
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে একটি অতি গভীর নিম্নচাপ। যার জেরে ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় (Cyclone)। এই ঝড় আছড়ে পড়বে বাংলাদেশে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গোটা অগাস্ট মাস জুড়েই ভারী বৃষ্টিপাত (Rain) হওয়ার আশঙ্কা বাংলাদেশ (Bangladesh) জুড়ে। বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জেলার উপর দিয়ে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে।
ল্যান্ডফলের পরে, সাধারণত পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিমে এগিয়ে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়বে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম- উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। এর প্রভাবে, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপে পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে।
এর ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে। সতর্কতায় বলা হয়েছে, উপকূলীয় জেলা এবং এবং নিকটবর্তী দ্বীপ ও চর সমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৩ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। অন্যান্য অঞ্চলগুলির উপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
যার জেরে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলিকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়। মৎস্যজীবীদের ইতিমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে। গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা এবং ট্রলারগুলিকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। যশোর, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যের মধ্যেই ল্যান্ডফল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় (Severe Cyclone) 'বিপর্যয়'-এর (Biparjoy)। যদিও বৃহস্পতিবার সকালে মৌসম ভবন সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, গুজরাত উপকূলের দিকে যাওয়ার সময়ই শক্তি সামান্য হারিয়েছে বিপর্যয়। তবুও ক্ষয় ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হতে পারে গুজরাতের কচ্ছ জেলায়। বর্তমানে সেখান থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়টি।
সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছ উপকূলে ইতিমধ্যেই লাল সতর্কতা জারি রয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে প্রায় ৭৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তৈরী রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। মৌসম ভবন সূত্রে জানা গিয়েছিল, ল্যান্ডফল করার সময় বিপর্যয়ের গতিবেগ থাকতে পারে ১৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। তবে বর্তমানে শোনা যাচ্ছে, কিছুটা শক্তি ক্ষয় করার পর আগের মতো হাওয়ার গতিবেগ থাকবে না।
Cyclone Warning for Saurashtra and Kutch Coasts: RED MESSAGE. VSCS BIPARJOY at 0830IST today near lat 22.6N & long 67.1E, about 170km WSW of Jakhau Port (Gujarat) and 210km West of Devbhumi Dwarka. To cross near Jakhau Port (Gujarat) by evening of today as VSCS. pic.twitter.com/iESz82jRRW
— India Meteorological Department (@Indiametdept) June 15, 2023
গুজরাতের পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশংকা রয়েছে পাকিস্তানেও। সেখানেও জারি রয়েছে লাল সতর্কতা। অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে রাজস্থান, কেরল, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, গোয়া দমন ও দিউতে। সেখানে জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। আরব মহাসাগরে মাছ ধরতে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সতর্ক রয়েছে প্রশাসনও।
মুন্নি চৌধুরী: শেষমেশ অভিমুখ পরিবর্তন করে মায়ানমারের (Myanmar) উপরই আঘাত হেনেছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় 'মোকা' (Cyclone Mocha)। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছিল, ঝড়ে কার্যত তছনছ হয়ে যাবে বাংলাদেশের (Bangladesh) উপকূলবর্তী এলাকাগুলি। কিন্তু রবিবার দুপুরে মোকার ল্যান্ডফল হতেই স্বস্তি পেল বাংলাদেশ। কক্সবাজার (Cox's Bazar) ও সিতওয়ে বন্দর সংলগ্ন উপকূলবর্তী এলাকায় ল্যান্ডফল করেছে 'মোকা'।
