কালিয়াগঞ্জের (Kaliaganj) শিশু নিগ্রহ ও মৃত্যুর ঘটনায়, ফের প্রকাশ্যে রাজ্য এবং কেন্দ্র শিশু সুরক্ষা কমিশনের দ্বন্দ্ব (NCPCR)। রবিবার কালিয়াগঞ্জে মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন কেন্দ্রীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন। পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়াঙ্ক কানুনগো (Priyank Kanungo)। যার পরে কেন্দ্রের কমিশনকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন।
সূত্রের খবর, কালিয়াগঞ্জে নিগৃহীতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে শনিবারই রাজ্যে হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সুরক্ষা কমিশন। রাজ্যের পরপর তিলজলা, গাজলের শিশু নিগ্রহের পর, ফের কালিয়াগঞ্জে শিশু নিগ্রহের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র ও রাজ্যের সংঘাত চরমে।
রবিবার ওই মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে, প্রিয়াঙ্ক কানুনগো বলেন, 'এ রাজ্যে বারবার এমন ঘটনা ঘটছে, পশ্চিমবঙ্গে নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নেই। এ বিষয়ে প্রশাসনকে বাড়তি সতর্ক থাকা উচিত।' এরপরই রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন এনসিপিসিআরকে কটাক্ষ করে টুইট করেন, 'উনি যা করছেন সেটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। উনি কোনও কিছু না জেনেই পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন।' কেন্দ্রের এই কমিশনকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষও।
মামা বাড়ির সঙ্গে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির যোগ জানিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ (Whats App) মেসেজে সিবিআই তদন্তের দাবি। রাতারাতি সেই মেসেজ ঘনিষ্ঠদের পাঠিয়ে আত্মঘাতী (Suicide) দুর্গাপুরের (Durgapur) এক যুবক ও তাঁর পরিবার। রবিবার সকালে দুর্গাপুরের কুরুরিয়া ডাঙ্গা মিলনপল্লি এলাকার ঘটনা। পুলিস গিয়ে তাঁদের মৃতদেহ (Dead Body) উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিস জানিয়েছে, ওই বাড়ির কর্তা অর্থাৎ মৃত অমিত মণ্ডল, তাঁর স্ত্রী রুপা মণ্ডল সহ তাঁদের আট বছরের সন্তান নিমিত মণ্ডল ও চোদ্দ মাসের নিকিতা মণ্ডলের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিস। রবিবার পুলিস আরও জানায় যে, ওই দুই শিশু সন্তানকে শ্বাসরোধ করে খুন (Murder) করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে অমিতের মোবাইল অমিতের মামাবাড়ির অনেকের প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ দুর্নীতিতে যোগের কথা উল্লেখ আছে...থেকে রাতে স্থানীয় ও ঘনিষ্ঠদের কাছে ম্যাসেজ যায়। যেখানে অমিতের মামাবাড়ির অনেকের প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ দুর্নীতিতে যোগের কথা উল্লেখ আছে। রবিবার কুরুরিয়া ডাঙ্গাতে একই পরিবারের চার জনের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। যদিও গোটা ঘটনায় অমিতের মামা বাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে অমিতের শাশুড়ি। রবিবার তিনি বলেন, 'আমার জামাইকে ওঁর মামা বাড়ির লোকেরা অত্যাচার করত, অপমান করত, ওঁরাই আমার জামাইকে খুন করেছে।'
রবিবার অমিতের পরিবারের মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে বিশেষ ঝক্কি পোহাতে হয় পুলিসকে। অমিতের বাড়িতে স্থানীয়রা এসে ভিড় করে এবং পুলিসকে বাধা দেয়। এক স্থানীয়দের দাবি, 'অমিত ভালো ছেলে ছিল। কেন এমন ঘটনা ঘটাল সেটা পুলিস তদন্ত করুক।' দোষীদের উপযুক্ত সাজার দাবিতে এদিন স্থানীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
