
অ্যামাজনের কাছে ১৪ জন যাত্রীসহ ভেঙে পড়ল ব্রাজিলের একটি বিমান। দুর্ঘটনায় সকলেরই মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
উত্তর অ্যামাজনের রাজধানী মানাউস থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে বার্সেলোস প্রদেশে দুর্ঘটনাটি ঘটছে বলে জানিয়েছে সংবাদসংস্থা রয়টার্স। মৃত ১৪ জনের মধ্যে ১২ জন যাত্রী এবং বাকি দু'জন বিমান ক্রু।
মানাউস থেকে এই বার্সেলোস যাচ্ছিল বিমানটি। আমাজনের গভর্নর উইলসন লিমা দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। দুর্ঘটনার কারণ জানতে শুরু হয়েছে তদন্ত। দুর্ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে এয়ারফোর্সের বিশেষ দল।
অবশেষে শেষ হল জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন (G20 Summit)। রবিবার, ১০ ডিসেম্বর এই সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থনা করলেন, সারা বিশ্বে যেন শান্তি বজায় থাকে। ইউক্রেন যুদ্ধের আবহেই তাঁর এই প্রার্থনা। মোদী আরও বললেন, 'স্বাতী অস্তু বিশ্ব'। এই স্লোগানের বাংলা করলে দাঁড়ায় 'সারা বিশ্বে শান্তি বিরাজ করুক।' তবে জি-২০ সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী মোদী আগামী নভেম্বরে ভার্চুয়াল জি-২০ সম্মেলনের ডাক দিলেন।
সূত্রের খবর, রবিবার ছিল জি-২০ সম্মেলনের শেষ দিন। এদিন দুপুর ১ টা নাগাদ ভারত মণ্ডপমে সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। এর পাশাপাশি দেশে শান্তি বজায় থাকার জন্য প্রার্থনাও করেন। এই সঙ্গেই জি-২০ সভাপতিত্বের দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি তুলে দিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভার হাতে। জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালে জি-২০ বৈঠক বসবে ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনেরিওতে। সেখানেই বসবে জি-২০-এর ১৯ তম সম্মেলন। তবে জি-২০ সভাপতিত্বের দায়িত্ব ব্রাজিলের হাতে তুলে দেওয়া হলেও এখনও এই পদে থাকছে ভারতই। আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত ভারতই জি২০-র সভাপতি থাকবে। এরই মধ্যে আরও একটি বৈঠক করার প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নভেম্বর মাসেই জি-২০-র একটি বৈঠক হবে বলে ঠিক হয়েছে।
মাঝ আকাশে বিমানের (Plane) দরজা খুলে যাওয়া কিংবা কোনও দুর্ঘটনা(Accident) ঘটা, তা আর নতুন কিছু নয়। তবে মাঝ আকাশে বিমানের দরজা এমনিই খুলে যাবে তেমন ঘটনা শোনা যায় নি। সম্প্রতি এমনি এক ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্য়ে এসেছে। আন্তর্জাতিক এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাজিলে (Brazil)।
‘ব্রেকিং অ্যাভিয়েশন নিউজ় অ্যান্ড ভিডিয়োজ়’ নামে একটি টুইটার অ্যাকাউন্টে সেই ঘটনার ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, বিমানের দরজা নিজে থেকেই খুলে গিয়েছে। বিমানের ভিতরে হু হু করে হাওয়া ঢুকছে। যার ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বিমানের যাত্রীরা। সেই সময় এক যাত্রী সেই ঘটনার ভিডিও করেন। পড়ে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন।
The aircraft of Brazilian singer and songwriter Tierry safely lands at São Luís Airport after the cargo door opens in flight. pic.twitter.com/VIx79ABtdX
— Breaking Aviation News & Videos (@aviationbrk) June 14, 2023
দ্য এমব্রায়ের-১১০ বিমানে ব্রাজিলের খ্যাতনামা গায়ক টিয়েরি এবং তাঁর গানের দল মারানহাওয়ের সাও লুই থেকে অনুষ্ঠান সেরে ফিরছিলেন। বিমানটি আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যে আচমকাই দরজা খুলে যায়। সেই অবস্থাতেও বিমানটি চালিয়ে নিয়ে যান পাইলট। এরপর সাও লুই বিমানবন্দরের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে পাইলটকে বিমানটি জরুরি ভিত্তিতে নামানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। তার পরেই পাইলট নিরাপদেই বিমানটি নামান।
