
১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার বকেয়া টাকার দাবিতে দিল্লিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল তৃণমূল। সেখানে কৃষিভবনে আটক করা হয় অভিষেক সহ অন্যান্য সাংসদের। এরপরেই দিল্লি থেকে অভিষেক (Abhisekh Bandopadhyay) রাজভবন অভিযানের ডাক দেয়। গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার অভিষেক রাজভবনে গেলে সেখানে ছিল না রাজ্যপাল (CV Anand Bose)। ততক্ষনে তিনি দিল্লি সফরে গিয়েছেন। এর পরেই বাধে বিপত্তি। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করবেন বলে রাজভবনের সামনে ধরণায় বসেছিল অভিষেক। দীর্ঘ ৪ রাত ধরনা দেওয়ার পর শেষমেশ অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন রাজ্যপাল।
রাজ্যপালের দেওয়া সময়েই ৩০ জনের প্রতিনিধি দল নিয়ে রাজভবনে বৈঠক করতে ঢুকলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেল ৪টের সময় তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ১০০ দিনের কাজে বঞ্চিতদের চিঠি নিয়ে রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করবেন এবং নিজেদের দাবি জানাবেন অভিষেকেরা। রাজ্যপালের সঙ্গে এই বৈঠকের জন্য গত পাঁচ দিন ধরে ধর্নায় বসেছেন অভিষেক।
সূত্রের খবর, ধরনা চলাকালীন তিস্তায় হড়পা বাণে বন্যা আকারে ধারণ করে কোচবিহার, কালিম্পঙ, ও জলপাইগুড়ি জেলায়। এরপরেই ওই এলাকায় পরিদর্শনে যান রাজ্যপাল বোস। এরপরেই অভিষেকের দাবিতে সাড়া দিয়ে দার্জিলিংয়ে রাজভবনে বৈঠকের আহ্বান করেন। অভিষেক যদিও কলকাতাতেই রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকে অনড় ছিলেন, এরপর রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, ও দুই সাংসদ কল্যাণ মুখোপাধ্যায় ও মহুয়া মৈত্র যান দার্জিলিংয়ে রাজভবনে বৈঠক করতে। বৈঠক শেষে অবশ্য কল্যাণ মুখোপাধ্যায় জানান, রাজ্যপাল অভিষেকের সঙ্গে দেখা করবেন বলেছেন। যদিও এরপরেই রবিবার রাতে কলকাতায় ফিরেছেন রাজ্যপাল বোস। তখনিই অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা প্রবল হয়। এরপর সোমবার রাতে চিঠি নিয়ে ও ৩০ জনপ্রতিনিধি নিয়ে রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকে ঢুকেছেন অভিষেক।
কেন্দ্রের বকেয়া টাকা সুদ-সহ আদায় করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিষেক। তিনি ধর্নামঞ্চ থেকে বলেন, ‘‘আইন অনুযায়ী টাকা মেটাতে দেরি হলে নির্দিষ্ট হারে সুদ দিতে হয়। সেই সুদের নিয়ম অনুযায়ী আমরা সব টাকা কেন্দ্রের থেকে আদায় করব। বঞ্চিতদের টাকা পাইয়ে দেব। অভিষেক ধর্নার শুরু থেকেই জানিয়ে আসছেন, রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে তাঁর সামনে তিনি দু’টি প্রশ্ন রাখতে চান। এক, এই ২০ লক্ষ মানুষ ১০০ দিনের কাজ করেছেন কি না। দুই, যদি করে থাকেন, তা হলে কোন আইনের কোন ধারায় তাঁদের টাকা দীর্ঘ দিন ধরে আটকে রাখা হয়েছে? রাজ্যপালের মাধ্যমে এই প্রশ্নগুলি তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও পৌঁছে দিতে চান বলে জানিয়েছেন।
'ওঁরা ঠিকই বলছেন, হ্যাঁ পালিয়েই তো এসেছি। দিল্লি থেকে পালিয়ে এসেছি।' সংবাদমাধ্যমকে ঠিক এমনই জবাব দিলেন রাজ্যপাল। সূত্রের খবর, রাজভবন অভিযানের কথা পূর্বেই ঘোষণা করেছিলেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। দিল্লিতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিসের ব্যাবহার, এবং অভিষেক সহ অন্যান্য সাংসদদের আটক করার অভিযোগে দিল্লি থেকেই রাজভবন অভিযানের ডাক দেয় অভিষেক। অথচ এই দিনেই রাজ্যপাল উত্তরবঙ্গে, বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়েছেন।
এরই পাল্টা, রাজভবন অভিযানের দিনই তাঁর উত্তরবঙ্গ সফর নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। তাঁদের কথায়, রাজ্যপাল 'পালিয়ে' গিয়েছেন। এদিন, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তারও জবাব দিলেন সিভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের বন্যা প্রবন এলাকা গুলি ঘুরে দেখেন রাজ্যপাল। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। মানুষ ভোগান্তির শিকার। এরপরেই সাংবাদিকরা রাজ্যপালকে প্রশ্ন করেন, তৃণমূলের মন্তব্য নিয়ে, এরই পাল্টা রাজ্যপাল বলেন, 'ওঁরা ঠিকই বলছেন, হ্যাঁ পালিয়েই তো এসেছি। দিল্লি থেকে পালিয়ে এসেছি। যখনই শুনেছি, বাংলার মানুষ সমস্যায় রয়েছেন, তখনই আমি পরের ফ্লাইট ধরে দিল্লি থেকে পালিয়ে এসেছি। এটা একদম ঠিক। '
অবশেষে জট কাটিয়ে শপথ নিতে চলেছেন ধূপগুড়ির নবনির্বাচিত তৃণমূল বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়। আজ অর্থাৎ শনিবার বিকেল সাড়ে চারটেয় নির্মলচন্দ্রকে শপথগ্রহণ করাবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু এতেও মিটেছে না রাজ্য-রাজ্যপাল বিতর্ক। সূত্রের খবর, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকছেন না স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তার পরিবর্তে উপস্থিত থাকতে পারেন বিধানসভায় শাসকদলের উপ মুখ্য সচেতক তাপস রায়। ৮ সেপ্টেম্বর নির্মলচন্দ্র ধূপগুড়ি বিধানসভার উপনির্বাচনে জয়ী হন। কিন্তু আটকে ছিল তাঁর শপথগ্রহণ। গত শনিবার নির্মলচন্দ্রকে শপথগ্রহণ করাতে চেয়ে তাঁর ধূপগুড়ির বাড়িতে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল রাজভবনের তরফে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিষদীয় দফতর সেই শপথগ্রহণের অনুমোদন না দেওয়ায় নতুন বিধায়কের শপথ আটকে যায়।
তার পরেও রাজ্যপাল স্বয়ং তফসিলি বিধায়ককে শপথগ্রহণ করাতে চেয়ে রাজ্যকে চিঠি দেন। বিধানসভা সূত্রে খবর, রাজভবনের দরজা সব সম্প্রদায়ের জন্য খোলা, জনমানসে সেই বার্তা দিতেই তফসিলি বিধায়ককে রাজভবনে শপথবাক্য পাঠ করাতে চেযেছিলেন তিনি। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে পাল্টা চিঠিতে লেখেন, ‘‘বিধানসভায় সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি উপস্থিত রয়েছেন। তাই প্রয়োজনে আপনি বিধানসভায় এসে ধূপগুড়ির বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করিয়ে যান।’’ যদিও এই পর্বে পরিষদীয় দফতরও চেয়েছিল উপনির্বাচনে জয়ী বিধায়ককে বিধানসভাতেই শপথগ্রহণ করান স্পিকার। নিজেদের সেই মনোভাবের কথা রাজভবনকেও বুঝিয়ে দিয়েছিল পরিষদীয় দফতর।
কিন্তু শেষমেশ বৃহস্পতিবার রাজভবন সূত্রে জানা যায়, রাজ্যপাল নিজেই ধূপগুড়ির তৃণমূল বিধায়ককে শপথগ্রহণ করাবেন।
একাধিক ইস্যুতে রাজ্য ও রাজ্যপাল তরজা অব্যাহত। নবান্ন ও দিল্লিতে রাজ্যপালের পাঠানো গোপন চিঠি নিয়েও জোর চর্চা চলছে। এবার আরও একধাপ এগিয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস জানালেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পেন সফরের আগে তাঁকে আর টেনশন দিতে চাননা। তবে মুখ্যমন্ত্রী ফিরে আসার পর তাঁদের মধ্যে ফের আলোচনা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজভবনের সঙ্গে জোর লড়াই চলছে নবান্নর। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক সভামঞ্চে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন। তারপরেই মুখবন্ধ খামে নবান্ন ও দিল্লিতে চিঠি পাঠান রাজ্যপাল। চিঠির বিষয়বস্তু নিয়ে এখনও চলছে জোর জল্পনা।
কী রয়েছে ওই চিঠিতে? এ বিষয়ে সোমবার রাজ্যপালের কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা। সেই প্রশ্নের জবাবে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, "গোপন বিষয় গোপন থাকা ভালো। মুখ্যমন্ত্রী এখন বিদেশ যাচ্ছেন। তাঁর ব্যাগের বোঝা বাড়াতে চাই না। টেনশন দিতে চাইনা।"
এবিষয়ে রাজ্য শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে তাঁর বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল রাজ্যপালকে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যা আলোচনা করার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই আলোচনা করবেন তিনি। কোনও জুনিয়র অ্য়াপয়েন্টির সঙ্গে কথা বলবেন না বলেই জানিয়েছেন। রাজ্যপালের সঙ্গে তিনি একান্ত কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী রয়েছে রাজ্যপালের গোপন চিঠিতে? তা নিয়ে জল্পনার মাঝেই এবার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের। তিনি বলেন, যেটা গোপন সেটা গোপন থাকাই ভালো। এটা যিনি চিঠি দিলেন আর যিনি চিঠি পেলেন তাঁদের মধ্যেই গোপন থাক। শুধু চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে কী রয়েছে তা বলতে পারবেন যিনি চিঠি গ্রহণ করেছেন তিনিই।
তবে এখানেই তিনি থেমে যাননি। ইঙ্গিতে মুখ্যমন্ত্রী ও নাম না করেই ব্রাত্য বসুকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি। তিনি বলেন, জুনিয়র অ্যাপয়েন্টির কথার উত্তর দেব না। কোনও আলোচনার প্রয়োজন হলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হবে। এখন এটা নিয়ে আলোচনা করার সময় নয় কারণ, মুখ্যমন্ত্রীকে টেনশন দিতে চাই না। তিনি বিদেশ যাচ্ছেন, বিদেশ থেকে ফিরলে এটা নিয়ে আলোচনা হবে।
প্রসঙ্গত, রাজ্য- রাজ্যপাল সংঘাত এরাজ্যে নতুন কিছু নয়। রাজ্যে উচ্চশিক্ষার হাল ফেরানো থেকে শুরু করে নির্বাচনী সন্ত্রাস, রাজ্যপালের ভূমিকায় বারবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছে রাজ্য সরকার। কখনও মহিষাসুর তো কখনও রাজ্যপালের পোশাক নিয়ে তুলনা। একে এক শিকার হতে হয়েছে শাসক দলের কটুক্তির। আর এবার ফের রাজ্যপালের ভূমিকার সমালোচনা করতে গিয়ে মহম্মদ বিন তুঘলকের প্রসঙ্গ টেনে এনেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তারই পাল্টা হিসেবে মিডনাইট অ্যাকশনের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। হুঁশিয়ারি মতোই শনিবার রাতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে দুটি গোপন চিঠি দেওয়া হয় রাজভবনের তরফে। কী রয়েছে চিঠিতে? তা নিয়ে রীতিমতো গুঞ্জন শুরু হয়ে যায় রাজ্য রাজনীতির অলিন্দে। সোমবার সে প্রসঙ্গেই মুখ খুললেন রাজ্যপাল। আর তাতেই স্পষ্ট রাজ্যপাল যে একেবারেই হার মানার পাত্র নন।
এদিকে রাজ্যপালের মিডনাইট অ্যাকশনের হুঁশিয়ারির পরেই তড়িঘড়ি রাজভবনে ছুটে গিয়েছিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেই প্রসঙ্গে রাজ্যপাল বলেন, ওটা মুখ্যসচিব ও প্রাক্তন মুখ্যসচিবের বৈঠক ছিল। এদিকে রাজ্যপালের মন্তব্যে সরব শাসক শিবির। আশ্চর্য ব্যাপার! রাজ্যপালের পোস্ট তো টেনশন দেওয়ার জন্য তৈরি হয়নি। কটাক্ষ তৃণমূল রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের। পাশাপাশি রাজ্যপালকে গুণ্ডা বলেও সম্বোধন করেন তিনি।
শাসক শিবিরের পাল্টা কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডাও। এটা স্পষ্ট যে এমন কিছু বিষয় রয়েছে, যা নিয়ে টেনশন আছে। মন্তব্য বিজেপি নেতার। এখন কী রয়েছে চিঠিত? রাজ্যপালের কথা মতো কোন নতুন টেনশনেই বা পড়তে চলেছে রাজ্য সরকার? সে উত্তর দেবে সময়েই।
রাজ্য ও রাজ্যপালের সংঘাত চলছেই। শুক্রবার রাতে রেজিস্ট্রারদের সঙ্গে বৈঠকের পর রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ব্রাত্য বসু। সরকার মনোনীত উপাচার্যদের নিয়োগ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, রাজ্যপাল মিথ্যা কথা বলছেন। এবার ফের এই নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যপাল। জানালেন, তাঁর চিন্তা নিয়োগ নিয়ে। কারও হতাশা নিয়ে কোনও চিন্তা নেই।
১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের সিদ্ধান্ত শিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলোচনা না করেই নেওয়া হয়েছে। এমনই অভিযোগ তুলে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। জানান, রাজ্যপাল মিথ্যা বলছেন। ১৫ জন রেজিস্ট্রারকে শো-কজও করেছে শিক্ষা দফতর। এই টানাপোড়েনের জেরে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নুপূর দাস পদত্যাগ করেছেন।
কয়েকজন শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠকে উপস্থিতও ছিলেন না। সেই সব রেজিস্ট্রারকেও শো-কজ করতে পারে শিক্ষা দফতর। এদিকে শনিবার এই নিয়ে রাজ্যপাল সাফ জানিয়ে দিলেন, তিনি নিয়োগ নিয়ে চিন্তিত। রাজ্যের দফতরে কারও হতাশা নিয়ে একেবারেই ভাবতে চান না।
‘আজ মধ্যরাতের মধ্যে কী করি দেখুন।’ রাজ্যপালকে উদ্দেশ্য করে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ‘বিন তুঘলক’ কটাক্ষের কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এরপরে কি উচ্চশিক্ষা নিয়ে রাজ্য – রাজ্যপাল সংঘত নতুন কোনও উচ্চতায় পৌঁছতে চলেছে? এই নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা।
শনিবার বিধাননগরের পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যপাল বোস বলেন, ‘আমার কাজে আমি খুশি। আজ মধ্যরাতের মধ্যে কী পদক্ষেপ করি দেখুন।’
শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘আগে ওনাকে আলাউদ্দিন খিলজি ভাবতাম, এখন দেখছি উনি বিন তুঘলক।’ রাজ্যপালকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এদিন রাজ্যপালের পালটা মন্তব্যে শুরু হয়েছে নতুন জল্পনা। তবে কী পদক্ষেপ করতে চলেছেন রাজ্যপাল?
উপাচার্য নিয়োগের একচ্ছত্র এক্তিয়ার রয়েছে রাজ্যপালের। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর রাজ্যের ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল বোস। রাজ্যের অভিযোগ, তাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন এমন ব্যক্তিদের উপাচার্য পদে বসানোর হয়েছে। এই নিয়ে আইনি পদক্ষেপ করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে জবর ধাক্কা খাওয়ার পর ফের আদালতে যাওয়ার সাহস এখনো দেখিয়ে উঠতে পারেননি তিনি।
রাজ্য – রাজ্যপাল সংঘাতে দু-পক্ষের সঙ্গেই দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করছে বাম ও কংগ্রেস। তাদের দাবি, এই সংঘাতের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির।
গত কয়েকদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের রাশ কার হাতে থাকবে তা নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত চলছে। রাজ্যকে না জানিয়েই একাধিক অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন আচার্য সিভি আনন্দ বোস, আর তা নিয়েই শুরু বিতর্ক। এবার আগুনে পড়ল আরও ঘি। ১৫ জন রেজিস্ট্রারকে শো-কজের সিদ্ধান্ত শিক্ষা দফতরের। বিকাশ ভবনে এই সংক্রান্ত বৈঠকে যাঁরা অনুপস্থিত ছিলেন তাঁদেরকেই শো-কাজের সিদ্ধান্ত।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নেতৃত্বে শুক্রবার বিকাশভবনে একটি বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে রেজিস্ট্রারদের গরহাজিরা নিয়েই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। এদিকে রাজ্যপালের তরফে চিঠি দিয়ে এই বৈঠকে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা ছিল রেজিস্ট্রারদের কাছে। সব মিলিয়ে তথৈবচ অবস্থা। কিন্তু বৈঠকে উপস্থিত না থাকায় শিগগিরিই তাঁদের কাছে শো-কোজ নোটিস পৌঁছে যাবে বলে খবর।
শুক্রবার সকাল থেকেই রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় রাজভবনের উত্তর গেটের কাছে ধরনায় বসেন শাসকদল ঘনিষ্ঠ শিক্ষাবিদ, অধ্যাপক থেকে প্রাক্তন উপাচার্যরা। রাজ্যপালের ভূমিকায় সরব হন অন্যান্য অধ্যাপক ও প্রাক্তন উপাচার্যরাও। তাঁদের দাবি, সংবিধান মেনে চলুন রাজ্যপাল। স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হোক। এমনকি রাজ্যপালকে হুঁশিয়ারি দিতেও দেখা যায় শিক্ষাবিদদের। এদিনের ধরনা কর্মসূচির মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্ৰাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র, কবি সুবোধ সরকার, অধ্যাপক উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। সুবোধ সরকার বলেন, রাজ্যপাল বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের শক্ত ঘাঁটি। পরে মিছিল করে রাজভবনের মেইন গেটের দিকে যান তাঁরা। সেখানে পুলিসি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা ছিল আগে থেকেই। সেখানেই রাজ্যপালের প্রতিনিধির হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন তাঁরা।
রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত এবার নেমে এল রাস্তায়। রাজভবনের বিবৃতির বিরোধিতা করে এবার রাজভবনের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করলেন প্রাক্তন উপাচার্যদের সংগঠন 'দ্য এডুকেশনিস্ট'স ফোরাম'। তাঁদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিচালনা প্রক্রিয়া নিয়ে রাজ্যপাল মিথ্যে কথা বলেছেন।
রাজভবনকে কেন্দ্র করে সংঘাত, দ্বন্দ্ব চলছিলই। ইদানিং রাজ্য-রাজভবনের মধ্যে ফাটল আরও চওড়া হল। এই আবহেই কার্যত রাজভবনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা রাজ্যের শাসক শিবিরের। শুরুটা করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষক দিবসে রাজ্যপালকে বেনজির আক্রমণ করেছিলেন তিনি। একদিকে রাজভবনের কথামত অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে উপাচার্যদের বেতন বন্ধের হুমকি, আবার অন্যদিকে রাজভবনে একের পর এক বিল আটকে রাখার অভিযোগ তুলে রাজভবনের সামনে ধরনায় বসার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন,প্রত্যেকটা বিল আটকে রেখে এভাবে কারোর অধিকার কেড়ে নিলে তিনি রাজভবনের সামনে ধরনা দিতে বাধ্য হবেন।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনা হুঁশিয়ারির পালটা বৃহস্পতিবার মুখ খোলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বলেন, বাইরে নয়, মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনের ভিতরে আসুন। তিনি জোড়হাতে তাকে স্বাগত জানাবেন।
'ধরণা দিতে চান, রাজভবনে ভিতরে আসুন।' মমতার পাল্টা কটাক্ষ রাজ্যপাল বোসের গলায়। শিক্ষক দিবসের দিন রাজভবনের সামনে ধরনায় বসার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই হুঙ্কারের দু’দিনের মাথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এবার আন্দোলনে স্বাগত জানালেন রাজ্যপাল বোস। ফলে শিক্ষায় রাজভবন-নবান্ন সংঘাতে এবার নয়া মোড় দেখা গেল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণের পাল্টা মুখ খুললেন এবার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।
বুধবার দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরেছেন রাজ্যপাল। রাজভবন যাওয়ার পূর্বে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে দু’হাত জোড় করে বলেন, “আমার সাংবিধানিক সহকর্মী মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত তাঁর প্রতিবাদ আন্দোলনের জন্য। করজোড়ে রাজভবনের ভেতরেই তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছি।”
রাজ্য শিক্ষাদফতরের সঙ্গে আলোচনা না করেই উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করে চলেছেন রাজ্যপাল বোস। এই নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত এখন চরমে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্যত কড়া ভাষায় রাজ্যপালকে বিঁধেছেন। কখনও পাঙ্গা না নেওয়ার হুঁশিয়ারি তো কখনও রাজ্যপাল কর্তৃক উপাচার্যদের বেতন বন্ধের হুঙ্কার দিতে দেখা গিয়েছে তাঁদের।
গত ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসের দিন কোনও রকম রাখঢাক না করেই কার্যত সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা। বলেন, “শিক্ষাব্যবস্থাকে বাঁচাতে প্রয়োজনে রাজভবনের সামনে ধরনায় বসব।” মুখ্যমন্ত্রীর সেই হুঁশিয়ার পর কেটেছে দুটো দিন। আজ রাজ্যপাল ফিরেছেন কলকাতায়। আর বঙ্গে এসে মুখ্যমন্ত্রীর ধরনা দেওয়ার হুঁশিয়ারিকে কার্যত হাসিমুখে স্বাগত জানাতে দেখা গেল তাঁকে।
উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আচার্য অর্থাৎ রাজ্যপালই উপাচার্য এই ঘোষণার পর বিতর্ক শুরু হয়েছে সব মহলেই। যা নিয়ে এবার রাজ্য রাজ্যপাল সংঘাত এবার তুঙ্গে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে আবারও আইনি পদক্ষেপের পথে রাজ্য। কোন আইনের বলে আচার্য উপাচার্যের পদ সামলাতে পারেন? সেই প্রশ্ন তুললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। আইনি পথে যাওয়ার হুঁশিয়ারি তিনি আগেই দিয়ে রেখেছিলেন। এবার রাজ্য যে সেই পথেই হাঁটছে, তা তিনি শুক্রবার স্পষ্ট করে দিলেন। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “আমি সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। যিনি আচার্য, তিনিই আবার উপাচার্য। কোন আইনের বলে এটা করলেন, আমার মাথায় ঢুকছে না। আমরা আইনি পদক্ষেপ করব বলে ভাবছি।”
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রশাসনিক স্তরে যে টানাপোড়েন চলছে, তার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে শিক্ষাঙ্গনে। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার সময়ে রাজভবন থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়, রাজ্যে বর্তমানে ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নেই। রাজ্যের যে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নেই, সেখানে আচার্য তথা রাজ্যপাল তাঁর নিজ ক্ষমতাবলে অন্তবর্তীকালীন উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন। যাতে বিভিন্ন শংসাপত্র, নথি ও অন্যান্য সুবিধা পেতে ছাত্রছাত্রীদের কোনও সমস্যা না হয়। সেই বিজ্ঞপ্তিতে এটাও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, ছাত্রছাত্রীরা চাইলে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, এই বিজ্ঞপ্তি একেবারে সরাসরিই রাজ্য শিক্ষা দফতরকে চ্যালেঞ্জ করছে। তারপরই শিক্ষা দফতরের তরফে আইনি পদক্ষেপ করার কথা ভাবে। শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, রাজ্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে।
উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলি নিয়ে এবার বড় ঘোষণা রাজ্যপালের। রাজভবন সূত্রে জানানো হয়েছে উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভিসির দায়িত্ব পালন করবেন রাজ্যপাল। পড়ুয়াদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্ত বলে রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে। যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নেই সেইগুলিতে পড়ুয়াদের সার্টিফিকেট বা অন্য তথ্যাদি পেতে যাতে অসুবিধা মুখে পড়তে হচ্ছে। এবার সেই সমস্যা এড়াতেই আচার্যই সেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা যাচ্ছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্কও শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে।
প্রসঙ্গত, ক্ষমতাবলে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসই রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য। সম্প্রতি একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজপাল সংঘাত ক্রমশ চওড়া হয়েছে। রাজ্যপালের অনেক সিদ্ধান্তে খুশি হয়নি রাজ্য সরকার। মাঠে নেমে তোপ দেগেছেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সুর চড়িয়েছিলেন ওমপ্রকাশ মিশ্র, গৌতম পালের মতো শিক্ষাবিদেরা। অন্যদিকে ছেড়ে কথা বলেননি রাজ্যপালও। বিতর্কের মধ্যেই রাশ রেখেছেন নিজের হাতেই। চাপানউতর চলছিলই, তারমধ্যেই জানা গেল সমস্ত উপাচার্যহীন রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভিসির দায়িত্ব সামলাবেন খোদ রাজ্যপাল। যা নিয়ে নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে শিক্ষামহলে।
অন্যদিকে এদিনই আবার ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটির নতুন উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। নতুন উপচার্য হয়েছেন রাজকুমার কোঠারি। অন্যদিকে ছাত্রমৃত্যু নিয়ে বিতর্কের মধ্যে কয়েকদিন আগে যাদবপুরের অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল।
বিশ্ববিদ্যালয় আছে। কিন্তু রেজিস্ট্রার ও উপাচার্য নেই। ঝাড়গ্রামে এই অভিযোগ পেতেই এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের তীব্র সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়গ্রামে আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে মমতার চ্যালেঞ্জ সাহস থাকলে বিধানসভায় পাশ হওয়া আচার্য বিলে সই করে দেখান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘ভিসি করতে গেলে তিনটে নাম পাঠাতে হয়। যদি আপনার সৎসাহস থাকে, অ্যাসেম্বলিতে যে বিলটা পাশ হয়েছে, যে মুখ্যমন্ত্রী চেয়ারপার্সন হবেন, চ্যান্সেলর হবেন। সেই বিলটা আপনি সই করে দিন। ইংরেজ আমলে একটা আইন ছিল। তখন মাত্র তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল।'
পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, রাজভবনে থেকে বিজেপির হয়ে কাজ করছেন রাজ্যপাল। তাই প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যের সুপারিশকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। বসানো হচ্ছে তাঁর ঘনিষ্ঠদের। মূলত আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাকে উদাহরণকে সামনে রেখে এদিন রাজ্যপালকে নজিরবিহীন আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, রাজভবনে থেকে সংবিধানকে তোয়াক্কা করছেন না রাজ্যপাল। বরং মুখ্যমন্ত্রীর মতো কাজ করতে চাইছেন।
আর এই কারণেই রাজ্যপালকে ভোটে দাঁড়াতে পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। জানিয়েছেন, বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হতে। যদিও দাবি করেছেন, বিজেপি দলটাই উঠে যাবে। এদিন ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জটিলতা কাটাতে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে দ্রুত একজন রেজিস্ট্রার নিয়োগের জন্য অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পড়ুয়ারা যাতে দ্রুত শংসাপত্র পেতে পারেন, তার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে এই সমস্যার সমাধান করবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এবার জাল ওষুধ নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে রমরমিয়ে চলছে অসাধু ওষুধ চক্র। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের এই বক্তব্যের পর শুরু হয়েছে চাপানউতোর। রাজ্যপালের ওই মন্তব্যের পর রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুক্রবার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধের উপর লেবেল লাগিয়ে ফের বিক্রি করা হচ্ছে। কোটি কোটি টাকার অসাধু চক্র এই কাজে সক্রিয় বলে অভিযোগ তাঁর।
রাজ্যপালের এই দাবির পর তীব্র রাজনৈতিক চাপানোতর তৈরি হয়েছে। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে সিপিএম, বিজেপি। তাদের অভিযোগ, গোটা রাজ্যে অসাধু কারবারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ করে তারা
পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) গণনার দিনেও গ্রাউন্ড জিরোয় রাজ্যপাল (Governor) সিভি আনন্দ বোস (C.V. Anand Bose)। পঞ্চায়েতের মনোনয়ন পর্বে বেলাগাম সন্ত্রাসের খবর পেয়ে জেলায় জেলায় ছুটে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল, দেখা করেছিলেন মৃতদের পরিবারের সঙ্গে। দিল্লি থেকে ফিরেই বেড়িয়ে পড়েছেন তিনি। সরজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একাধিক এলাকায় ঘুরছেন তিনি। সকালেই বিমানবন্দর থেকে নেমে চলে যান ঘটকপুর বাজারে। সেখান থেকে ভাঙড়ের (Bhangar) বিজয়গঞ্জ বাজারে।
ভোটের মনোনয়ন জমার দিন থেকেই ভাঙড়ে বিজয়গঞ্জ বাজারে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। মুড়ি-মড়কির মতো বোমাবাজি, গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছিল ভাঙড়ে। সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত হয়েছিল ভাঙড়। তার পরেই সেখানে হাজির হয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কথা বলেছিলেন বাসিন্দাদের সঙ্গে। গণনার দিনেও তিনি সেই ভাঙড়ে হাজির হয়েছেন।
ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজারে নেমে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, রাজ্যবাসীকে নিরাপত্তা দেবই। কড়া পদক্ষেপ করা হবে। এর আগে ভোট শুরুর আগের দিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন তিনি। কমিশনের কারণেই পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যে এতোজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তার দায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকেই নিতে হবে বলে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তিনি।
ভোটের দিন হিংসা নিয়েও কড়া বার্তা দিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তারপরেই তিনি উড়ে গিয়েছিলেন রাজধানী দিল্লিতে। সেখানে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। তার পরে ফিরে এসেই ফের পরিদর্শনে বেরিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। জানা গিয়েছে, রাজ্যপাল বসিরহাট থেকে দেগঙ্গা হয়ে কলকাতা ফিরবেন। ঝামেলা প্রবণ এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সবকিছুই ঘুরে দেখছেন তিনি।