
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: বাড়িতে দুপুর বা রাতের মেনুতে বানিয়ে ফেলতে পারেন সুস্বাদু চিকেন ডাকবাংলো। এই পদটিতে চিকিনের সঙ্গে ডিমও থাকে। ভাত, রুটি, পরোটা, লুচি, পোলাও সহযোগে চিকেন ডাকবাংলো খেতে খুবই উপাদেয়। নিজের হাতে রান্না করে বাড়ির লোকেদের খাইয়ে খুশি করতে পারেন।
চিকেন ডাকবাংলো তৈরির পদ্ধতি--
এক কেজি হাড় সমেত চিকেনের দশ থেকে বারোটা খণ্ড করে নিন। চিকেনের খণ্ডগুলো জলে ধুয়ে পরিস্কার করে জল মুছে নিন। কড়া আঁচে বসিয়ে পঞ্চাশ গ্রাম সর্ষের তেল গরম করে তার মধ্যে একটা বড় দারচিনির স্টিক, পাঁচটা ছোট এলাচ, ছয়টা লবঙ্গ ফোড়ন দিন। এবার দুটো বড় সাইজের পেঁয়াজের স্লাইজ দিয়ে আন্দাজ মত নুন দিয়ে হাল্কা বাদামি করে ভেজে নিন। এবার এক টেবিল চামচ রসুনবাটা ও দুই টেবিল চামচ আদা বাটা দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে ভেজে নিন। এবার চারটে মাঝারি টমেটো কুচি দিয়ে নেড়ে ক্রমাগত কষতে থাকুন যতক্ষণ না টমেটো গলে যাচ্ছে। টমেটো গলে গেলে এক চা চামচ চিনি, প্রয়োজন মত নুন দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। দুই চা চামচ শুকনো লঙ্কার গুড় , এক চা চামচ হলুদ গুড় ও আন্দাজ মত জল দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে কোষে নিন।
এবার ভাতের হাতার এক হাতা ফেটানো টক দই দিয়ে খুব ভাল করে নেড়ে কোষে নিন। তেল ছাড়তে শুরু করলে চিকেন এর খণ্ডগুলো দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিভু আঁচে ক্রমাগত নেড়ে মিনিট পাঁচেক কষে নিন। এবার সামান্য জল দিয়ে আরও কয়েক মিনিট কষুন যতক্ষণ না তেল ছাড়ছে। তেল ছাড়তে শুরু করলে ওর মধ্যে চার বাটি বা আন্দাজ মত জল দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে ঢাকনা বন্ধ করে নিভু আঁচে দশ-পনেরো মিনিট রান্না করুন।
মাঝে মাঝে ঢাকনা খুলে চিকেনের খন্ডগুলো নেড়ে দেবেন। চিকেন সিদ্ধ হয়ে গেলে উপর থেকে এক টেবিল চামচ ঘি ও এক চা চামচ গরম মশলার গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়ে নেড়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। দশ থেকে বারোটা সিদ্ধ করা মুরগির ডিমের খোসা ছাড়িয়ে নিন। ফ্রাইংপ্যান আঁচে বসিয়ে আন্দাজ মত সরষের তেল গরম করে লাল করে ভেজে নিন। হয়ে গেলে আঁচ থেকে নামিয়ে নিন। ভাজা ডিমগুলো রান্না করা চিকেনের উপর ছড়িয়ে দিয়ে দিন। গরম গরম পরিবেশন করুন রুটি, পরোটা, লুচি, পোলাও বা ভাত সহযোগে।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: এই শীতের মরসুমে বিকেল বেলায় গরম চা বা কফি সহযোগে সুস্বাদু স্ন্যাক্স খাবার মজাই আলাদা। আর্জেন্টিনা বনাম ফ্রান্সের রোমাঞ্চকর বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখার হ্যাং ওভার এখনও সবার পুরপুরি কাটেনি, তাই বিশ্বকাপজয়ী দেশ আর্জেন্টিনার একটি বিখ্যাত চিকেনের স্ন্যাক্সের রেসিপি জানাবো। খাদ্য রসিকরা তো বটেই আর্জেন্টিনার ফুটবল দলের সমর্থক ও মেসিপ্রেমিরা হয়তো এই পদটি বানিয়ে খেয়ে আনন্দ পেতে পারেন।
চিকেন চিমিচুরি তৈরিরপদ্ধতি --- এক কেজি ড্রেসড চিকেন স্কিন সমেত ( স্কিন সমেত চিকেন না পেলে স্কিন ছাড়া চিকেনে করতে পারেন)। চিকেনের দশটা খণ্ড করে নিন। জলে ধুয়ে পরিস্কার করে পরিষ্কার ন্যাকরার সাহায্যে জল মুছে নিন। একটি পাত্রে বড় এক আঁটি ধনে পাতা কুচি, বড় এক আঁটি পারসলি পাতা কুচি, ( পারসলি পাতা না পেলে পুদিনা পাতা কুচি ব্যাবহার করতে পারেন।) দশটি রসুনের কুচি, এক টেবিল চামচ চিলি ফ্লেক্স , এক টেবিল চামচ ওরিগ্যানো , এক চা চামচ কালো গোল মরিচের গুঁড়ো, চার টেবিল চামচ রেড ওয়াইন ভিনিগার (রেড ওয়াইন ভিনিগার না থাকলে অ্যাপল ভিনিগার বা রেড ভিনিগার ব্যবহার করতে পারেন)।
চার টেবিল চামচ অলিভ ওয়েল, আন্দাজমতো নুন নিয়ে ভাল করে নেড়ে মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এবার এই মিশ্রণটি এক ঘন্টা ফ্রিজে রেখে দিন। এক ঘন্টা বাদে ফ্রিজ থেকে বার করে এই মিশ্রণের থেকে দুই টেবিল চামচ মিশ্রণ আলাদা তুলে রাখুন। বাকি মিশ্রণটা মিক্সিতে দিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে নিন। এবার এই মিশ্রণের পেস্টটা চিকেনের খণ্ডগুলোর গায়ে হাতের সাহায্যে খুব ভাল করে মাখিয়ে নিন। মিশ্রণ মাখানো চিকেনের খণ্ডগুলো এক ঘন্টা আলাদা করে রেখে দিন।
