
মিনি ট্রাকের ধাক্কায় (Accident) মৃত্যু (Death) হল এক সাইকেল আরোহীর। শনিবার সাত সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সাগরদিঘির (Sagardighi) ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। ঘটনার পর স্থানীয়রা আহত অবস্থায় ওই সাইকেল আরোহীকে উদ্ধার করে সাগরদিঘি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় ওই সাইকেল আরোহীর। এই ঘটনার পর থেকেই পলাতক ওই ঘাতক ট্রাকের চালক। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস (Police)।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত ওই ব্যক্তির নাম আল্লারেখা শেখ। শনিবার সকালে বেলসনডা এলাকা থেকে সাইকেলে করে বাজার করতে যাচ্ছিল আল্লারেখা শেখ। সেই সময়ই ধুমারপাহাড় এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি মিনি ট্রাক এসে তাঁর সাইকেল ধাক্কা মারে। ধাক্কার জেরে সাইকেল থেকে ছিটকে রাস্তার উপর পড়ে যান তিনি। উল্টে যায় মিনি ট্রাকটিও। স্থানীয়দের দাবি, এই ঘটনার পরেই আহতকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শেষ রক্ষা হয়নি।
সাগরদিঘী (Sagardighi) ভোটের ফলাফলের তিন মাস পর দলবদল করলেন কংগ্রেসের (Congress) একমাত্র বিধায়ক (MLA) বাইরন বিশ্বাস। আজ অর্থাৎ সোমবার কংগ্রেসের হাত ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন কংগ্রেসের একমাত্র বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস। যদিও তিনি সম্প্রতি জানিয়েছিলেন তিনি কংগ্রেস করবেন। তৃণমূলে যাওয়ার কোন প্রশ্নই নেই।
সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেন তিনি। যদিও আপাতত এ ঘটনাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব। এ বিষয়ে কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী বলেন, ' আমরা এবার থেকে একটু সচেতন হব প্রার্থী বাছার কাজ বুঝে শুনে করতে হবে। অধীর বাবু উনার উপর ভরসা করেছিলেন, কিন্তু সেই ভরসা উনি রাখলেন না।'
মনি ভট্টাচার্য: 'আমি কংগ্রেসে ছিলাম, কংগ্রেসে আছি, কংগ্রেসেই থাকব।' সিএন ডিজিটালকে সাফ জানালেন মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির (Sagardighi) বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস (Bayron Biswas)। বর্তমানে শাসকদলের কাছে সাগরদিঘি যে এক্সফ্যাক্টর সেটা স্পষ্ট হয়েছে সংখ্যালঘু দফতর মমতা (Mamata Banerjee) নিজের কব্জায় নেওয়ার পরই। এরপর জনসংযোগ যাত্রায় অভিষেক বন্দোপাধ্যায় রানীনগরের সভা থেকে বায়রনকে উদ্দেশ্য করে বার্তা দেন যে তাঁর জন্য মমতার দুয়ার সবসময় খোলা। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শোরগোল। এবার সিএন ডিজিটালের কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত মুখ খুললেন বায়রন বিশ্বাস। জানালেন কী করবেন এবং আগাম প্রস্তুতি কী।
রানীনগরে অভিষেকের বার্তার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে যাওয়া নিয়ে বায়রনের স্পষ্ট মত, 'অবশ্যই যাবো। সাগরদীঘির উন্নয়নের জন্য অবশ্যই যাবো। কিন্তু ওদের দলে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসছে না।'
সম্প্রতি তৃণমূল ঘনিষ্ঠ মহলে কানাঘুষো শোনা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বায়রন বিশ্বাসকে সরকারি কোনও পদে বসাতে পারেন। সে বিষয়ে তিনি এখনও কিছু জানেন না বলেই জানান তিনি। এ বিষয়ে সোমবার সিএন-ডিজিটালকে বায়রন বলেন, 'সাগরদিঘির উন্নয়নের কাজে প্রয়োজন হলে অবশ্যই পদ গ্রহণ করব। কিন্তু দলীয় পদ গ্রহণ করব না।' বায়রন বলেন, 'সরকারি পদের সঙ্গে তৃণমূলে যোগদানের কোনও সম্পর্ক নেই, ফলে উন্নয়ন করার সুযোগ থাকলে সেই পদ গ্রহণ করব।'
