'রকি অউর রানী কি প্রেম কাহানি' সিনেমা মুক্তি পেতেই আলিয়া ও রণবীরের প্রেমকে ছাপিয়ে উঠে এসেছিল আরও একটি প্রেম কাহানি। বর্ষীয়ান অভিনেতা ধর্মেন্দ্র এবং অভিনেত্রী শাবানা আজমীর (Shabana Azmi) প্রেম। সিনেমা হলে গিয়ে দর্শকেরা এক অপূর্ব মুহূর্তের সাক্ষী থেকেছেন। ধর্মেন্দ্র (Dharmendra) এবং শাবানার চুম্বনের দৃশ্য। এই দৃশ্য পর্দায় চলার সময় হল ফেটে পড়েছে দর্শকদের হাততালি ও সিটিতে। অভিনেতা ধর্মেন্দ্র অবশ্য বলেছেন, 'এর থেকেও ভালো হতে পারত।' তবে এই বিষয়ে কী প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন শাবানা আজমীর স্বামী জাভেদ আখতার (Javed Akhtar)?
সম্প্রতি শাবানা চুম্বনের দৃশ্য সম্পর্কে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, 'আমি কোনওদিনও ভাবিনি এত রব তৈরী করব! আমরা যখন চুমু খাচ্ছি তখন দর্শকেরা হেসেছেন, উৎসাহ দিয়েছেন। শ্যুটিং করার সময় এটি কোনও ব্যাপারই ছিল না। তবে এটাও সত্যি যে আমি এর আগে পর্দায় তেমন চুম্বন খাইনি। কিন্তু ধর্মেন্দ্রর মতো সুপুরুষকে কে চুমু খেতে চাইবে না।'
তাঁর চুম্বনের দৃশ্যে কী প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ধর্মেন্দ্র? এই প্রশ্নের উত্তরে শাবানা বলেন, 'ওঁ তো এই বিষয় নিয়ে একেবারেই ভাবিত ছিলেন না। তবে পুরো সিনেমায় আমার দাপুটে অভিনয় তাঁকে ভাবিয়েছে। সারা সিনেমায় আমি হাততালি দিয়েছি, সিটি মেরেছি, উৎসাহ দিয়েছি, চিৎকার করেছি। পর্দার সঙ্গে সে আমাকে বাস্তবে মেলাতেই পারেনি।'
গীতিকার জাভেদ আখতারের (Javed Akhtar) সঙ্গে শাবানা আজমির (Shabana Azmi) বৈবাহিক সম্পর্ক বেশ কয়েক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। একদিকে যখন বলিউডে (Bollywood) সেলেবদের মধ্যে অহরহ সম্পর্কের ভাঙন লক্ষ্য করা যায়, তখন এই জুটি এখনও অটুট। কিন্তু ঠিক কোন সূত্রে নিজেদের বেঁধে রেখে সম্পর্কের এতগুলো বসন্ত পেরোলেন ষাটোর্ধ্ব এই যুগল? সম্প্রতি এই নিয়ে মুখ খুলেছেন শাবানা আজমি। তিনি জানিয়েছেন, জাভেদের সঙ্গে মাঝে-মধ্যেই তাঁর ঝগড়া হলেও দিন শেষে দু'জনের মধ্যে থাকা পারস্পরিক সম্মান ও সম্ভ্রমই এই সম্পর্ককে এখনও টিকিয়ে রেখেছে।
এক সাক্ষাৎকারে শাবানা বলেছেন, 'শুরুর দিকে আমি একেবারেই রোম্যান্টিক ছিলাম না। এখনকার কমবয়সী মেয়েরা বেশ রোম্যান্টিক হলেও আমাদের সময়ে রোম্যান্সের ধারণাটাই ছিল অন্যরকম। আমরা ভাবতাম রোম্যান্স গল্পের বই, পরীদের কাহিনি, বা কার্টুনে যে রকম দেখা যায় তেমন হবে। কিন্তু আমার জন্য গোটা বিষয়টা অন্য রকমের ছিল কারণ আমি আমার বাবা-মায়ের বিয়ে দেখেছিলাম। ওঁদের সম্পর্কের শুরুটা হয়েছিল রোম্যান্স দিয়ে এবং পরবর্তী সময়ে সেটা বন্ধুত্বের রূপ নেয়। তাই আমার মনে হয় বন্ধুত্বটাই আসল। পারস্পরিক সম্মান ছাড়া ভালবাসা সম্ভবত কোনও ভাবেই সম্ভব না।'
