ নিয়ে অভিযুক্ত লরি চালককে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা। তবে সকাল ১০টা নাগাদ কোনা এক্সপ্রেসওয়ের বাবলাতলা থেকে ওই ঘাতক লরির চালককে গ্রেফতার করে হাওড়া ট্র্যাফিক পুলিস। পরে তাঁকে তুলে দেওয়া হয় কলকাতা পুলিশের হাতে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর বেহালার পরিস্থিতি সামাল দিতে কনভার্ট বাহিনী ্যাব পাশাপাশি বিশাল পুলিশ বাহিনীকে মোতায়ন করা হয়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে অবরোধ তুলতে গেলে এক পশলা বচসা, এরপরই বিক্ষোভ তুমুল আকার ধারণ করে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ছুড়তে হয় পুলিসকে। পুলিস এবং আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে বেহালা চৌরাস্তা সংলগ্ন রাস্তা। রাস্তায় আটকে প্রচুর যানবাহন। চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা।
পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন কলকাতা পুলিস কমিশনার বিনীত কুমার গোয়েল। শুক্রবার তিনি সাংবাদিকদের জানান, ঘাতক লরিটিকে আটক করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে লরি চালকটিকেও। এই ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত সাজার ব্যবস্থা করা হবে।
শিক্ষককে মেরে ফেলার হুমকি (Threat) দিয়ে পোস্টার। পোস্টারে লেখা- টিউশন পড়ালে তোর খেলা (জীবন) শেষ। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে বেহালা (Behala) সেনহাটি কলোনির এক শিক্ষকের বাড়িতে। ইতিমধ্যেই বেহালা থানার পুলিসকে (Police) এই গোটা ঘটনার খবর দেওয়া হয়েছে। পুলিস ওই শিক্ষকের বাড়িতে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ উদ্ধার করেছে। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। ঘটনাকে ঘরে বেশ আতঙ্কে শিক্ষকের পরিবার। পুলিস সূত্রে খবর, ওই শিক্ষকের নাম অর্ণব গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বেহালা সেনহাটি কলোনিতে স্ত্রী এবং ছোট্ট একটি বাচ্চার পাশাপাশি নিজের বাবা-মাকে নিয়ে থাকেন। তিনি বিজ্ঞানের শিক্ষক।
অর্ণব বাবু জানান, মঙ্গলবার বিকেল বেলায় তাঁর বাড়ির দেওয়ালে ল্যামিনেশন করা পোস্টার লাগানো অবস্থায় দেখতে পান। তাতে লেখা রয়েছে প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করো না হলে প্রাণে মেরে দেওয়া হবে। এই ঘটনায় অর্ণব বাবুর স্ত্রী দেবযানি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, একমাস যাবত তাঁদেরকে কেউ বা কারা বিরক্ত করে চলেছে। এমনকি বাড়ির দিকে লক্ষ্য করে ফেলা হচ্ছে চকলেট বোম, কাচের বোতল, বাল্বের টুকরো প্রভৃতি। যদিও কারোর আঘাত লাগেনি। তবে এই ঘটনা কে বা কারা করে চলেছে তা পরিষ্কার নয় তাঁদের কাছে।
বারবার এইসব ঝামেলা ঘটছে তাই দুষ্কৃতীদের হাত থেকে নিজেদের বাঁচবার জন্য কয়েকদিন আগেই নিজের বাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগান। আর সেই ক্যামেরাতেই একজন ব্যক্তিকে ছাতা মাথায় নিয়ে দেওয়ালে হুমকির পোস্টার লাগাতে দেখা যায়। যদিও ছাতা মাথায় থাকবার জন্য সেই ব্যক্তিকে আইডেন্টিফাই করা যায়নি, এমনটাই দাবি দেবযানি গঙ্গোপাধ্যায়ের।
কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মহিলার পোষ্য সারমেয়কে মারধর (Beaten)। বাধা দিতে গেলে মহিলা ও তাঁর নাবালিকাকে মেয়েকেও মারধর করে ওই ব্যক্তি, এমনই অভিযোগ। শনিবার রাতে এই ঘটনাটি ঘটেছে বেহালা (Behala) থানার অন্তর্গত ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের ভাষা পাড়ায়। এরপর ওই মহিলা বেহালা থানায় অভিযোগ জানাতে যান। সেখানে গিয়ে সেখানেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। তারপরেই তাঁকে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একদিন ভর্তি থাকার পর ওই মহিলাকে ছেড়ে দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে। ইতিমধ্যেই বেহালা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মহিলা। তবে পুলিসের (Police) তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি, এমনটাই দাবি ওই মহিলার।
সূত্রের খবর, নির্যাতিতা মহিলার নাম কাজল জানা এবং অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম সুপ্রিয় সেনগুপ্ত। ওই নির্যাতিতা মহিলার অভিযোগ, ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে কুপ্রস্তাব দিয়ে চলেছে। আর সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অজুহাত বানিয়ে সারমেয়কে খেতে দেওয়ার জন্য বচসা করে। এমনকি বাড়িতে এসে তাঁকে এবং তাঁর নাবালিকা মেয়েকে মারধরও করে। এমনকি মহিলার হাতে কামড়ে মাংস তুলে নেয় অভিযুক্ত। ওই মহিলার আরোও অভিযোগ, ওই মহিলার পোষ্য সারমেয়কেও মারধর করা হয় এবং সারমেয়কে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার জন্য চাপও দেওয়া হয়।
ওই নির্যাতিতা মহিলার দাবি, তাঁর স্বামী এখানে থাকেন না। তাই তিনি তাঁর দুই মেয়েকে নিয়ে একাই ওই বাড়িতে থাকেন। তবে এই ঘটনার পর থেকে বেশ আতঙ্কে ভুগছেন তিনি।