
কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় বিশেষ আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে জাস্টিস সিনহার বেঞ্চে সিবিআই। সম্প্রতি এই মামলার একটি শুনানিতে বিশেষ সিবিআই আদালতের নির্দেশ ছিল, কলকাতা পুলিশ ও সিবিআইকে যুগ্ম তদন্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে। সিবিআই-এর বক্তব্য, হাইকোর্টের নির্দেশে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার তদন্ত করছে সিবিআই ও ইডি। তাহলে কেন সিবিআই বিশেষ আদালত কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যুগ্ম তদন্তের রিপোর্ট তলব করল? সূত্রের খবর, আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হুগলির বলাগড়ের বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের লেখা একটি চিঠি সমান্তরালভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, তাঁর নাম নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃতদের মুখ থেকে বলানোর চেষ্টা করেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। ঠিক তার পরদিনই কুন্তল ঘোষ দাবি করেন, তাঁর মুখ থেকে অভিষেকের নাম বলানোর জন্য দিচ্ছেন তদন্তকারীরা। এই মর্মে তিনি একটি চিঠি লেখেন। সেই চিঠি সংক্রান্ত একটি মামলায় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও সিবিআইকে যৌথ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল আলিপুর বিশেষ সিবিআই আদালত। সেই শুনানি সিবিআই আদালতে ভর্ৎসিতও হয়। উল্লেখ্য, এর মধ্যে কুন্তলকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেনি সিবিআই।
আলিপুর বিশেষ আদালতের নির্দেশ ছিল, কলকাতা পুলিশ ও সিবিআই যুগ্মভাবে তদন্ত করে রিপোর্ট পেশ করবে। সিবিআই এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার বাজেয়াপ্ত হল কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অয়ন শীলের সম্পত্তি। ইতিমধ্যে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে থাকা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এবার সেই তালিকায় আরও তিনজনের নাম যুক্ত হল। সরকারি তথ্য অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত ১২৬ কোটি ৭০ লাখ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর মধ্যে কুন্তল, শান্তনু এবং অয়নের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৫ কোটি টাকারও বেশি।
জানা গিয়েছে, ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্টে থাকা টাকা, শেয়ারে বিনিয়োগ, জমি, ফ্ল্যাট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বেশ কয়েক মাস ধরেই জেলে বন্দি রয়েছে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত এই তিনজন। তদন্ত এগোলে এমন আরও অনেক সম্পত্তির হদিশ পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন ইডি গোয়েন্দারা।
অন্যদিকে নবম ও দমশ শ্রেণির নিয়োগে চার্জশিট জমা করল ইডি। ওই চার্জশিটে জীবন কৃষ্ণ সাহার নাম রয়েছে। ইতিমধ্যে আলিপুর আদালতে ওই বিশেষ চার্জশিট জমা পড়েছে বলে খবর। ফলে নিয়োগ দুনীতি নিয়ে ইতি মধ্যেই বিশেষ চাপে আছে শাসক দল অর্থাৎ তৃণমূল। এ অবস্থায় কুন্তল, শান্তনু, অয়ন শীলের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। এ ঘটনায় পঞ্চায়েত ভোটে ইতিবাচক সাফল্যের পরেও রীতিমত চিন্তায় আছে তৃণমূল।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নাম বলাতে চাপ। এই অভিযোগ জানিয়ে জেলে বসে চিঠি লেখেন কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh)। রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তলের সেই চিঠি নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। শুক্রবার আদালতে সিবিআই রিপোর্ট জমা দিয়ে দাবি করল, কুন্তলের সেই অভিযোগ ভিত্তিহীন। সিবিআই জানিয়েছে, ওই চিঠির কোনও সারবত্তা নেই।
