শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: নববর্ষে বাঙালি নিজের হাতে কাতলা মাছের রেজালা তৈরি করে পরিবারের সবাইকে ও বন্ধুদের খাইয়ে খুশি করতে পারেন। মটন/চিকেন রেজালা তো অনেক খেয়েছেন এবার কাতলা মাছের রেজালা তৈরি করে সবাইকে খাইয়ে ও নিজে খেয়ে দেখতে পারেন। কাতলা মাছের রেজালা তৈরির পদ্ধতি--- একেকটা একশো গ্রাম ওজনের মোট পাঁচটা পাকা কাতলা মাছের খণ্ড (মোট পাঁচশো গ্রাম) জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে জল মুছুন। কাতলা মাছের খণ্ডগুলোর গায়ে এক টেবিল চামচ আদাবাটা, এক টেবিল চামচ রসুনবাটা ও আন্দাজমতো নুন হাতের সাহায্যে ভাল করে মাখিয়ে এক ঘন্টা ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখে দিন। একটি সসপ্যান আঁচে বসিয়ে তার মধ্যে দুটো বড় পেয়াজের কুচি, ৭৫ গ্রাম কাজু বাদাম, এক টেবিল চামচ পোস্ত, দশটা রসুনের কোয়া, দুই টেবিল চামচ আদা কুচি, দুটো কাচালঙ্কা ও আন্দাজমতো জল দিয়ে কিছুক্ষণ সিদ্ধ করে নিন।
সিদ্ধ হয়ে গেলে আঁচ থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা করুন। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে সিদ্ধ করা সমস্ত উপকরণ মিক্সিতে দিয়ে একটি পেস্ট বা মিশ্রন তৈরি করে নিন। মিশ্রনটা আলাদা করে রাখুন। একঘন্টা বাদে ফ্রিজ থেকে বার করে নিন। কড়া আঁচে বসিয়ে তার মধ্যে ভাতের হাতার এক হাতা সাদা তেল ও ভাতের হাতার এক হাতা দেশি ঘি গরম করে ওর মধ্যে একটি একটি করে আদা, রসুন বাটা ও নুন মাখানো কাতলা মাছের খণ্ড দিয়ে উল্টে-পাল্টে দুই পিঠ খুব হাল্কা করে ভেজে তুলে তেল ঝরিয়ে আলাদা করে রাখুন।
সবকটা মাছ তুলে নেওয়ার পরে কড়ার মধ্যের সাদা তেল ও দেশি ঘিয়ের মিশ্রনের মধ্যে দুটো তেজপাতা, দুটো গোটা শুকনো লঙ্কা, একটি বড় দারচিনির স্টিক, ছটা ছোট এলাচ, ছটা লবঙ্গ, এক চা চামচ গোটা কালো গোল মরিচ ফোরন দিন। এবার মিক্সিতে বাটা পেয়াজ, কাজুবাদাম, পোস্ত, আদা, রসুন, কাচালঙ্কা বাটার মিশ্রন বা পেস্টটা দিয়ে সামান্য জল দিয়ে নিভু আঁচে ক্রমাগত নেড়ে মিনিট পাঁচেক কষে নিন। এবার ওর মধ্যে একশো গ্রাম ফেটানো টকদই, হাফ চা চামচ সাদা মরিচের গুঁড়ো দিয়ে খুব ভাল করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার আন্দাজমতো নুন ও এক চা চামচ চিনি দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন।
এবার ওর মধ্যে হালকা ভাজা কাতলা মাছের খণ্ডগুলো দিয়ে সামান্য জল দিয়ে ঢাকনা বন্ধ করে মিনিট ছয়েক রান্না করুন। এরপরে ঢাকনা খুলে হাফ চা চামচ জাফরান তিন টেবিল চামচ দুধে গুলে ওর মধ্যে দিন। এক চা চামচ কেওড়া জল দিয়ে উপর থেকে কয়েকটি গোটা শুকনো লঙ্কা ছড়িয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ রান্না করুন। হয়ে গেলে আঁচ থেকে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন পরোটা, রুটি বা পোলাও সহযোগে।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: বাংলাদেশে রকমারি মাছ ও সব্জির ভর্তা খাওয়ার খুবই প্রচলন আছে। গরম ভাতের সঙ্গে সবজি বা মাছের ভর্তা মেখে খাওয়ার মজাই আলাদা। বাড়িতে খুব সহজেই কাতলা মাছের ভর্তা তৈরি করে পরিবারের সবাইকে খাইয়ে ও নিজে খেয়ে তৃপ্তি পেতে পারেন। কাতলা মাছের ভর্তা তৈরির পদ্ধতি ---একশো গ্রাম ওজনের পাঁচটা কাতলা মাছের খণ্ড (মোট পাঁচশো গ্রাম) জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে আন্দাজমতো নুন ও হলুদ মাখিয়ে নিন। সসপ্যান আঁচে বসিয়ে আন্দাজমতো জল দিয়ে কাতলা মাছের খণ্ডগুলো ওর মধ্যে দিয়ে সিদ্ধ করুন। মাছ সম্পূর্ণ সিদ্ধ হয়ে গেলে আঁচ থেকে নামিয়ে নিন।
মাছের খণ্ডগুলো একটা একটা থালা বা প্লেটের উপর রেখে ঠাণ্ডা করে নিন। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে সিদ্ধ করা কাতলা মাছের খণ্ডগুলোর ছাল ও কাঁটা ছাড়িয়ে নিন। কড়া আঁচে বসিয়ে এক টেবিল চামচ সর্ষের তেল গরম করে দশটা রসুনের কোয়া, দুটো শুকনো লঙ্কা, দুটো কাচা লঙ্কা দিয়ে নেড়ে ভেজে নিন। ভাজা হয়ে গেলে তুলে তেল ঝরিয়ে থালা বা প্লেটের মধ্যে রাখুন। এবার সিদ্ধ করা কাঁটা ও ছাল ছাড়ানো কাতলা মাছের খণ্ডগুলো হাতের সাহায্যে ভেঙে নিন।
এবার ওর মধ্যে একটা বড় পেঁয়াজের স্লাইস, দুই টেবিল চামচ ধনে পাতা কুচি, এক টেবিল চামচ সর্ষের তেল, আন্দাজমতো নুন, ভাজা রসুন, শুকনো লঙ্কা ও কাচা লঙ্কা নিয়ে হাতের সাহায্যে খুব ভাল করে চটকে আলু ভাতে মাখার মতো করে মেখে নিন। কাতলা মাছের ভর্তা তৈরি হয়ে গেল। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
একটি বিরল প্রজাতির মাছ (fish) উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য নদিয়ায় (Nadia)। সাত সকালে এমন মাছ দেখে বেজায় খুশি এলাকাবাসী। জানা যায়, বুধবার সকালে বেথুয়াডহরি মাছ বাজারে নাকাশিপাড়ার এক মাছ ব্যবসায়ী পাটুলি গঙ্গা থেকে একটি বড় জাতের কাতলা মাছ ধরেন। জালে ওঠার পর দেখা যায়, ওই কাতলা (katla) মাছ বিরল প্রজাতির। যার পাখনাগুলি অত্যাধিক বড় এবং রঙিন পাখনা। খবর পেতেই সাতসকালে ওই মাছ দেখতে মানুষের ভিড় জমে যায়।
মৎস্য ব্যবসায়ী দীপঙ্কর রাজবংশী জানান, এদিন সকালে তিনি গঙ্গা থেকে এই মাছটি পান। তবে এই মাছটি তিনি পুনরায় গঙ্গায় ছেড়ে দেবেন। এখনও এই ধরণের এত সুন্দর মাছ জীবিত রয়েছে, যা তিনি মেরে ফেলতে চান না। তিনি মাছটিকে কেটে বিক্রিও করতে চান না। এলাকাবাসীরা একে একে বাজারে এসে ওই মাছটিকে দেখে, ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছে এতেই খুশী তিনি। তাঁর এই নির্লোভ মানসিকতার পরিচয়ে খুশি ক্রেতারাও।