প্রসূন গুপ্তঃ রবিবারেই ধার্য হয়ে গেলো, এই রাজ্য থেকে আগামীতে রাজ্যসভায় প্রতিনিধিত্ব করবেন কারা? তৃণমূল কংগ্রেস থেকে যে ৪ জন যাচ্ছেন তাঁরা যথাক্রমে নাদিমুল হক, সুস্মিতা দেব, মমতা ঠাকুর এবং নতুন মুখ সাগরিকা ঘোষ। এর মধ্যে ফের আরও একবার সুযোগ পেলেন নাদিমুল, কারণ সংখ্যালঘু মুখ। সুস্মিতা আগেও তৃণমূলের হয়ে রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন এবং কাজটিও ভালো করেছিলেন কাজেই ফের একবার ও মমতা ঠাকুর একবার লোকসভার সদস্য হয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে হেরে যান। তিনি মতুয়া প্রতিনিধি এবং ঠাকুর বাড়ির প্রতিনিধি কাজেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে এবারে রাজ্যসভায় পাঠালেন। বাকি সাগরিকা ঘোষ।
সাগরিকা সাংবাদিক। টেলিভিশনের নিয়মিত মুখ ছিলেন। অসাধারণ বাচনভঙ্গি। ইংরেজি ও হিন্দিতেই তিনি তাঁর কাজ করেছেন। দিল্লির প্রবাসী বাঙালি এবং সেখানেই বেড়ে ওঠা। সাগরিকা কোনও সাক্ষাৎকার নিতে গেলে অতিথির ঘাম ছুটিয়ে দিতেন। তাঁর পিতা ভাস্কর ঘোষ কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ বিভাগে ডিরেক্টর ছিলেন। ভাস্করবাবু দূরদর্শনের অন্যতম পরিচালকও ছিলেন দীর্ঘদিন। কংগ্রেসের পছন্দের মানুষ ছিলেন। সাগরিকার অন্য এক পরিচয়ও আছে। তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক রাজদীপ সারদেশাইয়ের পত্নী। তাঁকে মমতা পাঠালেন সুবক্তা এবং রাজনীতি সচেতক হিসাবেই।
অন্যদিকে অনেক জল্পনা কাটিয়ে বাংলা থেকে একমাত্র আসনে বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যকে আগামীতে দেখা যাবে রাজ্যসভায়। রাজ্য বিজেপিতে অনেক জল্পনা ছিল অনেক নাম নিয়ে। মিঠুন চক্রবর্তী, অনির্বান গাঙ্গুলি, ভারতী ঘোষ, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ইত্যাদি নাম নিয়ে ছিল টেনশন। এ বিষয়ে নাকি সম্প্রতি অমিত শাহের সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের আলোচনাও হয়েছিল। জল্পনার নামগুলি উঠে এসেছিলো ওই ভাবেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত থাকা এবং প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষের অতি পছন্দের শমীককেই রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। শমীক এক সময়ে বসিরহাট থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন, কিন্তু তারপর নানান নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করেও হেরে গিয়েছেন। শমীক সুবক্তা, রাজনীতির পড়াশুনা অগাধ এবং বিতর্কিত মন্তব্য থেকে দূরেই থাকে পছন্দ করেন। সাগরিকা বা শমীক কিন্তু বক্তা হিসাবে রাজ্যসভায় স্থান করে নেবেন বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞ মহলে।
মহম্মদ শামি, এই নামটিই ২০২৩-এর ক্রিকেট বিশ্বকাপে ঝড় তুলেছিল। এর পাশাপাশি সারা বছর ধরে ইন্ডিয়ার হয়ে অনবদ্য বোলিং করে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। এবার ক্রীড়াক্ষেত্রে অবদানের জন্য অর্জুন পুরস্কার পেলেন ভারতের তারকা পেসার মহম্মদ শামি। ২২ গজে সারা বছর ধরে লাগাতার অসাধারণ পারফরম্যান্স দিয়েছেন তিনি। ২০২৩-এর ক্রিকেট বিশ্বকাপে বল হাতে দুরন্ত ভেলকি দেখিয়েছেন। এবারে তাই ভারতীয় বোলার মহম্মদ শামির প্রতিভাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া হল। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত থেকে নিলেন এই অর্জুন পুরস্কার।