গত ২৯ মার্চ শহিদ মিনারের সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জেলে থাকার সময় মদন মিত্র, কুনাল ঘোষকে তাঁর নাম নিতে বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এরপরই কুন্তল ঘোষ দাবি করেন, তাঁকে চাপ দিচ্ছে ইডি ও সিবিআই নিম্ন আদালতে চিঠিও দেন তিনি। কলকাতার হেস্টিংস থানাতেও অভিযোগ জানান। শুক্রবার আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, কুন্তলের অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই।
কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) চিঠি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) ধাক্কা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee)। 'সুপ্রিম' রক্ষাকবচ পেলেন না তৃণমূল সাংসদ। সিবিআইয়ের মতো ইডিও জেরা করতে পারবে অভিষেককে। সোমবার মামলার শুনানিতে এমনই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপই করতে চাইল না শীর্ষ আদালত।
কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় হাইকোর্ট অভিষেককে জেরার যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন অভিষেক। এদিন সেই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, হাই কোর্টের একক বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছিল তাতে হস্তক্ষেপ করলে তদন্তে বাধা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আদালত এ ব্যাপারে নাক গলাবে না। তবে, অভিষেককে যে ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল, তা তৃণমূল নেতাকে দিতে হবে না বলে জানিয়েছে আদালত। এদিকে, অভিষেক-রুজিরার বিদেশ যাত্রার অনুমতির মামলা শোনেনি সুপ্রিম কোর্ট। পরবর্তী শুনানির দিন জানিয়ে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, কুন্তল ঘোষ চিঠি সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, ইডি এবং সিবিআই চাইলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় মামলা। ওই মামলা সরিয়ে দেওয়া হয় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে। তারপর সেই মামলা আবার হাইকোর্টেই ফিরে আসে। বদলে যায় বিচারপতির এজলাস।
মামলাটি যায় বিচারপতি অমৃতা সিংহের বেঞ্চে। তবে তাতেও সুরাহা হয়নি অভিষেকের। ইডি এবং সিবিআইয়ের জেরার হাত থেকে কোনওরকম রক্ষাকবচ পাননি। উল্টে জরিমানা করা হয় অভিষেক ও কুন্তলকে। পরে ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান অভিষেক। শীর্ষ আদালতে জরিমানার উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। কিন্তু, আদালত জানিয়েছিল, অভিষেককে জেরা করতে পারবে সিবিআই। এবার ইডি-কেও অভিষেককে জেরার ছাড়পত্র দিল সুপ্রিম কোর্ট।
এসএসসি (SSC) কাণ্ডে অভিযুক্ত বহিষ্কৃত তৃণমূল (TMC) নেতা কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) চিঠি সংক্রান্ত মামলায় সিবিআইয়ের (CBI) জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়লেন প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার। শুক্রবার সকালেই নিজাম প্যালেসে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি।