কক্সবাজারের এক হোটেল ব্যবসায়ী মোহম্মদ আলম জয় জানিয়েছেন, মোকার খুব একটা প্রভাব কক্সবাজারে পড়েনি। শনিবার রাত থেকে হালকা বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। রবিবার সকাল থেকে সামান্য ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টির দাপট খানিকটা বেড়েছে। তেমন একটা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে ঝড়ের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। এছাড়া সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের আগেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেন্টমার্টিন ও টেকনাফের প্রবল জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে। এরফলে সবরকম সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সাধারণ মানুষদেরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেন্টমার্টিনে এই ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার এবং টেকনাফে ৮২ কিলোমিটার থাকবে বলে জানা গিয়েছে। যদিও বিকেলের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় দুর্বল হতে শুরু করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের আবহাওয়া অধি দফতরের আধিকারিকরা।
যদিও মোকার প্রভাবে সতর্ক রয়েছে বাংলাদেশ প্রশাসন। পাশাপাশি সতর্ক রয়েছে পশ্চিবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিও। রীতিমত মাইকিং করে প্রচার চলছে, শুরু হয়েছে যদি বাঁধ মেরামতের কাজ। রবিবার সকালে বৃষ্টির সাথে সাথে সামান্য ঝোড়ো হাওয়া রয়েছে কক্সবাজার শহর এলাকায়। যদিও স্থানীয় প্রশাসন কড়া নজরদারি রাখছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় ওই ব্যবসায়ী।
ফের রাজ্যে দুর্যোগের পূর্বাভাস। ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় (Cyclone) 'মোকা'। এবছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড় মে মাসেই হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া (Weather) দফতর। আগামী ১০ মে’র আশপাশে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় মোকা (Cyclone Mocha) তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বঙ্গে তার কতটা প্রভাব পড়বে তা নিয়ে কী জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জেনে নিন।
গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা নিম্নমুখী। যার ফলে কিছুটা স্বস্তিতে শহর কলকাতাবাসী। বুধবার সকাল থেকেই কলকাতার আকাশে মেঘের আনাগোনা। পূর্বাভাস মতোই বুধবার থেকে দুই বঙ্গের আবহাওয়ার বদল ঘটেছে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিতে ভিজেছে কলকাতা ও আশেপাশে এলাকা। তবে তাপপ্রবাহের মত পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বিকেল থেকে ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে কলকাতায় পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে রয়েছে। সন্ধে থেকে আরও অনেকটা বদলে যাবে আবহাওয়া। ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর বলছে, ঘূর্ণিঝড় মোকার প্রভাব তেমন ভাবে পড়বে না রাজ্যে। ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে এই ঘূর্ণিঝড়। তার জেরে বঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে বৃষ্টি হবে। ৬ তারিখ উপকূলে আছড়ে পড়ার কথা ঘূর্ণিঝড় মোকার।
বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত ঘূর্ণাবর্তের কারণে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প রাজ্যে ঢুকবে। তার প্রভাব পডতে পারে উত্তরবঙ্গ থেকে শুরু করে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জায়গায়। দক্ষিণবঙ্গের কলকাতা সহ দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া জেলায় বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। ৬ তারিখ থেকেই বদলে যাবে আবহাওয়া। কালবৈশাখীর মত পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে।
৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে বইবে ঝোড়ো হাওয়া। উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলাতেও ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি জেলাতে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
আমেরিকায় (America) টর্নেডোর (Tornado) হানা। ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্ব দিকের রাজ্য আলাবামা (Alabama)। এই টর্নোডো ঘূর্ণিঝড় বৃহস্পতিবার বয়ে গিয়েছে মিসিসিপি থেকে শুরু করে জর্জিয়া পর্যন্ত। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখনও পর্যন্ত ন’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
মার্কিন আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, পরপর অন্তত ৫টি টর্নেডো আছড়েছে আলাবামায়। ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৪১ কিলোমিটার। সূত্রের খবর, নিখোঁজ প্রচুর বাসিন্দা। যার মধ্যে রয়েছে শিশু ও স্কুলপড়ুয়ারা। ইতিমধ্যে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্প জানিয়েছেন, 'নিখোঁজ স্কুলপড়ুয়াদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হচ্ছে। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।'
আলাবামা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের জেরে অন্তত ৫০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ের দাপটে ভেঙে পড়েছে একাধিক গাছ। উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। যার জেরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার বাড়ি। এছাড়া বেশ কিছু বাড়ির ছাদও উড়ে যায়। গাছ ভেঙে পড়ে জর্জিয়াতে মৃত্যু হয় পাঁচ বছরের এক শিশুর। শুধু তাই নয়, শুক্রবারের ঝড়ের দাপট সহ্য করতে পারেনি মালবাহী ট্রেনও। রেললাইন থেকে ছিটকে পড়ে ওই ট্রেন।
গত মাসেই বড়দিনের ঠিক আগে ‘বম্ব সাইক্লোন' নামক তুষারঝড়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমেরিকার। তুষারঝড়ের সময় তাপমাত্রা চলে যায় হিমাঙ্কের ৫০ ডিগ্রি নীচে। চারদিকে কেবল বরফ আর বরফ। যত দূর চোখ গিয়েছিল সাদা আস্তরণে ঢেকেছে বাড়িঘর, রাস্তা, গাছপালা। রাস্তার পাশে দাঁড়ানো গাড়িও ঢেকে গিয়েছিল বরফের পুরু আস্তরণে। আমেরিকা এবং কানাডার বিভিন্ন রাস্তা ঢাকা পড়েছে ৮ ফুট থেকে ১০ ফুট পুরু বরফের আস্তরণে। সেই দুর্যোগ কাটিয়ে এখন ফের টর্নেডোর দাপট।
যতদূর চোখ যায় কেবল বরফ আর বরফ। সাদা চাদরে মুড়ে রয়েছে আমেরিকা। ‘বম্ব সাইক্লোন’-র (Bomb Cyclone) দাপটে বিপর্যস্ত আমেরিকা (America)। দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে তুষার ঝড়। তাপমাত্রা (Temperature) নেমে গিয়েছে হিমাঙ্কের ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি নীচে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিদ্যুৎ পরিষেবা। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে বহু এলাকা। প্রতিবেদন লেখা অবধি জানা গিয়েছে নিউ ইয়র্কে ২৭ জন এবং সমগ্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কমপক্ষে ৬০ জন তুষার ঝড়ে প্রাণ হারিয়েছেন। বরফের আস্তরণে ঢেকেছে রাস্তাঘাট।
স্থানীয় কর্মকর্তারা সোমবার জানিয়েছেন, উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বুফালোর আশেপাশের তুষার আবদ্ধ অঞ্চল খনন করে রাস্তা পরিষ্কারের চেষ্টা চলছে। যাতে গাড়ি, বাস, অ্যাম্বুলেন্স যাতায়াত করতে পারে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনওরকম প্রভাব না পড়ে। কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল পরিবহন হিসেবে হাই-লিফট ট্রাক্টর মোতায়েন করেছে।
উল্লেখ্য,ঠান্ডায় প্রায় জমে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এরফলে রাস্তাঘাটের অবস্থা এমন যে, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও দুর্যোগ কবলিতদের উদ্ধারে বাধা পাচ্ছে। লক্ষাধিক বাড়ি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে এক লাখেরও বেশি মানুষ ব্ল্যাকআউট এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্মুখীন হচ্ছে। বুফালোতে বড়দিনে ১৬% বাসিন্দাদের ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না বলে জানা গিয়েছে।
বড়দিনে (Christmas) ‘বম্ব সাইক্লোন’-র (Bomb Cyclone) দাপটে বিপর্যস্ত আমেরিকা (America)। দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে তুষার ঝড়। তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে হিমাঙ্কের নীচে। তাপমাত্রার পারদ রয়েছে মাইনাস ১১ থেকে মাইনাস ২৩ ডিগ্রির মধ্যে। তুষার ঝড়ের জেরে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে বহু এলাকা। ইতিমধ্যেই প্রাণ গিয়েছে অন্তত ৩৪ জনের। রাস্তাঘাট বরফের চাদরে মুড়ে রয়েছে। কোথাও ৮ ফুট, কোথাও বা ১০ ফুট পুরু বরফের আস্তরণ।
উল্লেখ্য, সবচেয়ে খারাপ অবস্থা নিউ ইয়র্ক, বুফালো, পেনসিলভ্যানিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা ও কেন্টাগির এলাকার। মার্কিন আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এখানে ঘূর্ণিঝড় হ্যারিকেনের গতিতে আছড়ে পড়ে তুষারঝড় ‘বম্ব সাইক্লোন’। এর জেরে ভেঙে পড়ে বহু গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি। চলতি সপ্তাহ জুড়েই বইবে এই তুষারঝড়। ঘটনায় সতর্কতা জারি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুধু তাই নয়, বম্ব সাইক্লোনের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক বাড়ি। রাস্তাঘাটে বন্ধ হয়ে গিয়েছে যান চলাচল।
The view out my parents garage in Prince Edward County. The drift is up to their second story patio #ONstorm #BombCyclone pic.twitter.com/ocbD9KPuZF
— Smith (@RileyZSmith) December 25, 2022
আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা, বম্ব ঘূর্ণিঝড়ে আরও প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। বরফের স্তূপের কারণে বাসিন্দারা বাড়ির ভিতর আটকে পড়েছে। লক্ষাধিক বাড়ি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে এক লাখেরও বেশি মানুষ ব্ল্যাকআউট এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্মুখীন হচ্ছে। বুফালোতে বড়দিনে ১৬% বাসিন্দাদের ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, এই ঘূর্ণিঝড়কে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। বছরের সবচেয়ে ব্যস্ত সময়ে লক্ষ লক্ষ আমেরিকান ঘর বন্দি। দুর্যোগের কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে বুফালোর নিয়াগারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বাতিল করা হয়েছে ২ হাজার ৩৬০টি উড়ান। সোমবার পর্যন্ত এখানে কোনও বিমান ওঠা-নামা করবে না বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
পূর্বাভাস সত্যি করেই তামিলনাড়ুতে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় মন্দাস (Cyclone Mandaus)। ঘণ্টায় ৮৫ কিমি বেগে দক্ষিণের এই রাজ্যের মল্লপুরমের কাছে শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ আছড়ে পড়ে ভারী ঘূর্ণিঝড়। এই দুর্যোগের প্রভাবে সেভাবে প্রাণহানির খবর না মিললেও, প্রচুর সম্পত্তিহানির খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রাণহানি একদম শূন্য এটা বলা চলে না। একেবারে প্রাণহানি এড়ানো যায়নি। ঝড়ের কারণে চেন্নাইয়ের (Chennai) মাদিপক্কমে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা একজন মহিলা এবং তাঁর পরিবারের সদস্য। পাশাপাশি সইদাপেটে বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়ে একই পরিবারের চার। আহতদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এখনও পর্যন্ত খবর, চেঙ্গলপাত্তুতে কয়েকশো গাছ উপড়ে গিয়েছে। প্রবল বৃষ্টির জেরে রাস্তাঘাট জলমগ্ন। অন্যদিকে শহর চেন্নাইয়ে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে একশো মিলিমিটারের বৃষ্টি হয়েছে। গ্রেটার চেন্নাই কর্পোরেশন সূত্রে খবর, দুশোরও বেশি গাছ উপড়ে গিয়েছে। রাতের মধ্যেই সেই গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কারের কাজ চলছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, মল্লপুরম, কোভালামে সমুদ্র তীরবর্তী বাড়ির ছাদ উড়েছে। দোকান, মৎস্যজীবীদের বেশ নৌকারও ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতির পরিমাণ কত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ফের ঘূর্ণিঝড়ের (Cyclone) আতঙ্ক। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে (Bay of Bengal) নিম্নচাপ ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় 'মনদৌস' (Mandous)-এ পরিণত হয়েছে। যার জেরে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে তুমুল ঝড়বৃষ্টির (Heavy Rain) সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। মৌসম ভবন জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি গত তিন ঘণ্টায় ঘণ্টায় ৮ কিলোমিটার বেগে প্রায় পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে চলে গিয়েছে। এর ফলে উত্তর তামিলনাড়ু, পুদুচেরি এবং অন্ধ্রপ্রদেশে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি শুরু হবে চেন্নাইয়ে। এছাড়া বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রায় ৮৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে৷
ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (NDRF) দলগুলি তামিলনাড়ুতে নাগাপট্টিনাম, থাঞ্জাভুর, তিরুভারুর, কুদ্দালোর, মাইলাদুথুরাই এবং চেন্নাইতে মোতায়েন করা হয়েছিল। এনডিআরএফ-এর তিনটি দল পুদুচেরি এবং কারাইকাল মোতায়েন করা হয়েছে। দুটি কন্ট্রোল রুম ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রও চালু রয়েছে। দক্ষিণ ভারতে ‘মনদৌস’-এর প্রভাবে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও, বাংলায় এই ঘূর্ণিঝড়ের তেমন প্রভাব পড়বে না। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, তবুও নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থানের দিকে নজর রাখা হচ্ছে। ‘মনদৌস’-এর প্রভাবে বাংলায় বৃষ্টি না হলেও তাপমাত্রা বাড়বে। শীতের মুখে তাপমাত্রার পারদ বেশ খানিকটা চড়তে পারে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে।
বঙ্গে সিত্রাংয়ের পর এবার ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মান্দাস। মান্দাসের প্রভাব সরাসরি বঙ্গের উপরে না পড়লেও, পরোক্ষ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা। মান্দাসের অভিমুখ রয়েছে তামিলনাড়ু ও পুদুচেরি উপকূলের দিকে। বঙ্গোপসাগরে এই ঘূর্ণাবর্ত ইতিমধ্যেই নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে, বৃহস্পতিবারের মধ্যে এটা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটার। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের এই নিম্নচাপ দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোলে এটা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এটা তৈরি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার সকালে এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে। ল্যান্ডফলের সময়ের গতিবেগ থাকবে ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। এমনটাই আবহাওয়া দফতর সূত্রে পূর্বাভাস।