এক ঘন্টা বাদে নন স্টিকি ফ্রাইংপ্যান আঁচে বসিয়ে তিন টেবিল চামচ অলিভ অয়েল বা সাদা তেল ( তেল প্যানের মধ্যে চারিদিকে ছড়িয়ে দিন) গরম করে মিশ্রণ মাখানো চিকেনের খণ্ডগুলো দিয়ে মাঝারি আঁচে টঙ বা চিমটের সাহায্যে উল্টে পাল্টে গ্রিল করুন বা ভেজে নিন। চিকেন সম্পূর্ন পেকে গেলে আঁচে থেকে নামিয়ে চিকেনের খণ্ডগুলোর উপরে চামচের সাহায্যে আলাদা করে রাখা ধনে পাতা, পারসলি পাতা , রসুন ও অন্যান্য মশলার মিশ্রণ টা অল্প করে ছড়িয়ে দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: বহু বিখ্যাত হোটেল রেস্তোরাঁতে অনেক রকমের ফ্রায়েড রাইস পাওয়া যায়। সেগুলি স্বাদে গন্ধে খুবই ভাল। খেতেও বেশ ভালো লাগে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু ছোটবেলায় মায়েদের হাতের গোবিন্দ ভোগ চাল দিয়ে তৈরি মিষ্টি মিষ্টি ফ্রায়েড রাইসের এক আলাদা আকর্ষন রয়েছে। গাজর, ক্যাপসিকাম, কাজু বাদাম, কিসমিস সহযোগে তৈরি এই ফ্রায়েড রাইস অবশ্যই ব্যাকরণগত ভাবে আসল চিনে ফ্রায়েড রাইস এর সাথে মেলে না , তবুও এর স্বাদে এক আলাদা জাদু আছে, যা ছেলেবেলা থেকে বড় বেলা সবসময়ই খেতে ভালো লাগে।
ফ্রায়েড রাইস তৈরির পদ্ধতি --- পাঁচশো গ্রাম গোবিন্দভোগ চাল জলে ভাল করে ধুয়ে পরিস্কার করে নিন। আন্দাজমতো জলে আধ ঘণ্টা গোবিন্দভোগ চাল ভিজিয়ে রাখুন । দুশো গ্রাম গাজর কুচি , একশো গ্রাম বিনস কুচি জলে ধুয়ে পরিস্কার করে আঁচে বসিয়ে হালকা একটু ভাপিয়ে নিন। হয়ে গেলে জল ঝরিয়ে আলাদা করে রেখে দিন। আধঘণ্টা বাদে গোবিন্দ ভোগ চাল আঁচে বসিয়ে ১/৩ অংশ সিদ্ধ করে নিন। হয়ে গেলে জল ঝরিয়ে একটা বড় থালা বা ট্রে-র মধ্যে বিছিয়ে পাখার তলায় রেখে দিন। কড়া আঁচে বসিয়ে তিন টেবিল চামচ সাদা তেল ও এক টেবিল চামচ ঘি গরম করে ওর মধ্যে দুটো দারচিনির স্টিক, চারটে ছোট এলাচ, ছটা লবঙ্গ ফোরন দিন। এবার একটা মাঝারি ক্যাপসিকাম কুচি দিয়ে নেড়ে ভেজে নিন। এবার ভাপানো গাজর ও বিনস কুচি দিয়ে নেড়ে ভাল করে ভেজে নিন। আন্দাজ মতো নুন ও গোল মরিচের গুড় দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এক মুঠো কাজু বাদাম ও এক মুঠো কিসমিস দিয়ে নেড়ে ভেজে নিন। এবার ১/৩ অংশ সিদ্ধ করা গোবিন্দভোগ চালের ভাতটা ওর মধ্যে দিয়ে নেড়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। ক্রমাগত নেড়ে ভাজুন। দুই থেকে তিন টেবিল চামচ চিনি দিয়ে খুব ভাল করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। সব শেষে হাফ চা চামচ গরম মশলার গুড় ও বড় এক চিমটে জয়িত্রি , জায়ফলের গুড় দিয়ে নেড়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। এক টেবিল চামচ ঘি ছড়িয়ে দিয়ে নেড়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। একবার চেখে দেখে নিন, নুন, মিষ্টি ঠিক থাকলে আচ থেকে নামিয়ে নিন। গরম গরম পরিবেশন করুন চিকেন বা মটন কষা বা কাতলা মাছের দম সহযোগে।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: কাবাব (Kebab) খেতে কে না ভালোবাসে। বিশেষ করে বিকেলে বা সন্ধ্যায় সুস্বাদু কাবাব খাবার মজাই আলাদা। বাড়িতে তন্দুর বা ওভেন না থাকলেও নিশ্চিন্তে বানিয়ে ফেলা যাবে এই কাবাব। বাড়িতে হঠাৎ অতিথি এসে গেলে তাদের এই সুস্বাদু কাবাব তৈরি করে পরিবেশন করতে পারেন।
চিকেন কুলফি কাবাব তৈরির পদ্ধতি---একটা পাত্রে ৩৫০ গ্রাম বোনলেস চিকেন কিমা (মিহি করে বাটা), এক টেবিল চামচ রসুন কুচি, এক টেবিল চামচ আদা কুচি, এক চা চামচ কাঁচালঙ্কা কুচি, এক চিমটে জয়িত্রির গুঁড়ো, হাফ চা চামচ ছোট এলাচের গুঁড়ো, এক টেবিল চামচ পেস্তা কুচি, আন্দাজমতো নুন, এক চিমটে জাফরান দিয়ে হাতের সাহায্যে চটকে ভালো করে মেখে নিন। এবার ওর মধ্যে ছোট এক মুঠো ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে দিয়ে ভালো করে হাতের সাহায্যে মেখে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এবার এই চিকেনের মাখা মিশ্রণটা ফ্রিজে ঢুকিয়ে এক ঘন্টা রেখে দিন। এক ঘন্টা বাদে ফ্রিজ থেকে বার করে চিকেনের মাখা মিশ্রণের লেচি পাকিয়ে স্টিক বা শাসলিক স্টিকের মাথায় লাগিয়ে নিন। নন স্টিকি ফ্রায়িংপ্যান আঁচে বসিয়ে এক টেবিল চামচ দেশি ঘি গরম করে হাতের সাহায্যে প্যানটা ঘুরিয়ে গলা ঘিটা সর্বত্র ছড়িয়ে নিন।
