জিটিএ-তে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিঙ্গেল বেঞ্চের সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ বহাল রাখল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আজ, শুক্রবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি হরিশচন্দ্র টন্ডন ও মধুরেশ প্রসাদ-এর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় সিবিআই অনুসন্ধান হোক। অনুসন্ধানের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানান বিচারপতি।
পাহাড় নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ সিঙ্গেল বেঞ্চ সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন মেনে আবেদন করেছিল রাজ্য। রাজ্যের আবেদনের ভিত্তিতে শুনানি বৃহস্পতিবারই শেষ হয়ে গিয়েছিল। আজ, শুক্রবার তারই রায়দান হল। রায় দান করতে গিয়ে বিচারপতি হরিশচন্দ্র টন্ডন ও মধুরেশ প্রসাদ জানান, রাজ্যের আবেদনের কোনও গুরুত্ব নেই। সিবিআই অনুসন্ধান রিপোর্ট দেওয়ার পরে পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন। আপাতত সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট।
মণি ভট্টাচার্য: পাহাড়েও নিয়োগ দুর্নীতি, এই অভিযোগে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে সিবিআই অনুসন্ধানের প্রসঙ্গ। জিটিএ-তে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানের বিরুদ্ধে এবার হাইকোর্টে আবেদন রাজ্যের। সূত্রের খবর, ৯-ই এপ্রিল হাইকোর্ট জিটিএ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়। ২৫ তারিখ অর্থাৎ ১৫ দিনের মধ্যে একটি রিপোর্ট সিবিআইকে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এবার সিবিআই অনুসন্ধান বন্ধের দাবিতে প্রধান বিচারপতির কাছে মামলা করতে চেয়ে আবেদন রাজ্যের। মামলার অনুমতি প্রধান বিচারপতির, চলতি সপ্তাহে শুনানির সম্ভাবনা।
জিটিএ নিয়োগে দুর্নীতিতে বিনয় তামাং, অনীত থাপার হাত ধরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে ক্যান্ডিডেট লিস্ট, বিচারপতির কাছে একটি বেনামী চিঠি। স্বতঃপ্রনোদিত মামলা করেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। সেই মামলায় গত সপ্তাহে সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের। তাত্পর্যপূর্ণ ভাবে তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের নাম যুক্ত হয় মামলায় । জিটিএতে নিয়োগ দুর্নীতিতে ৭০০-১০০০ জন নিয়োগ হয়েছে। হাইকোর্ট সিবিআই অনুসন্ধান দিতেই জিটিএ-র নিয়োগ দুর্নীতিতে এফআইআর দায়ের রাজ্যের। এফআইআর-এ পার্থ সহ একাধিক তৃণমূল নেতার নাম। বিধাননগর উত্তর থানায় এফআইআর। এবার এই এফআইআর-এর দোহাই দিয়ে সিবিআই অনুসন্ধান বন্ধের আর্জি রাজ্যের। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, এটাই প্রত্যাশিত। সিবিআই অনুসন্ধান যাতে সিবিআই তদন্তে রূপান্তরিত না হয়, তাই এফআইআর রাজ্যের। কারণ এই নিয়োগ দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ঢুকে পড়লে কানের সঙ্গে মাথাদের ধরা পড়ার আশঙ্কায় কি থরহরিকম্প রাজ্য, উঠছে প্রশ্ন।
উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট স্কুলের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যে হইচই পড়েছিল ২০১৮ সালে। দাড়িভিটকাণ্ডের তদন্ত এখনও বিচারাধীন কলকাতা হাইকোর্টে। এবার এই মামলায় আগামী সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং এডিজি সিআইডি-কে ভার্চুয়ালি হাজিরার নির্দেশ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার।
