
আনিস মৃত্যুকাণ্ডে মঙ্গলবার, চারদিন বাদেও একই কথা পরিবারের মুখে। গতকালই ছাত্রনেতার অস্বাভাবিক মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সিট গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মোতাবেক মঙ্গলবার আনিসের বাড়িতে যান সিট-এর দুই সদস্য। তবে তাঁরা গেলেও আনিসের বাবা একই দাবিতে সরব।
তিনি সিট-এর দুই সদস্যের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, "আমরা এই সিটের উপর ভরসা করছি না। দিদি কেন সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিচ্ছেন না? যখন আমরা সবাই এবং গ্রামবাসীরা সকলেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছি, তখন কেন নির্দেশ দিচ্ছেন না তিনি?" অর্থাৎ তিনি সাফ জানিয়ে দেন, তাঁদের কেউই প্রশাসনের উপর আর ভরসা রাখছেন না কোনওভাবেই।
মঙ্গলবার বিকালেও সিট-এর ওই দুই সদস্য সহ উচ্চপদস্থ একাধিক প্রশাসনিক আধিকারিক আনিসের বাড়ির বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখেন। পাশাপাশি আনিস যে জায়গায় পড়েছিল, সেই জায়গা সহ পরে তাঁকে বারান্দার যে জায়গায় এনে রাখা হয়, সমস্ত দিকটাই খতিয়ে দেখেন।
তবে তাঁদের কাজে সহযোগিতা করেছে পরিবার। কিন্তু আনিসের ফোন কোনওভাবেই কারও হাতে দিতে নারাজ পরিবার।
আনিস মৃত্যুর প্রতিবাদে (Anish Death) আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের প্রতিবাদ মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার মধ্য কলকাতায়। মঙ্গলবার দুপুরের পর পার্ক সার্কাস বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বের হয় প্রস্তাবিত মিছিল (Protest Rally)। পুলিশের নির্ধারিত রুটের বদলে সেই মিছিল শিয়ালদহের দিকে এগোতেই পুলিস সেই মিছিল আটকায়। পড়ুয়া-পুলিস ধস্তাধস্তির জেরে উত্তেজনা ছড়ায় শিয়ালদহ-মৌলালি এলাকায় (central kolkata)। এরপরে দীর্ঘ বাকবিতণ্ডার পর স্থির হয় শিয়ালদহ, এমজি রোড, সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউ হয়ে মিছিল যাবে মহাকরণের দিকে। কিন্তু কলেজ স্ট্রিটে মিছিল আটকায় পুলিস।
সেই মোতাবেক ফের ঢেলে সাজাতে হয় পুলিশি ব্যবস্থা। যদিও এভাবে হঠাৎ মিছিলের রুট বদলে সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। এমজি রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা মিছিলের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় থমকে যায় যান-চলাচল। এরপর পুলিসের তরফে সিদ্ধান্ত হয় কলেজ স্ট্রিটের পর আর মিছিল এগোতে দেওয়া যাবে না।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পড়ুয়ারা বসে পড়েন কলেজ স্ট্রিট এলাকায়। পুলিসের সঙ্গে বচসা শুরু হয় পড়ুয়াদের। রীতিমতো পুলিস-পড়ুয়া খণ্ডযুদ্ধে উত্তেজনা ছড়ায় মধ্য কলকাতায়। চ্যাংদোলা করে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় পড়ুয়াদের। লাঠিচার্জ করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করার অভিযোগ ওঠে। ভাঙরের বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকির অভিযোগ, 'পুরুষ পুলিস মহিলাদের গায়ে হাত দিয়েছে। কটূক্তি করা হয়েছে প্রতিবাদীদের তরফে।'
যদিও পুলিসের দাবি, 'নির্দিষ্ট পথে মিছিল না এগোনোয় কলেজ স্ট্রিটে আটকানো হয়েছে মিছিল। বারবার বলা সত্ত্বেও পড়ুয়াদের তরফে সহযোগিতা মেলেনি। তাই মিছিল আটকাতে বাধ্য হয়েছে তারা।'
আনিস মৃত্যুর (Anish Death) পর ৭২ ঘণ্টা পেরোলেও অধরা অভিযুক্তরা। পাশাপাশি এই মৃত্যু তদন্তে গঠিত সিটে আস্থা নেই শহরের ছাত্র সমাজের। তাই আনিসের হয়ে ন্যায়বিচার চাইতে এবার পথে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Aliah University) পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁরা মহাকরণ অভিযানের (March to Mahakaran) ডাক দিয়েছেন। পার্কসার্কাস সেভেন পয়েন্ট ক্রশিং থেকে বেরিয়ে মৌলালি, ধর্মতলা হয়ে মিছিল এগিয়ে চলেছে। এমনটাই মিছিল আয়োজকদের দাবি। এদিন মিছিল শুরু হওয়ার পর পুলিসের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ান পড়ুয়ারা। সেভেন পয়েন্ট ক্রশিং অবরুদ্ধ করে চলে অবস্থান বিক্ষোভ। অবরুদ্ধ হয়ে পরে দক্ষিণ কলকাতা থেকে শহরতলি এবং শহরতলি থেকে দক্ষিণ কলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থা।
যদিও যে কোনও প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিশাল পুলিস মোতায়েন হয়েছে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। ডোরিনা ক্রশিংয়ে মোতায়েন মহিলা পুলিসও। এদিকে, আনিস মৃত্যুর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে বনধ চলছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়ুয়াদের ডাকে চলছে এই কর্মসূচি। এদিন সকালেই বন্ধ করে দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেট।
এদিকে, আনিস রহস্যমৃত্যুর (Anish Death) তদন্তে নয়া মোড়। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সাসপেন্ড তিন পুলিসকর্মী। সাসপেন্ড এএসআই নির্মল দাস, কনস্টেবল জিতেন্দ্র হেমব্রম এবং এক হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা। আনিসের মৃত্যুরাতে এঁদের ভূমিকা সন্দেহজনক। অতিরিক্ত পুলিস সুপারের রিপোর্টকে প্রাধান্য দিয়েই এই সিদ্ধান্ত। জানা গিয়েছে, সোমবার রাতেই আমতা থানায় (Amta PS) যান সিটের (SIT) দুই সদস্য। জানা গিয়েছে, ঘটনার রাতে থানায় ডিউটিতে ছিলেন তিন পুলিসকর্মী। সিটের সদস্যরা ডিউটি রোস্টার পরীক্ষা করেন। চেয়ে পাঠানো হয় আনিসের মোবাইল ফোনও।
তাঁরা খতিয়ে দেখেন অতিরিক্ত পুলিস সুপারের রিপোর্ট। থানা আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার আনিসের বাড়িতে যাবে সিটের তিন সদস্য। যদিও এই সিদ্ধান্তে খুশি নয় পরিবার। আনিসের পরিবার দাবি, 'কারা সাসপেন্ড হয়েছে, কেন সাসপেন্ড হয়েছে আমরা জানি না। আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি। এই সিদ্ধান্ত পুলিসের বাহানা। আমরা সিবিআই তদন্ত চাই। সিটে ভরসা নেই।'
গতকালই আনিস খানের অস্বাভাবিক মৃত্যুরহস্য উদঘাটনের জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সিট গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেইমতো, সোমবার রাতেই সিট-এর ৩ সদস্যের মধ্যে ২ জন যান আমতা থানায়। সোমবার রাত ২ তো পর্যন্ত বৈঠক হয় তদন্তকারী অফিসারদের সঙ্গে। এরপর মঙ্গলবার সকালেই আনিসের বাড়ি আসতে পারে সিট-এর সদস্যরা, এমনটাই খবর। তবে তার আগেই মঙ্গলবার সকালেও আনিসের বাবার পরিষ্কার বক্তব্য, "আমরা পুলিস-প্রশাসন অথবা এই সিটের উপর আস্থা রাখছি না। দিদি যদি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন, তবেই তাদের হাতে আনিসের ফোন তুলে দেব। অন্যথা ফোন দেওয়া হবে না।" অর্থাৎ বারবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনিসের ফোন হস্তান্তরের দাবি জানালেও, তাঁরা একেবারেই ফোন দেবেন না বলেই জানান।
