'সন্দেশখালির বাঘ'-এর চোখে জল। একসময় যাঁর দাপটে বাঘে গরুতে একঘাটে জল খেত, আজ সে নিজের অশ্রু আর ধরে রাখতে পারলেন না। মেয়ের 'আব্বা' ডাক আর স্ত্রীয়ের কান্না শুনে একেবারে মুষড়ে পড়লেন বেতাজ বাদশাহ শেখ শাহজাহান। মুখ ঘুরিয়ে চোখের জল মোছার আগে স্ত্রীকে 'আল্লাহর কাছে দোঁহা' করার কথা বলেন। সোমবার বসিরহাট মহকুমা আদালতের বাইরে এক অন্য রূপ দেখা গেল শাহজাহানের।
সোমবার শাহজাহান, আলমগীর, শিবু হাজরা, মাফুজার মোল্লা, জিয়াউদ্দিন, দিদার-সহ মোট ১২ জনকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ। সাসপেন্ডেড তৃণমূল নেতাকে যখন প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়, তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন তাঁর স্ত্রী তসলিমা বিবি, মেয়ে ও পরিবারের কয়েকজন। তখনই ক্যামেরায় ধরা পড়ে এমন বিরল মুহূর্ত।
এবার শেখ শাহজাহানের ভাই শেখ সিরাজউদ্দিনের নামে লুকআউট সার্কুলার জারি করল ইডি। এর আগে তলব করা হলে, একাধিকবার ইডির তলব এড়িয়ে গিয়েছেন শেখ সিরাজউদ্দিন। প্রায় সাড়ে তিন মাস অতিক্রান্ত, এখনও পর্যন্ত সিরাজউদ্দিনের খোঁজ মেলেনি ইডির। তাই এবার বিমানবন্দর থেকে শুরু করে পোর্ট প্রত্যেকটি জায়গায় লুকআউট সার্কুলার জারি করা হল।
সূত্রের খবর, শেখ শাহজাহানের দুই আত্মীয়ের সঙ্গে ব্যবসার অংশীদারি ছিলেন শেখ আলমগীর। শেখ আলমগীর এই দুই ব্যক্তির সঙ্গে ট্যাক্স কনসালটেন্টের অফিসে যেতেন এবং একই কম্পিউটার থেকে একসঙ্গে বসে সব টেন্ডারের জন্য আবেদন করতেন। প্রতিটি টেন্ডারের দরদাম এই তিন ব্যক্তি স্থির করতেন। এই টেন্ডারের কোটেশন এমনভাবে করা হত যাতে যে টেন্ডারটা প্রয়োজন সেটাই প্রত্যেকে পায়। তাঁরা টেন্ডারিং পদ্ধতিতে কারসাজি করে সরকারের কাছ থেকে কম টাকায় টেন্ডার পেতেন।
পাশাপাশি, শেখ আলমগীর তাঁর বয়ানে স্বীকার করেছেন, শিবপ্রসাদ হাজরা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ টেন্ডার সংক্রান্ত কাজ তাঁর জন্য করেছিলেন। যা বরাদ্দ করা হয়েছিল M/S SKA Enterprise এর জন্য। এই ধরনের টেন্ডারের জন্য শেখ আলমগীর মোট অর্থের ২৫ শতাংশ নিতেন সরকারের থেকে এবং বাকি ৭৫% অর্থ ট্রান্সফার করতেন শিব প্রসাদ হাজরার (শিবু) নিজের ফার্ম M/S Hazra Enterprises-এ। এই টাকা দেওয়ার জন্য জাল বিল তৈরি করা হত। যেখানে দেখানো হত এই টাকা নির্মাণ সামগ্রী কেনার জন্য প্রয়োজন হয়েছে। অর্থাৎ M/S SKA Enterprise নির্মাণ সামগ্রী M/S Hazra Enterprise থেকে নিয়েছেন ওই অর্থের বিনিময়ে। সেই সঙ্গে শিবপ্রসাদ হাজরার বয়ান থেকে স্পষ্ট, তিনি এক কোটিরও বেশি অর্থ জাল বিলের পরিবর্তে M/S SKA Enterprise কে দিয়েছিলেন।
