আজ আন্তর্জাতিক রূপান্তরকামী দিবস (International Transgender Day Of Visibility)। এই বিশেষ দিনে বৃহন্নলাদের পাশে দাঁড়াতে, তাঁদের সমাজে জায়গা করে দিতে, তাঁদের বিষয়ে সমাজকে এক বিশেষ বার্তা দিতে ভিডিও শেয়ার করেছেন বিশ্বসুন্দরী সুস্মিতা সেন (Sushmita Sen)। ২০২২ সালের অক্টোবরে সুস্মিতা সেন তাঁর নতুন সিরিজ 'তালি'-এর প্রথম লুক শেয়ার করেছিলেন। সেখানেই তাঁকে এক ভিন্ন অবতারে এক বৃহন্নলার চরিত্রে দেখা যায়। গৌরী সাওয়ান্তের জীবনকাহিনী তুলে ধরা হবে এই ওয়েব সিরিজে। সেই অবতার শেয়ার করার পর এবারে সুস্মিতা একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন, যেখানে কিছু প্রশ্ন করা হচ্ছে, যা সমাজের মানুষদের ভাবাতে সাহায্য করবে। কী এমন বলা হয়েছে ভিডিওতে?
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বৃহন্নলা গৌরী প্রশ্ন করেছেন যে, 'তালি কেন বাজানো হয়? কিছু টাকার জন্য? আপনাদের মনোযোগ নেওয়ার জন্য? রাগ দেখানোর জন্য়? তবে কী এর জন্যই তালি বাজবে?' এরপরেই ভিডিওতে সুস্মিতা সেন এর উত্তরে বলেন, 'না, এবারে তালি বাজবে সাহস বাড়ানোর জন্য। এক নতুন পরিচয় বানানোর জন্য।' অর্থাৎ সুস্মিতা বৃহন্নলাদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন। তাঁরা যে পুরো জীবন ধরে অস্তিত্বের লড়াই করে আসছেন, সেই লড়াইয়ে তাঁদের সঙ্গে থাকার কথা বলতে চেয়েছেন সুস্মিতা। তাই সুস্মিতা গৌরী সাওয়ান্তের সঙ্গে ভিডিওটি শেয়ার করেছেন ইনস্টাগ্রামে।
সুস্মিতা খুব শীঘ্রই ওয়েব সিরিজে গৌরীর জীবনকাহিনী তুলে ধরতে চলেছেন। তিনি ২৯ মার্চ জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর ডাবিং ও শ্যুটিং দুই-ই শেষ হয়েছে। এবার শুধু মুক্তির অপেক্ষা। 'তালি' নামক ওয়েব সিরিজটি গৌরী সাওয়ান্তের বায়োপিক।
তাঁরাও রক্ত-মাংসের মানুষ হলেও তাঁদেরকে অন্য রূপেই দেখা হয়, তাঁদের এক সমাজ থেকে কোথাও যেন একটা দূরে সরিয়েই রাখা হয়। হ্যাঁ, কথা বলা হচ্ছে, কিন্নরদের নিয়ে। তবে সাধারণ মানুষের থেকে তাঁদের আলাদা করে দেখা হলেও, তাঁদের আলাদা করে সরিয়ে রাখা হলেও তাঁরা কিন্তু এখন আর পিছিয়ে নেই। এর মধ্যেই একাধিক কিন্নরদের জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার খবর সামনে এসেছে। ফের একবার তেমনই খবর উঠে এল। জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ে একটি পার্লার খোলা হয়েছে, যার মালিক একজন কিন্নর ও যাঁরা এতে কাজ করেন তাঁরাও কিন্নর।
তবে এখন যুগ বদলাচ্ছে, ফলে তাঁদের কিন্তু মানুষ একঘরে করে দিচ্ছেন না। বরং তাঁদের পার্লারেই মুম্বইবাসী মনের খুশিতে যাচ্ছেন ও তাঁদের পাশে থেকেছেন। সূত্রের খবর, এই পার্লারের মালিকের নাম জৈনব। তিনি জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপটা এই মুহূর্তে খুবই প্রয়োজন ছিল। কিন্নর সমাজের মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে, তাঁদের স্বাবলম্বী করা অত্যন্ত দরকার। তাই তিনি এই উদ্যোগ নিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, এই পার্লারটি মোট ৭ জন কিন্নররা চালান। আর এটা একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক ও রোটারি ক্লাব অফ বম্বের সহযোগিতায় খোলা হয়েছে। তবে বলাই বাহুল্য, যেই মুহূর্তে রূপান্তরকামীদের সমাজ সবসময় পিছনে ফেলে রাখার চেষ্টা করা হয়, সেই মুহূর্তে জৈনবের এমন পদক্ষেপ সত্যিই প্রশংসনীয়।
রাজ্যের প্রায় ৪১ হাজার দুর্গাপুজো (Durga Puja) কমিটি রাজ্য সরকারের থেকে অনুদান (Puja Donation) পেয়েছে। কিন্তু ব্রাত্য রূপান্তরকামীদের (Transgender Puja) দুর্গাপুজো। তাই বঞ্চনার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণে গিয়ে আটক রূপান্তরকামী সংগঠনের একাধিক সদস্য। কালীঘাট থানা (kalighat PS) তাঁদের আটক করলেও কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু থানার বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন রূপান্তরকামীরা। চুলের মুঠি ধরে তাঁদের অনেককে মারা হয়েছে। এই অভিযোগে সরব রূপান্তরকামীরা। কিন্তু এই অভিযোগের পাল্টা কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি লালবাজার।\
জানা গিয়েছে, এই দুর্গাপুজো গত বছর রাজ্য সরকারের তরফ থেকে অনুদান পেয়েছিল। এবার কেন পেলেন না? সেই বঞ্চনার অভিযোগ জানাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ শুরুর আগেই রূপান্তরকামীদের আটক করে পুলিস। জানা গিয়েছে, বহু বছর ধরে দক্ষিণ কলকাতায় দুর্গা পুজো আয়োজন করছে রূপান্তরকামীদের একটি সংগঠন। কিন্তু ২০২১-র পুজোয় সরকারি অনুদানের তালিকায় তাঁদের সংগঠনের নাম ছিল। কিন্তু এবার বঞ্চিত তাঁরা।
এদিকে, এই পুজোয় যারা সরকারি অনুদান পেয়েছে, তাদের শুক্রবারের মধ্যে অডিট রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ। মূলত ৬০ হাজার টাকা কোন খাতে, কীভাবে খরচ হয়েছে? সেই হিসেব চেয়ে পাঠানো হয়েছে।