কলকাতা পুলিস এবং নিম্ন আদালতের বিচারকের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন কুন্তল ঘোষ। সেখানে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এবং সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন। এমনকী ওই চিঠি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে তদন্তকারী সংস্থা।
এবার ওই চিঠি প্রসঙ্গে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারকেও ডেকে পাঠাল সিবিআই। ইতিমধ্যে, সে বিষয়েই শুরু হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ।
সুজয়কৃষ্ণকে নিয়ে আদালতে বিস্ফোরক দাবি ইডির (ED)। সূত্রের খবর, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’ কুন্তল ঘোষের কাছ থেকে মোটা টাকা নিয়েছেন। সেই টাকার পরিমাণ ছিল ৭০ লক্ষ টাকা। সুজয় শুধু একাই টাকা নেননি, তিনি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও টাকা দিতে বলেছিলেন।
আদালতে ইডির তরফে দাবি করা হয়, গত ১ ফেব্রুয়ারি এবং ২ ফেব্রুয়ারি আর্থিক তছরুপ নিয়ন্ত্রক আইনের ৫০ নম্বর ধারা অনুসারে কুন্তলের যে বয়ান নথিবদ্ধ করা হয়, তাতে তিনি জানান, ২০১৪ সালের টেট প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনার জন্য তিনি ‘কালীঘাটের কাকু’র সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কয়েক জন চাকরিপ্রার্থীকে বেআইনি ভাবে টেট পাশ করিয়ে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ করাতে চেয়েছিলেন কুন্তল। সুজয় তখন কুন্তলকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, পার্থের সঙ্গে কথা বললেই তাঁর কাজ হয়ে যাবে। এই সময়ে কুন্তল ৭০ লক্ষ টাকা দেন সুজয়কে। সুজয়ের কথাতেই তিনি পার্থকে দেন আরও ১০ লক্ষ টাকা। যদিও ইডি জানিয়েছে, ৩০ মে ‘কালীঘাটের কাকু’ তাদের প্রশ্নের মুখে এই লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অপর ধৃত তাপস মণ্ডলও ‘কালীঘাটের কাকু’র সঙ্গে বেআইনি নিয়োগ সংক্রান্ত যোগাযোগের কথা ইডিকে জানিয়েছিলেন। গত বছর নভেম্বরে তাপসের বয়ান অনুযায়ী, ৩২৩ জন টেট প্রার্থীর তালিকা সুজয়কে পাঠানো হয়েছিল। তাঁর কাছ থেকে সেই তালিকা পাঠানো হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের কাছে। ইডি আদালতে এ-ও জানিয়েছে যে, সুজয় তাঁর বয়ানে দাবি করেছেন, তিনি মানিককে ২০২১ সালের আগে চিনতেন না। মানিকের সঙ্গে তাঁর কোনও রকম যোগাযোগ আগে ছিল না। কিন্তু তদন্তে ইডির হাতে আসা তথ্য অন্য কথা বলছে। মানিকের হোয়াটস্অ্যাপ কথোপকথন ঘেঁটে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা দেখেছেন, তাঁর সঙ্গে সুজয়ের যোগাযোগ রয়েছে অন্তত ২০১৮ সাল থেকে। ওই সময় থেকেই মানিককে বহু টেট প্রার্থীর নথি সুজয় পাঠিয়েছিলেন। পাঠানো হয়েছিল মার্কশিট এবং অ্যাডমিট কার্ডও। অর্থাৎ, সুজয় তথ্য গোপন করতে চাইছেন, সত্যি কথা বলছেন না, দাবি ইডির।
ইডির বিরুদ্ধে অসত্য বলা ও তদন্তকে ভুলপথে চালিত করার অভিযোগ তুললেন কুন্তল ঘোষ। শুক্রবার আদালতে পেশ করা হয় কুন্তল ঘোষকে। কালীঘাটের কাকু-র গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। কুন্তল জানান, "ইডি মিথ্যা কথা বলছে।" ইডিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে কুন্তল জানান, ইডির ক্ষমতা থাকলে তাঁর বক্তব্য নিয়ে আদালতে পেশ করা হোক।
শুক্রবার নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে মামলায় আলিপুরের বিশেষ আদালতে পেশ করা হবে কুন্তল ও তাপসদের। শুক্রবার আদালতে ঢোকার আগে তাপস মণ্ডল বলেন, "যা বলার কুন্তল বলবে।" তাপস মণ্ডলই প্রথম কালীঘাটের কাকুর কথা সামনে আনেন। নাম উঠে আসে গোপাল দলপতিরও।
ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত তাপস 'কালীঘাটের কাকু' সঙ্গে বেআইনি নিয়োগ সংক্রান্ত যোগাযোগের কথা তদন্তকারীদের জানিয়েছেন।