শাহজাহানের সাম্রাজ্যের পরতে পরতে শুধুই দুর্নীতির অভিযোগ। শাহজাহান ও তার অনুগামীদের বিরুদ্ধে জমছে অভিযোগের পাহাড়। ইতিমধ্যেই BLRO মাঠ দখলের অভিযোগ উঠে এসেছে শাহজাহান ও তার সাগরেদদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ মূলত মাঠটি দখল করেছিল শাহজাহান ঘনিষ্ঠ শিবু হাজরা এবং উত্তম সর্দার। তদন্তের গতি বাড়াতেই এবার ইডির হাতে এসেছে শাহজাহানের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তথ্য। তদন্ত বলছে সন্দেশখালিতে সরকারি টাকায় তৈরি হয়েছিল বাজার। কিন্তু সেই বাজারের চুক্তিপত্রে মালিক শেখ শাহজাহান। ২০১৯ সালে এই বাজারের উপর নিজের মালিকানা চাপায় শাহজাহান। বাজারের সমস্ত মাছ ব্যবসায়ীদের উপরও জোরজুলুম চালাত শাহজাহান বাহিনী। শাহজাহানের নিজস্ব ফিসারি কোম্পানি সাবিনা ফিশারিতে ব্যবসায়ীদের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মাছ বিক্রয়ের জন্য জোর করত শাহজাহান বাহিনী।
এখানেই শেষ নয় শাহজাহানের দুর্নীতি। মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হুমকি দিয়ে আদায় করা হত তাদের রোজের ব্যবসার একাংশ। ব্যবসায়ীদের বলা হত এই টাকা সরকারকে দিতে হবে। কিন্তু টাকা কোনওদিনই জমা পড়ত না পঞ্চায়েতে। গরীব ব্যবসায়ীদের সেই টাকা সোজা পৌঁছে যেত শাহজাহান অনুগামীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।
লোকসভা ভোটের আবহে শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দের হাতে এবার কোন তথ্য এসে পৌঁছয় সেটাই দেখার।
জমি লুঠের পর এবার ইট ভাটাও গিলে খাওয়ার অভিযোগ শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। সন্দেশখালির সরবেড়িয়ার ইটভাটা এসএনএফবি। বসিরহাটের ভবতোষ বন্দ্যোপাধ্যায় লিজ নিয়ে চালাচ্ছিলেন ভাটাটি। অভিযোগ, ভাটায় শ্রমিক সরবরাহ করতেন সরবেরিয়া আগারহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রাক্তন সদস্য মীজানুর রহমান মোল্লা। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর সন্দেশখালিতে প্রভাব বাড়তে শুরু করে শাহজাহানের। সেই থেকেই ইটভাটায় নজর পড়ে মীজানুরের। তারপর শুরু হয় ইটভাটা হাতানোর ফন্দি।
ইটাভাটার লিজ নেওয়া ভবতোষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ভাটা হাতিয়ে নিতে তাকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন মীজানুর। প্রাণভয়ে বসিরহাটের বাড়িতে ফিরে যান তিনি। এর মধ্যে দখল হয় ইটভাটা। ভাটা হারিয়ে দেনার দায় জর্জরিত হয়ে পড়েন ভবতোষ। মীজানুরের অত্যাচারে সর্বস্বান্ত হয়ে এখন প্রৌঢ়ের ঠাঁই বোনের বাড়িতে।
এখানেই শেষ নয়, ভবতোষ বন্দ্যোপাধ্যায় এক ব্যবসায়িক অংশীদার জানালেন, জ্বালানির কয়লা নিয়ে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা এখনও দেয়নি মীজানুর। গিয়েছিল শাহজাহানের কাছে বিচার চাইতেও। কিন্তু মেলেনি সুরাহা। তবে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শাহাজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা মীজানুর রহমান মোল্লা।
ভয়,সন্ত্রাসে একদিন চাপা পড়ে ছিল সমস্ত অভিযোগ। শাহজাহানের গ্রেফতারির পর বেরিয়ে আসছে ক্ষোভ। জমি লুঠের পর এবার শাসকের থাবায় ইটভাটা? সন্দেশখালিকে কি ব্যক্তিগত সম্পত্তি বেছে নিয়েছিল শাহজাহান অ্যান্ড কোম্পানি?
সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহান ও তার অনুগামীদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের জমি দখলের বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। আদালতের নির্দেশে বর্তমানে এই বিষয়টির তদন্ত করছে সিবিআই। শনিবার বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে সন্দেশখালির বিভিন্ন এলাকায় যান সিবিআই-এর আধিকারিকরা। শনিবার তাঁরা মাঝের সরবেড়িয়া এলাকার শ্যামল ঘোষের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছন। সেখানে তাঁরা শ্যামল ঘোষের জমি সংক্রান্ত নথি খতিয়ে দেখেন। পাশাপাশি, দখল হয়ে যাওয়া জমিটিও তাঁরা ঘুরে দেখেন। সেই সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা।
অন্যদিকে, শনিবারই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে সন্দেশখালির খুলনার ১০ নং পাড়ার সমীর মণ্ডলের বাড়িতে যান সিবিআই-এর ছয় সদস্যের একটি টিম। অভিযোগ, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর ও লুঠপাট চালিয়েছিল শাহজাহান বাহিনী। সেই অভিযোগের তদন্ত করতেই শনিবার তাঁর বাড়িতে যান সিবিআই আধিকারিকরা। সেখানে তাঁরা সমীর মণ্ডলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।
এর পাশাপাশি, মহন্ত সর্দারের বাড়িতেও যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। মহন্ত সর্দারের অভিযোগ ছিল, মূলত শাহজাহানের ভাই শেখ আলমগীরের বিরুদ্ধে। মহন্ত সর্দারের জমি আলমগীর দখল করেছিল বলে অভিযোগ। এ নিয়ে সিবিআই-এর কাছে অভিযোগ করেছিলেন মহন্ত সর্দার। সেই অভিযোগের তদন্ত করতেই শনিবার মহন্ত সর্দারের বাড়িতে যান সিবিআই-এর আধিকারিকরা। সিবিআই-এর এই তৎপরতায় জমি দখল সংক্রান্ত আর কোন কোন তথ্য আগামী দিনে উঠে আসে, সেটাই এখন দেখার।
সন্দেশখালির একদা ত্রাস শেখ শাহজাহানের স্ত্রী তসলিমা বিবিকে ফের জেরা ইডির। প্রসঙ্গত, এর আগেও একাধিকবার কেন্দ্রীয় জেরার মুখে পড়েছিলেন শাহজাহানের স্ত্রী। এবার বুধবারের দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের হাতে উঠে এসেছে একাধিক বিস্ফোরক তথ্য।
শাহজাহান ও তাঁর স্ত্রী তসলিমা বিবির রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত নথির সূত্র ধরেই, তসলিমার নামে একাধিক জমি, হোটেল এবং গেস্ট হাউসের সন্ধান পেয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। ইডি সূত্রে খবর, ২০১৫ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিনিয়োগ করা হয়েছিল এই সমস্ত ক্ষেত্রে। কেন্দ্রীয় তদন্তে উঠে এসেছে প্রতিটি ক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ কোটি টাকা। এখানেই শেষ নয়, শেখ শাহজাহানের অনুগামীদের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী তসলিমা বিবির যৌথ অংশীদারী রয়েছে। যদিও তসলিমা বিবিকে এই বিপুল সম্পত্তি কেনার জন্য, টাকার উৎসের কথা জানতে চাইলে জানান, কিছুই জানেন না তিনি। শেখ শাহজাহান তাঁকে বিভিন্ন নথিতে সই করতে বলতেন। সেই মতো তিনিও সই করতেন। এমনকি তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিপুল অর্থ কোথা থেকে এলো সে বিষয়েও কিছুই জানেন না শাহজাহানের স্ত্রী তসলিমা বিবি। এই সমস্ত বিষয়ে একমাত্র জানেন শেখ শাহজাহান, ইডির জেরার মুখে এমনটাই জানালেন তসলিমা বিবি।
