
১৮ দিন পর মঙ্গলবার কলকাতা (Kolkata police) লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার বামনঘাটা ব্রিজের নিচের খাল থেকে উদ্ধার ট্যাংরার যুবক ঝুন্নু রানার দেহ। নীল ড্রামে ভরা পচা-গলা অবস্থায় উদ্ধার হয় দেহটি। মঙ্গলবার সকাল ৯টা ১৫ নাগাদ দেহ উদ্ধার করে পুলিস। দেহ উদ্ধারের পর শনাক্তকরণের জন্য দেহটিকে নীলরতন সরকার (Nrs) মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। এরপর দেহটির ময়না তদন্ত হলে পুলিস মারফত জানা যায়, ঝুন্নুর মাথায় বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন আছে, ভারী কোনো অস্ত্র দিয়ে তাকে বারবার আঘাত করা হয়েছে বলে খবর।
মার্চ মাসের ৩ তারিখ থেকে নিখোঁজ ছিল ট্যাংরার যুবক ঝুন্নু রানা, ঝুন্নুর পরিবারের তরফে তদন্ত করে জানতে পারে ঝুন্নুকে সিসিটিভি ফুটেজে শেষ মার্চ মাসের ৫ তারিখ তার নব্য বন্ধু তিলজলার গোলাম রব্বানীর সঙ্গে বাইকে দেখা গিয়েছে। এরপর পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে থানা ঘেরাও করেন স্থানীয়রা। সেই সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিসের কাছে গোলামের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলে ঝুন্নুর পরিবার। ঝুন্নুর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গোলামের খোঁজ শুরু করে পুলিস। পরে ১৬ তারিখ দিল্লি থেকে গোলাম রব্বানী, তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী, ভাই-সহ আরও এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিস।
অভিযুক্তদের জেরা করে জানা যায়, গোলামের পরিবারই ঝুন্নুকে খুন করেছে। এরপর থেকে লাগাতারভাবে ঝুন্নুর দেহ খুঁজতে থাকে পুলিস। মঙ্গলবার বামনঘাটা ব্রিজের নিচের খাল থেকে উদ্ধার হয়েছে ট্যাংরার যুবক ঝুন্নু রানার দেহ।
ট্যাংরায়(tangra) খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের জেরা করে পুলিসের হাতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিস (kolkata police) সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে ধৃতদের জেরা করে পাওয়া গিয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। জানা গিয়েছে ঝুন্নুকে হাতুড়ি দিয়ে খুন করা হয়েছিল। পুলিস শনিবার তদন্তের জন্য যায় গোলাম রব্বানীর বাড়ি। শুক্রবার রব্বানীর বাড়িতে তল্লাশি করে জানা যায়, খুন করার পর রক্তের দাগ মুছতে দেওয়াল রঙ করলেও সিলিংয়ে পাওয়া গিয়েছে রক্তের দাগ। এমনই পুলিস সূত্রে খবর।
শনিবার জেরার পর পুলিস জানিয়েছে, অভিযুক্ত গোলাম রব্বানীর স্ত্রী আয়েশা নুর অন্তঃসত্ত্বা। নিজের স্ত্রীর সঙ্গে অশ্লীল আচরণের জন্য গোলাম, ঝুন্নুকে খুন করেন। শনিবার পুলিসের এক কর্তা বলেন, 'অভিযুক্ত গোলাম রব্বানী পুলিসকে জানিয়েছেন ঝুনু রানাকে খুন করে খালের জলে ফেলে দিয়েছে।' যদিও শনিবার ঝুন্নুর মৃতদেহের জন্য সায়েন্স সিটির কাছে একটি ঝিলে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিস। এখনও ঝুন্নুর মৃতদেহ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিস।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের দাবি মৃতদেহ পচন ধরে হালকা হয়ে ড্রাম থেকে বেরিয়ে যেতে পারে, শনিবারও ট্যাংরা এলাকা এক প্রকার থমথমে ছিল। পুলিস জানিয়েছে এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই গোলামের ভাই ইমরান রব্বানীকে গ্রেফতার করে পুলিস। মোট চার অভিযুক্তকে জেরা করে এই খুন সম্বন্ধে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করবে পুলিস। শুক্রবার সকালে বাকি তিন অভিযুক্তকে কোর্টে তোলা হলে বিচারক তাঁদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
