
অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ (Naseeruddin Shah) দেশের হাল হকিকত নিয়ে সরব হন মাঝেমধ্যে। এবার দেশের নতুন সংসদ ভবন সম্পর্কে নিজের বক্তব্য জানালেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতাকে নতুন সংসদ ভবন (New Parliament House) নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। এমনকি নাম না করেই বিঁধেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। অভিনেতা বলেন 'প্রধান নেতা নিজের স্মৃতিস্তম্ভ বানিয়েছেন। এইভাবেই তিনি সকলের মনে থাকবেন ' এখানেই শেষ করেননি মন্তব্য।
অভিনেতা আরও বলেছেন, 'পুরোনো সংসদ ভবনের বয়স ১০০ বছর। একটি নতুন সংসদ ভবনের প্রয়োজন ছিল, একথা সত্যি। কিন্তু এই ধরণের একটি অনুষ্ঠানের প্রয়োজন ছিল কী ? যেখানে তুমি সব কিছুতেই ধর্মীয় ধারণা প্রকাশ করছ।' অভিনেতা নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের অনুষ্ঠানকে 'ভ্রান্ত মহিমা' বলেছেন।
নাসিরুদ্দিন শাহ আরও বলেছেন, 'আমাদের দেশ এই জন্যই ভুগছেন। আপনি পণ্ডিত বেষ্টিত হয়ে এলেন, যেন ইংল্যান্ডের রাজা বিশপ পরিবেষ্টিত হয়ে এসেছেন একটি রাজদণ্ড হাতে।' বক্তব্যের শেষে অভিনেতা যোগ করেন, 'এই সংসদ ভবন আমাদের গণতন্ত্রের চিহ্ন। আশা করি, আমাদের গণতন্ত্র সুরক্ষিত থাকবে।
২৮ মে অর্থাৎ রবিবার মহাসমারোহে উদ্বোধন করা হয় নয়া সংসদ ভবনের (New Parliament)। আর এই ঐতিহাসিক দিনে অবশেষে প্রকাশ্যে আনা হয় নয়া ৭৫ টাকার কয়েন (Rs 75 Coin)। নয়া সংসদ ভবন উদ্বোধনের স্মারক হিসেবেই ৭৫ টাকার কয়েন বাজারে আনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। রবিবার নিজে হাতে তা সামনে আনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। এই দিনটিকে আরও স্মরণীয় করে রাখতে একই সঙ্গে বিশেষ ডাকটিকিটও প্রকাশ করা হয়।
৫০ শতাংশ রুপো, ৪০ শতাংশ তামা, ৫ শতাংশ নিকেল এবং ৫ শতাংশ দস্তার সংমিশ্রণে তৈরি এই ৭৫ টাকার কয়েন। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, ৪৪ মিলিমিটার ব্যাসযুক্ত স্মারক ৭৫ টাকার কয়েনের ওজন হয়েছে ৩৫ গ্রামের মতো। এই কয়েনের সামনে দিকে অশোক স্তম্ভের সিংহের মুখ আছে। অশোক স্তম্ভের ঠিক নীচে দেবনাগরী হরফে 'সত্যমেব জয়তে' লেখা আছে। সেটার ঠিক নীচে লেখা আছে ইংরেজিতে ৭৫ টাকা। সঙ্গে রুপির চিহ্ন রয়েছে। আর ডানদিকে ইংরেজিতে লেখা আছে 'ইন্ডিয়া' (India)। বাঁ-দিকে দেবনাগরী হরফে 'ভারত' লেখা আছে।
তবে এই স্মারক মুদ্রা বাজারে কেনাবেচার জন্য ব্যবহৃত হবে না। অর্থাৎ লেনদেনের জন্য ব্য়বহার করতে পারবেন না মানুষরা। তবে স্মারক মুদ্রা হিসাবে সেই মুদ্রা নিজেদের কাছে রাখা যাবে। সিকিউরিটিজ অফ প্রিন্টিং অফ মিন্টিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডের ওয়েবসাইট থেকে স্মারক মুদ্রা সংগ্রহ করতে পারবেন।
নতুন সংসদ ভবন (New Parliament Building) উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। এই ভবন তৈরির কাজ যাঁরা করেছেন, রবিবার তাঁদের উত্তরীয় পরিয়ে সম্মানিত করেন প্রধানমন্ত্রী। তবে জানেন কি নতুন এই সংসদ ভবন সেজে উঠেছে একাধিক বাঙালি শিল্পীর হাতের কারুকার্যে? নজর কেড়েছে বাঙালির কীর্তি।