ক্রিকেট বিশ্বকাপে মহম্মদ শামির বোলিংয়ের জন্য় তাঁর নাম অর্জুন পুরস্কারের জন্য় মনোনিত করেছিল বিসিসিআই। এবার সেই মনোনয়নের জন্য় শামি অর্জুন পুরস্কার পেলেন। এবার বিশ্বকাপে মাত্র সাতটা ম্যাচ খেলে মোট ২৪টা উইকেট নিয়েছেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে তিনবার পাঁচ উইকেট। বিশ্বকাপের প্রথমদিকে তাঁকে প্রথম একাদশে সুযোগ দেওয়া হয়নি। তারপর মাঠে নামার সুযোগ পেয়ে মাত্র ৭টি ম্যাচে ২৪টি উইকেট নিজের ঝুলিতে নেয় ভারতীয় এই তারকা পেসার।
অর্জুন পুরস্কার পেয়ে সংবাদমাধ্য়মে মহম্মদ শামি বলেন, 'এই পুরস্কারটি আমার কাছে একটি স্বপ্ন। এটার জন্য সকলের জীবন কেটে যায় এবং মানুষ এই পুরস্কার জিততে পারে না। আমি খুশি যে আমি এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছি। আমার জন্য, এই পুরস্কার পাওয়াটা একটি বড় সম্মান।'
প্রায় দু'দশক পর বিশ্বকাপ ফাইনালে (World Cup Final 2023) মুখোমুখি হয়েছিল ইন্ডিয়া-অস্ট্রেলিয়া (IndvsAus)। কিন্তু এবারও বিশ্বকাপের ট্রফি জেতার স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ফাইনাল হারতেই মাঠে কান্নায় ভেঙে পড়েন একাধিক ক্রিকেটার। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়াতে, সাহস জোগাতে তাঁদের সঙ্গে দেখা করলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। খেলা শেষে ড্রেসিংরুমে গিয়ে টিম ইন্ডিয়ার সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এমনকী মহম্মদ শামিকে নিজের বুকে টেনে নেন মোদী।
রবিবার বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখার জন্য প্রথম থেকেই ছিলেন নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে। ভারতের পরাজয়ের পর তাই তিনি ভারতীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে ড্রেসিংরুমে দেখা করেন। নমোর ড্রেসিংরুমে আসার খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন রবীন্দ্র জাডেজা। ভারতীয় অলরাউন্ডারের কথায়, সবাইকে উদ্বুদ্ধ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, ড্রেসিংরুমে প্রত্যেকের সঙ্গে হাত মেলান প্রধানমন্ত্রী।
We had a great tournament but we ended up short yesterday. We are all heartbroken but the support of our people is keeping us going. PM @narendramodi’s visit to the dressing room yesterday was special and very motivating. pic.twitter.com/q0la2X5wfU
— Ravindrasinh jadeja (@imjadeja) November 20, 2023
এর পর শামিকে বুকে টেনে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানালেন শামি, জাদেজা-রা। শামি এক্স পোস্টে লেখেন, "গতকাল দিনটা আমাদের ছিল না। আমি সব ভারতীয়কে ধন্যবাদ দেব পুরো বিশ্বকাপ জুড়ে আমার ও আমাদের দলের পাশে থাকার জন্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেভাবে ড্রেসিংরুমে এসে আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে মনোবল বাড়ালেন তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ।"