অভিষেক (Abhishek Banerjee) ও কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) বিতর্কে এবার ভোল বদল কুন্তলের। কুন্তলের দাবি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘ব্যক্তিগত পরিচয়’ নেই তাঁর। সিবিআই (CBI) সূত্রে খবর, জেরায় এমনটাই দাবি করেছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুব নেতা। গত শনিবার অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। তার ৩ দিন পর বুধবার প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে কুন্তলকে জেরা করেছে সিবিআই। সেই জেরাতেই অভিষেকের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপ না থাকার কথা কুন্তল জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
সিবিআইয়ের জেরাতে অভিষেকের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপ না থাকার কথা কুন্তল জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। গত শনিবার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিষেকও দাবি করেছিলেন যে, তিনি কুন্তলকে চেনেন না।
রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছে কুন্তল। বর্তমানে তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি। জেলবন্দি থাকার সময় অভিষেকের নাম জড়িয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন কুন্তল। ধর্মতলায় শহিদ মিনারের সভা থেকে অভিষেক দাবি করেছিলেন, হেফাজতে থাকার সময় মদন মিত্র, কুণাল ঘোষকে তাঁর নাম নিতে বলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পর পরেই কুন্তল দাবি করেন যে, অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁকে ‘চাপ’ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পরে ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে নিম্ন আদালতে চিঠি দেন বহিষ্কৃত ওই তৃণমূল নেতা। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়েও চিঠি পাঠান হেস্টিংস থানাতে। তার পর কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, প্রয়োজনে সিবিআই বা ইডি অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। বিচারপতি অমৃতা সিন্হাও সেই পর্যবেক্ষণে সম্মতি দেন।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee)। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুব নেতা কুন্তলকে জেরা করেছে সিবিআই। তারপরেই অভিষেক এবং কুন্তলকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার ইঙ্গিত মিলেছে। সিবিআই সূত্রে খবর, অভিষেককে জড়িয়ে কুন্তলের চিঠি এবং কুন্তলকে চেনেন না বলে অভিষেকের দাবির ব্যাপারে সত্য জানতেই দু'জনকে মুখোমুখি বসানো হতে পারে।
কুন্তলের বুধবারের বয়ান খতিয়ে দেখে তাঁকে আবার হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কুন্তলকে হেফাজতে পেলে ফের ডাকা হতে পারে অভিষেককে। অভিষেককে জেরা করার বিষয়ে এখনও পর্যন্ত হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্ট কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি।
শনিবার অভিষেককে প্রায় সাড়ে ন'ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। এর আগে গত ৩১ মার্চ আলিপুরের বিশেষ আদালতের বিচারক এবং কলকাতা পুলিসের হেস্টিংস থানায় চিঠি দিয়ে কুন্তল দাবি করেছিলেন, সিবিআই এবং ইডি তাঁকে চাপ দিয়ে অভিষেকের নাম বলিয়ে নিতে চেষ্টা করছে। এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অভিষককে। কুন্তল ছাড়াও তৃণমূলের যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে।
