
পরিচালক মৃণাল সেনের (Mrinal Sen) খারিজ (Kharij) মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮২ সালে। সিনেমার প্রেক্ষাপট ছিল বাড়ির পরিচারক, 'পালান'-এর রহস্যমৃত্যু। সেই ছবিটিকেই এবার বর্তমান সময়ে তুলে এনেছেন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। মৃণাল সেনকে শ্রদ্ধা জানাতেই কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিচালনায় মুক্তি পেতে চলেছে 'পালান' (Palan)। সিনেমার ট্রেলার দেখেই অনেকে ফিরে গিয়েছেন সেই খারিজের সময়ে। কারণ এইবার গল্প এগিয়ে নিয়ে যাবেন, মৃণাল সেনের সেই ছবির বাড়ির মালিক দম্পতি, অঞ্জন দত্ত এবং মমতা শংকর।
খারিজের সময়ের বাড়ির মালিক দম্পতির বয়স হয়েছে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবিতে। এই বয়সে এসেও আবারও পুরোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে তাঁদের জীবনে। সেই কবে বাড়ির পরিচারক তাঁদের বাড়িতে, ভেন্টিলেশনের অভাবে দমবন্ধ হয়ে মারা গিয়েছিল, এই সিনেমায় আবারও পরিচারিকার মৃত্যু দেখতে হবে বৃদ্ধ দম্পতিকে। তাঁদের এত বছরের বাড়িটিকেই আবার দায়ী করা হবে সেই মৃত্যুর জন্য। বাড়িটি বিপজ্জনক বলে, সেটিকে খালি করে দিতে বলা হবে। মহা সংকটে পড়বেন তাঁরা।
এদিকে বাড়ি ছেড়ে যাবেন কোথায়? দম্পতির ছেলে (যীশু সেনগুপ্ত) স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে আলাদা থাকেন। সেও মা বাবাকে বিপজ্জনক বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে চায়, কিন্তু তাঁর দুশ্চিন্তা মা বাবাকে রাখবেন কোথায়? ট্রেলারে কৌশিক গাঙ্গুলির প্রত্যাশিত বাক্যবাণ শোনা গিয়েছে, 'আধুনিক-নিউক্লিয়ার ফ্যামিলির জন্য তৈরী তো, বাবা-মায়ের জন্য কোনও আলাদা লে আউট নেই।' পরিচালক বোঝাতে চেয়েছেন, সময় বদলালেও পরিস্থিতি বদলায় না।
মৃণাল সেনের ছবির প্রেক্ষাপট বর্তমান সময়ে তুলে আনা বেশ চ্যালেঞ্জিং। তবে পারিবারিক সিনেমা বানাতে একেবারে সিদ্ধহস্ত কৌশিক গাঙ্গুলি। সিনেমার ট্রেলার দেখে পরিচালকের প্রতি সেই বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়। তিনি কতটা মুনশিয়ানা দেখতে পারলেন, তা ২২ সেপ্টেম্বর সিনেমাটি মুক্তি পেলেই বোঝা যাবে।
কিছুদিন আগেই বাংলার সিনেমাহলে সফলভাবে মুক্তি পেয়েছে কৌশিক গাঙ্গুলি (Koushik Ganguly) পরিচালিত ছবি 'অর্ধাঙ্গিনী'। দর্শকদের থেকে প্রশংসা কুড়োনোর পর নতুন ছবি 'অসুখ-বিসুখ' পরিচালনার ব্যাটন ধরেছিলেন কৌশিক গাঙ্গুলি। কিন্তু শুরুতেই বিপত্তি। ছবি থেকে সরে দাঁড়ালেন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রাভিনেতা অঞ্জন দত্ত (Anjan Dutt)। শুরুতে খানিকটা বিড়ম্বনায় পড়লেও দুঁদে পরিচালকের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশেষ সময় লাগেনি। ইতিমধ্যেই অঞ্জন দত্তর পরিবর্ত ঠিক করে ফেলেছেন কৌশিক।
'অসুখ-বিসুখ' ছবিতে যেটুকু অংশ অঞ্জনের করার কথা ছিল, এবার ততটুকু অংশে অভিনয় করবেন খোদ কৌশিক গাঙ্গুলি। কিন্তু তিনি তো এই ছবিতে অভিনয় করার কথা ভাবেননি। ভেবেছিলেন ক্যামেরার পিছনে থেকে নির্দেশনা দেবেন। তাহলে যেটুকু সময় কৌশিক ক্যামেরার সামনে থাকবেন, ক্যামেরার পিছনে কে থাকবেন? শোনা যাচ্ছে, এতদিন ক্যামেরার সামনে কাজ করলেও এই প্রথম কৌশিক পুত্র উজানের মুখে থাকবে কেবল 'লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন' সংলাপ। অর্থাৎ এবার বাবা মায়ের মতো পর্দায় অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনার দায়িত্ব যাচ্ছে উজানের হাতে।