রাজ্য যখন তৃণমূলের জয়ের জোয়ার, সংখ্যালঘু ভোট যখন তৃণমূলের শিয়রে। তখন সাগরদিঘিতে হঠাৎ একটা ছেলে কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়ে গোটা রাজ্যকে নাড়িয়ে দিয়েছে। প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে, দুর্নীতি হলে, কাজে গাফিলতি থাকলে সংখ্যালঘু ভোট ঘুরে যেতে পারে, আর সেটিই যে এক্সফ্যাক্টর হতে পারে সেটা ভালোমতই জানেন মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেজন্যই হয়ত সাগরদিঘির হারের পরেই সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর নিজের হাতে নিয়েছেন। এবার ওই কেন্দ্রের জয়ী কংগ্রেসের প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসকে বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। স্পষ্ট জানিয়েছেন, তৃণমূলের দুয়ার তাঁর জন্য সবসময় খোলা।
সাগরদিঘি এক্সফ্যাক্টর বুঝেই কি তৃণমূল বায়রনকে প্রভাবিত করতে চাইছে! এ প্রশ্নের উত্তরে সিএন-ডিজিটালকে বায়রন বিশ্বাস জানিয়েছেন, 'এটা নিজের উপর নির্ভর করে, ওরা প্রভাবিত করলেই যে আমি চলে যাবো এরকম কোনও ব্যাপার না। ওরা প্রস্তাব দিতে পারে, কিন্তু আমার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। আমি আবার বলছি, আমি কংগ্রেসে ছিলাম, কংগ্রেসে আছি, কংগ্রেসেই থাকব।' বায়রন অবশ্য এরপরে আরও বলেন, 'উন্নয়নের জন্য কোনও সরকারি পদ দিলে আমি অবশ্যই যাবো।'
প্রসূন গুপ্ত: অমিত শাহ দুদিনের সফরে এসে একটাই জনসভা করেছেন, সেটা অনুব্রত-হীন বীরভূমে। শাহী ভাষণ শুনে কংগ্রেস-সিপিএম নিজেদের সামাজিক মাধ্যমে দাবি করছেন, কী এমন ভাষণ দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যা যা বললেন তাতে নাকি আখেরে সুবিধা হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা শাসক দল তৃণমূলের। অথচ শোনা গিয়েছে যথেষ্ট আক্রমণাত্মক এবং চাঁচাছোলা বক্তব্য রেখেছেন অমিত শাহ। একাধিক ইস্যুতে তুলোধোনা করেছেন তৃণমূলকে। রাজ্যজুড়ে প্রসাশনিক অব্যবস্থার জন্য দায়ী করেছেন 'দিদি'-কে। তিনি বলেছেন, 'আগামীতে মমতার পর তাঁর ভাতিজা মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না, কারণ ক্ষমতায় আসবে বিজেপি।' বারবার ভাষণে আক্রমণ করেছেন 'পিসি-ভাইপোকে।' তবে কেন নেতিবাচক ভাবছে বাম-কংগ্রেস জোট?
জোট প্রতিনিধিরা বলছেন, লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে এমন ভাষণ তিনি হিসাব করে দিয়েছেন যাতে লাভ হবে মমতার। সম্প্রতি সাগরদিঘির নির্বাচনে তৃণমূলকে হারিয়ে আসন দখল করেছে বাম-কংগ্রেস জোট। মুর্শিদাবাদের এই বিধানসভা মুসলিম প্রধান। কাজেই এ রাজ্যের ৩২% মুসলিম ভোট ভাগাভাগি হলে আখেরে লাভ বিজেপির। কিন্তু বিজেপি তৃতীয় স্থানে চলে গিয়েছে। হিন্দু ও মুসলিম ভোটের বেশিটাই গিয়েছে কংগ্রেসে, ধারণা জোটের। এটা যদি সারা রাজ্যের চিত্র হয়, তবে নাকি বিজেপি-তৃণমূল আগামীতে ক্ষয়িষ্ণু হয়ে যাবে।
জোটের লোকেরা বলছে, মুসলিম ভোটে ফের যাতে তৃণমূলের বাক্সে আসে তার কারণে অমিতের বক্তব্যের কিছু অংশকে তারা তুলে ধরছে।
১) যেমন অনুপ্রবেশকারীদের তাড়াতে হবে
২) রাম নবমীর মিছিলে যারা হামলা করেছে তাদের চিহ্নিত করতে হবে
এই তিনটি লাইন কাদের উদ্দেশে বলার অপেক্ষা থাকছে কি? দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যে কারা ভয় পাবে? শঙ্কিত হয়ে ঠিক কাকে ভরসা করে ভোট দেবে সেই অংশ? এই প্রশ্নের উত্তরগুলো সহজ ভাষায় দিয়েছে বাম-কংগ্রেস জোটের কারবারীরা।