জেল থেকেই আদালতে চিঠি দিয়েছিলেন কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh)। তা নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছিল। একটা চিঠির জেরেই মামলা হয়েছে হাইকোর্টে (High Court), মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টেও। সিবিআই-এর (CBI) জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে। সেই চিঠি নিয়ে প্রশ্ন করতেই এবার জেলে পৌঁছে গেল সিবিআই। বুধবার বিকেলে সিবিআই-এর দুই অফিসার পৌঁছেছেন প্রেসিডেন্সি জেলে। জেলের অন্দরে একটি ঘরেই কুন্তলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। সিবিআই-এর ডিএসপি ও ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার দুই অফিসার গিয়েছেন কুন্তলকে প্রশ্ন করতে। ওই চিঠিতে কুন্তল ঘোষ অভিযোগ করেছিলেন, জেলে তাঁকে অভিষেকের নাম বলতে চাপ দিচ্ছেন তদন্তকারীরা।
উল্লেখ্য, শহিদ মিনারে সভা করতে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, সারদা-কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার সময় মদন মিত্র, কুণাল ঘোষদের নাকি তাঁর নাম বলতে চাপ দেওয়া হয়েছিল। ওই ঘটনার পরই কুন্তল ঘোষও সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করেন, তাঁকে অভিষেকের নাম বলতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। একজন রাজ্যের শাসক দলের সাংসদ, অন্যজন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত। তাঁদের বয়ান মিলল কীভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেই হাইকোর্ট অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা বলেছিল।
বেঞ্চ বদল হলেও একই নির্দেশ বহাল থাকে। গত শনিবারই ওই মামলায় অভিষেককে সাড়ে ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। এবার সেই একই ইস্যুতে প্রশ্নের মুখোমুখি কুন্তল। কেন চিঠিতে অভিষেকের নাম নিলেন? অভিষেকের সঙ্গে বয়ানে মিল কীভাবে? এই সব প্রশ্ন নিয়েই কুন্তল ঘোষের কাছে গিয়েছে সিবিআই।
অভিষেক ও কুন্তলকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না ওয়াকিবহাল মহল। দুজনের বয়ানে যদি কোনও অসঙ্গতি পাওয়া যায়, তাহলে মুখোমুখি বসাতে পারেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। অভিষেক অবশ্য ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, তিনি কুন্তল ঘোষকে চেনেন না, কোনওদিন দেখেননি।
সাড়ে ৯ ঘণ্টার সিবিআই (CBI) জিজ্ঞাসাবাদের নির্যাস শূন্য। শনিবার রাতে নিজ়াম প্যালেস থেকে বেরিয়ে এ কথাই বলতে শোনা গিয়েছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee)। একহাত নিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। তবে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে এখনই ক্ষান্ত হতে চাইছে না সিবিআই। সূত্রের খবর, শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) চিঠি প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্ন করা হলেও এসএসসি দুর্নীতিতে উঠে আসা আরও বেশ কয়েকজনের নাম সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয় অভিষেকের কাছে। অভিষেকের পুরো বয়ানই রেকর্ড করেছেন তদন্তকারীরা। আগামীতে তাঁর সমস্ত কথাই পুনরায় খতিয়ে দেখা হবে।