স্থানীয়দের দাবি, অমিতের পাঠানো মেসেজে লেখা ছিল অমিতের মামাবাড়িতে নাকি কোটি কোটি টাকা রয়েছে। এই দাবি করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির তদন্তের দাবি জানায় সে। অমিতের এমন হোয়াটস অ্যাপ ম্যাসেজ পাওয়া মাত্রই অমিতের আত্মীয়রা কুরুরিয়া ডাঙ্গার বাড়িতে এসে দেখেন অমিতের দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। তাঁর স্ত্রী রুপার দেহ বিছানায় পড়ে। আর মৃত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছে তাঁদের দুই সন্তান। এরপরই তাঁরা থানায় খবর দেন। দুর্গাপুর থানার পুলিস ঘটনাস্থলে এলে স্থানীয়রা অমিতের মামার বাড়ির বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারের দাবি জানান।
পুলিস সূত্রে দাবি, পূর্বেই মামা বাড়ির সঙ্গে অমিতের জমিজমা সংক্তান্ত বিষয়ে বিবাদ ছিল। সেখান থেকে কিছু ঘটলো নাকি, অমিতের পাঠানো মেসেজের আদতে কোনও ভিত্তি আছে কিনা সেটার তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু করছে পুলিস।
প্রথমে সামনে এসেছিল খড়দহ থানার পুলিসের (Khardaha Police) রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে লরি ও ট্রাক থেকে টাকা তোলার ছবি। এবার সরাসরি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠল খড়দহ থানার পুলিসের বিরুদ্ধে। শনিবার এমনই এক অভিযোগ করা হয় ব্যারাকপুর পুলিস কমিশনারের দফতরে।
অভিযোগ, সোদপুর সুখচর গীর্জা এলাকার বাসিন্দা এক যুবক রাস্তায় বিস্কুট কিনতে বেরিয়ে পুলিসের নিগ্রহের শিকার হন। এমনকি গোটা রাত থানার লকআপে কাটাতে হয় তাঁকে। শুধু তাই নয় যুবকের ও তাঁর পরিবারের মারাত্মক অভিযোগ, তাঁকে মারধর করা হয় এবং তাঁর থেকে আড়াই হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে নেওয়া হয়। এই অভিযোগ নিয়ে শনিবার ব্যারাকপুর পুলিস কমিশনারের দ্বারস্থ হয় সোদপুর সুখচর গীর্জা এলাকার পাঁজা পরিবার।
পরিবার সূত্রে দাবি, পাঁজা পরিবারের সন্তান সমন্বয় পাঁজা গত ১৪ তারিখ রাতে পাশের বাড়ি থেকে বিস্কুট আনতে বেরিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় খড়দহ থানার একটি টহলদারী অটোতে দুইজন সিভিক ভলেন্টিয়ার ও একজন অফিসার এসে পৌঁছায় ওই স্থানে। এরপরেই শুরু হয় নিগ্রহের পর্ব। সমন্বয়ের দাবি, অটোর মধ্যে থেকে কেউ তাঁর মুখে বারবার টর্চ মারতে থাকেন। তখন সে বলেন যে, আলো তাঁর মুখে না মেরে, রাস্তায় একটু আলো ফেললে খুব ভালো হয়। এই কথা শোনা মাত্রই ওই অটো থেকে দুই জন সিভিক ভলেন্টিয়ার বেরিয়ে আসেন এবং তার ঘাড় ধরে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করতে থাকেন। এর প্রতিবাদ করলে তাঁকে বলপূর্বক অটোতে তুলে নেন।
অভিযোগ, অটোতে একজন খাকি উর্দি পড়া অফিসার বসে ছিলেন। কিন্তু তিনি দুইজন সিভিক ভলেন্টিয়ারদের সংযত থাকতে বলেননি বরং নির্বাক দর্শক হয়ে সেদিন সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করছিলেন। এরপরেই তাঁকে অটোর মধ্যে চড় থাপ্পর মারে এবং অভব্য ভাষার ব্যবহার করে বলে দাবি সমন্বয়ের। এরইমধ্যে তাঁর মোবাইল থেকে আড়াই হাজার নগদ টাকা নিয়ে নেয় পুলিস বলে অভিযোগ।
সমন্বয়ের মা অভিযোগ জানিয়ে বলেন, তাঁর ছেলেকে ওই রাতে খড়দহ থানায় নিয়ে গিয়ে সারারাত লকআপে আটকে রাখে। থানার তরফে বলা হয়, সকালে ছেড়ে দেওয়া হবে তাঁর ছেলেকে। সকাল আটটার পর তাঁর স্বামী খড়দহ থানায় গেলে, থানার ডিউটি অফিসার বলে তাঁর ছেলেকে কোর্টে পাঠানো হবে। সমন্বয়ের মা, তাঁর ছেলেকে বিনা কারণে মারধর করে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে দেওয়া এবং মিথ্যা মামলা দেওয়ার পাশাপাশি পুলিস যে নির্মম অত্যাচার করেছে তাঁর সুবিচার চেয়েছেন অভিযোগ পত্রে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, থানার আধিকারিকেরা এই সমস্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দিয়ে রাতের অন্ধকারে সাধারণ মানুষদের উপর অন্যায় করছেন। রোজ তাঁদের বাড়ির সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিভিক এবং পুলিস অফিসার গাড়ি থেকে বেআইনিভাবে টাকা তুলছে। সেটারও প্রতিকার চেয়েছেন তিনি।