ফের শাসক দলের (TMC) গোষ্ঠী কোন্দলে উত্তপ্ত কেশপুর (Keshpur West Midnapore)। কেশপুরের সাকপুরে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে জখম এক সন্তানসম্ভবা-সহ চার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিসবাহিনী। দিন কয়েক ধরে বারবার তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে উত্তপ্ত কেশপুর। এমনটাই বিরোধী শিবির সূত্রে অভিযোগ। একইভাবে বুধবার সকালে কেশপুরের শাকপুর এলাকায় ব্লক তৃণমূল সভাপতির গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগে সরব স্থানীয় তৃণমূল সমর্থকরা। স্থানীয় বিধায়ক (TMC MLA) তথা প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহার উস্কানিতে এই ঘটনা, এমনটাই অভিযোগ তাঁদের। অভিযোগ, এক আক্রান্তর উপর চায়ের দোকানে বসে থাকার সময় অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে। এমনকি মহিলাদের ছাড়া হয়নি বলেও অভিযোগ আক্রান্তদের। এই ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন এক সন্তানসম্ভবা মহিলা-সহ চারজন।
আহতদের তড়িঘড়ি উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ইতিমধ্যেই একজনকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কেশপুর থানার বিশাল পুলিসবাহিনী। যদিও ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রদ্যুৎ পাঁজার দাবি, 'এটি সম্পূর্ণই পারিবারিক বিবাদ।' অন্যদিকে বিধায়ক শিউলি সাহার দাবি, ঘটনা যাই ঘটুক ব্যবস্থা নেবে পুলিস। এই ঘটনায় শাসক দলকে বিঁধেছে বিজেপি। তৃণমূলকে নিশানা করে আক্রমণ শানিয়েছেন জেলা বিজেপি মুখপাত্র অরূপ দাস। তিনি জানান, 'তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল সারা বাংলায় ছড়িয়েছে। আর কেশপুরের ঘটনা তৃণমূলের প্রত্যেকদিনের। নিজেদের মধ্যেই কাটমানির দখল ঘিরে সংঘর্ষ।'
প্রসূন গুপ্ত: পঞ্চায়েত ভোট কবে হবে এখনও দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। প্রথমে শোনা গিয়েছিল জানুয়ারী বা ফেব্রুয়ারিতে ভোট। কিন্তু নতুন বছর তো পড়ে গেল, কাজেই এই দুই মাসে ভোট যে হবে না তার কিছু আভাস পাওয়া গেল। সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে তৃণমূল দলের বৈঠক ছিল। যেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বাংলা ঘুরে মানুষের বাড়ি বাড়ি যেতে হবে। সেখানে প্রচার করতে হবে তৃণমূল সরকারের কাজকর্ম। প্রচারের স্লোগান হবে 'দিদির সুরক্ষা কবজ'। কাজেই বোঝা যাচ্ছে এই কাজ যেহেতু বেশ সময়সাপেক্ষ, অতএব আপাতত ভোট হয়তে পারে ওই মে মাস নাগাদ।
এদিকে মার্চ-এপ্রিলে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা রয়েছে। তেমন দিল্লি বোর্ডগুলির পরীক্ষাও সময় মতোই হবে। নিয়ম বলছে, পরীক্ষার আগে মাইকে এবং প্রকাশ্যে প্রচার করা চলবে না। ফলে ধরে নিতেই হচ্ছে পরীক্ষার শেষেই পঞ্চায়েত ভোট। কিন্তু তৃণমূল যেমন ভোটযুদ্ধে ঝাঁপাবে তেমন বসে থাকবে না বিরোধী দলগুলি।