ক্লাস (Class) চলাকালীন পড়ুয়াদের (Students) সঙ্গে নেচে চলেছেন এক স্কুলের শিক্ষিকা, এমন ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই হইহই পড়ে গিয়েছে সমাজমাধ্যমে। শুধু নাচ নয়, এই ভিডিও টিকটকে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। আর এর ফলেই সেই শিক্ষিকাকে খোয়াতে হলো চাকরি। ঘটনাটি ব্রাজিলের (Brazil)।
জানা গিয়েছে, ব্রাজিলের এক স্কুলের ইংরেজির শিক্ষিকা সিবেলা ফেরিরা টিকটক করেন ও ক্লাস চলাকালীনই নাচ করায় তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সম্প্রতি একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, একটি ক্লাসে পড়াচ্ছেন এক শিক্ষিকা, সেই সময়েই এক মেয়ে পড়ুয়া এসে তাঁকে নাচ করার কথা বললে তিনিও নাচতে শুরু করেন। এই ভিডিওই টিকটকে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এই ভিডিওর কমেন্ট সেকশনে ধেয়ে এসেছে একের পর এক কটূক্তি। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে এই খবর পৌঁছতেই তাঁর চাকরি বাতিল করা হয়েছে।
এর আগেও একাধিকবার তাঁকে স্কুলেই ক্লাস চলাকালীন টিকটক বানাতে দেখা গিয়েছে। তাঁর এই ভিডিও সমাজমাধ্য়মে শেয়ার করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই তাতে মিলিয়নের উপরে ভিউ এসেছে।
এক নয়, দুই নয়, ছয় স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক এক যুবকের। স্ত্রীদের সময় দিতে দিতেই দিন কাটে তাঁর। প্রত্যেকের সঙ্গে সমানভাবে সম্পর্ক বজায় রেখে চলেন যুবক। সব ঠিকঠাক ভাবে চললেও সমস্যা হত শুধু শোয়া নিয়ে। কারণ, প্রত্যেক স্ত্রীর সঙ্গে আলাদা আলাদা করে সময় কাটাতে হত। ফলে একদিন এই ঘরে তো কোনও দিন ওই ঘরে এইভাবে রাতের পর রাত কাটত যুবকের। এভাবে শোয়ার ঘর বদল করতে করতে ক্লান্ত যুবক এ বার অন্য উপায় বার করলেন।
ছয় জায়গায় না গিয়ে সকলকে এক বিছানায় আনার বন্দোবস্ত করেছেন তিনি। ২০ ফুটের একটি বিছানা তৈরি করিয়ে সব স্ত্রীকে নিয়ে একসঙ্গে একটি বিছানায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যুবক। বিছানাটি লম্বায় ২০ ফুট, চওড়ায় ৭ ফুট। প্রায় ৮১ লক্ষ টাকা খরচ করে বিশাল এই বিছানা তিনি বানিয়েছেন।
এই ঘটনা আর্থার নামক এক যুবকের। ব্রাজিলের সাও পাওলোতে স্ত্রীদের নিয়ে থাকেন তিনি। প্রাপ্তবয়স্কদের একটি ওয়েবসাইটে ছবি এবং ভিডিয়ো পোস্ট করেন নিয়মিত। সেখান থেকেই তাঁর যাবতীয় রোজগার। আর্থার এবং তাঁর স্ত্রীরা এই ওয়েবসাইট থেকে মাসে ৫১ লক্ষ টাকা আয় করেন। নিয়মিত যৌন জীবনের নানা ঝলক প্রকাশ্যে আনেন ব্রাজিলের এই যুবক। কী ভাবে তিনি এতজন স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রেখেছেন, তা নিয়ে অনুরাগীদের কাছে ভাগ করে নেন।
যুবক জানান, তাঁদের যৌন জীবন অত্যন্ত সুখের। সকলের সম্মতিতেই তিনি এই বহুগামী সম্পর্কে আছেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাঁরা সঙ্গমের আগে ‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট’ করে নেন। অর্থাৎ, কবে কোন স্ত্রীর সঙ্গে সময় কাটাবেন, তা আগে থেকেই ঠিক করে নেন যুবক। যৌনতার একটি রুটিনও তিনি তৈরি করে রেখেছেন। আর্থারের স্ত্রীর সংখ্যা এক সময় ছিল ৯। সম্পর্কে জটিলতা তৈরি হওয়ায় ৪ জনের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পাঁচ স্ত্রীকে নিয়ে কিছু দিন থাকার পর সম্প্রতি আরও একটি বিয়ে করেছেন যুবক। তাই বর্তমানে তাঁর স্ত্রীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬-এ।
শাহরুখের গুনগানে পঞ্চমুখ এবার ব্রাজিলের লেখক পাওলো কোয়েলহো (Paulo Coelho)। পাঠান ছবিটি (Pathaan) দেখে 'রিভিউ' দিলেন 'বাদশাহ'-র বন্ধু কোয়েলহো। বিশ্ববাসীর কাছে ফের জাহির করেছেন দু'জনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। দেখা না হলেও বন্ধুত্বের মাঝে কোনও বাঁধা নেই দু'জনের দিক থেকেই। বরাবর বিশ্ববিখ্যাত লেখক পাওলো কোয়েলহো বন্ধুত্বের দরজা দিয়ে এসেছেন বলিউড বাদশাহকে। যদিও কাজের ব্যস্ততায় এখনও পর্যন্ত দেখা হয়নি একে অপরের সঙ্গে।
