
দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Narendra Modi) একাধিক বিদেশ থেকে, এমনকি দেশ থেকেও অনেকে বিভিন্ন রকমের উপহার দিয়ে থাকেন। আর এবারে দেশেরই এক মহিলা প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিলেন রাখি (Rakhi)। তবে জানা গিয়েছে, এই রাখির এক বিশেষত্ব রয়েছে। জানা গিয়েছে, এই রাখিটি ফেলে দেওয়া সামগ্রী দিয়ে বানানো হয়েছে। ফলে তিনি আশাবাদীও যে, তাঁর বানানো এই বিশেষ রাখি প্রধানমন্ত্রী রাখি পূর্ণিমার শুভ দিন পরবেন।
দেশে যেমন তাঁর সমালোচক রয়েছেন, তেমনি তাঁর অনুরাগীও অনেক। দেশের একাধিক মহিলা আবার তাঁকে ভাই-দাদার স্থানও দিয়েছেন। এবারে ওড়িশার এক মহিলা তাঁকে দাদা মনে করে রাখী পূর্ণিমার আগেই রাখি পাঠালেন। জানা গিয়েছে, ওড়িশার কেন্দ্রপাড়ার বাসিন্দা হলেন কমলা মহারানা। তিনি ফেলে দেওয়া সামগ্রী দিয়েই বিভিন্ন ধরণের জিনিস বানান ও তিনি এক স্বনির্ভর গোষ্ঠীও চালান। প্রধানমন্ত্রীর ২৫ তম 'মন কি বাত' পর্বে তাঁর নাম নেন প্রধানমন্ত্রী। এরপরই তিনি তাঁর জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা রাখি পাঠালেন প্রধানমন্ত্রীকে।
কমলা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, 'ফেলে দেওয়া জিনিস কুড়িয়ে রাখি বানিয়েছি। ওই রাখিই আমার ভাইয়ের (প্রধানমন্ত্রী) কাছে পাঠিয়েছি। আমার অনেক ভালবাসা পাঠালাম ওনার জন্য। তিনি আরও বলেন, 'মন কী বাত অনুষ্ঠানে আমায় বোন সম্বোধন করেছেন তিনি। তাই এবারে বোনের দায়িত্ব পালন করেছি আমি। আমার বিশ্বাস উনি ওই রাখিটি পরবেন। খুব আনন্দ পাব।'
ওড়িশার (Odisha) এক সংবাদ চ্যানেল এআই জেনারেটেড সংবাদ সঞ্চালিকা (AI News Anchor) 'লিসা'-কে (Lisa) প্রকাশ্যে এনে তাক লাগিয়ে দিল দেশবাসীর। এই প্রথম মানুষের জায়গায় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে সংবাদ সঞ্চালনা করা হবে। তবে কি সংবাদমাধ্যমের দুনিয়ায় এক নতুন যুগ শুরু হতে চলল! তবে কি খুব শীঘ্রই মনুষ্য বুদ্ধিমত্তার জায়গায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আসতে চলেছে? এমনটাই প্রশ্ন উঠছে মানুষের মনে।
গতকাল অর্থাৎ রবিবার পড়শি রাজ্য ওড়িশার এক বেসরকারি সংবাদ চ্যানেল 'ওটিভি'-তে প্রথম এআই নিউজ অ্যাঙ্কর লিসা-কে প্রকাশ্যে আনা হয়। এই এআই জেনারেটেড নিউজ অ্যাঙ্করের পরনে দেখা যায় ওড়িশার ঐতিহ্যবাহী শাড়ি। তাকে ইংরেজিতে কথা বলতে দেখা যায়। জানা গিয়েছে, এই নিউজ অ্যাঙ্করের বিভিন্ন ভাষায় কথা বলার দক্ষতা রয়েছে। তবে বর্তমানে ইংরেজি ও ওড়িশার ভাষাতেই তাকে খবর পড়তে দেখা যাবে।
ওটিভি থেকে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, 'ভবিষ্যতে এই নিউজ অ্যাঙ্করকে খবর পড়ার ক্ষেত্রে আরও উপযুক্ত করে তোলা হবে। তাকে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে পাওয়া যাবে ও তাকে ফলোও করা যাবে।' তবে এই সংবাদ চ্যানেলে প্রথম এআই জেনারেটেড সংবাদ সঞ্চালিকা লিসাকে আনার জন্য সংবাদ দুনিয়ায় এক নজির সৃষ্টি করল ওড়িশা।
ফের ওড়িশায় (Odisha) দুর্ঘটনা। এবারে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল ১২ জন যাত্রীর, আহত ৭। জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে একটি বরযাত্রীর গাড়ির সঙ্গে আরেকটি বাসের মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার বেরহারামপুর-তপ্তপানি রোডের কাছে দিগপাহান্ডিতে। মুখোমুখি সংঘর্ষ হতেই মুহূর্তের মধ্যেই দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে একটি বাস উল্টে পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে বাসের যাত্রীরাও ছিটকে পড়ে যান। আহতদের তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, সেখানেই তাঁরা চিকিৎসাধীন। তবে এই দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় ১২ জনের। তারমধ্যে একই পরিবারের ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
সূত্রের খবর, রবিবারে মাঝরাতেই ঘটে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। রাত ১ টা নাগাদ ওড়িশার দিগপাহান্ডিতে বেরহারামপুর-তপ্তপানি রোডের কাছে ঘটেছে দুর্ঘটনাটি। সংঘর্ষ হয় ওড়িশা স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের বাসের সঙ্গে একটি বেসরকারি বাসের। সরকারি বাসের যাত্রীদের তেমন কোনও ক্ষতি না হলেও বেসরকারি বাসের যাত্রীদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই বাসের যাত্রীরা খানদাদেউলিতে এক বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে দিগপাহান্ডি আসার সময় এই ঘটনা ঘটে।
এরপর দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিস। আহতদের তড়িঘড়ি উদ্ধার করে এমকেসিজি মেডিক্যাল কলেজ, এসপি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। এই দুর্ঘটনার পর ওড়িশার গঞ্জামের জেলাশাসক আহতদের ৩০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। আবার সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীও মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ২ লক্ষ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন।
ওড়িশার (Odisha) বালেশ্বরে (Balasore) ট্রেন দুর্ঘটনার (Train Accident) তদন্তে এরাজ্যের দুটি জেলায় তল্লাশি চালাল সিবিআই। দুর্ঘটনাস্থলের সিগন্যাল এবং রিলে রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী আমির খানের সন্ধানে হুগলি এবং পূর্ব মেদিনীপুরে তল্লাশি চালায় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা।
সিবিআই সূত্রে খবর, হুগলির ডানকুনির বাসিন্দা আমির খান। খড়গপুর ডিভিশনের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। ঘটনার দিন তিনি বাহানগা বাজার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন। বালেশ্বরের সোরহা বাজার এলাকার একটি বাড়িত ভাড়া থাকতেন বলে জানা গেছে। যদিও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি বলেই সূত্রের খবর।
যদিও আমির খানের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক বিবৃতি দিয়ে বলেন, 'রেলের এক কর্মী নিখোঁজ হয়েছেন বলে কিছু সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু, তা সঠিক নয়। কেউ নিখোঁজ বা অপহরণ হননি। রেলের সব কর্মী তদন্তে সহায়তা করছেন।' এদিকে আমির খানের সোহরা বাজার এলাকার ভাড়া বাড়িটি সিল করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
টাটার ইস্পাত কারখানার ফার্নেসে ভয়াবহ বিস্ফোরণ (Blast)। এই বিস্ফোরণে কোনও নিহতের খবর না মিললেও আহত (Injured) হয়েছেন কমপক্ষে ১৯ জন কর্মী। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার (Odisha) ঢেঙ্কানল জেলার মেরামণ্ডলীতে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিস (Police)। এই ঘটনায় পুলিস আহত ওই কর্মী এবং ইঞ্জিনিয়ারদের উদ্ধার করে কটকের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। আহতদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিস ইতিমধ্যে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ঢেঙ্কানলের পুলিস সুপার জ্ঞানরঞ্জন মহাপাত্র বলেন, “এই ঘটনায় ১৯ জন আহত হয়েছেন। কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের একটি দল এই ঘটনার তদন্ত করবে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আচমকা বিএফএফপি ২ পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে গ্যাস বেরোতে শুরু করে। সেটি মেরামতির কাজ করছিলেন কিছু কর্মী এবং ইঞ্জিনিয়ার। তখনই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের জেরে ওই কর্মী এবং ইঞ্জিনিয়ারদের গায়ে গরম জল ছিটকে পড়ে। যদিও এই বিষয়ে টাটা স্টিলের তরফে জানানো হয়েছে, আহতদের চিকিৎসা চলছে। এমনকি ওই আহত কর্মীদের পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।
তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওড়িশার (Odisha) বাহানাগা (Bahanaga) স্টেশনে কোনও ট্রেন (Train) দাঁড়াবে না। ফলে, যাত্রীরা ওই স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠতে বা নামতে পারবেন না। রেলের তরফে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বালেশ্বরের বাহানাগা স্টেশনে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার প্রায় ১০ দিন পেরিয়ে গেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। পাশাপাশি রেল সুরক্ষা কমিশনের তরফেও তদন্ত চলছে।
এদিকে ট্রেন না দাঁড়ানোর নির্দেশিকায় সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, কবে এই ঘটনার তদন্ত শেষ হবে সেবিষয়ে কোনও নির্দিষ্ট তথ্য নেই। ফলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হবে। ঘটনার তদন্তভার নিয়েই খড়গপুরে পৌঁছেছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। সেখানে বেশ কয়েকজন রেলকর্মীর সঙ্গে কথা বলেন। পাশাপাশি বাহানাগা স্টেশনে পৌঁছেও পুরো ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন।
তবে ঘটনার ২দিন পরেই রেলের তরফে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট জমা করা হয়। তাতে সিগন্যালিং ব্যবস্থার ভুলের জন্যই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি ওড়িশার (Odisha) ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় (Train Accident) নিহতদের দেহ রাখা হয়েছিল বাহনগা বাজারের এক স্কুলে। স্কুল বাড়ির ক্লাসরুমে একে একে রাখা হয়েছিল দেহগুলিকে। বাহনগা বাজার হাইস্কুলকে বানানো হয়েছিল অস্থায়ী মর্গ হিসেবে। ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার আতঙ্ক মুছে এবার জীবনে ফিরছে বালাসোর।
গ্রীষ্মের ছুটি শেষে খুলছে বাহনগা বাজার হাইস্কুল। কিন্তু ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতদের দেহ রাখায় বাহনাগা বাজার হাইস্কুলে তাদের ছেলেমেয়েদের পাঠাতে রাজি নন অভিভাবকরা। ট্রেন দুর্ঘটনার দেহ রাখা স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে পড়ুয়ারা। আর তাই প্রশাসন সেই স্কুল ভেঙে ফেলছে। যাতে কোনওভাবেই দু:স্বপ্নের বিস্মৃতি-চিহ্ন না থাকে। শুক্রবার বাহনগা বাজার হাইস্কুলের বেশীরভাগ অংশ ভেঙে ফেলা হল। আবার নতুন করে তৈরি হবে এই স্কুল। নতুন স্কুল বাড়ি তৈরি হলে তবেই পড়ুয়ারা ফের পঠনপাঠন শুরু করবেন।
প্রসঙ্গত, শালিমার থেকে চেন্নাইয়ে যাওয়ার পথে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ওড়িশার বালাসোরের বাহনাগা বাজার স্টেশনে করমণ্ডল এক্সপ্রেস সহ তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষে দেশের অন্যতম বড় রেল দুর্ঘটনা ঘটে। সরকারী হিসেবে ২৮৮ জন এই ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত হন।
ওড়িশার (Odisha) রেল দুর্ঘটনার (Rail Accident) তদন্ত ধামাচাপা দিতেই কলকাতায় ফের সিবিআই (CBI) হানা। বুধবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কথা মত মৃতদের পরিবার এবং আহতদের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। নেতাজি ইন্ডোরের সেই অনুষ্ঠান থেকেই কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'আসল দুর্ঘটনার তদন্ত হল না। কোনও প্রমাণ নেই। আমি চাই সত্যটা বেরোক। রেলের দুর্ঘটনার তদন্ত না করে সকাল থেকে সিবিআইকে কলকাতায় পাঠিয়ে দিয়েছে দিল্লি। ১৪টা থেকে ১৬টা পুরসভায় ঢুকে গেছে, নগরোন্নায়নেও ঢুকে গেছে। এবার কি বাথরুমেও ঢুকবে নাকি সিবিআই।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'এসব করে এত বড় তদন্ত ধামাচাপা দেওয়া যাবে না। আত্মাগুলো কাঁদছে। মনে রাখবেন, তাঁদের শান্তি ফিরিয়ে দিতে হবে। সঠিক ব্যবস্থা হোক।'
ওড়িশার (Odisha) বালেশ্বরে (Balasore) রেল দুর্ঘটনায় (Rail Accident) ক্ষতিগ্রস্তদের বুধবার ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার থেকেই তার প্রস্ততি শুরু করেছিল নবান্ন। ইতিমধ্যে জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
জানা গিয়েছে, জেলাশাসকদের পাঠানো তালিকার ভিত্তিতে একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে তা নবান্নে পাঠাবেন মুখ্যসচিব। ওই তালিকায় যাঁদের নাম থাকবে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বুধবার। অনুষ্ঠানটি হবে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেবেন তিনি।
ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা রবিবারই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিব জেলাশাসকদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন। ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা চেয়ে পাঠান তিনি।
এদিকে বালেশ্বর রেল দুর্ঘটনার জেরে উত্তরবঙ্গ সফর বাতিল করেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতায় থেকে তিনি পুরো পরিস্থিতির দিকে নজর রাখেন। এখনও পর্যন্ত এরাজ্যের অনেক বাসিন্দা ওড়িশার হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে মঙ্গলবার ফের ওড়িশা যান মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসূন গুপ্তঃ করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পরে ওই ট্রেনের নিহত ও আহত যাত্রীদের সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে। তেমনই পুরী বা উড়িষ্যার অন্য প্রান্তের ভ্রমণকারীরাও মহা সংকটে। আসলে যে কোনও দুর্ঘটনার পরে একদল মানুষ লুঠপাঠে নামে, তা সে যেখানেই হোক না কেন। ব্যতিক্রম নয় উড়িষ্যাও। প্রশাসনিক দিক থেকে কোনও কালেই উড়িষ্যা তেমন সুনাম অর্জন করতে পারে নি। যদিও সিবিআই রেল দুর্ঘটনার তদন্তে নেমেই জানিয়েছে, এটির সঙ্গে অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশ্ন থাকে, অন্তর্ঘাত যদি হয়েই থাকে তবে প্রাথমিক ভাবে ধরে নেওয়া যায় যে স্থানীয় মানুষ বিশেষ করে রেলের সিগন্যাল ম্যান জড়িত রয়েছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছুটা দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন উদ্ধার কাজে। মঙ্গলবার তিনি আচমকাই উপস্থিত হয়েছিলেন কটকে। গিয়েছিলেন হাসপাতালেও। এবারে তাঁর ফর্মুলার রেড লাইট নিয়ে বেশ কিছুটা একমত কেন্দ্রের অনেকেই। কাজেই ভাবার বিষয়। অন্যদিকে, মমতা অনেক আহতকে রাজ্যে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এবারে প্রশ্ন উঠেছে, পুরী বা উড়িষ্যার অন্য প্রান্তে এমন অনেকেই রয়েছে যাঁরা বাড়ি ফিরতে পারছেন না টাকার অভাবে। ট্রেন নেই, কাজেই ভরসা করতে হচ্ছে উড়িষ্যা পরিবহনের উপর। এখানেই এক প্রকার চাপ দিয়ে দিয়ে টাকা তুলছে ওই বাসগুলি। যেখানে ভাড়া ১০০০ -১২০০ টাকা, সেখানে কলকাতায় আসার জন্য দর দেওয়া হচ্ছে তিন থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকা। অনেকেই বাসে জায়গা না পেয়ে হোটেলে ফিরত যাচ্ছে, কিন্তু এবারে হোটেলওয়ালারাও দর বাড়িয়ে দিচ্ছে। অসহায় অবস্থা। প্রশাসনের কানে যেতে তারা কিছুটা তৎপর হয়েছে। পরিবহনের ইন্সপেক্টররা বার্তা দিয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে ২৫ হাজার টাকা অবধি জরিমানা হতে পারে। করোনাকালে এমনটিই হয়েছিল। এই ধরনের কুকীর্তি গ্রহণযোগ্য নয়, কাজেই ফের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে যাত্রীদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। বাংলার দিদি কি করেন সেটাই দেখার।
উল্লেখ্য, ভয়াবহ দুর্ঘটনার পাঁচ দিন পর বুধবার থেকে আবার চলবে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। বুধবার বিকেল সওয়া তিনটে নাগাদ শালিমার থেকে ছাড়বে করমণ্ডল এক্সপ্রেস।