সংসদ ভবনের প্রধান তিনটি দরজা জ্ঞানদ্বার, শক্তিদ্বার এবং কর্মদ্বারের ভিতরে ঢুকেই বিখ্যাত বাঙালি শিল্পী গৌরমোহন পাহাড়ির নেতৃত্বে তৈরি দু'পাশের দেওয়ালে লাগানো ছ'টি পিতলের ম্যুরাল। গাজিয়াবাদের লোনির কর্মশালায় গত এক বছর ধরে তৈরি হয়েছে এই ম্যুরালগুলি। গৌরমোহনের পরামর্শ অনুযায়ী কলকাতা আর্ট কলেজের ছাত্রছাত্রীরা নতুন সংসদ ভবনের 'কনস্টিটিউশনাল ফয়ার'এর দেওয়ালের ফ্রেসকোয় ফুটিয়ে তুলেছেন সংবিধানে আঁকা ১৫ টি ছবি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং তাঁর আজাদ হিন্দ বাহিনীর ছবি এবং কলকাতার বিখ্যাত দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের চিত্র। এছাড়াও রাম-লক্ষণ-সীতার পুষ্প বিমান, মহেঞ্জোদারো, গুরুকুল, নেতাজি-আজাদ হিন্দ, গান্ধীজির হিন্দু-মুসলিম ভ্রাতৃত্বের মতো ১৫টি ছবি। গৌরমোহনেরই পরামর্শে যা করেছেন কলকাতা আর্ট কলেজের বাঙালি শিল্পীরা। সংবিধানের পাতায় যা এঁকেছিলেন নন্দলাল বসু, হুবহু তাই ফুটেছে ফ্রেসকোয়। কলা, শিল্প, স্থাপত্য নামে তিন ‘ইন্ডিয়া গ্যালারি’র দুই দেওয়ালে ভারতীয় সংস্কৃতির নানা উদাহরণও হবে দৃশ্যমান।
এছাড়াও সংসদ ভবনের উপরে যেখানে সিংহের এমব্লেম বসানো হয়েছে ঠিক তার সামনে রাখা হয়েছে 'ফোকো পেন্ডুলাম'। যার দুলুনি প্রমাণ করে পৃথিবীর নিজের চারিদিকে ঘুরছে। কলকাতার ন্যাশনাল কাউন্সিল অব সাইন্স মিউজিয়ামের ডিজি অরিজিৎ দত্ত এবং সেন্ট্রাল রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ল্যাবরেটরি ডিরেক্টর নটরাজ দাশগুপ্ত তৈরি করেছেন এই অনন্য পেন্ডুলাম। ২৫ সেন্টিমিটার গোলাকার এবং ৩০ কেজি ওজনের এই পেন্ডুলামের উপরে রয়েছে সোনার পরত। বাঙালি পদার্থবিদদের তৈরি এই অভিনব ফোকো পেন্ডুলাম থাকছে নতুন সংসদ ভবনের একেবারে কেন্দ্রে। যা চোখ এড়াতে পারবেন না কারোর।
ভারতের নতুন সংসদ ভবনের (Parliament) উদ্বোধন অনুষ্ঠান রবিবার। এদিন সকাল থেকেই সাজো সাজো রব নতুন পার্লামেন্টে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে সব ধর্মের আরাধনা দিয়ে শুরু হচ্ছে এই অনুষ্ঠান। এই নতুন সংসদ ভবনের নতুন আকর্ষণ স্বর্ণ দিয়ে তৈরী 'রাজদণ্ড' অর্থাৎ 'সেঙ্গল'। লোকসভার স্পিকারের আসনের পাশেই থাকবে এই সেঙ্গল। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উদ্বোধন কর্মসূচি করে ফেলেছেন। এই বিশেষ দিনে বিশেষ বার্তা দিয়েছে বলিউড (Bollywood)। সিনেমা জগতের তিন তারকা শাহরুখ খান, অক্ষয় কুমার এবং অনুপম খের নিজের সামাজিক মাধ্যমে নতুন পোস্ট শেয়ার করেছেন।
নতুন সংসদ ভবনের একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন শাহরুখ। সেই ভিডিওর আবহতে অভিনেতা বলছেন, 'ভারতের নতুন সংসদ ভবন, আমাদের আশার নতুন ঘর। আমাদের সংবিধান সামলান যারা তাঁদের জন্য এমন একটি ঘর, যেখানে ১৪০ কোটি ভারতীয় একটি পরিবার। এই নতুন ঘর এতটাই বড় হোক, যেন এখানে দেশের প্রত্যেকটি প্রান্ত-প্রদেশ-গ্রাম-শহর কোণা কোণার জন্য জায়গা হয়। এর বাহু এতটাই বড় হোক, যাতে প্রত্যেকটা জাতি-ধর্ম একে অপরকে ভালোবাসতে পারে।' আরও কী বলেছেন অভিনেতা শুনুন।
What a magnificent new home for the people who uphold our Constitution, represent every citizen of this great Nation and protect the diversity of her one People @narendramodi ji.