প্রসঙ্গত, এই মামলায় ২০২৩ সালের ১০ মে বিচারপতি মান্থা এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে দশ মাস কেটে গেলেও, এনআইএ-কে রাজ্যের তরফ থেকে তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়নি। শুধু তাই না, দশ মাস কেটে যাওয়ার পরেও মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি রাজ্যের পক্ষ থেকে। সম্প্রতি মামলার জল আদালতে গড়ায় আরও দূর। সিঙ্গল বেঞ্চের এনআইএ তদন্তের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য দ্বারস্থ হয় ডিভিশন বেঞ্চের। সেখানেও মুখ পোড়ে রাজ্যের। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চেও বহাল থাকে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ। একইসঙ্গে ক্ষতিপূরণের টাকাও এক সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিকে, গত বছরের মে মাসেই রাজ্যের আদালত অবমাননার জন্য ক্ষুব্ধ হয়ে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং এডিজি সিআইডিকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়ে রাজ্যের ওপর করেছিলেন রুল জারি। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ আগের শুনানিতে সেই নির্দেশেও কোনও স্থগিতাদেশ নয়- জানিয়ে দিয়েছিলেন স্পষ্ট। এবার, শুক্রবার মামলার শুনানিতেও অনুপস্থিত তাঁরা। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের ওপর চূড়ান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি মান্থা। রাজ্যের ওপর রুল জারি করে তাঁর মন্তব্য, রাজ্যের সর্বাধিক পদে বসে থাকার পরও আদালতের নির্দেশ মানছেন না, আদালতের নির্দেশে রাজ্যের কোনও হেলদোল নেই- বিস্ময়প্রকাশ বিচারপতির।
এরপরেই বিচারপতি নির্দেশ দেন, আগামী সোমবার মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং এডিজি সিআইডিকে আদালতে ভার্চুয়ালি হাজিরা দিতে হবে। পর্যবেক্ষণে বিচারপতি মান্থা জানান, এর আগে এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। তাঁরা এতটা উচ্চপদস্থ হয়ে গিয়েছে যে আদালতের নির্দেশও তাঁরা মানতে পারছেন না! আদালত আরও একটা সুযোগ দিল। তাঁরা যদি আগামী সোমবার আদালতে হাজিরা না দেন, তবে আরও কড়া পদক্ষেপের কথা ভাববে আদালত।
সন্দেশখালির ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চের নির্দেশ, এব্যাপারে রাজ্যকে সব রকম সাহায্য করতে হবে। সেখানকার মানুষ তাদের অভিযোগ সরাসরি সিবিআইকে জানাতে পারবে। এজন্য সিবিআইকে আলাদা পোর্টাল তৈরি করতে হবে। জমি দখল, ধর্ষণ, চাষের জমিকে ভেড়িতে পরিবর্তন করা সহ সমস্ত অভিযোগের তদন্ত করবে সিবিআই। আদালতের নজরদারিতে হবে তদন্ত। স্পর্শকাতর এলাকায় ১৫ দিনের মধ্যে সিসিটিভি বসাতে হবে। বসাতে হবে এলইডি আলো। সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিতেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া আদালত যে কোনও পদমর্যাদার যেকোন ব্যক্তিকে তদন্তের স্বার্থে ডেকে পাঠাতে পারবে সিবিআই। ২ মে পরবর্তী শুনানির দিন তদন্তে অগ্রগতির রিপোর্ট দেবে সিবিআই।
