
৮ জুলাই পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayet Election 2023) হয়েছে। শনিবার দিনভর নির্বাচনী উৎ'শব' প্রত্যক্ষ করেছেন বাংলার মানুষ। বিভিন্ন জায়গায় ভোট বাক্স চুরি, নথি জ্বালিয়ে দেওয়া তো সাধারণ ঘটনা। নির্বাচনের দিনের শেষে হিসেবে করে দেখা গিয়েছে ভোট হিংসায় মৃতের সংখ্যা ২০। আরও আগে থেকে হিসেবে করলে সেই সংখ্যা প্রায় ৪৪। এদিকে নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, 'মোটের মধ্যে ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া।' গণতান্ত্রিক রাজ্যের এই পরিস্থিতি দেখে আর চুপ থাকতে পারেননি বিনোদন জগতের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্বরা।
অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবি আপলোড করেছেন। ছবিতে দেখা গিয়েছে, অভিনেতার হাতে থাকা পুতুল তাঁকে প্রশ্ন করছে, 'আচ্ছা বদ্দা, পুলিস কবে পুলিস পুলিস খেলে?' নির্বাচনের দিন এমন পোস্ট অভিনেতা কেন করেছেন তা বুঝতে বেশি গভীরে যেতে হয় না। তিনি যে প্রশাসনকেই দুষেছেন, তা স্পষ্ট ওই পোস্ট থেকে।
অন্যদিকে বাংলা ধারাবাহিকের জনপ্রিয় অভিনেতা জয়জিৎ বন্দোপাধ্যায়ের তোপ সমাজের 'বুদ্ধিজীবীদের' দিকেই। অভিনেতা সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, 'এটা ভোট? তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা পথে নামবেন না ?'
অভিনেতা ঋদ্ধি সেন রাজনৈতিকভাবে বেশ সচেতন এবং সক্রিয়। তাই অল্প কথায় নয়, বেশ ঝাঁঝালোভাবেই আঙুল তুলেছেন রাজনৈতিক হিংসের দিকে। অভিনেতা লিখেছেন, 'পড়ে থাক গণতন্ত্রের লাশ, পচুক , গন্ধ বেরোক , সেই গন্ধ নাকে নিয়ে মাংস ভাত খাক রাজনৈতিক শিবিরগুলো, দুপুরবেলা আমরাও খাই পেট ভরে। গন্ধটা আরও তীব্র হওয়ার আগে চলুন খেয়েনি , আসুন, যোগ দিন মাংস ভাত খাওয়ায় , আমাদের ভাগাড়ের মাংস।'
পঞ্চায়েত ভোট (Panchayet Election) প্রসঙ্গে রিপোর্ট পেশ করে মৃত্যুর কথা জানালো নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকেই হিংসার অভিযোগ উঠেছে রাজ্যে। উঠেছে মৃত্যুর অভিযোগও। তবে এত দিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে মৃত্যুর কথা মেনে নেওয়া হয়নি। ভোট প্রক্রিয়া পর্বে মৃত্যুর কথা এই প্রথম মেনে নিল কমিশন। বৃহস্পতিবার তারা জানাল, পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে বুধবার পর্যন্ত চার জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ২১৩ জন। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যে কয়েকটি জায়গা ছাড়া এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও ঝামেলা হয়নি। মোটের উপর সব জায়গায় আইনশৃঙ্খলা ঠিকই রয়েছে বলে কমিশনের দাবি।
বৃহস্পতিবার ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন ও পুলিসের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ। পরে তিনি জানান, ভোটের জন্য রাজ্যে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায় থাকবে তা ঠিক করবেন সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসক। কমিশন সূত্রে খবর, পুলিস তদন্ত করে রিপোর্ট তৈরি করে। সেই রিপোর্ট কমিশনের কাছে আসে। এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যুর রিপোর্ট পুলিস দিয়েছে।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন জেলায় হিংসার অভিযোগ উঠেছে। মনোনয়ন পর্বের হিংসায় উঠেছে মৃত্যুর অভিযোগও। ভাঙড়ে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয় যে, তা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জের পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসও ছুড়তে হয়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচির দিনে ভাঙড়-২ ব্লক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শাসকদল তৃণমূল এবং আইএএসএফের মধ্যে সংঘর্ষের অভিযোগ ওঠে। তাতে গুলি চালনার অভিযোগও উঠেছে। হতাহতের সংখ্যা নিয়ে শাসক এবং বিরোধী পরস্পর বিরোধী দাবি তোলে। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়াতেও মনোনয়ন পর্বে গুলি চালনার অভিযোগ ওঠে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার পর থেকেই বিরোধীদের কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে ভোট করানোর দাবি জোরালো হয়। শেষ পর্যন্ত গত ১৫ জুন হাই কোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে ভোট করানোর নির্দেশ দেয়। সুপ্রিম কোর্টও সেই রায় বহাল রাখে। এই রায়ের পর কেন্দ্রের কাছে ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চায় নির্বাচন কমিশন। সেই পদক্ষেপের পরেও কলকাতা হাই কোর্টে ধাক্কা খায় কমিশন।
