
আগেই তারা ছিটকে গিয়েছিল টুর্নামেন্ট থেকে। তাই গ্রুপের শেষ ম্যাচে মাঠে নেমেছিল খোলা মনেই। মুম্বইয়ের (MI) বিরুদ্ধে নিজেদের ব্যাটিং শক্তি দেখাল হায়দরাবাদ (SRH)। রবিবার টস জিতে হায়দরাবাদকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল মুম্বই। কুড়ি ওভারে রানের পাহাড়ে উঠে ইনিংস শেষ করলেন মাক্রামরা। এই প্রথম টুর্নামেন্টে ১০০ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপ তৈরি করল হায়দরাবাদ। বিভ্রান্ত এবং মায়াঙ্কের ব্যাটে প্রথম উইকেটে ১৪০ রান করে হায়দরাবাদ।
প্রথম ব্যাট করতে নেমে ৪৭ বলে ৬৯ রান করেন বিভ্রান্ত শর্মা। ৪৬ বলে ৮৩ রানে আউট হন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। এই দুই ব্যাটার আউট হতে একটু স্বস্তি পান মুম্বইয়ের বোলারা। ওয়াংখেড়ে পাটা পিচের সুযোগ নিয়ে শুরু থেকেই হাত খুলে ব্যাট করেন হায়দরাবাদের দুই ওপেনার। মূলত তাঁদের ব্যাটেই ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২০০ রান করে দক্ষিণের এই দল।
তবে ঘরের মাঠে এদিনও বল হাতে নজর কারলেন আকাশ মাধওয়াল। এই ম্যাচেও ৩৭ রানে চার উইকেট আকাশের। একটি উইকেট জর্ডনের।
বৃহস্পতিবার হায়রাবাদের (SRH) রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষ সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বোলারদের নিয়ে কার্যত খেলা করলেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। ৮টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৩৫ বলে অর্ধশতরান পূর্ণ করেন। ১২টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৬২ বলে শতরানের গণ্ডি টপকে যান। দীর্ঘ চার বছর পরে আইপিএলে (IPL) সেঞ্চুরি করলেন কোহলি। এর আগে আইপিএলে তাঁর ব্যাট থেকে শেষ শতরান এসেছিল ২০১৯ সালে। আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ শতরানকারী হলেন কোহলি। মোট ৬টি শতরান করেছেন বিরাট। আইপিএলে সমসংখ্যক শতরান করেছেন তাঁর এক সময়ের সতীর্থ ক্রিস গেইলও।
৫টি শতরান করে দ্বিতীয় স্থানে জস বাটলার। ম্যাচে হেনরিক ক্লাসেনের শতরানে ভর করে ১৮৬ করে হায়দরাবাদ। রান তাড়া করতে নেমে ১৭২ রানের পার্টনারশিপ করেন কোহলি ও দুপ্লেসি। ৭১ রান করেন ডুপ্লেসি। ৮ উইকেটে ম্যাচ জেতে আরসিবি। উল্লেখ্য এই জয়ের ফলে আইপিএলের পয়েন্ট তালিকায় আরসিবি পাঁচ নম্বর থেকে উঠে এল চারে। তাদের প্লে-অফ খেলা নিশ্চিত। চার থেকে নেমে গেল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। চলতি আইপিএলে প্লে-অফের আশা শেষ হয়ে গেল কলকাতা নাইট রাইডার্সের।
সোমবারের গুজরাত (GT) ও হায়দরাবাদের (SRH) ম্যাচের পরে প্লে অফার দৌড়ে রয়েছে ৭ দল। ২০২৩ মরশুমের আইপিএলে (IPL) যা হচ্ছে তা নজিরবিহীন মানছেন সকলে। মঙ্গলবার আইপিএলের ৬৩ তম ম্যাচ। এখনও অবধি এই ম্যাচের আগে ৭ টি দল রয়েছে প্লে অফার দৌড়েই। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মত, এমনটা এর আগে কোনও আইপিএলে হয় নি।
রবিবার প্লেঅফে উঠে গেছে হার্দিক পাণ্ড্যর গুজরাত। গুজরাত ১৩ টি ম্যাচ খেলে ১৮ পয়েন্টে রয়েছে। ওদিকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ধোনির চেন্নাই, চেন্নাই ১৩ টি ম্যাচ খেলে ১৫ পয়েন্টে রয়েছে। এখনও প্লে অফ নিশ্চিত নয় চেন্নাইয়ের। শেষ ম্যাচ দিল্লির সাথে, দিল্লির সঙ্গে হারলে বিদায় নিতে পারে ধোনিরা। জিতলে প্লেঅফে চেন্নাই। ৩ নম্বরে রয়েছে মুম্বই। ১২ ম্যাচ খেলে ১৪ পয়েন্টে রয়েছে রোহিতদের দল। বাকি রয়েছে দুটি খেলা। একটিতে হারলেও চান্স আছে কিন্তু দুটোই হারলে সম্ভাবনা ক্ষীণ। পরেই রয়েছে লখনউ, রাহুলের অস্ত্রপ্রচার হওয়ায় দায়িত্বে রয়েছে পুরান। পুরানরাও ১২ ম্যাচ খেলে ১৩ পয়েন্টে রয়েছে। দুটো ম্যাচের দুটিতেই জিতলে তবেই প্লেঅফ। একটায় হারলে অন্যের উপর নির্ভর করতে হবে।