সূত্রের খবর, চিঠি প্রসঙ্গে জেলে গিয়ে কুন্তলকে জেরা করবেন তদন্তকারীরা। মিলিয়ে দেখা হবে দু'জনের বয়ান। কিন্তু ঘটনার সূত্রপাত কোথায়? এর জন্য ফিরে যেতে হবে মার্চ মাসে। গত ২৯ মার্চ কলকাতার শহিদ মিনারে তৃণমূলের যুব সমাবেশে বক্তব্য রাখতে উঠে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'যবে থেকে সারদা হয়েছিল আক্রমণ ছিল আমার দিকে। মদন মিত্র, কুণাল ঘোষ দীর্ঘদিন কাস্টডিতে ছিলেন। কী বলেছে জানেন এদের? অভিষেকের নাম নাও ছেড়ে দেব। সারদা থেকে শুরু করে নারদা। তারপর হল গরু, কয়লা, এসএসসি। আমার যদি কোথাও যোগসাজশ থাকে, প্রমাণ করতে পারেন আমি যুক্ত, আমার পিছনে ইডি-সিবিআই লাগাতে হবে না। সারদা, নারদা, টেট, এসএসসি, কয়লা, গরু হোক এই শহিদ মিনারের মঞ্চে আমি মৃত্যুবরণ করব। কথা দিয়ে গেলাম।
ঠিক এর পরপরই আদালতে তোলার সময় তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত কুন্তল ঘোষ বলেছিলেন, 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর জন্য চেষ্টা করছে। কে চেষ্টা করছে বলব না। চিঠি আকারে মহামান্য আদালতকে সবটা জানিয়েছি।' সেই চিঠি নিয়েই এত জলঘোলা। এই চিঠি সংক্রান্ত বিষয়ে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে ইডি-সিবিআই। নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পরবর্তীতে সেই মামলা সরে যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে। তিনিও অভিষেকের আইনজীবীকে তদন্তে সহযোগিতা করার কথা বলেছিলেন বিচারপতি সিনহা।
মনি ভট্টাচার্য: দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ, পাল্টা অভিষেকের (Abhishek Banerjee) হুঙ্কার, পাশাপাশি আইনি সাহায্য নিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের (Central Agency) মোকাবিলার চেষ্টা। কুন্তলের (Kuntal Ghosh) চিঠি সংক্রান্ত মামলায়, সিবিআই বনাম অভিষেকের সিনেমায় অভিষেক কি নায়ক হয়ে গেল! যদিও দীর্ঘ সাড়ে ৯ ঘন্টা পর নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে মমতার পথে হেঁটে বিজেপিকেই টার্গেট করেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।
কিন্তু অভিষেক নায়ক কিভাবে! গত তিনবছর আগে ইডির জিজ্ঞাসাবাদ থেকে বেরিয়ে অভিষেক একই রকম ভাবে বিজেপিকে নিশানা করেছিলেন। শনিবারও ঠিক তেমনই লাগল অভিষেককে। অভিষেক নিজেই স্পষ্ট করলেন তাঁকে কেন ডাকা হয়েছিল। কুন্তল ঘোষের চিঠিতে তাঁর নাম থাকায় তাঁকে ডাকা হয়। তিনি বেরিয়েই বললেন,'যারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তাঁদেরও সময় নষ্ট, আর আমারও সময় নষ্ট।' কিন্তু কেবল কোনও অভিযুক্তের চিঠিতে তাঁর নাম পেলেই তাঁকে ডাকা হবে কেন! অভিষেক কিন্তু এখানেই বিঁধলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের।
অভিষেককে মূলত রমেশ নন্দী বনাম পশ্চিমবঙ্গের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তলব করেছিল সিবিআই। যে মামলাটি গত বছর মে মাসে ৯ তারিখে দায়ের করা হয়। ওই মামলাটিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ৩৪ ধারা সহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৭,৭এ ও ৮ নম্বর ধারা রয়েছে। আইনজীবীদের মতে চাকরির প্রতারণা, জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত দুর্নীতি হলেই এই ধারা গুলি প্রযোজ্য। এই মামলায় ১৬০ সিআরপিসি অনুযায়ী অভিষেককে সামান্য জিজ্ঞাসাবাদ করতে ডাকা হয়েছে। সিবিআইয়ের তলবে এক রাতেই হাজিরা দিয়েছেন অভিষেক। যদিও এই মামলায় অভিষেককে তলব করার মধ্যে তেমন কিছুই কিন্তু দেখছে না আইনজীবী মহল। বরং আইনজীবী মহল মনে করছেন এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতেই পারে, সেটা অতি ক্ষুদ্র বিষয়।