— Shah Rukh Khan (@iamsrk) May 27, 2023
A new Parliament building for a New India but with the age old dream of Glory for India. Jai Hind!… pic.twitter.com/FjXFZwYk2T
ভিডিও আপলোড করেছেন অভিনেতা অক্ষয় কুমারও। তিনি বলছেন, 'ভারতের উন্নতিতে গর্ব হয় এমন প্রত্যেকটি মানুষের মতো এই নতুন পার্লামেন্টের ছবি দেখে অন্যরকম আনন্দ হচ্ছে। মনে আছে, ছোটবেলায় আমি যখন দিল্লি থাকতাম, বাবা-মায়ের হাত ধরে ইন্ডিয়া গেটের আশেপাশে ঘুরতে যেতাম, তখন দেখতাম বেশিরভাগ বিল্ডিং ইংরেজদের তৈরী করা। আজ এই এত বড় স্থাপত্য দেখে আমার মন গর্বে ভরে গিয়েছে।'
Proud to see this glorious new building of the Parliament. May this forever be an iconic symbol of India’s growth story. #MyParliamentMyPride pic.twitter.com/vcXfkBL1Qs
— Akshay Kumar (@akshaykumar) May 27, 2023
অভিনেতা অনুপম খের বলছেন, 'এই ভবন শুধু একটি ভবন নয়, ১৪০ কোটি দেশবাসীর স্বপ্ন। এই সংসদ ভবন তাঁদের আশার প্রতীক, তাঁদের স্বাভিমানের হস্তাক্ষর। এটি বিশ্বের সবথেকে বড় গণতন্ত্রের জয় ঘোষণা। এটি আমাদের লোকতন্ত্রের প্রতীক।'
यह भवन सिर्फ़ एक भवन नहीं,
— Anupam Kher (@AnupamPKher) May 27, 2023
यह ठिकाना है 140 करोड़ देशवासियों के सपनों का..
यह प्रतीक है उनकी आशाओं का,
यह हस्ताक्षर है उनके स्वाभिमान का..
यह जयघोष है दुनिया के सबसे बड़े जनतंत्र का,
यह मंदिर हैं हमारे लोकतंत्र का..
इसकी नींव में वसुदैव कुटुंबकम का भाव है,
इसकी ईंट ईंट… pic.twitter.com/ZEOhEvPndT
নতুন সংসদ ভবনে স্থাপন হল ঐতিহাসিক স্বর্ণদন্ড 'সেঙ্গল'। উদ্বোধন হল নতুন সংসদ ভবনের (Parliament Building)। নির্ধারিত সূচি মেনেই সকাল থেকে নতুন সংসদ ভবন চত্বরে শুরু হয় পুজো ও হোম। পুজোয় সামিল হন প্রধানমন্ত্রী (PM) নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। এদিন, শুরুতেই 'সেঙ্গল'-কে সাষ্ঠাঙ্গে প্রণাম জানালেন প্রধানমন্ত্রী। পুজোর পর ওই 'সেঙ্গল' নিয়ে নতুন সংসদ ভবনে পা রাখেন মোদী। পবিত্র বেদমন্ত্র উচ্চারণের মধ্যে দিয়ে লোকসভা কক্ষে স্থাপন করেন 'সেঙ্গল'। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে সঙ্গে নিয়ে প্রদীপ প্রজ্বোলন করেন। সব শেষে তামিলনাড়ুর বিভিন্ন মঠের সন্তদের কাছ থেকে আশীর্বাদ গ্রহণ করেন।
এদিন, সকাল সাড়ে ৭টায় ট্র্যাডিশনাল পোশাকে সংসদ চত্বরে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁকে স্বাগত জানান, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। পূজাপাঠের মাধ্যমে শুরু হয় সংসদ ভবন উদ্বোধনের মূল অনুষ্ঠান। এরপর সেঙ্গল প্রতিষ্ঠা। তারপর সর্বধর্ম প্রার্থনা। যে সব শ্রমিক এই সংসদ ভবন তৈরি করেছেন, তাঁদের সংবর্ধনাও দেন প্রধানমন্ত্রী।
দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে। জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠান হবে। এরপর নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে ২টি শর্ট ফিল্মও দেখানেো হবে। এরপর রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতির বার্তা পাঠ করে শোনাবেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান। লোকসভার স্পিকারও বিবৃতি দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমে সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হবে।
অনুষ্ঠানের মাঝেই এদিন, ৭৫ টাকার কয়েনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ।
আর কিছুক্ষণের অপেক্ষা, রাত পোহালেই দ্বারোদ্ঘাটন হবে নতুন সংসদ ভবনের (New Parliament Building)। ২৮ মে, রবিবার উদ্বোধন হতে চলেছে নতুন সংসদ ভবন। প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরেই এই উদ্বোধন হতে চলেছে। বিশেষ পুজোর মধ্য দিয়েই উদ্বোধন হবে নতুন সংসদ ভবনের। আর তার আগেই আজ অর্থাৎ শনিবার বিকেলে নয়াদিল্লিতে (New Delhi) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Narendra Modi) হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক পবিত্র সেঙ্গোল (Sengol) তুলে দিলেন পবিত্র শৈব মঠ তিরুভাদুথুরাই অধিনামের (Adheenams) সন্ন্যাসীরা। ওই সময় প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনও।