বৃহস্পতিবার 'পাঠান' দেখেছেন লেখক। সেই দেখে রীতিমতো আপ্লুত কোয়েলহো। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের লেখক সত্ত্বা ফুটিয়ে তুলে লেখকের সংযোজন 'বাদশা', কিংবদন্তি বন্ধু। কিন্তু সব কিছুর উপরে তিনি অসাধারণ একজন অভিনেতা।' শাহরুখ যাঁদের কাছে অচেনা তাঁদের উদ্দেশে লেখকের দাবি, 'পশ্চিমের দেশগুলিতে যদি কেউ ওঁকে না চেনেন, বলে রাখি, ‘মাই নেম ইজ খান অ্যান্ড আই অ্যাম নট আ টেররিস্ট’ দেখে নিন। শাহরুখ কে তা বুঝে যাবেন।'
King. Legend . Friend. But above all
— Paulo Coelho (@paulocoelho) February 2, 2023
GREAT ACTOR
( for those who don’t know him in the West, I strongly suggest “My name is Khan- and I am not a terrorist”) https://t.co/fka54F1ycc
অন্যদিকে নিজের অনুরাগীদের ঝুলিতে ‘দ্য অ্যালকেমিস্ট’-এর লেখককে শুক্রবার জবাব দিয়েছেন শাহরুখ নিজেই। বাদশাহ লিখলেন,'বন্ধু পাওলো, তুমি সবসময় এমনই উদার এবং অকুণ্ঠ। এবার দেখা করো, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, তার চেয়েও বেশি তাড়াতাড়ি। ঈশ্বরের আশীর্বাদ সঙ্গে থাকুক।'
ব্রাজিলের(Brazil) রাষ্ট্রপতি ভবনে হামলা! এই আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধানের বোলসোনারের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। শুধু রাষ্ট্রপতি ভবনেই (Presidential Palace Attack) নয়, হামলার খবর মিলেছে দেশের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ভবনে। রবিবার দুপুর থেকেই ব্রাজিলে একের পর এক হামলা হয় বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। ব্রাজিলের কংগ্রেস এবং সুপ্রিম কোর্টও হামলাকারীরা ঘিরে রেখেছে বলে জানা গিয়েছে।
২০২২ সালে কট্টর দক্ষিণপন্থী বোলসোনারোকে হারিয়ে ব্রাজিলে ক্ষমতায় আসেন বামপন্থী লুইজ ইনাসিও লুলা ডা সিলভা। লুলা ১ জানুয়ারি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ব্রাজিলের ৩৯তম প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। রাষ্ট্রপতি লুলা এই হামলার পিছনে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। রাজধানী ব্রাসিলিয়ার নিরাপত্তা বিষয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন লুলা।
সৌভাগ্যবশত হামলার সময় সেখানে ছিলেন না প্রেসিডেন্ট লুলা। রাজধানী থেকে দূরে কর্মসূত্রেই সাও পাওলো গিয়েছিলেন তিনি। এই হামলার পর ব্রাজিলের বর্তমান রাষ্ট্রপতি লুলা হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পরিকাঠামোর ওপর যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
JUST IN: more footage of Bolsonaro supporters storming Brazil's Supreme Court.
— Wall Street Silver (@WallStreetSilv) January 8, 2023
Several government buildings are invaded 🚨🚨🚨
🔊 pic.twitter.com/nE9eHaS2yh
ইতিমধ্যেই এই হামলার ভিডিও নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ব্রাজিলের হলুদ, সবুজ পতাকা নিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা উপেক্ষা করে, সব ভেঙে দিয়ে ভবনের ভিতর ঢুকে যাচ্ছেন। কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হয়েছেন রাষ্ট্রপতি ভবনের ছাদে। এদিকে, ব্রাজিল পুলিস জানিয়েছে যে, তারা প্রতিবাদকারী ৩০০ জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে। আরও বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ব্রাজিলের এই ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল ২০২১ সালে ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের সমর্থকদের হামলার স্মৃতি। সেই সময় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে রেখে দেওয়ার দাবি জানিয়ে শতশত অনুগামী ক্যাপিটাল হিলে হামলা চালিয়েছিল- যা মার্কিন রাজনীতির একটি কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়।
চিরঞ্জিত (বিধায়ক -অভিনেতা): পেলে একটা অদ্ভুত নাম যেন কত কাছের। বাঙালির কাছে আরও কাছের হওয়ার অন্যতম কারণ নামটি 'পেলে'। যেন কী পেলে বা কোথায় পেলে বললেই পাওয়ার বিষয়টি এসে যায়। আমার স্কুল ছিল মিত্র ইনস্টিটিউশন। ছাত্র ভালোই ছিলাম কিন্তু তার সঙ্গে নেশা ছিল ফুটবলের। খুব খেলতাম ঢাকুরিয়ার মাঠে, স্ট্রাইকার ছিলাম। একবার ছেলেবেলায় একটা গোল করার পর চারিদিক থেকে চিৎকার এলো পেলে পেলে। ব্যস ওই তারপর থেকেই ফুটবলের সম্রাট পেলের ভক্ত।
