এবার বাঙালির পাতে পড়তে পারে রুপোলি ইলিশ (Hilsa)। ডায়মন্ড হারবারে উঠল প্রায় ৮০ টন মাছ। প্রচুর ইলিশ জালে ওঠায় বেশ খুশি মৎস্যজীবীরা। ভোট দিয়েই মাছ ধরতে বেরিয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবারের (Diamond Harbour) মৎস্যজীবীরা। জানা গিয়েছে, শনিবার ও রবিবার মিলিয়ে প্রায় ৮০ টন ইলিশ ঢুকেছে ডায়মন্ড হারবারে। পাশাপাশি গত কয়েক বছরের তুলনায় বেশ বড় সাইজের ইলিশও জালে ধরা পড়েছে।
প্রায় দু মাস গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল মৎস্যজীবীদের। তারপর গত মাস থেকেই মাছ ধরতে গিয়েছিলেন মৎস্যজীবীরা। কিন্তু সেভাবে ইলিশের দেখা মেলেনি। ফলে লোকসানের মুখ দেখতে হচ্ছিল। অবশেষে ভোটের সময়ই ফের মাছ ধরতে গিয়ে জালে ইলিশ পড়ায় মৎস্যজীবী থেকে আড়ৎদার সবাই খুশি।
তবে মাছের দাম খুব একটা যে কমবে এমন আশার বাণী শোনাচ্ছেন না মৎস্যব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি এখনও পাইকারি দর ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি। যা মধ্যবিত্তের নাগালের অনেকটাই বাইরে। তবে আগামী দিনে দাম কমতে পারে।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: নতুন বছরে বাঙালি নিজের হাতে ইলিশের একটি বিখ্যাত পদ রান্না করে বাড়ির লোকেদের খাইয়ে ও নিজে খেয়ে তৃপ্তি পেতে পারেন।বরিশালি ইলিশ তৈরির পদ্ধতি--- গাদা, পেটি, ডিম-সহ প্রতিটি ১৫০ গ্রাম ওজনের মোট চারটি মাছ (৬০০ গ্রাম) নিয়ে জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে জল মুছে নিন। হাফ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো ও আন্দাজমতো নুন মাখিয়ে নিন। একটি পাত্রে ১ চা চামচ শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো, ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, ২ টেবিল চামচ টক দই ও আন্দাজমতো জল দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন।
একটি পাত্রে ৫০ গ্রাম সাদা সর্ষে বাটা নিয়ে তার মধ্যে এক কাপ জল দিয়ে ভাল করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। কড়া আঁচে বসিয়ে ৫০ গ্রাম সর্ষের তেল গরম করে হাফ চা চামচ ও চারটে গোটা কাচা লঙ্কা ফোড়ন দিন। এবার ইলিশ মাছের খণ্ডগুলো দিয়ে উল্টে পাল্টে দুই পিঠ ভেজে নিন। এবার ওর মধ্যে শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো, হলুদ ও টক দইয়ের মিশ্রণটা ঢেলে খুন্তির সাহায্যে নেড়ে দিন। মাছের খণ্ডগুলো উল্টে পাল্টে দিন। এবার সাদা সর্ষে বাটা ও জলের মিশ্রণটা দিয়ে খুন্তির সাহায্যে নেড়ে মিশিয়ে নিন। আন্দাজমতো নুন দিয়ে নেড়ে মিশিয়ে নিন।
ইলিশের খণ্ডগুলো আবার উল্টে দিয়ে নিভু আঁচে মিনিট পাঁচেক রান্না করুন। এবার ওর মধ্যে এক টেবিল চামচ নারকেল বাটা, এক টেবিল চামচ কাজু বাদাম বাটা, এক টেবিল চামচ কাচা লঙ্কা বাটা, এক চা চামচ চিনি দিয়ে খুন্তির সাহায্যে ভাল করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। এবার ৪টে চেরা গোটা কাচা লঙ্কা ছড়িয়ে দিয়ে নিভু আঁচে আরও পাচ মিনিট রান্না করুন। হয়ে গেলে আঁচ থেকে নামিয়ে গরম ভাত সহযোগে পরিবেশন করুন।