ট্যাংরায় খুনের (Tangra Incident) ঘটনায় বৃহস্পতিবাবার রাতেই গ্রেফতার মূল অভিযুক্তর মামা রিয়াজ ও গোলাম রব্বানীর স্ত্রী। শুক্রবার শিয়ালদহ কোর্টে তোলা হবে তাঁদের। চলতি মাসে ৩ তারিখ থেকে নিখোঁজ ছিলেন ঝুনু রানা নামে এক বছর ৩৪-এর যুবক। পরিবারের অভিযোগ, বারবার পুলিসে অভিযোগ করা সত্ত্বেও অভিযোগ নিতে চায়নি পুলিস (kolkata police)। এরপর পরিবারের তরফে আত্মীয় ও পরিজনদের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের পর দেখা যায় ঝুন্নু রানার শেষ অবস্থান ছিল তিলজলা থানার (tiljala murder) গোলাম রব্বানীর বাড়ি। পরিবার সূত্রে খবর, ঝুন্নুর সঙ্গে দিন চারেক আগে বন্ধুত্ব হয় এই গোলাম রব্বানীর।
পুলিস সূত্রের খবর, এরপরেই ওই সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে ট্যাংরা থানায় গোলাম রব্বানীর পরিবারের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনে ঝুনুর পরিবার এবং চূড়ান্ত পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে ট্যাংরা থানা ঘেরাও করে স্থানীয়রা। স্থানীয়দের দাবি, 'বারংবার পুলিসকে অভিযোগ জানানোর পর পুলিস কেবল একটি জেনারেল ডায়রি গ্রহণ করে এবং দোলের পরে থানায় যোগাযোগ করতে বলে।'
স্থানীয় সূত্রের দাবি, 'এরপর ঝুন্নুর পরিবারের তরফে লালবাজারের গোয়েন্দা দফতরে যোগাযোগ করা হলে পুলিস নড়েচড়ে বসে। এরপরে তদন্ত প্রক্রিয়া আরও এগিয়ে গেলে ১৬ তারিখ দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয় গোলাম রব্বানীকে। বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে তাঁকে কলকাতায় আনা হয়।' বৃহস্পতিবার ঝুন্নুর ভাই বিক্রম রানা বলেন, 'আমার এক ভাই তিলজলায় নামি রেস্তোরায় কাজ করে, সেখানেই গোলামকে ঝুন্নুর সঙ্গে শেষবার দেখেন ওই ভাই, সেখান থেকেই আমরা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করি এবং পুলিসকে জানাই।'
ঘটনাক্রমে এক উচ্চপদস্থ পুলিস আধিকারিকের দাবি, অভিযুক্ত গোলাম রব্বানীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় ঝুন্নুকে সে-ই খুন করেছে, এছাড়া ওই ঘটনায় তদন্তকারী অফিসার বলেন, "তাদের জেরা করে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ৪ তারিখ ভোরে রাব্বানী, তাঁর স্ত্রী ও রাব্বানীর মামা রিকশা করে নীল ড্রামে দেহ ভরে ভোর ৫.৩০-৬টার মধ্যে দেহ তপসিয়া খালের ধারে ফেলে দিয়ে আসে।"
রব্বানীকে জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ সকাল থেকেই তিলজলা এলাকায় একটি ঝিলে ঝুন্নুর দেহের খোঁজে ডিএমজি নামিয়ে ঝুন্নুর মৃতদেহের উদ্ধারের তদন্ত চালাচ্ছে পুলিস। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন পুলিসের বড়কর্তা শঙ্খশুভ্র চক্রবর্তী।
খাস কলকাতা শহরে একের পর এক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। হরিদেবপুর-নারকেলডাঙার পর এবার ট্যাংরা। বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। মৃত বছর ৩৫-এর বান্টি হালদার।
মৃতের স্ত্রী জানান, ট্যাংরা এলাকায় তাঁদের একটি দোকান আছে। দোকানের ভিতরে ছিলেন তাঁর স্বামী। দোকান লাগোয়া বিদ্যুতের খুঁটিতে আগুন লাগে। এরপরেই তাঁর স্বামী বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে দোকানের ভিতরে আগুন ঢুকে যায়। সেখান থেকে গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন লাগে। জল ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন বান্টি ও দোকানের অন্যান্য কর্মীরা। কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে আসছিল না। তখনই দোকান থেকে বেরোতে গিয়ে বিদ্যুতের খুঁটিতে তড়িদাহত হন তিনি। মৃতের স্ত্রীর অভিযোগ, বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানেও ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। তিনি অভিযোগ তোলেন বিদ্যুত্ দফতর ও বাজার কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, মাস দেড়েক আগে ওই বিদ্যুতের খুঁটি বসানো হয়। সেই পোস্টের গায়ে রয়েছে একটি বক্স। সেই বক্সেই আচমকা আগুন লাগে। এরপর এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, সঠিক সময়ে চিকিৎসা সম্ভব হলে হয়তো তাঁকে বাঁচানো যেত।