Breaking News
ED: মিলে গেল কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর, শ্রীঘই হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশ ইডির      Ram Navami: রামনবমীর আনন্দে মেতেছে অযোধ্যা, রামলালার কপালে প্রথম সূর্যতিলক      Train: দমদমে ২১ দিনের ট্রাফিক ব্লক, বাতিল একগুচ্ছ ট্রেন, প্রভাবিত কোন কোন রুট?      Sarabjit Singh: ভারতীয় বন্দি সরবজিৎ সিং-এর হত্যাকারী সরফরাজকে গুলি করে খুন লাহোরে      BJP: ইস্তেহার প্রকাশ বিজেপির, 'এক দেশ এবং এক ভোট' লাগু করার প্রতিশ্রুতি      Fire: দমদমে ঝুপড়িতে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড, ঘটনাস্থলে দমকলের একাধিক ইঞ্জিন      Bengaluru Blast: বেঙ্গালুরু ক্যাফে বিস্ফোরণকাণ্ডে কাঁথি থেকে দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করল এনআইএ      Sheikh Shahjahan: 'সিবিআই হলে ভালই হবে', হঠাৎ ভোলবদল শেখ শাহজাহানের      CBI: সন্দেশখালিকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের...      NIA: ভূপতিনগর বিস্ফোরণকাণ্ডে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ NIA     

SatyajitRay

Sharmila: অপুর সংসারের জন্য স্কুল ছাড়তে হয়েছিল শর্মিলা ঠাকুরকে, ফিরে দেখা অতীত

কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের জনপ্রিয় মাস্টারপিস 'অপুর সংসার' (Apur Sangsar)। এই সিনেমায় দর্শকদের অন্যতম প্রাপ্তি হয়েছিল নবাগতা অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর (Sharmila Tagore)। সেই সিনেমা থেকেই উত্তীর্ন হয়ে যিনি পরবর্তীকালে হাজারও হৃদয়ে ঝড় তুলেছিল। তবে মাস্টারপিস কী আর এমনি এমনি হয়! এর পিছনে অনেক আত্মত্যাগও থাকে। যেমনটা করতে হয়েছিল অভিনেত্রীকে। সিনেমাতে অভিনয় করার জন্যই শর্মিলা ঠাকুরকে ছাড়তে হয়েছিল স্কুল। সেই অতীতে ফিরে দেখা আরও একবার।

অভিনেত্রী এক সাক্ষাৎকারে অপুর সংসারে অভিনয়ের বিষয়ে বলেছিলেন, 'মানিকদা আমার বাবার পরিচিত ছিলেন এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আমি তাঁর সিনেমায় কাজ করব কি না। আমার বাবা সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান, কারণ সত্যজিৎ রায় তখন বিশ্ববিখ্যাত পরিচালক। বাঙালি মধ্যবিত্তরা তখন তাঁর ছবি খুব পছন্দ করেন, এবং তাঁর পরিচালিত সিনেমা অপরাজিত ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে একটি পুরস্কারও জিতে ফেলেছে।'

তবে কিশোরী শর্মিলা ঠাকুরকে সিনেমায় অভিনয়ের জন্য দাম দিতে হয়েছিল। অভিনেত্রী বলেছেন, 'সেই সময় অনেকেই সিনেমার বিপক্ষে ছিলেন। ধারণা ছিল ভালো পরিবারের ছেলে মেয়েরা সিনেমায় কাজ করে না।' অভিনেত্রীর স্কুলের প্রিন্সিপাল তাঁকে বলেছিলেন, অভিনয় করতে হলে স্কুল ছাড়তে হবে। অভিনেত্রীর বাবাও অনমনীয় ছিলেন। তিনি শর্মিলাকে অভিনয় করিয়েছিলেন। তবে এই সিনেমায় অভিনয় করেই তৃপ্ত হয়েছিলেন শর্মিলা। 'অপুর সংসার' তাঁকে অভিনয় জগতে প্রতিষ্ঠা করেন পরবর্তীকালে।

9 months ago
Vidya Balan: সত্যজিৎ রায়ের জন্য চিঠি লিখেছিলেন বিদ্যা! সাক্ষাৎকারে জানালেন নিজেই

বাঙালি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) জনপ্রিয়তা দেশে-বিদেশের সব জায়গায়। টলিউডে তো তাঁর ভক্ত রয়েছেই, বলিউডেও তাঁর ভক্তের সংখ্যা কম নেই। এমনকি অভিনেত্রী বিদ্যা বালনও পরিচালকের ভক্ত। তাও একেবারে ছোটবেলা থেকে। এমনকি ছোটবেলায় অভিনেত্রী নাকি পরিচালককে চিঠিও লিখেছিলেন। যদিও সেই চিঠি পাঠাতে পারেননি ঠিকানায়। পরিচালকের প্রয়ানেও ভেঙে পড়েছিলেন বিদ্যা (Vidya Balan)।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিদ্যা তাঁর পছন্দের পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার কথা বলেছেন। অভিনেত্রী বলেছেন, ছোটবেলায় সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে তাঁর হৃদ্যতা তৈরী হয়েছিল। তাই পরিচালককে নিজের মনের কথা জানিয়ে একটি চিঠি লিখেছিলেন অভিনেত্রী। যদিও সেই চিঠি পরিচালকের ঠিকানায় না পাঠিয়ে নিজের কাছেই রেখে দিয়েছিলেন বিদ্যা। পরিচালকের প্রয়াণে তাঁর সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছেরও মৃত্যু হয়েছিল বিদ্যার।