ফের (Odisha) ট্রেনে বিপত্তি। মঙ্গলবার সেকেন্দরাবাদ-আগরতলা এক্সপ্রেস (Secunderabad-Agartala Express) ট্রেনের একটি কামরা থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে যাত্রীদের মধ্যে। এরপর ওড়িশার ব্রহ্মপুর স্টেশনে ট্রেনটি থামাতে বাধ্য় হন রেলকর্মীরা। ধোঁয়ার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। কোনও বড়সড় বিপদের আশঙ্কায় তাঁরা কামরা বদলের দাবি জানাতে থাকেন। এরপর বেশ কিছুক্ষণ পরে ট্রেনটি স্টেশন ছাড়ে। তবে কোনও হতাহতের খবর আসনি বলে সূত্রের খবর।
করমণ্ডল এক্সপ্রেসের আতঙ্ক এখনও কাটেনি। তারই মধ্যে একের পর এক ট্রেনে বিপত্তির খবর প্রকাশ্যে আসছে। এবারে সেকেন্দরাবাদ-আগরতলা এক্সপ্রেসের বি-৫ অর্থাৎ এসি কোচ থেকে হঠাৎ ধোঁয়া বেরোতে থাকলে যাত্রীরা ভয়ে-আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে থাকেন। এরপর ট্রেনটিকে ব্রক্ষ্মপুরে থামিয়ে দেওয়া হয়। কেবলমাত্র বি-৫ কোচই নয়, পাশাপাশি অনেকগুলি কোচ থেকেই যাত্রীরা নেমে পড়েন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন রেলওয়ে কর্মীরা।
রেলসূত্রে খবর, সেকেন্দরাবাদ-আগরতলা এক্সপ্রেসটির এই কামরাতে শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুন লেগেছিল। তবে সেই আগুন সঙ্গে সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ট্রেন থামানোর সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে উপস্থিত হয় রেলে কর্মরত কর্মীরা। কিছুক্ষণ ধরে ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এরপর ফের যাত্রা শুরু করে ট্রেনটি।
২ জুন, শুক্রবারের ওই অভিশপ্ত রাত এখনও কেউ ভুলতে পারেননি। এবার আরও একটি ট্রেন দুর্ঘটনার (Train Accident) কবলে। ঘটনাস্থল সেই ওড়িশা (Odisha)। জানা গিয়েছে, ওড়িশার বারগড় জেলার মেধাপালির কাছে মালগাড়ির (Freight Car) পাঁচটি কামরা বেলাইন হয়েছে। ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই।
জানা গিয়েছে, চুনাপাথর ভর্তি ওই মালগাড়ি ন্যারোগেজ লাইন দিয়ে খনি এলাকা থেকে সিমেন্ট কারখানা পর্যন্ত ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত হয়। ভারতীয় রেলের অন্তর্গত নয়। এমনই জানিয়েছে ইস্ট কোস্ট রেলওয়ে। কী কারণে বেলাইন হল মালগাড়ি, তা এখনও জানা যায়নি। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ।
শুক্রবার সন্ধেবেলায় ৭ টা নাগাদ বেলাইন হয় করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এছাড়াও দুর্ঘটনাগ্রস্থ হয় মালগাড়ি ও বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসও। দুর্ঘটনায় ২৭৫ জনের প্রাণ গিয়েছে।
করমণ্ডল ট্রেন দুর্ঘটনায় (Coromondel Accident) আহতদের চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্স এবং ডাক্তার পাঠাল রাজ্য সরকার (State Government)। নবান্ন (Nabanna) থেকে একটি বুলেটিন প্রকাশ করে এই খবর জানানো হয়েছে। রাজ্যে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত মোট ৭০টি অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছেন ৩৪জন চিকিৎসক। এছাড়াও আহত যাত্রীদের ফিরিয়ে আনতে ১০টি বাস পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। সঙ্গে ২০টি মিনি ট্রাকে করে চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানো হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত ২০ টি অ্যাম্বুলেন্স করে ১২০ জনকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দুটি দলকেও পাঠানো হয়েছে ঘটনাস্থলে। এছাড়াও কয়েকজন আইএএস অফিসার, ডেপুটি মেজিস্ট্রেটকেও পাঠানো হয়েছে বালেশ্বর। শুক্রবার রাতে দুর্ঘটনার পর শনিবার দুপুরেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁর নবজোয়ার যাত্রা একদিনের জন্য বন্ধ রেখেছেন।
মণি ভট্টাচার্য: করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় (Coromandel Express Accident) এখনও অবধি মৃত ২৮৮। আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০০-এর বেশি। এ অবস্থায় একদিকে এখনও যেমন চলছে উদ্ধারকার্য, তেমনই চলছে বিভাগীয় তদন্ত। এ অবস্থায় আনরিজার্ভড বা জেনারেল কামরায় থাকা যাত্রীদের অধিকাংশ মৃতদেহ সনাক্ত করতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল কতৃপক্ষ। সূত্রের খবর, রিজার্ভড কামরার যাত্রীদের তথ্য ঘেঁটে তাঁদের মৃতদের পরিবারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করেছে রেল। কিন্তু কিছু মৃতদেহ বা আহতের পরিচয়ের খোঁজ এখনও পায়নি রেল কর্তৃপক্ষ।
এই সমস্যার সমাধান করতে রেলের ওয়েবসাইটে বা বিভিন্ন মাধ্যমে তাঁদের ছবি দিয়ে খোঁজ চালানো হবে, এমনটা আগেই সিএন-ডিজিটালকে জানিয়েছিল ওড়িশার মুখ্য সচিব। এবার দক্ষিণ পূর্ব রেলের ওয়েবসাইটে এই দুর্ঘটনায় আহত ও মৃতের ছবি সহ তথ্য আপলোড করেছে দক্ষিণ পূর্ব রেল। দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য চৌধুরী বলেন, 'আপাতত যাদের স্পষ্ট ছবি পাওয়া গেছে তাদের ছবি আপলোড করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট তথ্য-প্রমাণ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে পরিবারকে মৃতদেহ বা আহত ব্যক্তিদের তুলে দেওয়া হবে।'
নিম্নলিখিত ওয়েবসাইট গুলির মাধ্যমেই খোঁজ চালানো হচ্ছে।
নিহতদের খোঁজের জন্য
আহতদের খোঁজের জন্য
ইতিমধ্যেই ট্রেন দুর্ঘটনার প্রাথমিক কারণ জানিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল কতৃপক্ষ। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, সিগন্যালিং বিভ্রাটের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।' সাম্প্রতিক কালে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেনি বলেই দাবি রেলের। এর পিছনে আদতে কী কারণ রয়েছে তা নিয়ে উচ্চবিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার অর্চনা জোশি। তিনি জানিয়েছেন, এই দুর্ঘটনার আসল কারণ তদন্তের রিপোর্টেই পাওয়া যাবে। যদিও এই ঘটনায় রেলের গাফিলতি বলেই দাবি সাধারণের। পাশাপাশি রেল আধিকারিকের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ওড়িশার (Odisha) বালেশ্বরে তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষে ভয়াবহ (Train Accident) পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ঘটনার পরই শনিবার দুর্ঘটনাস্থলে আহতদের সঙ্গে দেখা করতে পৌঁছে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। আর সেখানে পৌঁছতেই তিনি জানালেন, 'দুর্ঘটনার জন্য যারা দায়ী, তাদের কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে।' আজ, শনিবার সকাল থেকেই দুর্ঘটনাস্থলে একে একে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
শনিবার সকালে নয়াদিল্লিতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। তারপরেই বালেশ্বরের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। শনিবার বিকেল পৌনে ৪টা নাগাদ বালেশ্বরে পৌঁছন মোদী। এরপর রেলমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রের আরও এক মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। খতিয়ে দেখেন উদ্ধারকাজ। ঘটনাস্থলে তিনি ওড়িশা মন্ত্রিসভার সচিব ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেন। আহতদের এবং তাঁদের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সহায়তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এরপর দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর বালেশ্বর হাসপাতালেও যান প্রধানমন্ত্রী। আহতদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। কথা বলেন চিকিৎসকদের সঙ্গেও। এরপর প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা। আহতদের চিকিৎসার জন্য সরকার কোনও চেষ্টাই বাকি রাখবে না। এটা একটা গুরুতর ঘটনা। প্রতিটি কোণ থেকে এর তদন্তের নির্দেশ জারি করা হয়েছে। যারা দোষী সাব্যস্ত হবে তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।'