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ ই জুন থেকে শুরু করে রাজ্যে বারবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনার দায় কার? আর কত প্রাণ গেলে টনক নড়বে প্রশাসনের? প্রশ্ন এলাকাবাসীর।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: মৎস্যপ্রেমী বাঙালিরা (Fish Lover Bengali) ট্যাংরা মাছের নানান পদের প্রতি খুবই অনুরক্ত। বড়ি দিয়ে ট্যাংরা মাছের ঝোল, সর্ষে পোস্ত, ট্যাংরা মাছের রসা ইত্যাদি পদ তো অনেক খেয়েছেন, এবার কাঁচা ট্যাংরার ঝাল খেয়ে দেখুন, ভালো লাগবে। গরম সাদা ভাতের সঙ্গে জমে যাবে।
কাঁচা ট্যাংরার ঝাল তৈরির পদ্ধতি---পাঁচশো গ্রাম ট্যাংরা মাছ ভালো করে জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। একটি পাত্রে মাছগুলো রেখে তার মধ্যে আন্দাজমতো নুন, হলুদ ও কাঁচা সর্ষের তেল ছড়িয়ে দিয়ে হাতের সাহায্যে ভালো করে মাছের গায়ে মাখিয়ে নিন। ২৫০ গ্রাম আলুর খোসা ছাড়িয়ে আঙুলের শেপে কেটে নিন। কড়াই আঁচে বসিয়ে আন্দাজমতো সর্ষের তেল গরম করে আলুগুলো ভেজে তুলে তেল ঝরিয়ে নিয়ে আলাদা করে রাখুন। কড়াই আঁচে বসিয়ে ৪ টেবিল চামচ সর্ষের তেল গরম করে তার মধ্যে হাফ চা চামচ কালো জিরাফোড়ন দিন। এবার ২৫০ গ্রাম পেঁয়াজের স্লাইস দিয়ে হাল্কা বাদামি করে ভেজে নিন। ৪ টে বড় টমেটোর কুচি দিয়ে নেড়ে ভালো করে কষে নিন। টমেটো গলে এলে ওর মধ্যে এক কাপ পেঁয়াজ বাটা, এক টেবিল চামচ আদা বাটা ও এক টেবিল চামচ রসুন বাটা দিয়ে খুব ভালো করে নেড়ে কষে নিন।
এক চা চামচ শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো ও আন্দাজমতো নুন দিন। নিভু আঁচে ক্রমাগত নেড়ে কষতে থাকুন, যতক্ষণ না তেল ছাড়ছে। তেল ছাড়লে ওর মধ্যে ভাজা আলুগুলো দিয়ে নেড়ে মেশান। আন্দাজমতো চিনি দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার ট্যাংরা মাছগুলো দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। ছোট এক মুঠো ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে দিয়ে ঢাকনা বন্ধ করে নিভূ আঁচে রান্না করুন। কিছুক্ষণ বাদে ঢাকনা খুলে দেখুন। উপর থেকে ৬ টা চেরা কাঁচালঙ্কা ছড়িয়ে দিয়ে আরও কিছুক্ষণ রান্না করুন। মাছ পেকে গেলে উপর থেকে এক টেবিল চামচ কাঁচা সর্ষের তেল ছড়িয়ে দিয়ে আঁচ থেকে নামিয়ে নিন। গরম ভাতের সাথে কাঁচা ট্যাংরার ঝাল পরিবেশন করুন।
জোর করে ফ্ল্যাট দখল ঘিরে মারধরের অভিযোগ। ঘটনায় গ্রেফতার (arrest) করা হয়েছে মহঃ জাহিদ নামে একজনকে। এখনও আতঙ্কিত আক্রান্ত বাড়ির মালিকের পরিবার। ঘটনাটি খাস কলকাতার ট্যাংরা (tangra) ৩৩ নং ডিসি দে রোডের। প্রোমোটিং বিবাদকে কেন্দ্র করে শুরু হয় প্রথমে বচসা, এরপর তা মারামারিতে পৌঁছয়। ঘটনায় ট্যাংরা থানায় (tangra police station) অভিযোগ দায়ের করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মূলত ফ্ল্যাট দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় গণ্ডগোল। বাড়ির মালিকের নাম হাসিনা মমতাজ। অভিযোগ, তাঁর বাড়ি দখল নিতে যায় কাউন্সিলরের অনুগামীরা। মূল অভিযুক্ত মহঃ জাহিদ, মহঃ মুক্তাগ, মহঃ জামিল, মহঃ আলি, মহঃ আব্বাস। এছাড়াও পরিবারের অভিযোগ, কাউন্সিলরের ইন্ধনে এই সব দুষ্কৃতী আজ তাঁদের ওপর চড়াও হয়। মারধরও করেছে। কমপক্ষে ১০ জন আহত। তবে গুরুতর আহত সাবির আহমেদ। এর আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। ট্যাংরা থানায় বারবার জানিয়েও পুলিসের কোনও সহযোগিতা পাননি তাঁরা। হাসিনা মমতাজ জানান, তালা ভেঙে তাঁর ফ্ল্যাট দখল নিচ্ছে জাহিদ ও তাঁর পরিবার।