বিদ্যা সাক্ষাৎকারে বলেছেন, 'যদি আজ সত্যজিৎ রায়কে চিঠি লিখতাম, তবে আমি তাঁর লম্বা জীবনের জন্য প্রার্থনা করতাম। এমনকি এখনও আমি তাঁর সঙ্গে কাজ করতে চাই। সবাই সত্যজিৎ রায়ের মাস্টারপিস 'পথের পাঁচালি' ও 'চারুলতা' নিয়ে কথা বলেন, কিন্তু আমার হৃদয়ের কাছের মহানগর। সত্যজিৎ রায় যদি বেঁচে থাকতেন আমি হয়তো তাঁর সঙ্গে কাজ করতে পারতাম।'

10 months ago
Satyajit: ১০২-এ সত্যজিৎ, সঙ্গীত জগতে তাঁর ভূমিকা

প্রবাদপ্রতিম প্রয়াত পরিচালক সত্যজিৎ রায় আজ ১০২ বছরে পা দিলেন। রবীন্দ্রনাথের পরে বঙ্গ সমাজে এতো বহুমুখী প্রতিভা আর আসেনি এবং আজকেও এটাই বাস্তব। আমরা জানি যে, সত্যজিৎ সিনেমার পরিচালক হিসাবেই খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। কিন্তু শুধুমাত্র পরিচালনা নয়, চিত্রনাট্য, সংলাপ, ক্যামেরা, এডিটিং সবই তিনি করতেন, যদিও এই বিভাগের শিল্পী ছিলই। সত্যজিতের অন্যতম প্রধান বিষয়ের মধ্যে সংগীত পরিচালনাও ছিল। ১৯৬১ থেকে তিনি নিজেই নিজের ছবিতে সুর দিতেন, গান থাকলে গান লিখতেন। সত্যজিৎ গান করতেন কিনা কোথাও উল্লেখ নেই, কিন্তু তাঁর সুরের বিষয়ে যে প্রবল অভিজ্ঞতা ছিল তা আমরা জানতে পারি। তিনি পিয়ানো বাজাতে পারতেন এবং সুর তৈরি করতেন ওই পিয়ানোতে।

তাঁর প্রথম সংগীত পরিচালনা 'তিন কন্যা'তে হলেও তিনি প্রথম গানে সুর দেন 'দেবী' ছবিতে এবং একটি শ্যাম সংগীত লিখেছিলেন ও সুর দিয়েছিলেন। অবশ্য তাঁর প্রথম ছবি 'পথের পাঁচালী'তে 'হরি দিন তো গেলো সন্ধ্যা হলো'গানটি ছিল। তিন কন্যার দ্বিতীয় ভাগ মণিহারাতে তিনি কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়ে 'বাজে করুন সুরে' গানটি ব্যবহার করেছিলেন। পরে 'চারুলতা' ছবিতে কিশোর কুমারকে দিয়ে 'আমি চিনিগো চিনি' গানটি ব্যবহার করেছিলেন, লিপ দিয়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। 'অরণ্যের দিনরাত্রি'তে তিনি পাহাড়ি সান্যালকে দিয়ে একটি অতুল প্রসাদী গান গাইয়েছিলেন।

এরপর অবশ্য 'গুপী গায়েন বাঘ বাইনে' প্রচুর গান ছিল। কথা ও সুর সত্যজিতেরই ছিল এবং পরের একটি গুপী বাঘা নিয়ে ছবি 'হীরক রাজার দেশে'তেও অনেক গান ছিল। লক্ষণীয় বিষয় সারা ভারতের নানান দ্রুপদী সুর কিন্তু গাঙ্গুলিতে বিদ্যমান ছিল। এমনকি দক্ষিণ ভারতীয় সুরও।

তিনি নিজেও গান গেয়েছেন যদিও কয়েক কলি। প্রথমে শাখা-প্রশাখাতে একটি বিদেশি গানের কলি ছিল সৌমিত্রর মুখে, গলা ছিল কিন্তু সত্যজিতের। তেমনই শেষ ছবি 'আগন্তুক' ছবিতে উৎপল দত্তর মুখে 'হরি হরোয়া নমো' গানটির কলি কিন্তু সত্যজিতের। নিজের ছবি ব্যতীত তিনি নিত্যানন্দ দত্তর বাক্স বদলে সুর করেছিলেন। করেছিলেন গুরু বলে একটি বিদেশি ছবিতেও। তাঁর সুর নিয়েই আজকেও ছবি বানান পুত্র সন্দীপ রায়। কাজেই সত্যজিতের সুর ও গান কিন্তু বাঙালি মননে ছাপ ফেলেছে।

12 months ago


Satyajit: সত্যজিতের প্রয়াণ দিবস, ফিরে দেখা মানিকবাবুর কাজ

প্রসূন গুপ্তঃ আজ বিশ্ববরেণ্য পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের প্রয়াণ দিবস। উপেন্দ্র কিশোরের নাতি ও সুকুমার রায়ের পুত্র কিন্তু তাঁর বংশের শৈল্পিক ঘরানাকে ধরে রেখেছিলেন প্রবল ভাবে। বলা যায়, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন সত্যজিৎ। সিনেমা পরিচালনা সঙ্গে চিত্রনাট্য, সংলাপ, সঙ্গীত ইত্যাদি সবটাই নিজেই করতেন, এমনকি ক্যামেরাম্যান থাকলেও নিজেই ছবি তুলতেন। পথের পাঁচালি নিশ্চিত ভারতীয় চলচিত্রে এক বিপ্লব। ভারতীয়রা সিনেমা দেখতে বসে যেমন ভাবতে শিখলো তেমনই রবীন্দ্রনাথের পরে কলাশিল্পে আরও একটি নাম বিশ্বের বাজারে চলে আসলো। সত্যজিতের লেখার হাতও ছিল চমৎকার।