এবার চিকেনের মিশ্রণ লাগানো স্টিকগুলো প্যানে দিয়ে নিভু আঁচে একেক পিঠ দুই থেকে তিন মিনিট ভেজে নিয়ে উল্টে অপর পিঠ ভেজে নিন। উপর থেকে এক টেবিল চামচ মাখন ছড়িয়ে দিন। চিকেন সম্পূর্ণ পেকে গেলে আঁচ থেকে নামিয়ে নিন। স্যালাড ও পুদিনা পাতার চাটনি সহযোগে গরম গরম পরিবেশন করুন।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: যাঁরা পেঁয়াজ, রসুন ছাড়া বিশুদ্ধ নিরামিষ খাবার পছন্দ করেন, তাঁরা পনিরের এই পদটি রান্না করে পরিবারের সবাইকে খাইয়ে ও নিজে খেয়ে দেখতে পারেন। অনেকের ধারণা রয়েছে যে পেঁয়াজ, রসুন ছাড়া সুস্বাদু পনিরের পদ রান্না করা সম্ভব নয়। এই পদটি রান্না করলে সেই ভুল ভেঙে যেতে পারে। তাই চাইলে পেঁয়াজ, রসুন ছাড়া এই পনিরের পদটি বানিয়ে ফেলুন।
পেঁয়াজ, রসুন ছাড়া পনির তৈরির পদ্ধতি---পাঁচশো গ্রাম পনির চৌকো চৌকো খণ্ড করে কেটে নিন। একটি পাত্রে দুই টেবিল চামচ আদা বাটা, দুই টেবিল চামচ কাশ্মীরি লঙ্কা বাটা, এক টেবিল চামচ ধনে ও জিরের গুঁড়ো, হাফ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, এক চা চামচ কস্তুরি মেথির গুঁড়ো, এক চিমটে বিট নুন, এক টেবিল চামচ সাদা তেল ও আন্দাজমতো নুন দিয়ে হাতের সাহায্যে ভালো করে মেখে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এবার পনিরের খণ্ডগুলো ওর মধ্যে দিয়ে হাতের সাহায্যে মিশ্রণগুলো পনিরের খণ্ডগুলোর গায়ে ভালো করে মাখিয়ে নিন। মিশ্রণ মাখানো পনিরের খণ্ডগুলো এক ঘন্টা আলাদা করে রেখে দিন। এক ঘন্টা বাদে নন স্টিকি ফ্রাইংপ্যান আঁচে বসিয়ে এক টেবিল চামচ সাদা তেল ও দুই টেবিল চামচ দেশি ঘি গরম করে মিশ্রণ মাখানো পনিরের খণ্ডগুলো দিয়ে চিমটে বা স্লাইজারের সাহায্যে উল্টেপাল্টে ভালো করে ভেজে নিন। হয়ে গেলে তুলে তেল ঝরিয়ে আলাদা করে রাখুন।
কড়া আঁচে বসিয়ে দুই টেবিল চামচ দেশি ঘি গরম করে দুটো দারচিনির স্টিক, ছটা ছোট এলাচ, ছটা লবঙ্গ ও এক চা চামচ গোটা সাদা জিরে ফোরন দিন। দুই টেবিল চামচ আদা, জিরে বাটা, দুই টেবিল চামচ কাশ্মীরি লঙ্কা বাটা, চারটে কাঁচা লঙ্কা কুচি দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার আন্দাজমতো জল দিয়ে নেড়ে কিছুক্ষণ কষে নিন। এবার আড়াইশো গ্রাম ফেটানো টক দই, এক কাপ কাজু ও চারমগজ বাটা, হাফ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, এক চা চামচ চিনি ও আন্দাজমতো নুন দিয়ে ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার আন্দাজমতো জল দিয়ে নিভু আঁচে ক্রমাগত নেড়ে মিনিট দশেক রান্না করুন। তেল ছাড়লে ওর মধ্যে ভাজা পনিরের খণ্ডগুলো দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার ওর মধ্যে এক চা চামচ কস্তুরি মেথির গুঁড়ো, হাফ চা চামচ গরম মশলার গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়ে মিনিট দুয়েক রান্না করুন। এবার এক টেবিল চামচ ক্রিম, এক টেবিল চামচ মাখন ও এক টেবিল চামচ ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। আঁচ থেকে নামিয়ে নিন। পরোটা বা রুটি সহযোগে পরিবেশন করুন।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: যাঁরা নিয়মিত নিরামিষ খাবার (Vegeterian Food) খেয়ে থাকেন বা যাঁরা সপ্তাহে দুই-এক দিন নিরামিষ খাবার খান, তাঁরা একটু ভিন্নধর্মী (Different Taste) নিরামিষ পদ বাড়িতে তৈরি করতে চাইলে বিউলির ডালের এই পদটি রান্না করে বাড়ির লোকেদের খাওয়াতে পারেন।
বিউলির ডালের বড়ার নারকেলি তেলঝাল তৈরির পদ্ধতি---চারশো গ্রাম বিউলির ডাল জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। এবার এক রাত্রি জলে ভিজিয়ে রাখুন। এক রাত্রি ভেজানো বিউলির ডাল গ্রাইন্ডারে নিয়ে তার মধ্যে দুই ইঞ্চি আদার স্লাইস, বড় এক মুঠো নারকেল কোরা, এক চা চামচ চিনি ও আন্দাজমতো নুন দিয়ে বেটে একটা মিশ্রণ তৈরি করে নিন। ডাল বাটার মিশ্রণটা একটা পাত্রে তুলে রাখুন।