তবে প্রশ্ন উঠছে অভিষেক কেন জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের ভিত্তিতে বারবার আদালতে ছুটছেন। সামান্য জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই। তাতে বারবার আদালতের দ্বারস্থ হবার কি দরকার ছিল? যদিও বিজেপি এটাকে ভয় হিসেবেই দাবি করেছেন। কিন্তু একজন সাধারন মানুষ হিসেবে অভিষেক কিন্তু বারবার বলেছে,'আমি এই মামলায় কোনও ভাবেই নেই, এই মামলার ত্রিসীমানায় নেই। তবে আমাকে কেন ডাকা হবে।' যদিও সিবিআইয়ের জেরা থেকে বেরিয়ে অভিষেক বিজেপিকে দুষে বলেন,'সারদায় সুদীপ্ত সেন তো অধীর, শুভেন্দু, সুজন বাবুদের নাম লিখেছিল চিঠিতে, তাঁদের ডাকা হয়েছে? আমাকে ডাকা হলো কারণ আমি বিজেপির কাছে বশ্যতা স্বীকার করি নি।' একদিকে অভিষেক সিবিআইকে তদন্তে সাহায্য করলেন, অন্যদিকে আইনি পথে জাস্টিস গাঙ্গুলি সহ সিবিআইকে মোকাবিলা করার চেষ্টা করলেন। মোটের উপর সিবিআইয়ের জেরা সেরে বেরিয়ে এসে অভিষেক যে আপাতত নায়ক সেটা কিন্তু রাজনৈতিক মহলের দাবি।
প্রথমত, অভিষেক জেরা শেষে বেরিয়ে এসেই বলেছে, 'পারলে সিবিআই আমাকে অ্যারেস্ট করুক।' যেমন টা তিন বছর আগে বলেছিলেন। এই বক্তব্যটুকু বর্তমানে চলা সমস্ত বিতর্কে জল ঢালার জন্য যথেষ্ট। ঠিক তেমনই এই মন্তব্য অভিষেক অনুগামীদের বাড়তি অনেকটা অক্সিজেন দেবে সেটা সবারই জানা।
দ্বিতীয়ত, 'নবজোয়ার'। নবজোয়ার নিয়ে একটু হলেও অস্বস্তিতে ছিল তৃণমূল। কারণ সিংহভাগ জায়গাতেই অভিষেক বেরিয়ে যাওয়ার পর ব্যালট নিয়ে মারপিট, ও বিশৃঙ্খলা হয়েছে, যা অভিষেকের অপছন্দ ছিল। সেকারণে অভিষেক মেজাজও হারিয়েছেন বেশ কিছু বার। কিন্তু ঘটনাচক্রে অভিষেকের এই সিবিআই হাজিরা বাড়তি প্রাণ দেবে নবজোয়ারে। সেজন্যই বোধহয় বিজেপিকে দুষলেন এবং বললেন, 'নবজোয়ারের উন্মাদনা দেখেই, চক্রান্ত করে এই যাত্রা বন্ধ করার চেষ্টা করছে বিজেপি।' ফলে এখানেই নবজোয়ারের বাড়তি অক্সিজেন জোগানের কাজ সেরে রাখলেন অভিষেক।
গোটা ঘটনার ফলশ্রুতি হিসেবে শনিবার রাতে অভিষেকের হুঙ্কার যে গরুপাচার, কয়লাপাচার, শিক্ষা দুর্নীতিতে অস্বস্তিতে থাকা তৃণমূলকে অনেকটা পুনর্জীবিত করবে সেটা যেমন ঠিক। তেমনই সিবিআই, জাস্টিস গাঙ্গুলি, জাস্টিস সিনহা ও বিরোধীদের প্লটে আপাতত অভিষেক যে নায়ক সেটা কিন্তু স্পষ্ট।
সুপ্রিম কোর্টে গেলেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। রমেশ নন্দী বনাম পশ্চিমবঙ্গের মামলায় একদিকে যখন সিবিআইয়ের হাজিরার নির্দেশ রয়েছে অন্যদিকে তখন সুপ্রিম করতে দ্বারস্থ অভিষেকের আইনজীবীরা। সে কথা ঠিঠি দিয়ে জানালেন সিবিআইকেও।
কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য, আজ অর্থাৎ শনিবার সিবিআই কলকতার দফতরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে। সূত্রের খবর, বেলা ১১ টার কিছুক্ষনেই মধ্যেই নিজাম প্যালেসে হাজির হবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআই হাজিরার জন্য তিনি শুক্রবার রাতেই কলকাতা এসেছিলেন বলে খবর। সূত্রের খবর এখন গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে কলকাতা নিজাম প্যালেস চত্বর।
সিবিআই সূত্রে খবর, তাঁদের একটি স্পেশাল টিম গঠন করা হয়েছে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। ওই টিমে একজন এসপি, ডিএসপি, ও ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসাররা থাকেবন। গতকালই সিবিআই তলবের পর বিজেপিকে টার্গেট করেছেন মমতা ও অভিষেক দুজনেই। শুক্রবার সোনামুখীর সভা থেকে অভিষেক টার্গেট করেন বিজেপিকে। এর আগে অবশ্য কয়লা পাচার কাণ্ডে অভিষেককে ৯ ঘন্টা জেরা করেছিল ইডি।
কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) চিঠি সংক্রান্ত মামলায় অভিষেককে (Abhishek Banerjee) নোটিশ সিবিআই-এর (CBI)। সূত্রের খবর, আগামীকাল অর্থাৎ শনিবার বেলা ১১ টার মধ্যে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে সিবিআই অফিসে হাজিরার নির্দেশ। সূত্রের খবর, আজ রাতেই নবজোয়ার সভা শেষ করে কলকাতায় ফিরছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হাজিরা সেরে তিনি ফের ২২শে মে সোনামুখী নবজোয়ার যাত্রায় যুক্ত হবেন।
কুন্তল ঘোষের চিন্তি সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ইডি-সিবিআইকে কুন্তল ও অভিষেককে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দিয়েছিল। এই রায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় অভিষেক। তখন অবশ্য এই রায়ের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ঘটনাক্রমে অভিষেকের অভিযোগে উপরোক্ত এই মামলারই বিচারপতি বদল হয়। বিচারপতি বদল হলেও নির্দেশ বদল হয় নি। অমৃতা সিনহা অবশ্য এই মামলায় জাস্টিস গাঙ্গুলির রায় বহাল রাখেন। অভিষেক ও কুন্তল দুজনেই এই মামলায় অমৃতা সিনহার রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চে গেলেও। ডিভিশন বেঞ্চ ওই মামলা শুনতে চায় নি।
যদিও অভিষেক বন্দোপাধ্যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার রায় শুনে বিচারপতিকে ধন্যবাদ জানান, সন্মান জানান, এবং বলেন, 'কেন্দ্রীয় সংস্থা দরকার নেই। এক হাতে প্রমান আনুন, অন্য হাতে ফাঁসির মঞ্চ।' যদিও তিনি বলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ডাকলে যাবো, কিন্তু আমাকে এই মামলায় জোর করে ঢোকানো হয়েছে, এই মামলার ত্রিসামানায় আমি নেই। কেন আমাকে এই মামলায় ঢোকানো হলো এর জন্য আদালতে গিয়েছিলাম। এখনও সুপ্রিম কোর্টের দরজা খোলা আছে।
হাইকোর্টের ফের ধাক্কা অভিষেকের (Abhishek Banerjee)। কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) চিঠি সংক্রান্ত মামলায় অভিষেকের আর্জিতে সাড়া দিলো না হাইকোর্টের (High Court) ডিভিশন বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে অমৃতা সিনহার সিঙ্গল বেঞ্চে বহাল থাকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়। কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিল ইডি-সিবিআই চাইলে এই মামলায় অভিষেক ও কুন্তলকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে পারবে। এরপর এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। বদল হয় সংশ্লিষ্ট মামলার বিচারপতির। বিচারপতি বদলে মামলা যায় জাস্টিস অমৃতার সিনহার এজলাসে।
যদিও এই মামলায় জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়ের রায় বহাল রাখে অমৃতা সিনহা। ওই একই মামলায় কুন্তল ও অভিষেককে ২৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করে জাস্টিস সিনহা। এবার এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায় অভিষেক ও কুন্তল দুজনেই। কিন্তু তাঁদের আবেদনের এই আর্জি শুনতে রাজি নয় ডিভিশন বেঞ্চ। ডিভিশন বেঞ্চের তরফে সুব্রত তালুকদার ও সুপ্রতিম ভট্টাচার্য্যের বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়। গ্রীষ্মের ছুটির আগে এই মামলা শোনা সম্ভব হবে না। গ্রীষ্মের ছুটির আগে এই শুক্রবার শেষ কোর্ট খোলা থাকবে। বিচারপতিরা বলেন, 'আমাদের অনেক কাজ, অনেক মামলার রায় দেওয়া বাকি আছে। এখন এই মামলা শোনা সম্ভব হবে না।
সূত্রের খবর, বিচারপতি সুব্রত তালুকদার বলেন, 'আমি আনঅফিসিয়ালি বলছি আপনি চাইলে অবসরকালীন বেঞ্চে যেতে পারেন।' যদিও এই মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছিল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম।