একদিকে শাসকের ব্রিগেড, অন্যদিকে পদ্মশিবিরের ন্যাজাট। রাজ্যে একই দিনে দুই হাইভোল্টেজ ইভেন্ট। সন্দেশখালি ইস্যুতে কোনদিকে পাল্লা ভারী থাকবে, তা নিয়ে নজর ছিল সবপক্ষের। কিন্তু রবিবার সকাল থেকে দেখা গেল ধামাখালি, ভোলাখালি সহ বিভিন্ন ফেরিঘাট ঢেকেছে পদ্মের পতাকায়। লঞ্চ বোঝাই করে মানুষও সকাল সকাল রওনা দিয়েছেন বিজেপি সভায় যোগ দিতে। সভায় বক্তব্যের শুরুতেই সন্দেশখালির লড়াইকে কুর্ণিশ, পাশে থাকার বার্তা শুভেন্দু-সুকান্তদের। তাঁদের সঙ্গে গলা মেলালেন সন্দেশখালির বাসিন্দারা।
মহিলাদের আন্দোলন, প্রতিবাদ আর বহু অপেক্ষার পর গ্রেফতার সন্দেশখালির একদা ত্রাস শাহজাহান-শিবু-উত্তমরা। যাদের নামে এক সময় কাঁপত সন্দেশখালি, আজ তারাই গরাদের ওপারে। বীরভূমের কেষ্টর সঙ্গে তুলনা করে কটাক্ষ সুকান্ত মজুমদারের।
শিবু-উত্তম-শাহজাহান গারদে। সন্দেশখালির বাসিন্দারা বলছেন, এখন তাঁদের উপর জোর করার লোক নেই। ঘরে বসে আছেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি খোদ। ব্রিগেডের গর্জনে না গিয়ে বাড়িতেই সন্দেশখালির ১৭১ নম্বর বুথের তৃণমূল সভাপতি মন্টু মাইতি। সিপিএম থেকে আসা শিবু-উত্তম-শাহজাহানরাই তৃণমূল শেষ করেছে। তিনি বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সিএন-এর ক্যামেরার সামনে।
পুলিসের ধস্তাধস্তিতে অসুস্থ সুকান্ত মজুমদার। বিজেপি রাজ্য় সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে গাড়ি থেকে ঠেলে ফেলার অভিযোগ উঠেছে পুলিসের বিরুদ্ধে। জ্ঞান হারিয়েছেন সুকান্ত। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাঁকে।
জানা গিয়েছে, টাকিতে পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় বিজেপি কর্মীদের। যার জেরে পুলিসের সঙ্গে শুরু হয় তুমুল বচসা। গাড়ির উপরে উঠে প্রতিবাদ শুরু করে সুকান্তর। সেই সময় পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধাস্তিতে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান তিনি। এরপর জ্ঞান হারিয়ে পুলিসের গাড়ির বনেটেই শুয়ে পড়ে সুকান্ত মজুমদার। গেস্টহাউসের সামনেই শুরু হয় পুলিসের লাঠিচার্জ।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সন্দেশখালি থানা এলাকাজুড়ে জারি থাকা ১৪৪ ধারা খারিজ করা হয়েছে। তারপরেও প্রশাসনের তরফ থেকে সন্দেশখালি থানার অন্তর্গত উত্তেজনা প্রবণ এলাকাগুলিতে নতুন করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সমস্ত ফেরিঘাটগুলি রয়েছে ১৪৪ ধারার আওতায়।
বুধবার বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সন্দেশখালি আসছেন। গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার বসিরহাটের এসপি অফিসের বাইরে গভীর রাত পর্যন্ত ছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শেষে পুলিসের হাতে আটক হয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। যদিও পরে ছেড়ে দেওয়া হয় সুকান্ত মজুমদারকে। আজ টাকি থেকে ফের সন্দেশ খালির উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। কিন্তু ফেরিঘাট গুলো ১৪৪ ধারা জারি হওয়ায়, আদৌ তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হবে কিনা সেটাই দেখার।
শনিবার ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা তথা রাজনীতিবিদ মিঠুন চক্রবর্তী। বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, নিউরোলজি, কার্ডিয়োলজি এবং গ্যাস্ট্রোএনট্রোলজি বিভাগের চিকিত্সকদের নিয়ে একটি মেডিক্যাল দল গঠন করা হয়েছে অভিনেতার চিকিৎসার জন্য। এই মেডিক্যাল দলের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন টলিউডের মহাগুরু।