ঘুরপথে কালো টাকা সাদা করতেই, শেখ শাহজাহানের দুর্নীতির জাল বিছানো তাঁর পরিবারের মধ্যেও। নিজের দুর্নীতির স্বার্থে শাহজাহান ব্যবহার করেছেন নিজের পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। এমনিতেই সন্দেশখালির একদা ত্রাসের নামে রয়েছে বিভিন্ন অভিযোগ। সে অভিযোগ এতটাই গুরুতর যে বারংবার শাহজাহানের ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছে সন্দেশখালি। তার ফাঁসির দাবিতে গর্জে উঠেছেন রাজ্যের আইনজীবীদের একাংশও। বিপদে পড়েছেন বুঝে একাধিকবার ইডির কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন শাহজাহান। কিন্তু তার দুর্নীতির শেষ কোথায়? দুর্নীতির তল খুঁজে পেতেই আপাতত মরিয়া কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এখন দেখার যে শাহজাহানের এই দুর্নীতির জাল আর কতদূর বিস্তৃত। শুধুই কি শাহজাহান, নাকি নেপথ্যে রয়েছেন কোনও প্রভাবশালী? সেই সব উত্তরের খোঁজেই চর্চা তুঙ্গে।
শাহজাহান এবং তাঁর সাগরেদ মিলে সন্দেশখালি জুড়ে ভয়াবহ অত্যাচার চালিয়েছে, তা এতদিনে রাজ্যবাসী শুনেছে। তবে বিচারপ্রক্রিয়া এখনও চলছে। তাই সেসব পদক্ষেপ মেনেই কড়া হাতে সিবিআই সন্দেশখালির সব মামলার তদন্ত করছে। সম্প্রতি সিবিআইকে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল সন্দেশখালির সমস্ত বাসিন্দাদের অভিযোগ নিতে এক ওয়েবসাইট বা ইমেইল খোলার। জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের তৈরি সেই ইমেলে জমা পড়েছে প্রায় ৬৫০-রও বেশি অভিযোগ। এবার সেই সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযোগকারীদের বয়ান রেকর্ড করতে ১০ জনের এক টিম গঠন করেছে সিবিআই। সন্দেশখালিতে অভিযোগকারীদের কাছে পৌঁছে তাঁরা রেকর্ড করবে সবটা।
কলকাতা হাইকোর্টে এই সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ২ মে। এখন দেখার নতুন করে উঠে আসা অভিযোগে যাচাই করে, সন্দেশখালির অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন কঠিন পদক্ষেপ নেয় আদালত।
জমি দখল, ভেড়ি দখল, মাছের আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত মামলা। সন্দেশখালির বাদশাহ শেখ শাহজাহানের ভাই আলমগীর এবং তাঁর দুই শাগরেদ দিদার বাক্স মোল্লা ও শিবপ্রসাদ হাজরাকে এই মামলায় অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা নগর দায়রা আদালতে পেশ করল ইডি। সূত্রের খবর, ধৃতদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেছেন ইডি আধিকারিকরা।
সূত্রের খবর, বুধবার জমি দখল, ভেড়ি দখল এবং মাছের আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত মামলায় তিন অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট-এর আবেদন করেছিল ইডি। প্রসঙ্গত, সন্দেশখালি এবং ন্যাজাট থানায় ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মহিলা নির্যাতন, জমি দখল এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের উপর জুলুমবাজির যে সমস্ত অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তার মধ্যে শেখ শাহজাহান ছাড়া নাম ছিল শিবু হাজরা এবং বেশ কয়েকজনের। ইডি শাহজাহানের বেআইনি কাজকর্মের তদন্তে নেমে এবার সেই দিকেই নজর দিয়েছে। যে ব্যাপারে এ বার তাঁর সহযোগীদেরও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে ইডি। সেই চেষ্টারই প্রাথমিক পর্বে এই তিন জনকে আদালতে হাজির করালেন ইডির গোয়েন্দারা।