এদিন ধৃত জাহিদকে কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়।
অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে ফের অগ্নিকাণ্ড ট্যাংরায়। রবিবার ছুটির দিনে ২৫ ক্রিস্টোফার রোডের একটি কারখানায় আগুন লাগে। খবর পেয়ে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। কিন্তু ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় দমকলের পৌঁছতে আগুন নেভানোর কাজে তাদের বেগ পেতে হয়। ফলে আগুনও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
পরিস্থিতি দেখে স্থানীয় বহু মানুষ আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। আশপাশের বহুতলের ওভারহেড ট্যাঙ্ক থেকেও জল ছুঁড়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হয়। পরে দমকলের আরও দুটি ইঞ্জিন আসে। কিন্তু তা পর্যাপ্ত না হওয়ায় এলাকার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এন্টালির বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা ঘটনাস্থলে এলে তাঁকে ঘিরেও বাসিন্দারা ক্ষোভ উগরে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মুহূর্তের মধ্যে কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা এলাকা। শিয়ালদহ থেকেও ধোঁয়া দেখতে পাওয়া যায়। মাঝে মধ্যে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের আওয়াজে আতঙ্ক বেড়ে যায়। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কীভাবে আগুন লাগল, তা পরিষ্কার নয়। তবে প্রাথমিক তদন্তে দমকলের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই এই আগুন। দাহ্য পদার্থ থাকায় তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ফলে আশপাশের বাড়িতেও আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা। অবশেষে অবশ্য দশটি ইঞ্জিনের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ট্যাংরায় চামড়ার গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গোডাউন। অতিক্রান্ত হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ ঘণ্টা। এখনও কয়েকটি পকেটে দেখা যাচ্ছে আগুন। ধোঁয়া উঠছে চারিদিক থেকে। ফলে পার্শ্ববর্তী এলাকায় যে বিল্ডিংগুলি রয়েছে, তা এর জেরে ক্রমশ দুর্বল হয়ে যাচ্ছে, এমনটাই জানাচ্ছেন বিল্ডিংয়ে বসবাসকারী মানুষজন। শুধু তাই নয়, স্থানীয়রা ক্ষতিপূরণেরও দাবি জানাচ্ছেন রাজ্য সরকারের কাছে।
যদিও ঘটনার পর থেকেই পুলিস ও দমকলের আধিকারিকরা গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছেন। যাতে আর কোনওভাবে আগুন না লাগে বা পকেট আগুন আবার যাতে ছড়িয়ে না পড়ে। তবে আশঙ্কা রয়েছে বিল্ডিং ভেঙে পড়ার। পাশাপাশি আশপাশের এলাকার মানুষদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট এলাকায় আপতকালীন হিসেবে। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও আতঙ্কিত এলাকাবাসী।
প্রসঙ্গত, শনিবার সন্ধ্যায় ট্যাংরায় চামড়ার গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আশপাশে প্রচুর বস্তি এবং প্রচুর মানুষের বসবাস হওয়ায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বস্তিতে গ্যাস সিলিন্ডার থাকায় তাঁদের আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়। বহু মানুষ এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে যান। অনেকে বাড়ির ছাদে উঠে পড়েন। তবে এদিন দমকলের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা যায় এলাকায়। প্রায় সবারই ক্ষোভ, দমকল এসেছে অনেক দেরিতে। প্রায় দুঘণ্টা পরে এসেছে দমকল। ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রয়োজন অনুযায়ী জল মেলেনি। মেলেনি দমকলের পর্যাপ্ত গাড়ি। ফলে চোখের সামনেই আগুনের লেলিহান শিখা আর ধোঁয়া দেখে একইসঙ্গে আতঙ্ক এবং ক্ষোভ দুইই বেড়ে যায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি একটি ছাদে উঠে দমকলকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে আগুন নেভানোর কাজ পরিচালনা করেন।
