
গত ডিসেম্বরে বিষমদ কাণ্ডে তোলপাড় হয়েছিল বিহার। ফের ফিরে এল বিষমদের (Hooch Tragedy) ছায়া। আর এবারও ঘটনাস্থল সেই বিহার। রবিবার বিহারের (Bihar) সিওয়ান জেলার একটি গ্রামে বিষমদ খেয়ে মৃত্যু (Death) হয়েছে কমপক্ষে ৩ জনের। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আরও ১২ জন। পুলিস জানিয়েছে, বিষমদ কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ইতিমধ্যেই ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।
আবারও বিষমদের কারণে মৃত্যুর ঘটনা। যেখানে মদ নিষিদ্ধ বিহারে। ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। মধ্য রাতেই হাসপাতালে যান জেলাশাসক। জানা গিয়েছে, বিষমদ খেয়ে অসহ্য পেটে যন্ত্রণা অনুভব করেন। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিন জনের মৃত্যু হয়। বাকিদের চিকিৎসা চলছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিস। প্রশাসনের তরফে গ্রামে গ্রামে ক্যাম্পের আয়োজন করে বিষমদের বিরুদ্ধে প্রচার চালানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বছর বিহারের ছাপড়ায় বিষমদ পান করে মারা গিয়েছেন কমপক্ষে ৭০ জন। এই নিয়ে প্রবল রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলেছে। কীভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল।
ড্রাই স্টেট বিহারের ছাপড়ায় বিষ মদ (Bihar Hooch Tragedy) খেয়ে মৃত্যু সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। সেই দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল পঞ্জাব সরকার (Punjab Government)। সে রাজ্যের আপ সরকার বিষক্রিয়া হতে পারে এমন স্থানীয় মদ বিক্রি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে। পঞ্জাবের সরকার দেশি মদ ছোট ছোট প্যাকেটে ভরে বিক্রির কথা ভাবছে। ৪০ শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত মদই পাউচে বিক্রি করা হবে, এমনটাই সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। দাম কম হওয়ার কারণে গ্রাম ভারতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি স্থানীয় মদের রমরমা। সেই স্থানীয় মদের ‘স্বাস্থ্যকর বিকল্প’ হিসাবেই এই দেশি মদ বিক্রির চিন্তাভাবনা ভগবন্ত মান সরকারের (Mann Government)।
পঞ্জাবের আবগারি দফতর জাতীয় এক সংবাদ আমধ্যমকে জানিয়েছে, পঞ্জাবের গ্রামীণ এলাকাগুলিতে ‘লহান’ নামে এক মদ খুব জনপ্রিয়। ভারতে তৈরি অন্য মদগুলির তুলনায় এই স্থানীয় মদে অ্যালকোহলের পরিমাণও কম। ২৫ থেকে ৪০ টাকার ছোট প্যাকেটে বিক্রি হয় লহান। সরকারের তরফেও যদি কম টাকায় এবং ছোট প্যাকেটে কম ক্ষতিকর দেশি মদ বিক্রির ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে মানুষের মধ্যে এই ধরনের বিষমদ খাওয়ার প্রবণতা কমতে পারে।
এদিকে, বিহারে বিষমদে মৃত্যুর ঘটনায় ক্রমেই কোণঠাসা সে রাজ্যের নীতীশ কুমার সরকার। ড্রাই স্টেট হলেও আবগারি নীতি কেন এতটা দুর্বল? সেই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
গত কয়েকমাসে বিহারে (Bihar) বিষমদ (Hooch Tragedy) খেয়ে মৃত্যুর একাধিক ঘটনা ঘটেছে। চলতি সপ্তাহেই ছাপড়া জেলায় বিষমদের বলি অন্তত ২১ জন, এখনও অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন একাধিক ব্যক্তি। এই ঘটনায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার (CM Nitish Kumar) সরকারের সমালোচনায় সরব বিরোধীরা। মদ নিষিদ্ধ হওয়া স্বত্বেও কীভাবে এভাবে বিষমদে মৃত্যুর ঘটনা? এই প্রশ্ন তুলছে বিরোধী বিজেপি। এবার এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের মুখ খুললেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। খানিক হতাশার সুরেই রাজ্যবাসীকে সাবধান করে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, 'মদ খেলে মরতে তো হবেই। বিহারের মতো ড্রাই স্টেটে (মদ নিষিদ্ধ করা রাজ্য) মদ কিনবেন না। কারণ অবৈধ উপায়ে আমদানি করা ভেজাল এবং বিষাক্ত মদ বিক্রির চেষ্টা হতে পারে।'
একই সঙ্গে তিনি জানান, মদ কিনতে গিয়ে ধরা পড়া কোনও গরিব মানুষকে গ্রেফতার করা হবে না। গ্রেফতার করা হবে মদ প্রস্তুতকারক এবং অবৈধ ভাবে মদ আমদানির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের। এই মর্মে তিনি পুলিশ আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। ২০১৬ থেকে বিহারে মদ বিক্রি নিষিদ্ধ। এই সিদ্ধান্তের জেরে পড়শি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দলের মহিলা ভোটার বেড়েছে। বেআইনি মদ বিক্রি রোধে ব্যর্থ নীতিশ কুমারের প্রশাসন।
২০১৬ থেকে বিহারে মদ (Bihar Liquor Policy) বিক্রি নিষিদ্ধ। এই সিদ্ধান্তের জেরে পড়শি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের (CM Nitish Kumar) দলের মহিলা ভোটার বেড়েছে। বেআইনি মদ (Hooch Tragedy) বিক্রি রোধে ব্যর্থ নীতিশ কুমারের প্রশাসাশন। ফের বিষমদ পান করে বিহারে মৃত্যু ৬ জনের। আশঙ্কাজনক কয়েক জন, মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। রাজ্য পুলিস সূত্রে খবর, বিহারের ছাপরা জেলার এক গ্রামে বিষমদ খেয়ে বাড়িতেই মারা যান ৪ জন। এক জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তাঁরও মৃত্যু হয়। বিষমদে অসুস্থের সংখ্যা সঠিক জানা যায়নি। তবে সূত্রের খবর, বেশ কয়েক জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ময়না তদন্তের পর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। সংবাদ মাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছে ছাপরা জেলা পুলিস। তবে প্রাথমিক তদন্তে বিষমদকেই মৃত্যুর কারণ বলে মনে করছে। এমনটা অভিযোগ মৃতদের পরিবারেরও।
ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে বিহারের রাজনৈতিক মহলে তোলপাড়। সাম্প্রতিককালে একাধিকবার বিষমদ-কাণ্ডে মৃত্যুর জেরে খবরের শিরোনামে এসেছে বিহার। প্রতিবার বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছে নীতিশ কুমার সরকার।