এর আগে গত পাঁচ জানুয়ারি শেখ শাহজাহানের বাড়িতে গিয়ে ইডির আধিকারিকদের ওপরে হামলার ঘটনার তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুযায়ী সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত সাসপেন্ডেড তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই আধিকারিকরা তদন্ত করতে সন্দেশখালির আকুঞ্জিপাড়ায় শেখ শাহজাহানের বাড়ি যাওয়ার পাশাপাশি তাঁর স্ত্রীকে ডেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
এদিন আদেশ দিতে গিয়ে আদালত বলেছে, সন্দেশখালির ঘটনার কথা বিবেচনা করে আদালত মনে করে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত। তাই আদালত মনে করে যে এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়া হোক, সরকারকে তাঁকে যথাযথ সহায়তা করতে হবে। আদালতের তরফে আদেশে বলা হয়েছে, অভিযোগ গ্রহণের জন্য একটি পোর্টাল ও ইমেল আইডি চাবলু করতে হবে। জেলাশাসককে এব্যাপারে তারিখ উল্লেখ করে পর্যাপ্ত প্রচার চালাতে হবে। আদালত বলেছে, সিবিআই জমি দখলের অভিযোগের তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিল করবে। সাধারণ মানুষ ছাড়াও সরকারি, বেসরকারি যে কোনও ব্যক্তি কিংবা সংস্থার (এনজিও) কর্তাব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অন্যদিকে আদালত পুরো বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।
ভূপতিনগর বিস্ফোরণকাণ্ডে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। ভূপতিনগরে তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয়েছিল এনআইএ আধিকারিকদের। এদিকে পুলিস এনআইএর বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করেছে। সেই এফআইআর খারিজ করার আবেদন জানিয়ে মঙ্গলবার আদালতের দ্বারস্থ হল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে এই মামলার আবেদন জানানো হয়েছে। আজই বেলা আড়াইটে নাগাদ এই মামলার শুনানি৷
সন্দেশখালিতে তদন্তে গিয়ে এর আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডিকে আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছিল। আধিকারিকের মাথা ফাটে। প্রাণ নিয়ে পালিয়ে ফেরেন তদন্তকারীরা। এরপর দেখা গিয়েছিল ইডির বিরুদ্ধেই থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। ইডিকেও সেই বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল। এবার একই পথে হেঁটে এনআইএও হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল। ভূপতিনগরে বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্তে গিয়েছিল এনআইএ। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন তারা। গ্রামবাসীদের মধ্যে মূলত মহিলারা পথ আটকান। লাঠি, বাঁশ নিয়ে তারা বিক্ষোভ দেখান। গাড়ির কাঁচ ভাঙা হয়৷
অভিযুক্তদের গ্রেফতারে বাধা দেওয়া হয়। একজন এনআইএ অফিসার জখম হন। সেই ঘটনায় এনআইএ অভিযোগ দায়ের করে। কিন্তু পরে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসারদের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার অভিযোগ করা হয়। ভূপতিনগরের ঘটনায় রীতিমতো তরজা চলছে রাজনৈতিক শিবিরে।
শনিবার ভূপতিনগরের ঘটনায় এনআইএ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস মঙ্গলবার সকাল অবধি গ্রেফতার করেনি বলে খবর৷ এনআইএর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ে করা হয়েছে। ধৃত এক তৃণমূল নেতার পরিবার এই অঅভিযোগ দায়ের করেছে৷ এই অভিযোগের তদন্ত পুলিস করছে।
বীরভূম আমদল হিন্দু মিলন মন্দিরের ধর্মীয় শোভাযাত্রার অনুমোদন চেয়ে এবার আদালতের দ্বারস্থ সঙ্ঘ। ১ এপ্রিল সকাল ৮ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত ধর্মীয় শোভাযাত্রার অনুমতি চাইলে সে অনুমতি দেয়নি পুলিস বলেই আদালতে অভিযোগ করেছে সঙ্ঘ। তাদের দাবি বিগত ৩৭ বছর ধরে এই ধর্মীয় শোভা যাত্রা হয়। শর্ত সাপেক্ষে শোভা যাত্রার অনুমোদন দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
এদিন আবেদনকারী আইনজীবী কৃষ্ণেন্দু সরকার তার শুনানিতে বলেন, আমি প্রথম ১৭ তারিখ আবেদন করি। তারপর আরও দুই বার আবেদন করি। কিন্তু পুলিসের তরফ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
রাজ্যের আইনজীবী অমল সেন উত্তরে বলেন, ৩৭ বছরের এই শোভাযাত্রার কোনও বছর পুলিসের কাছে আবেদন করা হয় না। এই প্রথম তারা আবেদন করেছেন। পুলিসের রিপোর্ট দেখুন। এর আগে পুলিস ওই সঙ্ঘের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। পুলিস একটা আলাদা রুট সাজেস্ট করেছে। সেটা দিয়ে গেলে কোনও অসুবিধা নেই। ওদের পছন্দ মতো রুটে পূর্বপাড়া মাজার রয়েছে। তাই একটু বদল করার আবেদন করা হয়েছে। পুরো রাস্তা বদল নয়। এক কিলোমিটারের মত রাস্তা ঘোরানো হচ্ছে। আর শব্দদূষণ হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। ওই সময় স্কুলের সময় তাই অসুবিধা হতে পারে।
মোবাইল চুরির ঘটনায় আদালতের নির্দেশে ভার্চুয়ালি হাজিরা কলকাতা পুলিস কমিশনার।আদালতে হাজির হয়ে পুলিস কমিশনার জানান কলকাতা হাইকোর্টের আগের যে নির্দেশ ছিল তা ইতিমধ্যে মানা হয়েছে। এদিন সিপির হাজিরাতে খুশি আদালত। ফের এই ধরনের আদালত অবমাননা যেন আর না হয় এমনটাই হুঁশিয়ারি বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার।
পঙ্কজ কুমার দুগার নামে এক ব্যক্তির মোবাইল হারানোর ঘটনার জল গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। ২০২২ সালের ওই মামলায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আদালতে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই রিপোর্ট কমিশনার নিজে জমা না দেওয়ার কারণে আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠে। আবেদন ছিল ১৮ জুন, ২০২২ তারিখে পঙ্কজের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন কোথায় সেটা জানাতে হবে মোবাইল সংস্থাকে। তার সাথে আবেদন ছিল, আলিপুর পুলিস কোর্ট থেকে হাজরা ক্রসিং ও কালীঘাট ফায়ার স্টেশন পর্যন্ত পুর এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেওয়ার। আদালত পুলিস কমিশনারকে যাবতীয় ফুটেজ সংরক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু কমিশনার রিপোর্ট না দিয়ে কালীঘাট থানার ওসি ওই রিপোর্ট জমা দেন।
হাই কোর্টের নির্দেশ না মানায় কলকাতার পুলিস কমিশনারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা। পরবর্তী শুনানি ২২ মার্চে ভার্চুয়ালি হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয় সিপি-কে। অভিযোগ ওঠে একটি মোবাইল ফোন চুরির মামলায় কলকাতার পুলিস কমিশনারকে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তা তিনি মানেননি। আদালত অবমাননার সেই অভিযোগ শুনেই ক্ষুব্ধ বিচারপতি মন্তব্য করেছিলেন, "আদালতের নির্দেশ কি খেলার জিনিস? পুলিস কি মনে করছে আদালতের নির্দেশ না মানলেও চলবে? ভুলে যাবেন না হাই কোর্টের ক্ষমতা কত? কেন আদালত অবমাননার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ নেব না?"
কলকাতার আরও একটি বেআইনি নির্মাণকে জরিমানার অঙ্ক দ্বিগুণ করে দু- লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের। বেআইনি নির্মাণগুলির ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্ট যে চরম পদক্ষেপের পথে হাঁটছে তা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। কলকাতার নন্দীবাগান এলাকায় একটি বেআইনি নির্মাণে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক দ্বিগুণ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা। এর আগে ওই বেআইনি নির্মাণের জন্য প্রোমোটারকে এক লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। বুধবার সেই অঙ্ক বাড়িয়ে ২ লক্ষ টাকা করেছেন বিচারপতি সিনহা।
কিন্তু কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে ঠিক এমন নির্দেশ? কলকাতা পুরসভার ১২ নম্বর বোরোর ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দীবাগান এলাকায় কোনরকম অনুমতি ছাড়া একটি তিন তলার বেআইনি নির্মাণ গড়ে উঠেছিল। নজরে আসতেই বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু পুরসভায় পাল্টা ওই বেআইনি নির্মাণকে আইনি অনুমোদন দেওয়ার জন্য দরখাস্ত করেছিলেন প্রোমোটার। তাতে কাজ না হওয়ায় পরে প্রমোটার নিজেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর আবেদন ছিল নির্মাণটিকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হোক। কিন্তু বিচারপতি সিনহা তাতে কোন আমল দেননি। উল্টে প্রোমোটার কে ১৮ মার্চের মধ্যে জরিমানা বাবদ এক লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
কিন্তু সেই নির্দেশ পালন না করে পাল্টা ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় প্রোমোটার। যেহেতু সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি তাই বুধবার বিচারপতি সিনহার কাছে জরিমানার অঙ্ক জমা দেওয়ার জন্য আরও কিছুটা সময় চান প্রোমোটারের আইনজীবী। আর এতেই চটে যান বিচারপতি। তিনি বলেন আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি এবং ইচ্ছাকৃত জরিমানা এড়ানোর জন্য ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রোমোটার। চূড়ান্ত সাহসিকতার কাজ করছে প্রোমোটার। তাই তাকে এবার দ্বিগুণ জরিমানা দিতে হবে। এরপরই বিচারপতি নির্দেশে জানিয়ে দেন, ২২ মার্চের মধ্যে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে ওই প্রোমোটারকে। ২৭ মার্চ তার রশিদ জমা দিতে হবে আদালতে। সেইদিনই মামলার পরবর্তী শুনানি।
সন্দেশখালিতে ইডির উপর হামলার ঘটনায় শেখ শাহজাহান এখন সিবিআই হেফাজতে। ইডি যাতে তাঁকে গ্রেফতার করতে না পারে, সেজন্য আগাম জামিনের আবেদন তিনি জানিয়েছিলেন। সেই জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সব্বার রশিদীর ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে৷
রাজ্য পুলিস তাঁকে গ্রেফতার করে। আদালতের নির্দেশ মতো এখন শেখ শাহজাহান সিবিআই হেফাজতে। ইডিও মামলা করেছে কলকাতা হাইকোর্টে। ইডি যেন তাঁকে গ্রেফতার না করে। সেই কারণেই আগাম জামিনের আবেদন জানান শেখ শাহজাহান।
ইডি কলকাতা হাইকোর্টে সওয়াল করেছে ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে হামলার ঘটনায়। হেফাজতে থাকা এক অভিযুক্তের সূত্রে তারা শেখ শাহজাহানের নাম জানতে পেরেছে। তার নিজের হাতে লেখা চিঠি থেকে শেখ শাহজাহানের নাম উঠে এসেছে। সওয়ালে দাবি করেছে ইডি। সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে যাওয়া হয়েছিল। সেই সময় তাদের মারধর করা হয়। আদালতের দ্বারস্থ হয় ইডি। পরে আবার তল্লাশি চালাবার আগেই সব সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। এমনই আদালতে দাবি করেছে ইডি।
এখন চার দিনের সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন শেখ শাহজাহান। চলতি সপ্তাহতেই ফের তাকে বসিরহাট আদালতে তোলা হবে। এদিকে শেখ শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ জিয়াউদ্দিন মোল্লাকেও সিবিআই গ্রেফতার করেছে। গতকাল, সোমবার সিবিআই তাঁকে তলব করেছিল। তিনি নিজাম প্যালেসে সিবিআই জেরার মুখোমুখি হন। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
পাড়ায় সমাধানে দুর্নীতির গন্ধ পাওয়া গিয়েছিল আগেই। সমাধানের নামে দুর্নীতি হয়েছিল, উঠেছিল এমনই অভিযোগ। জানা গিয়েছিল, পাড়ায় সমাধানের রেকমেন্ডেশনে একাধিক শিক্ষক বদলি করা হয়েছিল। তবে প্রশ্ন জেগেছিল, এই 'পাড়ায় সমাধান'-এর আইনি বৈধতা কী? কাদের সিদ্ধান্তে ওই শিক্ষকদের বদলি? আগেও জানতে চেয়েছিল আদালত।
সম্প্রতি এই মামলায় বোর্ডের কাছে আদালত হলফনামা চাইলে, সেই হলফনামায় বোর্ডের উল্লেখ, কমিশনের নির্দেশেই ওই সকল বদলি করা হয়েছিল। শুধু তাই না, সেখানে সই ছিল তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীরও। এরপরেই সোমবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ২১৬ জন শিক্ষকের বদলিতে মন্ত্রীর এবং কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
বিচারপতির মন্তব্য, বোর্ডের হলফনামায় প্রকাশ, পাড়ায় সমাধান থেকে আসা রেকমেন্ডেশনের আবেদন গৃহীত হয়ে বদলি হয়েছে কমিশনের নির্দেশে। এরপরেই বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, কমিশনকে এই নির্দেশ কে দিল? মিনিস্টার ইন চার্জই বা কীভাবে সই করলেন? সেই রেকর্ড আদালতের কাছে পেশ করতে হবে বলেই মন্তব্য করেন বিচারপতি। শুধু তাই না, মামলায় রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতি বলেন, দুর্নীতি হয়েছে সামনে এসেছে। এরপর রাজ্য ঠিক করুক, এই মামলার তদন্ত রাজ্য তার হাতে রাখবে, নাকি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্তের নির্দেশ দেবে আদালত।
যদিও সমস্ত প্রশ্নের উত্তরেই রাজ্যের তরফ থেকে আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, আদালতের প্রশ্নের উত্তর দিতে আমার কিছু সময় লাগবে। তাঁকে বেশ কিছু তথ্য জোগাড় করতে হবে, আর তার জন্যই সময় চাওয়া বলে জানান আইনজীবী কিশোর দত্ত। সোমবার পাড়ায় সমাধান মামলার শুনানির শেষে বিচারপতির নির্দেশ, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যকে এই মর্মে তাদের সব বক্তব্য পেশ করতে হবে আদালতে। এখন দেখার পরবর্তী শুনানিতে কোন দিকে মোড় নেয় পাড়ায় সমাধানে দুর্নীতির মামলা।
ডিভিশন বেঞ্চে ফের ধাক্কা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। মেডিক্যাল কলেজ দুর্নীতি মামলায় বুধবারই তাঁর সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ হয়। এবার সিবিআইয়ের দায়ের এফআইআরও খারিজ করে দিল বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। একইসঙ্গে আদালতের নির্দেশ, আদালত থেকে সংগৃহীত নথি ফেরত দিতে হবে সিবিআইকে।
সিঙ্গেল বেঞ্চের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চ স্থগিত করার কথা জানার পরেও কি করে রেজিস্ট্রার জেনারেল অফিস সেই রায়ের কপি সিবিআইকে পাঠালো? বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে রেজিস্ট্রার জেনারেলকে। আগামী সোমবার মামলার শুনানি।
উল্লেখ্য, ডাক্তারি পরীক্ষায় রিজার্ভ পরীক্ষার্থীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে ভুয়ো শংসাপত্র। রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন দুর্নীতির আবহেই ডাক্তারি পরীক্ষায় এমবিবিএস-এর রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র জমা দিয়ে নিয়োগের অভিযোগে আদালতে মামলা রুজু হয়েছিল। এই ঘটনাতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, এর আগেও ১৪ জন চিকিৎসকের নিয়োগ বাতিল করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু তারপরে আবারও মিলেছে জাতিগত ভুয়ো শংসাপত্র জমা দিয়ে নিয়োগের তথ্য প্রমাণ। আর তারপরেই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।
মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদে নাম নথিভুক্ত করাতে হয় নবম শ্রেণিতে। সেই রেজিস্ট্রেশনের একটা নির্দিষ্ট সময় ধার্য করা থাকে। এবছরও তা ধার্য করা হয়েছে। তবে এই রেজিস্ট্রেশন নিয়ে উদাসীন রাজ্যের কয়েকটি স্কুল। যার জেরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর তোপের মুখে পড়লেন সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা। রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় এই প্রধান শিক্ষকদের নিজের পকেট থেকে দিতে হবে ফাইন। এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।
বিচারপতি বসু নির্দেশ দিয়েছেন, মোট ২ লক্ষের বেশি টাকা জরিমানা দিতে হবে চার প্রধান শিক্ষককে। এদের মধ্যে রয়েছে, ভগবানপুর কেবিএস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান। তাঁকে দিতে হবে ১ লক্ষ ২০ হাজারের বেশি টাকা। পর্ষদের দাবি, ওই স্কুলের ২৪ জন পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন হয়নি। তালিকায় রয়েছে নব নালন্দা (শান্তিনিকেতন) হাইস্কুলের নাম। সেখানে এক পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন হয়নি। ফলত, প্রধান শিক্ষক গৌরগোপাল চট্টোপাধ্যায়কে ৫০ হাজারের বেশি টাকা জরিমানা করেছে আদালত। এছাড়া হুগলির বিনাপানি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা স্বাতী বসুকে দশ হাজারের বেশি টাকা জরিমানা দিতে হবে। কারণ সেখানে একজন ছাত্রীর রেজিস্ট্রেশন হয়নি। রয়েছে আসানসোলের সেন্ট মেরি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মনিকা সরকার। তাঁকে ২৫ হাজারের বেশি টাকা জরিমানা। বৃহস্পতিবার এই পড়ুয়াদের তথ্য জমা নেবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বলে জানা গিয়েছে।
একাধিক শর্তসাপেক্ষে ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনের দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্প্রীতি মিছিলের অনুমতি দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আপত্তি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁর আর্জি খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ শর্তসাপেক্ষে ওই সম্প্রীতি মিছিলের অনুমতি দিল।
আগামী ২২ জানুয়ারি, অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনের দিনেই বাংলায় সম্প্রীতি যাত্রার ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা ছাড়াও সব জেলার ব্লকে ব্লকে ওই মিছিল করার কথা বলা হয়েছে। সেই মিছিল নিয়ে আপত্তি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই যাত্রায় এবার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। তবে মিছিল করার আগে বে কিছু বিষয় মাথায় রাখার কথা বলা হয়েছে।
এদিন প্রধান বিচারতি টি এস শিবজ্ঞানম উল্লেখ করেছেন, সংহতি যাত্রা চলাকালীন কোনও বক্তব্যে ধর্মীয় আবেগে আঘাত করা চলবে না। তাছাড়া এই ধরনের মিছিলে যানবাহনের সমস্যা হয়, সাধারণ মানুষের সমস্যা হয়, আটকে পড়তে পারে অ্যাম্বুল্যান্স, রাজ্য এবং শাসকদলকে সেদিকটাও নজর রাখতে বলেছে হাই কোর্ট।
প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, প্রতি ব্লকে যদি এই র্যালি হয় সেখানকার মানুষের সমস্যা হবে। এই র্যালির জন্য আগে থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। ওই দিন আরও ৩৫ টি মিছিলের আবেদন জমা পড়েছে। সেগুলি অনুমতি পেলে সমস্যা আরও বাড়বে বলে পর্যবেক্ষণ আদালতের।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর সম্প্রীতি মিছিলের দিন বদলের দাবিতে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে তাঁর দাবি ছিল, রামমন্দির উদ্বোধনের দিন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ, শুভেন্দুর সেই আবেদন কার্যত খারিজ করে দিল।
সন্দেশখালি ঘটনায় তদন্ত করবে সিট। নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের। বুধবার সকাল থেকেই সারা বাংলার নজর ছিল বিচারপতির রায়ের দিকেই। অবশেষে দেখা গেল, সন্দেশখালি ঘটনায় তদন্তভার দেওয়া হল সিটের হাতেই। এখনই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ না দিয়ে রাজ্য পুুলিসের সঙ্গে সিবিআই নিয়ে সিট গঠনের নির্দেশ দিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।
সন্দেশখালিকাণ্ডের ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান। এরপরই এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের আবেদন নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি। বুধবার বিকেল ৪ টায় বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর নির্দেশ, 'সন্দেশখালি ঘটনায় সিট গঠন করা হবে। এখনই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ নয়। তবে সিবিআই এবং রাজ্য যৌথ ভাবে তদন্ত করবে। কিন্তু আদালত নজরদারিতে তদন্ত হবে। ন্যাজাট পুলিস স্টেশন-এর কোনও অফিসার থাকতে পারবে না।'
বুধবার সন্দেশখালির ঘটনার তদন্তে সিবিআই ও রাজ্য পুলিসকে দিয়ে বিশেষ তদন্তকারি দল গঠন করল কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশ, তদন্তকারি দলের মাথায় থাকবেন সিবিআই-এর এসপি পদমর্যাদার অধিকারিক। দলে থাকবেন ইসলামপুর পুলিস ডিস্ট্রিক্ট-এর এসপি জাসপ্রিত সিং। বৃহস্পতিবারের মধ্যে সিবিআইকে ওই বিশেষ দলে নিযুক্তির জন্য তাঁদের সদস্যদের নাম জানাতে হবে। এই বিশেষ তদন্তকারী দল রাজ্য বা কেন্দ্র কোথাও রিপোর্ট জমা দিতে পারবে না। সংশ্লিষ্ট জেলা আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। হাইকোর্টের নির্দেশ ছাড়া চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া যাবে না। হাইকোর্টের নজরদারিতে তদন্ত চলবে। সব রিপোর্ট রাজ্যকে সিট-এর কাছে জমা দিতে হবে। সিসিটিভি সহ সব নির্দেশ বজায় থাকবে। পরবর্তী শুনানি ১২ ফেব্রুয়ারি।
অবশেষে আদালতের নির্দেশে নড়েচড়ে বসল পুলিস। রেশন দুর্নীতি মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত 'নিখোঁজ' তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে বসানো হল সিসিটিভি ক্যামেরা। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিসিটিভি বসানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, বুধবারই শাহজাহানের বাড়িতে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে দিয়েছে পুলিস। সূত্রের খবর, মোট তিনটি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এছাড়া সরবেড়িয়াতে মার্কেটেও বসানো হয়েছে চারটি সিসি ক্যামেরা।
সন্দেশখালিতে রেশন দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে আক্রান্ত হন তদন্তকারী সংস্থা ইডি। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত রাজ্য পুলিস সাতজনকে গ্রেফতার করলেও, মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান এখনও অধরা। ১২ দিন কেটে যাওয়ার পরও সন্দেশখালির ঘটনার পর থেকে শুনশান এলাকা। যেখানে কয়েকদিন আগে শেখ শাহজাহানের বাড়ি সংলগ্ন পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে সকাল হলেই জমজমাট থাকত মানুষের ভিড়ে, সে জায়গাগুলি এখন প্রায় জনশূন্য। ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও 'পলাতক' শেখ শাহজাহানকে ধরতে পুলিস ব্যর্থ। ফলে এই ঘটনায় মঙ্গলবার হাইকোর্টে বিচারপতির ভর্ৎসনার মুখে পড়ে পুলিস। এরপরই বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এই তৃণমূল নেতার বাড়ি সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দেন। আর আদালত কড়া হতেই রাতারাতি ভোল বদল রাজ্য পুলিসের। বিচারপতির নির্দেশ মেনে শেখ শাহজাহানের বাড়ির সামনে মোট তিনটি সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। এছাড়াও এলাকায় তাঁর গতিবিধি জানার জন্য সরবেড়িয়ার মার্কেটেও বসানো হয়েছে চারটি সিসি ক্যামেরা।