বিশ্বকাপের প্রথম ৪ টে ম্যাচে মাঠেই নামানো হয়নি তাঁকে, ড্রেসিং রুমে বসে খেলা দেখেছিলেন মহম্মদ শামি। বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে তাঁর দিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ। সেমিফাইনালে একা হাতে ৭ উইকেট নিয়ে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়া শামিই এখন টিম ইন্ডিয়ার মুকুটহীন সম্রাট। ঈশ্বর তাঁর ছেলে এবং দেশকে জিতিয়ে দেবেন, বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে দৃঢ় বিশ্বাস শামির মায়ের।
কেউ কেউ বলছেন হার্দিকের চোট যেন শাপে বর হয়েছে। নইলে হয়ত শামির এই বিধ্বংসী রূপ দেখাই হাত না দেশবাসীর। মাত্র ৬টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি, আর তাতেই ২৩টা উইকেট নিয়ে , তিনি বিশ্বকাপের সর্ব্বোচ্চ উইকেট শিকারি। একেকটা ম্যাচে ৫টার বেশি করে উইকেট ঘরে তুলেছেন শামি। সেমিতে নিউজিল্যান্ডের ৭টা উইকেট নিয়েছেন তিনি। তাঁকে নিয়ে এখন উদযাপনের শেষ নেই।
হার্দিক চোট না পেলে নাকি শামিকে খেলানোরই কথা ছিল না টিম ইন্ডিয়ার। এমনটাই জানিয়েছেন ভারতীয় দলের ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠৌর। হার্দিক বিশ্বকাপ থেকে সরে না দাঁড়ালে ‘শামি-ফাইনালের’ সাক্ষী থাকা হতই না। শামি এ বারের বিশ্বকাপে শুধু নেদারল্যান্ডস ম্যাচে উইকেট পাননি। তার আগে চারটি ম্যাচে খেলেননি। অর্থাৎ ৫ ম্যাচেই তিনি প্রতিপক্ষের ‘যম’ হয়ে উঠেছেন।
বিশ্বকাপে দ্রুততম ৫০ উইকেট তুলে নিয়ে নজির গড়লেন মহম্মদ শামি। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে যে উইকেটে, সব বোলাররাই প্রায় ব্যর্থ, সেই রুক্ষভূমিতেও সোনার ফসল ফলিয়ে তাক লাগালেন। নিউজিল্যান্ড ম্যাচে কেন উইলিয়ামসনকে ফেরার পরই একাধিক রেকর্ড গড়লেন শামি।
বিশ্বকাপে এর আগে কোনও ভারতীয় বোলার ৫০ উইকেট পাননি। প্রথম কয়েকটি ম্যাচ না খেলেও ৫০ উইকেটের মালিক হলেন তিনি। এর আগে দ্রুততম ৫০ উইকেট নিয়ে শীর্ষে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক। তাঁর থেকে ২টি ম্যাচ কম খেলে এই রেকর্ড গড়ে ফেললেন শামি। ১৭ ম্যাচে এই রেকর্ড গড়েন শামি। এদিন ৬ ওভারে মাত্র ৩০ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন শামি। শামির গতি ও লেনথের কাছে বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য হন কিউয়ি ব্যাটসম্যানরা। শেষ কয়েক ওভারে আরও ৩ উইকেট নিয়ে মোট ৭ উইকেট নেন শামি।
সাড়ে নয় ওভার। ৫৭ রান। সাত উইকেট। বাংলার মহম্মদ শামির এই স্বপ্নের স্পেলে ১২ বছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত। এই সাত উইকেটে মধ্যে তাঁর সবচেয়ে বড় শিকার কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। যেখান থেকে মুম্বইয়ে ঘুরে গেল ম্যাচ। তাই ম্যাচের সেরা হয়ে শামি জানালেন, জায়গায় বল রেখেছিলেন, সফল হলেন। এবার তাঁর টার্গেট বিশ্বকাপ ছুঁয়ে দেখা। অপেক্ষা করছে আমেদাবাদ।
এই নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের অভিযান শুরু করেছিলেন বাংলার এই স্পিডস্টার। আগের দুটি ম্যাচ বাইরে থাকার পর ধর্মশালায় প্রথম বলেই উইকেট পেয়েছিলেন। সেই শুরু। তার এই বিশ্বকাপে বাকিটা ইতিহাস। বিলেতের মাটিতে যেখানে শুরু করেছিলেন, পাহাড় কোলে যেন ঠিক সেখান থেকেই ছুটেছেন।
তাই আমেদাবাদে এখন দ্রুত পৌঁচ্ছতেই চাইছেন বাংলার এই বোলার। শামি মনে করেন, জীবনে একবারই আসে বিশ্বকাপকে ছুঁয়ে দেখার। কে জানে কাল হো না হো!