জাভেদ আখতার ও তাঁর সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শাবানা আরও যোগ করেন, 'আমার মতে ভালবাসার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশই হল সম্মান। সেই সঙ্গে আমি বিশ্বাস করি যে সঙ্গীকে স্পেস দেওয়া উচিত। ভালবাসার গণ্ডির বাইরে নিজেদের স্পেস থাকাটা ভীষণ জরুরি বলে মনে করি, না হলে দমবন্ধ হওয়ার উপক্রম হতে পারে। কিন্তু যদি কেউ ভালবাসার সম্পর্কে খুশি থাকেন, তাহলে এর থেকে ভাল সম্পর্ক আর কিছু হয় না।'
শাবানার কথায়, 'জাভেদ ও আমার মাঝে-মধ্যে এত ঝগড়া হয় যে ইচ্ছে করে ওকে মেরে ফেলি। কিন্তু দিনের শেষে একজন আরেকজনকে সম্মান করাটাই আসল। বেশিরভাগ জিনিসের ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি একই রকম। আমাদের দুজনেরই বাবা বামপন্থী আদর্শে বিশ্বাসী এবং দুজনেই কবি ও বলিউডের গীতিকার ছিলেন। জাভেদ সবসময়ই বলতে ভালবাসে যে শাবানা ওঁর বেস্ট ফ্রেন্ড। আর আমাদের বন্ধুত্ব এতটাই গভীর যে বিয়েও সেটাকে নষ্ট করতে পারেনি।'
এক অনুষ্ঠানে জাভেদ আখতারকে (Javed Akhtar) নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন কঙ্গনা রানাউত (kangana Ranaut)। সেই বক্তব্যের ভিত্তিতে ২০২০ সালে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা (Defamation Case) করেন বিখ্যাত লেখক তথা সুরকার জাভেদ আখতার। প্রায় আড়াই বছর ধরে সেই মামলা চলছে মুম্বইয়ের আন্ধেরি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে। সেই মামলায় এবার আদালতে ধাক্কা খেলেন কঙ্গনা রানাউত। সাক্ষী হিসেবে বোনকে আদালতে পেশ করতে চেয়েছিলেন অভিনেত্রী, সেই আবেদন শুক্রবার খারিজ করে দিল মহামান্য আদালত।
ইতিমধ্যেই জাভেদ আখতার এই মামলায় দ্রুত শুনানির আবেদন করেন। অন্যদিকে কঙ্গনা রানাউত এই মামলায় তাঁর বোন রঙ্গোলিকে সাক্ষী বানানোর আনবেদন করেন। সেই আবেদন খারিজ করে আদালত। একই সঙ্গে আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে এই মামলায় শুনানির নির্দেশ দেন। আদালত উক্ত দিনে সাক্ষী বক্সে হাজির থাকবে জাভেদ আখতার। তাঁর নিজের মামলা তিনিই শোনাবেন আদালতকে। এরপর কঙ্গনার উকিল তাঁকে পাল্টা জেরা করবেন। অর্থাৎ একদিকে প্রবীণ সুরকার অন্যদিকে অভিনেত্রী সমুখ সমরে দাঁড়াবেন।আদালতে শেষ পর্যন্ত কে সঠিক প্রমাণিত হয়, এখন সেইটাই দেখার।
লাহোরে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিলেন গীতিকার জাভেদ আখতার। একটা সাহিত্য উৎসবে যোগ দিতে এই মুহূর্তে পড়শি দেশের বন্দর শহরে রয়েছেন জাভেদ। সেখানে কথপোকথনের মাঝেই ১৫ বছরের পুরনো মুম্বই হামলার প্রসঙ্গ তুললেন এই প্রবীণ চিত্রনাট্যকার। তিনি বলেন, 'আমরা পাকিস্তানি শিল্পী নুসরত ও অন্যদের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি ভারতে, কিন্তু আপনারা কখনও লতা মঙ্গেশকরের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেননি।' জাভেদের এই বক্তব্যকে সমর্থনে এগিয়ে আসেন উপস্থিত অনেক দর্শক।
২৬/১১ প্রসঙ্গে জাভেদ বলেন, 'মুম্বই হামলার ব্যাপারে সকলেই জানেন। হামলাকারীরা নরওয়ে বা ইজিপ্ট থেকে আসেনি। হামলার পরিকল্পনাকারীরা এখনও আপনাদের দেশে অবাধে ঘুরে বেড়ায়। ভারতীয়রা যদি এ নিয়ে মনে ক্ষোভ পুষে রাখেন, আপনাদের সেটা অনুভব করা উচিত।' এভাবেই পাকিস্তানে দাঁড়িয়ে সে দেশের সমালোচনা করেন জাভেদ আখতার।