
'হোক কলরব ফুলগুলো সব লাল না হয়ে নীল হল ক্যান? অসম্ভবে কখন কবে মেঘের সাথে মিল হল ক্যান?' বাংলাদেশের জনপ্রিয় গায়ক অর্ণব সায়ন চৌধুরীর গলায় প্রবল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এই গান। কত অসময়ে, কত বিপ্লবে, কত প্রতিবাদে এই গানের শব্দগুলি কণ্ঠ হয়েছিল প্রতিবাদীদের। সেই গানের সৃষ্টিকর্তা সব কলরব থামিয়ে দিয়ে প্রয়াত হলেন। অনেকেই জানেন না, হোক কলরব গানটির লেখক রাজীব আশরাফ (Rajiv Ashraf)। অকালে চলে গেলেন গানের গীতিকার।
শুক্রবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন রাজীব আশরাফ। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল মাত্র ৩৮। শ্বাসকষ্ট-জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, একেবারে ছোটবেলা থেকেই শ্বাসতন্ত্র জনিত সমস্যা ছিল তাঁর। তাই সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শে চলতেন। বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ আচমকাই তাঁর শ্বাসকষ্ট বাড়তে শুরু করে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসা শুরু হয়। তবে শুক্রবার সকালেই স্তব্ধতার দেশে পাড়ি দেন রাজীব।
অর্ণবের কণ্ঠে রাজীবের লেখা আরও বেশ কিছু গান জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। 'একটা মেয়ে', 'মন খারাপের একটা সকাল', 'রোদ বলেছে হবে', 'প্রতিধ্বনি' -সহ এই তালিকা বেশ লম্বা। বাংলাদেশ সংগীত জগতে শোকের ছায়া নেমেছে রাজীবের প্রয়াণে। গায়ক অর্ণবও সামাজিক মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন। প্রয়াত গায়ক রাজীবের একটি ছবি দিয়ে অর্ণব লিখেছেন, 'রাজীব চলে গেল। দোয়া করো সবাই।'
বাংলা সঙ্গীত জগতে শোকের ছায়া। মাত্র ৪৫ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন গীতিকার তথা কবি কিংশুক চট্টোপাধ্যায় (Kingshuk Chatterjee)। তাঁর লেখা গানে সুর দিয়েছেন রূপঙ্কর বাগচী, শিলাজিৎ ও রূপম ইসলামের মতো গায়কেরা। 'ও চাঁদ তোর বান্ধবীদের সঙ্গে যাব', গানটি রূপঙ্করের কণ্ঠে জনপ্রিয়। এই গানের কথাগুলিও কিংশুকের লেখা। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন লিভার জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। বেশ কিছুদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সুষ্ঠ হয়ে বাড়িও এসেছিলেন কিন্তু বুধবার সকালেই সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।
সকালেই কিংশুকের প্রয়ানের খবর প্রকাশ্যে এলে বিষাদের ছায়া নাম সঙ্গীত ও শ্রোতা মহলে। গায়কের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ। সামাজিক মাধ্যমে কিংশুকের লেখার ভক্তরাও শোক প্রকাশ করছেন। হরনাথ চক্রবর্তী পরিচালিত এবং মদন মিত্র অভিনীত ছবি 'ওহ লাভলী' ছবিতেও কাজ করেছিলেন কিংশুক। তাঁর প্রয়ানে বাংলা সঙ্গীত জগতে অভাববোধ থেকেই যাবে।
রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া। প্রয়াত হলেন কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস (Congress) নেতা ওমেন চান্ডি (Oomen Chandy)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৭৯ বছর। ওমেন চান্ডির ছেলে বাবার মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে মৃত্যু হয় তাঁর। দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। গত কয়েক মাস ধরে বেঙ্গালুরুর (Bengaluru) এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। আর সেখানেই এদিন মৃত্যু হয় তাঁর।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ভোর ৪টে ২৫ মিনিট নাগাদ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ওমেন। এরপর তার ছেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর প্রয়াণের খবর দিয়েছেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়াণে কেরল সরকার মঙ্গলবার সরকারি ছুটি এবং দু'দিনের শোক ঘোষণা করেছে।
রাজনীতিতে ওমেন চান্ডি সফল বরাবর। প্রথমবার বিধায়ক হন তিনি মাত্র ২৭ বছর বয়সে। এখনও পর্যন্ত কেরলে সবথেকে বেশি দিন বিধানসভার সদস্য ছিলেন তিনি। টানা ১১ বার বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ওমেন চান্ডি। কেরলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময়ের জন্য বিধানসভার সদস্য থাকার নজির তাঁরই। দু'বার কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পদেও বসেছিলেন তিনি। ২০০৪ থেকে ২০০৬ ও ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দু'দফায় তিনি কেরলের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ রাজনৈতিক মহল। শোকপ্রকাশ করে টুইট করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
ফুটবল জগতে শোকের ছায়া। প্রয়াত (Dies) হলেন বার্সেলোনার তারকা ফুটবলার লুইস সুয়ারেজ (Luis Suarez)। তিনি একমাত্র স্প্যানিশ ফুটবলার, যার হাতে ব্যালন ডি-অর কাপ উঠেছিল। মে মাসেই নিজের জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন। কয়েক দিনের ব্যবধানেই থমকে গেল তাঁর হৃদস্পন্দন। রবিবারেই প্রয়াত হয়েছেন ফুটবল (Football) কিংবদন্তি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
বার্সেলোনার তরফে এক বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, 'লুইস সুয়ারেজ মিরামন্তেস এই রবিবার ৮৮ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন। ১৯৫৪ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত তিনি বার্সেলোনার জন্য খেলেছিলেন।' ১৯৬০ এর দশকে ইন্টার মিলানে মিড ফিল্ডার হিসেবে প্রবল প্রশংসা অর্জন কোরেসিলেন এই তারকা খেলোয়াড়।
১৯৩৫ সালে লা করুনাতে জন্মেছিলেন তিনি। এরপর ফুটবলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন নিজেকে। দর্শকদের মন জয় করেছেন। একাধিক পুরস্কার রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। তারকার প্রয়ানে শোকস্তব্ধ ফুটবল জগৎ। নেটিজেনরা বলছেন লুইস সুয়ারেজের প্রয়াণ একটি যুগের অবসান।
অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) মাতৃহারা হলেন। শুক্রবার শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন অভিনেতার মা শান্তিরানী চক্রবর্তী। মিঠুন চক্রবর্তীর বেড়ে ওঠা এই কলকাতাতেই। জোড়াবাগানে মা বাবা ভাই বোনদের সঙ্গে থাকতেন অভিনেতা। কিন্তু অভিনয়ের প্রতি তীব্র আকর্ষণ তাঁকে টলিউড থেকে বলিউডের গলিতে সংগ্রাম করিয়েছে। মিঠুন মুম্বইতে থাকতেন ঠিকই কিন্তু প্রাণজুড়ে ছিলেন মা-বাবা।
