মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata) বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার (Contempt of Court) মামলা দায়ের করতে চেয়ে হাইকোর্টে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Bhattacharya)। হাইকোর্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করুক, এমনটাই আবেদন বিকাশবাবুর। এই মর্মে বিচারপতি টি শিবাজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এই আইনজীবী। তাঁর আবেদন হলফনামা আকারে জমা করতে নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের। সেই মামলা গ্রহণ হবে কিনা বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নেবে আদালত বলেই সূত্রের খবর। মঙ্গলবার আলিপুর জজ কোর্টের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যর কয়েকটি অংশে আপত্তি তুলে আদালতের দ্বারস্থ বিকাশরঞ্জন।
সেই মন্তব্যে আদালত অবমাননা হয়েছে বলে অভিযোগ এই আইনজীবীর। মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ-কাণ্ডে চাকরিহারাদের পাশে ঘুরিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। জজ কোর্টের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর অন্যতম মন্তব্য, 'যাঁদের চাকরি গিয়েছে আইনি পথে তাঁদের চাকরি ফেরানো হোক। দরকারে আবার ওদের পরীক্ষা নেওয়া হোক। আদালত যেভাবে বলবে সরকার সেভাবেই ব্যবস্থা করবে।' এখানেই আপত্তি তোলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তার প্রশ্ন, 'মুখ্যমন্ত্রীর মতো পদে থেকে কীভাবে এই ধরনের মন্তব্য বা আবেদন করা যায়?'
পাশাপাশি তাঁর বক্তব্যের শেষদিকে জজ কোর্টের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি প্রধান বিচারপতিকে সামনে পেলাম না। সুব্রত দা-কে পেলাম, আমি শুধু বললাম এটা আমার মনের ভাবনা।' এই মন্তব্যর বিরোধিতায় সরব বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এবারে হলফনামা আকারে বিকাশবাবুর আবেদন জমা পড়ার পর আদৌ এই মামলা গ্রহণ হবে কিনা, তার জন্য অপেক্ষা কয়েক ঘণ্টার।
কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta high Court) ইডির বিরুদ্ধে মানেকা গম্ভীরের করা আদালত অবমাননার মামলা খারিজ। শুক্রবার আদালতের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য এই মামলা খারিজ করে বলেন, 'ইডি (ED) যাতে মানেকা গম্ভীরের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নিতে পারে, কোর্ট সেই রক্ষাকবচ দিয়েছিল। কিন্তু মানেকা গম্ভীর (Maneka Gambhir) কোথায়, কী কাজ যাবে এবং সেই প্রসঙ্গে ইডির কী ভূমিকা হবে? এই সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ দেয়নি। তাই বিমান বন্দরে (Kolkata Airport) মানেকা গম্ভীরকে আটকে আদালত অবমাননা করেনি কেন্দ্রীয় সংস্থা।'
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য সম্প্রতি থাইল্যান্ড যাওয়ার পথে বিমান বন্দরে অভিষেকের শ্যালিকাকে আটক করে অভিবাসন দফতর। তাঁর বিরুদ্ধে ইডির লুকআউট নোটিস আছে। এই যুক্তি দেখিয়ে তাঁকে বিমানে উঠতে বাধা দেওয়া হয়। অগত্যা থাইল্যান্ড না গিয়ে ফিরতে হয় মানেকা গম্ভীরের। সেই ঘটনার রেশ মিলিয়ে যাওয়ার আগেই একদিন রাত ১২টার পর ইডি দফতরে আইনজীবীকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন মানেকা। যদিও পরে জানা গিয়েছিল, ওটা রাত নয় দুপুর ১২টা হবে। এএম, পিএম ত্রুটি এই অসুবিধার নেপথ্যে। পরে অবশ্য নতুন করে নোটিস পাঠিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে ডাকা হয় অভিষেকের শ্যালিকাকে।
তারপরেই আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে ইডির বিরুদ্ধে মামলা করেন মানেকা গম্ভীর। সেই মামলার নিষ্পত্তি এদিন হাইকোর্টে করলেন বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য।
ইডির বিরুদ্ধে অভিষেকের শ্যালিকা মানেকা গম্ভীরের (Maneka Gambhir) দায়ের করা আদালত অবমাননার (Contempt of Court) মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থার (ED) থেকেই রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের। পাশাপাশি কলকাতা বিমানবন্দরের অভিবাসন (Immigration) দফতরকেও জানাতে হবে বক্তব্য। বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিন হলফনামা দিয়ে অবস্থান জানাবে ইডি এবং ইমিগ্রেশন। এদিন শুনানির বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের বেঞ্চ জানায়, মানেকা গম্ভীরকে বিদেশে যেতে বাধা দেওয়া হবে। এ বিষয়ে অবগত ছিল না আদালত।