অবশেষে এক যুগ পর ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনালে (ICC World Cup Final 2023) উঠল ভারত। পুরো দেশ যেন উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা, আনন্দে ভাসছে। আর এই ক্রিকেট জ্বরে কাবু খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে (ICC World Cup Semi Final) ৭০ রানে কিউয়ি বধ করার পিছনে বড় অবদান রয়েছে মহম্মদ শামির (Mohammad Shami)। তিনি নিজেই ৭টি উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপ জেতার পথ এক ধাপ এগিয়ে দেন 'মেন ইন ব্লু'-কে। ফলে পুরো ক্রিকেট টিমকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোদী, এর পাশাপাশি পৃথকভাবে শামির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বললেন, 'শামিকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে।'
বুধবার নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ভারত ফাইনালে উঠতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, "অভিনন্দন টিম ইন্ডিয়া! অসাধারণ পারফরম্যান্স দিয়ে স্মরণীয়ভাবে ফাইনালে প্রবেশ করল ভারত। আমাদের টিমের অসাধারণ ব্যাটিং ও দারুণ বোলিংই ম্যাচ জিতিয়েছে। ফাইনালের জন্য শুভেচ্ছা রইল।" এর পরই শামিকে নিয়ে তিনি লেখেন, "আজকের এই সেমিফাইনাল ম্যাচটি আরও বিশেষ হয়ে উঠেছিল একক পারফরম্য়ান্সের জন্যও। এই ম্যাচে মহম্মদ সামির বোলিং এবং গোটা বিশ্বকাপ জুড়েই তাঁর পারফরম্যান্স ক্রিকেটপ্রেমীরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে। ওয়েল প্লেড সামি!" প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছার উত্তর দিয়ে তাঁকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন শামি।
বিশ্বকাপে রেকর্ড গড়লেন মহম্মদ শামি। ভারতীয় হিসেবে সর্বাধিক উইকেট তুলে নিলেন। এদিন ৫ উইকেট নেওয়ার পর বিশ্বকাপের মঞ্চে তাঁর উইকেট সংখ্যা দাঁড়াল ৪৫। যদিও দেশের নিরিখে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাকগ্রা। তাঁর উইকেট সংখ্যা ৭১। পেরিয়ে গেলেন জাহির খান ও জাভাগল শ্রীনাথকে।
এবার বিশ্বকাপে খেলতে নামার আগে শামির সংগ্রহে ছিল ৩১ উইকেট। প্রথম চার ম্যাচে খেলেননি। পরের তিন ম্যাচেই ১৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন। দুই ম্যাচে ৫ উইকেট তুলে নিলেন। বৃহস্পতিবার ৫ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট পান শামি।
একদিনের ক্রিকেটে দ্বিতীয়বার টানা তিন ম্যাচে চারটি উইকেটের বেশি নেওয়ার রেকর্ড গড়লেন শামি। এর আগে এই রেকর্ড ছিল ওয়াকার ইউনিসের। এদিন শামির আক্রমণে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইন আপয। ৩ উইকেট তুলে নেন মহম্মদ সিরাজও। বুমরা ও রবীন্দ্র জাদেজা একটি করে উইকেট পান।
ধর্মশালায় পাঁচ। লখনউয়ে চার। দু ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপে ছুটছেন বাংলার মহম্মদ শামি। যিনি প্রথম চার ম্যাচ উপেক্ষিত ছিলেন। নিউজিল্যান্ডের পর ইংল্যান্ড বধেও জ্বলে উঠলেন বল হাতে। ফেরালেন স্টোকট, বেয়ারস্ট্রো, মইন আলি এবং আদিল রশিদকে। তাই ম্যাচ শেষে অধিনায়ক রোহিত শর্মা জানিয়ে গেলেন, এরাই এই দলের সম্পদ।
বিশ্বকাপের এই ম্যাচে চ্যালেঞ্জ ছিল বোলারদের কাছে। যা দুর্দান্ত ভাবে করে দেখালেন বুমরা, শামি, কুলদীপ, জাডেজারা। কারণ, রোহিতও স্বীকার করলেন, এই মাঠে ২২৯ রান খানিকটা হলেও কম ছিল। কিন্তু তিনি ভাবতে পারেননি, ইংল্যান্ডের এই ভাবে ব্যাটিং ধস নামবে। তার জন্য অবশ্য বোলারদের পুরো কৃতিত্ব দিচ্ছে অধিনায়ক।