এই ছবিতে অভিনয় করতে চলেছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, ইশা সাহা, অঙ্কুশ হাজরা। এছাড়াও দেখা যাবে বাঙালি অভিনেত্রী সায়নী গুপ্তকে। বলিউডে একাধিক ছবি করলেও এই প্রথম বাংলা ছবিতে অভিনয় করতে চলেছেন তিনি। সোমবার অর্থাৎ ১২ জুন থেকে শুরু হয়েছে ছবির শ্যুটিং।
আবারও বাংলা সিনেমার পাশে দাঁড়ানোর ডাক দিলেন প্রযোজক রানা সরকার (Rana Sarkar)। এবার পরিচালক কৌশিক গাঙ্গুলির সিনেমা 'অর্ধাঙ্গিনী' (Ardhangini) নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রযোজক। দর্শকের কাছেই সাহায্য চেয়েছেন তিনি। প্রযোজক সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়ে লিখেছেন, 'বাঙালি প্রতিবাদ করুন, রুখে দাঁড়ান। না হলে কৌশিক গাঙ্গুলির সিনেমা 'অর্ধাঙ্গিনী' সিনেমা হল থেকে নামিয়ে দেওয়া হবে। সামনের শুক্রবার বড় বাজেটের বলিউডি ছবি 'আদিপুরুষ' মুক্তি পাচ্ছে। তাই বাংলা সিনেমাকে হল থেকে নামিয়ে দেওয়া হবে।'
পাঠানের সময়ও এমনটাই হয়েছিল বলে দাবি। যদিও এই দাবিকে একেবারে ভুল বলা যায় না। পূর্বে অনেকবার দেখা গিয়েছে, বাংলা সিনেমা যতই ভালো হোক না কেন, বড় বাজেটের হিন্দি সিনেমা এসে বাংলা সিনেমাকে ঢেকে দিয়েছে। শুক্রবার সারা ভারতে মুক্তি পেতে চলেছে 'আদিপুরুষ'। তাঁর আগেই আকাশে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন প্রযোজক।
২ জুন কলকাতার সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে অর্ধাঙ্গিনী। ইতিমধ্যেই বহু দর্শকের প্রশংসা কুড়িয়েছে ছবিটি। কিন্তু ভালোভাবে ব্যবসা করার আগেই সিনেমা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে উদ্বিগ্ন প্রযোজক লিখেছেন বেশ কিছু কথা। এমনকি এই প্রসঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির মানুষদের দিকেও তীর ছুঁড়তে ছাড়েননি তিনি। রানা আরও লিখেছেন, 'আমরা ফিলিম ইন্ডাস্ট্রির লোকেরা খুবই স্বার্থপর, নিজের গায়ে আঁচ না লাগলে মুখ খুলি না, এবারো হয়তো তাই হবে। যার সিনেমা সে ছাড়া হয়তো অন্য কেউ মুখ খুলবে না। কিন্তু বাংলা সিনেমাপ্রেমী মানুষরা কেন চুপ থাকবেন? এই প্রতিবাদ এখন না করলে ভবিষ্যতে ভালো বাংলা সিনেমা দেখা থেকে বঞ্চিত হবেন।' যদিও এখনও এই বিষয়ে মুখ খোলেননি সিনেমার পরিচালক কৌশিক গাঙ্গুলি।
মনি ভট্টাচার্য: নিয়োগ-কাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষের পর এবার অয়ন শীল প্রযোজিত সিনেমা (Bengali Film) রাজ্য রাজনীতির চর্চায়। কুন্তলের মতোই নিয়োগ-কাণ্ডে ইডির হাতে গ্রেফতার অয়ন শীল। জানা গিয়েছে, তাঁর প্রযোজনা সংস্থার ব্যানারে তৈরি ছবির পরিচালক জাতীয় পুরস্কারজয়ী কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় (Kaushik Ganguly)। অয়নের প্রযোজনা সংস্থার ব্যানারে তৈরি কবাড্ডি-কবাড্ডি ছবিতে অভিনয় করেন ঋত্বিক চক্রবর্তী, সোহিনী সরকার এবং অর্জুন চক্রবর্তীর মতো টলিউডের পরিচিত মুখ। এমনকি এই ছবিতে নাকি অভিনয় করেন অয়ন ঘনিষ্ঠ শ্বেতা চক্রবর্তীও। ছবির একটি অনুষ্ঠানে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, ঋত্বিক চক্রবর্তীদের (Rittik Chakraborty) সঙ্গে দেখা গিয়েছে শ্বেতাকেও। এবার শিক্ষা দুর্নীতিতে এই ছবির প্রযোজক অয়নের নাম জড়ানোর পর, তাঁর প্রযোজিত সিনেমা নিয়ে কিছুটা হলেও বিড়ম্বনায় কি টলিউডের উল্লিখিত পরিচিত মুখ?
