সৌমেন সুর: ১৮৯৭ সালের জানুয়ারী মাস, রাইটার্স বিল্ডিং তখন ইংরেজদের হেড অফিস। এখানেই প্রথম ফিংগারপ্রিন্টের কার্যালয় স্থাপিত হয়। তবে এখনও পর্যন্ত এফবিআই-এর এডগার নূভারের কর্মশালাটি পৃথিবীর বৃহত্তম সংগ্রহশালা। এই সংস্থার বিপুল ফিংগারপ্রিন্ট সংগ্রহের জন্য আমেরিকায় আজও কোনও অবাঞ্ছিত ব্যক্তি সরকারি চাকরি, মর্যাদাপূর্ন পদ, গুরুত্বপূ্র্ন পদে ঢুকতে পারে না। এভাবেই ওরা নিজেদের দেশকে সুরক্ষিত রাখার জন্য ফিংগারপ্রিন্টকে বেছে নিয়েছে।
ফিংগারপ্রিন্ট নিয়ে নানা ঘটনা আজও অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে বর্ধমানের নিরুদ্দেশ রাজকুমার প্রতাপচাঁদের পরিচয় দিয়ে এক সন্ন্যাসী ১৪ বছর পরে ফিরে আসে। এই ঘটনা নিয়ো হুগলি আদালতে মামলা হয়। সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের বড়দা সঞ্জীবচন্দ্রের বর্ণনায় দেখি-- রাজার এক দুষ্ট আত্মীয় নিজের ছেলেকে বৃদ্ধ রাজার দত্তকরুপে গ্রহণ করেছে বলে নিজে বর্ধমান জমিদারির পুরোটাই কৌশলে হস্তগত করে।
এর বহুদিন পর রাজকুমার সন্ন্যাসীরুপে ফিরে এলে বর্ধমানের জমিদার ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সাহায্যে তাঁকে জেলে পাঠায়। শেষ জীবনটা সন্ন্যাসীকে খুব দুখ কষ্টের মধ্যে কাটাতে হয়। সেইসময় ফিংগারপ্রিন্ট সংগ্রহ ও শনাক্তকরন পদ্ধতি চালু থাকলে রাজকুমারকে এভাবে কেউ বিতাড়িত করতে পারতে না। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশই এখন নিজস্ব ব্যক্তিগত পরিচয় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ফিংগারপ্রিন্টের সাহায্য গ্রহণ করে। এটা অত্যন্ত গর্বের ব্যাপার যে, আজ থেকে একশো বছর আগে মহাকরনের একটি অংশ যে গবেষনা ও কর্মদ্যোগের সূচনা হয়েছিল, আজ তা বৃহৎ কর্মকাণ্ডে পরিণত হয়েছে। সারা পৃথিবীর অপরাধ বিজ্ঞানীরা এই বিজ্ঞানের উদ্ভাবনের জন্য ভারত তথা বাংলার কাছে ঋণ স্বীকার করেন।
তথ্যঋন: বিশ্বজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সওয়া ৬টা নাগাদ রাজ্যের একদা সচিবালয় মহাকরণে অগ্নিকান্ড (Fire at Writers Building)। জনমানসে রাইটার্স বিল্ডিং নামে খ্যাত এই সরকারি অফিসের একতলার একটি ঘরে আগুন লাগে। দমকলের তিনটি ইঞ্জিনের (Fire Tenders) প্রচেষ্টায় প্রায় একঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনাস্থলে ছিলেন কলকাতা পুলিসের সিপি বিনীত গোয়েল, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু এবং ডিজি দমকল রণবীর কুমার।
জানা গিয়েছে প্রথম তলার স্বরাষ্ট্র দফতরের একটি অফিস ঘরে লাগা এই আগুনে কম্পুটার এবং কিছু নথি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর বাইরে হতাহতের কোনও খবর নেই। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ফরেন্সিক তদন্ত হবে। এমনটাই জানান দমকল মন্ত্রী।
সংস্কারের স্বার্থে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রাজ্য প্রশাসনের একদা এই আঁতুড়ঘর। অধিকাংশ দফতর নবান্নে স্থানান্তরিত হলেও এখনও কয়েকটি দফতর রয়ে গিয়েছে কলকাতার বড় লালবাড়িতে।