উল্লেখ্য, ইডির উপর হামলার ঘটনায় ইডি আধিকারিকদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী শেখ শাহজাহান। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে জিজ্ঞাসাবাদের সময় বলেছেন, হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে কোনও কিছুই জানতেন না। শেখ শাহজাহানের বাড়িতে যেদিনকে ইডি আধিকারিকরা তল্লাশি করতে গিয়েছিলেন সেদিন কোনওভাবেই মারধর করার নিদান তিনি দেননি।
ইডি সূত্রে আরও খবর, শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ট বেশ কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ী এলেন ইডি দফতরে। তাঁদেরকে তলব করা হয়েছিল। বেশ কিছু নথি নিয়ে তাঁরা ইডি দফতরে আসেন। মাছ ব্যবসার লেনদেন সংক্রান্ত নথি নিয়ে আসতে বলা হয় এবং সেই সব বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে ইডি সূত্রে খবর।
সিবিআই তদন্ত হলে ভালই হবে। ইডি দফতর থেকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথাই বললেন সন্দেশখালির বাঘ শেখ শাহজাহান। বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট সন্দেশখালির ঘটনার তদন্তের ভার সিবিআইয়ের হাতে দিয়েছে। হঠাৎ করে শেখ শাহজাহানের এই সুর বদলে নতুন জল্পনা তৈরি হয়েছে।
যদিও শাহজাহান এই মুহূর্তে ইডি হেফাজতে রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে মেডিকেল চেকআপের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় জোকা ইএসআই হাসপাতালে। ইডি দফতর থেকে বেরোনোর সময় শেখ শাহজাহানকে প্রশ্ন করা হয় যে এবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়, উত্তরে শাহজাহান বলে সিবিআই তদন্ত হলে খুব ভালো হবে। প্রশ্ন করা হয় ইডি ও তদন্ত করছে উত্তরে বলেন সবটাই ভালো হবে।
হঠাৎ করে শেখ শাহজাহানের এই সুর বদলে রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপি কটাক্ষ করে বলেছে, শেখ শাহজাহান বুঝে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। সেকারণেই এখন সিবিআইয়ের হয়ে কথা বলছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গতকালই সন্দেশখালির ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে দিয়েছে। এবং সন্দেশখালির বাসিন্দারা সরাসরি সিবিআইকে অভিযোগ জানাতে পারবেন। সেই সঙ্গে সন্দেশখালিকতে স্পর্শ কাতর এলাকায় সিসিটিভি এবং বড় আলো বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সন্দেশখালির ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চের নির্দেশ, এব্যাপারে রাজ্যকে সব রকম সাহায্য করতে হবে। সেখানকার মানুষ তাদের অভিযোগ সরাসরি সিবিআইকে জানাতে পারবে। এজন্য সিবিআইকে আলাদা পোর্টাল তৈরি করতে হবে। জমি দখল, ধর্ষণ, চাষের জমিকে ভেড়িতে পরিবর্তন করা সহ সমস্ত অভিযোগের তদন্ত করবে সিবিআই। আদালতের নজরদারিতে হবে তদন্ত। স্পর্শকাতর এলাকায় ১৫ দিনের মধ্যে সিসিটিভি বসাতে হবে। বসাতে হবে এলইডি আলো। সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিতেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া আদালত যে কোনও পদমর্যাদার যেকোন ব্যক্তিকে তদন্তের স্বার্থে ডেকে পাঠাতে পারবে সিবিআই। ২ মে পরবর্তী শুনানির দিন তদন্তে অগ্রগতির রিপোর্ট দেবে সিবিআই।
এর আগে গত পাঁচ জানুয়ারি শেখ শাহজাহানের বাড়িতে গিয়ে ইডির আধিকারিকদের ওপরে হামলার ঘটনার তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুযায়ী সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত সাসপেন্ডেড তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই আধিকারিকরা তদন্ত করতে সন্দেশখালির আকুঞ্জিপাড়ায় শেখ শাহজাহানের বাড়ি যাওয়ার পাশাপাশি তাঁর স্ত্রীকে ডেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