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়: পুজোর সময় এবং বিজয়া করতে আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবদের আনাগোনা বাড়িতে লেগেই থাকে। একসঙ্গে আড্ডা, গান-বাজনার সঙ্গে চলবে রকমারি খাওয়া দাওয়া। উৎসবের আবহে সবাই একসঙ্গে মধ্যহ্নভোজে সাদা ভাতের সঙ্গে গাদা পেটিওয়ালা ইলিশ মাছের ভাপা খাওয়ার মজাই আলাদা। খেয়ে ও খাইয়ে সমান তৃপ্তি। তাই চাইলে দশমীর পরেও বাড়িতে বানিয়ে ফেলুন ভাপা ইলিশ।
ভাপা ইলিশ তৈরির পদ্ধতি: একশো গ্রাম ওজনের ছ'টা গাদা পেটিওয়ালা ইলিশ মাছের খণ্ড জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে জল ঝড়িয়ে নিন। একটি পাত্রে পাঁচ টেবিল চামচ সাদা সর্ষে বাটা, দুই টেবিল চামচ পোস্ত বাটা, দুই টেবিল চামচ টক দই, হাফ চা চামচ হলুদ গুড়, এক টেবিল চামচ, কাচা লঙ্কা বাটা, হাফ চা চামচ শুকনো লঙ্কা বাটা, আন্দাজ মতো নুন, পাঁচ টেবিল চামচ সর্ষের তেল নিয়ে হাতের সাহায্যে ভাল করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন।
এবার ইলিশের খণ্ডগুলো মিশ্রণের মধ্যে দিয়ে হাতের সাহায্যে ভাল করে ইলিশের গায়ে মিশ্রণ মাখিয়ে নিন। এবার প্রতিটি ইলিশের খণ্ডের উপর দু'টো করে চেরা কাচা লঙ্কা রেখে আধঘণ্টা আলাদা করে রেখে দিন। আধ ঘণ্টা বাদে কড়া আঁচে বসিয়ে অর্ধেক জল দিন। কড়ার জল ফুটে উঠলে মিশ্রণ মাখানো ইলিশ মাছ-সহ পাত্রটা জলের উপর ভাসিয়ে ঢাকনা বন্ধ করে নিভু আঁচে ভাপে বসান। পনেরো থেকে কুড়ি মিনিট বাদে ঢাকনা খুলে দেখুন, মাছের পাঁক ধরলে আচ থেকে নামিয়ে নিন। গরম ভাত সহযোগে ভাপা ইলিশ পরিবেশন করুন।
সদ্য ভারত সফর শেষে বাংলাদেশে (Bangladesh) ফিরেছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার চার দিনের ভারত সফরে এ দেশে ঢুকেছিল প্রায় দু হাজার একশো টন পদ্মার ইলিশ। কিন্তু সপ্তাহ ঘুরতেই দুঃসংবাদ বাঙালি হেঁশেলে। আগামী সাত দিনের মধ্যে ভারতে ইলিশ রফতানি স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে আবেদন জমা। রীতিমতো আবেদন করে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে। রবিবার এমনই তথ্য বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদনে।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ সরকার-সহ বিভিন্ন বিভাগ এবং তিনটি সংস্থার কাছে ভারতে ইলিশ রফতানি বন্ধের আবেদনের নোটিস পাঠিয়েছেন সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।