কড়া আঁচে বসিয়ে তার মধ্যে আন্দাজমতো সর্ষের তেল গরম করে ডাল বাটার মিশ্রণ দিয়ে উল্টেপাল্টে গোল গোল বড়া ভেজে নিন। ভাজা হয়ে গেলে তুলে তেল ঝরিয়ে আলাদা করে রাখুন। অন্য একটি কড়া আঁচে বসিয়ে তিন টেবিল চামচ সর্ষের তেল গরম করে এক চা চামচ কালো জিরা ও দুটো কাঁচালঙ্কা ভেঙে ফোরন দিন। এক টেবিল চামচ আদাবাটা দিয়ে নেড়ে ভেজে নিন। এবার ওর মধ্যে দেড় টেবিল চামচ ধনে, জিরের গুঁড়ো, এক টেবিল চামচ শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো, এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার ওর মধ্যে তিন টেবিল চামচ কালো সর্ষেবাটা, এক কাপ টমেটো, কাঁচালঙ্কা বাটা, এক টেবিল চামচ চিনি ও আন্দাজমতো নুন দিয়ে ভালো করে নেড়ে মেশান। কিছুক্ষণ কষে নিন। এবার বড় তিন মুঠো নারকেল কোরা দিন। দুই কাপ জল দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এক টেবিল চামচ ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে দিন। এবার ওর মধ্যে ডালের মিশ্রণের ভাজা বড়াগুলো দিয়ে নিভু আঁচে তিন থেকে চার মিনিট রান্না করুন। রান্না হয়ে গেলে আঁচ বন্ধ করে মিনিট দুয়েক রেখে দিন। হয়ে গেলে উপর থেকে দুই মুঠো নারকেল কোরা, দুই টেবিল চামচ ধনেপাতা কুচি ও চারটে কাঁচালঙ্কা কুচি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: ডিমের প্রতি শিশু থেকে বৃদ্ধ সবারই সমান আকর্ষণ রয়েছে। ডিম সিদ্ধ, পোচ, ওমলেট, Scrambled Egg, ডিমের চপ, ডিমের ডেভিল সহ আরও অনেক উপাদেয় ডিমের পদ আপনারা খেয়েছেন। কিনতু সর্ষে পোস্ত দেওয়া ডিমের চপ খেয়েছেন কি? এবার একটু অন্যরকম ডিমের পদ তৈরি করে খেতে ও খাওয়াতে পারেন।
সর্ষে পোস্ত দেওয়া ডিমের চপ তৈরির পদ্ধতি: ছয়টি মুরগির ডিম সিদ্ধ করে নিন। ডিমের খোসা ছাড়িয়ে জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। সুতোর সাহায্যে মাঝ বরাবর লম্বা করে কেটে নিন। ডিমের কুসুমগুলো তুলে একটি পাত্রে রাখুন। চামচের সাহায্যে পিষে নিন। এবার ওর মধ্যে তিন চা চামচ কালো ও সাদা সর্ষে বাটা, এক টেবিল চামচ পোস্ত বাটা, পাঁচ চা চামচ কাজু ও নারকেল বাটা, হাফ চা চামচ হলুদ, আন্দাজমতো নুন, এক চা চামচ কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো, দেড় চা চামচ চিনি, হাফ চা চামচ কালো গোল মরিচের গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এবার এর মধ্যে দুই চা চামচ সর্ষের তেল ছড়িয়ে দিয়ে ভালো করে হুইস্কের সাহায্যে নেড়ে মিশিয়ে নিন। পুর তৈরি হয়ে গেল।
ব্যাটার তৈরির পদ্ধতি--- একটি পাত্রে ভাতের হাতার দুই হাতা বেসন, আন্দাজমতো নুন, এক চা চামচ চিনি, এক চা চামচ কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো, বড় এক চিমটে হলুদ ও আন্দাজমতো জল দিয়ে হাতের সাহায্যে ভালো করে ফেটিয়ে ব্যাটার বা গোলা তৈরি করে নিন। এবার ডিমের অর্ধেক করে কেটে রাখা সাদা অংশের মধ্যে পুরগুলো ভরে চামচের সাহায্যে চেপে দিন। এবার কড়া আঁচে বসিয়ে আন্দাজমতো সাদা তেল গরম করে নিন। পুরভর্তি ডিমের সাদা অংশগুলো ব্যাটার বা গোলায় চুবিয়ে তুলে ব্রেড ক্রাম্ব মাখিয়ে গরম তেলে ছেড়ে হালকা বাদামি করে ভেজে নিন। হয়ে গেলে কড়া থেকে তুলে তেল ঝরিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: নিরামিষ খাবারের মধ্যে বেগুন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বেগুন ভাজা, বেগুনের ভর্তা, বেগুন বাসন্তী, বেগুনি, নিম-বেগুন ভাজা ইত্যাদি পদ বাঙালির খুবই পছন্দের। এছাড়া বেগুন দিয়ে অনেক মাছের পদও রান্না করা হয়ে থাকে। যাঁরা বেগুন পছন্দ করেন, তাঁরা বেগুনের তিলোওমা পদটি রান্না করতে পারেন। এই পদটি স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয়।
বেগুনের তিলোওমা তৈরির পদ্ধতি---একটা বড় বেগুনের উপর ও নিচের অংশের কিছুটা বাদ দিয়ে গোল গোল চাক করে কেটে নিন। বেগুন জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে আন্দাজমতো নুন ও হলুদ গুঁড়ো মাখিয়ে নিন। কড়া আঁচে বসিয়ে ভাতের হাতার এক হাতা সাদা তেল গরম করে তার মধ্যে বেগুনের খণ্ডগুলো দিয়ে উল্টেপাল্টে দুই পিঠ ভালো করে ভেজে নিন। তুলে তেল ঝরিয়ে নিয়ে আলাদা করে রাখুন।