পঞ্চম স্থানে রয়েছে বিরাটের ব্যাঙ্গালোর। বিরাটরা ১২ ম্যাচ খেলে ১২ পয়েন্টে রয়েছে। জিতলে রানরেটের দরুন প্লে অফে যেতে পারেন কিন্তু একটায় হারলে সমস্যায় পড়বেন। ১৩ ম্যাচ খেলে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে শামসনের রাজস্থান। শেষ ম্যাচ জিতলেই হবে না শুধু। সাঞ্জুদের নির্ভর করে থাকতে হবে অন্যদের খেলার উপরে। সাত নম্বরে রয়েছে নাইট রাইডার্স। ১৩ ম্যাচ খেলে ১২ পয়েন্টে রয়েছেন তাঁরা। প্লে অফ যাওয়া কঠিন কিন্তু অপেক্ষা করতে হবে অন্যদের ফলের উপরে। ১২ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থানে রয়েছে পঞ্জাব কিংস। এখনও দুটির দুটি জিতলে সম্ভাবনা রয়েছে প্লেঅফে যাওয়ার।
ওদিকে আইপিএল ভালো যায়নি হায়দরাবাদের ও দিল্লির। দুজনেই ১২ টি ম্যাচ খেলে মাত্র ৮ পয়েন্টে রয়েছে। যদিও চেন্নাইয়ের শেষ ম্যাচ দিল্লির সঙ্গে সেক্ষেত্রে দিল্লি চেন্নাইয়ে হারিয়ে দিলে পার্থক্য গড়ে তুলতে পারে। মঙ্গলের সন্ধ্যায় খেলতে নামবে মুম্বই ও লখনউ।
সানরাইজার্সকে (SRH) ৩৪ রানে হারাল গুজরাত টাইটান্স (GT)। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে আইপিএলের (IPL) প্রথম দল হিসেবে প্লে-অফে কোয়ালিফাই করল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন গুজরাত টাইটান্স। মহম্মদ শামি ও মোহিত শর্মা। ৪টি করে উইকেট নিলেন। বেগুনি টুপির মালিকও হলেন শামি।
এদিন টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুভমান গিলের ব্যাটে ফের রানের ফুলঝুরি। আইপিএল কেরিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি করেন তিনি। ৫৮ বলে ১০৮ রান করেন তিনি। সাই সুদর্শনের ব্যাটে এলে ৩৭ বলে ৪৭ রান। ১৮৯ রান তাড়া করতে নেমে বিধ্বংসী বোলিং গুজরাতের। ২০ ওভারে ১৫৪ রানে শেষ হয় সানরাইজার্সের ইনিংস।
ডেথ ওভার কাকে বলে, এই ম্যাচে দেখিয়েছিলেন ভুবনেশ্বর কুমার। শেষ ওভারে বল করতে আসেন তিনি। সেই ওভারেই ৪টি উইকেট পড়ে। গোটা ম্যাচে ৫ উইকেট তুলে নিলেন। পেস সহায়ক উইকেটে বদলাই নিলেন মহম্মদ শামি ও মোহিত শর্মা জুটি।
লখনউয়ের (LSG) কাছে হেরে প্লে অফের দৌড় থেকে বিদায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (SRH)। হায়দরাবাদের ৭ উইকেটে হারিয়ে প্লে অফের (Play Off) দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেল লখনউ সুপার জায়ান্টস। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৮২/৬ তুলেছিল হায়দরাবাদ। জবাবে ৪ বল বাকি থাকতে ১৮৫/৩ তু্লে ম্যাচ জিতে নেয় লখনউ।
প্লে অফের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যে এদিন ঘরের মাঠে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদ অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। এদিনও হায়দরাবাদের ওপেনিং জুটি বড় রান করতে ব্যর্থ। তৃতীয় ওরেই অভিষেক শর্মাকে (৫ বলে ৭) তুলে নেন যুধবীর সিং। যদিও রানের গতি কমেনি সানরাইজার্স হায়দরাবাদের। ষষ্ঠ ওভারে আবার ধাক্কা। রাহুল ত্রিপাঠিকে (১৩ বলে ২০) ফেরান যশ ঠাকুর। এরপর আনমোলপ্রীতকে তুলে নেন অমিত মিশ্র। ২৭ বলে ৩৬ রান করে অমিতের হাতেই ক্যাচ দিয়ে আউট হন আনমোলপ্রীত।
এরপর হায়দরাবাদকে টানেন অধিনায়ক এইডেন মার্করাম ও হেনরিক ক্লাসেন। ১৩ তম ওভারের প্রথম বলেই লখনউ অধিনায়ক ক্রূণাল পান্ডিয়া মার্করামকে তুলে নেন। ২০ বলে ২৮ রান করে আউট হন মার্করাম। পরে বলেই গ্লেন ফিলিপসকে (০) ফেরান। এরপর ক্রিজে নেমে ঝড় তোলেন আব্দুল সামাদ। অন্যপ্রান্তে, হেনকির ক্লাসেনও আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাট করতে থাকেন। এই দুজনের সৌজন্যেই বড় রান তোলে হায়দরাবাদ। নির্ধারিত ২০ ওভারে তারা সংগ্রহ করে ১৮২/৬। ২৯ বলে ৪৭ রান করে আউট হন ক্লাসেন। ২৫ বলে ৩৭ রান করে অপরাজিত থাকেন আব্দুল সামাদ। ২৪ রানে ২ উইকেট নেন ক্রূণাল পান্ডিয়া।