ইডির আইনজীবী জানান, আদালতের নির্দেশ কঠোর পদক্ষেপ নয়। আমরা কোনও কঠোর পদক্ষেপ করিনি। তবে আদালতের নির্দেশে কোথাও বলা ছিলো না, তাঁকে বিদেশে যেতে বাধা দেওয়া যাবে না। এই যুক্তির প্রেক্ষিতে মানেকা গম্ভীরের আইনজীবী বলেন, 'আমার মক্কেল এই মামলায় অভিযুক্ত নয়। কোনও লুকআউট নোটিশ ছিল না। তাঁকে সমন পাঠানো হয়েছিল। মানেকা গম্ভীরের মা অসুস্থ থাকায় বিদেশে যেতে হতো। দেশ ছেড়ে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা ছিল না। ইমিগ্রেশন অফিসারদের কাছে, ওকে আটক করার কোনও কারণ ছিল না। ওর কাছে ফেরার টিকিটও ছিল।'
পাল্টা ইডি আইনজীবী জানান, লুকআউট নোটিস জারি করলে সেটা সেই ব্যক্তিকে জানাতে হবে এমন কোনও মানে নেই। দু'পক্ষের এই সওয়াল-জবাবের মধ্যে বিচারপতির মানেকা গম্ভীরের আইনজীবীর উদ্দেশে প্রশ্ন, 'আপনার আবেদনটা ঠিক কী? আপনি কী চান? অভিষেকের শ্যালিকার আইনজীবী জানান, মানেকা গম্ভীর বিদেশে যেতে চাইলে, তাঁকে আবার বাধা দেওয়া হবে। গ্রেফতার না করা হলেও আটক করা হবে। আমারা আগামীকাল জানাতে চাই।
দু'পক্ষের এই সওয়াল-জবাব শেষে ইডি-ইমিগ্রেশনকে হলফনামা দিতে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। পাশাপাশি আগামিকাল এই মামলার পরবর্তী শুনানি রাখা হয়েছে।
রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবের বিরুদ্ধে কেন জারি হবে না আদালত অবমাননার (Contempt of Court) রুল? ব্যাখ্যা চেয়ে হলফনামা তলব কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদি ও অর্থসচিব মনোজ পন্থের থেকে হলফনামা তলব করল আদালত। আগামী ৪ নভেম্বরের মধ্যে হলফনামা তলব বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তর ডিভিশন বেঞ্চের। বকেয়া ডিএ প্রদানে গড়িমসি করে আদালত অবমাননা করেছে রাজ্য। সেই অভিযোগে দায়ের মামলায় এই নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
আগামী ৯ নভেম্বর এই মামলার শুনানি। মহার্ঘ ভাতা মামলায় রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেছে সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি। সেই মামলাতেই এই নির্দেশ। এদিকে, DA বা মহার্ঘ ভাতা মামলায় হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বড়সড় ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার (Mamata Government)। বকেয়া ডিএ প্রদান সংক্রান্ত ডিভিশন বেঞ্চের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে দিল বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের। মে মাসের রায় বহাল রেখেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে বৃহস্পতিবার আবার জানিয়ে দিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যের তরফে অর্থাভাবের যুক্তি দেওয়া হলেও, সেই যুক্তি খারিজ হয়েছে আদালতে। ডিভিশন বেঞ্চের এই রায়ে পুজোর আগে কয়েক হাজার সরকারি কর্মীর মুখে হাসি ফুটবে। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যদিও রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্ট যাবে তারা। তাই আগেভাগেই শীর্ষ আদালতে ক্যাভিয়েট দাখিল করতে চলেছে সরকারি কর্মী ফেডারেশন। যাতে তাঁদের না জানিয়ে কোনও শুনানি না হয় আদালতে। কর্মী সংগঠনের দাবি, 'শীর্ষ আদালতে মুখ পুড়বে সরকারের। বরং সুপ্রিম কোর্ট সুদ-সহ বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দিতে পারে। কারণ বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায়ের উল্লেখ করে জানিয়ে দিয়েছে কেন ডিএ বকেয়া রাখা যাবে না।'
সরকারি কর্মচারী সংগঠনের একজন জানান, ২০১৬ থেকে স্যাট, হাইকোর্ট, হাইকোর্ট স্যাট করে বকেয়া ডিএ প্রদান দেওয়া নিয়ে গড়িমসি করছে। বরং রাজ্যকে কটাক্ষের সুরে হাইকোর্ট বলেছে আপনারা নতুন করে আবেদন করছেন কেন? রায় পুনর্বিবেচনা মানে আগের রায়ে কোনও ভুল-ত্রুটি থাকলে সেটা সংশোধন। তাই আপনাদের এই আবেদন গৃহীত নয়য়। ২০ মে ২০২২-র রায় মেনেই ডিএ দিতে হবে।'