কড়াতে দুই টেবিল চামচ সাদা তেল ও এক টেবিল চামচ ঘি গরম করে চারটে গোটা শুকনো লঙ্কা, এক চা চামচ কালো সর্ষে ও এক মুঠো কারিপাতা ফোরন দিন। এক মুঠো নারকেল কোরা দিয়ে নেড়ে ভেজে নিন। এক টেবিল চামচ আদাবাটা দিয়ে খুব ভালো করে নেড়ে ভেজে নিন। একটা বড় বেগুন গ্যাসে পুড়িয়ে, ঠান্ডা করে, খোসা ছাড়িয়ে নিন। এই পোড়ানো বেগুনটা কড়াতে দিয়ে তার মধ্যে দিয়ে খুব ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এক চা চামচ শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার ওর মধ্যে হাফ কাপ ভাজা চিনেবাদামের গুঁড়ো ও হাফ কাপ তাওয়াতে শেকা সাদা তিলের গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার তিন চা চামচ চিনি, আন্দাজমতো নুন ও তিন চা চামচ গুঁড়ো দুধ দিয়ে নেড়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার ছটা কাঁচালঙ্কা কুচি ও এক টেবিল চামচ ঘন টক দই দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার ভেজে রাখা বেগুনের খণ্ডগুলো ওর মধ্যে দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। দুই টেবিল চামচ ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। আঁচ বন্ধ করে দিন। এবার ঢাকনা বন্ধ করে মিনিট পাঁচেক রেখে দিন।
পাঁচ মিনিট বাদে ঢাকনা খুলে এক টেবিল চামচ ঘি দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার প্লেটের মধ্যে ঢেলে উপর থেকে এক মুঠো তাওয়াতে শেকা সাদা তিল, এক মুঠো ধনেপাতা কুচি ও এক মুঠো নারকেল কোরা ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন রুটি বা পরোটা সহযোগে
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: বাঙালি মাত্রই মৎস্যপ্রেমী। নানা রকমের মাছের রকমারি পদ খেতে বাঙালিরা খুব ভালোবাসে। ট্যাংরার ঝাল, ইলিশ ভাপা, নারকেল চিংড়ি, চিতল পেটির কালিয়া, ভেটকি পাতুরি, পাবদা সর্ষে ইত্যাদি পদের সাথে সবাই পরিচিত। তাই এবার মাছের একটু ভিন্নধর্মী পদ তৈরি করে দেখলে কেমন হয়? চাইনিজ ঘরানার স্বতন্ত্রধর্মী মাছের এই ফিশ ইন চিলি কর্ন সস পদটি বানিয়ে বাড়ির লোক ও বন্ধুবান্ধবদের খাইয়ে সবার মন জয় করে ফেলুন।
ফিস ইন চিলি কর্ন সস তৈরির পদ্ধতি---৩০০ গ্রাম বোনলেস ভেটকি মাছের ফিলে থেকে খণ্ড খণ্ড করে কেটে নিন। মাছের খণ্ডগুলো জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। একটা পাত্রে দেড় খানা ডিমের গোলা দুই টেবিল চামচ কর্নফ্লাওয়ার, আন্দাজমতো নুন, হাফ চা চামচ চিনি, হাফ চা চামচ চিকেন ব্রথ পাউডার, হাফ চা চামচ সাদা মরিচের গুঁড়ো ও দুই টেবিল চামচ সাদা তেল দিয়ে হাতের সাহায্যে ভালো করে মেখে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এবার এই মিশ্রণের মধ্যে মাছের খণ্ডগুলো দিয়ে ভালো করে হাতের সাহায্যে মাখিয়ে নিন।
মিনিট কুড়ি মিশ্রণ মাখানো মাছের খণ্ডগুলো আলাদা করে রাখুন। কুড়ি মিনিট বাদে কড়া আঁচে বসিয়ে আন্দাজমতো সাদা তেল গরম করুন। তেল গরম হয়ে গেলে মিশ্রণ মাখানো মাছের খণ্ডগুলোর গায়ে শুকনো কর্নফ্লাওয়ার মাখিয়ে নিয়ে ডুব তেলে হালকা বাদামি করে ভেজে নিন। ভাজা হয়ে গেলে তুলে তেল ঝরিয়ে আলাদা করে রাখুন। কড়া আঁচে বসিয়ে দুই টেবিল চামচ সাদা তেল গরম করে তার মধ্যে এক টেবিল চামচ আদার কুচি দিয়ে নেড়ে একটু ভেজে তিন টেবিল চামচ ক্যাপসিকাম কুচি দিয়ে হালকা ভেজে নিন। এবার ওর মধ্যে হাফ কাপ সুইট কর্ন দিন। এক টেবিল চামচ শুকনোলঙ্কা কুচি, এক চা চামচ কাঁচালঙ্কা কুচি দিয়ে নেড়ে দেড় কাপ গরম জল দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন।
এবার হাফ কাপ সুইট কর্ন ক্রিম স্টাইল দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। আন্দাজমতো নুন, হাফ কাপ চিকেন ব্রথ পাউডার, এক চিমটে চিনি, হাফ চা চামচ চিলি ফ্লেক্স ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে রান্না করুন। এক কাপ জলে দুই টেবিল চামচ কর্নফ্লাওয়ার গুলে ঢেলে দিন। নেড়ে মিশিয়ে নিন। ঘন হয়ে গেলে চিলি কর্ন সস তৈরি হয়ে গেল। আঁচ থেকে নামিয়ে নিন। প্লেটের মধ্যে ভাজা মাছের খণ্ডগুলো রেখে উপর থেকে সসটা ঢেলে দিন। গরম দেরাদুন চালের ভাতের সাথে পরিবেশন করুন।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: নিরামিষ পদের মধ্যে বাঙালির কাছে পনিরের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। পনিরের রকমারি পদ খেতে বাঙালিরা খুব ভালোবাসে। পনির ব্যাটার মশলা, পনির মাখানি, শাহী পনির ইত্যাদি তো অনেক খেয়েছেন। এবার পনির লাবাবদার তৈরি করে পরিবারের সবাইকে খাইয়ে ও নিজে খেয়ে দেখুন। আশা করা যায় সবার ভালো লাগবে।