জয়ের জন্য ১৮৩ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি লখনউ সুপার জায়ান্টসের। চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলে ১২ রান ওঠার ফাঁকেই হারাতে হয় কাইল মেয়ার্সের (২) উইকেট। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে হলকে এগিয়ে নিয়ে যান কুইন্টন ডিকক ও প্রেরক মানকড়। ১৯ বলে ২৯ রান করে মায়াঙ্ক মারকান্ডের বলে আউট হল ডিকক। এরপর লখনউকে টানেন প্রেরক ও মার্কাস স্টয়নিস। দুজনের জুটিতে ওঠে ৭৩ রান। ১৬ ওভারের তৃতীয় বলে স্টয়নিসকে তুলে নিয়ে জুটি ভাঙেন অভিষেক শর্মা। ২৫ বলে ৪০ রান করে আউট হন স্টয়নিস।
স্টয়নিস যখন আউট হন জয়ের জন্য লখনউর ২৭ বলে দরকার ছিল ৫৬ রান। ক্রিজে নেমে ঝড় তুলে দলকে জয় এনে দেন নিকোলাস পুরান। ৪ বল বাকি থাকতে ১৮৫/৩ রান তুলে প্লে অফের লড়াইয়ে দারুণভাবে ঢুকে পড়ল লখনউ সুপার জায়ান্টস। ১৩ বলে ৪৪ রান করে অপরাজিত থাকেন নিকোলাস পুরান। মারেন ৩টি ৪ ও ৪টি ৬। অন্যদিকে ৪৫ বলে ৬৪ রান করে অপরাজিত থাকেন প্রেরক মানকড়।
ঘরের মাঠে আইপিএলের (IPL) ম্যাচে বড় রান করতে ব্যর্থ হায়দরাবাদ (SRH)। শনিবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে লখনউয়ের (LSG) বিরুদ্ধে খুব দ্রুত উইকেট হারায় হায়দরাবাদ দল। আনমোলপ্রীতের সঙ্গে জমল না অভিষেক শর্মার ওপেনিং জুটি। মাঝের সময়ে টানলেন রাহুল ত্রিপাঠি এবং ক্লাসেন। ২৯ বলে ৪৭ রান করে আউট হন ক্লাসেন। ম্যাচে দুটি উইকেট লখনউয়ের অধিনায়ক ক্রুণাল পাণ্ডিয়ার।
রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে মনে করা হয়েছিল প্রথম ব্যাট করার সুযোগ তুলবেন হায়দরাবাদের ব্যাটাররা। কিন্তু ১৯ রানে প্রথম উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দক্ষিণের এই দল। আনমোলপ্রীত এবং রাহুল মিলে দলের ভিত মজবুতের কাজ শুরু করেন। কিন্তু ১১৫ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ছন্দ হারায় হায়দরাবাদ।
শেষ পর্যন্ত ক্লাসেনের ব্যাটে ৬ উইকেটে ১৮২ রান করে হায়দরাবাদ। ২৪ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন লখনউয়ের অধিনায়ক ক্রুণাল পান্ডিয়া।
ব্যাটারদের অসাধারণ ছন্দের উপর ভর করে অবিশ্বাস্য জয় হায়দরাবাদের। রাজস্থানের ঘরের মাঠে ২১৫ রানের জবাবে হায়দরাবাদের ব্যাটারদের ঝড়ো ইনিংস। মাপা শটের উপর ভর করে জয় পেল হায়দরাবাদ। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন সঞ্জু স্যামসন। জস বাটলার ও সঞ্জু স্যামসনের দুর্ধর্ষ ব্যাটিংয়ের সুবাদে রাজস্থান রয়্যালস ২০ ওভারে তোলে ২১৪। মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে রাজস্থানকে বিরাট রানের টার্গেট দেয়।
রাজস্থানের ২১৪ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই চালিয়ে খেলে রাজস্থানের ব্যাটাররা। অনমলপ্রীত সিং ও অভিষেক শর্মা। পাওয়ার প্লে-তে দুই ওপেনারের দাপটে রাজস্থান তোলে ৫১। অনমলপ্রীত আউট হলেও ম্যাচের রাশ ধরে রাখেন অভিষেক। ৩৪ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে আউট হল তিনি।
তারপর রাহুল ত্রিপাঠী, গ্লেন ফিলিপস, হেনরিচ ক্লাসেনের ঝোড়ো ব্যাটিং রাজস্থানকে কাঙ্ক্ষিত জয় এনে দেয়। ত্রিপাঠীর ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ৪৭ রানের ইনিংস। পাশাপাশি ফিলিপস ও ক্লাসেনের ব্যাটিং জয়ের স্বাদ দেয় রাজস্থানকে।