তবে বিরোধীরা দাবি জানায়, ২২ জেলায় স্রেফ ২২ কোম্পানি (জেলাপিছু এক কোম্পানি করে) কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা আর না থাকা সমান। বিরোধীদের সেই বক্তব্যের সারবত্তা আছে বলে মত দেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। তিনি তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘‘২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো নিরাপত্তা এই নির্বাচনে দেওয়া প্রয়োজন। আমরা বিস্মিত হয়েছি জেনে যে, সেই সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল স্বয়ং কমিশন। আমরা আশা করব, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কমিশন এ বারও স্বাধীন এবং সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।’’ বুধবারের সেই নির্দেশের পরই কমিশন কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে আগের ২২ কোম্পানির পাশাপাশি আরও ৮০০ কোম্পানি বাহিনী চেয়ে চিঠি দেয়।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayet Election) মনোনয়নের (Nomination) নথি বিকৃতির ঘটনায় সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশকে স্থগিতাদেশ ডিভিশন বেঞ্চের। শুক্রবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে এমনই জানাল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী সোমবার দুপুর ২টোয় এই মামলার রায় ঘোষণা করবে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
নির্বাচনী নথি বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছিল রাজ্য সরকারের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে। ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও)-এর বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র বিকৃত করার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দুই প্রার্থী। সেই মামলায় বুধবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। বিচারপতি তাঁর নির্দেশে জানান, আগামী ৭ জুলাই তদন্তের রিপোর্ট আদালতে পেশ করতে হবে সিবিআইকে।
সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই মামলায় দ্রুত শুনানির আর্জি জানান। বৃহস্পতিবার বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, শুক্রবার মামলাটি শোনা হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাওয়া উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের কাশ্মীরা বিবি, ওমজা বিবির মনোনয়নপত্র বিকৃত করার অভিযোগ ওঠে ওই বিডিও-র বিরুদ্ধে। মামলাকারীদের অভিযোগ, নথি বিকৃত করার ফলেই স্ক্রুটিনি থেকে বাদ চলে যায় এই প্রার্থীদের নাম। বিডিও-র কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েও কাজ হয়নি বলে দাবি করা হয়। মামলা হলে বিচারপতি অমৃতা সিংহ সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশের উপর আপাতত স্থগিতাদেশ জারি করল ডিভিশন বেঞ্চ।
আজই রাজ্যে আসছে কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force)। পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayet Election) জন্য বাহিনী চেয়ে গতকালই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে আবেদন করেছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। পঞ্চায়েত ভোট শান্তিপূর্ণ করতে বিজেপি (BJP) ও কংগ্রেস গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাজ্যের সমস্ত জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে। এরপর জেলা প্রতি এক কোম্পানি বাহিনীর চেয়ে পাঠায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এরপর চলতি সপ্তাহে মঙ্গলবার পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত একটি মামলা শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় ২০১৩ সালের গ্রাফ অনুযায়ী ৮২৫ কোম্পানির বেশি বাহিনী চাইতে হবে। সেই মোতাবিক গতকালই অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে পাঠায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
সূত্রের খবর, রাজ্যের আবেদনের ভিত্তিতে প্রাথমিক ভাবে রাজ্যে আসছে ৩১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। বিজ্ঞপ্তি জারি করে এ কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ৩১৫ কোম্পানি বাহিনীর মধ্যে সিআরপিএফ থাকবে ৫০ কোম্পানি, বিএসএফ ৬০ কোম্পানি, সিআইএসএফ ২৫ কোম্পানি, আইটিবিপি ২০ কোম্পানি, এসএসবি ২৫ কোম্পানি, আরপিএফ ২০ কোম্পানি। বাকি ১২টি রাজ্য থেকে ‘স্পেশাল আর্মড ফোর্স’ থাকবে ১১৫ কোম্পানি।
পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayet Election) কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) বাড়ানোর নির্দেশ হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চের (High Court)। সূত্রের খবর, আদালত অবমাননা মামলা করে সোমবার কমিশনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ওই মামলার শুনানিতে আজ অর্থাৎ বুধবার রাজ্য ও নির্বাচন কমিশন জানায়, ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে একটি চিঠি করা হয়েছে এরপর কমিশনের তরফে আইনজীবী স্পষ্ট করেন প্রতি জেলায় এক কোম্পানি বাহিনী চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
এরপরে কলকাতা ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায় তাহলে প্রত্যেকটা বুথে কতজন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন সম্ভব। এরপর হিসেব করে দেখা যায়, একজন কেন্দ্রীয় বাহিনী ২৮টি বুথের দায়িত্বে থাকবেন। এরপরই রীতিমতো কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কমিশনের উপর ক্ষুব্ধ হয়। এবং নির্দেশ দেয় ২০১৩র পঞ্চায়েত ভোটের হিসেব অনুযায়ী ৮২৫ কোম্পানি বেশি বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। অর্থাৎ আক্ষরিক অর্থে প্রায় ৮২ হাজারের বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত রাজ্যে মোট বুথের সংখ্যা ৬১ হাজার ৬৩৬টি, এবং স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা ১৮৯টি। ভোট শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক করার দাবিতে কংগ্রেস ও বিজেপি হাইকোর্ট একটি মামলা করে। ওই মামলা শুনানিতে গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেয় রাজ্যের সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই পঞ্চায়েত ভোট হবে। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সোমবার রাজ্য কমিশন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য ও নির্বাচন কমিশন। ওই মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। এরপর মঙ্গলবার কমিশনের অনিচ্ছা প্রকাশ পায়। অর্থাৎ এত হিংসা ও সংঘর্ষ সত্ত্বেও, গোটা রাজ্যে ২২টি জেলায়, প্রতি জেলা পিছু এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর চেয়ে পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে।
এছাড়া প্রসঙ্গত ২০১৩ সালে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান মীরা পান্ডে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয় এবং পঞ্চায়েত নির্বাচন ৫ দফায় ৮২৫ কোম্পানি অর্থাৎ প্রায় ৮২ হাজার আধা সামরিক বাহিনী মোতায়নের আবেদন জানায়। সেই আবেদনে সুপ্রিম কোর্ট এবার ওই ২০১৩ সালের সুপ্রিম কোর্টের রায়কে নজরে রেখে কলকাতায় হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর থেকে বেশি সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় বুধবার।
এছাড়া সূত্রের আরো খবর রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের নির্দেশ দেয় এবং কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ডিভিশনের মত যদি রাজ্য নির্বাচন কমিশন ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাহিনী মোতায়েন না করে, তাহলে আদালত কমিশনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিভিশন বেঞ্চ আরও মন্তব্য করেন, যদি রাজ্য নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব পালনে সক্ষম না হয়, তাহলে রাজ্যপালকে সে দায়িত্ব নিতে হবে। এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনার বদল করে ফের নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