বাম বিশেষ করে সিপিএমের সেই সাংগঠনিক শক্তি আর আগের মতো নেই। কিন্তু তবুও তারা এখনও প্রতিটি কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। কংগ্রেসের অবস্থান মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং পুরুলিয়া ছাড়া বাকি জেলাগুলোতে তথৈবচ। এই দুটি বিরোধী শক্তির বাইরে রয়েছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি।
এখন তৃণমূলের অন্দর থেকেই প্রশ্ন, বাংলাব্যাপী ৬০-৭০ হাজার বুথে কী পদ্মশিবির প্রার্থী দিতে পারবে। সেভাবে প্রার্থী দিলেও কি বুথে এজেন্ট বসাতে পারবে? শাসক শিবিরে জোর চর্চা খুবই কঠিন কাজ। সে কারণেই দিল্লি থেকে নেতারা আসছেন সংগঠন দেখতে।
এদিকে পূর্ব মেদিনীপুরে শনিবার শুভেন্দু অধিকারী হুংকার ছেড়েছেন, পঞ্চায়েতে ডু অর ডাই লড়াই করতে হবে। পাশাপাশি মনে রাখা দরকার এই ভোটের কন্ট্রোল থাকবে কিন্তু রাজ্য পুলিশের হাতে, স্বচ্ছ ভোট পরিচালনার কাজ কতটা কঠিন হবে, সেটা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হলেও বোঝা যাবে।
সোমবার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের রাষ্ট্রীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে যে বক্তব্য রাখেন, তার মূল প্রতিপাদ্য কিন্তু ঘরে ঘরে যেতে হবে। কর্মসূচি - দিদির সুরক্ষা কবজ। দলের অন্দরের বার্তা এই যে, ঘরে বসে কাজ বা আরামে দিন কাটানো যে নেতারা আছেন তাঁদের পথে নামতে নির্দেশ।
লক্ষণীয় বিষয় এই যে, মঞ্চে গতকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক এবং রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি ছাড়া কাউকেই দেখা যায় নি। নির্দেশিকা নাকি এমনই ছিল। একবার শুধু মন্ত্রীদ্বয় শশী পাঁজা ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে মুখ্যমন্ত্রীকে পুষ্পস্তবক এবং উত্তরীয় দিতে দেখা গিয়েছিলো। এ ছাড়া বাকি সবাই বসেছিলেন দর্শকের আসনে। বার্তা এইরকম এখন থেকে কর্মী ও নেতা সকলকেই পথে নামতে হবে কাজেই একসাথেই অবস্থান হোক।
পাশাপাশি সোশ্যাল নেটওয়ার্কের বিষয়ে বিশেষ কিছু বার্তা দিলেন না মমতা। কিন্তু একই সাথে দলের ছাত্রযুবদের স্নেহাশিস জানালেন তিনি। তবে যে বয়সের যিনিই হন না কেন, পথে নামটাই প্রধান কাজ হবে তাঁদেরও। কিন্তু কোন অবস্থানে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের আইটি সেল? খোঁজ করে জানা যাচ্ছে এই একটি সংস্থা যার কোনও সাংগঠনিক কাজ নেই। অনেকটাই পিছিয়ে সিপিএম বা বিজেপির থেকে।
এখানে অনেকেই নিজেকে তৃণমূল হিসাবে তুলে ধরে আত্মপ্রচারে ব্যস্ত। এমনটিই দেখা গিয়েছে গত ৩১ ডিসেম্বর দুপুরে। যেখানে দায়িত্ব প্রাপ্ত দেবাংশু ভট্টাচার্য কোনও একটি গোষ্ঠীর ডাকে উপস্থিত হয়ে ভাষণ দিচ্ছেন অন্যদিকে শোনার লোক নেই, সকলেই তাঁর সাথে সেলফি তুলতে ব্যস্ত। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অবশ্যই বিজেপি বা অন্যদলে রয়েছে। কিন্তু তৃণমূলে কত শত যে গ্রুপ আছে তা বোধকরি দেবাংশুরও ধারণা নেই।
এদের একাট্টা করে দলের বার্তা মানুষের কাছে দেওয়ার থেকে কেউ ব্যস্ত পোর্টাল বা ফেসবুক অথবা টেলিভিশনগুলোর টকশোতে বসার জন্য উদগ্রীব, কেউ আবার দলের মধ্যে উপদল খুলে গ্রুপ করছে। দেওয়া হচ্ছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কের সদস্যদের ঢালাও পুরস্কার। প্রশ্ন, টাকা দিচ্ছে কে?
নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata) দাবি করেছেন, তৃণমূল (TMC) যখন রাজ্যে বিরোধী শক্তি ছিল, তখন কোনও ধ্বংসাত্মক কাজ করেনি। সোমবার তৃণমূল সুপ্রিমোর এই দাবিকে কটাক্ষের সুরে বিঁধেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary) বলেন, 'উনি কতবার বনধ ডেকেছে, গাড়ি পুড়িয়েছেন সবাই জানে। হাটবারে, হাটবারে কী করতেন সবাই জানেন। উনি কিছু করেননি সিএ আর নূপুর শর্মা নিয়ে গাড়ি জ্বালিয়েছেন। সিএএ নিয়ে হাজার দুয়ারি ট্রেন পুড়িয়েছে কে? নবান্নের পাশে বাস পুড়িয়েছে, উনি বসে বসে দেখেছেন।'
এদিন তিনি পঞ্চায়েতের আগে তৃণমূলের গৃহীত কর্মসূচিকে খোঁচা দিয়েছেন। তিনি জানান, 'এটা আই ওয়াশ। দিদিকে বলোর মতো নাটক। প্রতি ভোটের আগে এটা নাটক। দিদিকে বলো করে মাথায় টুপি পরে ভোট নিয়েছে বিধানসভায়। আবাস যোজনার ক্ষোভ নিয়ে মানুষ রাস্তায়, তাই এটা আই ওয়াশ।'
পাশাপাশি এদিন ভগবানপুরে বিজেপির কর্মিসম্মেলন থেকে রাজ্য থেকে 'তোলামূল পার্টি'কে উৎখাতের ডাক দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। ঘুষহীন মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, বাংলায় এই প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে। কাটমানি মুক্ত নাগরিক পরিষেবা, একশো দিনের কাজ আপনাদের অধিকার। পিএম কিষাণ নিধি সম্মান প্রকল্প বাংলায় চালু করতে হবে এই তিন দাবির উপর ভিত্তি করে বাংলা থেকে তৃণমূলকে উৎখাতের ডাক দেন বিরোধী দলনেতা।
পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Vote) জুলাইয়ের বিজ্ঞপ্তি আপাতত স্থগিত। রাজ্য নির্বাচন কমিশন (State Election Commission) এই মুহূর্তে কোনও পদক্ষেপ নিতে পারবে না। শুভেন্দু অধিকারীর করা মামলায় নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিয়েছে। মামলাকারী রাজ্যের বিরোধী দলনেতা কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগ করেন, 'রাজ্য নির্বাচন কমিশন একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে তপশিলি জাতি/উপজাতি, এসসি/ এসটি-দের সিট সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে। সেই তথ্যের কোনও যৌক্তিকতা নেই। কোন ভেরিফিকেশন ছাড়াই তথ্য প্রকাশ করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেই বিজ্ঞপ্তি বাতিল করা হোক।'
পাশাপাশি আদালতে শুভেন্দু অধিকারী আরও জানান, 'কলকাতা হাইকোর্টে আবেদনের আগে তিনি রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে পুরো ঘটনাটি সবিস্তারে জানিয়েছেন। রাজ্য নির্বাচন কমিশন কোনওরকম ব্যবস্থা নেয়নি। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।'
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইন মেনেই বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। তাই তাদের কোনও ত্রুটি এখানে নেই। তবে আপাতত এই বিজ্ঞপ্তিতে যেন স্থগিতাদেশ না দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, 'জুলাই মাসের ওই বিজ্ঞপ্তির উপর স্থগিতাদেশ জারি করা রইল। পরবর্তী নির্দেশিকা না আসা পর্যন্ত ওই অন্তর্বর্তী নির্দেশ বহাল থাকবে।' আগামী ৯ জানুয়ারি এই মামলার শুনানি। ততদিন পর্যন্ত পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন কোনওরকম পদক্ষেপ নেবে না।