তারপর আবদুল সামাদ রাজস্থানের জয়ের স্বপ্নের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেন। ৭ বলে ১৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন সামাদ। শেষ বলে হায়দরাবাদের জিততে চার রানের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সেই টার্গেটও আজ ছোট দেখিয়েছে সামাদের সামনে। সন্দীপ শর্মার শেষ বলে ৬ মেরে কঠিন ম্যাচ বের করে দেন সামাদ। হায়দরবাদ ৪ উইকেটে এই ম্যাচ জিতে ভেসে রইল প্লে অফের লড়াইয়ে।
টানটান উত্তেজনার ম্যাচে জয় পেয়ে, নিজেদের প্লেঅফের আশা জিইয়ে রাখলো কেকেআর। কলকাতার বোলারদের দাপটে বেঁচে রইল প্লে-অফ (IPL) খেলার স্বপ্ন। টানটান ম্যাচে শেষ পর্যন্ত হায়দরাবাদকে উড়িয়ে দিল কলকাতা। ফের জয়ের সরণিতে ফিরল শাহরুখের দল (KKR vs SRH)। টস জিতে এদিন প্রথম ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন কলকাতার অধিনায়ক নীতিশ রানা। প্রথমে ব্যাট করে বড় রানের লক্ষ্য দেওয়ার স্ট্র্যাটেজি নেয় কলকাতা। কিন্তু শুরুতেই ধাক্কা খায় কেকেআর। পরপর ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় তারা। রান পাননি ওপেনার রহমনতুল্লাহ গুরবাজ (০) ও ভেঙ্কটেশ আইয়ার (৭)।
তবে রিঙ্কু সিং ও নীতিশ রানার দুরন্ত ব্যাটিং রানের গতি বাড়াতে সাহায্য করে কলকাতাকে। নীতিশ এদিন ৪২ রানের ইনিংস খেলেন। আন্দ্রে রাসেলের ব্যাটে আসে ১৫ বলে ২৪ রান। আর শেষে রিঙ্কু করেন ৪৬ রান। যদিও শেষের দিকে পরপর উইকেট পড়তে থাকে কেকেআরের। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে কলকাতা ৯ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৭১ রান। হায়দরাবাদের হয়ে ২ উইকেট করে নেন টি নাটরাজন ও ম্যাক্রো জেনসন। একটি করে উইকেট পান বাকিরা।
কলকাতার ১৭১ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালই করে হায়দরাবাদ। তবে এই ম্যাচে যে জয় সহজে আসবে না, সেটা বুঝিয়ে দেন, শার্দূল ঠাকুর, আন্দ্রে রাসেল, বৈভব অরোরা, অনুকূল রায়রা। পরপরই উইকেটে হারাতে শুরু করে হায়দরাবাদ। ৬.২ ওভারে হায়দরাবাদের স্কোর এসে দাঁড়ায় ৫৪-৪। সেখান থেকে অধিনায়ক অ্যাডেন মারকরাম ও হেনরিচ ক্লাসেন হাল ধরেন ম্যাচের। ২০ বলে ৩৬ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন ক্লাসেন। অন্যদিকে হায়দরাবাদের অধিনায়ক এদিন কিছুটা ধরে খেলেন। তবে শেষরক্ষা হয়নি। ডেথ ওভারে বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং কেকেআরকে কাঙ্ক্ষিত জয় এনে দেয়। এখন দেখার পরের ম্যাচগুলিতে এই জয়ের ধারা বজায় রাখতে পারে কিনা কলকাতা।
কলকাতার সঙ্গে আইপিএল (IPL) যাত্রা শেষ হতে চলেছে দিল্লির। শনিবার হায়দরাবাদের কাছে দিল্লি হারলো মাত্র ৯ রানে। তালিকায় শেষ দিক থেকে থাকা দুটি দলের মধ্যে শেষ হাসি সানরাইজার্সের (Sunrisers)। এই ম্যাচ দিল্লি জিতলে মিচেল মার্শ খুব খুশি হতেন। কেননা বল হাতে তিনি নিলেন প্রথমে চার উইকেট। তারপর রান তাড়া করতে গিয়ে দিল্লিকে (DC) জিতিয়ে দিয়েছিলেন প্রায়। মার্শ ব্যাট হাতে করেছেন ৩৯ বলে ৬৩ রান। হারলেও তিনিই ম্যাচের সেরা হয়েছেন।
হায়দরাবাদের প্রথমে ব্যাটিং নিয়ে ১৯৭/৬-র জবাবে দিল্লি ক্যাপিটালস করেছে ১৮৮/৬। বিজয়ী দলের পক্ষে অভিষেক শর্মা করেছেন ৩৬ বলে ৬৭ রান। খেলায় দুরন্ত হাফ-সেঞ্চুরি করেন ওপেনার অভিষেক শর্মা ও উইকেটরক্ষক ব্যাটার হেনরিখ ক্লাসেন। অভিষেক ৩৬ বলে ৬৭ রান করে মাঠ ছাড়েন। ইনিংসে রয়েছে ১২টি চার ও ১টি ছক্কা। ক্লাসেন ২৭ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন। তিনি ২টি চার ও ৪টি ছক্কা মারেন।