ইতিমধ্যে সামনে এসেছে অয়নের সংস্থার ব্যানারে হওয়া, কবাড্ডি-কবাড্ডি সিনেমার টাইটেল-লঞ্চের ছবি। এই প্রসঙ্গে সিএন ডিজিটালের তরফে অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তীকে ফোনে ধরা হলে তিনি বলেন, 'শ্বেতা ওই সিনেমায় অভিনয় করেছেন, তাই ওই সিনেমার টাইটেল লঞ্চে একই মঞ্চে সবাইকে দেখা গিয়েছে। এর বেশি শ্বেতার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। প্রযোজকের আয়ের উৎস অবশ্যই জানা উচিত, কিন্তু একজন অভিনেতার পক্ষে সেটা সবসময় জানা হয়ে ওঠে না।'
এই অভিনেতা আরও বলেন, 'সিনেমায় অভিনয় করার পর সাধারণত এধরনের বিতর্ক কোনওভাবেই কাম্য নয়। একটা ছবি করার সময় প্রযোজকের সমস্ত তথ্য, কাগজপত্র একজন অভিনেতার পক্ষে খতিয়ে দেখা হয়ে ওঠে না।'
তবে ইডি যদি তদন্তের স্বার্থে আমাকে ডাকে, তবে নিশ্চয় যাবো। সিএন ডিজিটালের কাছে এই মন্তব্য করেন ঋত্বিক চক্রবর্তী। এদিকে, এদিন এবিষয়ে কথা বলার জন্য পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ওই সিনেমায় অভিনয় করেন অভিনেত্রী সোহিনী সরকার। মঙ্গলবার সোহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, ব্যস্ততার কারণে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে পারেননি অভিনেত্রী।
২০২৩ প্রবাদ প্রতিম চিত্রপরিচালক মৃণাল সেনের (Mrinal Sen birth centenary) জন্মশতবর্ষ। আর বাংলা নিউ ওয়েভ ছবির অন্যতম এই বাহককে শ্রদ্ধা জানাবেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় (kaushik ganguly)। সেই উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার তাঁর পরবর্তী ছবির পোস্টার প্রকাশ্যে আনলেন জাতীয় পুরস্কার বিজেতা এই অভিনেতা। জানা গিয়েছে, ১৯৮২ সালে মৃণাল সেন পরিচালিত খারিজ (movie Kharij) ছবিকেই নতুন মোড়কে রাঙিয়ে 'পালান' ছবি তৈরি করছেন কৌশিক। এই ছবির চিত্রনাট্য, চরিত্র সব এক থাকছে। শুধু বদলে যাচ্ছে সময়।
জানা গিয়েছে, খারিজে যারা অভিনয় করেছিলেন, সেই মমতা শঙ্কর, অঞ্জন দত্ত, শ্রীলা মজুমদার রয়েছেন কৌশিকের ছবিতে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন যীশু সেনগুপ্ত এবং পাওলি দাম।
শতবর্ষে মৃণাল সেনকে এভাবে স্মরণ করতে পেরে যারপরনাই খুশি 'পালান'-এর কলাকুশলীরা। কৌশিকের অবশ্য দাবি, 'মৃণাল বাবুর ছবি দিয়ে তাঁকে সম্মান জানাতে পারব। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে।'
আনিসের রহস্যমৃত্যুতে (Anish khan Mystery Death) ন্যায়বিচার চেয়ে ইতিমধ্যে পথে নেমেছে বাম ছাত্র-যুব সংগঠন। এদিন তারা রাজ্যের একাধিক জেলায় প্রতিবাদ মিছিল বের করেছিল। পাশাপাশি পৃথক প্রতিবাদ মিছিল আয়োজিত হয় আমতা থানার (Amta PS) সামনে। এই উত্তেজনার আবহেই মৃত আনিসের বাবার সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দেন কৌশিক সেন এবং বোলান গঙ্গোপাধ্যায় (Kaushik Sen meets family)।
এদিন বেলার দিকে আনিসের আমতার বাড়িতে যান তাঁরা। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে তাঁরা ছাত্র নেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এমনটাই জানান কৌশিক সেন। আনিসের বাবার সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে কৌশিক সেন বলেন, 'আমরা কোনও দলের হয়ে আসিনি। নাগরিক কর্তব্য পালনে নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে এসেছি। আমাদের মনে হয়েছে আপনাদের পাশে এসে দাঁড়ালে, লেখালেখি, প্রচার করলে প্রশাসন তৎপর হবে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে।'
রবিবারই আবার ছাত্রনেতার রহস্যমৃত্যুতে হাওড়া গ্রামীণ জেলার পুলিস সুপারকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। ভবানী ভবনে তলব করা হয় পুলিস সুপারকে। নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে এদিন পথে নেমেছে বাম ছাত্র-যুব সংগঠন। পুলিসের বাধা পেয়ে এদিন তাঁরা থানার অদূরেই অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। কোনওরকম প্ররোচনায় পা না দিতে আবেদন করেন ছাত্র নেতারা। রবিবার সকালেই মৃত ছাত্র নেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন এসএফআই-ডিওয়াইএফআই-র এক প্রতিনিধি দল। কথা বলেন আনিসের বাবার সঙ্গে। মৃত ছাত্র নেতাকে যোগ্য ন্যায় দিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বাম ছাত্র-যুবরা। এদিন আশ্বাস দেওয়া হয় পরিবারকে।