আমাদের বাল্যকালে টেলিভশন ছিল না তাই ফর্মে থাকা পেলের খেলার সোনালী যুগ চাক্ষুষ করতে পারিনি। আমার বাবা ছিলেন প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট শৈল চক্রবর্তী কাজেই বাড়িতে অজস্র বইপত্র ম্যাগাজিন আসতো। ওখান থেকেই কাঁচি দিয়ে কেটে পেলের ছবি আমার লম্বা একটা বাঁধানো খাতায় লাগাতাম। অসংখ্য ছবির কালেকশন ছিল পেলের। আসলে পেলে ছিলেন আমার জীবনের প্রথম সেলিব্রেটি।সিনেমা থিয়েটারের দিকে ঝোঁক ছিল না। বাবা চিত্রশিল্পী ছিলেন বলেই তিনি পেলের কার্টুনও এঁকে ছিলেন, আমিও আঁকতাম। পেলের ছবিও তো এঁকেছি।
এডসন আরান্তেস ডো নাসিমান্তো, এই নাকি পেলের পুরো নাম। আসলে পর্তুগিজদের এ রকম বড় নাম হয়। কিন্তু ওদের ছোট একটা নাম থাকবেই। যেমন রোনাল্ডো, রোনাল্ডিনহো ইত্যাদি সবই এদের নিক নাম। এক সময়ে আফ্রিকা থেকে পেলেদের পূর্বপুরুষদের তুলে এনেছিল পর্তুগিজরা এবং তাঁদের উপর অত্যাচার করে ব্রাজিলে রেখে দিয়েছিলো।
শক্ত কাজ থেকে ফাই ফরমাস খাটানোর জন্য এঁরাই ছিল পর্তুগিজদের দাস। এই কারণে দীর্ঘদিন ব্রাজিলে বসবাসকারী সাদা পর্তুগিজদের এরা একপ্রকার "দাস" ছিল। পরে অবস্থা স্বাভাবিক হলে এরাই খেলার মাঠ থেকে কফির বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন। লক্ষ্য করে দেখবেন ব্রাজিল দলে কেউ সাদা, কেউ আবার কৃষ্ণবর্ণের।পেলে এমনই এক পরিবারভুক্ত ছিলেন।
দরিদ্র বাবা ফুটবল খেললেও চোট পেয়ে খেলা ছাড়তে বাধ্য হন। এই দরিদ্র পরিবার থেকে খেলোয়াড় হবে দুষ্কর ছিল ৫০ এর দশকে। কিন্তু পেলে তো হবু সম্রাট, তিনি পেরেছিলেন। বিশ্বজোড়া নাম করেছিলেন আজকের খেলোয়াড়দের মতো অবশ্য টাকা করতে পারেননি পেলে। তিনবার বিশ্বকাপ তাঁর কল্যাণে পেয়েছিলো ব্রাজিল। ১৯৫৮, ১৯৬২ এবং ১৯৭০, এই রেকর্ড ভাঙা দুরূহ। আমি মনে মনে ভাবি ফুটবলের সম্রাটের এই রেকর্ড যেন অক্ষুন্ন থাকে।
আমি পেলের খেলা দেখেছি সিনেমা হাউসে। পরে মোহনবাগানের সঙ্গে খেলা অবশ্য টিভিতে দেখি। আমি তখন একদিকে দূরদর্শনের সাংবাদিক-সংবাদ পাঠক আর অন্যদিকে সবে সিনেমা জগতে পা দিয়ে শুটিং শুরু করেছি কাজেই মাঠে যাওয়া হয়ে ওঠেনি।
পেলে ক্যান্সারের মতো যন্ত্রণায় ভুগে চলে গেলেন। এর আগে মারাদোনা চলে গিয়েছেন। মেসিও এবার বিশ্বকাপের পর নাকি আর খেলবেন না জানিয়েছেন।অতএব সিংহাসনটা শূন্য পড়ে, সম্রাটই শুধু নেই। যাও সম্রাট ,অনেক দিয়েছো এবার চির বিশ্রাম। (অনুলিখন: প্রসূন গুপ্ত)
বড়দিনেও (Christmas) বাড়ি ফেরা হচ্ছে না ফুটবল সম্রাটের। হাসপাতালেই থাকতে হচ্ছে কিংবদন্তী পেলেকে (Pele)। ব্রাজিলে (Brazil) সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ফুটবল সম্রাট। ক্যানসার আক্রান্ত পেলেকে নভেম্বরের শেষ দিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেপ্টেম্বরে নিয়মিত চেক আপের সময় মরণ রোগ ধরা পড়ে। কেমোথেরাপি চলছিল পেলের। বিশ্বকাপ চলাকালীন অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হয়ে ওঠে। 24 ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয় ৮২ বছরের পেলেকে। প্রার্থনা শুরু হয়ে যায় ফুটবল বিশ্বে। ফ্রান্সের অনুশীলনের পর কিলিয়ান এমবাপেও পেলের সুস্থতা কামনায় প্রার্থনা করেন। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে ওঠেন ৩ বারের বিশ্বকাপজয়ী পেলে।
পরিবারের তরফে সোশ্যাল সাইটে বিবৃতিও দেওয়া হয়। বিশ্বকাপ চলাকালীন হাসপাতালে থেকেই ম্যাচ দেখেছেন। ব্রাজিল হারার পর নেইমারকে সান্ত্বনা জানিয়েছিলেন নিজে পেলে। লিও মেসিকেও অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি। চিকিৎসকেরা আশা করেছিলেন বড়দিনের উৎসবের আগেই বাড়ি ফেরাতে পারবেন তাঁকে। কিন্তু আচমকা ফের অবস্থার অবনতি হয়েছে। হৃদযন্ত্র ছাড়াও কিডনিতে সমস্যা তৈরি হয়েছে।
অতএব পেলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে হাসপাতালেই রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাঁর মেয়ে জানিয়েছেন, বাড়িতে এবার বড়দিনের উৎসব আর পালিত হবে না। কিংবদন্তী জীবনযুদ্ধে লড়ছেন। কিন্তু এমন খবরে ফের চিন্তিত ফুটবল মহল।
কাতার বিশ্বকাপ মন্ত্রী বেচারাম মান্নার চোখে। খেলা দেখে কী লিখলেন তিনি
এবারের বিশ্বকাপ (World Cup 2022) লক্ষ্য করেছেন কি আপনারা? আফ্রিকানরা দুর্দান্ত খেলায় মন ভরিয়ে দিয়েছে। আমি জন্ম থেকে অসম্ভব কালো। প্রতিবেশীরা বলতো, আমি কোনও আফ্রিকার (Africa) দেশ থেকে এসেছি। ভুল করে নাকি আমার বাংলায় জন্ম হয়েছে। আমি হাসতাম, কখনও রাগ বা অভিমান করিনি। রাগ করে কি হবে? বলতাম, কালোই দুনিয়ার আলো। আমি ছেলেবেলায় পেলেকে সিনেমায় দেখে খুব আকৃষ্ট হয়েছিলাম। শুনেছিলাম, ব্রাজিলের (Brazil) অধিবাসী হলেও আদতে তাঁর পূর্বপুরুষরা আগে আফ্রিকায় থাকতো তাই নাকি এতো কালো।
এর অবশ্য এক ইতিহাস আছে। ইংরেজ, ফরাসি, পর্তুগিজ, স্প্যানিশ, ডাচরা সাম্রাজ্যবাদী দেশ ছিল। এরা বিভিন্ন দেশ দখল করেছিল। স্প্যানিশরা দখল নিয়েছিল লাতিন আমেরিকা ও মেক্সিকো। ব্রিটিশরা এশিয়া ও আফ্রিকার। ফরাসিরা আফ্রিকার উত্তর ভাগের। ডাচরা দক্ষিণ আফ্রিকা ও সুরিনামের। পর্তুগিজরা সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দখল নিয়েছিল তার মধ্যে ব্রাজিল, শ্রীলংকা ও গোয়া অন্যতম। এই দেশগুলি ওই সমস্ত দেশে আদিবাসী এবং আফ্রিকানদের তুলে এনে তাদের উপর অত্যাচার করে দেশ চালাতো। এদের ক্রীতদাস করে রাখা হয়েছিল। তাঁদের বংশধররা আজকের কেউ এমবাপে, কেউ র্যাশফোর্ড ইত্যাদি। আজ ইউরোপের কিংবা আর্জেন্টিনা বাদে প্রতিটি দেশেই কালোরাই মাঠ কাঁপাচ্ছে। এই ইতিহাস জানতে হবে।
আজ আফ্রিকা দখল না করলেও বেলজিয়াম, জার্মানি, পোল্যান্ড, সুইৎজারল্যান্ডেও কালো খেলোয়াড়রা স্থান পেয়েছে। তাঁদের নিয়ে আসা হয়েছে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে।আমেরিকার যে কোনও খেলায় আজ কালোদেরই দেখা যায়। আমি প্রথম থেকেই আফ্রিকার সমস্ত দেশকে এই বিশ্বকাপে সমর্থন করেছি। একে একে মরক্কো ছাড়া সব বিদায় নিলেও দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি আগামী বিশ্বকাপে অনেক দল কোয়ার্টার থেকে সেমিফাইনাল খেলবে। চ্যাম্পিয়নও হবে।
আমার দল এখন মরোক্কো, দুর্দান্ত খেলছে। গোলরক্ষক, ডিফেন্স থেকে ফরওয়ার্ড প্রতিটি বিভাগে চমৎকার বোঝাপড়া নিয়ে খেলছে। টোটাল গেম বলতে যা বোঝায় সেটাই। ফ্রান্সের সঙ্গে পরের ম্যাচ। ফ্রান্স এই মুহূর্তে বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার হলেও, কাজটা সোজা হবে বলে মনে করি না।
কাতার বিশ্বকাপ শ্রমিক নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখে। খেলা দেখে কী লিখছেন তিনি
আমি সারা জীবনে আবেগের কাছে মাথানত করে চলার পক্ষে নই। আবেগ তো মানুষ মাত্রই থাকবে কিন্তু কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাক্ষেত্রে মানসিক ভাবে কঠোর না হলে প্রকৃত দর্শনে পিছিয়ে যাবো। আমার প্রথম জীবন থেকেই লেখাপড়ার সঙ্গে কোনও আপস করিনি। বন্ধুবান্ধর বলতো তুই তো পড়াশুনায় কামাল করছিস, সেটাকেও গায়ে মাখিনি। কারণ পড়তে হবেই। রাজনীতিতেও আপোস করিনি, তার ঘটনা তো সকলেই জানে। ছাত্র আন্দোলন থেকে আজ শ্রমিক আন্দোলনে যুক্ত ও দায়িত্বে আছি। কিন্তু আমার খেলা বিশেষ করে ফুটবল অত্যন্ত প্রিয়। একদিকে মোহনবাগান অন্যদিকে ব্রাজিল। ব্রাজিল জিতলে খুশিতে মন ভরে ওঠে উত্তেজনা থাকে। কিন্তু ব্রাজিল হারলে আর খেলা দেখি না, এটাই আমার জীবনের আবেগ এবং এখানেও আপস নেই।
সত্যজিৎ রায়, জটায়ু সন্তোষ দত্তের মৃত্যুর পর বলেছিলেন, সন্তোষ নেই আর ফেলুদার ছবি করবো না। লক্ষ করে দেখুন মানিকবাবুর প্রিয় উপন্যাসে ফেলুদাই প্রধান অথচ জটায়ুকে বা সন্তোষ দত্তকে বাদ দিয়ে নয়। তাঁর কথায় এটা প্রমাণিত হয়েছিল সন্তোষ দত্তর মতো চরিত্রাভিনেতার বিকল্প নেই। জটায়ু ভাঁড় নয়, শিল্পী, তা যেভাবেই কেউ ভাবুক না কেন। আমার কাছে জটায়ু এক আইকনিক চরিত্র যেমন তেমন ফুটবলে আইকনিক দল ব্রাজিল।
আজকের ফুটবলে ফ্রান্স,স্পেন,ক্রোয়েশিয়া, জাপান বা ইউরোপিয়ান বা আফ্রিকান দলগুলি যাই খেলুক না কেন ব্রাজিল ছাড়া ফুটবল হয় না। পেলের বিকল্প আজ অবধি হলো কি? নেদারল্যান্ডের জোহান ক্রুয়েফ বলেছিলেন আমরা বিশ্বের সব ফুটবলার একদিকে, পেলে অন্যদিকে। ৫৮,৬২,৭০ তিনবারই বিশ্বজয়ী ব্রাজিলের সম্পদ ছিলেন পেলে। কত খেলোয়াড় আসবে যাবে কিন্তু পেলের বিকল্প বা তাঁর রেকর্ড ভাঙার কেউ আছে কি?
তবে এরই মধ্যে আজ পেলে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসালয়ে। এক ফ্রান্সের এমবাপে ছাড়া তাঁকে স্মরণ কেউ করেছে কি? ব্রাজিলকে আমরা ভালোবেসেছি তো পেলের জন্যই। দরিদ্র একটি বিশাল দেশ, যে দেশের খেলোয়াড়দের অনেকেরই খাওয়ার পয়সা ছিল না। সেখান থেকে আজ উন্নয়নগামী দেশগুলির অন্যতম ব্রাজিল। না ব্রাজিলহীন ফুটবলে আগ্রহ নেই। (অনুলিখন: প্রসূন গুপ্ত)
পরপর দু'বার, কোয়ার্টার ফাইনাল (Quarter Final) থেকেই বিদায় ব্রাজিলের। ২০১৮-র পর কাতার বিশ্বকাপেও শেষ ৮-র গণ্ডি পেরোতে ব্যর্থ সেলেকাওরা (Brazil)। যদিও এবার প্রথম থেকেই হেক্সা অর্থাৎ ষষ্ঠবার বিশ্বকাপ জিততে মাঠে নেমছিল তিতের দল। গ্রুপ লিগ থেকে কোয়ার্টার ফাইনাল অবধি সাম্বা দৌড় মসৃণ হলেও, ব্রাজিলকে থমকে যেতে হয় শেষ আটে। শুক্রবার অতিরিক্ত সময়ে গোল করেও, সেই গোল ধরে না রাখতে পারার ব্যর্থতায় টাই ব্রেকারে ক্রোয়েশিয়ার (Croatia) কাছে হেরে কাতারকে বিদায় জানায় হলুদ-সবুজ জার্সি। আর বিশ্বকাপের এই ব্যর্থতার পরেই অবসর নিয়ে বড়সড় সম্ভাবনার কথা জানিয়ে দিলেন নেইমার (Neymar)।
শুক্রবার রাতের ম্যাচে এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে ২-৪ গোলে পেনাল্টিতে হেরে যাওয়ার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন ব্রাজিল ফুটবলের পোস্টার বয়। টিভি ক্যামেরা বারবার ধরছিল সেই দৃশ্য, সতীর্থ থিয়েগো সিলভা এসে তাঁকে থামানোর চেষ্টা করেন। পুরো হলুদ-সবুজ জার্সি বিশ্বাসই করতে পারছিল না যে, ব্রাজিল হেরে গিয়েছে। বিশ্বাসই অতিরিক্ত সময়ের ৩০ মিনিটে চার বছরের লড়াই শেষ।
এদিকে, কাতার বিশ্বকাপ নেইমারের তৃতীয় বিশ্বকাপ। এখনও পর্যন্ত ঠোটের সঙ্গে তাঁর কাপের দূরত্ব ঘোচেনি। এখনও ট্রফি অধরা থাকায় আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবস্রের ইঙ্গিত নেইমারের গলায়। এরপর তিনি আবার কবে ব্রাজিলের জার্সি পরবেন তা স্পষ্ট নয়।
অপরদিকে, ৬ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতেই ব্রাজিল কোচের পদ ছাড়লেন তিতে। শুক্রবার ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে এসে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানান ব্রাজিলের ঘরোয়া ফুটবলের অন্যতম সফল এই কোচ। তাঁর কোচিংয়ে ২০১৮ এবং ২০২২— দু’বারই বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে ব্রাজিল।
ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের সামনে এসে তিতে বলেন, 'এই হার মেনে নেওয়া যন্ত্রণার। আমি এবার একটু শান্তিতে থাকতে চাই। আমাকে যতটুকু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তা শেষ হয়েছে। দেড় বছর আগেই বলেছিলাম বিশ্বকাপের ফল যা-ই হোক, আমি আর দায়িত্বে থাকব না। দু’রকম কথা আমি বলি না। কোনওরকম নাটক করে পদে থাকার ইচ্ছেও আমার নেই। যাঁরা আমাকে চেনে, তাঁরা জানে আমি এক কথার মানুষ।'
কাতার বিশ্বকাপ (Qatar World Cup 2022) রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর চোখে। খেলা দেখে কী লিখছেন তিনি
বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালের (Quarter Final) দুটি ম্যাচ হয়ে যাওয়ার পর একটাই স্লোগান হওয়া উচিত 'কাতার তুমি কার'? এবার বিশ্বকাপ নাটকীয়তায় ভরা। কে যে কখন কাকে হারিয়ে দেবে বা দিতে পারে পূর্বাভাস পাওয়া যায়নি। প্রতিটি ম্যাচের আগে মনে হয়েছে অমুক দল জিততে পারে। কিন্তু খেলা শেষে দেখা গেলো তমুক দল দুর্দান্ত খেলে জিতে গিয়েছে। এই টুর্নামেন্টে গ্রুপ লিগের পর জার্মানি নেই, যোগ্যতা অর্জন করেনি ইতালি। বিদায় নিয়েছে বেলজিয়াম, স্পেন এবং শুক্রবার রাতে বিদায়ের ঘন্টা বেজে গেলো ব্রাজিলের জন্য। হলুদ সবুজ পতাকাগুলি আজ সকাল রাস্তার মোড়ে মোড়ে যেন হঠাৎই জৌলুশ হারিয়েছে। ব্রাজিলের ভক্তদের মুখ দেখে মনে হচ্ছে, হয়তো কোনও নিকট আত্মীয় চলে গেছে গত রাতে।
আমরা ওপার বাংলার, ছেলেবেলা থেকে দেখেছি বাড়িতে লাল-হলুদ সংস্কৃতি। আমি তো আর পরিবারের বাইরে নই কাজেই...। বাবাদের আমলে বিদেশি খেলা দেখার সুযোগ ছিল না, টিভিতে পাওয়া যেত না। কিন্তু ১৯৭৮ থেকে, তখন আমার বাল্যকাল, দেখেছি কিছু বিশ্বকাপের খেলা। সেই থেকে শুরু, চলছে আজ অবধি। আমার লাতিন আমেরিকার ফুটবল ভালো লাগে চিরকালই। ব্রাজিল ,আর্জেন্টিনা কিংবা উরুগুয়ের খেলা মানেই পায়ের শিল্প। এবার কিন্তু তার অভাব প্রকট হয়েছে বারবার। কোথায় বিপক্ষের ডি বক্সে একচেটিয়া আক্রমণ থাকবে ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনার, তার জায়গায় স্থান পেয়েছে অজস্র পাসিং ফুটবল। নেইমার চেষ্টা করেছিল, ব্রাজিলের আক্রমণ, বল পজেশন নিশ্চয় ক্রোয়েশিয়ার থেকে বেশি ছিল। কিন্তু ক্রোটরা খেলাটাকে এলোমেলো করে দিলো নিজেদের মধ্যে প্রচুর দিশাহীন দিশাহীন পাশ খেলে। দ্বিতীয়ার্ধে নেইমার বাহিনী খেলা ধরলো। গোল এলো কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে। একটা জিনিস লক্ষ করলাম সারা মাঠজুড়ে খেললো গত বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় লুকা মদ্রিচ। ৩৭ বছরের অধিনায়কই ব্রাজিলের খেলার ছন্দ নষ্ট করে দিলেন, সারা মাঠের প্রতি অঞ্চল ঘুরে দৌড়ে।
আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ব্রাজিলকে ওই সময়েই গোল খেতে হলো। তখন খেলা শেষ হতে আর বাকি নেই। ক্রোটরাতো এটাই চাইছিলো। ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকভিচ বিশ্বের অন্যতম সেরা। তাঁর উপরেই ভরসা করে জাপানকে টাই ব্রেকে হারিয়েছে ক্রোয়েশিয়া, এবারে বিদায় ব্রাজিলের।
এদিকে, আর্জেন্টিনার খেলা মানেই মেসি। কিন্তু প্রথমে নেদারল্যান্ড খেলায় অসংখ্য পাস খেলে চাপে রাখলেও মেসি বাহিনী প্রথম অর্ধের শেষে খেলা ধরে নিয়েছিল। সতীর্থ মলিনাকে দুর্দান্ত পাস বাড়িয়ে গোল মুখ খুলে দেন এলএম-১০। প্রথম অর্ধেই ১-০ আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয়ার্ধে আকুনহাকে বক্সে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। নিজেদের ফলে খেলার ফল ২-০ করতে ভুল করেননি লিও। কিন্তু ম্যাচের ৮০ মিনিট পর্যন্ত ২-০ এগিয়ে থেকেও কি খানিকটা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস গ্রাস করেছিল স্কালোনির ছেলেদের। ডিফেন্সের দুর্বলতা খুঁজে ডাচরা দুটি গোল শোধ করে দিলো। অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিট অবশ্য ২-২ স্কোর লাইন রেখে টাই ব্রেকে ৪-৩ গোলে কমলা ব্রিগেডকে হারিয়ে আর্জেন্টিনা সেমিফাইনালের ছাড়পত্র পেয়ে যায়। এক্ষেত্রে নায়ক অবশ্য আরজেন্টাইন গোলরক্ষক ই মার্টিনেজ। তবে একটি কথা বলবো টাইব্রেকে কোনও দলের মান বোঝা যায় না। কিন্তু এটাই এবারের বিশ্বকাপের ট্যাগলাইন। (অনুলিখন: প্রসূন গুপ্ত)
কাতার বিশ্বকাপ (Qatar World Cup 2022) মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের (Swapan Debnath) চোখে।