দিল্লি ক্যাপিটালস শুরুতেই ডেভিড ওয়ার্নারের উইকেট হারিয়েছে। শূন্যতে আউট হন দিল্লি অধিনায়ক। তবে প্রাথমিক বিপর্যয় সামলে দলকে লড়াইয়ে ফেরান ফিল সল্ট (৩৫ বলে ৫৯) ও মিচেল মার্শ (৩৯ বলে ৬৩)। দুই তারকা ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি করে ফিরে যেতেই দিল্লিকে বেকায়দায় পড়তে দেখা গিয়েছে। শেষদিকে অক্ষর প্যাটেল ১৪ বলে ২৯ রান করলেও কাজে আসেনি সেই চেষ্টা। বরং সানরাইজার্স দলের বোলারদের মধ্যে নজর কেড়েছেন মায়াঙ্ক মার্কান্ডে। তিনি দুই উইকেট নিয়েছেন।
বল হাতে উইকেট নিলেন। ব্যাট হাতেও লড়লেন শেষ ওভার পর্যন্ত। তবু হায়দরাবাদকে জেতাতে পারলেন না ওয়াশিংটন সুন্দর (Washington Sundar)। দিল্লি ক্যাপিটালসের (DC) বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে হেরে গেল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (SRH)। প্রথমে ব্যাট করে দিল্লি তুলেছিল ১৪৪-৯। জবাবে হায়দরাবাদ থেমে গেল ১৩৭-৬ রানে।
ওয়াশিংটন বল হাতে প্রথমে এক ওভারে তিনটি উইকেট নিয়েছিলেন। ব্যাট হাতে ২৪ রানে অপরাজিত রইলেন শেষ পর্যন্ত। তাঁর লড়াই দাম পেল না। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দল আবার জিতল। আগের ম্যাচে কলকাতাকে হারিয়েছিল তারা। প্রথম অ্যাওয়ে ম্যাচে জিতল।
নিলামে ১৩ কোটি টাকা দিয়ে হায়দরাবাদ কিনেছে হ্যারি ব্রুককে। কিন্তু ইডেন গার্ডেন্সে শতরান বাদে বাকি ম্যাচগুলিতে ব্যাট একেবারেই জ্বলে ওঠেনি। দিল্লির বিরুদ্ধে অনরিখ নোখিয়ার বলে ল্যাপ স্কুপ করতে গেলেন। নোখিয়া স্লোয়ার দিয়েছিলেন। তাতেও ব্যাট ঠেকাতে পারেননি। বল সরাসরি লাগে স্টাম্পে।
দ্বিতীয় উইকেটে মায়াঙ্ক আগরওয়াল এবং রাহুল ত্রিপাঠি জুটি গড়ার চেষ্টা করছিলেন। বেশ এগোচ্ছিলও সেই জুটি। কিন্তু ইশান্ত শর্মার একটি নির্বিষ বলে চালাতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিলেন ত্রিপাঠি। রিপ্লেতে দেখা গেল ব্যাটে-বলে সূক্ষ্ম স্পর্শ হয়েছে। ত্রিপাঠি অবশ্য রিভিউ নেননি।
দুরন্ত বোলিং ওয়াশিংটনের, হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে মাত্র ১৪৪ তুলল দিল্লি, পরের দিকে কোনও ব্যাটারই দাঁড়াতে পারলেন না। আইপিএলে খেলতে আসার আগে দারুণ ছন্দে ছিলেন আইডেন মার্করাম। কিন্তু প্রতিযোগিতায় নেমে তাঁর ছন্দপতন হয়েছে। কোনও ম্যাচেই রান পাচ্ছেন না। হেনরিখ ক্লাসেন তবু লড়াই দিয়েছিলেন। কিন্তু বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতায় কোনও লাভ হল না।
এ দিন, ওয়ার্নারকে হায়দরাবাদে খেলতে দেখা গেল অন্য জার্সিতে। ডেভিড ওয়ার্নারকে হায়দরাবাদের দর্শকরা অনেক আগে থেকেই চেনেন। এই দলকে আইপিএল ট্রফি দিয়েছেন তিনি। একটা সময় কাঁড়ি কাঁড়ি রান করেছেন। সেই ওয়ার্নার এদিন দিল্লির জার্সিতে অধিনায়ক হয়ে নেমেছিলেন। হায়দরাবাদে ফেরা সুখকর হল না তাঁর। ২০ বলে মাত্র ২১ রান করে ফিরলেন তিনি।
দিল্লি প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায়। তৃতীয় বলে ভুবনেশ্বর কুমার ফেরান ফিল সল্টকে। এরপর ওয়ার্নার এবং মিচেল মার্শ মিলে কিছুটা পরিস্থিতি সামাল দেন। মার্কো জানসেনের প্রথম ওভারেই তাঁকে চারটি চার মারেন মার্শ। কিন্তু আইপিএলে তাঁর ব্যাটেও এবার ছন্দ নেই। ১৫ বলে ২৫ রানে ফিরে যান টি নটরাজনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে।
দুর্দান্ত বল করলেন ওয়াশিংটন সুন্দর। এক ওভারে তিনি তিন জনকে আউট করলেন। অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে ওয়ার্নার, চতুর্থ বলে সরফরাজ খান এবং ষষ্ঠ বলে আমন খানকে ফেরালেন। একমাত্র অক্ষর পটেল (৩৪ বলে ৩৪) কেউই দাঁড়াতে পারলেন না দিল্লির হয়ে। অক্ষরের ইনিংসও খুব ধীরগতির ছিল। কিন্তু দিল্লির জিততে অসুবিধা হল না।