পনির লাবাবদার তৈরির পদ্ধতি--- পাঁচশো গ্রাম ফুল ক্রিম পানির এনে চৌকো চৌকো পিস করে কেটে নিন। কড়া আঁচে বসিয়ে আন্দাজমতো সাদা তেল দিয়ে পনিরের খণ্ডগুলো হালকা ভেজে নিয়ে তুলে তেল ঝরিয়ে নিয়ে একটা জলভর্তি বড় ডেচকির মধ্যে চুবিয়ে রাখুন। এতে পনির খুব নরম হয়। কড়া আঁচে বসিয়ে তার মধ্যে পঁচিশ গ্রাম সাদা তেল ও পঁচিশ গ্রাম মাখন দিয়ে গলিয়ে নিন। এবার ওর মধ্যে সাড়ে তিনশো গ্রাম পেঁয়াজবাটা দিয়ে ক্রমাগত নেড়ে কষে নিন, যতক্ষণ না পেঁয়াজের কাঁচা গন্ধ চলে যাচ্ছে এবং হালকা বাদামি রং হচ্ছে। এবার ওর মধ্যে এক টেবিল চামচ আদাবাটা ও দুই টেবিল চামচ রসুনবাটা দিয়ে খুব ভালো করে নেড়ে কষে নিন। এবার ওর মধ্যে আড়াইশো গ্রাম ফ্রেশ টমেটো পিউরি দিয়ে খুব ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিভু আঁচে কষে নিন। তেল ছাড়লে ওর মধ্যে এক টেবিল চামচ কাঁচালঙ্কা বাটা, এক টেবিল চামচ ধনে ও জিরের গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। আন্দাজমতো নুন ও এক চা চামচ চিনি দিয়ে খুব ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। ভাতের হাতার এক হাতা ধনেপাতা কুচি দিয়ে ক্রমাগত নেড়ে কষে নিন, যতক্ষণ না ঝোল পেকে যাচ্ছে। পেকে গেলে ওর মধ্যে ভেজে, জলে ভিজিয়ে রাখা পনিরের খণ্ডগুলো দিয়ে ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এক টেবিল চামচ কস্তুরি মেথির গুঁড়ো ছড়িয়ে দিন। এবার ভাতের হাতার এক হাতা ক্রিম ছড়িয়ে দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। আঁচের থেকে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন পরোটা বা রুটি সহযোগে।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: বাঙালিদের ধোকার প্রতি একটা আলাদা আকর্ষণ আছে।ধোকা শুধু ভাজা যেমন খাওয়া যায়, আবার লুচি, পরোটা, রুটি, ভাত সবের সাথেই ধোকা খেতে ভালো লাগে। তাই ধোকার প্রতি বাঙালিদের অনুরাগ চিরকালীন।
ধোকা তৈরির পদ্ধতি---একটি পাত্রে এক কাপ ছোলার ডাল ও হাফ কাপ মটর ডাল জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে এক রাত্রি জলে ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন ভেজানো ডালের সাথে একটা মাঝারি আদার খণ্ড ও পাঁচটা কাঁচালঙ্কা মিক্সিতে বেটে একটা মিশ্রণ তৈরি করে নিন। কড়া আঁচে বসিয়ে তিন টেবিল চামচ সর্ষের তেল গরম করে তার মধ্যে হাফ চা চামচ হিং ও এক টেবিল চামচ মৌরি ফোরন দিন। এবার ডালের মিশ্রনটা দিয়ে আন্দাজমতো নুন, এক চা চামচ হলুদ, এক চা চামচ চিনি দিয়ে খুব ভালো করে নেড়ে টানিয়ে নিন। শুকিয়ে এলে আঁচ থেকে নামিয়ে নিন। একটা প্লেটের গায়ে আন্দাজমতো সর্ষের তেল মাখিয়ে নিন। এবার রান্না করা ডালের মিশ্রনটা প্লেটের উপর বিছিয়ে দিন। এই অবস্থায় কিছুক্ষণ রেখে দিন।
সেট হয়ে গেলে ছুরির সাহায্যে বরফির শেপে কেটে নিন। কড়া আঁচে বসিয়ে আন্দাজমতো সাদা তেল গরম করে ডুব তেলে ধোকাগুলো হালকা বাদামি করে ভেজে নিন। তুলে তেল ঝরিয়ে আলাদা করে রাখুন।
অন্য কড়া আঁচে বসিয়ে দুই টেবিল চামচ সর্ষের তেল ও এক টেবিল চামচ ঘি গরম করে এক চা চামচ সাদা জিরে, একটা বড় দারচিনির স্টিক, পাঁচটা ছোট এলাচ, পাঁচটা লবঙ্গ ও তিনটে তেজপাতা ফোরন দিন। দুই টেবিল চামচ আদা, জিরে বাটা, এক চা চামচ কাঁচালঙ্কা কুচি, হাফ চা চামচ হলুদ, আন্দাজমতো নুন, এক টেবিল চামচ কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো, দেড় কাপ ফ্রেশ টমেটো পিউরি, এক টেবিল চামচ ধনের গুঁড়ো দিয়ে নেড়ে ভালো করে মিশিয়ে কষে নিন। তেল ছাড়লে এক টেবিল চামচ চিনি, এক চা চামচ শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো ও আন্দাজমতো জল দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার ভাজা ধোকাগুলো ওর মধ্যে দিয়ে ঢাকনা বন্ধ করে নিভু আঁচে কিছুক্ষণ রান্না করুন। কিছুক্ষণ বাদে ঢাকনা খুলে এক চা চামচ গরম মশলার গুঁড়ো, এক চা চামচ ঘি ও এক টেবিল চামচ ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। ঢাকনা বন্ধ করে মিনিট দুয়েক নিভু আঁচে বসান। এরপর আঁচ থেকে নামিয়ে পরিবেশন করুন লুচি, পরোটা, রুটি বা ভাত সহযোগে।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: ফ্রায়েড রাইস বাঙালির খুবই পছন্দের খাবার। আর এই ফ্রায়েড রাইসের মজা হল, শুধু এটি রান্না হলেই হয়ে যায়। কারণ, এটা শুধুই খাওয়া যেতে পারে। অন্য পদ সাথে না হলেও চলে। অনেক রকমের ফ্রায়েড রাইস তো খেয়েছেন, এবার মজাদার সেজওয়ান ফ্রায়েড রাইস বানিয়ে পরিবারের সবাইকে খাইয়ে ও নিজে খেয়ে দেখুন।
