ফের বাঘের পর্যাপ্ত খাওয়ারের জন্য ১০০ টি হরিণ (Deer) ছাড়া হবে সুন্দরবনের (Sundarbans) জঙ্গলে। ইতিমধ্যেই বিভূতিভূষণ বণ্যপ্রাণী অভয়ারণ্য থেকে ১০০ টি হরিণ নিয়ে আসা হয়েছে। হরিণগুলিকে রাখা হয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের দোবাঁকি ক্যাম্পে।
বন দফতরেরে এক আধিকারিক জানান, ম্যানগ্রোভের জঙ্গলের মধ্যে রেখে হরিণদেরকে দেখভাল করছেন বনকর্মীরা। মাস দুয়েক সুন্দরবনের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পর এই হরিণগুলিকে ছেড়ে দেওয়া হবে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে। তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনে বাঘের পরিমাণ বাড়তে পারে। যার ফলে তাঁদের পর্যাপ্ত খাওয়ারের প্রয়োজন। তাই মূলত বাঘের খাওয়ার হিসেবেই হরিণগুলিকে জঙ্গলে ছাড়ার সিদ্ধান্ত বন দফতরের।
এই বিষয়ে এক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, বন দফতরের এই উদ্যোগটি খুবই সুন্দর। সুন্দরবনের যে খাদ্য পিরামিড আছে সেই পিরামিড অনুযায়ী খাদ্যস্তর গুলি সাজানো থাকে। সেইগুলি হয়তো বনবিভাগ থেকে রিসার্চ করে দেখেছে। যদি হরিণের পরিমাণ বাড়ানো যায় তাহলে বাঘের খাওয়ারের অসুবিধা হবে না। যদিও এখন এগুলি সবই গবেষণামূলক কাজ। তবে বনবিভাগের এই উদ্যোগের জন্য অনেক অভিনন্দন।
আবারও বাঘের হামলায় মৃত্যু (death) হল এক মৎস্যজীবীর। ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলীর (Kultali)। মৃত্যুর খবরে শোকাহত পরিবার সহ এলাকাবাসী।
জানা যায়, গত সোমবার কুলতলির দেউলবাড়ী দেবীপুর অঞ্চলের কাঁটামারি এলাকা থেকে দুটি নৌকা করে সাত মৎস্যজীবী রওনা দিয়েছিলেন সুন্দরবনের (Sundarbans) নদী খাড়িতে মাছ, কাঁকড়া ধরার উদ্দেশ্যে। এরপর শনিবার সকাল ৬ টা নাগাদ বিদ্যা নদীর চড়ে নৌকাতে বসে মুখ ধুচ্ছিলেন মৎস্যজীবী দিলীপ সরদার। হঠাৎই ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের মধ্যে থেকে একটি বাঘ (tiger) নৌকার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। দিলীপ সরদারের ঘাড়ে কামড় দিয়ে বিদ্যা নদীর জলে ঝাঁপায়। তত্ক্ষণাত্ই মৎস্যজীবী দিলীপ সরদারের পাঁচ সঙ্গী রঘুনাথ সরদার, বিপুল সরদার, শ্যামল মণ্ডল, মানবেন্দ্র হালদার ও হৃদয় সরদার ঝাঁপিয়ে পড়েন নদীতে। ততক্ষণে বাঘটি মৎস্যজীবী দিলীপ সরদারকে নিয়ে নদীর পাড়ে সাঁতরে উঠে গিয়েছে। এরপরেই দিলীপ সরদারকে বাঁচানোর জন্য চলে বাঘে মানুষের লড়াই। অবশেষে বাঘটি হার মেনে মৎস্যজীবী দিলীপ সরদারকে ছেড়ে জঙ্গলের মধ্যে পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও মাথায় গুরুতর আঘাতের দরুন মৃত্যু হয় আহত মৎস্যজীবীর।
এরপরই দিলীপ সরদারের নিথর দেহ নিয়ে দেউলবাড়ী দেবীপুর অঞ্চলের কাটামারির গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন মৎস্যজীবীরা। এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।