ব্যাটিং ভাল হয়নি। তাঁর ৮৭ রান ছাড়া বাকিরা সেইভাবে দানা বাঁধতে পারেননি। ভারত অধিনায়কের দাবি, শ্রীলঙ্কা ম্যাচে ভুল শুধরে নেওয়ার চেষ্টা হবে। ১২ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপের শীর্ষে এখন টিম ইন্ডিয়া। পরের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। আর সেই মাঠ সেখানে ১২ বছর আগে এই দেশকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।
চার দিনের আনন্দ শেষে মায়ের এবার বিদায়বেলা। উৎসবপ্রিয় বাঙালির কাছে বিষাদের দিন, আবার একবছরের প্রতীক্ষা। ঘরে ঘরে একটাই প্রার্থনা আবার এসো মা। এদিকে মঙ্গলবার সকালেই দেশবাসীকে বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে শুভ বিজয়া পোস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।
মায়ের এবার ঘরে ফেরার পালা, নীলকণ্ঠ পাখি উড়িয়ে দিয়ে কৈলাস পর্বতকে জানান দেওয়া। দশমী মানে চারদিনের হুল্লোড় শেষে বিষাদের সুর। ঘট নাড়িয়ে, দর্পনে নিরঞ্জন শেষে ঘাটে ঘাটে চলছে প্রতিমা বিসর্জন। এদিকে মঙ্গলের সকালে হিন্দিতে দেশবাসীকে দশমীর শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রী। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, দেশব্যাপী আমার পরিজনদের বিজয়া দশমীর হার্দিক শুভকামনা। এই পার্বন, অসুরশক্তির বিনাশের সঙ্গেই জীবনে ভালো খবর নিয়ে আসে।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও এক্স হ্যান্ডেলে বিজয়া দশমীর পোস্ট। মুখ্যমন্ত্রী বাংলায় লেখেন, আবার এসো মা। সকলকে জানাই শুভ বিজয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা।
বধূ নির্যাতনের মামলায় মুক্তি পেলেন শামি। মঙ্গলবার আদালতে সশরীরে হাজিরা দিলেন মহম্মদ শামি। ছিলেন শামির দাদা মহম্মদ হাসিমও। দুজনেই জামিনের আবেদন করেন। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করে দুজনকেই জামিন দেন।
শামির আইনজীবী সেলিম রহমান জানিয়েছেন, দুজনেই আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিনের আবেদন করেন। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে। গত ২৩ অগাস্ট আলিপুরের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক নির্দেশ দেন, শামির প্রাক্তন স্ত্রী হাসিনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শামিকে তলব করার পিছনে কোনও কারণ খুঁজে পাননি তিনি। তবে পরবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য তাঁকে ট্রায়াল কোর্টে আবেদন করতে হবে। জামিনের আবেদন করতে পারবে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী হাজিরা দেন শামি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দল ঘোষণা বিসিসিআইয়ের (BCCI)। ওয়ান ডে ও টেস্ট সফরের দল ঘোষণা করল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (Indian Cricket Board) । ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে রাখা হয়নি চেতেশ্বর পূজারাকে। দলে নেই উমেশ যাদব ও মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)। দুই দলেই টিমে সুযোগ পেলেন বাংলার মুকেশ কুমার।