'একটা পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayet Election) যদি এত হিংসা, এত রক্তপাত, এত সংঘর্ষ হয়, তবে তা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। এটা রাজ্যের কাছে অত্যন্ত লজ্জার।' পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী পদ সংক্রান্ত আইএসএফ ও বামের করা একটি মামলায় রাজ্যকে উদ্দেশ্য করে এমনই মন্তব্য বিচারপতি অমৃতা সিনহার (Amrita Sinha)।
তিনি আরও প্রশ্ন করেন, 'পঞ্চায়েত নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রাজ্য নির্বাচন কমিশন কী করছে? কমিশন থাকার পরেও এত অশান্তি কেন?' বারবার কেন এই অশান্তির অভিযোগ আসছে! এমন প্রশ্ন করেন রাজ্যের আইনজীবীকে। এর উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী জানান রাজ্যের আটটি ব্লকে মাত্র ঝামেলা হয়েছে।
সূত্রের খবর, ভাঙড়ে ১৬-১৭ জন সিপিএম প্রার্থীর নাম হঠাৎ করে কমিশন ওয়েবসাইট থেকে বাদ যায়। সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে জানানো হয় তারা নির্বাচন লড়তে পারবে না। এরপর তাঁরা হাইকোর্টে মামলা করে। এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহা তাদের প্রত্যেককে নির্বাচনে লড়াই করার অনুমতি দিতে বলের রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে।
এছাড়া পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত হিংসা প্রসঙ্গে বিচারপতি অমৃতা সিনহার মন্তব্য, যদি মনোনয়ন জমা দিতে ঝামেলা হয় সেক্ষেত্রে সময় তো দিতে হবে। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, এগুলো কি হচ্ছে! প্রার্থীদের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মেয়েদের কে খুন, ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত এখনও অবধি রাজ্য হওয়া পঞ্চায়েত ভোটের হিংসায় আটজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ অর্থাৎ বুধবার সকালে চোপড়ায় গুলিবিদ্ধ সিপিএম কর্মী মৃত্যু হয়।
পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayet Election) প্রতি জেলায় এক কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন (Election Commission)! সেই হিসাবে মঙ্গলবার কেন্দ্রের কাছে ২২ জেলার জন্য ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে পাঠানো হয়েছে কমিশনের তরফে এমনটাই সূত্রের খবর। এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীতে সাধারণত থাকেন ১০০ থেকে ১০৫ জন সদস্য থাকেন। তাঁদের মধ্যে পরিস্থিতি অনুযায়ী কাজে লাগানো হয় কম-বেশি ৮০ জনকে।
পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের রায় মঙ্গলবার বহাল রেখেছে সু্প্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানায়, সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেই রাজ্যে ভোট করতে হবে। এর আগে হাই কোর্টও ওই নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে গিয়েছিল রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে অবাধ ও স্বচ্ছ ভোটের জন্য হাই কোর্টের নির্দেশই বহাল রাখার কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
মণি ভট্টাচার্য: সাত খুন মাফ! রাস্কিন বন্ডের ছোট গল্পের অনুসরণে তৈরি 'সাত খুন মাফ' হিন্দি সিনেমাটি বেশ খ্যাত। যদিও ওই সিনেমাটির সঙ্গে বাস্তবে পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) কোনও মিল নেই। কেবল মিল রয়েছে সিনেমাটির নামের সঙ্গে। সাত খুন মাফ। পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election) ঘোষণার ১০ দিনের মধ্যে হিংসার ঘটনায় এখনও অবধি ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও প্রাথমিকভাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) দেওয়া রিপোর্টে কোনও মৃত্যুর উল্লেখ নেই। বরং কমিশনের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাজ্যের বিভিন্ন ঘটনায় এখনও অবধি ১০৪ জন আহত হয়েছেন। বেআইনি অস্ত্র ও বোমার সংখ্যা ওই রিপোর্টে থাকলেও নেই কোনও মৃত্যুর সংখ্যা। অন্যদিকে, খোদ মুখ্যমন্ত্রীর গলায় শোনা গিয়েছে হিংসায় মৃত্যুর কথা। এখন প্রশ্ন উঠছে পঞ্চায়েতের প্রেক্ষাপটে রাজ্যের হিংসা ও মৃত্যুর ঘটনায় কার অবস্থান সঠিক? নির্বাচন কমিশন, মুখ্যমন্ত্রী নাকি রাজ্য পুলিস?
পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর ৯ই জুন মুর্শিদাবাদে শুটআউটে মৃত্যু হয় কংগ্রেসকর্মী ফুলচাঁদ শেখের। এরপর ১৫ই জুন ভাঙড়ে ১ জন আইএসএফ কর্মী মঈনুদ্দিন মোল্লা ও ২ তৃণমূল কর্মী রাজু নস্কর ও রশিদ মোল্লার মৃত্যু হয়। ওই দিনই মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে মোজাম্মেল শেখ নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। ওদিকে ১৭ই জুন মালদহের সুজাপুরে তৃণমূলের প্রার্থী মোস্তফা শেখকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। পাশাপাশি ১৮ই জুন বিজেপি প্রার্থীর দেওর শম্ভু দাসকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। যদিও এসমস্ত ঘটনার কোনও উল্লেখই নেই কমিশনের দেওয়া রিপোর্টে। কিন্তু কেন? এ বিষয়ে অবশ্য নির্বাচন কমিশনের সাফাই রাজ্য পুলিসের রিপোর্টে এই ঘটনাগুলির কথা উল্লেখই নেই। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিব নীলাঞ্জন সান্ডিল্যকে সিএন ডিজিটালের তরফে ফোন করা হলে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে চান নি।
রাজ্য পুলিস ও নির্বাচন কমিশনের এমন ঘটনাকে পারস্পরিক কানামাছি খেলা হিসাবেই উল্লেখ করেছেন বাম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। সোমবার সিএন-ডিজিটালকে তিনি বলেন, 'পুলিসের রিপোর্ট না পেলেও নির্বাচন কমিশন কাগজ পড়ে, নিশ্চয়ই সংবাদ মাধ্যমে নজর রাখে। তবে নির্বাচন কমিশন কেন স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে খোঁজ করল না, আসলে তাঁরা কানামাছি খেলছে।' পাশাপাশি এ বিষয়ে বিজেপি নেতা সন্ময় বন্দোপাধ্যায় রাজ্য সরকার ও কমিশনকেই দুষেছেন। 'তথ্য গোপন করা এই সরকারের জন্ডিস রোগ। এতগুলো মৃত্যুর পরও যদি পুলিস আর কমিশন মৃত্যু চোখে দেখতে না পায়, তবে বলতে হবে তারা চোখের অপারেশন করাক। পশ্চিমবঙ্গে বেহায়া, নির্লজ্জ, বদমাস, শয়তান সরকার ভারতবর্ষে কোনও রাজ্যে নেই।'
এ ঘটনাকে অবশ্য ছোট হিসেবেই দেখছেন কংগ্রেস নেতা অরুনাভ ঘোষ। তিনি বলেন পঞ্চায়েতে প্রায় সাড়ে চার কোটি ভোটার, তাঁদের মধ্যে মাত্র ৭ জন মারা গিয়েছেন। এসব সরকারের কাছে কিছুই না।' তিনি আরও বলেন যে, 'পশ্চিমবঙ্গের ট্রেন্ড এটা, ক্ষমতার সঙ্গে অফিসাররা থাকে, ক্ষমতার বিরুদ্ধে কোন অফিসার থাকবে!' পাশাপাশি এ বিষয়ে আইএসএফ নেতা ও বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, 'কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, কমিশন অসত্য কথা বলছে, সে সঙ্গে হাইকোর্টের নির্দেশকেও মানছে না কমিশন।'
ভাঙড় (Bhangar) থেকে চোপড়া (Chopra), গত কয়েকদিন ধরে মনোনয়ন (Nomination) জমাকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে অশান্তির অভিযোগ। গুলি, বোমাবর্ষণের অভিযোগ ওঠে। বৃহস্পতিবারই মনোনয়ন (Panchayet Election) জমা দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। গত কয়েকদিনের হিংসার ঘটনার একটি রিপোর্ট সামনে এনেছে নির্বাচন কমিশন। যেখানে দাবি করা হয়েছে, কোনওরকম মৃত্যুর রিপোর্ট নেই।
কমিশনের রিপোর্টে দাবি, রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত ৩৯টি ঘটনা ঘটেছে। সেই সব ঘটনায় প্রায় ১০০ জনের আহত হওয়ার খবরও পাওয়া যায়। কমিশনের দাবি, ৮ জুন পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে রাজ্য জুড়ে ৬১টি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ মিলিয়ে রাজ্যে মোট ৭৩,৮৮৭ আসন। তৃণমূলের মনোনয়ন জমা পড়েছে ৮৫,৮১৭। অর্থাৎ মোট আসনের থেকে ১২ হাজার বেশি। শেষ দু’দিনে তৃণমূল জমা দিয়েছে ৭৬,৪৮৯টি মনোনয়ন। দ্বিতীয় স্থানে বিজেপির ৫৬,৩২১টি মনোনয়ন জমা পড়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayet Election) নির্দল প্রার্থী নিধনে আরও কঠোর হল তৃণমূল (TMC)। অর্থাৎ তৃণমূল থেকে টিকিট না পেয়ে যারা দাঁড়িয়েছেন নির্দল হিসেবে, এবং অন্যান্য যারা নির্দল হয়ে জিতে তৃণমূলে ফিরতে চাইবেন তাঁদের জন্য তৃণমূলের রাস্তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিলো তৃণমূল। সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ শনিবার কালীঘাটে (Kalighat) পঞ্চায়েতের ভোটের কৌশলী আলোচনায় এমনিই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর।
সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে শাসক দলের তরফে। নির্দল হয়ে পঞ্চায়েতে জিতলেও তাঁদের দলে ফেরানো হবে না বলেও এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উল্টে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির পথেই হাঁটবে তৃণমূল কংগ্রেস।
রাজনৈতিক মহলে দাবি, গত পুরসভার ভোটেও এই একই ফর্মূলা নিয়েই মাঠে নেমেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এবং তাতে সফলও হয়েছিল শাসক দল। এবার পঞ্চায়েত ভোটেও সেই একই পথে হাঁটল তারা। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটে শেষ বেলায় মোট আসনের প্রায় ১২ হাজার মনোনয়ন বেশি জমা দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। রাজনৈতিক মহলের দাবি, প্রতিটি জেলায় ভোট যাতে ভাগ না হয়ে যায়, সেই কারণেই নির্দল প্রার্থী আগাম মনোনয়ন প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হয়েছে। মোট নির্দল প্রার্থী ১৬,২৯৩ জন।
এদিকে, মনোনয়ন পরীক্ষার প্রথম দিনেও বেশ কিছু জায়গা থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় তৃণমূলের জয়ের খবর পাওয়া গিয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ফলতা, বাঁকুড়া এবং হাওড়া থেকে তৃণমূলের কার্যত জয়ের খবর মিলেছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayet Election) মনোনয়ন (Nomination) পর্বেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভাঙড় (Bhangar)। শনিবার সকালে অশান্ত ভাঙড়ে রুটমার্চ শুরু করেছে পুলিস। ঘনঘন মাইকিং করা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এলাকায় পুলিস সুপার, অতিরিক্ত পুলিস সুপারের পদমর্যাদার অফিসাররা। ওদিকে শুক্রবার উত্তপ্ত ভাঙড় পরিদর্শন করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
বৃহস্পতিবার মনোনয়নের শেষদিন বিডিও অফিস চত্বর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। কাঠালিয়া মোড়, কাঠালিয়া বাসস্ট্যান্ড, বিজয়গড় বাজার চত্বরে প্রচুর পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলছেন পুলিসকর্মীরা। তাঁদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন। শনিবার মনোনয়নের স্ক্রুটিনি চলছে। পরিস্থিতি সামলাতে, কড়া নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন।
শনিবার বিডিও অফিসের মধ্যে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে কড়া পুলিসি পাহারা মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, আগে এই নিরাপত্তা থাকলে, মৃত্যু ঘটত না।
রাজ্যে ফের পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayet Election) হিংসার বলি। প্রকাশ্য দিবালোকে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) প্রার্থীকে (Candidate) পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল কংগ্রেসের প্রার্থীর দিকে। পুলিস সূত্রে খবর, এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকরা।
সূত্রের খবর, মালদহের কালিয়াচকের সুজাপুরে তৃণমূল পঞ্চায়েত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। আজ অর্থাৎ শনিবার দুপুরে ওই তৃণমূল প্রার্থী ধর্মীয় আজান সেরে মসজিদ থেকে বেরোনোর সময় ওই এলাকার কংগ্রেসের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী তাঁকে পিটিয়ে খুন করে।
এ ঘটনায় মালদহ জেলার বিধায়ক তথা মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন সিএন ডিজিটালকে জানান, 'নামাজ সেরে বেরোনোর সময় ওই তৃণমূল প্রার্থীকে বাঁশ, লাঠি দিয়ে পিটিয়ে খুন করেছে ওই এলাকার কংগ্রেসের প্রার্থী। এর জন্য ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়েছে। এবং ঐ প্রার্থীর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর চলতি সপ্তাহে ভোট উৎসবের বলি ৬ জন। যদিও এ ঘটনায় গোটা অভিযোগ অস্বীকার করেছে কংগ্রেস। পাশাপাশি এ ঘটনায় এখনও অবধি কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। যদিও মালদা জেলা পুলিস সুপার জানিয়েছেন, গোটা ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
মনোনয়ন (Nomination) পর্বে সন্ত্রাস ও হিংসায় যেমন এগিয়ে থাকল, তেমন ভাবেই মনোনয়নেও এগিয়ে থাকল তৃণমূল (TMC)। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়া শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবারই। যদিও, শুক্রবারও হাইকোর্টের নির্দেশে বেশ কয়েকটি জায়গায় মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ চলেছে। এবার পঞ্চায়েতে কত মনোনয়ন জমা পড়েছে, তৃণমূল, বিজেপি (BJP), নাকি সিপিএম, কংগ্রেস কারা বেশি মনোনয়ন জমা দিয়েছে? ইতিমধ্যেই সেই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট হাতে পেয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেখানে দেখা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত, সবথেকে বেশি মনোনয়ন জমা পড়েছে তৃণমূলের। দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি। যদিও মনোনয়নের প্রথম দিকে, তৃণমূল অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। নির্বাচন কমিশনের হিসেব বলছে, দু'দিনের মধ্যে লাফিয়ে বেড়েছে তৃণমূলের মনোনয়ন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ মিলিয়ে রাজ্যে মোট ৭৩,৮৮৭ আসন। তৃণমূলের মনোনয়ন জমা পড়েছে ৮৫,৮১৭। অর্থাৎ মোট আসনের থেকে ১২ হাজার বেশি। শেষ দু’দিনে তৃণমূল জমা দিয়েছে ৭৬,৪৮৯টি মনোনয়ন। দ্বিতীয় স্থানে বিজেপির ৫৬,৩২১টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। সেখানে সিপিএম ৪৮,৬৪৬, কংগ্রেস ১৭,৭৫০। মোট নির্দল প্রার্থী ১৬,২৯৩। দুপুরের হিসেব অনুযায়ী, সব মিলিয়ে আপাতত মোট মনোনয়ন জমা পড়েছে ২,৩৬,৪৬৪টি।
বসিরহাটের ৬০ জন বিজেপি প্রার্থী শুক্রবারও মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারবেন বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। সেই হিসেবে এদিনও মনোনয়ন জমা পড়েছে। সেক্ষেত্রে বিজেপির সংখ্যাটা বাড়তে পারে। শনিবার হবে মনোনয়নের স্ক্রুটিনি, ২০ জুন আবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। অনেকে মনোনয়ন বাতিলও করে দিতে পারেন। তাই শেষ পর্যন্ত কত মনোনয়ন জমা পড়ল, তা জানা যাবে ২০ জুনের পরই।
বৈঠক চলাকালীন আইএসএফের (ISF) উপর হামলা। কাঠগড়ায় তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। ঘটনাকে কেন্দ্র করে পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) আগে উত্তপ্ত হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের ইছানগরী।
শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন। জগৎবল্লভপুর থানার বিরাট পুলিস বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
পঞ্চায়েতের রণকৌশল ঠিক করতে ইছানগরী এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৈঠক হচ্ছিল। অভিযোগ, সেই সময় তৃণমূল কর্মীরা হামলা চালায়। পাল্টা আক্রমণ চালায় আইএসএফ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দুই দলের কর্মী-সমর্থকরা একে অন্যের উপর লাঠি-বোমা নিয়ে আক্রমণ করে বলে অভিযোগ।
কোচবিহার (CoochBehar) থেকে শুরু হয়েছিল নবজোয়ার কর্মসূচি। উত্তরবঙ্গের (North Bengal) এই জেলা থেকেই পঞ্চায়েত ভোটে জয়ের যাত্রা শুরু করল তৃণমূল (TMC)। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, জেলার ১২৮টি গ্রামে পঞ্চায়েতে জয়ী হয়েছে শাসকদল। ভোটের আগেই জয়ের খবর এসেছে উত্তরবঙ্গের আরেক জেলা উত্তর দিনাজপুর থেকেও। বৃহস্পতিবারই রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছিল চোপড়া। সেই চোপড়াতেই ২১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় তৃণমূলের।
রাজনৈতিক মহলের মতে পঞ্চায়েত ভোট শুরুর আগে কোচবিহারের এই জয় কার্যত ধাক্কা বিজেপির কাছে। কোচবিহার থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। যিনি অমিত শাহের ডেপুটিও। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের এই জেলা তৃণমূলের কাছেও অস্বস্তির। সম্প্রতি এই কোচবিহারে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন ২ জন। ৮ জুলাই নির্বাচনের আগে কোচবিহারই এখন স্বস্তি দিচ্ছে তৃণমূলকে।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, অভিষেকের নবজোয়ার প্রাথমিকভাবে এগিয়ে রাখল তৃণমূলকে।