অবাধ, শান্তিপূর্ন এবং সুষ্ঠু পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Vote) দাবিতে জনস্বার্থ মামলা। এই জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (LOP Suvendu Adhikary)। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির পর্যবেক্ষণে পঞ্চায়েত নির্বাচন আয়োজনের আবেদন বিরোধী দলনেতার। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে ভোট আয়োজনের জন্য দরবার করেছেন তিনি। এই মামলায় বিরোধী দলনেতার আবেদন, 'সব বিরোধী প্রার্থীরা যাতে মনোনয়নপত্র পেশ করতে পারে তা নিশ্চিত করুক কমিশন।' পাশাপাশি গত ২৯ শে জুলাই তফশিলি জাতি, উপজাতি এবং ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের গণনার যে বিজ্ঞপ্তি রাজ্য নির্বাচন কমিশন দিয়েছে তা খারিজের আবেদন জানানো হয়েছে এই মামলায়। শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, '২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের আপত্তি সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। সেই নির্বাচন শান্তিপূর্নভাবে হয়েছিল।'
বিরোধী দলনেতার দাবি, '২০১৮ সালে রাজ্যে পুলিসের নিয়ন্ত্রণে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়। ব্যাপক সন্ত্রাসের সাক্ষী ছিল রাজ্য। বিরোধীরা মনোনয়ন পর্যন্ত পেশ করতে পারেনি। ২০২১-র বিধানসভা নির্বাচনের পরেও ব্যাপক হিংসার সাক্ষী থেকেছে বাংলা।'
শুভেন্দু অধিকারীর আরও দাবি, '২০২২ সালেও কলকাতা পুরসভা এবং কাঁথির নির্বাচনেও অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করা হোক! রাজ্যের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন।' মূলত অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এদিকে, শুভেন্দু অধিকারীর উপর থাকা হাইকোর্টের রক্ষাকবচকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে জনৈক আইনজীবী আবু সোহেল। সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আইনজীবী আবু সোহেল। সম্প্রতি রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে রক্ষাকবচ দিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ, 'শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব এফআইআর-র উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ থাকবে। পাশাপাশি আদালতের অনুমতি ছাড়া নতুন এফআইআর দায়ের করা যাবে না।'
এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলাকারীর মন্তব্য, 'পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় আমি অন্যতম পক্ষ। আমার বক্তব্য না শুনেই রায় দিয়েছে সিঙ্গেল বেঞ্চ।'
বেহাল রাস্তা (road) মেরামতের কাজ শুরুই হয়নি। উল্টে গ্রামের মধ্যে রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ফলক বসিয়ে দেখানো হয়েছে ঝামা ইট দিয়ে রাস্তা সারাই ও পাইলিংয়ের কাজ শেষ। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে বারুইপুরের (Baruipur) বেগমপুর পঞ্চায়েতের কামরা তেঁতুলিয়া এলাকায়। এলাকার মানুষজন এই কাজে ক্ষুব্ধ। তাঁদের বক্তব্য, রাস্তা মেরামত না করে শুধু রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় লক্ষাধিক টাকা খরচের ফলক বসানো হয়েছে। যদিও বেগমপুর পঞ্চায়েতের প্রধান রেখা সরদার বলেন, 'কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু তা এখনও শেষ হয়নি। যেহেতু বারুইপুর পঞ্চায়েত সমিতি কাজটা করছে, তাই যা উত্তর দেওয়ার তাঁরাই দেবেন।' যদিও কাজ শেষের ফলকের বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি। এদিকে, বারুইপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কানন দাস বলেন, 'খোঁজ নিয়ে দেখব।'
কামরা তেঁতুলিয়া এলাকার রাস্তায় এক জায়গায় ফলকে দেওয়া শিবতলা থেকে শচীন নস্করের বাড়ি পর্যন্ত পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে রাস্তা সারাই ও পাইলিং করতে। যা চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর শুরু হয়ে শেষ হয়েছে ১৮ নভেম্বর। আবার আর একটি জায়গায় ফলক বসিয়ে দেখানো হয়েছে সনৎ নস্করের বাড়ি থেকে ছোট পোল ক্লাব পর্যন্ত রাস্তা পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে দেড় লক্ষ টাকা ব্যয়ে রাস্তা সারাই ও পাইলিং। যার কাজ শেষ হয়েছে ১৮ নভেম্বর।
বাসিন্দারা জানান, বেশ কিছু জায়গায় শুধু রাস্তা সারাই ও পাইলিংয়ের খরচ দেখানো হয়েছে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, 'এত বেহাল রাস্তা, চলাচল করা যাচ্ছে না। লক্ষাধিক টাকা খরচের নামে দুর্নীতি হয়েছে। উত্তর পূড়ির বটগাছ থেকে কামরা বামনের দোকান পর্যন্ত গোটা রাস্তাই বেহাল হয়ে পড়ে আছে। তাও বছরের পর বছর। কবে মেরামত হবে জানেন না কেউই।'
পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Vote) আগে তপ্ত ভাঙর। তৃণমূল নেতার বাড়ি লক্ষ্য করে ১২ রাউন্ড গুলি। প্রাণ বাঁচাতে খাটের তলায় আশ্রয় ভাঙর (Bhangar) বড়ালি গ্রামের তৃণমূল নেতা ফজলে করিম। এই ঘটনায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব উসকে দিয়ে স্থানীয় তৃণমূল (TMC) নেতা কাইজার আহমেদের দিকে আঙুল তুলেছেন আক্রান্ত নেতা। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার মধ্যরাতে তৃণমূল নেতা ফজলে করিমের বাড়ি লক্ষ্য করে ফিল্মি কায়দায় গুলি (Shootout)। এই ঘটনায় কাঠগড়ায় তৃণমূল নেতা কাইজার আহমেদ। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাইজার। এদিকে, ন্যায় চেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ আক্রান্ত তৃণমূল নেতা ফজলে। এই গুলি চালনার ঘটনায় সিআইডি তদন্ত দাবি করেন আক্রান্ত তৃণমূল নেতা। মঙ্গলবার মধ্যরাত পৌনে একটা নাগাদ হওয়া এই ঘটনায় বুধবার সকালেও ভাঙড়ের বড়ালি গ্রামে চাপা আতঙ্কের পরিবেশ।
জানা গিয়েছে, গুলির হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে খাটের তলায় লুকিয়ে পড়েন ফজলে করিম। রাতেই ভাঙর থানার পুলিস এসে গুলির খোল উদ্ধার করে তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে তাজা বোমাও। বুধবার সকালে গিয়ে আক্রান্ত তৃণমূল নেতার বাড়ির দরজা, জানলা পাশাপাশি খাটের একাধিক জায়গায় গুলির চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। কাইজার আহমেদের বিরুদ্ধে কয়েকদিন আগে মুখ খোলায় এভাবে হামলা, অভিযোগ ফজলে করিমের। তিনি কাইজারকে কাঠগড়ায় তুলে জানান, 'দিদির কাছে আমি হাত জোড় করে বলছি দিদি সিআইডি তদন্ত করুক। কোথা থেকে এত সম্পত্তি এলো, ওরা কারা, সিআইডি তদন্ত করলে বের হবে। এর আগে তিন বার আমার উপর হামলা করেছে। একবার মাথাও ফাটিয়ে দিয়েছে। এবার আমি অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছি। ঘাড়ের পাশ ঘেসে গুলি বেড়িয়েছে। ও টিকিট না পেয়ে তৃণমূলকে হারিয়ে দিয়েছে। সেই অডিও প্রকাশ হওয়ায় আমি মুখ খুলেছি বলে দুষ্কৃতী দিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে।'
পাল্টা কাইজার আহমেদের দাবি, 'পুরো অভিযোগ হাস্যকর এবং গটআপ। পুলিস এবং দল তদন্ত করলে সত্যিটা সামনে চলে আসবে। আমার পুলিস এবং দলের উপর ভরসা রয়েছে। যার বাড়িতে হামলা হয়েছে, দেখলাম সে দিব্য রয়েছে। আমি তোলাবাজিতে মদত দিচ্ছি না, এটায় কিছু লোকের অসুবিধা হয়েছে।'
বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট (Panchayet Vote), আর তার আগে ফের জেলা থেকে উদ্ধার আগ্নেয়াস্ত্র (Fire Arms), গ্রেফতার ২। রাজ্য পুলিসের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (Bengal STF) বা এসটিএফ মন্তেশ্বরে গোপন অভিযান চালিয়ে পূর্ব বর্ধমানের (Purba Burdwan) কুসুমগ্রাম থেকে এই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম কুরবান আলি ও রাকেশ মোল্লা। এই রাকেশের বাড়ি মুর্শিদাবাদের ডোমকলে। তাঁদের হেফাজত থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছে একটি বন্দুক। শনিবার এই দুই অভিযুক্তকে তোলা হয়েছিল কালনা মহকুমা আদালতে।
এদিন ধৃত কুরবান আলি শেখ জানায়, অস্ত্র বেচে টোটো কেনার পরিকল্পনা ছিল। যেখানে কাজ করতো, সেখানে দীর্ঘদিন বেতন না পেয়ে আগ্নেয়াস্ত্র বেচার পরিকল্পনায় রাকেশকে বন্দুকটি দেখাতে নিয়ে এসেছিলো সে। সেই সময় পুলিস তাদের বমাল ধরে। সে জানায়, অস্ত্রটি আমার, বেঙ্গল লাইসেন্সের আগ্নেয়াস্ত্র। নিরাপত্তা সংস্থায় কাজ করতাম। কাজ করেও চার-পাঁচ মাস বেতন না পেয়ে টোটো কেনার টাকা তুলতে অস্ত্র বেচার পরিকল্পনা করেছিলাম। রাকেশ বলেছিল অস্ত্রটা একবার নিয়ে আসো দেখবো। বিহারের একজনের থেকে অস্ত্রটা কিনেছিলাম।
তার দাবি, 'পুরনো সংস্থা বেতন দিচ্ছিল না, নতুন সংস্থায় কাজ করবো বলে বন্দুক কিনেছিলাম। পরে যখন জানলাম অস্ত্রটা দু'নম্বরী তখন বেচে দেওয়ার প্ল্যান করি।' আগ্নেয়াস্ত্রর নিয়ে করা একাধিক প্রশ্নের এভাবেই একাধিক অসঙ্গতিপূর্ণ জবাব দিয়েছে কুরবান। তাই সঠিক উদ্দেশ্য জানতে তদন্ত করেছে পুলিস। এদের রিমান্ডে কলকাতা এনে জেরা করা হবে। এমনটাই এসটিএফ সূত্রে খবর।
সাঁইথিয়ার (Saithia Incident) পর এবার কেশপুর। তৃণমূলের (TMC) 'গোষ্ঠী কোন্দলে' রক্তপাত কেশপুরের (Keshpur) চড়কা গ্রামে। শাসক দলের 'গোষ্ঠী কোন্দলে' বোমাবাজি (Bomb Hurled), হাত উড়লো এক তৃণমূল কর্মীর। গুরুতর জখম ওই তৃণমূল কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ, বুধবার দুপুরে কেশপুরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Vote) প্রস্তুতিকে সামনে রেখে এলাকায় একটি মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। চড়কা গ্রামে তারই প্রস্তুতি সারছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। সেই সময় হঠাৎই তৃণমূল কর্মীদের লক্ষ্য করেই বোমাবাজি করে অপর গোষ্ঠীর লোকেরা। এমন অভিযোগ সংবাদ মাধ্যমকে করেছেন এক স্থানীয় তৃণমূল কর্মী। বোমার আঘাতে জখম হন এক তৃণমূল কর্মী। ঘটনা ঘিরে এলাকায় আতঙ্ক, উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় বিশাল পুলিস বাহিনী।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের এক কর্মী জানান, সামনে থেকে প্রাণের বাজি নিয়ে আমরা দলকে ভোট লড়তে সাহায্য করি। জিতিয়েও আনি দলীয় প্রার্থীদের। কিন্তু পেশায় প্রমোটার একজন সভাপতি হতে চেয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। যার সঙ্গে দল কিংবা সংগঠনের কোনও যোগ নেই। কিন্তু সে নিজেকে তৃণমূল বলে দাবি করে। সে হঠাৎ করে হুমকি দেওয়া শুরু করে তৃণমূলের থিওরি আমি জানি। এই দলে পয়সা দিলে সভাপতি পদ পাওয়া যায়, সেই পয়সা আমি দিয়ে দিয়েছি। এটা আদতেই গোষ্ঠী কোন্দল। এই কোন্দলের পিছনে স্থানীয় বিধায়ক এবং ব্লক সভাপতির ইন্ধন রয়েছে। আমাদের গ্রামের ঐতিহ্য আছে, কোনও গোষ্ঠীবাজি বরদাস্ত নয়, যা হবে একসঙ্গে লড়াই।
তাঁর মন্তব্য, 'যখন কেউ নেই আশপাশে সবাই বিজেপি, তখন আমরা জীবনের বাজি রেখে তৃণমূল প্রার্থীকে জিতিয়ে এনেছি। ভোট পেরোতেই আমাদের ভুলে গিয়েছে।' যদিও গোষ্ঠী কোন্দলের তত্ত্ব মানতে নারাজ তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক অজিত মাইতি। তিনি বলেন,'বোমার আঘাতে একজনের আঙুল উড়েছে। পুলিস এই ঘটনার তদন্ত করেছে। পুলিস ঘটনাস্থলেও আছে। তবে আমি নিশ্চিত এই ঘটনার পিছনে সিপিএম-র চক্রান্ত এবং বিজেপির উসকানি আছে। ওরা চাইছে তলে তলে কেশপুরকে অশান্ত করতে। এখানে যা আছে ন্যূনতম মনোমালিন্য। সেটা আমরা বসে ঠিক করে নেব। এই ধরনের ঘটনা নেতৃত্ব আগামি দিনে ঘটতে দেবে না, এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি।'
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, 'তোলাবাজি নিয়ে তৃণমূলের এই গণ্ডগোল। যারা এখানে প্রথম থেকেই তৃণমূল করেছে তাঁরা এখানে পাত্তা পায় না। এখন যারা বেশি তোলা দিতে পারছে তাঁরাই প্রাধান্য পাচ্ছে। কিন্তু নিজেদের হাতের বাইরে নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়ায় এখন বিজেপিকে দোষারোপ করেছে। মানুষই তৃণমূলের কেশপুরকে শেষপুর বানানোর চক্রান্ত রুখে দেবে।'
মঙ্গলবার রাইপুরে সভা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary)। কার্যত পঞ্চায়েত ভোটকে (Panchayat Vote) সামনে রেখে আয়োজিত এই জনসভায় বিরোধী দলনেতা বলেন, 'পঞ্চায়েতে ভোট লুঠ করতে এলে ব্যালট নেবেন আর পুকুরে ফেলবেন। প্রস্তুত থাকুন, জোর লড়াই দিতে হবে। আর পথ দেখাবে উত্তরবঙ্গ, রাঢ় বঙ্গ আর বালু মাটি একসঙ্গে লড়বো। একদম শক্ত থাকুন, প্রস্তুত থাকুন।' এদিন তিনি ফের ডবল ইঞ্জিনের সরকার (Double Engine Government) তত্ত্বকে জাগিয়ে দেন।
শুভেন্দু অধিকারী নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন। 'কয়লা চোর, গরু চোর, গুণধর ভাইপো' বলে আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, 'আগামি দিনে রাষ্ট্রবাদী ডবল ইঞ্জিন সরকার পশ্চিমবঙ্গে তৈরি করার শপথ নিয়ে রাইপুরের মাটিতে আজকের কর্মসূচি সমাপ্ত করলাম।'
এদিকে, ডায়মন্ডহারবারে পঞ্চায়েত ভোটের আগে সাংগঠনিক বৈঠক করেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পঞ্চায়েত ভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ভোট যখনই ঘোষণা হবে তৃণমূল তৈরি। বিজেপি আগে প্রার্থী খুঁজে পাক। পঞ্চায়েত ভোট অবাধ, শান্তিপূর্ণ, উৎসবের মেজাজে হবে। গণতন্ত্রে মানুষ একপক্ষকে বর্জন করবে, একপক্ষকে গ্রহণ করবে।'
পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, 'দল প্রতি পদক্ষেপে চেষ্টা করছে অভিযোগ হলে ব্যবস্থা নিতে। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার উপ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। দাইহাট পুরসভার প্রধানের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছি। ব্লক বা টাউন সংগঠনে নেতৃত্ব নিয়োগে কারও বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ এলে, সত্যতা প্রমাণ হলে আমরা পদে রাখছি না। ভালো মানুষকে, মানুষের কাজে লাগানো যেতে পারে। উন্নয়ন যাতে বাধাপ্রাপ্ত না হয় সেটাই আমরা সুনিশ্চিত করেছি। অর্থাৎ এটাই নতুন তৃণমূল।'
প্রসূন গুপ্ত: এখনও আইনগত ভাবে মুকুল রায় বিজেপির বিধায়ক। গত বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে মুকুল কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে জিতেছেন। কিন্তু ভোটের ফল ঘোষণার দিন ইঙ্গিত ছিল মুকুল তৃণমূলে ফিরছেন। অন্তত তাঁর ঘনিষ্ঠরা জানতেন বিষয়টি। এরপর নাটকীয় ভাবে খোদ তৃণমূল নেত্রীর উপস্থিতিতে ঘাসফুলে যোগ দিলেন মুকুল। তাঁকে বরণ করে নিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে মুকুলপুত্রকেও দলে টানেন অভিষেক।
সেই বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে পরাজিত শুভ্রাংশু এখন তৃণমূলের টিকিটে পুরভোটে জিতে বীজপুর পৌরসভার উপপ্রধান। এরপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। মুকুলকে বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যানের পদ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিজেপির দাবিতে আপাতত সেই পদ নিয়ে প্রচুর জটিলতা তৈরি হওয়ায়। প্যাক কমিটির চেয়ারম্যান পদে রদবদল হয়েছে। এরই মধ্যে মুকুলের পত্নী বিয়োগ হয়েছে। এরপর থেকে তিনি অনেকটাই উদাসীন হয় পড়েন সক্রিয় রাজনীতিতে। কেউ কেউ বলেছে, তিনি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। কিন্তু মুকুলকে চেনা বড়ই দুষ্কর। ভাইফোঁটার দিন হাসি মুখে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে পুরোনো দিনের মতো ফোঁটা ও উপহার নিয়ে আসেন তিনি। তিনি পাল্টা কী উপহার দিলেন প্রশ্নের উত্তরে মুকুল জানান যে, এখনও দেওয়া হয়নি তবে দেওয়া হবে। তাহলে সেই উপলক্ষ্য কি পঞ্চায়েত ভোট?
পর্দা আসতে আসতে অনেকটাই সরছে। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার নদীয়া সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেদিন রাতে নাকি মুকুল রায়ের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন মমতা বলে এমনটাই গুঞ্জন রাজ্য রাজনীতিতে। প্রশ্ন এটাই মুকুল কি ফের ২০১৩-র মতো পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য বড় দায়িত্ব পাচ্ছেন? সেটা সময় বলবে, তবে এই প্রতিবেদককে ২০১৬-র বিধানসভা ভোটের আগে মুকুল আক্ষেপের সুরে বলেছিলেন, নদিয়ার দায়িত্ব পেলে ভালো হতো কারণ নদিয়া জেলাকে হাতের তালুর মতো মতো নাকি চেনেন তিনি।
সেবার দায়িত্ব পাননি তৃণমূলের একদা সেকেন্ড ইন কমান্ড, কিন্তু এবারে হয়তো ভাবনা শুরু করেছেন মমতা। তাই বোধ করি মুখ্যমন্ত্রীর নদীয়া জেলা সফরে মমতার সঙ্গেই আগের মতোই থাকছেন মুকুল রায়।
ফের বাসন্তীতে উদ্ধার বোমা (bomb)। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী (Basanti) থানার তিতকুমার গ্রামের একটি মাঠ থেকে উদ্ধার হয়েছে অন্তত দশটি তাজা বোমা। ফাঁকা মাঠ থেকে বোমা উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক (panic)। ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে বাসন্তী থানার পুলিস (police)।
তিতকুমার গ্রামের ওই মাঠে কে বা কারা এই বোমগুলি রেখে গেল, তদন্ত করে দেখছে পুলিস। ইতিমধ্যেই বোমগুলি নিষ্ক্রিয় করতে সিআইডি বোম্ব স্কোয়াডকে (CID Bomb Scuad) খবর দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় মানুষরা জানান, রবিবার রাতভর এলাকা চলেছে বোমাবাজি। তবে সাতসকালে বোমা উদ্ধারকে কেন্দ্র করে এলাকায় সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্য। ঘটনাস্থলে এসডিপিও ক্যানিংয়ের নেতৃত্বে বিশাল পুলিসবাহিনী রয়েছে। পুরো এলাকায় চলছে তল্লাসি।
সম্প্রতি রাজ্যের একাধিক জায়গা থেকে উদ্ধার হচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এহেন অস্ত্র ভাণ্ডার উদ্ধারকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। সন্ত্রাসের আবহে পঞ্চায়েত ভোট করাতে চাইছে শাসক দল। এহেন টিপ্পনি বাম-বিজেপি ও কংগ্রেসের। শাসনে খোদ তৃণমূল নেতার বাড়িতে, মধ্য কলকাতা, বারুইপুর পুলিস জেলা অন্তর্গত কাশীপুরে গত একমাসে উদ্ধার হয়েছে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র।
প্রসূন গুপ্ত: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যখনই সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন তখনই তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এই তরজা বেশিরভাগ সময়ে স্বাস্থ্যকর থাকেনি। এমনটিও দেখা গিয়েছে, শুভেন্দু মমতা বা অভিষেককে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে মিডিয়ার সামনে মুখ খুলেছেন, তার ঘন্টা পেরোতে না পেরোতেই কুণাল আক্রমণ শানিয়েছেন শুভেন্দুকে। এ কি এক অলিখিত নিয়ম? বোধহয় না, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অতি আস্থাভাজন কুণাল ঘোষ। এমনটিও দেখা গিয়েছে, শুভেন্দু কোথাও সভা করেছেন তো তার কিছুদিনের মধ্যে সেই স্থানে সভা করতে গিয়েছেন কুণাল।
কুণালের অনেক দায়িত্ব। একদিকে সারা বাংলার বিভিন্ন জেলায় তিনি যান। মূলত প্রচারের কাজটি সারেন। এছাড়া দলীয় মুখপাত্রর দায়িত্বে যেই থাকুন না কেন আসলে সম্পাদকীয়র কাজটি কুণালই করে থাকেন। এছাড়া পৌর বা পুরসভার ভোটেও তাঁকেই বিভিন্ন জেলায় যেতে দেখা গিয়েছে। এবারে দায়িত্ব পূর্ব মেদিনীপুরের। কোনও লিখিত পদ নয় কিন্তু দল (পড়ুন অভিষেক) তাঁকেই পঞ্চায়েতের সংগঠন ও প্রচারের দায়িত্ব দিয়েছে।
কুণালের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়েছিল কালীপুজোর রাতে। তিনি জানিয়েছিলেন পয়লা ও দোসরা নভেম্ববর তিনি বিশেষ জেলার কাজে যাচ্ছেন। ফিরবেন হয়তো ৩ নভেম্বর। কিন্তু ফিরেই আবার জেলা সফর। শেষ পর্যন্ত জানা গেল সাম্প্রতিক ভোটের আগে ও পরে তিনি নিয়মিত গিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরে। সম্প্রতি নন্দীগ্রামে অভিমান করে থাকা দলের নেতা শেখ সুফিয়ানকে ডেকে এনে সভা করেছেন তিনি। ওই সভায় চোখে লাগার মতো ভিড় দেখা গিয়েছে।
অন্যদিকে কোনও সময়েই শুভেন্দু অধিকারী আমল দেন না কুণালকে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিরোধী নেতা সটান বলে দেন, 'ওই লোকের কথার উত্তর দিতে তাঁর রুচিতে বাঁধে।' কিন্তু বাস্তবে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন কিন্তু আরও একবার বিজেপির কাছে লোকসভার আগে সেমিফাইনাল। দিল্লি থেকে কড়া নির্দেশ, পঞ্চায়েতে ভালো ফল করতে হবে। ফলে পূর্ব মেদিনীপুরের লড়াই এখন শুভেন্দু বনাম কুণাল। কুণাল দায়িত্ব নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন হলদিয়ার অফিসে, যা একসময়ে শুভেন্দুর চারণ ভূমি ছিল।