অন্যদিকে সোমবারই সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য পুলিসের ডিজি মনোজ মালব্য জানিয়েছিলেন, এডিজি, সিআইডি জ্ঞানবন্ত সিং এই সিটের দায়িত্বে থাকবেন। এদিনই সিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দেবেন বলেও তিনি জানিয়েছিলেন।
যত সময় পেরচ্ছে, ততই আনিস খুনের রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। আনিসের মৃত্যুর আজ চতুর্থ দিন। কিন্তু তবুও দোষীরা এখনও অধরাই। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে পরিবার-পরিজন থেকে শুরু করে বিভিন্ন দলের নেতৃত্ব পথে নেমেছে। আনিসের বাড়িতেও আসেন বিভিন্ন দলের মন্ত্রী থেকে বিধায়করা।
আনিস রহস্যমৃত্যুর (Anish Death) তদন্তে নয়া মোড়। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সাসপেন্ড তিন পুলিসকর্মী। সাসপেন্ড এএসআই নির্মল দাস, কনস্টেবল জিতেন্দ্র হেমব্রম এবং এক হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা। আনিসের মৃত্যুরাতে এঁদের ভূমিকা সন্দেহজনক। অতিরিক্ত পুলিস সুপারের রিপোর্টকে প্রাধান্য দিয়েই এই সিদ্ধান্ত। জানা গিয়েছে, সোমবার রাতেই আমতা থানায় (Amta PS) যান সিটের (SIT) দুই সদস্য। জানা গিয়েছে, ঘটনার রাতে থানায় ডিউটিতে ছিলেন তিন পুলিসকর্মী। সিটের সদস্যরা ডিউটি রোস্টার পরীক্ষা করেন। চেয়ে পাঠানো হয় আনিসের মোবাইল ফোনও। এদিন দুপুরের দিকে আনিসের আমতার বাড়িতে যান সিটের ৫ সদস্য। সেই দলে রয়েছেন মিরাজ খালিদ এবং ধ্রুবজ্যোতি দে। তার আগে পুলিস গিতে দেখা করে আনিসের পরিবারের সঙ্গে। তাঁদের এবং সিটের সদস্যদের ঘিরে চলে স্থানীয়দের বিক্ষোভ। নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ন্যায়বিচার চেয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
তাঁরা খতিয়ে দেখেন অতিরিক্ত পুলিস সুপারের রিপোর্ট। থানা আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার আনিসের বাড়িতে যাবে সিটের তিন সদস্য। যদিও এই সিদ্ধান্তে খুশি নয় পরিবার। আনিসের পরিবার দাবি, 'কারা সাসপেন্ড হয়েছে, কেন সাসপেন্ড হয়েছে আমরা জানি না। আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি। এই সিদ্ধান্ত পুলিসের বাহানা। আমরা সিবিআই তদন্ত চাই। সিটে ভরসা নেই।'
এদিকে প্রাক্তন পুলিসকর্তাদের মত, এই ঘটনায় ক্রমশ জড়িয়ে পড়ছে পুলিস। সর্ষের মধ্যেই ভূত! কোনওভাবে বড় অংশকে ধামাচাপা দিতেই এই সাসপেনশনের নাটক। পুলিসের কাছে হয়তো খবর গিয়েছিল কোনওভাবে মারা গিয়েছে আনিস। তাই তথ্য-প্রমাণ লোপাটের সময় দিতে তারা গড়িমসি করে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। এমনটাই মন্তব্য প্রাক্তন পুলিসকর্তাদের।
অপরদিকে, আমতা থানার ওসি ও সেকেন্ড অফিসারকে সিট জিজ্ঞাসাবাদ করতে ভবানী ভবনে ডেকে পাঠিয়েছে। পাশাপাশি আমতা থানায় তিনজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। গতকাল একটি রিপোর্ট জমা হবার পর এসআই নির্মল দাস, কনস্টেবল জিতেন্দ্রর হেমব্রম, হোমগার্ড কৃষ্ণনাথ বেরাকে কর্তব্যে গাফিলতি, দুর্ব্যবহারের অভিযোগে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য তাদেরকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ভবানী ভবন সূত্রে খবর।
করোনা পরিসংখ্যানে বড়সড় স্বস্তি। দেশে আরও কমল করোনার সংক্রমণ। ওমিক্রনের দাপট সামলে সুস্থতার পথে দেশ। সংক্রমণের পাশাপাশি স্বস্তি নিম্নমুখী অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যাতেও। সোমবার সেই পরিসংখ্যান ফের খানিকটা নিম্নমুখী। মৃত্যুসংখ্যার (death rate) ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে খানিকটা ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ। নিম্নমুখী পজিটিভিটি রেটও।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৩ হাজার ৪০৫ জন। যা সোমবার ছিল ১৬ হাজারের বেশি। একদিনে মৃত্যু হয়েছে ২৩৫ জনের। সোমবার মৃত্যুসংখ্যা যেখানে ছিল ২০৬ জন। ফলে মৃত্যুসংখ্যা যে ঊর্ধ্বমুখী, তা পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট। গত ২৪ ঘন্টায় করোনার কবল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৪ হাজার ২২৬ জন। এখনও পর্যন্ত দেশে ৪ কোটি ২১ লক্ষ ৫৮ হাজার ৫১০ জন করোনা থেকে মুক্ত হয়েছেন। উদ্বেগ বাড়াচ্ছিল দেশের পজিটিভিটি রেট। বর্তমানে দেশে করোনা পজিটিভিটির হার ১.২৪ শতাংশ। যা গতকালের তুলনায় কম। সোমবার দেশের পজিটিভিটি রেট ছিল ১.৯৩ শতাংশ। রিপোর্ট অনুযায়ী, মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫ লক্ষ ১২ হাজার ৩৪৪ জন।
এই মুহূর্তে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৮১ হাজার ০৭৫ জন। যা আগের দিনের থেকে অনেকটাই কম। এবং মোট আক্রান্তের ০.৪২ শতাংশ। এখনও পর্যন্ত দেশে ৪ কোটি ২১ লক্ষ ৫৮ হাজার ৫১০ জন করোনা থেকে মুক্ত হয়েছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে মোট টিকাকরণ হয়েছে ১৭৫ কোটি ৮৩ লক্ষ ২৭ হাজার ৪৪১ জনের।
উল্লেখ্য, রাজ্যগুলির মধ্যে সংক্রমণের শীর্ষে কেরল সহ মোট ৫ রাজ্যও। সংক্রমণের নিরিখে এরপর রয়েছে মিজোরাম, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু। ইতিমধ্যে সংক্রমণ নিম্নমুখী হওয়ায় খুলে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের সমস্ত স্কুল-কলেজ। তবে কোভিডবিধি মেনেই চলছে ক্লাস। ধীরে ধীরে শিথিল করা হচ্ছে কোভিড বিধিনিষেধ।
রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্য়া নেমে এল ২০০র গণ্ডিতে। মৃত্যুসংখ্যাও কমে হয়েছে ১১। অর্থাৎ মৃত্যুও ১০ এর গণ্ডির কাছে চমে এসেছে। যদিও মৃত্যু একজনের হলেও তা কাঙ্খিত নয়। একে যত দ্রুত সম্ভব শূন্যে নামিয়ে আনাটাই রাজ্যের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। উল্লেখ্য়, কিছুদিন আগে পর্যন্তও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ধাপে ধাপে অনেকটা কমে এলেও মৃত্যু সংখ্যায় লাগাম পরানো যাচ্ছিল না। তা দীর্ঘদিন ঘোরাফোরা করেছে ৩৫ থেকে ৪০ এর মধ্যে। স্বস্তি যদি সামান্য়ও হওয়ার থাকে, তা হল তা ১০ এর কাছাকাছি নেমে আসা।
এদিন পজিটিভিটি রেট কমে ১ এর নিচে নেমে এসে হয়েছে ০.৯৪ শতাংশ। যদিও শনিবার তা কমে হয়েছিল ০.৭৯ শতাংশ এবং রবিবার হয়েছিল ০.৯০ শতাংশ। অর্থাৎ যে কোনও কারণেই হোক, পজিটিভিটি রেট সামান্য হলেও বেড়েছে। তবে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা কমে হয়েছে ৪৪৪৩। এই সংখ্য়া প্রতিদিনই গড়ে হাজারের আশপাশে কমছে। রবিবারের তুলনায় এদিন তা ১০৯৭ জন কম।
কলকাতায় মৃত্যুসংখ্যা রবিবার হঠাৎ করে বেড়ে হয়েছিল ৭ জন। এদিন তা এক ধাক্কায় কমে হয়েছে ১। অন্যদিকে উত্তর ২৪ পরগনায় মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের।
আনিস খানের মৃত্যুর সঠিক এবং নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাসে মামলা দায়ের হল। প্রাথমিক শুনানির পর স্বতঃপ্রণোদিত এই মামলা গ্রহণ করল হাইকোর্ট। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।
আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে অভিযোগ করেন, আনিসুর খানকে খুন করা হয়েছে, তাঁর বাবার মাথায় বন্দুকের নল ঠেকিয়ে। কেন ওনাকে খুন করা হয়েছে বলে আপনার মনে হচ্ছে? বিচারপতির এই প্রশ্নে বিকাশরঞ্জন জানান, আনিসুর খান একজন প্রতিবাদী যুবক হিসেবে পরিচিত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র। ফি সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। সিএএ নিয়ে আন্দোলন করেছেন, করোনা অতিমারীতে উলুবেড়িয়া হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। যার বিরুদ্ধে কোনও বেআইনি কাজের অভিযোগ নেই। আনিসুর নিজে হুমকির সম্মুখীন হয়েছিলেন বলে পুলিশি সহযোগিতা চেয়েছিলেন।
কেন তাঁকে খুন করা হল?
এখানে পুলিশের ভূমিকা কী?
কেন সঠিক তদন্ত করা হচ্ছে না?
কেন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না?
কেন তাঁদের পরিবারের সদস্যদের চাকরির প্রলোভন দেখানো হচ্ছে?
এই ধরনের একাধিক অভিযোগ করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দেন, আগামীকালের মধ্যেই অনিসুরের পরিবারের কী কী অভিযোগ, তা হলফনামায় জানাতে হবে। পাশাপাশি রাজ্য সরকারকেও তাঁদের অভিযোগের কপি দিতে হবে।
দেশি মদ তৈরি করে বিক্রি করার অভিযোগে ধৃত এক যুবককে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ ঝালদার আবগারি দফতরে বিরুদ্ধে। ঘটনার পরই বিক্ষোভে সামিল পরিবারের সদস্যরা। মর্মান্তিক এই ঘটনার সাক্ষী রইল পুরুলিয়ার বাগমুন্ডি থানার এলাকা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বাগমুন্ডি থানার রবিডি গ্রামের বাসিন্দা বছর ২৬ শের মৃত যুবক শিকারি মুড়া। অভিযোগ, গত ১৬ তারিখ বুধবার দেশি মদ তৈরির বিরুদ্ধে অভিযান চালায় ঝালদা আবগারি দফতর। এরপর সেখান থেকে দেশি মদ বিক্রি করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় গ্রামের বাসিন্দা শিকারিকে। তাঁর কাছ থেকে ২০ লিটার দেশি মদ উদ্ধার করে আবগারি দফতরের কর্মীরা। তখনই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
তবে ঘটনায় বাড়ির অন্য সদস্যদের অভিযোগ, ঝালদা আবগারি দফতরে নিয়ে আসার সময় ও সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর ব্যাপক মারধর করে আবগারি দফতরের কর্মীরা। এরপর বৃহস্পতিবার তাঁকে জেলা আদালতে পাঠানো হয়। আদালত থেকে তাঁর জেল হেফাজতের নির্দেশ আসে। শুক্রবার শিকারি মুড়া অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথমে তাঁকে সংশোধনাগারের ভেতরের হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল অর্থাত্ রবিবার দুপুরে মারা যান তিনি।
এই খবর বাড়িতে আসার পরই শিকারি মুড়ার পরিবার ও জেলা ভূমিজ সংঘঠনের পক্ষ থেকে ঝালদা আবগারি দফতরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তাঁদের দাবি, সেই দিন যেসব আবগারি কর্মী ডিউটিতে ছিলেন, যারা পিটিয়ে মারল শিকারিকে, তাঁদের সঠিক শাস্তি দেওয়া হোক। মৃতের পারিবাকে আর্থিক সাহায্যেরও দাবি জানানো হয় এদিন বিক্ষোভ থেকে।
এবিষয়ে, বাগমুন্ডি বিধানসভার বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো জানান," ঝালদা এক্সাইজ দফতর শিকারিকে গ্রেফতার করার পর বেধড়ক মারধর করা হয়। পরিবারের দাবি, তারজন্যই শিকারির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, সঠিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।"
জানা যায়, মৃত শিকারি মুড়ার দেহ ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে ময়নাতদন্তের পর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। পাশাপাশি পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরির দাবি জানানো হয়।
ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর (anish khan death) আজ তিনদিন বাদেও রহস্য এখনও অধরাই। শুক্রবার আনিসের মৃত্যুর পরই বিক্ষোভে (agitation) ফেটে পড়েন পরিবার সহ এলাকাবাসী। পুলিস ঘটনাস্থলে এলে তাদের ঘিরেও বিক্ষোভে সরব হন তাঁরা। এরপর ঘটনাস্থলে আসে ফরেন্সিক টিম ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা। তবে তাঁদেরও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। সোমবারও একই ঘটনা। পঞ্চায়েত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের মন্ত্রী পুলক রায় (Pulok Roy) ও উলুবেড়িয়া (uluberia) লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সাজেদা আহমেদ আনিসের বাড়িতে তাঁর বাবা ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তাঁরা আসা মাত্রই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন কয়েকশো গ্রামবাসী। এরপরেই ভিড় এড়িয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান মন্ত্রী পুলক রায় ও সাংসদ সাজেদা আহমেদ।
তবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, " আমরা তাঁর পরিবারের পাশে আছি। মুখ্যমন্ত্রীও তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন। এই ঘটনায় পূর্ণ তদন্ত যাতে হয়, সেই দিকেও নজর রাখব। তবে আপাতত আনিসের বাবা অসুস্থ। পরিবারের সুযোগসুবিধা বুঝে মুখ্যমন্ত্রী দেখা করবেন।"
অন্যদিকে তিনি জানান, "কোনও বিক্ষোভ হয়নি। পরিবারের মনের কষ্ট তাঁদের সামনে তুলে ধরেছেন। পরিবার শুধু বিচার চেয়েছেন।" তিনি আরও জানান, "মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি কখনই করা উচিত নয়।"
প্রসঙ্গত, গত ১৯ তারিখে তিনতলার ছাদ থেকে পড়ে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় ওই ছাত্রনেতার। ঘটনার পরই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পরিবার সহ এলাকায়।
আমতায় আনিসের মৃত্যুর ৪৮ ঘণ্টা পার। এখনও অধরা অভিযুক্তরা। ইতিমধ্যেই পরিবারের পক্ষ থেকে সিবিআই তদন্তের দাবি করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে সোমবার ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিকরা আনিসের বাড়িতে আসেন। কথা বলেন মৃত ছাত্রের বাবা ও দাদার সঙ্গে। তবে পুলিসের উপর কোনও আস্থা নেই পরিবারের, সেই কথা ডিএসপির সামনেই জানিয়ে দেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা আনিস খানের বাবা ও দাদা। পুলিসও সিবিআইকে তদন্তে সহযোগিতা করুক বলে দাবি পরিবারের।
অন্যদিকে, এদিনই আনিসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুযায়ী, আনিসের বাবা আজই দুপুরে নবান্নে আসছেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে।
অন্যদিকে, এদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, আনিসের ঘটনা নিয়ে প্রশাসন নিরপেক্ষ তদন্ত করবে। আনিসের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ছিল। সিট গঠন করে তদন্ত হবে। তদন্তে দোষী হলে ছাড়া পাবে না। আমি হলে আমিও না।
মুখ্যসচিব ও ডিজির নেতৃত্বে সিট গঠন হবে। ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে।
পরিবারের দাবি, পুলিসের পোশাকধারী ব্যক্তিরা শুক্রবার এখানে এসেছিল। যদিও তাদের দাবি ছিল, তারা আমতা থানাকে জানিয়ে বাগনান থানা থেকে এসেছে। তাদের দাবি, আনিসের নামে বাগনান থানায় একটি কেস আছে, সেই মামলার তদন্ত করতেই তারা এসেছে। তবে সেদিন রাতে যারা এসেছিল, তারা আদৌ পুলিস কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান আনিসের বাড়ির লোকেরা। গোটা ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি পরিবারের। আনিসের মৃত্যুর ৪৮ ঘণ্টা পার হবার পর কেন সরকারি প্রতিনিধিরা রবিবার রাতে এলেন? রাতে কেন দেওয়া হল পুলিসি প্রহরা? তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে আনিসের পরিবার।
দেশে আরও কমল করোনা সংক্রমণ। ওমিক্রনের দাপট সামলে সুস্থতার পথে দেশ। সংক্রমণের পাশাপাশি স্বস্তি নিম্নমুখী অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যাতেও। সোমবার সেই পরিসংখ্যান ফের খানিকটা নিম্নমুখী। মৃত্যুসংখ্যার (death rate) ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে নিম্নমুখী গ্রাফ।
সোমবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৬ হাজার ৫১ জন। যা গতকাল ছিল ১৯ হাজারের বেশি। একদিনে মৃত্যু হয়েছে ২০৬ জনের। রবিবার মৃত্যুসংখ্যা যেখানে ছিল ছ'শোর বেশি। ফলে মৃত্যুসংখ্যা যে নিম্নমুখী, তা পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট। গত ২৪ ঘন্টায় করোনার কবল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৭ হাজার ৯০১ জন। এখনও পর্যন্ত দেশে ৪ কোটি ২১ লক্ষ ২৪ হাজার ২৮৪ জন করোনা থেকে মুক্ত হয়েছেন। উদ্বেগ বাড়াচ্ছিল দেশের পজিটিভিটি রেট। বর্তমানে দেশে করোনা পজিটিভিটির হার ১.৯৩ শতাংশ। যা গতকালের তুলনায় বেশি। পজিটিভিটি রেট কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হলেও খুব একটা চিন্তার বিষয় নেই বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। রিপোর্ট অনুযায়ী, মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫ লক্ষ ১২ হাজার ১০৯ জন।
এই মুহূর্তে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ২ লক্ষ ২ হাজার ১৩১ জন। যা আগের দিনের থেকে অনেকটাই কম। এখনও পর্যন্ত দেশে ৪ কোটি ২১ লক্ষ ২৪ হাজার ২৮৪ জন করোনা থেকে মুক্ত হয়েছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে মোট টিকাকরণ হয়েছে ১৭৫ কোটি ৭৬ হাজারের বেশি। গত ২৪ ঘন্টায় ৮ লক্ষ ৩১ হাজার ৮৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজ্যগুলির মধ্যে সংক্রমণের শীর্ষে কেরল সহ মোট ৫ রাজ্যও। সংক্রমণের নিরিখে এরপর রয়েছে মিজোরাম, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু। ইতিমধ্যে সংক্রমণ নিম্নমুখী হওয়ায় খুলে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের সমস্ত স্কুল-কলেজ। তবে কোভিডবিধি মেনেই চলছে ক্লাস। ধীরে ধীরে শিথিল করা হচ্ছে কোভিড বিধিনিষেধ।
রাজ্যে করোনার গ্রাফ ধীরে ধীরে নিম্নমুখী হচ্ছে। শনিবার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তিনশোর নিচে নেমে হয়েছিল ২৮১। সেই ধারা বজায় রেখে এদিন তা হয়েছে ২৭৮। মৃত্য়ুসংখ্যা এদিন ছিল ১৩। সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্য়াও প্রতিদিন হাজার বা তারও বেশি কমছে। যেমন রবিবার সন্ধ্যার বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্য়া কমেছে ১১০৮ জন। কমে তা দাঁড়িয়েছে ৫৫৪০ জনে। পজিটিভিটি রেট শনিবারের তুলনায় সামান্য বেড়ে .৯০ শতাংশ হলেও স্বস্তির বিষয় হল, তা ১ শতাংশের ওপরে যায়নি। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্য়ে করোনার প্রকোপ কমের দিকে থাকলেও পরীক্ষা এখনও কমবেশি ৩০ থেকে ৩৫ হাজারের মধ্যেই চলছে।
মৃত্য়ুসংখ্যা আগের তুলনায় অনেকটাই কমলেও পরিসংখ্যানে কোনও সমতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। একথা ঠিক, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং কলকাতাই বরাবর মৃত্যুর তালিকায় ওপরের দিকে থাকছে। কিন্তু জেলাওয়াড়ি হিসাবে তারমধ্য়ে ওঠানামা বেশ বেশি। যেমন এদিন যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্য়ে ৭ জনই কলকাতার। উত্তর ২৪ পরগনায় মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সেখানে মৃতের সংখ্যা ২।
সোমবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে প্রয়াত মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের (Sadhan Pandey Death)। নবান্ন সূত্রে খবর, তাঁর মৃত্যুতে শোক জানাতে সোমবার অর্ধদিবস (Half day Leave) সরকারি অফিস, আদালত, শিক্ষাঙ্গনে ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার (Mamata Government)। রাজ্যের অর্থ দফতর থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে, জানা গিয়েছে এদিন রাতেই শহরে পৌঁছবে প্রবীণ রাজনীতিবিদের মরদেহ। সেখান থেকে পুরসভা পরিচালিত পিস ওয়ার্ল্ডে যাবে দেহ। বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকবেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, নারী এবং শিশু কল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা। সোমবার দুপুরের দিকে তাঁর দেহ আনা হবে বিধানসভায়। সেখানেই তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন পরিষদীয় সতীর্থরা। বিধানসভা থেকে তাঁর দেহ যাবে উত্তর কলকাতার বাসভবনে। সেখান থেকে সোমবার বিকেলের কিছু পর নিমতলায় হবে শেষকৃত্য।
আনিসের রহস্যমৃত্যুতে (Anish khan Mystery Death) ন্যায়বিচার চেয়ে ইতিমধ্যে পথে নেমেছে বাম ছাত্র-যুব সংগঠন। এদিন তারা রাজ্যের একাধিক জেলায় প্রতিবাদ মিছিল বের করেছিল। পাশাপাশি পৃথক প্রতিবাদ মিছিল আয়োজিত হয় আমতা থানার (Amta PS) সামনে। এই উত্তেজনার আবহেই মৃত আনিসের বাবার সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দেন কৌশিক সেন এবং বোলান গঙ্গোপাধ্যায় (Kaushik Sen meets family)।
এদিন বেলার দিকে আনিসের আমতার বাড়িতে যান তাঁরা। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে তাঁরা ছাত্র নেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এমনটাই জানান কৌশিক সেন। আনিসের বাবার সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে কৌশিক সেন বলেন, 'আমরা কোনও দলের হয়ে আসিনি। নাগরিক কর্তব্য পালনে নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে এসেছি। আমাদের মনে হয়েছে আপনাদের পাশে এসে দাঁড়ালে, লেখালেখি, প্রচার করলে প্রশাসন তৎপর হবে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে।'
রবিবারই আবার ছাত্রনেতার রহস্যমৃত্যুতে হাওড়া গ্রামীণ জেলার পুলিস সুপারকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। ভবানী ভবনে তলব করা হয় পুলিস সুপারকে। নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে এদিন পথে নেমেছে বাম ছাত্র-যুব সংগঠন। পুলিসের বাধা পেয়ে এদিন তাঁরা থানার অদূরেই অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। কোনওরকম প্ররোচনায় পা না দিতে আবেদন করেন ছাত্র নেতারা। রবিবার সকালেই মৃত ছাত্র নেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন এসএফআই-ডিওয়াইএফআই-র এক প্রতিনিধি দল। কথা বলেন আনিসের বাবার সঙ্গে। মৃত ছাত্র নেতাকে যোগ্য ন্যায় দিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বাম ছাত্র-যুবরা। এদিন আশ্বাস দেওয়া হয় পরিবারকে।