ছোট গল্প থেকে ফেলুদা বা প্রফেসর শঙ্কু তরুণ সমাজকে নতুনভাবে বইমুখী করেছিল। সত্যজিৎ সারা জীবনে যত ছবি তৈরি করেছেন তার একেকটি একেক মহলে সেরা মনে হয়েছে। প্রয়াত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সত্যজিতের প্রিয় অভিনেতা। তিনি বলতেন, কোনও নির্দিষ্ট ছবি দিয়ে মানিকদাকে বিচার করা যাবে না। উত্তমকুমারের নায়ক বাদ দিয়েও চিড়িয়াখানা ছবি অসামান্য। চিড়িয়াখানা ছবির জন্য উত্তম রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছিলেন।

তবুও সমালোচনা থাকে। সত্যজিৎ অসুস্থ হওয়ার পরে ইনডোর গল্প বেছে স্টুডিও ইনডোরে স্যুটিং করে ঘরে বাইরে, গণশত্রু, শাখা-প্রশাখা ছবি করে কিন্তু বিশেষজ্ঞ মহলে সমালোচনা কুড়িয়েছিলেন কিন্তু মৃত্যু আগে যেন ঝলসে উঠে আগন্তুক ছবি বানালেন এবং টিপিকাল সত্যজিতে ফিরে এসেছিলেন। তারপরেই চির বিদায়।

12 months ago
Tollywood: বাংলা ছবি তার চরিত্র হারিয়েছে কি? জানুন বিশ্লেষণে

প্রসূন গুপ্ত:  সম্প্রতি একটি বাংলা সিনেমা (Bengali Film) নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে ছিল।  অবশ্য ছবির বিষয়ে আপত্তি নয় বরং বিজেপির মিঠুন ও তৃণমূলের দেবকে নিয়ে। জনমত বলে ওই ছবি প্রজাপতি (Prajapati) দেখে বেশ ভালোই লাগলো। একেবারেই পিতা-পুত্রের সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং মায়ের বিয়োগের পর পুত্র ব্যস্ত বাবার এক বান্ধবী জোগাড় করতে ইত্যাদি।

ইদানিং বাংলা ছবি এই সমস্ত বিষয় নিয়েই হচ্ছে। আজ থেকে ৫০ বছর আগে ছিল বাংলা ছবি স্বর্নযুগ। সত্যজিৎ রায় থেকে উত্তমকুমার (Satyajit Ray to Uttam Kumar)। ছবি হতো মূলত কোনও সাহিত্যিকের উপন্যাস থেকে যে কারণে ওই যুগে সিনেমাকে মানুষ 'বই' বলতো।

এরপর ৯০-এর দশকে ছবি পাল্টিয়ে গেলো। একেবারে ৯০ বললে ভুল হবে, উত্তমের মৃত্যুর পর থেকে বাংলা ছবি ধীরে ধীরে হিন্দির মতো নাচগান-সহ মারধর ইত্যাদিতে তৈরি হয়েছে। মধ্যে কিছুটা পিছিয়ে গেলেও এই ছবি যার নায়ক ছিলেন চিরঞ্জিত, প্রসেনজিৎ বা তাপস পালরা। উপন্যাস বিদায় নিলো।

গ্রামগঞ্জের মানুষ এই ছবিতেই অভ্যস্থ হয়ে পড়লো। এরপর এলো ফেলুদা বা ব্যোমকেশ নিয়ে ছবি। এই ছবিতে সাসপেন্স বা কিছু গুলিগোলার দৃশ্যও থাকতো। দর্শক এও গ্রহণ করেছিল শহর এবং গ্রামে। কিন্তু ধীরে ধীরে ছবি মার্ খেতে শুরু করলে কলকাতা-সহ দেশের সিনেমা হাউসগুলি উঠেই গেলো ধীরে ধীরে। হল না থাকার ফলে মফস্সল বা গ্রাম সিনেমা থেকে আলাদা হয়ে গেলো।

আজকের সিনেমা বাংলায় হলেও আমূল পরিবর্তিত হয়েছে। হিন্দি ছবিতে কে নায়ক কে ভিলেন সেসব পথ শেষ হয়েছে। এখন একেবারেই সেরা টেকনিক-সহ হলিউডধর্মী অভিনয় এবং ছবি তৈরী হচ্ছে। কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে ছবি হচ্ছে এবং রিলিজ করছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মাল্টিপ্লেক্সে। টিকিটের মূল্যের কোনও ঠিক ঠিকানা নেই। বেসরকারি বিমানের মতো অবস্থা বুঝে মূল্য নির্ধারণ টাকাও উঠে আসছে দেদার।

বাংলা ছবি নিজের দিক পরিবর্তন করে কখনও প্রেম বা প্রেমের ভাঙন অথবা পরকীয়া প্রেম অনেকটা যেন রবি ঠাকুরের নষ্টনীড় বা শেষের কবিতার রিমেক। গ্রাম বা মফস্সলের কথা ভাবে না কেউই কারণ হল নেই। ফলে বাংলা ছবিকেও নির্ভর করতে হয় শহরের দর্শকের উপর এবং হল মালিকের মর্জির উপর। হল মালিক যদি দেখে পাঠান সারাদিন চালালে কোটি টাকা উঠবে তবে কেন তারা প্রজাপতি বা কাবেরী অন্তর্ধান দেখাবে?

one year ago


Bangla: বাংলা ও বিশ্বে সত্যজিৎ চর্চা (শেষ পর্ব)

সৌমেন সুর: সত্যজিৎ-এর তিন প্রজন্মের সম্পাদনায় ছোটদের মাসিক পত্রিকা 'সন্দেশ' বাংলা পত্রিকা জগতে একটা উল্লেখযোগ্য স্থান করে নিয়েছে। ১৯১৩ সালে পিতামহ উপেন্দ্র কিশোর রায় 

ছোটদের এই অসাধারন পত্রিকা নিজ উদ্যোগে সম্পাদনা ও প্রকাশনা শুরু করেছিলেন। উল্লেখ্য, ১৯৬০ সাল থেকে আমৃত্যু সত্যজিৎ সম্পাদনা করে গিয়েছেন 'সন্দেশ' পত্রিকা। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি লেখালেখির প্রতিও ছিল তাঁর প্রগাঢ় ভালোবাসা। আমরা প্রিয় সত্যজিৎ রায়ের কাছ থেকে ৬০টি গ্রন্থ পেয়েছি। এছাড়া একাধিক গ্রন্থও তিনি আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা শহরে সত্যজিতের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে তাঁর আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। আবার বেশকিছু পুরসভা সত্যজিৎ রায়ের নামে রাখা হয়েছে রাস্তার নাম। এ প্রসঙ্গে শান্তিপুর, রিষড়া, বিষ্ণুপুর প্রভৃতি পুরসভার নাম উল্লেখযোগ্য। দক্ষিণ ২৪ পরগনার একদা গ্রাম বোড়ালে রাখা হয়েছে সত্যজিৎ-র আবক্ষ মূর্তি। যেখানে পথের পাঁচালী ছবির শুটিং হয়েছিল।

প্রায় তিন দশকের পরিচালনা জীবনে তিনি আমাদের উপহার দিয়েছেন ২৮টি কাহিনীচিত্র, ৫টি তথ্যচিত্র ও ৩টি দূরদর্শন চিত্র। দেশ-বিদেশের সব ধরনের চলচ্চিত্রের সম্মানই তাঁকে ভূষিত করা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। 'দাদা সাহেব ফালকে' থেকে 'ভারতরত্ন' সম্মান এবং দেশ বিদেশের বহু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডি.লিট. উপাধি, বিশ্বভারতীর 'দেশিকোত্তম সম্মান', 'গোল্ডেন লায়ন অব সেন্টমার্ক' পুরস্কার ও 'ম্যাগসেসাই' পুরস্কার তিনি লাভ করেন।

১৯৭৮ সালে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ সম্মান 'লিজিয়ন অব অনার' সম্মানে ভূষিত হন সত্যজিৎ রায়। ১৯৯২ সালে 'লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্টে' এর জন্য বিশেষ অস্কার পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন তিনি। সত্যজিৎ রায় সমগ্র মানুষের কাছে গর্ব, অহংকার। বাংলার তথা বাঙালির কাছে তিনি চিরকাল অমর হয়েই থাকবেন।    

one year ago
Satyajit Ray: বাংলা ও বিশ্বে সত্যজিৎ চর্চা (প্রথম পর্ব)

সৌমেন সুর: বাংলা ও বাঙালির আত্মার আত্মীয় সত্যজিৎ রায়। দেখতে দেখতে তাঁর প্রয়াণের তিন দশক পেরিয়ে এলাম, মজার কথা আজও সাহিত্য সংস্কৃতির যে কোনও প্রসঙ্গ থেকে সত্যজিৎকে মানসিকভাবে এক মুহুর্তের জন্য ছাড়তে চাই না। তাঁর বর্ণময় কর্মকাণ্ডে আমাদের প্রাপ্তির ভাণ্ডারটি বেশ বড়ই। চলচ্চিত্র নির্মাণ থেকে অথবা অসাধারণ সব সাহিত্য সৃষ্টির পাশাপাশি বাণিজ্যিক চিত্রকলা, ছোটদের পত্রিকা সম্পাদনা কিংবা অনবদ্য সুর সৃষ্টি এবং চমৎকার প্রচ্ছদ পরিকল্পনা, এই সবকিছুই এক গভীর মননের পরিচায়ক।

আজ তাঁর প্রয়াণের ৩০ বছর অতিক্রান্ত, কিন্তু যে মানুষটি সারাজীবন আমাদের বহু কিছু দিয়ে গিয়েছেন, কিন্তু আমরা তাঁর স্মৃতিতে কতটা কি করতে পেরেছি। কলকাতার বাইপাসে বাঘা যতীনের কাছে ভারত সরকারের তথ্য মন্ত্রকের অধীন, ফিল্ম ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট 'সত্যজিৎ রায়ের' নামে করা হয়েছে।

চলচ্চিত্র সংক্রান্ত এই শিক্ষাকেন্দ্রের নাম যথাযোগ্য ব্যক্তির নামে হওয়ায় সর্বভারতীয় স্তরে এটা অবশ্যই একটি উল্লেখযোগ্য শ্রদ্ধার্ঘ্য। বিশিষ্ট সত্যজিৎপ্রেমী, সরকারি আধিকারিক প্রয়াত প্রবোধ মৈত্র, বহু পরিশ্রম করে নন্দনে দীর্ঘসময় ধরে গড়ে তুলেছিলেন 'সত্যজিৎ আর্কাইভ'। সত্যজিৎ রায় সম্পর্কিত নানা তথ্য, তাঁর সম্পর্কিত বই, তাঁর লেখা বই, চিত্রনাট্য, কিছু মূল পান্ডুলিপি, সত্যজিতের তৈরি সিনেমার মূল প্রিন্ট এবং সত্যজিৎ রায় সম্পর্কিত দেশ বিদেশের নানা আলোচনাপত্র। পত্রিকার কাটিং ইত্যাদি সবকিছুই সযত্নে রক্ষিত এই আর্কাইভে।

one year ago
Soumitra: বাঙালির অপুর ৮৮ বছর, জানুন সত্যজিত এবং সৌমিত্রর সেলুলয়েডের রসায়ন