আইপিএলে (IPL) সানরাইজার্স হায়দরাবাদের (SRH) বিরুদ্ধে ম্যাচে অন্য রূপে দেখা গেল রবীন্দ্র জাডেজাকে (Rabindra Jadeja)। তিনটি উইকেট নিয়ে হায়দরাবাদের মেরুদণ্ডই শুধু ভেঙে দিলেন না, মেজাজ হারিয়ে বিপক্ষের ক্রিকেটারের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়তেও দেখা গেল তাঁকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসতে হল মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে।
সাফল্য ছাপিয়ে জাডেজার ঝামেলাই শিরোনামে এসেছে। হায়দরাবাদের ইনিংসের ১৪তম ওভারে ঘটনাটি ঘটে। নিজের বলে মায়াঙ্ক আগারওয়ালের ফিরতি শটে ক্যাচ ধরতে গিয়েছিলেন জাডেজা। কিন্তু বলে হাত ছুঁইয়েও ক্যাচটি ধরতে পারেননি তিনি। নন-স্ট্রাইকার হিসাবে দাঁড়িয়ে থাকা হেনরিখ ক্লাসেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় তাঁর। আচমকা ক্যাচ আসায় ক্লাসেনের পক্ষে সরে যাওয়ার মতো সময়ও ছিল না। কিন্তু প্রোটিয়া ব্যাটারের আচরণে জাডেজা খুশি হননি।
উঠে দাঁড়িয়ে ক্লাসেনের উদ্দেশে কিছু বলতে শোনা যায় জাডেজাকে। হতাশায় মাটিতে লাথিও মারেন জাডেজা। ছাড়েননি ক্লাসেনও। তিনিও এগিয়ে এসে জাডেজাকে জবাব দেন। মাঠেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ‘ক্যাপ্টেন কুল’ ধোনি উল্টো দিকে মোটেই দাঁড়িয়ে থাকেননি। ছুটে এসে থামান জাডেজা। শান্ত হতে বলেন। সরিয়ে নিয়ে যান ক্লাসেনকেও। এগিয়ে আসেন আম্পায়ার।
সেই ওভারেও ঝামেলা চলতে থাকে। শেষ হাসি অবশ্য জাডেজারই। এখানেও কেরামতি ধোনির। তাঁর বিদ্যুৎগতির স্টাম্পিংয়ে ফিরতে হয় মায়াঙ্ককে। বোলার ছিলেন সেই জাডেজাই। উইকেট নিয়ে চিৎকার করে উচ্ছ্বাস করতে থাকেন তিনি। ধোনিকে আবার এগিয়ে আসতে হয় শান্ত করতে।
হায়দরাবাদের (SRH) বিরুদ্ধে ব্যাটে-বলে দাপট দেখাল চেন্নাই (CSK)। ৭ উইকেটে আইডেন মার্করামদের উড়িয়ে দিয়ে ইডেন গার্ডেন্সে খেলতে আসছেন ধোনিরা (Dhoni)। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন ধোনি। হ্যারি ব্রুক ও অভিষেক শর্মা শুরুটা ভাল করছিলেন। পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে দ্রুত রান করছিলেন তাঁরা। চেন্নাইকে প্রথমে খেলায় ফেরান আকাশ সিং। ১৮ রানের মাথায় ব্রুককে আউট করেন তিনি।
পেসাররা খুব একটা সুবিধা পাচ্ছেন না দেখেই মগজাস্ত্র প্রয়োগ করলেন ধোনি। আর সেখানেই কুপোকাত হায়দরাবাদ। মিডল ওভারে তিন স্পিনারকে কাজে লাগালেন ধোনি। মাহেশ থিকশানা, রবীন্দ্র জাডেজা ও মইন আলি সমস্যায় ফেললেন ব্যাটারদের। চিপকের উইকেটে বল ঘুরল। তার ফলে হাত খুলে খেলতে পারলেন না হায়দরাবাদের ব্যাটাররা। উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে ক্যাচ ধরলেন ধোনি। দ্রুতগতিতে স্টাম্প করলেন। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়ল।
অভিষেক শর্মা ও রাহুল ত্রিপাঠি শুরুটা ভাল করলেও বড় রান করতে পারলেন না। অভিষেক ৩৪ ও ত্রিপাঠি ২১ রান করে আউট হলেন। বাকি ব্যাটাররাও রান পেলেন না। স্পিনারদের দেখে গতির হেরফের করে শেষ দিকে সফল পেসাররাও। চেন্নাইয়ের বোলারদের দাপটে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান করল হায়দরাবাদ। চেন্নাইয়ের হয়ে সব থেকে ভাল বল করলেন জাডেজা। ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিলেন তিনি।
যে উইকেটে হায়দরাবাদের ব্যাটারদের খেলতে সমস্যা হল সেই উইকেটেই শুরু থেকে হাত খুলে খেললেন চেন্নাইয়ের দুই ওপেনার রুতুরাজ গায়কোয়াড় ও ডেভন কনওয়ে। লক্ষ্য কম থাকায় আরও আত্মবিশ্বাসী দেখাল তাঁদের। বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন কনওয়ে। মাত্র ৩৩ বলে অর্ধশতরান করলেন তিনি। চেন্নাইয়ের ওপেনিং জুটিকে ভাঙার জন্য সব চেষ্টা করেন মার্করাম। ছ’জন বোলারকে প্রথম ১০ ওভারেই ব্যবহার করেন তিনি। কিন্তু কিছুতেই উইকেট পড়ছিল না।