তিন বছর আগে অভিনেতা তাঁর বাবাকে হারিয়েছেন। ডান্স বাংলা ডান্সের মঞ্চেই কিছুদিন আগে বাবার স্মৃতিচারণ করেছেন তিনি। বাবাকে মনে পড়ে, একথাও বলেছিলেন। এবার মায়ের প্রয়ানে অভিভাবক হারালেন অভিনেতা। অন্যদিকে এই খবর শুনে অভিনেতার পাশে দাঁড়িয়েছেন কুনাল ঘোষ। দুজনের রাজনৈতিক আদর্শ আলাদা, তাই তাঁদের একসুরে গাইতে দেখা যায় না. তবে এমন বিষণ্ণ দিনে রাজনৈতিক ব্যবধান ভুলেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র।
তিনি লিখেছেন, 'মাতৃবিয়োগের জন্য মিঠুন চক্রবর্তীকে জানাই আন্তরিক সমবেদনা। আশা করি মিঠুনদা ও তার পরিবার এই গভীর শোক সামলে উঠবে।'
বলি (Bollywood) পাড়ায় আবারও শোকের ছায়া। প্রয়াত হয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সুলোচনা লতকর (Sulochona latkar)। হিন্দি এবং মারাঠি সিনেমা মিলিয়ে মোট ২০০টি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। অধিকাংশ চরিত্র মায়ের, তাই একসময় তাঁকে বলিউডের 'মা' বলা হত। ভারত সরকারের অন্যতম সম্মান 'পদ্মশ্রী' পেয়েছিলেন অভিনেত্রী। বার্ধক্যজনিত রোগে বেশ কিছুদিন শয্যাশায়ী ছিলেন। রবিবার দুপুরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তাঁর প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শোকজ্ঞাপন করেছেন মাধুরী দীক্ষিত সহ বলিউড তারকারা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, 'সুলোচনা দেবীর প্রয়াণে ভারতীয় সিনেমায় শূন্যস্থান তৈরী হয়েছে। তাঁর ভুলতে না পারা পারফরম্যান্স আমাদের সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে এবং প্রজন্মের কাছে তাঁকে নিজের করে তুলেছে। চলচ্চিত্র জগতে তিনি কাজের মাধ্যমে রয়ে যাবেন। তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা রইল।'
অন্যদিকে মাধুরী দীক্ষিত লিখেছেন, 'সুলোচনা মাসি সিনেমা জগতের অন্যতম মাধুর্যমণ্ডিত এবং ভালোবাসা প্রাপ্ত অভিনেত্রী। তাঁর অভিনীত আমার সবসময়ের পছন্দের ছবি হয়ে রয়ে যাবে 'সঙ্গীতা আইকা'। প্রত্যেকটি সিনেমায় তাঁর অভিনয় মনে রাখার মতো। আমাদের আলাপচারিতা আমার মনে পড়বে। ভারতীয় সিনেমায় তোমার প্রতিদান মনে থাকবে।'
অভিনেত্রীর প্রয়াণে শোক জ্ঞাপন করেছেন অভিনেতা রীতেশ দেশমুখও। প্রভাদেবী রেসিডেন্সে তাঁকে শায়িত রাখা হবে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে শিবাজী পার্ক শ্মশানে তাঁর অন্তিম ক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
শুক্রবার প্রয়াত হলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা অমরনাথ মুখোপাধ্যায় (Amarnath Mukherjee)। মুম্বইতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বাংলা সিনেমা (Tollywood) জগতে তাঁর অবদান রয়ে গিয়েছে অনেক। উত্তমকুমারের সঙ্গে 'মৌচাক' সিনেমা থেকে শুরু করে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে 'বসন্ত বিলাপ', বহু বাংলা সিনেমায় অভিনেতার স্মার্ট উপস্থিতি বরাবর দর্শকদের নজর কেড়েছিল। তবে শেষের দিকে শারীরিক অসুস্থতায় আর কাজ করতে পারেননি। তিনি পরিবারের সঙ্গে মুম্বই চলে যাওয়ার পর কেউ তাঁর বিশেষ খোঁজও রাখেনি।
১৯৩৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন অমরনাথ মুখোপাধ্যায়। অভিনয় বোধহয় তাঁর জন্মসূত্রেই পাওয়া। তাঁর পিতা ছিলেন তৎকালীন নাম করা অভিনেতা হরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। এমনকি তাঁর মামা জহর মুখোপাধ্যায়ও ছিলেন অভিনেতা। তাই ছোটবেলা থেকেই নিজের মধ্যে অভিনয়ের ইচ্ছে লালন করেছিলেন অমরনাথ। প্রাথমিকভাবে অভিনয় শুরু করেছিলেন নাটক দিয়ে।
'হার মানা হার', 'ছিন্নপত্র', 'স্ত্রী', 'বসন্ত বিলাপ', 'মৌচাক', 'স্বয়ংসিদ্ধা'র মতো বহু সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন অমরনাথ মুখোপাধ্যায়। কেবল টলিউডে সীমাবদ্ধ ছিলেন না অভিনেতা। 'ডিস্কো ডান্সার', 'অমানুষ' -এর মতো হিন্দি সিনেমাতেও অভিনয় করেছিলেন অমরনাথ। তরুণ মজুমদার পরিচালিত 'আলো' সিনেমায় শেষ অভিনয় করেছিলেন। ২০০৫ সালে কলকাতা ছেড়ে ছেলে ও পরিবারের সঙ্গে মুম্বই চলে গিয়েছিলেন অভিনেতা। এরপর শরীরের জন্য আর বিশেষ সিনেমায় অভিনয় করতে পারেননি। অমরনাথ মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে টলি পাড়ার বর্ষীয়ান অভিনেতাদের মনে শোকের ছায়া নেমেছে।
বিনোদন জগতে যেন শোকের ছায়া কাটতেই চাইছে না। একের পর এক অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মৃত্যু ঘটেই চলেছে। এবারে প্রয়াত হলেন জনপ্রিয় ধারাবাহিক 'অনুপমা'-এর (Anupamaa) অভিনেতা নীতেশ পাণ্ডে (Nitesh Pandey)। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৫১ বছর। নীতেশ অনুপমা ছাড়াও একাধিক ছবি ও সিরিয়ালেও কাজ করেছেন তিনি। বিনোদন জগতে পর পর তারকাদের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ টেলি ইন্ডাস্ট্রি।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, শ্যুটিংয়ের জন্য ইগাতপুরী ছিলেন নীতেশ। সেই সময়ই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। মঙ্গলবার ভোররাত ২টোর সময় কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। এরপর সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে খবর। বুধবার সকালে নীতেশের শ্যালক ও প্রযোজক সিদ্ধার্থ নগর নীতেশের মৃত্যুর খবর দেন। তাঁর মৃত্যুর খবর সামনে আসার পরই টেলিভিশন জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনুপমা সিরিয়ালে তিনি ধীরজ কাপুরের চরিত্রে অভিনয় করছিলেন।
ছোট পর্দা হোক বা বড় পর্দা, দুই জায়গাতেই নীতেশ পাণ্ডে নাম বেশ জনপ্রিয়। ১৯৯০ সাল থেকে থিয়েটার জগতের সঙ্গে যুক্ত তিনি। ১৯৯৫ সালে 'তেজস' ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। ছবিতে একজন গোয়েন্দা চরিত্রে অভিনয় করেন। 'মঞ্জিলে আপানি', 'অস্তিত্ব... এক প্রেম কাহানি', 'সায়া', 'জুস্তজু' এবং 'দুর্গেশ নন্দিনি'র মতো ধারাবাহিকেও কাজ করেছেন। আবার 'ওম শান্তি ওম', 'দাবাং', 'খোসলা কা ঘোশলা এবং 'বাধাই দো'-এর মতো ছবিতেও কাজ করেছেন তিনি। বিনোদন জগতে তিনি প্রায় ২৫ বছর ধরে কাজ করে চলেছিলেন তিনি।