প্রসূন গুপ্ত: বিশ্ববরেণ্য সত্যজিৎ রায় কখনও সিনেমার সঙ্গে আপস করতে নিজের ভাবনার বাইরে যাননি। একেক ছবিতে একেক রকম চরিত্র। কিন্তু এই সত্যজিতের, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের উপর একটা দুর্বলতা ছিল। তাঁর ছবিতে সৌমিত্র সবথেকে বেশি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। বাংলা সিনেমার মানিকবাবুর মানসপুত্র ছিলেন বড় পর্দার 'অপু'। এমনটাই কানাঘুসো টলিপাড়ায়। অনেকে বলেন, এমন অনেক ছবি ছিল যেখানে হয়তো সৌমিত্রের বিকল্প ছিল। কিন্তু মানিকবাবু মনে করতেন সৌমিত্রের বিকল্প হয় না। সৌমিত্রকে আবিষ্কারও সত্যজিতেরই 'অপুর সংসার' দিয়ে। এরপর আরও ১৩টি, সব মিলিয়ে ১৪টি ছবিতে সৌমিত্র কাজ করেছেন সত্যজিত রায়ের সঙ্গে। এক ফেলুদা ছাড়া আর অন্য কোনও ছবিতে সৌমিত্রের চরিত্রের একটির সঙ্গে অপরটির কোনও মিল পাওয়া যায়নি।

সৌমিত্র জীবদ্দশায় তা বারবার স্বীকার করে বলেছেন যে, মানিকদা তাঁর জীবনের দ্বিতীয় পিতা, যিনি হাতে ধরে সৌমিত্রকে তৈরি করেছেন। অপুর সংসারে এক অভাগা দরিদ্র যুবক, দেবীতে জমিদারি আমলের এক বিদ্রোহী নাস্তিক, সমাপ্তিতে এমন এক যুবক যে নিজের মর্জিতে চলতে চায়। অভিযানে এক ট্যাক্সি ড্রাইভার অসামাজিক কাজে যুক্ত হতে গিয়েও ফিরে আসে নিজের আদর্শে। চারুলতার অমল যেন রবি ঠাকুরের ক্ষুদ্র সংস্করণ। কাপুরুষ-মহাপুরুষে এ এক কাপুরুষ যুবক, যে জীবন বোধে পরাজিত। অরণ্যের দিনরাত্রিতে এক উচ্চাভিলাসী বোহেমিয়ান যুবক।

এরপর সত্যজিৎ রঙিন ছবি তৈরি করেন এই সৌমিত্রকে নিয়েই। যদিও তাঁর একসময়ের রঙিন ছবি ছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা (এতটাই পয়সা খরচ হয়েছিল যে ইচ্ছা থাকলেও রঙিন ছবি করতে পারেননি)। ছবি অশনি সংকেত, এই ছবিতে সৌমিত্রকে দিয়ে স্বাধীনতা পূর্বে এক পুরোহিতের চরিত্রে কাজ করিয়েছিলেন। এবার পরপর দুটি ফেলুদা, সোনার কেল্লা ও জয়বাবা ফেলুনাথ। যেখানে ফেলুদার চরিত্রে সৌমিত্র ছাড়া কাউকে ভাবতে চাননি সত্যজিৎ। এরপর এলো গুপীবাঘার দ্বিতীয় পর্ব হীরক রাজার দেশে। এখানে সৌমিত্র এক বিপ্লবী পণ্ডিত, যে একনায়ক রাজার বিরুদ্ধে লড়াই করেন। ফের রবীন্দ্রনাথ ও সত্যজিৎ।

ছবি করলেন ঘরে-বাইরে। এই ছবিতে সৌমিত্র এক ভণ্ড স্বাধীনতা সংগ্রামী। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়েন সত্যজিৎ। কিছুটা সুস্থ হয়ে করলেন একেবারে ইনডোর শুটিংয়ে গণশত্রু, যেখানে সৌমিত্র এক ডাক্তার, যিনি অসামাজিকতার বিরুদ্ধে লড়াই  করেন। এই জুটির শেষ ছবি শাখা-প্রশাখা। এক উচ্চ শিক্ষিত মানুষ যিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন।

কাজেই সৌমিত্রর জীবনে এত ধরনের চরিত্র এক বিশ্ববন্দিত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করে তিনি খাঁটি সোনা থেকেছেন বাংলা চলচ্চিত্রে। আজ বাঙালির অপুর ৮৮ বছর পূর্ণ হল।


one year ago


Felu Da: ফের ফেলুদা, কে বেশি সাবলীল?

প্রসূন গুপ্ত: কোথায় আছে 'বাপ কা বেটা, সিপাই কা ঘোড়া - কুছ নেহি ফির ভি থোড়া থোড়া'। অর্থাৎ বাবার মতো ছেলে না হলেও কিছু গুণ তো এটা। এটা কি বিশ্বখ্যাত পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ক্ষেত্রেও বলা যেতে পারে? তুলনা করা সর্বদা হয়তো ঠিক নয়, কিন্তু বিখ্যাত বাবা বা মায়ের ছেলে বা মেয়ের মধ্যে মানুষ সবসময়ে খুঁজে পেতে চায় পুরাতন প্রতিভাকে।

সত্যজিৎ রায় ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার ব্যক্তিত্ব। তাঁর বাবা সুকুমার রায় এবং দাদু উপেন্দ্র কিশোর রায়চৌধুরী ছিলেন চিরকালীন শিশু সাহিত্যিক। সত্যজিৎ রায়ের পুত্র সন্দীপ রায়ও চিত্র পরিচালনাতে হাত দিয়েছিলেন পিতার জীবদ্দশায়। আজও চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে একটি বিষয় পরিষ্কার সন্দীপ বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী নন। সিনেমার ক্ষেত্রেও ওই একই কথা প্রযোজ্য। তিনি দীর্ঘদিন ছবি পরিচালনা করছেন। গোটা তিন চারেক ছবি ছাড়া বাবার কাহিনী বা আবহ সংগীত নিয়েই তাঁকে কাজ করতে হচ্ছে।

সত্যজিৎ বিভিন্ন বিষয় ছবি করেছেন। বাস্তব জগতের কঠিন কাহিনী তুলে ধরে জগৎ বিখ্যাত হয়েছিলেন। মৃণাল সেন বলেছিলেন, এই মানুষের বিকল্প আগামীতে খুঁজে পাওয়া কঠিন। সত্যজিৎ ব্যোমকেশ এবং স্বরচিত ফেলুদা নিয়ে ছবি করেছেন। একটি ব্যোমকেশ, যাঁর চরিত্রে অভিনয়ে নিয়ে এসেছিলেন উত্তমকুমারকে। এরপর গত পনেরো /ষোলো বছরে বহু ব্যোমকেশ নিয়ে ছবি হয়েছে কিন্তু কোনোটাই সত্যজিৎ/উত্তমকে টপকে যেতে পারেনি। তেমনই ফেলুদা যে ভাবে সত্যজিৎ তৈরী করেছিলেন তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করলেও সন্দীপ, সত্যজিৎকে পেরিয়ে যেতে পারেননি।

এমনটা বোধহয় আশা করাটাও অনুচিত। সত্যজিৎ দুটি ফেলুদাকে নিয়ে ছবি করেছিলেন। যেখানে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন ফেলুদা, জটায়ু ছিলেন সন্তোষ দত্ত। আর কেন ফেলুদা হচ্ছে না প্রশ্নের উত্তরে সত্যজিৎ জানিয়েছিলেন, সন্তোষ নেই ফেলুর ছবিতে, জটায়ু হবে কে? সন্দীপ! সন্দীপ ছাড়াও অন্য এক পরিচালক ফেলুদা নিয়ে ছবি করেছেন।

বহু অভিনেতা জটায়ুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন কিন্তু কাউকেই উপযুক্ত মনে হয়নি। এবারেও সন্দীপ 'হত্যাপুরী' নাম যে ছবিটি করলেন তাতে জটায়ুর ভূমিকায় ছিলেন অরিজিৎ গুহ। অত্যন্ত খারাপ লেগেছে জটায়ু। জটায়ু অত মোটা ছিলেন না, তাছাড়া তাঁর মধ্যে যে সরলতা ছিল তাও উধাও অরিজিতের মধ্যে।

একই কথা ফেলুদার চরিত্র নিয়েও। কখনও সব্যসাচী চক্রবর্তী কখনও অন্য কেউ যেমন এবারে ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত , কেউই সৌমিত্রকে ছুঁতে পারেননি। সব্যসাচী কাছাকাছি গেছেন মাত্র অন্যরা তাও নন। পিতার গল্প নিয়ে আর কত সন্দীপ? এবারে নিজস্বতা আসুক।

one year ago
Godard: জ্ঞানের সন্ধানী জঁ লুক গদার, জানুন নিউ ওয়েভ ছবির অন্যতম পতাকা বাহককে

সৌমেন সুর: একসময় চায়ের দোকানে, রেস্তোরাঁ, রাস্তায়, ক্লাবে গদারকে নিয়ে রীতিমতো তর্কবিতর্ক হতো, বিদ্বজ্জনরা ঝড় তুলতো আলোচনায়। কখনও শোনা যেতো, 'তুই গদারের ছবি দেখিসনি। তাহলে তোর জীবনটাই বৃথা। আরে গোদারের ছবি দেখ, গদারকে বোঝ, কী রেঞ্জের সিনেমা প্রেজেন্ট করে সেটা একবার উপলব্ধি কর।' জঁ লুক গদার, আজকের বিষয় সুইস-ফরাসি এই চিত্র নির্মাতাকে। বিশ্ব চলচ্চিত্র নির্মাণ যখন ক্রমেই স্টুডিওমুখী, ঠিক তখন ফরাসি নিউ ওয়েভ ছবিতে গদারে অবদান অনস্বীকার্য।

সিনেমার পিকাসো হলেন জঁ লুক গদার। এই প্রথম কোনো ফিল্মমেকার বিশ্ব সিনেমার প্রেক্ষাপটে এলেন, যিনি প্রথম ছবি থেকেই নিজের পথ নিজে বাছলেন। ১৯৬০ সালের তাঁর প্রথম ছবি ব্রেথলেস থেকে ২০১৮-র শেষ ছবি দ্য ইমেজ বুক পর্যন্ত; তাঁর ছবি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় বাস্তবিক জীবন থেকে দৈনন্দিন রাজনীতির প্রভাব সেলুলয়েডে তুলে আনা যায়। এসব তিনি চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন। তাই শুধু নয় সেই রাজনীতিকে একইসঙ্গে কাঠগড়ায় তুলতে ছাড়লেন না তিনি। আবার সাংস্কৃতিক শক একদিকে, আর অন্যদিকে শহুরে অর্থনীতির ধাক্কা। এসব সবকিছু তাঁর ছবির চিত্রনাট্যের মাধ্যমে বড় পর্দায় ফুটে উঠেছে কখনও মাই লাইফ টু লিভ, কখনও দ্য চাইনিজ, কখনও মেড ইন ইউএসএ, কখনও লেটার টু জেন, কখনও ফিল্ম সোশালিজম; এমনকি শেষ ছবি দ্য ইমেজ বুক হিসেবে। 

গদারকে বলা হয় দার্শনিক সাত্রে ও ব্রেখটের ভাব শিষ্য। সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে (অ্যানথ্রোপলজি) তিনি আগ্রহী হয়ে উঠলেন সাত্রের দর্শনে। তাঁর মন্তব্য, 'আমি মনে করি শিল্প এক বিশেষ বন্দুক। সব আইডিয়াও বন্দুক।' গদার মনে করেন আমাদের প্রকৃত সত্তার অন্বেষণ একজন চলচ্চিত্রকারের লক্ষ্য। বিশ শতকের সিনেমায় জঁ লুক গদারছিলেন আকাশচুম্বী প্রতিভাধর, যিনি চলচ্চিত্রে প্রবেশ করে ষাটের দশকে আন্তর্জাতিক সিনেমার মানচিত্র পালটে দিলেন।

সত্যজিৎ রায়ের ভাষায়, 'চিত্র ভাষার ব্যবহারে বিপ্লবের পুরোধা গদার মুদ্রিত প্রবন্ধ এবং চলচ্চিত্রায়িত বক্তব্যকে সমার্থক করে দিলেন। তাঁর সিনেমায় অন্তর্ভুক্ত হল সংবাদ, রাজনীতি, দর্শন, বিজ্ঞাপনের ভাষা, সাহিত্য, সঙ্গী, চিত্রকলা ভাস্কর্য, স্থাপত্য, প্রযুক্তি, খবরের কাগজে প্রকাশিত চিঠিপত্র। বিষয় হিসেবে এলো বিপ্লব এবং নারী। সব মিলিয়ে তৈরি হলো আধুনিকতার এক জটিল কোলাজ। ডকুমেন্টারি ও ফিকশনের দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক গদারের সিনেমার বৈশিষ্ট্য।

গদারের ছবিতে প্রথম ফুটে ওঠে রাজনীতির এক তাৎপর্যপূর্ণ রূপ। তাঁর ছবিতে ফিরে আসে নারী, সঙ্গীত এবং সমুদ্র। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ইউরোপ মানুষের মোহভঙ্গ ও সামাজিক অবক্ষয় তুলে ধরে তাঁর ছবিগুলো। তিনি বোঝান এই সমাজে শিল্প, সংস্কৃতি, বিবেকবোধ; সবকিছুই পণ্য হয়ে উঠছে। ৯১ বছরে গদার মৃত্যুকে আলিঙ্গন করলেন। তবে যতদিন পৃথিবী থাকবে, সিনেমা নামক মাধ্যম থাকবে, ততদিন গদার আমাদের হৃদয়ে লীন হয়ে থাকবেন।

তথ্যঋণ: পার্থ মুখোপাধ্যায়, রাহুল দাশগুপ্ত

one year ago


Documentary: সার্থক তথ্যচিত্র নির্মাণে বাংলা পরিচালকদের ভূমিকা, ডকুফিল্মের ইতিহাসের দ্বিতীয় পর্ব

সৌমেন সুর: পল জিনসের সাহচর্যে কিংবদন্তী তথ্যচিত্র নির্মাতা শুকদেব, ক্লেমেন্ট ব্যাপটিস্টা, শান্তি চৈধুরী, হরিসাদন দাশগুপ্ত প্রমুখ ভারতীয় তথ্যচিত্রকে নতুন দিশা দেখান। হরিসাধন দাশগুপ্ত ফিল্ম ডিভিশন, ইউনেস্কো, টি বোর্ড, সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি প্রভৃতি বিভিন্ন সংস্থার হয়ে নানা ধরনের তথ্যচিত্র তৈরি করেন। তবে তথ্যচিত্রের গৌরবময় দিন আসে সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে। তিনি মোট পাঁচটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এর মধ্যে চারটি জীবনীমূলক এবং একটি তথ্যকেন্দ্রিক।

জীবনীমূলক তথ্যচিত্রগুলি হলো- 'Rabindranath Tahgore (1961)', শিল্পী শিক্ষক বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়ের জীবনী অবলম্বনে 'The Inner Eye(1972)', বিখ্যাত ভরতনাট্যম শিল্পী বালা সরস্বতীকে নিয়ে 'Bala'(1976), সুকুমার রায়ের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে 'সুকুমার'(1987) এবং তথ্যকেন্দ্রিক রঙিন ছবি 'Sikkim'। সবক'টি তথ্যচিত্রে সত্যজিৎ তাঁর নিজের মৌলিক ঘরনার সাক্ষর বহন করেছে। তবে সত্যজিতের মতে 'The Inner Eye' হল সেরা তথ্যচিত্র। তিনি বলেন, 'এ ছবি নির্মাণ করেছি-আমি আমার গভীর অনুভূতি থেকে।' আর এক প্রতিভাবান চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক বেশ কয়েকটা তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। যেমন  'scientist of tomorrow', 'chhou dance of purulia', 'দুর্বার গতি পদ্মা' , 'ইয়ে কিয়ু' আর তাঁর সর্বশেষ তথ্যচিত্র 'রামকিংকর'।

তবে তিনি এই মহান কাজটি শেষ করে যেতে পারেননি। যাই হোক পল জিনসের সুযোগ্য সহকারী শান্তি চৌধুরী, তাঁর তথ্যচিত্রগুলির মধ্যে চিত্রকর অবীন্দ্রনাথ থেকে পরিতোষ সেন, মকবুল ফিদা হোসেন অবধি যে চিত্রকলা তৈরি করেন, তা দর্শক মহলে বিশেষ সমাদর লাভ করেছে। কলকাতা ফিল্ম সোসাইটির আর এক পুরোধা চিদানন্দ দাশগুপ্ত-এর 'Patrait of a City' তথ্যচিত্রটি বিদগ্ধ মহলে সাড়া ফেলে। (চলবে) 

2 years ago
Pradip Mukherjee: শেষরক্ষা হল না, সেপ্টিসেমিয়ার কারণে প্রয়াত অভিনেতা প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

ফের শোকের ছায়া বাংলা সিনে দুনিয়ায়। প্রয়াত বিশ্ববরেণ্য পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) 'জন অরণ্য' (Jana Aranya) ছবির বর্ষীয়ান অভিনেতা প্রদীপ মুখোপাধ্যায় (Pradip Mukherjee)। পরিবার সূত্রে খবর, গুরুতর অসুস্থ হয়ে গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে (Hospital) ভর্তি ছিলেন তিনি। সেপ্টিসেমিয়ার (রক্তে বিষক্রিয়া) সমস্যা ছিল তাঁর।  জানা গিয়েছে, ফুসফুসে সংক্রমণ এবং নিউমোনিয়া-সহ বেশকিছু শারীরিক সমস্যাও ধরা পড়েছিল অভিনেতার।

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর প্রয়াণে অভিনয় জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল, জানান তিনি। অভিনেতার পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানান।

পরিচালক নির্মল চক্রবর্তীর ছবি ‘দত্তা’র শ্যুটিং করছিলেন অভিনেতা। দু’দিন শ্যুটিংও করেন। তারপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। প্রথমে নাগেরবাজারের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তারপর সেখান থেকে দমদম ক্যান্টননেন্ট মিউনসিপ্যাল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই সোমবার সকাল ৮.১৫ মিনিট নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

১৯৭৬ সালে সত্যজিৎ রায়ের 'জন অরণ্য' ছবির হাত ধরে অভিনয় কেরিয়ার শুরু করেছিলেন প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। এরপর একের পর এক সিনেমাতে কাজ করেছেন। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ‘দূরত্ব’, ‘অশ্লীলতার দায়ে’, ‘হীরের আংটি’, ‘শাখা প্রশাখা’, ‘দহন’, ‘উৎসব’-এর মতো ছবি। কলকাতার চোরবাগান এলাকার এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেন তিনি। নিয়মিত তপন থিয়েটারে একের পর এক নাটক করতেন। আইনে স্নাতক হওয়ার পর আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তবে সপ্তাহান্তে নাটকের রিহার্সাল করতেন নিয়ম করে।

2 years ago
Pradip Mukherjee: ভেন্টিলেশনে সত্যজিতের 'সোমনাথ' প্রদীপ মুখোপাধ্যায়, আরোগ্য কামনায় টলিপাড়া

ফের মনখারাপ বাংলা সিনে দুনিয়ায়। বিশ্ববরেণ্য পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) 'জন অরণ্য' (Jana Aranya) ছবির অভিনেতা প্রদীপ মুখোপাধ্যায় (Pradip Mukherjee) ভেন্টিলেশনে। পরিবার সূত্রে খবর গুরুতর অসুস্থ হয়ে গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে (Hospital) ভর্তি রয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, ফুসফুসে সংক্রমণ এবং নিউমোনিয়া-সহ বেশকিছু শারীরিক সমস্যা ধরা পড়েছে অভিনেতার।

পরিচালক নির্মল চক্রবর্তীর ছবি ‘দত্তা’র শ্যুটিং করছিলেন অভিনেতা। দু’দিন শ্যুটিংও করেন। তারপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। প্রথমে নাগেরবাজারের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু বর্তমানে দমদম ক্যান্টননেন্ট মিউনসিপ্যাল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত ২২ অগাস্ট ওই হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। জানা গিয়েছে, তখন থেকেই শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না প্রদীপের। বর্তমানে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রয়েছেন প্রবীণ অভিনেতা। অবস্থার অবনতি হতে থাকে। শনিবার যাও কিছুটা সাড়া দিচ্ছিলেন রবিবার সেটাও দিচ্ছে না বলে খবর। অভিনেতার অসুস্থতার খবরে উদ্বিগ্ন টলিপাড়া। তাঁর আরোগ্য কামনা করছেন শিল্পীদের একটা অংশ।

১৯৭৬ সালে সত্যজিৎ রায়ের 'জন অরণ্য' ছবির হাত ধরে অভিনয় কেরিয়ার শুরু করেছিলেন প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। এরপর একের পর এক সিনেমাতে কাজ করেছেন। কলকাতার চোরবাগান এলাকার এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেন তিনি। নিয়মিত তপন থিয়েটারে একের পর এক নাটক করতেন। আইনে স্নাতক হওয়ার পর আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তবে সপ্তাহান্তে নাটকের রিহার্সাল করতেন নিয়ম করে।

2 years ago