কৌস্তভ বাগচিকে (Kaustabh Bagchi) গ্রেফতারি মামলায় হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বড় ধাক্কা কলকাতা পুলিসের। বটতলা থানায় দায়ের এফআইআর-র (FIR) উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার (Justice Rajasekhar Mantha)। পাশাপাশি কোর্টের নির্দেশ, 'আগামি ৪ সপ্তাহ রাজ্যের কোনও থানা কৌস্তভের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারবে না। লাগবে আদালতের সম্মতি।' বুধবার শুনানিতে প্রাণভয়ের আশঙ্কা করে নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে একটি অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেন বিচারপতি মান্থা।
ব্যারাকপুর কমিশনারেটকে আদালতের নির্দেশ, 'আপাতত কৌস্তভ বাগচির বাড়ির সামনে পাঁচ জন পুলিসের পিকেটিং থাকবে। কৌস্তভ বাড়ির বাইরে বেরোলে একজন সশস্ত্র পুলিস তাঁকে নিরাপত্তা দেবে।' পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্ট সিআরপিএফ-কে এই মামলায় পার্টি হতে নির্দেশ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীকে জানাতে হবে, তাঁরা আদৌ কৌস্তভ বাগচিকে নিরাপত্তা দিতে পারবে কিনা।
এই প্রসঙ্গে কৌস্তভ জানান, 'আমার আশা ছিল ন্যায্য বিচার পাবো। আমার হয়ে অভিজ্ঞ আইনজীবীরা হাইকোর্টে সওয়াল করেন। এই অন্যায়-অত্যাচার যে রাজ্য সরকার করেছে, আমার দৃঢ় বিশ্বাস বটতলা থানার এফআইআর খারিজ হবে কোর্ট নির্দেশে।' এদিনের শুনানিতে আদালতের লিখিত লিখিত পর্যবেক্ষণ, 'রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।' যদিও এই পর্যবেক্ষণ নিয়ে আপত্তি তোলেন সরকারি আইনজীবী। কিন্তু বিচারপতি বক্তব্য প্রত্যাহার করেনি।
তবে হাইকোর্ট জানিয়েছে, বটতলা থানার অতিসক্রিয়তা নিয়ে তদন্তে করে আদালতে রিপোর্ট জমা দেবেন কলকাতার পুলিস কমিশনার। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, 'বটতলা থানার অভিযোগ পাওয়ার পর প্রাথমিক অনুসন্ধান করা উচিত ছিল। এমন কিছু তথ্য-প্রমাণ নেই যার থেকে বোঝা যায় অভিযোগের গুরুত্ব। কোনও নোটিস না পাঠিয়ে গ্রেফতারি নাগরিক অধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে। কোর্ট জানতে আগ্রহী কীসের ভিত্তিতে মাঝরাতে পুলিস তাঁর বাড়ি গিয়েছিল। আর সারারাত থেকে পরের দিন গ্রেফতার করেছে। এই পদক্ষেপ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ-বিরোধী।'
হাইকোর্টের নির্দেশ, 'কেস ডায়রি খতিয়ে দেখে আদালতে রিপোর্ট দেবেন পুলিস কমিশনার।'
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কট-কাণ্ডে (Court Room Boycott) আদালত অবমাননার রুল ইস্যু (Contempt Rule) মামলার শুনানি ৩ বিচারপতির বেঞ্চে (Calcutta High Court)। এই বেঞ্চের অন্যতম দুই সদস্য বিচারপতি ইন্দ্র প্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং টিএস শিবাজ্ঞানানম। এই শুনানিতে বেঞ্চের নির্দেশ, 'হাইকোর্ট চত্বরে কোন মিটিং-মিছিল, পোস্টারিং করা যাবে না। এই নির্দেশ কার্যকর করবেন আদালতের রেজিস্ট্রার জেনারেল। পাশাপাশি কলকাতার পুলিস কমিশনারকে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে বিচারপতি মান্থার বাড়ি এলাকায় পোস্টার মারার ঘটনার তদন্ত কত দূর।'
জানা গিয়েছে, আগামি ২ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি। পাশাপাশি লেক থানা এবং কলকাতা হাইকোর্টের এসিপি-র রিপোর্ট তলব করেছে হাইকোর্ট। এদিন শুনানিতে জানতে চাওয়া হয়েছে, বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কটের ৯ জানুয়ারির ঘটনায় সিসিটিভির ফুটেজ সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে কিনা? এই মর্মে রেজিস্ট্রার জেনারেল জানান, '৯,১০,১১ জানুয়ারির সিসিটিভির ফুটেজ চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে।'
এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি আইপি মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, 'এটা গুরুতর অভিযোগ। যে বা যারা (আইনজীবী) এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁরা মারাত্মক অপরাধ করেছেন।আদালতের কাজে এটা শুধু বাধাদান নয়, বলপূর্বক বিচারব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন।'
