রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) ফাইনালে বাংলা (Bengal)। মধ্যপ্রদেশকে ৩০৬ রানে হারিয়ে ফাইনালে উঠল বাংলা। ২০১৯-২০ সালের পর আবারও ফাইনালে বঙ্গ ব্রিগেড। ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু রঞ্জি ফাইনাল।
এর আগে ২০১৯-২০ মরসুমে এই মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধেই সেমিফাইনালে হেরেছিল বাংলা। দায়িত্ব ছাড়েন কোচ অরুনলাল। কোচের হট সিটে বসেন প্রাক্তন ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতন শুক্লা। অধিনায়ক করা হয় মনোজ তেওযারিকে। ফল মিলেছে হাতেনাতে। রঞ্জি জয়ের সোনার সুযোগ বাংলার সামনে। এই নিয়ে ১৪ বার ফাইনালে উঠলো বাংলা। শেষবার ঘরের মাঠে দল যখন রঞ্জি যেতে তখন অধিনায়ক ছিলেন সম্বরণ বন্দোপাধ্যায়।
১৯৮৯-৯০ সালের পর রঞ্জির সোনার হরিণ অধরাই থেকে গিয়েছে। এবার ট্রফি ঘরে তুলতে মরিয়া বাংলা। বিশেষ করে দারুন ছন্দে আছে দল। সেমিফাইনালে প্রথম ইনিংসে ৪৩৮ রানের ইনিংস খাড়া করেছিলেন মনোজরা।। জোড়া শতরান করেছিলেন অনুষ্টুপ মজুমদার আর সুদীপ ঘরামী। জবাবে ৫ উইকেট নিয়ে মধপ্রদেশকে ভেঙে দিয়েছিলেন আকাশ দীপ সিং। দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে মধ্যপ্রদেশকে শেষ করে দিলেন প্রদীপ্ত প্রামানিক। শেষ দিনে চা বিরতির আগে ২৪১ রানেই শেষ মধ্যপ্রদেশ। এবার মিশন ফাইনাল। তৃতীয়বার ট্রফি জেতার সুযোগ টিম বাংলার সামনে।
প্রসূন গুপ্ত: চলচিত্র, সাহিত্য থেকে ক্রিকেট, ফুটবল ইত্যাদি বিভিন্ন পেশার মানুষ রাজনীতিতে আসেন। খেলাধুলোর মাঠ বিশেষ করে ক্রিকেট ফুটবল থেকে অনেকেই এসেছেন। এক সময়ে ইন্দিরা ঘনিষ্ঠ তৎকালীন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মনসুর আলি খান পতৌদিও এসেছিলেন। রাজপাট নিয়ে সরকারের সঙ্গে বাক-বিতন্ডা হওয়া রাজনীতিতে আসার কারণ বলে শোনা গিয়েছিল। ইন্দিরার আমলে রাজা বা নবাবদের উপাধি বা মসনদ নিয়ে নেওয়া হয়। শোনা গিয়েছে তাতেই প্রতিবাদী হয় ইন্দিরার প্রিয়পাত্র টাইগার পাতৌদি।
পতৌদি রাজনীতিতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যান। কিন্তু খুব সুবিধা কিছু করে উঠতে পারেননি। টাইগারের রাজপাটের মতো ১৯৭১-এ নেতৃত্ব চলে যায়। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন অজিত ওয়াদেকার। ওই সময়ে পতৌদি প্রায় একঘরে হয়ে গিয়েছিলেন পরে অবশ্য ইন্দিরার সৌজন্যে ফের সম্পর্ক ভালো হলে ১৯৭৩-এ দলে ফেরেন এবং ১৯৭৪ এর শেষ দিকে ফিরে পান অধিনায়কত্ব।
এমন অনেকেই ক্রিকেট বা ফুটবল মাঠ থেকে রাজনীতিতে এসেছেন। কীর্তি আজাদ, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়রা লোকসভার সদস্য হয়েছেন। বিদেশ বোস বর্তমানে তৃণমূলের বিধায়ক এবং অশোক দিন্দা বিজেপির বিধায়ক। লক্ষ্মীরতন শুক্ল তৃণমূলের বিধায়ক, এমনকি ক্রীড়ামন্ত্রী হয়েছিলেন। পরে অবশ্য রাজনীতি ছেড়ে আবার ময়দানে ফেরেন।
বর্তমান মমতা সরকারের ক্রীড়া দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি। তিনি দীর্ঘদিন বাংলা, পূর্বাঞ্চল হয়েও ক্রিকেট খেলেছেন এবং বর্তমানে বাংলা রঞ্জি দলের অধিনায়ক।
রাজা-রাজাদের আমলে কী ছিল অন্য বিষয়। কিন্তু ২২ গজের সঙ্গে সখ্যতা এবং জনপ্রতিনিধি-সহ মন্ত্রিত্ব এমন উদাহরণ বোধহয় ভারতে বিরল। মনোজের নেতৃত্বে বাংলা ক্রিকেট ফের রঞ্জি ট্রফিতে ফাইনালে যাওয়ার পথে। দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে বাংলা দল। লিগ ম্যাচের প্রায় সবগুলিতে সরাসারি জয় পেয়েছে মনোজের বাংলা।
আপাতত সেমিফাইনাল খেলছে মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে ইন্দোর মাঠে। গতবার এই এমপির কাছে সেমিতে হেরে বিদায় নিয়েছিল বাংলা কিন্তু এবার দুর্দান্ত খেলে ফাইনালের পথে কি মন্ত্রী মনোজের বাংলা?
ইংল্যান্ড জাতীয় দলের কোচ হয়েছেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (Brenodn McCulum)। তাঁর জায়গায় কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR Coach) নতুন কোচ হলেন চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। বুধবার এই নিয়োগ চূড়ান্ত করেছে নাইট রাইডার্স। রঞ্জিজয়ী মধ্যপ্রদেশের কোচকে আগামি আইপিএল-র জন্য কোচ হিসেবে নিয়োগ করলেন শাহরুখ খান-বেঙ্কি মাইসোরররা। কেকেআর সিইও বেঙ্কি মাইসোর বলেন, 'কলকাতা দলে চন্দ্রকান্তকে পেয়ে আমরা দারুণ খুশি। তাঁর হাত ধরেই আমাদের দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ঘরোয়া ক্রিকেটে ওঁর সাফল্য রয়েছে। শ্রেয়স আয়ারের সঙ্গে ওঁর জুটি দেখার জন্য আমরা মুখিয়ে।'
এবার রঞ্জি ফাইনালে মুম্বইকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মধ্যপ্রদেশ। আর এই সাফল্যের পিছনে ছিলেন গুরু চন্দ্রকান্ত। ঘরোয়া ক্রিকেটে কোচ হিসাবে তাঁর সাফল্য নজর কেড়েছিল। এবার আইপিএল মতো টুর্নামেন্টে দায়িত্ব পেয়ে চন্দ্রকান্ত বলেন, 'আমার কাছে এটা গর্বের দায়িত্ব। নাইটদের দলে থাকা একাধিক ক্রিকেটারের সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে। এই দল সম্পর্কে আমি জানি। এই দলের সাপোর্ট স্টাফ এবং ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করার জন্য আমি মুখিয়ে আছি।'
২০২১-এ আইপিএলের ফাইনালে উঠে হেরে গিয়েছিলেন শ্রেয়স আইয়াররা। এখনও পর্যন্ত মাত্র দু’বার আইপিএল জিতেছে তারা। এবার চন্দ্রকান্তের হাত ধরে ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখছে কেকেআর।