সোমবার ঘূর্ণিঝড় (Cyclone) সিত্রাং (Sitrang) বাংলাদেশের ছয় জেলায় ভয়াবহ আঘাত আনে। ঘূর্ণিঝড়ের ফলে গোটা বাংলাদেশে (Bangladesh) ১১ জনের মৃত্যু (Death) হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর। ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)উপকূল ঘেঁষে সোমবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে বরিশালের কাছে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করে বলে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে।
নিহত ১১ জনের মধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে ভোলা সদর ও চরফ্যাসন এলাকায় গাছ পড়ে। কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে গাছের নিচে চাপা পড়ে একই পরিবারের তিন সদস্য নিহত হয়েছেন। সিরাজগঞ্জে নৌকাডুবির ঘটনায় মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের উপকূলবর্তী বেশ কয়েকটি এলাকায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করেছে। নোয়াখালি, ভোলা, বরিশাল ও কক্সবাজারে জলস্তর বেড়ে প্রায় নয় ফুটের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, ঘূর্ণিঝড়টি সিলেট জেলা হয়ে ঢাকা অতিক্রম করে সোমবার রাতে ভারতে প্রবেশ করে। যদিও ভারতে সেভাবে আঘাত আনতে পারেনি ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং।
ঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত উপকূলসহ দেশের অধিকাংশ স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি বন্দর অতিক্রম করার আশঙ্কায় চট্টগ্রাম, পায়রা ও মংলা সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজার উপকূলসহ দেশের উপকূলীয় ১৫টি জেলাকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার ঘোষণা করেছে যে, মঙ্গলবার চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে সেগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও মঙ্গলবারের সব পরীক্ষা স্থগিত করেছে।
প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে শুধু সড়ক ও সমুদ্র যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে তা নয়, টেলিযোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অন্যদিকে, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সোমবার বিকেল থেকে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ভারতীয় সময় সাড়ে ন'টা থেকে সাড়ে ১১ টার মধ্যে বরিশালের কাছে তিনকোনা ও সন্দীপ আইল্যান্ডের মাঝে ল্যান্ডফল হয়েছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। ল্যান্ডফল হওয়ার পর শক্তি হারিয়েছে সিত্রাং। সিত্রাংয়ের প্রভাব যেটুকু যা পড়ার তা বাংলাদেশেই (Bangladesh) পড়েছে। আছড়ে পরার পরে উত্তর থেকে উত্তর পূর্ব দিকে দ্রুতগতিতে এগিয়েছে সিত্রাং (Sitrang)। সাইক্লোন (Cyclone) থেকে শক্তি কমে গভীর নিম্নচাপে (Weather) পরিণত হয়েছে।
উত্তর পূর্ব দিকে সরে গিয়ে আরও দুর্বল হবে এই নিম্নচাপ। দক্ষিণবঙ্গে এর আর কোনও প্রভাব থাকছে না বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আজ, মঙ্গলবার থেকেই শুষ্ক আবহাওয়া থাকবে বাংলায়। বৃষ্টিপাত হলেও হালকা বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভবনা। তবে সমুদ্র উত্তাল থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
আজ, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। দুপুরের পর থেকে সমুদ্রেও কমে যাবে। দেশের উত্তর-পূর্ব অংশের রাজ্যগুলিতে এর খানিকটা প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভবনা।
সিত্রাং (Cyclone Sitrang) আশঙ্কায় উৎসবপ্রিয় বাঙালিকে ঘরে থাকতেই পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata)। সোমবার বাড়ির পুজোর (Kali Puja 2022) প্রস্তুতির ফাঁকেই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন তিনি ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য গতিপথ, ল্যান্ডফল, গতিবেগ এবং বাংলায় তার প্রভাব কতটা? এসব নিয়ে বিস্তারিত বলেন। কালীঘাটে নিজের বাড়িতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশের বরিশালে ল্যান্ডফল হবে রাত ১২টা নাগাদ। বাংলায় হালকা-মাঝারি ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। মঙ্গলবার পর্যন্ত বাংলায় দুর্যোগের সম্ভাবনা আছে। আমরা যাঁদের উদ্ধার করেছি, তাঁরা যেন কোনওভাবেই সরকারি ত্রাণ শিবির না ছাড়েন। প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। আর উৎসব করুন , পুজো করুন সঙ্গে খুব দরকার না পড়লে বাড়ির বাইরে বেরোবেন না।'
এদিন মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতে মায়ের ভোগ রান্না করেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ক্রমেই উপকূলের দিকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। এদিন সন্ধ্যার পর গভীর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে সিত্রাং। মঙ্গলবার ভোর রাতে দুই ২৪ পরগনাকে ছুঁয়ে বরিশালে আছড়ে পড়বে এই ঘূর্ণিঝড়। আবহাওয়া দফতর সূত্রে এমনটাই খবর। পাশাপাশি কলকাতা পুরসভার তরফেও খোলা হয়েছে সিত্রাং কন্ট্রোল রুম।
সিত্রাং (Cyclone Sitrang) প্রভাবে ঝড়ের সঙ্গে এবার বৃষ্টির সতর্কবার্তা জারি। কালীপুজোর (kali Puja 2022) সন্ধ্যাতেই কলকাতা এবং তার সংলগ্ন জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে বলে জানালো মৌসম ভবন (Weather Office)। এদিকে, সোমবার দুপুরের মধ্যে উপকূলের থেকে প্রায় ৩০০ কিমি দূরে অবস্থান করছে এই ঘূর্ণিঝড়। সাগরদ্বীপ এবং বরিশালের মাঝে ল্যান্ডফল করবে এই ঘূর্ণিঝড়। পাশাপাশি সোমবার সকাল থেকে রাজ্যের দক্ষিণের জেলাগুলিতে থমথমে আকাশ। ভোর থেকে ঝিরঝিরে কিংবা মাঝারি বৃষ্টি রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলা এবং গাঙ্গেয় বঙ্গে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, এই ঝিরঝিরে বৃষ্টি কিছুই না। বেলা গড়ালে সিত্রাংয়ের প্রভাবে আরও বাড়তে পারে বৃষ্টি।
সোমবার সকাল থেকে রাজ্যের দক্ষিণের জেলাগুলিতে থমথমে ছিল আকাশ। ভোর থেকে নাগাড়ে বৃষ্টিও শুরু হয়েছিল বেশ কিছু এলাকায়। তবে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, এই ঝিরঝিরে বৃষ্টি কিছুই না। বেলা গড়ালে সিত্রাংয়ের প্রভাবে আরও বাড়তে পারে বৃষ্টি।
অপরদিকে, সোমবার কালীপুজো তাই রবিবার থেকেই প্রস্তুতি ছিল তুঙ্গে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ঝোড়ো হাওয়া বয়েছে। সোমবার সকালে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, কলকাতা-সহ দক্ষিণের ৭ জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিও হতে পারে। তাই কালীপুজো এবং মঙ্গলবার দীপাবলি, এই দুটো দিন বৃষ্টি মাটি করতে পারে উৎসবের আমেজ।
সোমবার সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ, সঙ্গেই দু এক পশলা বৃষ্টি (rain)। তবে আপাতত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই বলেই পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। আবহাওয়া দফতর (Meteorological Department) সূত্রে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় সুন্দরবন ছুঁয়ে গেলেও রাজ্যে বড় কোনও প্রভাবের সম্ভাবনা নেই। ঘূর্ণিঝড়ের (Cyclone) অভিমুখ বাংলাদেশে (Bangladesh) এবং তা আছড়ে পড়বে বরিশালের কাছে। তবে এবঙ্গে কিছুটা প্রভাব পড়বে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। সঙ্গেই ভরা কোটালের কারণে বাড়তি নজরজারির কথা জানিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর।
আবহাওয়া দফতরের তরফে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২৪ অক্টোবর সোমবার সকালের মধ্যে উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ জেলার কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি জেলাগুলির আবহাওয়া মূলত শুকনো থাকবে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা অর্থাৎ ২৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালের মধ্যে উত্তরবঙ্গের সবকটি জেলাতেই হাল্কা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি জেলাগুলির আবহাওয়া শুকনো থাকবে। আপাতত দিন ও রাতের তাপমাত্রার সেরকম পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গের ক্ষেত্রে জানানো হয়েছে, ২৫ অক্টোবর মঙ্গলবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ২৪ অক্টোবর, সোমবার সকালের মধ্যে দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়ায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূল এলাকায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা অর্থাৎ ২৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালের মধ্যে রাজ্যের সবকটি জেলারই কোথাও না কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
এদিকে, কলকাতা ও তার আশপাশের এলাকার আকাশ মূলত মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বোচ্চ ও সর্মনিম্ন তাপমাত্রা ৩১ ও ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। এদিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি বেশি। আপেক্ষিক আর্দ্রতা সর্বোচ্চ ৮১ শতাংশ।