আমি বর্ধমানের বিধায়ক দীর্ঘদিনের। আছিও পূর্বস্থলীতে বহুদিন। কিন্তু আমরা ওপার বাংলার । স্বাভাবিক ভাবেই ইস্টবেঙ্গল। একদিকে ইস্টবেঙ্গলের লাইফ মেম্বার অন্যদিকে বিশ্ব ফুটবলে ব্রাজিল। অবশ্য এটাও ঠিক যে ল্যাটিন আমেরিকার ফুটবলের প্রতি আমার আকর্ষণ চিরকালই। আহা এমন শিল্প ছিল পেলে, মারাদোনা থেকে আজকের মেসি বা নেইমার ইত্যাদিদের খেলা বা ছোট্ট ডজ বা ড্রিবলিং নিয়ে জায়গা বদলে বদলে কি খেলাটাই না খেলে।
তবে এটা ঠিক যে আজকের আধুনিক ফুটবলে কেউ এতো জায়গা দেবে না খেলোয়াড়দের কাটানোর। সময় কম, কিন্তু দেখছি তো এবারের খেলা। কি সব তিকিতাকা, নাহ মোটেই খারাপ না লাগলেও চোখে লেগে থাকে না। এবারের বিশ্বকাপে আমি মুখিয়ে রয়েছি আজকের ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার খেলা দেখার জন্য। বিধানসভার কাজ চলছে কিন্তু ফেরার পথে মোবাইলে ব্রাজিলের খেলা দেখবো অবশ্য বাড়ি পৌছিয়ে বাকি খেলা টিভিতে।
শুক্রবারের দুটো খেলায় গুরুত্বপূর্ণ। মন বলছে, ক্রোয়েশিয়াকে ব্রাজিল হারাবেই তবে নেইমারকে মাঠে থাকতে হবে এবং ছটফট করতে হবে। ওদের ডিফেন্স এতেই ভেঙে যাবে । আহামরি এমন কিছু দল নয় ক্রোয়েশিয়ারা। অনেক বুড়ো খেলোয়াড় ওদের। অন্যদিকে আর্জেন্টিনার কাছে পরপর কঠিন ম্যাচ। আজকে নেদারল্যান্ড কিন্তু বেগ দেবেই। ওই যে ঝাঁকড়া চুলওয়ালা ৪ নম্বর জার্সির ডিফেন্স, যথেষ্ট ভালো।
আমি খেলাধুলার ভক্ত। আমাদের পূর্বস্থলীতে নিয়মিত টুর্নামেন্ট হয়। এখানে বিদেশ বোস, ষষ্ঠী দুলে থেকে বহু খেলোয়াড়ের যোগদানে দারুন টুর্নামেন্ট হয়। এছাড়া বাংলার আদি খেলা কবাডি, খোখো ইত্যাদি খেলাও আমি আমার এলাকায় চালু রেখেছি। শরীরচর্চাই তো আসল। এসবে আমাদের দেশে খামতি আছে বলেই আমরা বিশ্বকাপ ফুটবলের স্বপ্ন দেখি না। (অনুলিখন: প্রসূন গুপ্ত)
উজ্জ্বল একঝাঁক পায়রা। বিশ্বকাপে (Qatar World Cup 2022) পায়রায় মজেছে সেলেকাও। দক্ষিণ কোরিয়াকে (South Korea) হারিয়েছে ব্রাজিল (Brazil)। গোলের পর আলাদা আলাদা নেচে গ্যালারি পাগল করে দিয়েছেন নেইমার, পাকুয়েতা, রাফিনহা-রা। চার গোলে চার রকম নাচ। প্রবল জনপ্রিয় হয়েছে পিজিওন ডান্স। কোচ তিতেও ওই পিজিওন নাচে কোমর দুলিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। উঠে আসছে মজার গল্প।
কোরিয়া ম্যাচের আগের দিন বিভিন্ন ধরণের নাচে নেচেছিলেন ফুটবলাররা। চাপ কমিয়ে মন ফুরুফুরে রাখতে নাচের থিওরি বরাবর অনুসরণ করে এসেছে ব্রাজিলিয়ান সাজঘর। রোনাল্ডিনহো তো বাজনা বাজাতে বাজাতে টিম নিয়ে বাস থেকে নামতেন। পা মেলাতো গোটা দল। এবার নেইমার, রিচার্লিসন, ভিনিয়া সবাই নাচতে পারেন। কিন্তু কোচ তিতে ওঁদের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছিলেন না। ফলে ঠিক হয় 'পায়রা ডান্স' করা হবে। সেটাই সুপার হিট কাতার ছাড়িয়ে সর্বত্র।
ALERTA DE VÍDEO F*DA PASSANDO NA TIMELINE! 🚨 Simplesmente Ronaldo fazendo a dança do Pombo com o Pombo. 9️⃣🐦🇧🇷 #TNTSportsNoQatar
— TNT Sports BR (@TNTSportsBR) December 6, 2022
Crédito: FIFA e Ronaldo TV pic.twitter.com/TrQpCyy2GZ
শোনা যাচ্ছে অন্তত দশ রকম নাচ পকেটে নিয়ে কাতারে এসেছে সেলেকাও। পিজিওন কাহিনী অবশ্য এখানেই শেষ হয়নি। ম্যাচের পর কিংবদন্তি রোনাল্ডোর সঙ্গে ইন্টারভিউ সেশন ছিল রিচার্লিসনের। দুজনকেই দেখা গিয়েছে পিজিয়ন স্টাইলে পোজ দিয়ে কোমর দোলাতে। সামনে এবার ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচ হবে সেয়ানে সেয়ানে। কিন্তু নতুন নাচ কি দেখা যাবে? নজর তো রাখতেই হবে।