ওয়ানডে টিমে অধিনায়ক রোহিত শর্মা। শুভমান গিল, রুতুরাজ গাইকোয়াড়, বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার যাদব, সঞ্জু স্যামসন, ইশান কিষাণ, প্রত্যেকেই জায়গা পেয়েছেন। অলরাউন্ডার হিসেবে থাকবেন হার্দিক পান্ডিয়া, শার্দুল ঠাকুর ও রবীন্দ্র জাদেজা। বোলিং আক্রমণে থাকছেন যুজভেন্দ্র চাহাল, কুলদীপ যাদব, জয়দীপ উনাদকড়, মহম্মদ সিরাজ, উমরান মালিক ও মুকেশ কুমার।
টেস্ট টিমেও অধিনায়ক রোহিত শর্মা। সুযোগ পেয়েছেন যশস্বী জয়সওয়াল, অজিঙ্কা রাহানে, শ্রীকর ভারত, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, নবদীপ সাহানি, অক্ষর প্যাটেল।
দেবলীনা কুমার (Devlina Kumar) টলিউড (Tollywood) জগতের জনপ্রিয় মুখ। রাজনীতিক পিতার সুকন্যা, অন্যদিকে মহানায়ক উত্তম কুমারের নাতবৌ। নৃত্যশিল্পী হিসেবেই তাঁর পরিচিতি, কিন্তু বর্তমানে অভিনয় জগতেও পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন। হামি, গোত্র, তীরন্দাজ শবর, মহালয়া এবং প্রাক্তনের মতো সিনেমায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সামাজিক মাধ্যমেও বেশ জনপ্রিয় দেবলীনা। নিজেকে রীতিমত মেইনটেইন করে চলেন তিনি। শরীর চর্চায়-ডায়েটে এখন তাঁকে টোনড ফিগারে দেখা গেলেও আগে কিন্তু তিনি এমন ছিলেন না। তাই জন্যেই শুনতে হয়েছিল কুমন্তব্য।
দেবলীনার বয়স যখন কম ছিল, সেসময় বেশ ওজনদার ছিলেন তিনি। তাঁর দিকে ধেয়ে এসেছিল নানা মন্তব্য। দেবলীনাকে দেখেই অবধারিত 'বাবাহ, কী গোলগাল'-এর মতো মন্তব্য ছুটে এসেছিল। কেউ বলেছিলেন, 'বয়সের থেকে অনেক বড় লাগে', কেউ বলেছিলেন ,'এত মোটা নাচতে অসুবিধা হয় না?' কেউ আবার একধাপ এগিয়ে দেবলীনাকে, তাঁর বাবার স্ত্রী হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন। সেই দিন পেরিয়ে দেবলীনা এখন ছিপছিপে চেহারায় এসেছেন। কিন্তু আজও সেই বাক্যবাণ ছুটে আসে তাঁর দিকে।
বর্তমানে ছিপছিপে চেহারায় দেবলীনাকে দেখে অনেকে বলেন, 'শাকচুন্নির মতো', কেউ বলেন 'লালিত্ব কমে গিয়েছে', কেউ আবার বলেন 'একটু কম ওয়ার্কআউট করো তো!' সমাজের এই নির্মম বাক্য এবং বিচারক মানসিকতা নিয়ে দেবলীনা সরব হয়েছেন। এত এত রকম কথা শুনে অভিনেত্রী বুঝেছেন,'যা ইচ্ছে হয় তাই কর।' নিজের এত কথা সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করার পিছনে আরও একটি কারণ রয়েছে।
মুক্তি পেয়েছে অরিত্র মুখার্জী পরিচালিত এবং ঋতাভরী চক্রবর্তী ও আবির চট্টোপাধ্যায় অভিনীত সিনেমা 'ফাটাফাটি'। এই সিনেমা সমাজের প্রতি এক বার্তা তুলে ধরতে চাইছে। সজোরে বলতে চাইছে 'যাঁরা মোটা, তাঁদের জীবন মোটামুটি নয় ফাটাফাটি'। এই বার্তায় সামিল হতে চেয়েছেন দেবলীনা। সমাজের প্রতি বার্তা দিয়েছেন, 'ফাটাফাটি' সিনেমার প্রচারও করেছেন একইসঙ্গে।
আবারও বিপাকে পড়তে চলেছেন ভারতীয় ক্রিকেটার মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)। বর্তমানে আইপিএলে গুজরাট টাইটানসের হয়ে খেলছেন তিনি। দলের অন্যতম সেরা পেসারকে নিয়ে বেশ আশাবাদী দল। ধারাবাহিক ম্যাচ রয়েছে তাঁর। তবে এবার তাঁর জন্য পরিস্থিতি কঠিন হতে চলেছে। কারণ শামির স্ত্রী হাসিন জাহান (Hasin Jahan), তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার আবেদন নিয়ে গেলেন সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)।
এর আগেও মহম্মদ শামিকে গ্রেফতারির আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী হাসিন জাহান। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সেশন কোর্ট ২৮ মার্চ গ্রেফতারি পরোয়ানায় স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। এবার সুবিচার পাওয়ার আশা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সেশন কোর্টকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গেলেন হাসিন জাহানের ব্যারিস্টাররা। মহম্মদ শামির স্ত্রী হাসিন জাহানের অভিযোগ ছিল, বিয়ের পর থেকে শামি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা বারবার তাঁর থেকে যৌতুকের দাবি করেছেন। এমনকি শামি তাঁর উপর শারীরিক নির্যাতন করেছেন, এমন অভিযোগও করেছিলেন হাসিন।
আরও বিস্ফোরক অভিযোগ করে হাসিন বলেছিলেন, বিসিসিআই এর বিভিন্ন সফরে ভারতীয় দলের দেওয়া ঘরে অন্যান্য মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন মহম্মদ শামি। লালবাজার থানায় এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন হাসিন। থানার পুলিসেরা এই অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় পেসারের ফোনও বাজেয়াপ্ত করেছিলেন। মহম্মদ শামির বিরুদ্ধে, হাসিন জাহানের করা মামলা চার বছর ধরে আদালতে বিচারাধীন। আজ পর্যন্ত এই মামলার কোনও অগ্রগতি হয়নি। তাই সুবিচারের আশায় এইবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন হাসিন জাহান। এই মামলায় শেষ পর্যন্ত কী হয়, সেইটাই দেখার।
বল হাতে একাই দিল্লি ক্যাপিটালসের (DC) ব্যাটারদের দিশেহারা করে দিলেন মহম্মদ শামি (MD Shami)। বাংলার জোরে বোলারের সঙ্গে তাল মেলালেন আর এক বাঙালি ক্রিকেটার। তিনি উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ঋদ্ধিমান সাহা। তাঁদের দাপট দিল্লির ডাগআউটে বলে দেখতে হল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে।
এ বারের আইপিএলে একে বারেই ভাল ছন্দে নেই দিল্লি। মাত্র দু’টি ম্যাচে জয় পেয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নাররা। গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে তাঁদের অবস্থা আরও করুণ হল। নতুন বল হাতে শামিকে সামলাতেই পারলেন না তাঁরা। হার্দিক পাণ্ড্যর কাছ থেকে নতুন বল পেয়ে শামি একাই ধস নামালেন দিল্লির ইনিংসে। তাঁর সুইংয়ের হদিশই পেলেন না ফিল সল্ট, রিলি রুসো, মণীশ পাণ্ডেরা। উইকেটের পিছনে শামির মতোই নিখুঁত ঋদ্ধিমানও। তাঁদের যুগলবন্দিতে ২৩ রানেই ৫ উইকেট হারাল দিল্লি।
শামি প্রথম ৩ ওভারে ৪ উইকেট তুলে নিলেন ৭ রান খরচ করে। তাঁর বলে পর পর সাজঘরে ফিরে গেলেন সল্ট (শূন্য), রুসো (৮), মণীশ (১) এবং প্রিয়ম গর্গ (১০)। শামিকে আক্রমণ থেকে সরানোর সাহস দেখাতে পারেননি হার্দিক।
দিল্লির বিরুদ্ধে ৪ ওভার বল করে ১১ রান খরচ করে ৪ উইকেট নিলেন শামি। তাঁর ৪টি উইকেটের ৩টির ক্ষেত্রেই অবদান রইল ঋদ্ধিমানের। সল্ট ছাড়া বাকি তিন জনের ক্যাচ ধরলেন তিনি। ভারতীয় দল থেকে বহু দূরে সরিয়ে দেওয়া ঋদ্ধিমান উইকেটের পিছনে এখনও আগের মতোই বিশ্বস্ত। বিশেষ করে মণীশের প্রথম স্লিপে দেওয়া ক্যাচ ঝাঁপিয়ে অবিশ্বাস্য ভাবে তালুবন্দি করলেন। বাঙালি উইকেটরক্ষকের দক্ষতা দেখে উচ্ছ্বাস গোপন করেননি ধারাভাষ্যকাররাও।
গুজরাতের হয়ে মাঠে যখন শামি এবং ঋদ্ধিমান প্রতিপক্ষ শিবিরে কাঁপুনি ধরিয়ে দিচ্ছেন, সে সময় টেলিভিশনের ক্যামেরায় বার বার ধরা পড়ল এক জনের মুখ। তিনিও বাংলার ক্রিকেটার। এখন আইপিএলের দিল্লি ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট। তিনি সৌরভ। শামি, ঋদ্ধিমানের মুখে যত হাসি দেখা গেল, তত শুকিয়ে গেল মহারাজের মুখ।