
প্রচন্ড গরমের কারণে গত দু'দিনে মৃত্যু (Death) হয় দুই ভবঘুরের। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবার প্রচন্ড দাবদহের (Heatwave) শিকার হয়ে মৃত্য়ু হল এক মধ্য বয়স্কা ভবঘুরে (Wanderer) মহিলার। আপার বাগডোগরা (Bagdogra) গ্রাম পঞ্চায়েত মেন গেটের সামনে এই মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো এলাকা জুড়ে।
জানা গিয়েছে, এদিন সকালে কার্যালয় খুলতে এসে কর্মীদের নজরে আসে বারান্দায় এক মহিলা মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। কয়েক দিন ধরে নাজাহাল অবস্থায় জীবনযাপন করছেন সাধারণ মানুষ। দেখা গিয়েছে বেলা গড়াতেই ৪০ থেকে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা (Temperature) বেড়েই চলেছে। এর ফলে সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে রাস্তায় বসবাস করা ভবঘুরেরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই অজ্ঞাতপরিচয় ওই ভবঘুরে মহিলা গ্রাম পঞ্চায়েতের বারান্দায় রাত্রিবাস করতেন। এদিন মৃত অবস্থায় ওই মহিলাকে দেখতে পেয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মীরা প্রধানকে খবর দেন। খবর পেয়ে প্রধান সঞ্জীব সিনহা, ঘটনাস্থলে এসে বাগডোগরা থানায় খবর দেন। পুলিস এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়।
বৃহস্পতিবার ঠিক একইভাবে দাবদাহের শিকার হয়ে পানিঘাটা রোডে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল। এদিন ফের দাবদাহের কারণে বলি আরেক মহিলা। প্রধান সঞ্জীব সিনহা বিশ্ব উষ্ণায়নকেই দায়ী করেন এর জন্য। তিনি জানান মানুষ জেনে বুঝেই নিজেদের মৃত্যু ডেকে নিয়ে আসছেন। বৃক্ষরোপণের উপর অবিলম্বে জোর দেওয়া না হলে এই ধরনের দাবদহের কারণে মৃত্যুর সাক্ষী হতে হবে বলে তিনি সতর্ক করেন।
পুলিস কর্মীর উদ্যোগে তিন বছর পর ফের বাড়ি ফিরলেন ভবঘুরে (Wanderer) এক বৃদ্ধা। বনগাঁ (Bangaon) থানার ভবানীপুর এলাকায় ওই বৃদ্ধাকে দেখতে পান পুলিসকর্মী কাজল চ্যাটার্জী। তিনি কলকাতা পুলিসে কর্মরত৷ ডিউটি ছেড়ে বাড়ি ফেরার পথে নজরে পড়তেই উদ্যোগী হন তিনি৷ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ খবর করে বৃদ্ধার ঠিকানা উদ্ধার (Rescue) করে তাঁকে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করেন তিনি।
শনিবার সকালে খবর পেয়ে ওই বৃদ্ধাকে বনগাঁর ভবানীপুর কালিতলা এলাকায় বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আসেন তাঁর স্বামী আবদুল রহিম সহ পরিবারের সদস্যরা৷ বৃদ্ধার পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, প্রায় তিন বছর আগে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি৷ নাম জামেলা বিবি। বাড়ি ঝাড়খণ্ডের দেওঘর জেলার রামপুর৷ পরিবারের লোকেরা তাঁকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে থানায় মিসিং ডায়েরি করেছিলেন৷ কিন্তু কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি।
প্রায় বছরখানেক ধরে বনগাঁর বিভিন্ন এলাকাতে ওই মহিলাকে দেখতে পাওয়া যায় কিন্তু কেউ সেই ভাবে কখনো বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। কিছুদিন আগে বনগাঁর বাসিন্দা কলকাতা পুলিসে কর্মরত কাজল চ্যাটার্জীর চোখে বিষয়টি পড়ে। এরপর বনগাঁর ভবানীপুর এলাকাতে ওই মহিলাকে ঘুরতে দেখে এবং তৎক্ষণাৎ বিষয়টি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হ্যাম রেডিও যারা ভবঘুরে মানুষের উপর কাজ করে তাঁদেরকে জানান। তাঁরা খোঁজখবর নিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শনিবার পরিবারের হাতে ওই ভবঘুরে মহিলাকে তুলে দেওয়া হয়।
বৃদ্ধাকে খুঁজে পেয়ে তাঁর স্বামী আব্দুর রহিম বলেন, 'কিছুটা মানসিক সমস্যা ছিল। প্রায় তিন বছর ধরে খুঁজে বেড়াচ্ছি৷ বৃদ্ধাকে তাঁর বাড়ির লোকের হাতে তুলে দিতে পেরে খুশি পুলিস কর্মী কাজল চট্টোপাধ্যায়৷' কাজল চট্টোপাধ্যায় বলেন 'বৃদ্ধাকে দেখে খারাপ লাগছিল৷ তাই তাঁর বাড়ির লোকের খোঁজ খবর করে, তাঁর বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেওয়াটা নৈতিক দায়িত্ব মনে হয়েছে৷'