প্রসঙ্গত, ভারতে ইলিশ রফতানির উপর আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। তবে গত দু’বছরের মতো দুর্গাপুজোর আগে এ বছরও উপহার হিসাবে ইলিশ পাঠানোর কথা ঘোষণা করে বাংলাদেশ। কিন্তু পুজো উপহার বাবদ আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে ২০৮০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে আসবে বলে জানা গিয়েছিল। সরকারের কাছে এই আবেদন জমা পড়ায়, কী সিদ্ধান্ত হয়। সেদিকে তাকিয়ে এপার বাংলা।
ভোজনরসিক বাঙালিরা ইলিশের (hilsa) ভক্ত। ইলিশের যাই পদ হোক, তাই প্রিয়। এই ইলিশের একরাশ জোগান দেয় বাংলাদেশ (Bangladesh)। অন্যদিকে, সুন্দরবনে (Sundarban) জুন মাস থেকে অগাস্ট পর্যন্ত ইলিশের দেখা বেশি মেলে। এই সময়ই অনুষ্ঠিত হয় ইলিশ উৎসব। পর্যটকদের আগমনও বেশি হয় এই সময়। কিন্তু এবছর তাতে বাধ সেধেছে ইলিশের দাম ও বাংলাদেশ থেকে পর্যাপ্ত ইলিশ না আসা। এখনও সেভাবে বাংলাদেশের ইলিশের দেখা নেই বঙ্গে।
সুন্দরবনবাসীরা জানান, বাংলাদেশের ইলিশ এই রাজ্যে কম আসার কারণে ইলিশের দাম একেবারে আকাশছোঁয়া। আম বাঙালিদের চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কপালে। বিশেষ করে এবছর ইলিশ উঠছে ডায়মন্ড হারবার, ঝড়খালিতে। সেই কারণেই এবছর ইলিশের দাম ঊর্ধ্বমুখী। পাশাপাশি সুন্দরবনের পর্যটকরা এই সময় ইলিশ উৎসবে মেতে ওঠেন। কিন্তু এবছর তা আর হয়নি।
এখানকার মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, বাংলাদেশের ইলিশ আসলে অনেকটা সুবিধা হতো আম বাঙালিদের। কারণ, বাংলাদেশের মিষ্টি জলে ইলিশ মাছ বেশি সুস্বাদু। এবছর যা মাছ বাজারে রয়েছে তা এই রাজ্যেরই। সেই তুলনা ডায়মন্ড হারবার, ঝড়খালি, সুন্দরবনের ইলিশ মাছের স্বাদ কম। তাই সকলেই বাংলাদেশের ইলিশের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। কবে আসবে এবঙ্গে বাংলাদেশের ইলিশ মাছ, সেইদিকেই তাকিয়ে আছে এ বাংলার মানুষ। ইলিশের দাম বর্তমানে বাজারে ৫০০/৭০০ থেকে ১০০০ টাকা।
তবে এই সময় যারা ঘুরতে গিয়েছেন সুন্দরবনে, সেই সমস্ত পর্যটকদের পাতে বাংলার ইলিশ পড়তে একটু হলেও খুশি তাঁরা।
ভরা বর্ষায় সেভাবে বাঙালির পাতে নেই ইলিশ মাছ। নেপথ্যে আগুন ছোঁয়া দাম। কিন্তু দুর্গা পুজোর আগে সুখবর। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই রাজ্যে পদ্মার ইলিশ আসার সম্ভাবনা। তারও দামও থাকবে নাগালের মধ্যে। মৎস্য ব্যবসায়ীদের সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরে রাজ্যে দুর্গাপুজোর আগে বাংলাদেশ থেকে আসছে ইলিশ। সেই ইলিশ আমদানি করছেন রাজ্যের মৎস্য ব্যবসায়ীরা। গতবছর পুজোর মাত্র দিন কয়েক আগে পদ্মার ইলিশ এরাজ্যে এসে পৌঁছনোয় ক্রেতাদের চাহিদা ছিল তুঙ্গে।
তাই এবার আগেভাগেই ইলিশ আমদানির ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানান, এবার বিক্রির জন্য আরও কিছুটা বেশি সময় চেয়ে অগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে আবেদন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনারকে। কয়েক দিনের মধ্যে সেই অনুমতি মিলবে। ফলে খুব দ্রুত পদ্মার ইলিশের স্বাদ পেতে চলেছেন রাজ্যবাসী।