#WATCH | Delhi | Ahead of the inauguration ceremony of #NewParliamentBuilding, PM Narendra Modi meets the Adheenams at his residence and takes their blessings. The Adheenams handover the #Sengol to the Prime Minister pic.twitter.com/Vvnzhidk24
— ANI (@ANI) May 27, 2023
সূত্রের খবর, রবিবার বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সংসদ ভবনের ভিতরে ঐতিহ্যবাহী সেঙ্গোল স্থাপন করা হবে ও এরপর প্রার্থনাসভারও আয়োজন করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, আগামীকাল সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে নতুন সংসদের লোকসভা কক্ষে সেঙ্গোল স্থাপন করা হবে। শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের আগেই তাঁর নিজের বাসভবনে অধিনামদের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের থেকে আশীর্বাদ গ্রহণ করেন ও তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় সেঙ্গোল। কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, নতুন সংসদ ভবনে স্পিকারের পাশেই রাখা হবে এই সেঙ্গোল।
চলতি বছরের ২৮ মে, রবিবার নতুন সংসদ ভবন (Parliament) উদ্বোধন হতে চলেছে। এই উদ্বোধন উপলক্ষে আরও এক বিশেষ চমক এনেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক (Finance Ministry) ঘোষণা করেছে, রবিবার সংসদ ভবনের পাশাপাশি ৭৫ টাকার বিশেষ মুদ্রাও (75 Rupee Coin) উদ্বোধন করা হবে। কিছুদিন আগেই ২০০০ টাকা নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া। কিন্তু এরপরই বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রকের তরফে এই ৭৫ টাকার মুদ্রার চালু করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনের দিনই এই মুদ্রা প্রকাশ্যে আনা হবে।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক সূত্রে খবর, ৭৫ টাকার বিশেষ কয়েনটি ৪৪ মিলিমিটার ব্যাসযুক্ত বৃত্তাকার হবে। এই মুদ্রার মাঝখানে অশোক স্তম্ভও থাকবে ও তার পাশে 'ইন্ডিয়া' ও 'ভারত' লেখা থাকবে। নীচেই লেখা থাকবে 'সত্যমেব জয়তে'। এই কয়েনে নতুন সংসদ ভবনের ছবিও থাকবে। আবার নতুন সংসদ ভবনের ছবির নীচে ২০২৩ উল্লেখ করা থাকবে।
জানা গিয়েছে, ৭৫ টাকার বিশেষ মুদ্রাটির ওজন ৩৫ গ্রাম। এই কয়েনটি কয়েকটি ধাতুর সংমিশ্রণে তৈরি করা হবে। ৫০ শতাংশ রূপা, ৪০ শতাংশ কপার, ৫ শতাংশ নিকেল ও ৫ শতাংশ জিঙ্ক দিয়ে তৈরি করা হবে ৭৫ টাকার বিশেষ মুদ্রা। নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনকে স্মরণীয় করতেই এই বিশেষ মুদ্রা চালু করা হচ্ছে। রবিরার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরেই এই মুদ্রার উদ্বোধন হবে।
'মোদি' পদবী টেনে বিতর্কিত মন্তব্যে স্বস্তি রাহুল গান্ধীর। সুরাতের দায়রা কোর্ট জামিন মঞ্জুর করেছে রাহুলের। পরবর্তী শুনানি ১৩ এপ্রিল। ১০ এপ্রিলের মধ্যে রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা গুজরাতের মন্ত্রীকে হলফনামা জমা দিতে বলেছে আদালত। আপাতত ১৩ই এপ্রিল অবধি রাহুলের বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। এমনটাই জানিয়েছে সুরাতের দায়রা আদালত।
সূত্রের খবর, সোমবার সুরাতের দায়রা আদালতে হলফনামা জমা দেন ওয়ানাডের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ। রায়ের উপর স্থগিতাদেশের পাশাপাশি লোকসভার সদস্যপদ ফিরিয়ে দিতেও আবেদন করেন তিনি। এদিকে, সোমবার রাহুল তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে আদালতে পৌঁছন। এছাড়াও এদিন রাহুলের সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের তিন মুখ্যমন্ত্রী। এরা হলেন, রাজস্থানের অশোক গেহলট, ছত্তিশগড়ের ভূপেশ বাঘেল ও হিমাচলপ্রদেশের সুখবিন্দর সিং সুখু।
