খলিস্তানপন্থী নেতা অমৃতপাল সিং (Amritpal Singh)-এর সমর্থনে কানাডায় (Canada) ভারতীয় দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ। এই আবহে কানাডা থেকে খুনের (Murder) ঘটনায় গ্রেফতার হলেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত। জানা গিয়েছে, ভ্যাঙ্কুভারে অবস্থিত একটি কফিশপের বাইরে ছুরি মেরে খুন করেন এক কানাডিয়ানকে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ইন্দরদীপ সিং গোসাল, বয়স ৩২ বছর।
সূত্রের খবর, ঘটনার দিন ইন্দরদীপ ভ্যাঙ্কুভারের ওই কফিশপে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন। কথা কাটাকাটি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় তা হাতাহাতিতে পরিণত হয়। তখন ইন্দরদীপ চাকু বার করে বসিয়ে দেন ওই ব্যক্তির শরীরে। পথেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। পুলিস ঘটনাস্থলে এসে ইন্দরদীপকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
সেখানে উপস্থিত পথচলতি মানুষ ঘটনাটি ভিডিও করেন। সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। নেটনাগরিকরা ভিডিও দেখে রীতিমতো আঁতকে ওঠেন। কেন ইন্দরদীপ ওই ব্যক্তির সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়লেন, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিস। প্রাথমিকভাবে পুলিস মনে করছে, দু’জন পূর্ব পরিচিত ছিলেন না। তা হলে কী কারণে ঝগড়া? জবাব খুঁজছে পুলিস। এর সঙ্গে খলিস্তানপন্থী বিক্ষোভের কোনও সম্পর্ক রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিস।
বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তেজনার আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল। এবার পরিস্থিতি একেবারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। সকাল থেকে নানা নাটকীয় ঘটনা। পঞ্জাবে (Punjab) বিচ্ছিন্নতাকামী, খালিস্তানপন্থী নেতা তথা স্বঘোষিত শিখ ধর্মগুরু অমৃতপাল সিংকে (Amritpal Singh) গ্রেফতারির প্রস্তুতি চলছিল সকাল থেকে। এদিনই অমৃতপালের ছয় সহযোগীকে আটক করে পুলিস। মূল মাথা অমৃতপালকে গ্রেফতার (Arrested) করার জন্য রবিবার দুপুর পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা (Close Internet Service) বন্ধ রাখা হয়েছে গোটা পঞ্জাবে। পরিস্থিতি বেগতিক হতে পারে বুঝেই এমন সিদ্ধান্ত। অবশেষে ইঁদুর দৌঁড় দৌঁড়ে গ্রেফতার হলেন শিখ ধর্মগুরু অমৃতপাল সিং।
তাঁকে গ্রেফতার করতে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। পঞ্জাব পুলিসের বিশেষ দল, সাত জেলার পুলিসকর্মী এবং আধা সেনাবাহিনীর সহায়তায় এ অভিযান সফল হয়েছে। পঞ্জাব পুলিস সূত্রে খবর, পুলিসি বেড়াজাল এড়িয়ে জলন্ধরের শাহকোট তেহসিলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন অমৃতপাল। খবর পেয়ে তাঁর পিছনে ধাওয়া করতে থাকে বিশাল পুলিসবাহিনী। শেষমেশ মেহতপুরে এনে ফেলা হয় তাঁকে। গোটা গ্রাম ঘিরে ফেলে পুলিস। বন্ধ করে দেওয়া হয় শাহকোটমুখী সব রাস্তা। এরপরই সব নাটকীয়তার অবসান হয়। গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
ঘটনার সূত্রপাত কোথা থেকে? 'ওয়ারিস পঞ্জাব দে' নামের একটি চরমপন্থী সংগঠনও চালান অমৃতপাল। অভিনেতা তথা সমাজকর্মী দীপ সিধু সংগঠনের সূচনা করেন। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে পথদুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় দীপের। তারপর থেকে অমৃতপালের হাতেই সংগঠনের রাশ। গত কিছুদিন ধরে তিনি পঞ্জাববাসীকে ভুল বার্তা দিয়ে ভুল পথে চালিত করছিলেন বলে অভিযোগ। তাতেই এবার তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার।
এছাড়া, একাধিক ফৌজদারি অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন অমৃতপাল সিং। জি-২০ সম্মেলন শেষ হলেই তাঁকে গ্রেফতার করার পরিকল্পনা ছিল রাজ্য সরকারের। কিন্তু পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তাঁকে গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত নিল পঞ্জাব প্রশাসন।