এদিন আদেশ দিতে গিয়ে আদালত বলেছে, সন্দেশখালির ঘটনার কথা বিবেচনা করে আদালত মনে করে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত। তাই আদালত মনে করে যে এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়া হোক, সরকারকে তাঁকে যথাযথ সহায়তা করতে হবে। আদালতের তরফে আদেশে বলা হয়েছে, অভিযোগ গ্রহণের জন্য একটি পোর্টাল ও ইমেল আইডি চাবলু করতে হবে। জেলাশাসককে এব্যাপারে তারিখ উল্লেখ করে পর্যাপ্ত প্রচার চালাতে হবে। আদালত বলেছে, সিবিআই জমি দখলের অভিযোগের তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিল করবে। সাধারণ মানুষ ছাড়াও সরকারি, বেসরকারি যে কোনও ব্যক্তি কিংবা সংস্থার (এনজিও) কর্তাব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অন্যদিকে আদালত পুরো বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।
রেশন বণ্টন দুর্নীতির পরতে পরতে রহস্য। এই দুর্নীতির তদন্তে নেমে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এসেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। জমি দখল, রেশন দুর্নীতি সহ একাধিক মামলায় ইতিমধ্যে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছে শেখ শাহজাহান। একাধিক তথ্য প্রমাণ সামনে রেখে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছেন ইডি আধিকারিকেরা। শুধুমাত্র শেখ শাহাজাহান নয় সন্দেশখালি জুড়ে বাহুবলে জমি দখলে যুক্ত ছিলেন শাহজাহানের ভাই শেখ আলমগীর সহ শিবু হাজরা ও দিদার বক্স। তদন্তের আরও গভীরে পৌঁছতে তাই আগামী দিনে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে তাঁদের বলে মনে করছেন আধিকারিকরা। তাই এই তিন অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালাতে চাইছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
গত সোমবার শাহজাহানের স্ত্রীকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি আধিকারিকরা। আর এবার মাছ সংক্রান্ত মামলায় শেখ শাহজাহানের স্ত্রীকে তলব ইডির। চলতি সপ্তাহেই তাকে ইডির দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে বলে খবর।
কথায় আছে কান টানলে মাথা আসে। ইডির ওপর হামলা। শাহজাহানের বেপাত্তা। সঙ্গ দিয়েছিল পরিবার। শাসক দলের আশীর্বাদের হাত তাঁর মাথার উপর থাকায় তখনও অবধি বেঁচে যাওয়ার আশা ছিল শাহজাহানের মনে, ওয়াকিবহাল মহল বলতে শুরু করেছিল এমনটাই। তবে, দ্বিতীয়বার তাঁর আকুঞ্জিপাড়ার বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালাতেই উদ্ধার প্রয়োজনীয় একাধিক নথি-পত্র উদ্ধার করে শাহজাহানের প্রাসাদ প্রমাণ বাড়ি সিল করে দিয়ে আসেন ইডির আধিকারিকরা, এবার সেই বাড়ি ফিরে পেতে মরিয়া শাহজাহান।
আইনজীবী মারফত শাহজাহান এবং তাঁর পরিবার দ্বারস্থ আদালতের। তাঁদের দাবি, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফ থেকে আকুঞ্জিপাড়ার বাড়ি সিল করা হয়েছে মাত্র, বাজেয়াপ্ত করা হয়নি। তাই আদালতের কাছে তাঁদের আবেদন বাড়িটি ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
যদিও আদালত এবিষয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, বাড়ি ফিরে পেতে গেলে ইডির অনুমতি নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি ইডি আধিকারিকদের দেখাতে হবে। যদি ইডি সম্মতি দেয়, তবেই বাড়ি ফিরে পাবে শাহজাহানের পরিবার।