সূত্রের খবর, ২০১৯ সালে 'মোদি' পদবী টেনে বিতর্কিত মন্তব্য করায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয় সুরাতের এক আদালতে। চূড়ান্ত রায়ে সুরাতের ওই আদালত তাঁকে দু বছরের সাজা শোনায়। তারপর লোকসভায় তাঁর সাংসদপদ বাতিল হয়। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে একটি পিটিশন দাখিল করেন কংগ্রেস নেতা। তার ভিত্তিতেই ১৩ তারিখ অবধি জামিন পেয়েছেন তিনি।
প্রসূন গুপ্ত: শনিবার কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় অফিস থেকে রাহুল গান্ধী তাঁর সাংসদপদ চলে যাওয়া নিয়ে মুখ খুললেন। সারা দেশের উৎসাহ ছিল, নিজের সমর্থনে রাহুল গান্ধী কী বলেন। যদিও শুক্রবার লোকসভা থেকে তাঁর সাংসদ পদ চলে যাওয়ার পর সবকটি বিরোধী দল থেকেই প্রতিবাদ উঠেছিল। সেই তালিকায় নাম আছে চিরকাল কংগ্রেস-বিরোধী হিসেবে পরিচিত আপ পার্টি বা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সেই তালিকায় রয়েছে ইদানিং কংগ্রেসের সঙ্গে শীতল সম্পর্কে যাওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের। এরাও পৃথক ভাবে হলেও এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। এদিকে এক মানহানির মামলায় সুরাতের এক আদালত রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে, দুই বছরের জেল।
শনিবার অবশেষে সংবাদ মাধ্যমে মুখ খুললেন রাহুল গান্ধী। রাহুল জানান, 'তিনি লোকসভায় থাকলে নরেন্দ্র মোদীর নাকি সমস্যা হচ্ছিলো।' আদানি কাণ্ডেও মোদী সরকারকে খোঁচা দেন কংগ্রেস নেতা। তিনি জানান, 'মোদী বলে তিনি মাত্র দুজন ব্যক্তির নাম করেছিলেন, নীরব ও ললিতের। চোর মানেই কি মোদী? তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে।' সাংবাদিকদের তরফে প্রশ্ন আসে, কেন উচ্চ আদালত থেকে নিম্ন আদালতে এই মামলা ফিরে যায় এবং তাঁকে কেন সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়?
রাহুল জানান, 'আদালতের বিরুদ্ধে তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না। এ বিষয়ে তাঁদের দলের আইনজীবীরা যা বলার বলবেন।' তাঁর মুখে এদিন একটি কথাই বারবার এসেছে, তা উদ্যোগপতি আদানিকে নিয়ে। তিনি বলেন, 'কে এই আদানি? তাঁর নাম আগে কোনওদিন শোনা যায়নি। প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে উঠে এসেছেন তিনি। কেন আদানির বিমানে মোদী সফর করেছিলেন?' সেই ছবি রাহুল গান্ধী লোকসভায় পেশ করেছিলেন, দাবি তাঁর। সংসদে তাঁর আরও বেশ কিছু বলার ছিল। কিন্তু মোদী তাঁকে সেই সুযোগ দিলেন না। এভাবেও খোঁচা দেন রাহুল গান্ধী।
রাহুল বলেন, 'এই ঘটনায় বিরোধীদের শক্তিবৃদ্ধি হবেই। সম্মিলিত হবে বিরোধীরা।' তিনি জানান, 'তাঁকে লোকসভায় ঢুকতে না দিলে বা জেলে পাঠালেও মুখ বন্ধ হবে না।'
সম্ভাবনা সত্যি করেই লোকসভায় খারিজ হয়েছে রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সাংসদ পদ। মানহানির মামলায় সুরাতের এক আদালতের রায় সামনে আসতেই জল্পনা শুরু হয়। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের কোপে পড়বেন কি কংগ্রেসের (Congress) প্রাক্তন সভাপতি। সেই জল্পনাকে সত্যি করেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে লোকসভার সচিবালয়। আর এই খবর চাউর হতেই কেন্দ্র তথা বিজেপির সমালোচনায় সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata)। ট্যুইটে তাঁর খোঁচা, 'প্রধানমন্ত্রী মোদীর নতুন ভারতে বিরোধী দলের নেতারা বিজেপির মুখ্য টার্গেট! ফৌজদারি অপরাধের ইতিহাস নিয়েও বিজেপি নেতারা মন্ত্রিসভায় জায়গা পান। আর শুধুমাত্রে বক্তব্যের কারণে বিরোধী নেতার পদ খারিজ হয়। সাংবিধানিক গণতন্ত্রের আরও একটা নিকৃষ্টতম ঘটনার সাক্ষী হলাম আজ।'
In PM Modi’s New India, Opposition leaders have become the prime target of BJP!
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) March 24, 2023
While BJP leaders with criminal antecedents are inducted into the cabinet, Opposition leaders are disqualified for their speeches.
Today, we have witnessed a new low for our constitutional democracy
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই খোঁচার মধ্যেই শুক্রবার ট্যুইটে সরব হয়েছিলেন রাহুল গান্ধীও। তিনি লেখেন, 'আমি দেশের আওয়াজের জন্য লড়াই করছি। প্রতিটি মূল্য চোকাতে প্রস্তুত।' ইতিমধ্যে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সরব সিপিএম, সমাজবাদী পার্টির মতো দলগুলোও।
मैं भारत की आवाज़ के लिए लड़ रहा हूं।
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) March 24, 2023
मैं हर कीमत चुकाने को तैयार हूं।
আদানি ইস্যুতে (Adani Row) মোদী সরকারকে চাপে ফেলতে যখন বিরোধী শিবির কোমর বেঁধেছে, তখন দুর্নীতি প্রশ্ন পূর্বতন ইউপিএ সরকারকে (UPA Government) পাল্টা আক্রমণ নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi)। বুধবার সূচি মেনেই রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর বলতে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিকেল ৪টে থেকে সোয়া ৫টা পর্যন্ত অর্থাৎ ৭৫ মিনিট সংসদে (Parliament) বক্তব্য রাখেন নরন্দ্র মোদী। তাঁর বক্তব্যের পুরো জুড়ে ছিল নিজের সরকারের ভূয়সী প্রশংসা এবং পূর্বসূরির সমালোচনা।
দুর্নীতি প্রশ্নে ইউপিএ সরকারকে বিঁধতে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য, 'বড় বড় দুর্নীতি থেকে মুক্তি খুঁজছিল দেশ। আজ সেই সব দুর্নীতি থেকে দেশ মুক্ত। ইউপিএ আমলের শেষ ১০ বছর কাশ্মীর-কন্যাকুমারী পর্যন্ত শুধু সন্ত্রাসবাদী হামলা। সবাই ভয়ে ভয়ে থাকতেন। জম্মু-কাশ্মীর থেকে উত্তর-পূর্ব ভারত, সর্বত্র কেবল হিংসা আর হিংসার ঘটনা। আর ভারতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত।' কটাক্ষের সুরে প্রধানমন্ত্রী জানান, 'লোকসভায় মঙ্গলবার কয়েক জনের মন্তব্যের পর পুরো ইকো সিস্টেম নড়ে গিয়েছে। তাঁদের সমর্থকরাও উল্লসিত। আমিও গতকাল (পড়ুন মঙ্গলবার) দেখছিলাম। কয়েক জনের বক্তৃতার পর কিছু লোক খুশি হয়ে বলছেন, ইয়ে হুয়ি না বাত। হয়তো তাঁরা রাতে ভাল ঘুমিয়েছেন এবং আজ সময়ে ঘুম থেকে উঠতে পারেননি।' আদতে তাঁর এই মন্তব্যের উদ্দেশ্য যে পরোক্ষে রাহুল গান্ধী, বুঝতে ভুল করেনি ওয়াকিবহাল মহল।
এদিন প্রধানমন্ত্রীর দাবি, 'গত কয়েক বছরে একের পর এক উন্নয়ন হয়েছে দেশে। করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের অর্থনীতির যখন বেহাল দশা, সেই সময়েও ভারত পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসাবে উঠে এসেছে। এটা কি গৌরবের নয়? আসলে কিছু মানুষ এমন ভাবে নিরাশায় ডুবে থাকেন যে, দেশের প্রগতির কোনও কিছুই তাঁদের চোখে পড়়ে না।'
নরেন্দ্র মোদীর সংযোজন, 'ইডি-কে ধন্যবাদ। ভোটাররা যা পারেননি, তা তারা করে দেখিয়েছে। তাদের জন্যই আজ বিরোধীরা এক মঞ্চে জড়ো হয়েছেন। গণতন্ত্রে সমালোচনা জরুরি এবং তা গঠনমূলক হওয়াই অভিপ্রেত। কিন্তু এখানে শুধু সেনাকে গালি, কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে গালি, আরবিআইকে গালি দিচ্ছেন বিরোধীরা। শুনুন, মোদীর উপর দেশবাসীর ভরসা টিভি চ্যানেলে বসে হয়নি। খবর ছাপিয়েও হয়নি। দেশের জন্য তিনি লড়েছেন। দেশবাসীর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য নিংড়ে দিয়েছেন নিজেকে। তাঁর উপর যেভাবে দেশবাসী ভরসা করেন, তা বিরোধীদের চিন্তাভাবনার বাইরে।' মোদী জানান, '১৪০ কোটি মানুষের আশীর্বাদ মোদীর মাথায় রয়েছে। ওটাই আমার সুরক্ষাকবচ। শুধু হার্ভার্ড নয়, বিশ্বের সমস্ত বড় বিশ্ববিদ্যালয় কংগ্রেসকে নিয়ে পড়াশোনা করবে।'
বাজেট অধিবেশনের (Budget Seesion) প্রথম দিন থেকেই আদানি ইস্যুতে (Adani Row) উত্তাল সংসদ। বিতর্ক এবং আলোচনার পরিসর চেয়ে আন্দোলন করছে সরকার-বিরোধী দলগুলো। এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং শিল্পপতি গৌতম আদানির ছবি তুলে ধরে সংসদে সুর চড়ান কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। তাঁর প্রশ্ন, 'কীভাবে সব ব্যবসাতে ঢুকে পড়ছে আদানি গোষ্ঠী? প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে আদানিদের সম্পর্ক ঠিক কী?' রাহুলের দাবি, ‘ভারত জোড়ো যাত্রা চলাকালীন যেখানেই তিনি গিয়েছেন, সর্বত্র একটিই নাম শুনেছেন— আদানি, আদানি এবং আদানি।'
মঙ্গলবার লোকসভায় বলতে উঠে রাহুল বলেন, 'তামিলনাড়ু থেকে কেরল, কেরল থেকে হিমাচল প্রদেশ, আমরা একটাই নাম শুনে এসেছি। মানুষ আমার কাছে জানতে চাইছেন, কীভাবে প্রতিটি ব্যবসায় আদানিরা ঢুকে যান এবং প্রতি ব্যবসায় ওই শিল্পগোষ্ঠী সফল হয়েছে!'
এদিন রাহুলের বক্তব্যের মধ্যেই ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে বিরোধিতার সুর ওঠে। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর মন্তব্য, 'শুধুমাত্র বড় অভিযোগ করলেই হয় না। সেই অভিযোগের উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ দিতে হয়।' দু'পক্ষের এই বাদানুবাদে বাজেট অধিবেশনের পঞ্চম দিনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সংসদের দুই কক্ষ।
আদানি-কাণ্ডের জেরে (Adani Row) বাজেট অধিবেশনের ৫ দিন পরেও বিরোধী হল্লায় উত্তপ্ত সংসদ। সোমবার সূচি মেনেই গান্ধীমূর্তির (Gandhi Statue) কাছে প্রতিবাদ বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন বিরোধী সাংসদরা। ইতিমধ্যে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের (Hindenburg Report) রিপোর্টের ভিত্তিতে আদানি গোষ্ঠীর উপর ওঠা অভিযোগ নিয়ে সংসদে (Parliament) আলোচনা চায় বিরোধীরা।
আর একই দাবিতেই সোমবার কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিআরএস-এর মতো দলগুলির সাংসদরা সংসদের উভয়কক্ষে মুলতবি প্রস্তাব এনেছে। মুলতবি প্রস্তাব জমা দিয়েই বিরোধী সাংসদরা এদিন সকালে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসেন। সংসদের বাজেট অধিবেশনের কৌশল স্থির করতে সোমবার কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের চেম্বারে বেশ কয়েকটি বিরোধী দলের সদস্যরা বৈঠকে বসেন।
Opposition MPs Protesting on Adani issue in Parliament House In front of Gandhi Statue #BudgetSession pic.twitter.com/4n6RMfhdAv
— Siddharth sharma (@siddharthjourno) February 6, 2023
সেই বৈঠকে কংগ্রেস সাংসদদের পাশাপাশি, ডিএমকে, এনসিপি, বিআরএস, জেডিইউ, এসপি, সিপিএম, সিপিআই, জেএমএম, আরএলডি, আরএসপি, আপ, আইইউএমএল, আরজেডি এবং উদ্ধব-পন্থী শিবসেনা সাংসদরা উপস্থিত ছিলেন। তবে সেই বৈঠকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে অনুপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদরা। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন টুইট করে জানানা, 'প্রতিবাদ প্রতিবাদের জায়গায় ঠিক আছে এবং চলবে। তবে এই নিয়ে সাংসদ অধিবেশন মুলতুবি করলে চলবে না। কোনও দল যদি এই নিয়ে অধিবেশন মুলতুবি করার চেষ্টা করে, তাহলে জানতে হবে যে, তারা আদপে বিজেপিকে সাহায্য করছে।'
বৈঠকে না যোগ দিলেও গান্ধীমূর্তির পাদদেশে চলা প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সোমবার গান্ধীমূর্তির নীচে তৃণমূলের মহুয়া ছাড়াও কংগ্রেস নেতা খাড়গে, অধীররঞ্জন চৌধুরী, শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত এবং অন্য দলের সদস্যদের বিক্ষোভে শামিল হতে দেখা গিয়েছে।