সেজওয়ান ফ্রায়েড রাইস তৈরির পদ্ধতি----৩০০ গ্রাম বাসমতি চাল জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। পরিষ্কার করা চাল আধ ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখুন। আধ ঘণ্টা পর ডেচকি আঁচে বসিয়ে আন্দাজমতো জল দিয়ে ও এক টেবিল চামচ সাদা তেল দিয়ে বাসমতি চাল ফোটান। চাল ৩/৪ ভাগ সিদ্ধ হয়ে গেলে আঁচ থেকে নামিয়ে নিন। জল ছেঁকে নিন। সিদ্ধ করা চাল একটি বড় থালার মধ্যে ভালো করে বিছিয়ে দিন।
কড়া আঁচে বসিয়ে তিন টেবিল চামচ সাদা তেল গরম করে এক টেবিল চামচ রসুন কুচি দিয়ে নেড়ে ভেজে ১০০ গ্রাম সিদ্ধ করা বোনলেস চিকেন, ১০০ গ্রাম সিদ্ধ করা চিংড়ি মাছ দিয়ে নেড়ে ভেজে নিন। এবার ওর মধ্যে ৩০ গ্রাম গাজর কুচি, ৩০ গ্রাম বাঁধাকপি কুচি, ৩০ গ্রাম ক্যাপসিকাম কুচি, এক মুঠো স্প্রিং অনিয়ন কুচি দিয়ে ভালো করে নেড়ে ভেজে নিন। এবার এক টেবিল চামচ শুকনো লঙ্কাবাটা, আন্দাজমতো নুন, এক বড় চিমটে আজিনামোটো, হাফ চা চামচ সাদা মরিচের গুঁড়ো, এক টেবিল চামচ সোয়া সস দিয়ে নেড়ে নিন। এবার ওর মধ্যে সিদ্ধ করা বাসমতি চালের ভাতটা দিয়ে নেড়ে ভালো করে সব কিছুর সাথে মিশিয়ে নিন। অন্য একটি ফ্রাইং প্যান আঁচে বসিয়ে আন্দাজমতো সাদা তেল গরম করে দুটো ডিমের গোলা দিয়ে ডিম ভাজা করে নিন। হয়ে গেলে ভাজা ডিমের খণ্ড করে কেটে কড়ার উপর থেকে ছড়িয়ে দিন। আঁচ বাড়িয়ে ভাত সহ অন্যান্য উপকরণ ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। হয়ে গেলে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: কাবাবের প্রতি বাঙালির আলাদা একটা আকর্ষণ রয়েছে। মাছ, মাটন ও চিকেনের কাবাবের মধ্যে চিকেনের কাবাবের জনপ্রিয়তাই সবচেয়ে বেশি। চিকেনের রকমারি কাবাবের মধ্যে চিকেন মালাই কাবাবের জনপ্রিয়তা সর্বজনবিদিত। হোটেল, রেস্তোরাঁতে গিয়ে তো অনেক কাবাব খেয়েছেন, এখন চাইলে আপনাদের প্রিয় চিকেন মালাই কাবাব বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারেন। সুস্বাদু কাবাব তৈরি করে বাড়ির লোকজন ও বন্ধুবান্ধবদের খাইয়ে খুশি করুন।
চিকেন মালাই কাবাব তৈরির পদ্ধতি-- ১ কেজি বোনলেস চিকেনের ১৬ টি খণ্ড করে নিন। জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে জল মুছে নিন। একটি পাত্রে ৩৫০ গ্রাম গ্রেট করা চিজ, ১ কেজি ডাবল ক্রিম, ১০০ গ্রাম রসুন বাটা, ১০০ গ্রাম আদা বাটা, আন্দাজমতো নুন, ৪ চা চামচ সাদা মরিচের গুঁড়ো, ৫০ গ্রাম ছোট এলাচের গুঁড়ো নিয়ে হাতের সাহায্যে খুব ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন।
এবার এই মিশ্রনের মধ্যে বোনলেস চিকেনের খণ্ডগুলো দিয়ে হাতের সাহায্যে চিকেনের খণ্ডগুলোর গায়ে খুব ভালো করে মিশ্রনটা ঘষে ঘষে মাখিয়ে নিন। এবার মিশ্রন মাখানো চিকেনগুলো ফ্রিজে ঢুকিয়ে পাঁচ থেকে ছ ঘন্টা রেখে দিন। পাঁচ বা ছ ঘন্টা বাদে ফ্রিজ থেকে ম্যারিনেট করা চিকেনগুলো বার করে শিকে গেঁথে নিন। ওভেন ৩৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস উত্তাপে প্রিহিট করে নিন। এবার শিকে গাঁথা চিকেনগুলো ওভেনে ঢুকিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মিনিট দশেক শেকে নিন। এবার শিকে গাঁথা শেকা চিকেনগুলো কিছুক্ষণ ঝুলিয়ে রাখুন, যাতে অতিরিক্ত জল ঝরে যায়। পরিষ্কার ন্যাকরা বা ব্রাশের সাহায্যে এরপর চিকেনের খণ্ডগুলোর গায়ে ভালো করে আন্দাজমতো মাখন ও দেশি ঘি মাখিয়ে নিন। আবার শিক সমেত চিকেন ওভেনে ঢুকিয়ে মিনিট ছয়েক শেকে নিন। চিকেন পেকে গেলে ওভেন থেকে বার করে চিকেনের গায়ে এক টেবিল চামচ মাখন ও এক টেবিল চামচ দেশি ঘি মাখিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন পুদিনা পাতার চাটনি সহযোগে। যাদের ওভেন নেই, তারা নন স্টিক গ্রিলপ্যান আঁচে বসিয়ে তার মধ্যে এক টেবিল চামচ সাদা তেল, এক টেবিল চামচ মাখন ও এক টেবিল চামচ দেশি ঘি গরম করে ম্যারিনেট করা চিকেনগুলো দিয়ে নিভু আঁচে উল্টেপাল্টে পাকিয়ে নেবেন।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, টিফিন, ডিনার.. সবেতেই চিকেন স্যান্ডউইচ খাওয়া যেতে পারে। সুস্বাদু চিকেন স্যান্ডউইচের প্রতি বাচ্চা থেকে বুড়ো, সবারই সমান আকর্ষণ রয়েছে। চিকেন স্যান্ডউইচ তৈরি করা সহজ, এর সাথে অন্য কোনও পদের প্রয়োজন নেই। বড় সাইজের তিন-চারটি চিকেন স্যান্ডউইচ খেলে পেট ভরে যায়। সাথে চা বা কফি, যা হোক খেলেই হল। বাড়ির লোকেদের ও বন্ধুবান্ধবদের জন্য নিজের হাতে তৈরি করে ফেলুন চিকেন স্যান্ডউইচ।