জানা যাচ্ছে, অভিনেতা চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। ধীরে ধীরে কথাও বলছেন চিকিৎসকদের সাথে। হাসপাতাল সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, শনিবার রাতে পর্যাপ্ত ঘুমিয়েছেন অভিনেতা, তাই আপাতত বিপদমুক্ত মিঠুন, একথা বলাই যায়।
কার্যত, এদিন হাসপাতাল চত্বরে দেখা গেল বহু বিশিষ্ট জনের আসা যাওয়া। সকলের প্রিয় অভিনেতাকে দেখতে আসছেন তাঁর বহু শুভাকাঙ্খী। এদিন হাসপাতালে আসেন পরিচালক অতনু রায়চৌধুরী। জানান, ফুরফুরে মেজাজেই দেখলেন মিঠুন চক্রবর্তীকে।
হাসপাতালে মিঠুনকে দেখতে আসেন সিপিএম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর স্ত্রী রমলা চক্রবর্তীও। হাসপাতালে আসেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যও। তিনিও বললেন, উনি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। এমনকি, অনেক পুরোনো রাজনৈতিক গল্পেও যে তাঁরা কিছুক্ষণ মশগুল হয়েছিলেন, তাও জানান শমীক।
এছাড়াও হাসপাতালে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। তিনি ভালো আছেন জেনেও, ওই যে বিপদে পাশে থাকার, দেখা দিয়ে কয়েক মিনিট কথা বলে আসার টান- সেই টানেই মিঠুনকে দেখতে সুকান্ত মজুমদার আসেন হাসপাতালে। হাসপাতালে বেশ খোশ মেজাজে সুকান্তর সঙ্গে গল্পও করতে দেখা যায় মিঠুন চক্রবর্তীকে।
রামমন্দির উদ্বোধনের দিন ২২ জানুয়ারি ছুটি ঘোষণার দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বাংলার নতুন প্রজন্ম যাতে ভারতের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠতে পারে সে কথা মাথায় রেখে তাঁর এই চিঠি। অন্যদিকে, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ওইদিন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের জন্য অর্ধদিবস ছুটি ঘোষণা করেছে।
মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে সুকান্তর দাবি, “চলতি বছরের জন্য আপনার বিশেষ অধিকারে একটি বাড়তি ছুটি উপহার দিন রাজ্যবাসীকে। এ বিষয়ে আমি আপনার সদুত্তর প্রার্থনা করি।” বিজেপির রাজ্য সভাপতি চিঠিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লিখেছেন, “পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমি লিখিত অনুরোধ করেছি যেন উনি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে আগামী ২২ জানুয়ারি ২০২৪-এর পবিত্র দিনে সরকারিভাবে ছুটি ঘোষণা করেন। এর ফলে বাংলার নতুন প্রজন্ম ভারতের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠতে পারবে এবং তাদের মন ভারতীয় গরিমায় প্লাবিত হবে।”
সন্দেশখালিকাণ্ডের পর থেকে বেপাত্তা শেখ শাহজাহান। রাজ্য পুলিস কেন তাঁকে গ্রেফতার করতে পারছে না, তা নিয়েই উঠছে নানা প্রশ্ন। আর সে কারণেই রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আজ, বৃহস্পতিবার ন্যাজাট থানা ঘেরাও করার ডাক দিয়েছেন। কিন্তু সকাল থেকেই বাসন্তী হাইওয়ের উপরে এবং হাসনাবাদ-এর ন্যাজাট রোডের উপরে নাকা চেকিং করছে পুলিস। এককথায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিস। সূত্রের খবর, পুলিস যেহেতু থানা ঘেরাও করার অনুমতি দেয়নি, সেক্ষেত্রে বেআইনি জমায়েত রুখতেই এমন তল্লাশি। রাস্তার উপরে ব্যারিকেট দিয়ে প্রতিটি গাড়ি থামিয়ে তার মধ্যে কোনও বিজেপি কর্মী কিংবা রাজনৈতিক দলের কর্মী এলাকার ভিতরে ঢুকছে কিনা তার দিকেই নজর রাখছে প্রশাসন।
পাশাপাশি ন্যাজাট থানার রাস্তাগুলোতে ব্যারিকেড করে রাখা হয়েছে পুলিসের তরফে। ইতিমধ্যেই ন্যাজাট থানার এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। মনে করা হচ্ছে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে থানায় ঢোকার আগেই আটকে দেওয়া হতে পারে। সেকারণেই এত কড়া নিরাপত্তা।
শুক্রবার সাতসকালে বেনজির নৈরাজ্য দেখেছে বাংলা। সন্দেশখালিতে রেশন দুর্নীতি-কাণ্ডের তদন্তে গিয়ে রক্তাক্ত, আক্রান্ত ইডি। মারধর থেকে ভাঙচুর করা হয় সংবাদ মাধ্যমের গাড়িও। এবার এই ঘটনায় রাজ্যপালের দ্বারস্থ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রবিবার সকাল ১০টা ১২ মিনিট নাগাদ রাজভবনে পৌঁছন সুকান্ত। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে দু'জনের মধ্যে আলোচনা হয় বলেই সূত্রের খবর।
রাজভবন থেকে বেরিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দেগে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ইডি আধিকারিকদের উপর হামলায় অভিযুক্ত শাহজাহানকে গ্রেফতারির জন্য রাজ্যের নির্দেশ নেই। মুখ্যমন্ত্রী একসময় পাশে বসিয়ে তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন।
এরপরই রোহিঙ্গা যোগের অভিযোগ তুলে NRC লাগুর পক্ষে সওয়াল করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানান সুকান্ত।
সন্দেশখালির ঘটনার পরই সরব হতে দেখা গিয়েছে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। শনিবার রাজ্য পুলিসের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে রাজভবন। বিষয়টির ওপর নজর রাখা হচ্ছে বলেও জানান রাজ্যপাল। রাজভবনের পিস রুমেও আসে শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতারের নির্দেশও দিয়েছেন রাজ্যপাল। যা রাজ্যপালকে ধন্যবাদ জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সব মিলিয়ে এই পরিস্থিতিতে কড়া অবস্থান নিচ্ছে রাজভবন তা বলাই বাহুল্য।
বিজেপির যুব মোর্চার সংকল্প যাত্রায় উত্তেজনা। রবিবার ডানকুনিতে পুলিসি বাধার মুখে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। বিজেপির বাইক র্যালি ঘিরে কার্যত ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর নেতৃত্বেই চলছিল এই মিছিল। ব্যারিকেড করে পুলিস পথ আটকানোর চেষ্টা করে। বিজেপির কর্মসূচিতে পুলিসের লাঠিচার্জে আক্রান্ত হন সিএন-এর সাংবাদিকও।
পুলিসি বাধার মুখে সুকান্ত মজুমদার জানান, 'কোন আইনে আমাদের আটকানো হচ্ছে। আমাদের কর্মীদের বাইকের চাবি খুলে দিয়েছে। পায়ে হেঁটে প্রয়োজনে মিছিল সফল করব। তৃণমূলের ক্যাডাদের মতো আচরণ করছে পুলিস।' বাধার মুখে পড়েন বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়ও।
ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালান বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা। তবে পুলিসের দাবি, অনুমতি না নিয়ে এই মিছিল করা হচ্ছে। বিজেপির কর্মীদের দাবি, সিপিএম-এর ব্রিগেড চলছে। দলে দলে মিছিল করে ব্রিগেডের ময়দানে যাচ্ছে। তাদের আটকানো হচ্ছেনা। কেবল বিজেপিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
সংসদ-কাণ্ডে মূল চক্রী ললিত ঝায়ের সঙ্গে বং কানেকশন খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। এবার তাঁকে বাংলার শাসক দলের যুব শাখার পদাধিকারী বলে দাবি করলেন শুভেন্দু অধিকারী। সুকান্ত মজুমদারের পর শুভেন্দু অধিকারীর দাবি ঘিরে আরও চড়ছে বঙ্গ রাজনীতির পারদ। শুক্রবার বিরোধী দলনেতা বলেন, ললিত ঝা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের পদাধিকারী। তাপস রায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। বরানগর-উত্তর কলকাতায় তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক কর্মসূচিতে থাকে ললিত, দাবি শুভেন্দুর। তোলামূলীদের রাজত্বে বাংলা দেশ-বিরোধীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে, অভিযোগ তাঁর। শুক্রবার ঠিক কী বলেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
শুক্রবার সকাল হতেই ললিত-কাণ্ডে শাসক দলের প্রতি সুর চড়ান শুভেন্দু। বিজেপি নেতা অমিত মালব্যের করা একটি এক্স পোস্ট শেয়ারও করেন বিরোধী দলনেতা। তিনি লেখেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সফলভাবে বাংলায় এমন একটা বাস্তুতন্ত্র তৈরি করেছেন যেখানে শহুরে নকশাল, টুকরে টুকরে গ্যাংয়ের অবাধ বিচরণ। অনুপ্রবেশকারী, বেআইনি উদ্বাস্তুরা এ রাজ্যে সহজেই নাগরিক হয়ে যাচ্ছেন। যাঁরা দেশবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত, তাঁদের স্বর্গরাজ্য বাংলা, এভাবেই তোপ দাগেন শুভেন্দু। বেলা বাড়তেই তিনি ললিতের সঙ্গে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের যোগসূত্র টানলেন। বৃহস্পতিবার তৃণমূলের প্রবীণ বিধায়ক তাপস রায়ের সঙ্গে ললিত ঝায়ের ঘনিষ্ঠতা খুঁজে বের করছিলেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি তাপস-ললিত একফ্রেমে এমন একটা ছবি পোস্ট করে লিখেছিলেন, গণতন্ত্রের মন্দিরে হামলাকারী ললিত ঝার সঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের যোগাযোগ সামনে এসেছে। তাতে ওই তৃণমূল নেতাকে তদন্তের আওতায় আনার মতো এটা কি যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ নয়? এ প্রসঙ্গে সিএন-কে সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, বিরোধীরা বিজেপির বিরোধিতা করতে গিয়ে এবং ভোটে জেতার জন্য যেভাবে দেশের বিরোধিতা করছেন, তা ভাবা যায় না। বিষয়টির তদন্ত হওয়া দরকার। এবার দলের রাজ্য সভাপতির পথে হাঁটলেন বিরোধী দলনেতাও।
বিজেপির এহেন জোড়া আক্রমণ ভোঁতা করতে আসরে নামেন তাপস রায়। ললিত এবং তাঁকে জড়িয়ে করা পোস্টের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবেন তৃণমূল বিধায়ক, এমনটাই জানান তাপস রায়। পাশাপাশি তদন্তকারী সংস্থা তলব করলে আমি সহযোগিতায় রাজি, স্পষ্ট অবস্থান জানান তাপস রায়। পাল্টা সুকান্ত মজুমদার দাবি করেন মূল চক্রীর সঙ্গে কংগ্রেস, সিপিএম এবং তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ আছে। তদন্তে খতিয়ে দেখা হোক বড় কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা, দাবি বিজেপির রাজ্য সভাপতির।
প্রসূন গুপ্তঃ রবিবার বিজেপির রাজ্য কমিটির এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো। আয়োজিত হয়েছিল কলকাতার জাতীয় গ্রন্থাগারে। সভার আলোচনার মূল বিষয় ছিল, নরেন্দ্র মোদী সরকারের নবম বর্ষপূর্তি। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তাঁর বক্তব্যে জানান, সরকারের বর্ষপূর্তি এবং কাজের উন্নয়নের কথা জনগণের কাছে জানাতে হবে। আগামী ৩০ মে থেকে ৩০ জুন অবধি রাজ্যজুড়ে প্রচার অভিযানে নামবেন তাঁরা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল। বনশল জানান, দলের মধ্যে ছ্যুৎমার্গ চলবে না। পরোক্ষে দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে বোঝান বনশল। এই ভাবে চললে দল কড়া ব্যবস্থা নেবে, জানান বনশল।
পাশাপাশি বিধানসভার বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী ধন্যবাদ জানান কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীকে ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে দেওয়ার জন্য। অবশ্য সুর চড়া করে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন সভাপতি, সাংসদ দিলীপ ঘোষ। দিলীপবাবু বলেন যে, সংগঠনের ত্রুটি রয়েছে। নিচু তলার কর্মীদের সঙ্গে উচ্চ নেতাদের যোগাযোগ নেই মোটেই। তিনি বিভিন্ন সময়ে জেলায় জেলায় গিয়ে দেখেছেন যে প্রবল ক্ষোভ তৈরি হয়েছে কর্মীদের উপর। তিনি তাঁর বক্তব্যে কড়া বার্তা দেন। তাঁর ভাষণের বিরোধিতা করতে দেখা যায় নি। বিজেপি কর্মীদের অন্দরের কথা, দিলীপবাবু যখন দায়িত্বে ছিলেন তখন সংগঠন চাঙ্গা ছিল এবং এই সময়েই বিজেপির ভোট বাড়ে। গত লোকসভায় বিজেপি ১৮টি আসন জয় করে দিলীপের নেতৃত্বে। দিলীপবাবু 'চায়ের আড্ডা' যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিল বলে দাবি দলের কর্মীদের।
অবিশ্যি এটাও বাস্তব যে বিজেপির ভোট বেড়েছিল মূলত সিপিএম তথা বামেদের ভোটেই। ২০১৬ তে বিজেপির ভোট এই রাজ্যে ছিল মাত্র ১০ শতাংশ, কিন্তু ২০১৯-এ তা বেড়ে হয়ে যায় ৩৯ শতাংশ। অন্যদিকে, বামেদের ভোট কমে দাঁড়ায় মাত্র ৭-৯ শতাংশ। কাজেই প্রশ্ন থাকে বাম ভোট কমে কি বিজেপিতে গেলো? খতিয়ে দেখছে দল যে কোনও কারণে ২০২১ ভোট পর থেকেই বিজেপির ভোট ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হচ্ছে। সাগরদিঘিতে বিজেপির জামানত গিয়েছে এবং নদীয়া জেলায় সমবায় ভোট বিজেপি শূন্য হয়ে গিয়েছে যেখানে সিপিএমের ভোট বেড়েছে। কাজেই সুনীল বনশল দলের সংগঠনের উপর জোর দিচ্ছেন।
সোমবার বলতে সিবিআইয়ের হাতে তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA Arrest) জীবনকৃষ্ণ সাহার গ্রেফতারি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব। রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় করে তৃণমূলের এই জোড়া ধাক্কার মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Home Minister Amit Shah) পদত্যাগ দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বঙ্গ সফরকে কটাক্ষের সুরে বিঁধেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata)। তিনি জানান, '১৪ এপ্রিল দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় বিজেপির বৈঠক করতে এসেছিলেন। বৈঠক তিনি করতেই পারেন, কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সংবিধানের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে বলতে পারেন না, চব্বিশের ভোটে বাংলায় ৩৫টি আসন পাবে বিজেপি আর অপেক্ষা করতে হবে না বাংলার এই সরকার চলে যাবে। একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চক্রান্ত করছেন। কোন আইনে তিনি গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকার ফেলে দেবেন? এই কথা বলার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি আমরা।' যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে পাল্টা খোঁচা দেন বিজেপি সাংসদ তথা বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
তাঁর ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য, '৩৫টি আসন পাবে লোকসভায়। আগে ৫টি সাংসদ পেয়ে দেখাক বিজেপি।' দুর্নীতি দমন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, 'আমরা অনেক সরকারি অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এলে পদক্ষেপ করেছি। দলের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে পদক্ষেপ করেছি। বাংলায় যার ইশারায় অমিত শাহ চলছেন তিনি বড় ডাকাত। কিছু একটা ঘটলেই কেন্দ্রীয় দল, কমিশন দিল্লি থেকে চলে আসছে। আমাদের উন্নয়নমূলক কাজও ওরা বন্ধ করে রেখেছে।'