একদিকে হেফাজতে নিয়ে একাধিক তদন্তের প্রশ্নজাল, অপরদিকে বাড়ি ফিরে পেতেও আদালতের নির্দেশে মুখাপেক্ষী হতে হচ্ছে এই ইডির, যাকে হালকা ছলে নিয়ে তদন্তকারী আধিকারিকদের ওপর হামলা চালিয়েছিলেন শাহজাহান। কর্মের ফল এভাবেই ভোগ করতে হবে শাহজাহানকে- হেনস্থা দোসর হয়ে জুড়ে থাকবেই তাঁর ক্ষোভ উগড়াচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
ফের শেখ শাহজাহানের স্ত্রীকে তলব করল ইডি। গতকাল অর্থাৎ সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় চলেছে তলব। আগামী বুধবার আবার সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহানের স্ত্রীকে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরার পাঠিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সূত্রের খবর, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে চলছে এই জিজ্ঞাসাবাদ।
গতকাল, সোমবার সকাল ১০ নাগাদ শেখ শাহজাহানের স্ত্রী তসলিমা বিবি তাঁর আইনজীবিকে নিয়ে ইডি দফতরে হাজির হন। প্রায় ১১ ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদের পর রাত ন'টা নাগাদ ইডির অফিস থেকে বেরিয়ে যান তিনি। তারপর একদিন যেতে না যেতেই আবারও তলব করা হয়েছে শাহজাহান স্ত্রী তসলিমা বিবিকে। ইডি সূত্রে খবর, শাহজাহানের ব্যবসার গোপন তথ্য জানতেই স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন ইডি অফিসাররা।
গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতি মামলায় তল্লাশি করতে গিয়ে সন্দেশখালিতে আক্রান্ত হয় ইডি। সেই হামলা ঘটনার পর থেকে ৫৫ দিন বেপাত্তা ছিলেন তৃণমূল নেতা শেখ শাহাজাহান। তারপর গত ২৯ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হয় তাঁকে গেফতার করা হয়। আদালতে হাজিরার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল শাহজাহানকে। তখন আদালতকে শাহজাহান জানিয়েছিলেন, স্ত্রীর অসুস্থতার জন্যই তিনি হাজিরা দিতে পারছেন না। সোমবার ইডির অফিসেই প্রথম প্রকাশ্যে এলেন শাহজাহানের স্ত্রী তসলিমা বিবি।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অবশেষে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার মোবাইল আনলক করতে সক্ষম হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আশা এই মোবাইলে থেকে মিলতে পারে জরুরি তথ্যপ্রমাণ। এবার তাই মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার চ্যাট হিস্ট্রিতে নজর তদন্তকারীদের।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার বাড়িতে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। প্রায় ১৪ ঘণ্টার তল্লাশিতে মন্ত্রীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল প্রায় ৪১ লক্ষ টাকা। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল মন্ত্রীর ফোন। পরবর্তীতে, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাকে ইডির সদর দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তরফে। যদিও মন্ত্রীর পরিবার সূত্রে দাবি ছিল, তাঁকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র উদ্ধার হওয়া টাকা, মোবাইল ফোনের সমস্ত রকম ডিটেলস এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ডিটেলস জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ইডির তরফে।
