চিতাবাঘের (Tiger Attack) হামলায় মৃত্যু ৫৩ জনের! মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) চন্দ্রপুর জেলাতেই ঘটেছে এই হাড়হিম করা ঘটনা। ২০২২ সালে ঘটেছে এই ঘটনাটি। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই চন্দ্রপুর-সহ বিদর্ভের অরণ্যভূমিতে এই ঘটনা ঘটেই চলেছে, অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্ট ছাড়পত্র দেওয়ায় ‘মানুষখেকো’ বাঘটিকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছিল ওই অঞ্চলের যাবৎমলে। গুলি করে মারা ওই বাঘের নাম ছিল অবনী। সেই বিষয়ে ছবিও হয়েছে বলিউডে। পনডারকাওড়া, টিপেশ্বর এলাকায় দু’বছরে ১৩ জন মানুষকে ‘খুনের’ অভিযোগ উঠেছিল অবনীর বিরুদ্ধে। তাই ২০১৮ সালের নভেম্বরে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছিল তাঁকে।
মহারাষ্ট্রের বনমন্ত্রী সুধীর মুঙ্গনতিওয়ার সোমবার বিধানসভায় এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ওই ৫৩ জনের মধ্যে ৪৪ জন বাঘের হামলার শিকার হয়েছেন। বাকিদের মৃত্যু হয়েছে চিতাবাঘের আক্রমণে। চন্দ্রপুরের পাশাপাশি, বিদর্ভ অঞ্চলের আরও কয়েকটি জেলাতেও বাঘ-চিতাবাঘের হামলায় মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের বনমন্ত্রী।
তবে তিনি আরও বলেন, 'গেল বছরেও বিদর্ভে বিভিন্ন কারণে ১৪টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে।'
মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরে 'মানুষখেকো' বাঘের হামলায় বেঘোরে প্রাণ গেল এক মহিলার। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাঘের হামলায় মৃত এক মহিলা, এই ঘটনা ধরে ২০২২-এ চন্দ্রপুরে এই জেলায় বাঘের হামলায় প্রাণ গিয়েছে ৫০ জনের। বন দফতরের পরিসংখ্যান, ৪৪ জনকে মেরেছে বাঘ, বাকি ছ’জনকে মারা গিয়েছে চিতার হামলায়।
বন দফতরের এক কর্তা জানান, মৃত মহিলার নাম স্বরূপা তেলেতিওয়ার, বয়স ৫০ বছর। বৃহস্পতিবার গ্রামে ক্ষেতে তুলো তুলছিলেন, সে সময়ই হামলা করে বাঘটি। এদিকে, বুধবার এই চন্দ্রপুরেই তাড়োবা-অন্ধেরী ব্যাঘ্রপ্রকল্প লাগোয়া এলাকায় বাঘের জোড়া হামলায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
৪ বছর আগে মহারাষ্ট্রের যবতমল জেলায় এভাবেই এক ‘মানুষখেকো’ বাঘিনীর হামলায় প্রাণ গিয়েছিল বহু মানুষের। অবনী নামে সেই বাঘিনী ২ বছরে শিকার করেছিল প্রায় এক ডজন মানুষ। তাকে ‘মানুষখেকো’ ঘোষণা করায়, সুপ্রিম কোর্টের ছাড়পত্রের পর ২০১৮-র নভেম্বরে গুলি করে মারা হয় অবনীকে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড (Life imprisonment) সকলেই শুনেছেন। কিন্তু যাবজ্জীবন ‘খাঁচাদণ্ড’ কোনওদিন শুনেছেন? একাধিক মানুষ খুনের (Murder)অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এমনকি তার প্রজাতির অন্যদের সঙ্গেও প্রায়ই লেগে যায় অশান্তি, মারামারি। এই আক্রমণাত্মক স্বভাবের জেরে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে প্রজাতির অন্যরা।
কে সে? এতক্ষণ ধরে যার কথা বলা হল, সে হল টি-১০৪। রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যানের বাঘ টি-১০৪। এই উগ্র মানসিকতাকে বাগে আনতে না পেরে শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জঙ্গলের চিফ ওয়ার্ডেন। শাস্তিস্বরূপ বাঘকে আজীবন 'খাঁচাবন্দি' রাখার কথা জানান চিফ। একই সঙ্গে তাকে তার পরিচিত এলাকা থেকে সরিয়ে অন্যত্র নির্বাসন দেওয়ার অনুমতিও চাওয়া হয়েছে জাতীয় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের কাছে।
বন মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গত ২০১৯ সালে টি-১০৪কে বন্দি করা হয়। তার আগেই সে পর্যটক-সহ তিনজনকে হত্যা করেছিল। বন্দি করার পরও সে শান্ত হয়নি। রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যানে থাকা বাঘেদের উপর চড়াও হত সে। অনেককে এলাকা থেকে সরিয়েও দিয়েছে। এরপরই রণথম্ভোর থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বাঘটিকে। তাকে আপাতত কম পর্যটক অধ্যূষিত মুকুন্দ্র হিলস ব্যঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের দারা পাহাড়ি এলাকায় খাচাবন্দি করে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, টি-১০৪-কে খাঁচাবন্দি করে যাবজ্জীবনের নির্বাসনে পাঠানো হলে সে হবে রাজ্যের দ্বিতীয় বাঘ। যাকে তার স্বভাবের জন্য অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আজীবন 'খাঁচাদণ্ড' দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।