এদিকে, সুকান্ত মজুমদার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি জানান, 'বিজেপি যদি ৫-এর বেশি সাংসদ পায় মুখ্যমন্ত্রী কি পদত্যাগ করবেন? এটুকু চ্যালেঞ্জ নিক, এত বড় উনি দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেত্রী।' পাশাপাশি দুর্নীতি দমন প্রশ্নে কেন্দ্রীয় সংস্থার তৎপরতা প্রশ্নে সুকান্ত মজুমদার জানান, 'এত চোর আগে কোথাও ধরা পড়েনি। জীবনকৃষ্ণ সাহা আজ ভিতরে গিয়েছেন, পিছনে আরও আসছেন। এত চোরকে ধরতে গেলে তো সিবিআই অফিসারদের রাজ্যে আসতেই হবে। তিন জন বিধায়ক, একজন জেলা সভাপতি গারদের ভিতরে ঢুকেছেন।'
পরপর দু'দিন, শিবপুরের পর এবার রিষড়ায় (Rishra Violence) ঢুকতে বাধা বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে (Sukanta Majumder)। কোন্নগরে পুলিসি ব্যারিকেড গড়ে ঢুকতে বাধা বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদকে। ১৪৪ ধারা জারির কারণ দর্শিয়ে কোন্নগরেই সুকান্ত-সহ বিজেপির প্রতিনিধি দলকে আটকে দেয় পুলিস (Hooghly Police)। তাঁদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। ব্যারিকেড ভাঙতে পুলিসের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। জানা গিয়েছে, তিনি সোমবার উত্তরপাড়ার এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষকে দেখতে যান।
সেখান থেকে রিষড়ায় ঢোকার মুখে ব্যারিকেড গড়ে পুলিস বাধা দেয় সুকান্ত মজুমদারকে। এই প্রসঙ্গে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি বলেন, 'মানুষদের উপর হামলা হয়েছে। আমাদের সাংসদরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানাবে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয়, ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও টিএমসি সাংসদ ঘুরছেন। কিন্তু আমাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের কর্মী, যারা আক্রান্ত, তাঁদের পাশে দাঁড়াতে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ১৪৪ যেখানে নেই সেখানেও যেতে দেওয়া হচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গ কাশ্মীর হয়ে গিয়েছে। বোমাবাজি চলছে। আইনশৃঙ্খলা কোথায়?' পুলিস কথা না শুনলে ধর্নায় বসবো বলেও হুঙ্কার ছাড়েন তিনি। তিনি ফিরে গিয়েই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানাবেন। তাঁর সঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কথা হয়েছে বলে সোমবার জানান সুকান্ত মজুমদার।
এদিন পুলিসের সঙ্গে বচসায় জড়ান সুকান্ত মজুমদার। পুলিসি বাধার মুখে পড়ে বিজেপি সভাপতির আবেদন, 'আপনারা কিছু করুন। মার খেলে, বোমাবাজি হলেও কিছু করবেন না? ১৪৪-র বাইরে আপনারা কীভাবে আটকাচ্ছেন?' কোন কোন জায়গায় ১৪৪ ধারা, সেই অর্ডার পুলিসকর্তাকে দেখাতে বলেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি। যদিও পুলিসের আবেদন, '১৪৪ জারি রয়েছে আপনারা সহযোগিতা করুন। আপনারা পরে অনুমতি নিয়ে নিশ্চয় যাবেন। ওই এলাকাতেই যাওয়া যাবে না।' যদিও রিষড়ায় যেতে অনড় সুকান্ত মজুমদার।
প্রসূন গুপ্ত: দিল্লি থেকে নির্দেশ এসেছে রাজ্য বিজেপির কাছে , যেতে হবে দ্বিতীয় বাঙালিদের রাজ্য ত্রিপুরাতে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ভোটের কথা চলেছে। নির্দিষ্ট দিন এখনও নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে না এলেও ২০২৩-এর গোড়াতেই ভোট ধরে নিয়ে এগোতে চাইছে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। গত ২০১৮ র বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতায় এসেছিলো বিজেপি এবং তাদের স্থানীয় উপজাতি জোটসঙ্গী। ৫ বছর পূর্ণ কাজেই ফের নির্বাচনী দামামা বাজার আগেই প্রচারে নামতে চাইছে তারা।
গত বারের দায়িত্বে ছিলেন সুনীল দেওধর। ধুরন্ধর বুদ্ধি সুনীলের কাজেই নানান পরিকল্পনা করে এবং স্থানীয় কংগ্রেসকে ভেঙে ত্রিপুরায় টানা ৫ বার ক্ষমতায় থাকা বামফ্রন্টকে পরাজিত করেছিল বিজেপি | আপাতত ৪০টি কেন্দ্রে প্রচারের দায়িত্ব থাকছে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির নেতাদের। ত্রিপুরা বাঙালির স্থান বললে ভুল বলা হবে। এক সময়ে স্বাধীনতার আগে ওপার বাংলার কুমিল্লার অংশ ছিল ত্রিপুরা। মূল ত্রিপুরাতে ত্রিপুরী উপজাতির বাস ছিল পরে দেশ বিভাগের পর ওপার বাংলা থেকে উদ্বাস্তুরা আসাতে সংখ্যাগুরু হয়ে যায় বাঙালিরা।
বর্তমানে ত্রিপুরায় বিপ্লব দেবকে সরিয়ে দীর্ঘদিনের মানিক সাহাকে মুখ্যমন্ত্রী করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পাশাপাশি বিশেষ দায়িত্বে আছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এমনকি কলকাতা থেকে নেতাদের পাঠানো হচ্ছে আগরতলায়। আপাতত রাজ্যের সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক আমিতাভ চক্রবর্তীর সঙ্গে কথাও হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বলেই খবর।
প্রচারের জন্য একটি তালিকা করা হয়েছে তাতে প্রধান নাম সুকান্ত মজুমদার , শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ প্রমুখ। এছাড়াও অন্য নেতারাও যাবেন। শোনা গিয়েছে, শুভেন্দুদের প্রায় দেড় মাস সেখানেই আস্তানা গাড়তে হচ্ছে। অন্যদিকে বামফ্রন্ট ,কংগ্রেস একজোট হয়ে লড়বে কিনা এখনও ঠিক হয়নি। তবে তৃণমূল যে লড়াইতে আছে সে বার্তা পরিষ্কার | ত্রিমুখী বা চতুর্মুখী লড়াইতে আদতে লাভ বিজেপির, কাজেই তারা অপেক্ষা করছে তৃণমূল কী করে দেখতে।
আমি হলে মাথায় গুলি করতাম। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) এই মন্তব্য ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল ছিল তুঙ্গে। বিজেপি অভিযোগ করেছিল ট্রিগার হ্যাপি পুলিস বানাতে চাইছে তৃণমূল (TMC)। এবার এই মন্তব্যের বিরোধিতায় তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে চেয়ে ব্যাঙ্কশাল আদালতের দ্বারস্থ সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder)। তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ধারায় মামলা বিজেপির (BJP) বঙ্গ সভাপতির। জোড়াসাঁকো থানা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর নিচ্ছে না। এই অভিযোগ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ সুকান্ত। ১৫৬(৩) সিআরপিসি ধারায় আবেদন সুকান্ত মজুমদারের।
বিজেপি সভাপতির আইনজীবী জানান, এই ধারায় আবেদনকারীর ভূমিকা প্রধান। যখন কোনও থানা অভিযোগ নেয় না, তখন এই ধারায় আদালতের কাছে আবেদন করতে পারেন কোনও ব্যক্তি। তাঁর মন্তব্য, 'নবান্ন অভিযানের আয়োজন হয়েছিল রাজ্য সরকারের দুর্নীতির বিরোধিতায়। সেই অভিযানে পুলিসি পরিস্থিতি সামলানোর নাম করে যা ইচ্ছে করেছে। লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস-সহ পুলিসি অত্যাচারের শিকার বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। বিজেপি কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। এখনো অনেকে অসুস্থ।'
সুকান্ত আইনজীবীর দাবি, 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন গুলি করে মারতাম। এটা ফৌজদারি মামলা। পুলিস ব্যবস্থা না নিলে, মানুষ কোথায় যাবে? তাই এফআইআর করার অনুমতি পেতে এই মামলা।' বিচারকের প্রশ্ন, 'আবেদন পত্রে যা দেখছি এটা নবান্ন অভিযান সংক্রান্ত তাই তো? ইনি কে? (সুকান্ত মজুমদার এর দিকে তাকিয়ে)?'