ট্যাংরার বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড নিয়ে খোঁজ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, ফিরহাদ হাকিমকে ফোন করে তিনি সামগ্রিক পরিস্থিতির খোঁজ নিয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যায় ট্যাংরায় ওই চামড়ার গুদামে ভয়াবহ আগুন লাগে। আশপাশে প্রচুর বস্তি এবং প্রচুর মানুষের বসবাস হওয়ায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর, রবিবার সকালে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে একটি হাই পাওয়ার কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন। দমকল, পুলিস ও কলকাতা পুরসভাকে নিয়ে এই হাই পাওয়ার কমিটি তৈরি করা হবে। কলকাতা শহরে ঘিঞ্জি এলাকায় কতগুলি কারখানা বা গোডাউন রয়েছে, তার একটি তালিকা তৈরি করা হবে। দমকলের অনুমতি রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে। এই কারখানাগুলিতে আগুন লাগলে তার ভয়াবহতা কতটা হতে পারে, তাও খতিয়ে দেখবে এই কমিটি। সেই অনুযায়ী একটি রিপোর্ট তৈরি করা হবে। ফায়ার সেফটি কমিটি তৈরি করা হবে।
এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কলকাতার পুলিস কমিশনার বলেন, কী থেকে আগুন লাগল, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। ফরেনসিক টিমের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই জানা যাবে প্রকৃত কারণ। আগুন নেভানোর কাজ এখনও জারি রয়েছে। কোথাও কোথাও আগুনের ফুলকি দেখা যাচ্ছে। যদিও এখন তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনা সম্ভব হয়েছে। কুলিং প্রসেস চালু রয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে জরুরি নথিপত্রের বিষয়টি দেখা হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, এই কারখানায় রেক্সিন জাতীয় জিনিস ছিল। ছিল প্রচুর দাহ্য পদার্থ। তার উপর ঘিঞ্জি এলাকা হাওয়ায় দমকলকে ঢুকতে বেগ পেতে হয়েছে। এর ফলে আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ঘটনাস্থলে যায় ফরেনসিক টিম।
ড্রাগের নেশা সর্বনাশা। সেই নেশায় অনেকেই হারিয়ে ফেলেন নিজের জীবন। বহু স্বপ্ন অচিরেই নষ্ট হয়ে যায় মাদকের নেশায়। সবাই সব জানে, তবুও পুলিসের নাকের ডগা দিয়ে রমরমিয়ে চলছে মাদকদ্রব্যের কারবার।
ফের শহর কলকাতায় মাদকচক্রের পর্দা ফাঁস। বিভিন্ন রকম মাদকসহ ট্যাংরা থেকে কলকাতা পুলিসের এসটিএফ-এর হাতে গ্রেফতার হলেন ২ ব্যক্তি। ধৃতদের পরিচয় জানিয়েছেন তদন্তকারী দল এসটিএফ। ধৃতদের একজন বছর ৩৬-এর আমজাদ খান। আমজাদ রাজস্থানের ঝালওয়ারের বাসিন্দা। অপরজন বচর ৪৬-এর পীযূষ মণ্ডল ওরফে নিধুর বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁয়। এদের বিরুদ্ধে মাদক বিরোধী আইনের একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
এসটিএফ সূত্রে এই মাদক চক্রের খবর পেয়েছিলেন গোয়েন্দারা। তার উপর ভিত্তি করে বৃহস্পতিবার অভিযান চালান তদন্তকারীরা। দায়িত্বে ছিল ট্যাংরা থানার পুলিস। তদন্তে নেমে উদ্ধার হয় প্রচুর নিষিদ্ধ মাদক। ১.০৪৩ কেজি অ্যাম্ফিটেরামাইন, ১.০৪৫ কেজি মিথাকালোন এবং ১৬৪ গ্রাম নাম অজানা মাদক। পরীক্ষানিরীক্ষা করে এসটিএফ-এর প্রাথমিক অনুমান, আন্তর্জাতিক কালো বাজারে এসব মাদকের মোট দাম ১০ কোটিরও বেশি।
বৃহস্পতিবার রাত ১০ টা নাগাদ ধৃতদের গ্রেফতার করে পুলিস। শুক্রবার তাদের আদালতে তোলা হয়। এই ঘটনার পর ট্যাংরা এলাকায় পুলিসি নজরদারি আরও কড়াকড়ি করা হয়েছে।
কিন্তু কীভাবে মাদকচক্রীরা তাদের জাল ছড়াচ্ছে? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।