মেয়ের বিয়ের (Marriage) জন্য টাকা জোগাড় করতে না পারায়, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী (Suicide) এক ব্যক্তি। শুক্রবার রাতে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সাগরদীঘি থানা এলাকার ঘটনা। পুলিস জানিয়েছে মৃত ব্যক্তির নাম চন্দন মন্ডল। শুক্রবার সাগরদিঘি থানার পোড়াডাঙ্গা রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায়, রেল লাইনের পাশে নিম গাছে ওই ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। সঙ্গে সঙ্গে পুলিসকে খবর দেওয়া হয়, পুলিস ঘটনাস্থলে এসে ওই ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে। এবং মৃতদেহটিকে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, চন্দন মন্ডল নামের ওই ব্যক্তি সাগরদিঘির লালিপালি এলাকার বাসিন্দা। সামনের মাসে অর্থাৎ মে মাসে, মেয়ের বিয়ের জন্য টাকা জোগাড় করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। টাকা জোগাড় করতে না পারায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় ওই ব্যক্তি, এমটাই মনে করছেন স্থানীয়রা। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা আন্দোলন (DA Agitation), নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ড, স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে লাগাতার ধর্না আন্দোলন। পাশাপাশি সাগরদিঘির (Sagardighi Bye Poll) ফল এবং একের পর এক তৃণমূল নেতার (TMC Leader) জেল যাত্রা। এই আবহে সামনেই কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Vote)। আর তাই অনুব্রত-হীন বীরভূমের দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। যেহেতু বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তাই দলের ত্রুটি-বিচ্যুতি ঢাকতে তৃণমূলকে এবার বাড়তি সময় দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালীঘাটের বৈঠকে (Kalighat Meeting) এই সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, জেলা ধরে ধরে প্রতি শুক্রবার হবে সাংগঠনিক বৈঠক। এদিন দলের সুপ্রিমো একাধিক দায়িত্ব ভাগ করে দেন। আগামি পঞ্চায়েত ভোট ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়ার ডাক দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এদিনের বৈঠকে যুব সংগঠন শক্তিশালী না করতে পাড়ার ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়েছেন যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ। এদিন সাংসদ সুদীপ বন্দোপাধ্যায়, মালা রায় এবং বিধায়ক অতীন ঘোষ, পরেশ পালকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দেন মমতা। পুরনো ফরম্যাট মেনে জেলাভিত্তিক পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব এদিন ভাগ করে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি জেলা দেখার দায়িত্বে গৌতম দেব। কোচবিহার জেলা বিশেষভাবে দেখার জন্য পার্থপ্রতিম রায়, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং উদয়ন গুহকে নির্দেশ। সাগরদিঘি ভোটের প্রভাব তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলে। তরুণ মোশারফ হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংখ্যালঘু সেলের সভাপতির দায়িত্ব। উত্তর দিনাজপুর মালদা-মুর্শিদাবাদ দেখার দায়িত্বে দুই সংখ্যালঘু মুখ সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ও মোশারফ হোসেন।
বিশেষ দায়িত্বে রয়েছেন সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও। দক্ষিণ দিনাজপুর দেখবেন তাপস রায়, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়ার দায়িত্বে মলয় ঘটক। মানস ভুঁইয়া দেখবেন দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলা। জানা গিয়েছে, ফিরহাদ হাকিম দেখবেন হাওড়া-হুগলি, উত্তর দিনাজপুর আর বীরভূম দেখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। বর্ধমান, দার্জিলিংয়ের সঙ্গে নদীয়া জেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে অরূপ বিশ্বাস। এই প্রসঙ্গে দলের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান , এঁরা কেউ অবজারভার নয়। এঁদের উপর সংগঠন দেখার দায়িত্ব।
প্রসূন গুপ্ত: সাগরদিঘির ভোটের (Sagardighi Bye Poll) ফল দেখে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। ভোটের ফলের পর মেজাজও ঠিক ছিল না তাঁর। মহাজোট নিয়ে ব্যক্ত করেন তাঁর বক্তব্য এবং অধীর চৌধুরীকে (Adhir Chowdhury) আক্রমণ করেন তিনি। এরপর থেকেই শুরু নানা বিতর্ক। প্রথমত কংগ্রেসের নেতা এবং মুখপাত্র কৌস্তভ বাগচী মমতার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আক্রমণ করে গ্রেফতার হয়েছিলেন। গ্রেফতারির দিনেই ছাড়া পেয়ে তিনি মাথা মুড়িয়ে প্রতিজ্ঞা করেন মমতা সরকারকে (Mamata Government) উৎখাত না করা পর্যন্ত তিনি মাথায় চুল গজাতে দেবেন না।
অর্থাৎ রাজ্য রাজনীতিতে নাটক তুঙ্গে। এরপরই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার বৈঠকে সরাসরি সহকর্মীদের প্রশ্ন করেন যে, সাগরদিঘিতে সংখ্যালঘু ভোট কমল কেন? তাতে অনেকেই অনেক উত্তর দেন। কেউ বলেন, প্রার্থী পছন্দ হয়নি এলাকার মানুষের। এই উত্তরে মোটেই খুশি হননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি দলের সংখ্যালঘু মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন, যে সংখ্যালঘু এলাকাগুলিতে গিয়ে সঠিক তথ্য নিয়ে আসতে।
মমতা কেন বাংলার সব রাজনৈতিক দলই জানে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু ভোট প্রায় ৩২% কাজেই এই ভোটকে অগ্রাহ্য করা যায় না। একসময়ে বামেরা এই ভোটের সিংহভাগ পেত। এরপর নন্দীগ্রাম-কাণ্ডের পর এই ভোট ক্রমশই তৃণমূলে চলে যায়। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল বহু আসন বিজেপির কাছে হারায়। কিন্তু দেখা গিয়েছে, যেখানে মুসলিম ভোট সেখানেই তৃণমূল জিতেছে।
মোদী ঝড়ে এই নির্বাচনে দক্ষিণ ভারত ছাড়া এক বাংলার বিজেপির থেকে তৃণমূল ৪টি আসন বেশি পেয়েছিলো। ২১-এর নির্বাচনে একবগ্গা মুসলিম ভোট পেয়েছিলো মমতা। কাজেই তিনি সাগরদিঘির ফলাফলে ক্ষুব্ধ হবেন তাতে আর আশ্চর্যের কী আছে। তিনি জানেন ফের নন্দীগ্রাম ফর্মুলা যদি ফের পশ্চিমবঙ্গে সাগরদিঘির রূপ নিয়ে আসে তবে সর্বনাশ অনিবার্য। কাজেই তৃণমূল সুপ্রিমো যেভাবেই হোক সংখ্যালঘু ভোট ফিরে পেতে মরিয়া।
আগামী পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামিয়েছেন নেতাদের এবং পাক্কা খবরের অপেক্ষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসূন গুপ্ত: একুশের ভোটে ৫০ হাজারে জেতা আসনে পরাজিত তৃণমূল। ক্ষমতায় থাকা তৃণমূল কেন পারলো না সাগরদিঘি ধরে রাখতে? কেনই বা কংগ্রেসের বাইরন বিশ্বাস জিতলো? এই আসনে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী জিতবে, তা আগেই পরম দর্পে প্রকাশ করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সিএন পোর্টালের বিশ্লেষণে কী উঠে আসে, তাই ব্যক্ত করি।
১) সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া শিক্ষাক্ষেত্রের কেলেঙ্কারি কিন্তু কিছুটা ছাপ নিশ্চিত ফেলেছে কিন্তু এই ইস্যুর উপর ভোট হয়নি।
২) সাগরদিঘি মুলসিম অধ্যুষিত বিধানসভা। ৬৮ শতাংশ সংখ্যালঘুর বাস। কংগ্রেসের গড় ছিল একসময়। কিন্তু এখন থেকে সুব্রত বিশ্বাসের জেতার কারণ তিনি ছিলেন মুসলিমদের "মসীহা"।
৩) কংগ্রেস এখানে প্রার্থী করে একেবারে নতুন মুখ ব্যবসায়ী বাইরন বিশ্বাসকে। অন্যদিকে তৃণমূল প্রার্থী দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু এলাকায় তেমন জনপ্রিয় ছিলেন না।
৪) অন্যদিকে বিজেপি এখানে জিততো না কোনওসময়েই। কাজেই ব্যবসায়ী দিলীপ সাহাকে প্রার্থী করে পদ্ম শিবির।
৫) প্রচারের মূল দায়িত্বে ছিল কংগ্রেসের জোট সঙ্গী সিপিএম। রেজিমেন্টেড দল সিপিএম। কাজেই তারা জানে কোথায় কোন তাস খেলতে হয়। এলাকায় এলাকায় তারা প্রচার করেছে। গুঞ্জন প্রচারে তারা বলেছে, তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে একটা সমঝোতা আছে। জনতা দেখুক ত্রিপুরায় তৃণমূল প্রার্থী দিয়েছে শুধুমাত্র বিজেপিকে জেতানোর জন্য। দ্বিতীয় তাস পড়েছে এই যে, সংখ্যালঘু এলাকায় কেন এক ব্রাহ্মণকে প্রার্থী করা হলো? তৃতীয় তাস মমতা আজকাল আর গরিবের দুঃখ বোঝে না, নেতারা বিশাল বড়োলোক অতএব এদের ভোট নয়। এই প্রচার কিন্তু সুনামির মতো ছড়িয়ে গিয়েছিল।
৬) বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী পরিষ্কার প্রচারে বলেছিলেন, সনাতনী ভোট বিজেপিতে পড়ুক এবং সংখ্যালঘু ভোটার জন্য অন্য ব্যবস্থা আছে। প্রশ্ন সেই অন্য ব্যাপারটি কী? দিন শেষে দেখা গেলে সংখ্যালঘু ভোটের ৬০ শতাংশ পড়েছে কংগ্রেসের বাক্সে এবং ৩৪ শতাংশ অন্য ভোটের প্রায় ২৫ হাজার ভোট বিজেপিতে পড়েনি, যা কিনা গত ২০২১ এর নির্বাচনে পড়েছিল। এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তৃণমূলকে সাগরদিঘিতে পরাজিত করেছে।
মানুষ জোটকে ভরসা করে ভয় কাটিয়ে ভোট দিয়েছে। প্রমাণ হয়েছে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপরাজেয় নয়। তাঁকে পরাজিত করা সম্ভব। আমাদের জয়ের অঙ্ক বিশাল। সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফল বিশ্লেষণে এই মন্তব্য করেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। বৃহস্পতিবার উপনির্বাচনের ফল নিশ্চিত হতেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতাকে কুর্নিশ জানান অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, 'কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরপেক্ষতায় সাধারণ মানুষ ভোট দিতে বেরোতে পেরেছে। শাসক দল ছাপ্পা ভোটের প্রস্তুতি নিলেও, কেন্দ্রীয় বাহিনী সেই উদ্যোগ ব্যর্থ করে দিয়েছে।'
এদিকে, সাগরদিঘি উপনির্বাচন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনৈতিক জোটকে কাঠগড়ায় তুলেছে। তিনি বলেছেন, 'সাগরদিঘিতে অনৈতিক জোটের তীব্র নিন্দা করছি। বিজেপির ভোট কংগ্রেসে গিয়েছে, সিপিএম-র ভোটও কংগ্রেসে গিয়েছে। তবে গণতন্ত্রে হারজিত থাকবেই। এই ফলকে স্বাগত জানাই।' বিরোধী দলগুলো সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করেছে। তাই এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, এভাবেও সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী।
তাঁর দাবি, 'তৃণমূল কংগ্রেস এই তিন শক্তিকে একাই পর্যুদস্ত করবে। যেভাবে একুশের ভোটে করেছে, আগামি দিনেও করবে। উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।'
এই দুই দলের পাশাপাশি সাগরদিঘি উপনির্বাচনের তৃতীয় শক্তি বিজেপির দাবি, 'আমরা সাংগঠনিকভাবে ওখানে দুর্বল। বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের শতাংশ সাংগঠনিক শক্তির নিরিখে আশানুরূপ। গতবার যে বুথে বিজেপি ঢুকতে পারেনি, এবার সেই বুথে দলের পোলিং এজেন্ট ছিল।'
অবশেষে বঙ্গ বিধানসভায় কংগ্রেসের প্রতিনিধি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে যেখানে হাত শিবিরের বিধায়ক শূন্য ছিল বিধানসভা। সেখানে দু'বছর পর সাগরদিঘিতে (Sagardighi By Poll) লাল আর সবুজ আবীরের 'অকাল হোলি'। বিধানসভা উপনির্বাচনে জয় কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের। ২২ হাজার ৯৮০ভোটে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের দেবাশিষ বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী। এই ভোটে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী ছিলেন বাইরন। জানা গিয়েছে, কংগ্রেস প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ৮৫ হাজার ৪৩৭, পাশাপাশি শাসক দলের প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ৬৩, ০০৩ এবং বিজেপির দিলীপ সাহা পেয়েছেন ২৫,৫০৬টি ভোট। পদ্ম শিবিরের ঝুলিতে ১৪.১১% ভোট। এই উপনির্বাচনে তিন নম্বরে বিজেপি।
কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোটের হার ৪৭%-এর বেশি। তৃণমূল পেয়েছে প্রায় ৩৮% ভোট। ঘটনাচক্রে রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত সাহার মৃত্যুর পর এই আসন ফাঁকা হলে উপনির্বাচন ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ২৭ ফেব্রুয়ারি দেশের দুই রাজ্যের বিধানসভার সঙ্গে এই আসনে উপনির্বাচন আয়োজিত হয়। ভোট পড়ে প্রায় ৭৪%। প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে সম্পন্ন হয় ভোট।
এদিন ইভিএম খুলতেই ক্রমেই এগোতে শুরু করেন কংগ্রেস প্রার্থী। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সেই লিড ধরে রাখেন জোট প্রার্থী। কংগ্রেসের এই জয় পঞ্চায়েত ভোটের আগে মুর্শিদাবাদে অনেকটা অক্সিজেন যোগাবে বাম-কংগ্রেসের জোট রাজনীতিকে। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তথ্যসূত্র: নির্বাচন কমিশন
প্রসূন গুপ্ত: পশ্চিমবঙ্গের মানুষের নজরে ছিল মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি উপনির্বাচনের দিকে। রাজ্যের মন্ত্রী তথা এই আসনের বিধায়ক সুব্রত সাহার মৃত্যুতে উপনির্বাচনের ব্যবস্থা করে নির্বাচন কমিশনা। লড়াই তিন প্রধান দলের মধ্যেই। একদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্যদিকে বিজেপির দিলীপ সাহা এবং সিপিএম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী মহম্মদ বায়রন বিশ্বাস।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর পর্যবেক্ষণে ভোট হচ্ছে সঙ্গে বুথের বাইরে থেকেছে রাজ্য পুলিস। সাধারণত উপনির্বাচনে ভোট কম হয়ে থাকে। কিন্তু বেলা ১১-টার মধ্যেই ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে কমিশন সূত্রে খবর। বেসরকারিভাবে জানা গিয়েছে, বেলা ১-টার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পড়ে গিয়েছে। সাগরদিঘির প্রায় ২৫ হাজার ভোটার কর্মসূত্রে রাজ্যর বাইরে, তাঁদের মধ্যে জানা গেল মাত্র ৫ হাজার ফিরেছে ভোট দিতে। এরা সবাই সংখ্যালঘু ভোটার।
এই কেন্দ্রে আড়াই লক্ষের মতো ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ৬৮ শতাংশ সংখ্যালঘু অর্থাৎ এরাই এই কেন্দ্রের সংখ্যাগুরু। বাকি ৩২ শতাংশ হিন্দু ভোটার। শোনা যাচ্ছিল, হাড্ডাহাড্ডি ভোট হবে মূলত তৃণমূল এবং কংগ্রেসের মধ্যে। একটা সময়ে এই মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস ও বামেদের চারণভূমি ছিল। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা থেকে ভোটাররা তাদের মত-মন পাল্টিয়ে তৃণমূলকেই ভোট দিচ্ছে, ব্যতিক্রম অধীর চৌধুরী।
অধীর মুর্শিদাবাদের অবিসংবাদিত নেতা। কিন্তু সেই তিনি কিন্তু ২০২১-এ দলকে এই জেলা থেকে একটিও আসন দিতে পারেননি। আসন পায়নি বামেরাও। বিধানসভায় স্বাধীনতা উত্তরযুগে কংগ্রেস-বাম ব্যতিত কর্মসূচি শুরু হয়। এবার কিন্তু মরিয়া লড়াই দেওয়ার জন্য এই জোট এলাকার পর এলাকায় প্রচার করছে। এবার ভোট প্রসঙ্গে জানা যাচ্ছে মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভোটই হচ্ছে।
একটু হৈ-চৈ ছাড়া এমন ভোট কোনদিকে হেলবে এখনও বোঝা মুশকিল। তবে বেলা দুটোতে কংগ্রেস প্রার্থী জানালেন তাঁকে নাকি কোনও বুথে গেলেই ঘেরাও করা হচ্ছে। অল্প অভিযোগ বিজেপিরও, তবে অনেকটাই রিলাক্স দেবাশিস। এবার অপেক্ষা ফলের।
আগামী ২৭শে ফেব্রুয়ারি সাগরদিঘিতে বিধানসভার উপনির্বাচন (Sagardighi Assembly By Poll)। তাই আগামী ১২ই ফেব্রুয়ারি থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর (Central Force) জওয়ানরা রাজ্যে আসতে শুরু করবেন। এমনকি ওই দিন থেকেই চলবে রুট মার্চ। যার জন্যে মোট ১৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করবে নির্বাচন কমিশন (ECI)। এমনকি এই ভোটের জন্য সাধারণ পর্যবেক্ষক হিসাবে আইএএস অফিসার ই রবীন্দ্রণকে দায়িত্ব দিয়েছে কমিশন। পুলিস পর্যবেক্ষক হিসাবে ওমপ্রকাশ ত্রিপাঠি-সহ অতিরিক্ত আরও পর্যবেক্ষক নিয়োগ করছে কমিশন।
চলতি মাসেই মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে বিধানসভার উপনির্বাচন। কমিশন জানিয়েছে, সাগরদিঘির মোট ২৪৬টি বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা থাকবে। এমনকি ভোট প্রক্রিয়া আরও অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে তিন জন পর্যবেক্ষক নিয়োগ করছে কমিশন। তাই এক সাধারণ পর্যবেক্ষক, এক পুলিশ পর্যবেক্ষক-সহ, এক ব্যয় পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত সাহার আকস্মিক মৃত্যুতে সাগরদিঘি আসনটি খালি হয়েছে। তাই ওই আসনে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন দিলীপ সাহা। আগামী ২৭শে ফেব্রুয়ারি ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হবে, ভোট গণনা আগামী ২ মার্চ।
উত্তর-পূর্বের তিন রাজ্যে বিধানসভা (Assembly Vote) ভোট ছাড়াও দেশের একাধিক রাজ্যে লোকসভা এবং বিধানসভা উপনির্বাচন (Assembly ByPoll)। সেই নির্ঘণ্ট বুধবার ঘোষণা করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন (ECI)। জানা গিয়েছে, লাক্ষাদ্বীপের একটি লোকসভা আসনে উপনির্বাচন হবে। একইভাবে অরুণাচল প্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গের একটি করে এবং মহারাষ্ট্রের দুটি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
অতএব একটি লোকসভা আসন এবং ৬টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি সব আসনে ভোট হবে। যদিও ভোট গণনা ২ মার্চ।
এই আসনগুলির মধ্যে রয়েছে লাক্ষাদ্বীপ (এসটি) লোকসভা আসন। বিধানসভা আসনগুলির মধ্যে রয়েছে অরুণাচল প্রদেশের লুমলা, ঝাড়খণ্ডের রামগড়, তামিলনাড়ুর ইরোড (পূর্ব), পশ্চিমবঙ্গের সাগরদিঘি, মহারাষ্ট্রের কসবা পেঠ এবং চিঞ্চওয়াড়।
সাগরদিঘি আসনের বিধায়ক সুব্রত সাহারত প্রয়াণে এই শূন্য বিধানসভায় উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা নির্বাচন কমিশনের। তবে জাতীয় রাজনীতির চোখ অবশ্যই থাকবে উত্তর-পূর্বের তিন রাজ্যের দিকে।
কাশ্মীরের আপেলের জগৎজোড়া খ্য়াতি। কিন্তু আপেলের জন্য় আর কাশ্মীরের অপেক্ষায় থাকতে হবে না। এ বঙ্গেই নাকি মিলবে আপেল। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে কাশ্মীরের কুলগাম এলাকায় আপেল বাগানে কাজ করতে গিয়ে জঙ্গি হামলায় মারা যান মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির ৫ শ্রমিক। আর এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় সাগরদিঘি এলাকার মানুষকে যাতে কাশ্মীরের আপেলবাগানে কাজ করতে যেতে না হয়, সেই কথা মাথায় রেখে আপেল চাষ করার প্রকল্প চালু করেন।
কিন্তু বর্তমানে কী অবস্থায় দাঁড়িয়ে আপেল চাষ, খোঁজ নিল সিএন পোর্টাল। সাগরদিঘির কৃষি খামারে যতদূর চোখ যায়, শুধু রুক্ষ্ম জমি। সাগরদিঘির সেই আপেল বাগানে এখন আপেল গাছ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। যত্নের অভাবে মারা গেছে আপেল গাছ। এখন আপেল বাগানে চড়ে বেড়াচ্ছে গবাদি পশু।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আপেল চাষের জন্য সাগরদিঘির কৃষি খামারে চারা রোপণ করা হয়। এর জন্য আপেল চাষে পারদর্শী স্থানীয় শ্রমিকও নিয়োগ করা হয়।
কিন্তু অভিযোগ, বছর তিনেক ধরে কাজ করার পরেও ওই শ্রমিকরা সঠিকভাবে বেতন পান নি। ফলে সাগরদিঘি কৃষি খামারের আপেল চাষের আর পরিচর্যা করতে পারেন না তাঁরা। শ্রমিকদের দাবি, কাশ্মীরে যেতে তাঁদের ভয় লাগলেও পেটের দায়ে ফের আপেল বাগানে কাজ করতে যেতে হচ্ছে। একাধিকবার প্রশাসনিকস্তরে জানিয়েও মেলেনি সুরাহা।
এদিকে যে উদ্দেশ্যে এই আপেল চাষের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ গাফিলতির কারণেই সফল হচ্ছে না বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। অন্য়দিকে জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমানকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
রাজ্য়ে কর্মসংস্থান নেই বলে বিরোধীরা সোচ্চার। কর্মসংস্থান নেই বলেই ভিন রাজ্য়ে পাড়ি দেন এ রাজ্য়ের বহ শ্রমিক। নিজের রাজ্য়ে কাজের আশায় ছিলেন যাঁরা,তাঁরা ফের বাধ্য় হয়ে কাশ্মীরমুখী।
দিন আনা দিনখাওয়া মানুষগুলোর কষ্ট যেন আর ফুরোয় না। করোনা কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছু। দু বছরের অতিমারী পরিস্থিতিতে জেরবার জনজীবন। ফের করোনা সংক্রমণের দাপট। এমনিতেই বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। সংক্রমণ রুখতে ফের রাজ্যে জারি কড়া বিধিনিষেধ। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জনজীবন বিপর্যস্ত।
এ এক অভিনব চুরি। পরিবারের মুখে দানাপানি তুলে দিতে শেষ পর্যন্ত চুরি? অবাক হলেও বিষয়টি সত্য়ি। নুন আনতে পান্তা ফুরায় ,তাই বাড়িতে রান্না করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কয়লার ট্রেন থেকে চলছে কয়লা চুরি। আর এই ছবি ধরা পড়ল মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে।
সূত্রের খবর,সাগরদিঘি ব্লকের গোসাইগ্রাম রেল স্টেশন থেকে পোড়াডাঙা হল্ট রেল স্টেশনের মাঝে যখন কয়লাবাহী ট্রেন এসে থামে তখন লালিপালি ,কুসুমখোলা সহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের বহু অদিবাসী মহিলারা ছুটে আসেন। কয়লাবাহী ট্রেন থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কয়লা বের করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ মহিলাদের বিরুদ্ধে। সেই কয়লা দিয়ে উনুন জ্বালিয়ে রান্না করে পরিবারের মুখে তুলে দেয় তারা।
কোথায় যাবেন সাধারণ মানুষ? কবে মিলবে একটু স্বস্তি, এই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করে প্রান্তিক আদিবাসী পরিবারগুলিতে। আর এভাবে দিনেরপর দিন কয়লা চুরিতে নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন ওয়াকিবহালমহলের।