বিজেপির বঙ্গ সভাপতির আইনজীবীর জবাব, 'উনি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।' এরপরেই সুকান্ত মজুমদারের আবেদনের বিরোধিতা করে সরকারি আইনজীবী। তিনি জানান, ওটা নবান্ন অভিযান ছিল না। পুলিসকে মারা হলো। সরকারি গাড়ি জ্বালানো হলো। রাস্তা বন্ধ করে মানুষের অসুবিধা করা হলো।
যদিও অভিষেকের মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বঙ্গ বিজেপি সভাপতির অভিযোগ, 'পুলিসকে দিয়ে বিজেপি কর্মীদের মারধর করানো হয়েছে। পুলিসি এই অত্যাচারের মাস্টারমাইন্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।' দু'পক্ষের এই সওয়াল-জবাব শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছে ব্যাঙ্কশাল আদালত।
রাজ্য বিজেপির সভাপতির এই পদক্ষেপকে খোঁচা দিয়েছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'সায়ন্তন বসুর মন্তব্য কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বলব বুক লক্ষ্য করে গুলি করুন, বিজেপির ট্রেনি রাজ্য সভাপতি ভুলে গেলেন? অনুরাগ ঠাকুরের গোলি মারো...ভুলে গেলেন? ভোটের সময় উত্তেজক ছবির সংলাপ মারবো এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে ভুলে গেলেন? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তুল্যমূল্য বিচার করে স্পষ্ট বলেছেন, পুলিস যেভাবে সংযম দেখিয়েছে, আমি হলে এই করতাম। পুলিস মার খেয়েও গুলি চালায়নি। বাম জমানায় শরিক দলকেও গুলি করা হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তো সংযমকে হাইলাইট করেছে।'
তিন দিন আগে দাবি করেছিলেন অন্তত ২১ জন তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) তাঁর সঙ্গে যোগাযোগে আছে। মঙ্গলবার মিঠুন চক্রবর্তীর (Mithun Chakraborty) দাবি, ৩৮ জন বুড়ি ছুঁয়ে আছে। তার চেয়ে বেশি দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। যেকোনও সময় যা কিছু হয়ে যেতে পারে বঙ্গ বিজেপির (Bengal BJP) সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে (Sukanta Majumder) পাশে বসিয়ে এই দাবি করলেন মিঠুন চক্রবর্তী।
তাঁর দাবির সমর্থন শোনা গিয়েছে সুকান্ত মজুমদারের কণ্ঠে। তিনি বলেন, 'আমাদের সঙ্গে অন্তত ৪১ জন যোগাযোগ করেছে। শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আরও বেশি তৃণমূল বিধায়ক যোগাযোগ রাখছে।' টলিউডের মহাগুরুর মন্তব্য, 'অনেকে আমাকে অনুরোধ করেছে পচা আলু নেবেন না। কিন্তু সবাই সমান নয়। অনেকে আছে তৃণমূলে শ্বাসরুদ্ধ মনে করছেন। কিন্তু আমি কথা দিয়েছি যাঁদের নাম আমার কাছে আছে, তাঁরা এরকম নয়।'
বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার মহালয়ার আগে পুজো উদ্বোধনের সমালোচনা করে বলেন, 'সরকার ভুয়ো হয়ে গিয়েছে। মাতৃপক্ষের আগে পুজো উদ্বোধন করছেন, ভুয়ো চাকরি দিচ্ছেন।'
এদিকে, দুই বিজেপি নেতার এই দাবির প্রেক্ষিতে তৃণমূল কটাক্ষের সুরে বিঁধেছেন। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'মিঠুন দা যদি হার হজম না হয়, হজমিগুলি পাঠিয়ে দিচ্ছি। দেড় বছর ঘুরে ঘুরে হেরেছেন। সম্মান কেন বিজেপির পাল্লায় পড়ে নষ্ট করছেন। কেউ বলছে ৪১ জন আছে, কেউ বলছে ২১ জন। বলছি মিঠুন দা, সুকান্ত দিওয়ার দেখেছেন? অমিতাভ বচ্চন বলছে হামারে পাস গাড়ি, বাড়ি দুনিয়ার বাতেলা হে। তুমাহারে পাস কেয়া হে? আমরা বলছি আমাদের কাছে দিদি হে।'