গৌতম আদানি-কাণ্ডে (Goutam Adani) সরগরম সংসদের বাজেট অধিবেশনের (Budget Session) দ্বিতীয় দিন। সাম্প্রতিক শেয়ার বাজার পরিস্থিতি এবং এফপিও থেকে আদানি গোষ্ঠীর সরে আসা প্রসঙ্গে আলোচনা দাবি করে বিরোধী শিবির। শুরু হয় তুমুল হট্টগোল, এতেই দুপুর ২টো পর্যন্ত মুলতবি হয়ে গিয়েছিল লোকসভা-রাজ্যসভার বাজেট অধিবেশন।
পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত এবং যৌথ সংসদীয় কমিটি বা জেপিসি গঠনের দাবি তুলেছে বিরোধীরা। বৃহস্পতিবার সংসদে এই দাবিতে সরব হয়েছিলেন কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম এবং শিবসেনা-সহ বিরোধী দলের সাংসদরা। বৃহস্পতিবার লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশনের আগে বিরোধীদের মন্তব্য, 'এটা শুধু একটি শিল্পগোষ্ঠীর সম্পদ মূল্য কমে যাওয়ার প্রশ্ন নয়। এর জেরে দেশবাসীর সঞ্চয় বিপন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে। কারণ, ওই সংস্থার মাধ্যমে এলআইসি বা স্টেট ব্যাঙ্কের তহবিল বিনিয়োগ হয়েছে। ঋণ হয়েছে, যেখানে সাধারণ মানুষের জীবনভর উপার্জনের সঞ্চয় রয়েছে।'
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে অধিবেশন শুরুর আগেই সংসদের বিরোধীরা একজোট হয়েছিল। তাদের আলোচনার বিষয়, আদানির বিরুদ্ধে ওঠা আমেরিকার সংস্থার অভিযোগ নিয়ে অধিবেশনে আলোচনা করতে হবে।
কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ মল্লিকার্জুন খাড়গের নেতৃত্বে হয় বৈঠক। তাতে যোগ দিয়েছিল, তৃণমূল, কংগ্রেস, আপ, ডিএমকে, শিবসেনা, সমাজবাদী পার্টি, এনসিপি-সহ বামদলগুলিও।
মঙ্গলবার বাজেট অধিবেশনের সূচনা করলেন রাষ্ট্রপতি (President of India) দ্রৌপদী মুর্মু (Droupadi Murmu)। রাষ্ট্রপতি এদিন সকালে একটি আনুষ্ঠানিক শোভাযাত্রার মাধ্যমে সংসদ ভবনে পৌঁছন। গত জুলাইয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজ্যসভা এবং লোকসভা সদস্যদের যৌথ সভায় রাষ্ট্রপতি মুর্মুর এটিই প্রথম ভাষণ।
কনভেনশন অনুযায়ী, বছরের প্রথম সংসদ অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি শপথ গ্রহণের পরপরই সেন্ট্রাল হলে দুই কক্ষের সদস্যদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। সেখানে এক ভারত তৈরি করার বার্তা দেন রাষ্ট্রপতি।
দ্রৌপদী মুর্মু জানান, বর্তমান সময়ে ভারতের আত্মবিশ্বাস সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। বিশ্ব ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছে ভারতকে। ভারত বিশ্বকে সমাধান খুঁজে দিচ্ছে। ২০৪৭ সালের মধ্যে দারিদ্রমুক্ত ভারত গড়বে এই সরকার। গত ৯ বছরে একাধিক ক্ষেত্রে উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যেমে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে উঠে এসেছে ভারত। চিন ও পাকিস্তান সীমান্তে শত্রুদের মোক্ষম জবাব দিয়েছে সেনা। আত্মনির্ভর ভারত আরও এগিয়ে যাবে আগামী দিনে। এছাড়া স্বনির্ভরতার উপর জোর দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।
দরিদ্রদের পাশাপাশি মধ্যবিত্তদের উন্নতির উপরও জোর দিয়েছেন দেশের সংবিধান প্রধান। এমন একটি দেশ গড়বে যেখানে যুব ও মহিলারা সমাজ ও দেশকে পথ দেখাতে সামনে দাঁড়াবে।। অমৃতকালের ২৫ বছরের সময়কাল স্বাধীনতার স্বর্ণযুগ এবং একটি উন্নত ভারত গড়ার সময়।
জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল করা থেকে শুরু করে তিন তালাক বাতিল পর্যন্ত সরকার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সবথেকে বড় পরিবর্তন ঘটেছে তা হল প্রত্যেক ভারতীয়র আস্থা শীর্ষে রয়েছে এবং ভারতের প্রতি বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তিত হয়েছে। দুর্নীতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের সময় অধিবেশনে ছিল না আপ এবং টিআরএস। জানা গিয়েছে, শ্রীনগর থেকে বিমান বিলম্ব করায় অধিবেশনে থাকতে পারেননি কংগ্রেস সাংসদরা।