সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে নিয়ে কটুক্তি। এই অভিযোগে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে আইনি নোটিস পাঠালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয় বসু জানিয়েছেন, সোশাল মিডিয়া ক্ষমা চেয়ে ওই টুইট মুছে না দিলে মহম্মদ সেলিমের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রথমে টুইটার এবং পরে ফেসবুকে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কটুক্তির অভিযোগ ওঠে সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের বিরুদ্ধে।
প্রথমে পতিতা ও পরে যৌনকর্মী। তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে গিয়ে এই দুটি শব্দের ব্যবহার করেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। তাঁর প্রথম শব্দের ব্যবহারের আপত্তি উঠেছিল দলের অন্দর থেকেই। বিশেষ করে সিপিএমের মহিলা নেত্রীরাই রাজ্য সম্পাদকের কড়া সমালোচনা করেছিলেন।
পোস্ট না মুছে ব্যবহার করেছিলেন দ্বিতীয় শব্দ। মূলত তাঁর অভিযোগ ছিল বেশ কয়েকজন বিদেশি মহিলার অ্যাকাউন্টে রাখা আছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের টাকা। তাঁর এই অভিযোগ উড়িয়ে, সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের বিরুদ্ধে এবার পাল্টা আইনি নোটিস পাঠানো হল। অভিষেকের আইনজীবী জানিয়েছেন, বিদেশ থেকে ফিরে এই ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁর মক্কেল।
বেঙ্গালুরুতে যতই তৈরি হোক ইন্ডিয়া জোট, যতই একছাতার তলায় আসুক তৃণমূল-সিপিএম, রাজ্যস্তরে তৃণমূলই যে তাঁদের শত্রু, তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিল আলিমুদ্দিন। সেইসঙ্গে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে 'সেটিং' তত্ত্বকে আরও একবার উসকে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
বুধবার সিপিএমের রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠক শেষ হয়েছে। তারপরেই সাংবাদিক বৈঠক করেন মহম্মদ সেলিম। সেখানেই তিনি বলেন, "বেঙ্গালুরুতে যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, তার স্তবক ধরে ধরে দেখিয়ে দেওয়া যাবে, দেশে বিজেপি যা যা করছে, বাংলায় তৃণমূল সেটাই করছে । পঞ্চায়েতে তৃণমূল ভোট লুট করেছে নিজেরা জেতার জন্য এবং বিজেপিকে দ্বিতীয় করার জন্য।"
তৃণমূলকে আক্রমণ করে তিনি আরও বলেন, '২১ জুলাই বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলেছে। এক সপ্তাহও হয়নি। আগে দেখো কী হয়। এর আগে এনআরসি, সিএএ, রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ভোটে সরে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল।'
বিহারেই হোক বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের বৈঠক। নীতীশ-তেজস্বীকে পাশে বসিয়ে এই প্রস্তাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে ছোট একটা বৈঠক তারপরে সবাই মিলে বসে একটা বার্তা দেওয়া যে বিজেপি-বিরোধী সব দল এক। এভাবেই বিজেপি-বিরোধী জোট গঠনে উদ্যোগী হয়ে সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই সময় তাঁর পাশে হাসিমুখে দেখা গিয়েছে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং ডেপুটি সিএম তেজস্বী যাদবকে।
তিনি জানান, 'বিজেপি খুব বড় হিরো হয়ে গিয়েছে, আমি চাই ওরা জিরো হয়ে যাক। নীতীশজি সবার সঙ্গে কথা বলছে, আমিও বলছি। সবাই মিলে বসে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নেবো।' এদিকে জোট ফর্মুলা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের মিশন, ভিশন পরিষ্কার। সবাই মিলে একসঙ্গে বসুক, তারপর সিদ্ধান্ত নেবো।'
নবান্নে হওয়া এই বৈঠক প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ জানান, 'পরবর্তীকালে কারা কারা জেলে যাবে, জেলে গেলে তারপর কী হবে, সেসব নিয়ে বৈঠক।' সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, 'বিরোধীরা একজোট হতে চাইছে, এই সমীকরণে তৃণমূল কংগ্রেস নেই। আদানি-কাণ্ডে তৃণমূলের প্রতিবাদ দেখা যায়নি। এছাড়া দুই পড়শি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একে অপরের সঙ্গে দেখা করতেই পারে।'
মহম্মদ সেলিমের (Md Selim) দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে অভিনেতা-সাংসদ পরেশ রাওয়ালকে তলব করলো কলকাতা পুলিস (Kolkata Police)। আগামি ১২ ডিসেম্বর তালতলা থানা তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছে। বাঙালির মাছ খাওয়া নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম অভিনেতার (Paresh Rawal) বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের সম্ভাবনা।
মূল ঘটনার সূত্রপাত গুজরাত বিধানসভা ভোটের প্রচার। বিজেপির তারকা প্রচারকদের মধ্য অন্যতম ছিলেন অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। পরেশ গত মঙ্গলবার এক প্রচার সভায় বাঙালিদের মাছ খাওয়া নিয়ে তির্যক মন্তব্য করেন। তারপরেই দেশজুড়ে তাঁর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে ওঠে। নিন্দার ঝড় ওঠে, সমালোচনার সুরে মিমে মিমে ছেয়ে যায় সোশাল মিডিয়া। বিতর্ক বাড়ছে বুঝে ক্ষমা চেয়ে নেন বলিউডের অন্যতম পরিচিত মুখ পরেশ।
এদিকে, পরেশের এহেন মন্তব্যের জেরে শুক্রবার তালতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সেলিম। যদিও এ ব্যাপারে এখনও পরেশের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ঠিক কী বলেছেন অভিনেতা? গুজরাত বিধানসভা ভোটের প্রচারে এক সভায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, 'মুদ্রাস্ফীতি সহ্য করতে পারবেন গুজরাতের মানুষ। কিন্তু পাশের বাড়িতে যদি রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু কিংবা বাংলাদেশিরা এসে ওঠেন, তখন গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে কী করবেন? বাঙালিদের জন্য মাছ ভাজবেন?'