চিকেন স্যান্ডউইচ তৈরির পদ্ধতি--৪০০ গ্রাম ড্রেসড চিকেন ব্রেস্ট চারটি খণ্ড করে নিন। জলে ধুয়ে পরিস্কার করে নিন। সসপ্যান আঁচে বসিয়ে আন্দাজমতো জল দিয়ে চিকেন ব্রেস্টের খণ্ডগুলো দিন। ওর মধ্যে দুটো মোটা আদার চাক, অর্ধেক করে কাটা একটা বড় গাজর, অর্ধেক করে কাটা দুটো মাঝারি পেঁয়াজ দিয়ে ঢাকনা বন্ধ করে নিভু আঁচে রান্না করুন। আপনি যদি দুই বা এক লিটার জল ব্যবহার করে থাকেন, সেটা ফুটে অর্ধেক হয়ে গেলে ও চিকেন সম্পূর্ণ সিদ্ধ হয়ে গেলে আঁচ থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করুন।
ঠান্ডা হয়ে গেলে সিদ্ধ করা চিকেনগুলোর হারগুলো হাতের সাহায্যে বার করে নিয়ে বোনলেস করে ছোট ছোট কিউব করে কেটে নিন। কড়া আঁচে বসিয়ে এক টেবিল চামচ সাদা তেল গরম করে তার মধ্যে এক টেবিল চামচ মাখন দিয়ে গলিয়ে নিন। এবার ওর মধ্যে এক টেবিল চামচ রসুনকুচি দিয়ে হালকা ভেজে নিন। এক টেবিল চামচ পেঁয়াজকুচি ও আন্দাজমতো নুন দিয়ে নেড়ে ভেজে নিন। পেঁয়াজ চকচকে হলে ওর মধ্যে সিদ্ধ করা বোনলেস চিকেনের খণ্ডগুলো দিয়ে ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার ওর মধ্যে এক চা চামচ কালো গোলমরিচের গুঁড়ো দিয়ে নেড়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এক টেবিল চামচ পারসলি পাতা কুচি ছড়িয়ে দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। আঁচের থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করুন। ঠান্ডা হয়ে গেলে রান্না করা চিকেনের মিশ্রণের মধ্যে চার টেবিল চামচ মেয়নিস দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
পাউরুটির স্লাইসের ধারগুলো ধারালো ছুরির সাহায্যে কেটে নিন। দুটো করে পাউরুটির স্লাইস নিন। প্রতিটি স্লাইসের এক পিঠে ভালো করে মাখন লাগিয়ে দিন। এবার একটা পাউরুটির স্লাইসের উপর দুই থেকে তিন টেবিল চামচ রান্না করা চিকেনের মিশ্রণগুলো বিছিয়ে দিয়ে তার উপর আরেকটি পাউরুটির স্লাইস চাপা দিয়ে হাতের সাহায্যে চেপে দিন। এবার একটি ধারালো ছুরির সাহায্যে কোনাকুনি ত্রিভুজাকারে কেটে নিন। একইভাবে বাকি পাউরুটির স্লাইসে বাকি চিকেনের পুর ভরে স্যান্ডউইচ তৈরি করে নিন।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: চিংড়ি মাছের প্রতি সব বাঙালিরই বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে। সে মোচা চিংড়ি, লাউ চিংড়ি থেকে ভাপা চিংড়ি, নারকেল চিংড়ি বা চিংড়ির মালাইকারি যাই হোক না কেন, বাঙালি তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করে থাকে। চিংড়ি মাছের অনেক পদই তো খেয়েছেন। এবার মখমলি চিংড়ি রান্না করে বাড়ির লোকেদের খাইয়ে এবং নিজে খেয়ে দেখুন, কেমন লাগে।
মখমলি চিংড়ি তৈরির পদ্ধতি--৩০০ গ্রাম বাগদা চিংড়ির খোসা ছাড়িয়ে, শিরা বাদ দিয়ে, জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। আন্দাজমতো নুন ও হলুদ চিংড়ি মাছের গায়ে মাখিয়ে রেখে দিন। কড়া আঁচে বসিয়ে তিন টেবিল চামচ মাখন গরম করে নুন ও হলুদ মাখান ও চিংড়ি মাছগুলো দিয়ে হালকা ভেজে নিন। কড়া থেকে তুলে, তেল ঝরিয়ে আলাদা করে রাখুন। চিংড়ি মাছ তুলে নেবার পর আরও এক টেবিল চামচ মাখন গরম করে ওর মধ্যে একটা দারচিনির স্টিক, পাঁচটা ছোট এলাচ, চারটে লবঙ্গ ফোরন দিন।
এবার দুটো বড় সাইজের পেঁয়াজের বাটা দিয়ে খুব ভালো করে নেড়ে কষে নিন। পেঁয়াজের কাঁচা গন্ধ চলে গেলে ও হালকা বাদামি রং হলে ওর মধ্যে এক চা চামচ কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার ওর মধ্যে এক চা চামচ জিরের গুঁড়ো, এক চা চামচ সাদা মরিচের গুঁড়ো ও আন্দাজমতো নুন দিয়ে খুব ভালো করে নেড়ে কষে নিন। এবার ওর মধ্যে দুই বাটি উষ্ণ দুধ ঢেলে দিন। ফুটে উঠলে ভাজা চিংড়িগুলো দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। ঢাকনা বন্ধ করে নিভু আঁচে কিছুক্ষণ রান্না করুন। এরপর ঢাকনা খুলে এক চা চামচ চিনি দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন। কিছুক্ষণ রান্না করুন। ঝোল মাখা মাখা হয়ে গেলে উপর থেকে দুই টেবিল চামচ ক্রিম ছড়িয়ে দিন। নেড়ে মিশিয়ে আঁচ থেকে নামিয়ে নিন। গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন।