
আমি কোনো ভুল করি নি, যা করেছি নিজের সিদ্ধান্তে ভুল শুধরে নিয়েছি, কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) থেকে দামি গাড়ি উপহার পাওয়া প্রসঙ্গে মুখ খুললেন অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত (Actor Bony)। শিক্ষক নিয়োগ-কাণ্ডে (Education Scam) শান্তনু বন্দোপাধ্যায়ের পর নাম জড়িয়েছে কুন্তল ঘোষের, জেরায় কুন্তলের সঙ্গে অভিনেতা বনির যোগসূত্র খুঁজে বার করে ইডি। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি ঘেঁটে এই যোগ বেড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্থা জানতে পারে কুন্তল, বনিকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনতে অর্থ দিয়েছিলেন। এরপরেই শুরু হয় তোলপাড়। যদিও অভিনেতার দাবি, 'কুন্তল বলেছিল প্রোগ্রাম করে সেই টাকা মিটিয়ে দিতে। প্রাথমিক ভাবে একটা ছবি তৈরি কথা হলেও, সেই ছবি তৈরি হয়নি।'
তবে শুক্রবার সিএন-র সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'আমাকে চাপ দিয়ে কিছু করাতে পারবে না, নিজের অজান্তে একটা ভুল হয়ে গিয়েছিল সেটাই শুধরে নিলাম।' এরপরে টাকা ফেরত দিতে দেরি কেন, এই প্রশ্ন করা হলে বনি জানায় টাকার পরিমানটা নেহাৎ কম নয়, আমি জানতাম না কুন্তল আদতে কেমন। এদিন তিনি আরও বলেন, 'কুন্তল পিছনে পিছনে কী করত সেটা আমার জানা সম্ভব ছিল না, একপ্রকার ভালো সম্পর্ক হয়ে যাওয়ায় ভুলটা করে ফেলি।'
সব ভুল শুধরে ফেলে ঠিকের দিকে এগিয়ে টলিউডে স্বমহিমায় ফিরবেন বলে জানান অভিনেতা।
শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতি(Teacher Recruitment Scam) নিয়ে কুন্তল ঘোষ(Kuntal Ghosh)এখন খবরের শিরোনামে। পাশাপাশি কুন্তলের সূত্র ধরে দু'বার ইডি দফতরে হাজিরা দিয়েছেন অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত। একইভাবে নেইল আর্ট পার্লারের মালকিন সোমা চক্রবর্তী ইডির ডাক পেয়েছেন। এবার এই দুজন কুন্তলের থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দিল ইডিকে। জানা গিয়েছে, এই দু'জনের থেকে পাওয়া প্রায় এক কোটি টাকা ফ্রিজ করেছে ইডি (ED)।
সূত্রের খবর বনি সেনগুপ্ত বৃহস্পতিবার ইডি-কে ডিমান্ড ড্রাফটে ৪৪ লক্ষ টাকা ফিরিয়েছেন। যদিও চলতি সপ্তাহেই বনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ওসব আমার টাকা। একইভাবে সোমা চক্রবর্তী ফিরিয়েছেন ৫৫ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা।
ইডি সূত্রে খবর, কুন্তল ঘোষের যে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাঠানো হয়েছিল এই দু'জনকে সেই অ্যাকাউন্টেই টাকা ফেরত এসেছে। দু-জনের ফেরত দেওয়া মোট ৯৯ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা ফ্রিজ করেছেন ইডি আধিকারিকরা।
ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদে বনি জানান গাড়ি কিনতে টাকা দিয়েছিলেন কুন্তল। একটা ছবি তৈরির ব্যাপারে কথা হলেও সেটা পরে এগোয়নি। কুন্তল বলেছিল প্রোগ্রাম করে সেই টাকা ফিরিয়ে দিতে। একইভাবে সোমা জানিয়েছিলেন, সোমা চক্রবর্তী তাঁর নেল পার্লারের ব্যবসার জন্য টাকা ধার নিয়েছিলেন।
ইডি সূত্রে আরও জানা যায়, কুন্তল ঘোষের মোট ১০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। এই ১টি অ্যাকাউন্টে থাকা কোটি কোটি টাকা নিয়োগ দুর্নীতিরই, অনুমান তদন্তকারী আধিকারিকদের। পরবর্তী ক্ষেত্রে এই টাকা বাজেয়াপ্তও করা হতে পারে। কুন্তলের পরিবারের অ্যাকাউন্টে কোন টাকা লেনদেন হয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী আধিকারিকরা।
নিয়োগ-কাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষের সূত্রে ইডির ডাক (ED Summon) পেয়েছেন অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত (Bony Sengupta)। গত একসপ্তাহে দু'বার কেন্দ্রীয় সংস্থার সিজিও কমপ্লেক্সের অফিসে হাজিরা দেন অভিনেতা। বনির ইডি নোটিস নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বাংলা বিনোদন জগত। একটা অংশ ঘুরিয়ে তরুণ অভিনেতার সমালোচনায় সরব। অপর একটি বনির পাশেই দাঁড়াচ্ছেন। দ্বিতীয় এই অংশে এবার যুক্ত অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Jayjit Banerjee) নাম। টলিউডের ছোট এবং বড় পর্দার এই পরিচিত মুখ বাংলা এক অনলাইন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, 'বনিকে আমি বহু বছর ধরে চিনি। ওর মধ্যে আমি কোনও অস্বচ্ছতা দেখিনি।'
তাঁর সংযোজন, 'আমরা শিল্পী। কাজ করি, পারিশ্রমিক নিই। জিএসটি কেটে টাকা ঢোকে ব্যাঙ্কে। আর মাচা শো করলে আর্টিস্ট কো-অর্ডিনেটর থাকেন। তাঁরাই সব দেখে। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সেই শিল্পীর পক্ষে জানা সম্ভব নয়, সেই প্রযোজক কিংবা আয়োজকের টাকা কোথা থেকে আসছে। যেমন কেউ চাকরি করলে কোম্পানির টাকা কোথা থেকে আসছে জানা কি সম্ভব?'
বৃহস্পতিবার এই প্রসঙ্গে একটি ফেসবুক পোস্ট করেন জয়জিৎ। তিনি লেখেন, 'প্রযোজকের টাকার উৎস জানাটা অনেকটা আদার ব্যাপারী হয়ে জাহাজের খোঁজ রাখার মতন নয় কি? কুন্তল ঘোষ প্রযোজিত ছবি কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হয়েছিল খবর পেলাম। সত্যি?!'
একসপ্তাহে দ্বিতীয়বার সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির (ED) দফতরে অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত। মঙ্গলবার প্রায় আড়াই ঘণ্টা ইডি দফতরে ছিলেন তিনি (Actor Bony Sengupta)। যেসব নথি কেন্দ্রীয় সংস্থা তাঁকে আনতে বলেছিল, সেই নথি সঙ্গে নিয়েই সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেন অভিনেতা। এমনটাই সংবাদ মাধ্যমকে জানান বনি। এদিন সিজিও থেকে বেরনোর সময় অভিনেতা বলেন, 'যা যা নথি চেয়েছিল সব জমা দিয়েছি। এরপর সব ইডি বলবে। আমাকে আর আসতে হবে না। টাকা ফেরতের প্রশ্ন নেই, ওসব আমার টাকা।'
সংবাদ মাধ্যমকে বনির অনুরোধ, 'আপনারা আমাকে আর প্লিজ হ্যারাস করবেন না। আপনারা একটু বেশি বলছেন। প্রশ্নের উত্তর সব ইডির থেকে জানতে পারবেন।' এই মন্তব্য করেই গাড়িতে উঠে বেড়িয়ে যান বনি সেনগুপ্ত। এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে সিজিওতে ঢোকার মুখে একঝাঁক প্রশ্ন করা হয়েছিল অভিনেতাকে। ফরেন ট্রিপের টাকা কে দিয়েছিল, কুন্তলের সঙ্গে কোনও চুক্তিপত্র সই হয়েছিল কিনা? কিন্তু কোনও প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই সিজিও কমপ্লেক্সে ঢুকে যান অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার দুই দফায় বনি সেনগুপ্তকে জেরা করে ইডি। কুন্তলের থেকে পাওয়া একটা গাড়ির সূত্র ধরে এই জিজ্ঞাসাবাদ বলে সূত্রের খবর। সেবার বনি বলেছিলেন, এক অর্গানাইজারের সূত্রে তাঁর সঙ্গে কুন্তলের পরিচয়। ছবি করার প্রস্তাব নিয়ে কুন্তল এসেছিলেন। তারপর ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ৪০ লক্ষ টাকার একটা গাড়ি ও আমাকে দিয়েছিল। তবে কোনও ছবি তৈরি হয়নি। কিন্তু বলেছিল প্রোগ্রাম করে সেই টাকা শোধ করে দিতে।
বৃহস্পতিবার দুই দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে টলিউড অভিনেতা বনি সেনগুপ্তকে। ফের মঙ্গলবার ইডির (ED) তরফে তলব করা হয়েছে বনি সেনগুপ্তকে। ব্যাংকের নথি নিয়ে আসতে বলা হয়েছে অভিনেতাকে (Bony Sengupta)। এদিকে জানা গিয়েছে, বনির চর্চিত বান্ধবী অভিনেত্রী কৌশানি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনেতার মাধ্যমেই আলাপ কুন্তলের। টলিউডের এক নায়িকাকে সামনে রেখে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির (Tollywood Industry) বিভিন্ন অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যে নিজের নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিল কুন্তল।
তার জন্য বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করেন তিনি বলেই সূত্রের খবর।
ইডি সূত্রে খবর, কুন্তলের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে একাধিক অভিনেতা-অভিনেত্রীর সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের যোগ পাওয়া গিয়েছে। অনেককেই ছবি প্রযোজনা করার টোপ দিয়ে আলাপ করে দামী উপহার দিয়েছে কুন্তল, এমনটাই জানা গিয়েছে। এমনকি, এই অভিনেতা অভিনেত্রীদের নিজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়ে যেতেন কুন্তল। মূলত নিজের ক্ষমতা এবং পরিচিতি সাধারণের কাছে জাহির করার জন্য এভাবে নেটওয়ার্ক তৈরি করেন কুন্তল। অনেক অভিনেত্রী কোনও ছবির কাজ না করেই মোটা টাকা পেয়েছেন কুন্তলের থেকে। কিছু অনুষ্ঠানে কেবল উপস্থিতির বিনিময়ে টাকা পেয়েছেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা।
টলিপাড়ার এই অভিনেতা-অভিনেত্রীদের তালিকা তৈরি করছে ইডি।
এদের মধ্যে একজন অভিনেত্রী এই নেটওয়ার্ক তৈরিতে সবচেয়ে সক্রিয় ছিলেন।
সেই অভিনেত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি, এমনটাই সূত্রের খবর।
বৃহস্পতিবার দুই দফায় চলেছে অভিনেতা বনি সেনগুপ্তর (Actor Bony Sengupta) ইডি জেরা। নিয়োগ-কাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) সূত্র ধরে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখে বনির নাম উঠে এসেছে। সেই সূত্রেই শুক্রবার এই টলিউড (Tollywood) অভিনেতাকে ডেকে পাঠায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। যদিও একদিন আগেই বৃহস্পতিবার নথি-সহ সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেন বনি। এদিন মধ্যহ্নভোজের বিরতিতে ইডি দফতরের বাইরে এসে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন অভিনেতা।
তিনি জানান, 'কোনও অনৈতিক-অবৈধ কাজের সঙ্গে আমি জড়িত নয়। আমি সেই ধরনের ছেলেও না। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে সবরকমভাবে সাহায্য করবো। কুন্তল নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত জানলে ওর সঙ্গে কাজ করতাম না। ২০১৭ সালে এক অর্গানাইজারের সূত্রে কুন্তলের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। ছবি তৈরির আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু কোনও ছবি তৈরি হয়নি। তারপর ওর সূত্রে অনেক অনুষ্ঠান করেছি, অনেক কিছুর উদ্বোধনে গিয়েছি। আমাকে গাড়ি কিনতে সাহায্য করেছিল। প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার একটা অর্থ বিনিময় হয়েছিল। পাল্টা ইভেন্ট কিংবা ছবি করে কুন্তল আমাকে পরিশোধ করে দিতে বলেছিল। কোনও রকম লেখাপড়া হয়নি। ভালো সম্পর্কের ভিত্তিতে এই সাহায্য।'
বনি জানান, 'আমার সঙ্গে ভালো চেনাজানা ছিল। আমাকে বলেছিল তোমাকে হেল্প করতে চাই। তাঁর বিনিময়ে আমার কিছু কাজ করে দিও। কুন্তলের সঙ্গে এই কথা হয়েছিল বলে দাবি করেন বনি। সিটি সেন্টারে কুন্তলের বাড়ি যেতাম। ২০১৭ সালে একটাই আর্থিক লেনদেন হয়েছে ওর সঙ্গে। কুন্তল যেটা করেছে সেটা নিশ্চয় ভুল।'
অভিনেতার দাবি, 'কুন্তলের এনজিও আছে, মেডিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি চালায় এসব জানতাম। চোর কোনওদিন বলে চুরি করে না। আমার কাছে কুন্তলের সঙ্গে কাজ সম্পর্কিত যা যা নথি আছে, সব ইডিকে দিয়েছি। এই ঘটনায় আমি হতবাক। প্রচুর প্রযোজক আছে সিনেমা করতে, মিউজিক ভিডিও বানাতে আসেন। সেই সূত্র ধরেই পরিচয়, সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।'
নিয়োগ দুর্নীতিতে (Education Scam) গ্রেফতার কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) সূত্র ধরে এবার ইডি স্ক্যানারে টলিউড অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত। নথি এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-সহ চলতি সপ্তাহের শুক্রবার তাঁকে তলব করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা (ED)। কিন্তু বৃহস্পতিবারই ইডির সিজিও কমপ্লেক্সের দফতরে হাজিরা দিয়েছেন অভিনেতা। জানা গিয়েছে, বনি (Boni Sengupta) ছাড়াও কুন্তল ঘোষের সূত্র ধরে ইডি র্যাডারে টলিউডের আরও বেশ কিছু পরিচিত মুখ। তবে নিয়োগ-কাণ্ডে এই প্রথম কোনও টলিউড অভিনেতা কেন্দ্রীয় সংস্থার নোটিশ পেলেন।
ইডি সূত্রে খবর, তদন্তে গ্রেফতার হওয়া কুন্তল ঘোষের ব্যাঙ্কের নথি ঘেঁটে বনি সেনগুপ্ত ওরফে অনুপ্রিয় সেনগুপ্তর নাম উঠে এসেছে, সেই সূত্রেই এই তলব। কী পরিমাণ টাকা লেনদেন হয়েছে, কুন্তলকে কীভাবে চেনেন এবং নিয়োগ-কাণ্ডে আদৌ জড়িত কিনা বনি? এসব জানতেই তলব বলে সূত্রের খবর। ইডির অনুমান, এই দুর্নীতির টাকা ঘুরপথে টলিউডে ছড়িয়েছে। এদিকে, বনি ছাড়াও হুগলির যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকেছে ইডি। এর আগে কুন্তলকে গ্রেফতারির পর একাধিকবার শান্তনুর নাম নিয়োগ-কাণ্ডে প্রকাশ্যে এসেছে।