অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের (Amitabh Bachchan) জন্ম এলাহাবাদে। সেখানেই তাঁর বেড়ে ওঠা। এরপর মুম্বই সিনেমা জগতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তবে তাঁকে শুধুমাত্র 'অভিনেতা' তকমাতেই সীমাবদ্ধ রাখা যায় না। অমিতাভ বচ্চন মানে জীবনবোধ। বাবা ছিলেন কবি হরিবংশ রাই বচ্চন এবং মা ছিলেন সমাজ সংগ্রামী তেজী বচ্চন। ছোট থেকেই তাঁর পড়াশোনা গভীর। যেকোনও বিষয়ে অমিতাভর দখল কতটা, তো বোঝা যায় তাঁর বক্তব্যে।
অভিনেতার সঙ্গে কলকাতা ও বাঙালির একটি যোগসূত্র রয়েছে। তিনি বিয়ে করেছেন বাংলার মেয়ে জয়া ভাদুড়ীকে। তাই বাঙালি, বাঙালি সংষ্কৃতি এবং বাঙালি ঐতিহ্যের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। অভিনেতা এক সভায় বাঙালির গর্ব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে নিজের মন্তব্য করেছিলেন। সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
ভিডিওতে বিগ বি-কে বলতে শোনা গিয়েছে, 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ইংরেজিতে রবীন্দ্রনাথ টেগোর হয়ে উঠেছেন। যেখানে তাঁর আসল নাম ঠাকুর। ঠাকুরবাড়ি তাঁর কলকাতার বাসভবন, তাঁর নামেই পরিচিত। একই উদাহরণ অনুসরণ করে, ভারতীয়রা যদি এভাবে উচ্চারণ গুলিয়ে ফেলেন, তাহলে শ্যাম্পেইনকে, চাম্পাগনি বলা উচিৎ। কিন্তু আমরা ভারতীয়। আমরা তা করি না। আমরা ২৫০ বছরের ঔপনিবেশিক শাসনেও সম্মান এবং সহ্য ক্ষমতা দেখিয়েছি।'
করণ জোহার পরিচালিত সিনেমা 'রকি অউর রানী কি প্রেম কাহানি' (Rocky Aur Rani Ki Prem Kahani) সিনেমাহলে মুক্তি পেতে চলেছে শুক্রবার, ২৮ জুলাই। এই সিনেমা দিয়ে বেশ কিছু বছর পর পরিচালনায় ফিরতে চলেছেন করণ। তাই স্বভাবোচিত 'ধামাকেদার' সিনেমার ধরনেই আবদ্ধ থাকতে চেয়েছেন তিনি।সিনেমার চিত্রনাট্যের বিষয় হিসেবে গুরুত্ব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় চরিত্রের সাংস্কৃতিক বিভেদকে। এই সিনেমায় দুই মূল চরিত্র, রকি রানধাওয়া এবং রানী চট্টোপাধ্যায়। বোঝাই যাচ্ছে, একজন পাঞ্জাবি আরেকজন বাঙালি। তবে সিনেমায় বাঙালি সংস্কৃতির চিরাচরিত চিত্রায়ন নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে। এই নিয়ে কী বললেন চূর্ণী গাঙ্গুলি (Churni Ganguly)?
এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চূর্ণী বলেন, 'এমন কিছু রীতি রেওয়াজ রয়েছে যা বাঙালি সংস্কৃতিতে লালিত হয়েছে। তবে যদি বিশুদ্ধভাবে বাঙালি হিসেবে একটি পরিবারকে তুলে ধরতে হয় তাহলে তাহলে সেই রীতি রেওয়াজকে রাখতেই হবে। আমার মনে হয়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি দেখে রণবীরের দাদু বলে সম্বোধন এই বিষয়ে ভালো করেছে। আজও অনেক বাঙালি বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি ঝুলতে দেখা যায়।'
অভিনেত্রী আরও বলেন, 'যখন কোনও কোনও বাঙালি পরিবারের চিত্রায়ন করতে হয়, তখন কিছু গোঁড়া বিষয় তুলে ধরতেই হয়। সেসব আসলে ঠিক গোঁড়া নয়। আমার মতে এইসব খুব জরুরিভাবে ভীষণ বাঙালি। আমরা এখনও কোনও বিয়ে বাড়িতে লেহেঙ্গা পরি না। আমরা এখনও শাড়িতেই আটকে রয়েছি।'
প্রসঙ্গত চূর্ণী গাঙ্গুলি এই সিনেমায় রানী চট্টোপাধ্যায় অর্থাৎ আলিয়া ভাটের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। আরও একজন বাঙালি অভিনেতাকে দেখা যাবে রানীর বাবার চরিত্রে। তিনি টোটা রায় চৌধুরী। কিছুদিন আগেই কলকাতায় এই সিনেমার জমিয়ে প্রমোশন করে গিয়েছেন কলাকুশলীরা। এবারে শুধু সিনেমা মুক্তির অপেক্ষা।
সৌমেন সুর: রঞ্জিতবাবু রবীন্দ্রনাথকে বিনম্র প্রণাম জানিয়ে বললেন,'কাজী নজরুল ইসলাম একটা খুব অন্যায় কাজ করে ফেলেছেন। তিনি আপনার 'নমো হো নমো' গানটির অনুকরনে একটি হাসির গান লিখে ফেলেছেন। আর তার থেকেও বেশি অন্যায় করে ফেলেছি আমি নিজে। আমি গানটি রেকর্ড করে ফেলেছি। অন্যায় জেনেও গানটি একবার শোনার অনুরোধ করছি। যদি মনে করেন তবেই অনুমোদন দেবেন।'
কবিগুরু গানটি চালাতে বললেন। শুনতে শুনতে কবির মনে কৌতুক প্রকাশ হল। আবার চালাতে বললেন। এবার শোনার পর বললেন,'অনুমতি দিতে পারি একটা শর্তে। বার্তাটি হল তিনটে রেকর্ড দিতে হবে।' সবাই শুনে হেসে ফেললেন। এভাবেই জন্ম হল প্যারোডি গানের। যাত্রা শুরু হল সেই তখনই। এরপর এই কাজে এগিয়ে আসেন তৎকালীন দুই কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিক ও সতীশ ঘটক। সতীশ ঘটক কবিগুরুর একটি গান, 'তুমি কেমন করে গান করো হে গুণী'র অনুসরণ করে লেখেন, 'তুমি কেমন করো পান করো হে চুনি'। আর কুমুদরঞ্জন মল্লিক রবিঠাকুরের 'সে যে কাছে এসে' এই রবীন্দ্রসঙ্গীতের অনুসরনে লেখেন, 'আমার পাকার যখন কথা ছিল।' কিন্তু দু'জনের কারও অনুমতি পাওয়া হল না, কারণ গুরুদেব প্রয়াত হন।
মিন্টু দাশগুপ্ত ও দীপেন মুখোপাধ্যায় দু'জনেই অপেক্ষা করে বলেন, বিচিত্রানুষ্ঠানের স্বাদ বদলের জন্য থাকতো প্যারোডি গান, হাস্যকৌতুক, মুকাভিনয়, আবৃত্তি ইত্যাদি। কিন্তু হঠাৎ করেই এগুলো সব হারিয়ে গেল। দীপেনবাবুর কথায় 'লক্ষ্য করে দেখবেন জীবনমুখী, ব্যান্ডের নামে যেসব গান হচ্ছে তার অনেকগুলোই প্যারোডি। পাতালঘর ছবিতে খরাজ মুখার্জির গানটার কথা ভাবুন। তাহলে আমাদের বেলায আপত্তি কেন!'
সবশেষে বলতে হয়, বর্তমানে হাসি জীবন থেকে প্রায় উঠে গিয়েছে। সেখানে যদি প্যারোডি গান হাসির মোড়কে জীবন যন্ত্রণার কথা তুলে ধরা যায়-তাতে ফল ভালো ছাড়া খারাপ কোথায়! আশা করছি-আবার যেন বাজারে প্যারোডি গানে রমরমিয়ে ওঠে। তথ্যঋন- দীপক মজুমদার। (সমাপ্ত)