এছাড়াও ইডির নির্দেশ ছিল মন্ত্রীর বাজেয়াপ্ত মোবাইল ফোন আনলক করার। এরপরেই মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার একজন প্রতিনিধিকে সমস্ত নথি-সহ পাঠানো হয় সিজিও-তে। তিনিই তদন্তকারী আধিকারিকদের সামনে আনলক করেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথের মোবাইল। ইডির দাবি, মন্ত্রীর মোবাইল থেকে খুলতে পারে, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের রহস্যের জট। আর তাই এবার ইডির আতস কাঁচের নিচে মন্ত্রীর বাজেয়াপ্ত মোবাইল।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে বলাগড়ের বহিঃস্কৃত এক যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের বাড়িতে তল্লাশির সূত্র ধরেই মন্ত্রী চন্দ্রনাথের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। এখন মন্ত্রীর মোবাইল থেকে, নিয়োগ দুর্নীতি সম্পর্কে আর কী তথ্য উঠে আসে ইডির হাতে, সেটাই দেখার। তবে যেভাবে রাজ্যের একের পর এক দুর্নীতি কাণ্ডে, শাসকদলের একাধিক হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীর নাম জড়াচ্ছে, তাতে প্রশ্ন উঠছে বারংবার দুর্নীতিতে তৃণমূলই কেন? এই দুর্নীতির জাল শাসকদলের মধ্যে কতদূর অবধি বিস্তৃত? শাসকদলের দুর্নীতির কারণে কেন বারবার বঞ্চিত হতে হবে রাজ্যবাসীকে? জবাব চাইছে বাংলার ওয়াকিবহাল মহল।
'রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র' করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে, কয়েকদিন আগে এমনই দাবি করেছিলেন শেখ শাহজাহান। এবার বিজেপি মিথ্যে কথা বলছে সরব হন তিনি। আজ, শুক্রবার জোকা ইএসআই হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল সন্দেশখালির বাঘকে। সেখান থেকে বেরোনোর সময় তিনি এই মন্তব্য করেন।
শেখ শাহজাহান এদিন দাবি করেছেন, বিজেপির দালালরা তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে কথা বলছে। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক পাচারকের অভিযোগ ছিল। যেটা একেবারেই মিথ্যে বলে দাবি করেছেন তিনি। কোনও রকম মাদক কারবারের সঙ্গে তিনি যুক্ত নন। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে প্রচার চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন শেখ শাহজাহান।
এদিকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে শেখ শাহজাহানকে দেখে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়। হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভকারীরা তাঁকে দেখে 'চোর চোর' স্লোগান দিতে শুরু করেন। তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন শেখ শাহজাহানকে নিরাপত্তা না দিয়ে বুথে নিরাপত্তা দেওয়া। একজন চোরকে নিরাপত্তা দিয়ে কি হবে। তার চেয়ে বুথে বুথে নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সন্দেশখালিতে অপরাধীরা জেল থেকে ছাড়া পাবে না। সন্দেশখালির অপরাধীদের সারাজীবন জেলেই থাকতে হবে। গতকাল কলকাতা হাইকোর্টও সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছে। কলকাতা হাইকোর্ট বলেছে যদি সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতনের একটি ঘটনাও ঘটে থাকে তাহলে শাসক দল সেটার দায় এড়াতে পারেন না।
ইডির উপরে হামলার পর ৫৫ দিন পলাতক ছিলেন তিনি। ৫৬ দিনের দিন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তারপরে সিআইডি হেফাজতে ছিলেন শাহজাহান শেখ। সেখান থেকে সিবিআই তাঁকে হেফাজতে নেয়। কিন্তু একটা কথাও তাঁরা বলাতে পারেনি। তারপরে ইডি হেফাজতে মুখ খুলেছিলেন শাহজাহান শেখ। সেখানেই তিনি দাবি করেছেন, সন্দেশখালিতে মানুষের উপকারেই কাজ করেছেন তিনি। কারোর এক টুকরো জমি তিনি দখল করেননি।