৩৫ রান করে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আউট হন গায়কোয়াড়। কনওয়ের মারা শট বোলার উমরান মালিকের পায়ে লেগে উইকেটে লাগায় রানআউট হন তিনি। রান পাননি অজিঙ্ক রাহানে। অম্বাতি রায়ডুও মাত্র ৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন। তাতে অবশ্য জিততে সমস্যা হয়নি চেন্নাইয়ের। শেষ পর্যন্ত ৮ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে যান ধোনিরা। ৭৭ রান করে অপরাজিত থাকেন কনওয়ে।
এ বারের আইপিএলের (IPL) শুরু থেকেই চোট নিয়ে খেলছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি (MSD)। শুক্রবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের (SRH) বিরুদ্ধে না-ও খেলতে পারেন তিনি। চেন্নাই সুপার কিংসের পরবর্তী ম্যাচ রবিবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে। তা হলে কি ইডেনেও ধোনিকে নামতে দেখা যাবে না! এখন থেকেই শুরু হয়েছে জল্পনা। চেন্নাইয়ের অনুশীলন থেকে এই জল্পনার সূত্রপাত। সেখানে দেখা গিয়েছে, উইকেটরক্ষকের দস্তানা পরে অনুশীলন করছেন ডেভন কনওয়ে। ধোনি তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিচ্ছেন। তা হলে কি হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে উইকেটের পিছনে ধোনির বদলে কনওয়েকে খেলতে দেখা যাবে?
হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ধোনি খেলবেন কি না সেটা অবশ্য শুক্রবার টসের সময়েই বোঝা যাবে। আইপিএলের আগে প্রায় এক মাস হাঁটুর সমস্যা ভুগিয়েছে তাঁকে। প্রথম ম্যাচে গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে সেই হাঁটুতে আরও এক বার লেগেছিল তাঁর। তার পর মাঝেমধ্যেই খোঁড়াতে দেখা গিয়েছে ধোনিকে। কিন্তু চেন্নাইয়ের হয়ে পাঁচটি ম্যাচই খেলেছেন তিনি। এ বার কি একটি ম্যাচে বিশ্রাম নেবেন মাহি?
চেন্নাইয়ের পরের ম্যাচ কলকাতার বিরুদ্ধে। এক দিকে চেন্নাই ৫ ম্যাচের মধ্যে ৩টিতে জিতেছে, অন্য দিকে ৬ ম্যাচে ৪টিতে হেরেছে কলকাতা। হায়দরাবাদকে হারালে ৬ ম্যাচে ৪ জয়ের সঙ্গে ইডেনে খেলতে আসবে চেন্নাই। কিন্তু সেই ম্যাচে কি ধোনি খেলতে পারবেন? প্রশ্ন সিএসকে সমর্থকদের মনে।
পর পর তিনটি ম্যাচ জিতে নিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI)। এ বারের আইপিএলে (IPL) জয়ের হ্যাটট্রিক করল রোহিত শর্মার দল। ব্যাটে, বলে ক্যামেরন গ্রিনের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জোরেই ম্যাচ জিতে নিল মুম্বই। প্রথমে ব্যাট করে ১৯২ রান করে তারা। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ নিজেদের মাঠে শেষ হয়ে যায় ১৭৮ রানে। সচিন-পুত্র অর্জুন তেন্ডুলকর শেষ ওভারে একটি উইকেট নেন। আইপিএলে এটি তাঁর প্রথম উইকেট।
টস জিতে মুম্বইকে ব্যাট করতে পাঠায় হায়দরাবাদ (SRH)। তখন এডেন মার্করাম বোধ হয় বুঝতে পারেননি যে, মুম্বই এত রান তুলে ফেলবে। শুরু থেকেই দ্রুত রান তুলতে শুরু করেন রোহিত শর্মারা। ৪১ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় মুম্বই। রোহিত ১৮ বলে ২৮ রান করেন। তাঁর উইকেট নেন বাঁ-হাতি পেসার টি নটরাজন। ইশান কিশানকে ফেরান মার্কো জানসেন। সূর্যকুমার তিন বলে মাত্র সাত রান করে আউট হন। তাঁকেও আউট করেন জানসেন। ৯৫ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারায় মুম্বই।
সেখান থেকে ৫৬ রানের জুটি গড়েন ক্যামেরন গ্রিন এবং তিলক বর্মা। গ্রিন ৬৪ রানে অপরাজিত থেকে গেলেও তিলক ১৭ বলে ৩৭ রান করে আউট হয়ে যান। টিম ডেভিড ১১ বলে ১৬ রান করেন। কিন্তু মুম্বইয়ের পুরো ইনিংসটা তৈরি হয় গ্রিনের উপর ভর করে। এ বারের আইপিএলে এটাই তাঁর প্রথম অর্ধশতরান।