বিচারপতি শিবাজ্ঞানানমের প্রশ্ন, 'কে বা কারা বিচারপতির বাড়ির সামনে পোস্টার মেরেছে, তাঁদের চিহ্নিত করা গিয়েছে?' জানা গিয়েছে, ফুটেজ পেন ড্রাইভের মাধ্যমে জমা পড়েছে। এসিপি সেই ফুটেজ জমা দিয়েছে। শুক্রবার হাইকোর্ট স্পষ্ট করেছে, হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে ১১ জন আইনজীবী এবং কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার রুল ইস্যু হবে না? বিচারপতির মান্থার এজলাস বয়কট-কাণ্ডে
তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ মন্তব্য করেছেন, তাঁর থেকেও হলফনামা তলব আদালতে।
পাশাপাশি নির্দেশ, 'সিসিটিভি ফুটেজ এবং স্টিল ছবি সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। লেক থানার পুলিস তদন্তের যাবতীয় রিপোর্ট আদালতে জমা দেবে। নোবেল প্রফেশনকে অবমাননার চেষ্টা করা হয়েছে।'
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার (Justice Mantha) বাড়ির সামনে পোস্টার, তাঁর এজলাসের বাইরে বিক্ষোভ এবং হেনস্থার ঘটনা। এই গোটা কাণ্ডে তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের করার আবেদন হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। মামলা দায়ের করার অনুমতি দিলেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ। মামলাকারীদের আবেদন, সম্পূর্ণ ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত হোক। অথবা, যেকোনও নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হোক তদন্তভার।
এদিকে, বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কট ঘিরে এবার বিভাজন রাজ্য বার কাউন্সিল এবং ভারতীয় বার কাউন্সিলের মধ্যে। ঘটনার পূর্ণ তদন্তের জন্য তিন সদস্যের বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার দল এসেছে কলকাতায়। তারা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের সঙ্গে দেখা করেন। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীদের সঙ্গেও কথা বলার সম্ভাবনা। পাশাপাশি এই প্রতিনিধি দল রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলবে। এই আবহেই রাজ্যের বার কাউন্সিল সোমবার কালা দিবস পালন করছে।
বুকে ব্যাচ পড়ে কালা দিবস পালন করছেন তারা। আজ সাড়ে দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি। অর্থাৎ একদিকে যেমন ঘটনার পূর্ণ তদন্তের জন্য কেন্দ্রীয় বার কাউন্সিলের টিম কলকাতায়, অন্যদিকে কলকাতার বার কাউন্সিল আইনজীবীদের প্রতিবাদের ভাষা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, এই প্রতিবাদে কালা দিবস পালন করছে। রীতিমতো পোস্টার ছাপিয়ে তাঁদের দাবী, আন্দোলনের অধিকার খর্ব করার অপপ্রচারের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার (Justice Rajasekhar Mantha) এজলাস বয়কট এবং পোস্টারিং-কাণ্ডে বড়সড় পদক্ষেপ বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার। (Bar Council of India) তিন সদস্যের এক অনুসন্ধান দল শুক্রবার হাইকোর্ট (Calcutta High Court) আসছেন। তাঁরা খতিয়ে দেখেবন ভিডিও ফুটেজ, বোঝার চেষ্টা করবেন ঠিক কী হয়েছিল এবং কথা বলবেন হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং বার অ্যাসোশিয়েশন অফ কলকাতার সদস্যদের সঙ্গে। জানা গিয়েছে, যারা মান্থার এজলাস বাইরে থেকে বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁরা বার অ্যাসোশিয়েশন অফ কলকাতার সদস্য। কারণ ঘটনার পরের দিন এই বারের একটি অংশ দাবী করেছিল, তাঁরা সাধারণ সভায় এজলাস বয়কট নিয়ে প্রস্তাবনা নিয়েছিল। কিন্তু অপর একটি অংশ এই প্রস্তাবনা বেআইনি বলে দাবী করেছিলেন।
তাই বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার সদস্যরা পুরো বিষয় অনুসন্ধান করে রিপোর্ট জমা দেবেন বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়াকে। সেই মোতাবেক বিক্ষোভকারী আইনজীবীদের প্রতি ব্যবস্থা নিতে পারে বিসিআই বা বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া। এদিকে, এই ঘটনায় ইতিমধ্যে রুল ইস্যু করেছেন বিচারপতি মান্থা। চিঠি লিখে সুপ্রিম কোর্টকে অবগত করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই অবস্থায় বিসিআই সদস্যদের হাইকোর্টে এসে খোঁজখবর নেওয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
এদিকে, শুক্রবারও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে অনুপস্থিত সরকারি আইনজীবীরা। কিন্তু আটকে নেই এজলাসের কাজ।
দরজা বন্ধ করে ১৩ নম্বর (Justice Rajasekhar Mantha) এজলাস বয়কট-কাণ্ডে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার। তৃণমূলপন্থী (TMC) ওই আইনজীবীদের বিক্ষোভ ক্রিমিনাল কন্টেম্পট কিনা, তা ঠিক করবে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এছাড়া এই মামলায় হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বার অ্যাসোশিয়েশন ও অ্যাডভোকেট জেনারেলকে যুক্ত করার নির্দেশ দেন বিচারপতি। এদিকে এদিন আবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কটের ঘটনায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ক্ষমা চান রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল। প্রধান বিচারপতির এজলাসে অ্যাডভোকেট জেনারেল উপস্থিত হয়ে বলেন, 'যা ঘটেছে তাতে আমি লজ্জিত। এটা দুঃখজনক।'
অপরদিকে, আইনজীবীদের একাংশের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কটে বড়সড় সিদ্ধান্ত কলকাতা হাইকোর্টের। এদিন হাইকোর্টের রেজিস্টার জেনারেলকে তলব করে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সবরকম পদক্ষেপ গ্রহণের অধিকার তাঁর হাতে তুলে দিয়েছে আদালত। কোর্টের বাইরে কোনও আইনজীবী যাতে বাধাপ্রাপ্ত না হন, তা নিশ্চিত করবেন রেজিস্টার জেনারেল। এমনটাই আদালত সূত্রে নির্দেশ গিয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তার দায়িত্ব গিয়েছে হাইকোর্ট ওসির ঘাড়ে। ঢেলে সাজানো হবে এজলাসের বাইরে নিরাপত্তা, এমনটাই আদালত সূত্রে খবর।
আইনজীবীদের একাংশের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার (Justice Mantha) এজলাস বয়কট প্রসঙ্গে বড়সড় সিদ্ধান্ত কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। মঙ্গলবার হাইকোর্টের রেজিস্টার জেনারেলকে তলব করে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সবরকম পদক্ষেপ গ্রহণের অধিকার তাঁর হাতে তুলে দিয়েছে আদালত। কোর্টের বাইরে কোন আইনজীবী যাতে বাধাপ্রাপ্ত না হন, তা নিশ্চিত করবেন রেজিস্টার জেনারেল। এমনটাই আদালত সূত্রে নির্দেশ গিয়েছে।
পাশাপাশি যারা মামলা করতে ইচ্ছুক, তাঁদেরকে যদি কোন আইনজীবী বাধা দেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য হাইকোর্টের ১৩ নম্বর এজলাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই এজলাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি চলছে। তাই যে সমস্ত আইনজীবী মামলা করতে ইচ্ছুক, তাঁদের যাতে কোনওভাবেই বাধা দেওয়া না হয়। এটাই নিশ্চিত করবেন রেজিস্টার জেনারেল এবং কলকাতা হাইকোর্টের ওসি। এই নির্দেশ মঙ্গলবার দেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ, 'প্রয়োজনীয় এজলাসের বাইরের নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। যারা আসতে চান না, অসুবিধা নেই। কিন্তু যারা মামলা করতে চান তাদের বাধা দেওয়া যাবে না।'
এদিকে, মঙ্গলবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসের মধ্যেই বাকবিতণ্ডায় জড়ান আইনজীবীরা। পাশাপাশি বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কটের সিদ্ধান্ত ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। বার অ্যাসোসিয়েশনের একটি অংশের দাবি, 'সাধারণ সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তাঁরা বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কট করবে।' অপর অংশের বক্তব্য, 'এই সাধারণ সভায় সভাপতি, সহ-সভাপতি ছিলেন না। তাই সাধারণ সভাই অবৈধ।' দু'পক্ষের বক্তব্যই জানানো হয়েছে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবকে।
তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের (TMC Lawyers) বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কট ঘিরে সকাল থেকেই উত্তেজনা কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। ১৩ নম্বর এজলাসে বাইরে থেকে হুড়কো টেনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তাঁদের অভিযোগ, 'বিচারপতি (Justice Mantha) একনায়ক।' আগাম কোনও ঘোষণা ছাড়া গেট বন্ধ রেখে কিছু আইনজীবী অন্যদের ঢুকতে বাধা দেন বলে অভিযোগ। তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের সঙ্গে বিতণ্ডা বাঁধে বয়কটের বিরোধিতা করে এজলাসে ঢুকতে চাওয়া আইনজীবীদের। সকাল গড়িয়ে বেলা বাড়লেও প্রায় দু'ঘণ্টা চলে এই অচলাবস্থা। এই অবস্থায় ডিভিশন বেঞ্চের শুনানি স্থগিত রেখে বেড়িয়ে যান ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব।
সোমবার তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের অভিযোগ, 'বিচারপতি মান্থা বিজেপির হয়ে কাজ করছেন এবং পক্ষপাতদুষ্ট রায় দিচ্ছেন।' যদিও এই বেনজির ঘটনায় রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল বা এজির উদ্দেশে হুঁশিয়ারির সুরে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, 'আমরা যদি ব্যবস্থা নিই ওরা সামলাতে পারবে তো? আপনি ব্যবস্থা নিন।' জানা গিয়েছে, এই ঘটনার ছবি তুলে পাঠানো হতে পারে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে। সুপারিশ যেতে পারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির স্বতঃ প্রণোদিত ভাবে করতে পারেন আদালত অবমাননার মামলা।
এদিকে শুধু জাস্টিস মান্থার এজলাস বয়কট নয়, হাইকোর্ট-সহ বিচারপতির যোধপুর পার্কের বাড়ি এলাকায় পড়েছে পোস্টার। হাইকোর্ট এবং যোধপুরে পড়া মান্থা-বিরোধী 'শেম' লেখা পোস্টারে বিচারপতির সাম্প্রতিক রায়ের প্রসঙ্গ টেনে সমালোচনা করা হয়েছে।
এবার রাজশেখর মান্থার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতিকে চিঠি বার অ্যাসোসিয়েশনের। সংগঠনের দাবি, শুভেন্দু অধিকারী-সহ বেশ কিছু মামলায় আইন না মেনে স্থগিতাদেশ দিয়ে দিচ্ছেন বিচারপতি মান্থা। তিনি কিছু কিছু মামলার ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব করছেন। অর্থাৎ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর এবার এক শ্রেণীর আইনজীবীদের রোষে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এদিকে, দিন কয়েক আগেই এই বার অ্যাসোসিয়েশনের আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)। তিনি এজলাসে দেরিতে বসেন। এই অভিযোগপত্র বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছিল প্রধান বিচারপতির কাছে। যা ঘিরে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে জানান, যারা এই চিঠি লিখেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার (contempt of court) মামলা করা হবে। তার আগে তাঁদের হলফনামা (affidavit) দিয়ে আদালত জানতে চাইবে এই চিঠিতে সই করার কী কারণ।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই বার্তা পেয়ে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের কাছে আবেদন করেন আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। অরুণাভ ঘোষের দাবি, যত দিন যাচ্ছে বিচারপতি-আইনজীবীদের সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে। এর প্রত্যুত্তরে প্রধান বিচারপতি জানান, আদালতের গরিমা রক্ষার দায়িত্ব বিচারপতি এবং আইনজীবী উভয়েরই।
পাশাপাশি আইনজীবীদের দাবি, কোর্টে সংবাদমাধ্যমের অবাধ বিচরণ বিচারব্যবস্থাকে ক্ষুণ্ণ করছে। কোর্টরুমের প্রসিডিং ভিডিওগ্রাফি করছে সংবাদমাধ্যম। সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করার আবেদনও জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
তাঁদের এই আবেদনও ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব।
সম্প্রতি, ভরা এজলাসে একের পর এক উত্তপ্ত কথোপকথনে জড়িয়ে পড়েন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। সুকন্যা মণ্ডল শুনানিতেও উত্তেজক পরিস্থিতির তৈরি হয়েছিল। এই বাগযু্দ্ধের জেরে আইনজীবীর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত চত্ত্বরে ব্যানারও পড়েছিল। এবার অভিযোগ স্বয়ং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। ঘটনায় দ্বিধাবিভক্ত বিচারব্যবস্থা।