'আই এম স্যাড টু সে, আই এম অন মাই ওয়ে, ওন্ট বি ব্যাক ফর মেনি এ ডে...' দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমি চললাম, অনেক দিন আর ফিরব না। নিজের গান 'জামাইকা ফেয়ারওয়েল'-এ এই কথাগুলি লিখেছিলেন আমেরিকার প্রবাদপ্রতিম গায়ক হ্যারি বেলাফন্টে। অনেক দিন নয়, আর কোনও দিনই ফিরবেন না তিনি। ৯৬ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বেলাফন্টে। তাঁর দীর্ঘদিনের মুখপাত্র কেন সানশাইন একথা জানিয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে নিস্তব্ধতা নেমে এসেছে সারা বিশ্বের সঙ্গীত প্রেমীদের মনে।
পঞ্চাশের দশকে আমেরিকার সঙ্গীত জগতে ঝড় তুলেছিলেন তিনি। বর্ণবিদ্বেষীর শিকড় তখন ছড়িয়ে পড়েছে। শেতাঙ্গদের চরম নিপীড়নের শিকার কৃষ্ণাঙ্গরা। সেই সময়েই উত্থান হ্যারি বেলাফন্টের। তাঁর গানই হয়ে উঠেছিল প্রতিবাদের ভাষা। বেলাফন্টের গান যেন একাই মিছিল। গানের প্রতিটি শব্দ যেন গণ আন্দোলনের স্লোগান। 'ক্যালিপসো', 'জামাইকা ফেয়ারওয়েল'-এর মতো অ্যালবাম তাঁরই সৃষ্টি। 'মাটিল্ডা', 'শেক শেক সেনোরা'র মতো কালজয়ী গান উঠে এসেছে তাঁর কণ্ঠে।
গরিব পরিবারে তাঁর জন্ম, তাই সংখ্যালঘুদের ব্যথা ভালোই বুঝেছিলেন। তাঁদের নিয়েই গান বাঁধতে চেয়েছেন। গানে-কথায়-ছন্দে কোনও বৈষম্য নেই, বুঝিয়ে দিয়েছিলেন আমেরিকাকে। তাঁর গান সীমাবদ্ধ আটকে থাকেনি আমেরিকায়। সমগ্র বিদেশে এমনকি ভারতেও এসে পড়েছিল তাঁর উদাত্ত কণ্ঠের ব্যাপ্তি। বেলাফন্টের সংগ্রামে সামিল হয়েছিল গোটা দেশ। তাঁর মৃত্যুতে যেন থমকে গেল এক সময়কাল।
৭৪ বছরে প্রয়াত হলেন বলিউড পরিচালক যশ চোপড়ার (Yash Chopra) স্ত্রী পামেলা চোপড়া (Pamela Chopra)। বৃহস্পতিবার মুম্বইতে প্রয়াত হয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে ১৫ দিন ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে খবর। স্বামী যশ চোপড়ার সঙ্গে বহু কাজ করেছেন। যশরাজ ফিল্মসের ব্যানারে তিনি লেখক, কস্টিউম ডিজাইনার, এবং গায়িকা হিসেবেও কাজ করেছেন।
চাঁদনী সিনেমার 'ম্যায় সসুরাল নেহি যাউঙ্গি', দিলওয়ালে দুলহনিয়া সিনেমার 'ঘর আজ পরদেশী' গানে গলা দিয়েছেন পামেলা। ১৯৭৬ সালে যশ চোপড়ার 'কভি কভি সিনেমা লিখেছিলেন তিনি। ১৯৮১ সালের 'সিলসিলা' সিনেমার জন্য তিনি ডিজাইনারের সম্মান পান। যশ রাজ ফিল্মসের অন্যতম ভিত্তি ছিলেন পামেলা।
গভীরভাবে শোকাহত যশ চোপড়া ও পামেলা চোপড়ার দুই পুত্র আদিত্য চোপড়া এবং অভিনেতা উদয় চোপড়া গভীরভাবে শোকাহত। বৃহস্পতিবার যশরাজ ফিল্মসের সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্টার দিয়ে পামেলা চোপড়ার প্রয়াণ বার্তা দেওয়া হয়েছে।
সেখানে লেখা হয়েছে, 'খুব ভারাক্রান্ত হৃদয়ে, চোপড়া পরিবার জানাচ্ছে, ৭৪ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন পামেলা চোপড়া। মুম্বইতে সকাল ১১টায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। আপনাদের প্রার্থনার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। তাঁর পরিবার বর্তমানে একান্ত শোকজ্ঞাপনের সুযোগ চাইছে। '