হায়দরাবাদের হয়ে দু’টি উইকেট নেন জানসেন। একটি করে উইকেট নেন ভুবনেশ্বর কুমার এবং টি নটরাজন। সব থেকে বেশি রান দিয়েছেন ভারতের বাঁহাতি পেসার। নটরাজন চার ওভারে ৫০ রান দেন। জানসেন চার ওভারে ৪৩ রান দিয়েছেন। সব থেকে বেশি ছক্কা খেয়েছেন তিনিই।
ব্যাট হাতে দাপট দেখানোর পর গ্রিন বল হাতেও হায়দরাবাদের ঘাড়ে চেপে বসেন। তাঁর আগে হায়দরাবাদকে চাপে ফেলে দেন মুম্বইয়ের অন্য পেসাররা। এ বারের আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে শতরান করা হ্যারি ব্রুককে আউট করেন জেসন বেহরেনডর্ফ। তিনি এই ম্যাচে দু’টি উইকেট নেন। রাহুল ত্রিপাঠীর উইকেট নেন তিনি। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে নামা রিলে মেরেডিথও দু’টি উইকেট নেন। চার ওভারে ৪৩ রান দিলেও দু’টি উইকেট নেন পীযূষ চাওলা। গ্রিন ২৯ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন। ১৯তম ওভারে বল করতে এসে মাত্র ২ রান দিলেন গ্রিন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২০ রান প্রয়োজন ছিল হায়দরাবাদের। সেই গুরুতপূর্ণ ওভারে রোহিত বল তুলে দেন অর্জুনের হাতে। প্রথম বলেই ওয়াইড ইয়র্কার দেন অর্জুন। সেই ওভারে একটি উইকেটও নেন তিনি। তাতেই শেষ হয়ে যায় হায়দরাবাদের ইনিংস। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক রোহিতের প্রশংসাও পান অর্জুন।
মুম্বইয়ের পরের ম্যাচ ২২ এপ্রিল। পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে খেলবেন রোহিতরা। হায়দরাবাদ খেলবে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে। চেন্নাইয়ে সেই ম্যাচ হবে ২১ এপ্রিল।
দুই দলই আইপিএলের (IPL) প্রথম দু’টি ম্যাচে হেরেছে। দুই দলই আগের ম্যাচে জিতেছে। মঙ্গলবার আইপিএলে সেই মুম্বই (MI) এবং হায়দরাবাদ (SRH) একে অপরের বিরুদ্ধে নামছে। দুই অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং আইডেন মার্করামের লক্ষ্য জয়ের ধারা বজায় রাখা। কিন্তু ম্যাচের আগে ধারেভারে কোনও দলকেই এগিয়ে রাখা যাচ্ছে না। দুই দলই অবশ্য কলকাতাকে হারিয়েছে।
মুম্বইয়ের পক্ষে আশার কথা তাদের ব্যাটারদের ছন্দে ফেরা। কলকাতার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে দুর্দান্ত খেলেছেন ঈশান কিশন। মারকুটে খেলে অর্ধশতরান করেছেন। সূর্যকুমার যাদবের ছন্দ খারাপ যাচ্ছিল। তিনিও ২৫ বলে ৪৩ করে ছন্দে ফিরেছেন। প্লে-অফে যেতে গেলে এই দুই ব্যাটারকে ছন্দে থাকতেই হবে। একই সঙ্গে চাই রোহিতের ছন্দ। আগের ম্যাচে রোহিত পেটের সমস্যায় ফিল্ডিং করেননি। তবে ব্যাট করেছেন সাবলীল ভাবেই। অধিনায়কত্ব করেন সূর্যকুমার। হায়দরাবাদ ম্যাচে রোহিতেরই নেতৃত্বে ফেরার কথা।
বোলিং বিভাগে একটু পিছিয়ে থাকবে মুম্বই। আগের ম্যাচে অর্জুন তেন্ডুলকর এবং ডুয়ান জানসেনের অভিষেক হয়েছিল। কেউই প্রভাব ফেলতে পারেননি। জফ্রা আর্চার এই ম্যাচে ফিরলে যেকোনও একজনকে বসতে হবে। অর্জুনকে আর কোনও ম্যাচে খেলানো হয় কি না সেটাও দেখার।
হায়দরাবাদের হ্যারি ব্রুক শতরান করে ফুটছেন। আইপিএলের প্রথম শতরান এসেছে এই ১৩ কোটির ব্যাটারের থেকেই। দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছেন অভিষেক ত্রিপাঠীও। অধিনায়ক মার্করামও যেকোনও দিন বিপক্ষকে বিপদে ফেলতে পারেন। ডুয়ানের ভাই মার্কো জানসেন খেলেন হায়দরাবাদের হয়ে। ফলে মঙ্গলবার দুই ভাই একে অপরের মুখোমুখি। আইপিএলের ইতিহাসে তাঁরাই প্রথম যমজ হিসাবে খেলছেন। তবে মুম্বইয়ের ব্যাটিংকে বিপদে ফেলতে গেলে হায়দরাবাদের উমরান মালিক, ভুবনেশ্বর কুমারদের বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে।